বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
কারও কোমরের ধার ঘেঁষে উঁকি দিচ্ছে কাঁকড়াবিছে, কারও আবার গোলাপফুল। কেউ হয়তো হাত-পায়ে খোদাই করে রাখছেন প্রিয় উক্তি বা পছন্দের মানুষের নাম!
ট্যাটু সংস্কৃতি এভাবেই শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছে আধুনিক প্রজন্ম। স্টাইলিংয়ের এই নয়া প্রকাশ তাদের কাছে বড় আকর্ষণের। কিন্তু এই ট্যাটুর বিড়ম্বনায় কি ত্বকের কোনও ক্ষতি হয়, নাকি পুরোটাই মিথ? আজ বরং ফিরে দেখি সেই বিতর্কই।
ত্বকের শত্রু কালি ও সুচ
ট্যাটুর প্রভাব ত্বকে অবশ্যই কিছু না কিছু পড়ে। যেমন, ত্বক যেমনই হোক, তাহলে ট্যাটুর কালি থেকে ট্যাটু গ্র্যানুলোমা হয়। চামড়ার চারপাশে ছোট ছোট গুঁড়ি গুঁড়ি প্রদাহই গ্র্যানুলোমা। এগুলো খুব চুলকায়। এটি এক ধরনের অ্যালার্জিক ইনফেকশন। এছাড়া এই কালি থেকে অ্যালার্জিক ডার্মাটাইটিস হতে পারে। ট্যাটুর কালি তাই ত্বকের খুব একটা বন্ধু নয়। এমনও হতে পারে, দীর্ঘদিন ধরে ট্যাটু করেন, হয়তো এতদিন তেমন কিছুই ত্বকের সমস্যা হয়নি, কিন্তু হঠাৎ অ্যালার্জিক ডার্মাটাইটিস বা ট্যাটু গ্র্যানুলোমা হতে শুরু করল।
এ তো গেল কালির কথা, ট্যাটুর সুচও ত্বকের পক্ষে ক্ষতিকর। আজকাল সকলে যে খুব দাম নিয়ে নামী স্টুডিওতে ট্যাটু করান এমন নয়, আবার খুব নাম হলেই যে সকলে সবরকম স্বাস্থ্যকর উপাদান ব্যবহার করবে এমন নিশ্চয়তাও নেই। তাই ট্যাটুর সুচ যদি খুব স্বাস্থ্যকর না হয়, তাহলে তা থেকে স্কিন টিউবারক্যুলোসিস পর্যন্ত হতে পারে। এমনকী, এই টিবি-র লক্ষণ ধরা পড়ে বেশ কিছুদিন গড়িয়ে যাওয়ার পর। ফলে চিকিৎসা শুরু হলেও অনেকসময়ই অবস্থা হাতের বাইরে চলে যায়। স্কিন টিবি থেকে প্রাণহানিও ঘটে অনেকেরই। প্রতিবছর ট্যাটু থেকে হওয়া স্কিন টিবিতে প্রাণ হারানোর সংখ্যাটা খুব কম নয়। সংক্রামিত সুচ থেকে ত্বকের রোগ ছাড়াও এইচআইভির ভয়ও থাকে।
ট্যাটুর ক্ষেত্রে আর একটি ভয়ের বিষয়— এ থেকে হওয়া অ্যানাফাইলেকটিক শক। এই শক থেকেও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এক্ষেত্রে রোগীর হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, পালস রেট বেড়ে যেতে পারে।
ট্যাটু মোছার বিড়ম্বনা
ট্যাটু করার সময় যেমন ত্বকের নানা ক্ষতি হয়, ঠিক তেমন ট্যাটু তোলার সময়ও ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের নিয়ম অনুসারে, বিয়ের সময় শরীরে কোনও ট্যাটু রাখা যাবে না। ফলে, বিয়ে ঠিক হলে অনেক যুবক-যুবতীই আসেন লেজার থেরাপির মাধ্যমে ট্যাটু মুছতে। এ যেমন সময়সাপেক্ষ তেমন খরচও হয় ভালোই। আবার অতিপরিচিত একটি সমস্যার কথা বলা যাক। অনেকেই আবেগের বশে ভালোবাসার মানুষটির নাম শরীরে খোদাই করান। এরপর একসময় বনিবনা না হলে সম্পর্ক ভাঙে। জীবনে নতুন মানুষের প্রবেশ ঘটে। এদিকে আগের ভালোবাসার মানুষটির নাম ট্যাটু করে শরীরে লেখা ছিল, এবার সেই নাম মুছে দেওয়ার পালা শুরু হয়! ট্যাটুর রং ও ধরন বুঝে ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের লেজার দেওয়া হয়। ঘষে ঘষে ট্যাটু তোলা হয় বলে ত্বকে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, ঘর্ষণের ফলেও নানা প্রদাহ হতে পারে। এছাড়া পুরো বিষয়টাই বেশ যন্ত্রণাদায়ক। তাই ট্যাটু করাবার আগে ভাবনাচিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিন।