গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
রাজ্যের দুয়ারে বর্ষা ঢুকে পড়েছে ঠিকই, তাই বলে গ্রীষ্ম যে এখনই বিদায় নিয়েছে এমন নয়। প্যাচপ্যাচে গরম যেমন তার উপস্থিতি জাহির করছে, তেমনই বৃষ্টি পড়লেই পরিবেশ হয়ে উঠছে স্যাঁতসেঁতে। এমন আবহাওয়া কিন্তু জীবাণুদের বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ। ফলে উল্টোপাল্টা খেলেই এখন পেট খারাপের আশঙ্কা! কোন কোন খাবার থেকে হতে পারে এমন পেটের সমস্যা? দেখা যাক—
• খুব ঝাল মশলা দেওয়া খাবার খেলে শরীর গরম হয়ে ওঠে। সেখান থেকেও হতে পারে পেটের সমস্যা।
• অনিয়ন্ত্রিতভাবে খাদ্য খাওয়া যেমন চাউমিন খাওয়ার পরেই মিল্ক শেক পান করা, চপ শিঙাড়ার সঙ্গে আম খাওয়া থেকেও হতে পারে পেটের গণ্ডগোল।
• সময়ে খাবার না খেলেও হতে পারে পেটের গোলমাল। অনেকেই অনেক রাত করে খাবার খান। রাতে দেরিতে খাবার খেলে পেটের গণ্ডগোল হওয়া অসম্ভব নয়।
• অনেকেরই মদ্যপানের অভ্যেস থাকে। মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান করলেও পেটের সমস্যা হওয়ার প্রবল আশঙ্কা থেকে যায়।
• অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন নিশ্চিতভাবে পেট ও স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সুতরাং স্বাস্থ্যকর জীবন চাইলে পেট ঠান্ডা রাখার উপায় জানতে হবে। খেতে হবে সেইসকল খাদ্য যা শরীর শীতল রাখবে। প্রশ্ন হল, খাবেন কী?
১. তরলনির্ভর ফল এবং সব্জি : আপেল, তরমুজ, শসার মতো ফল, লাউ, ঝিঙে, পটল ইত্যাদি খাওয়া উচিত। এই ধরনের খাদ্যগুলি পেট গরম হওয়া রোধ করে এবং সহজে খাদ্য হজম হয়।
২. তরলজাতীয় খাদ্য খেয়ে যান : শরীরে পর্যাপ্তমাত্রায় ফ্লুইডের জোগান বজায় রাখতে হবে যাতে পেট বেশি গরম না হয়ে যায়। এছাড়া শরীরে উপযুক্ত মাত্রায় তরলের জোগান বজায় থাকলে তা শরীর থেকে ক্ষতিকর নানা উপাদান রেচন ক্রিয়ার সঙ্গে বের করে দিতেও সাহায্য করে।
৩. পেট ঠান্ডা রাখার ভেষজ : লাঞ্চে পুদিনার চাটনি খেলে পেট ঠান্ডা থাকে। এছাড়া সকালে বা সন্ধ্যায় পান করতে পারেন ক্যামোমিল টি। দু’টি ভেষজেই পেট ঠান্ডা রাখার মতো উপাদান রয়েছে যা আবার পাকস্থলীতে মাত্রাতিরিক্ত অ্যাসিডের উৎপাদন কমাতে পারে।
৪. ঠান্ডা দুধ : সকালে ব্রেকফাস্টের ঘণ্টাখানেক পর ঠান্ডা দুধ পান করলে পেট ঠান্ডা থাকে। পেটে অ্যাসিডের উৎপাদনও কমায়। শরীরে অস্বস্তিও কমাতে পারে ঠান্ডা দুধ।
৫. দই : বাড়িতে পাতা টক দই পাচনতন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ায়। দ্রুত খাদ্য হজম করানোর ক্ষেত্রে দইয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ফলে শরীরের উষ্ণতারও দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে না।
৬. ফাইবারজাতীয় খাবার খান : পাতে রাখুন পর্যাপ্ত মাত্রায় দানা শস্য, শুঁটিজাতীয় খাদ্য, ফল ইত্যাদি। এই ধরনের খাদ্যগুলি খাদ্য পরিপাক করতে সাহায্য করে। এমনকী কনস্টিপেশনের মতো সমস্যাও দূর করে।
৭. ফ্যাটজাতীয় খাদ্য এড়ান : মাখন, ঘি, চিজ, অতিরিক্ত ভাজাভুজি খাওয়া এড়াতে হবে। কারণ এই ধরনের খাদ্য হজমের পথে বাধা তৈরি করে। তাই ডায়েটে ফ্যাটপূর্ণ খাদ্যগ্রহণ বন্ধ করাই উচিত।
৮. কফি পান কমান : আমাদের পাচনতন্ত্রের প্রক্রিয়া মসৃণভাবে সম্পাদনের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করতে পারে অতিরিক্ত কফি পান। ফলে বেশি কফি পান আলসার, অ্যাসিডিটি, বুকজ্বালার মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে।
৯. খাদ্যগ্রহণের সময় : খাবার খাওয়ার সময় নিয়ে আমরা বরাবর গণ্ডগোল করি। কোনও কোনও বাড়িতে প্রায় রাত ১১টা নাগাদও খাওয়া হয়। রাতের দিকে খেতে দেরি হলেই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খাওয়া হয়। তাই খাবার খান রাত নটার মধ্যে। সম্ভব না হলে বড়জোর দশটা। তার বেশি দেরি নয় কিন্তু!
১০. ডাবের জল : পাকস্থলীতে শরীরে অ্যাসিড ও ক্ষারের ভারসাম্য সঠিক রাখতে ডাবের জলের জুড়ি নেই। এছাড়া শরীর আর্দ্র রাখতে ডাবের জল অত্যন্ত উপযোগী।
১১. আদা : আদাকে এককথায় সুপার ফুড বলা চলে। অ্যাসিডিটি হলে সরু সরু করে আদা কেটে চিবিয়ে খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা কমতে পারে। এমনকী আদা বিপাকক্রিয়ার হার বাড়ায় ও হজমে সাহায্য করে।
১২. গুড় : খাবার খাওয়ার পরে বা খাবারের সঙ্গে একটুখানি গুড় খেতে পারলে তা পেট ঠান্ডা রাখতে দারুণ কাজে আসে।