বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
সত্যিই দশকের পর দশক ধরে এমন মিরাকলের খোঁজে ছিল তামাম বিশ্ব। বহু রোগ এসেছে। তার টিকা কিংবা ওষুধ আবিষ্কার হয়েছে। ব্যতিক্রম একটাই—ক্যান্সার। মারণ এই অসুখকে বাগে আনতে গোটা পৃথিবীজুড়ে চলছে নিরন্তর গবেষণা। এরইমধ্যে ‘বাজিমাত’ করলেন আমেরিকার একদল গবেষক।
এমএসকের দাবি, তাঁদের তৈরি ‘ডস্টারলিম্যাব’ ওষুধে নির্মূল হচ্ছে ক্যান্সার। তাও আবার মাত্র ছ’মাসেই। ইতিমধ্যে মলদ্বারের ক্যান্সারে আক্রান্ত ১৮ জনের উপর হিউম্যান ট্রায়াল চালিয়েছেন তাঁরা। প্রত্যেকেই সম্পূর্ণ সেরে এসেছে। সাফল্যের হার ১০০ শতাংশ। সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক টাইমসে এব্যাপারে প্রতিবেদন প্রকাশ হতেই হইচই পড়ে গিয়েছে গোটা বিশ্বে। গবেষকদের দাবি, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি তৈরি করছে তাঁদের ওষুধ। এতে টিউমার তো গায়েব হয়েছেই, রোগ পর্যন্ত উধাও। এর আগে চিকিৎসায় ক্যান্সার পুরোপুরি সেরে গিয়েছে, এমন দাবি কোনও বিজ্ঞানীই জোরের সঙ্গে করে উঠতে পারেননি। স্বভাবতই তুমুল শোরগোল শুরু হয়েছে তামাম চিকিৎসক মহলে। যদিও ওই গবেষক দলের বক্তব্য, তাঁরা খুবই ছোট পরিসরে ওই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালিয়েছেন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আরও কিছু ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে প্রাথমিক পরীক্ষায় তাঁরা খুশি। এই ওষুধ ক্যান্সার চিকিৎসায় গোটা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময়।
মার্কিন ওই গবেষক দলের বক্তব্য, এর আগে মলদ্বারে ক্যান্সারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন এবং অস্ত্রোপচারের সাহায্য নিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই রোগী পুরোপুরি সুস্থ হননি। বরং অন্ত্র বা প্রস্রাবের সমস্যার মতো একাধিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। পরবর্তী ধাপে তাই ওই ১৮ জনকে তিন সপ্তাহ অন্তর ডস্টারলিম্যাবের একটি করে ডোজ দেওয়া হয়। টানা ছ’মাস ধরে। আর তাতেই মেলে অভাবনীয় সাফল্য। এন্ডোস্কপি, পিটিই স্ক্যান, এমআরআই মতো পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, প্রত্যেকেরই ক্যান্সার উধাও।
দীর্ঘ গবেষণা চালিয়ে ক্যান্সারের এই ওষুধ আবিষ্কারের কৃতিত্ব যাঁদের, এমএসকের সেই চিকিৎসক আন্দ্রেয়া সেরসেক বলেছেন, ক্যান্সার থেকে মুক্ত হয়ে রোগীরা আনন্দে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। তাঁর সহযোগী লুইস এ ডায়াজের দাবি, ক্যান্সার চিকিৎসায় এই সাফল্য ঐতিহাসিক। গোটা বিশ্বে এই প্রথম এমন ওষুধ আবিষ্কার হল। এই ওষুধ ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পৃথিবীকে নতুন পথ দেখাবে। তবে এই গবেষণার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কারণ, যাঁদের উপর ডস্টারলিম্যাবের ট্রায়াল হয়েছে, তাঁদের শুধু মলদ্বারেই ক্যান্সার বাসা বেঁধেছিল। শরীরের অন্য কোনও অঙ্গে তা ছড়ায়নি। ওষুধটি যে কোনও অঙ্গের ক্যান্সারের চিকিৎসাতেও সমানভাবে কার্যকরী কি না, সেটাই এখন দেখতে চান বিজ্ঞানীরা। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ড. অ্যালান পি ভেনুক অবশ্য বলছেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানে নয়া দিগন্ত খুলে দিতে পারে এই আবিষ্কার।