গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
মধুমেহ নামটা যতই মধুর হোক না কেন, রোগটি ততটাই চিন্তার। তাই একে বলা হয় ‘সাইলেন্ট কিলার’। কারণ, ডায়াবেটিস নিঃশব্দে শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যেমন কিডনি, চোখ, নার্ভের ক্ষতি করে। ডায়াবেটিকদের এমনই একটি দুশ্চিন্তার বিষয় হল ডায়াবেটিক ফুট বা পায়ে ক্ষত।
কেন হয়? উপসর্গ কী কী?
ডায়াবেটিস হলে ইনসুলিন হর্মোনের অভাবের জন্য শরীর রক্তের কার্বোহাইড্রেটকে ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারে না। আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের কাজ চালানোর মূল উপাদান হল শর্করা। এর অভাবে স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গা অসাড় হয়ে যায়। পায়ের তলার অনুভূতি কমে যায় বা থাকে না। তাই হাঁটাচলার সময়ে আঘাত লাগলে বোঝা যায় না। বারবার এইভাবে আঘাত লাগলে পায়ের তলায় ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
ডায়াবেটিসের জন্য রক্তনালীগুলিও সংকুচিত হয়ে যায়। ফলে আক্রান্ত স্থানে রক্ত ঠিকমতো পৌঁছতে পারে না। তাই ক্ষত নিরাময় না হয়ে গ্যাংগ্রিন হয়ে যায়। পা কেটে বাদ দেওয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই অবস্থাকে বলে ডায়াবেটিক ফুট।
অন্যান্য কারণ
১. খুব শক্ত বা চাপা জুতো পরার অভ্যেস।
২. পায়ে বারবার চোট লাগা।
৩. কমদামি প্লাস্টিক বা রবারের জুতো ব্যবহার।
৪. ধূমপানের কারণেও রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষত সারতে চায় না।
কী কী সাবধানতা নেবেন?
১. খালি পায়ে হাঁটাচলা করবেন না। নরম সোলের পা ঢাকা জুতো ব্যবহার করুন। সুগার রোগীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ডায়াবেটিক জুতো পাওয়া যায়।
২. নরম সুতির মোজা ব্যবহার করুন।
৩. পায়ের আঙুলের ফাঁকগুলি এবং গোড়ালি কাটা থাকলে সেই জায়গাটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। সেখানে পেট্রলিয়াম জেলি (ভেসলিন) জাতীয় নন মেডিকেটেড ময়েশ্চারাইজার লাগান যাতে সংক্রমণ না হয়।
৪. নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। শরীরচর্চায় পায়ের রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়।
৫. ধূমপান ত্যাগ করুন।
৬. এমন চটি ব্যবহার করবেন না যাতে বুড়ো আঙুল আলাদাভাবে থাকে। এতে ওই স্থানে কেটে গিয়ে ক্ষত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৭. শোওয়ার সময় পায়ের তলায় বালিশ দিয়ে পা একটু উঁচু করে রাখলে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়।
চিকিৎসা কী?
সবার আগে সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এর জন্য রোগী তার পছন্দ ও সামর্থ্য অনুযায়ী যে কোনও প্যাথির ওষুধ গ্রহণ করতে পারেন। পাশাপাশি পায়ের ক্ষতের চিকিৎসা করতে হবে। হোমিওপ্যাথিতে ডায়াবেটিক ফুট নিরাময়ের বেশ কিছু ওষুধ আছে।
আলসার সৃষ্টি হলে লক্ষণ অনুসারে সোলনাম নাইগ্রা, ক্যালোট্রপিস, সিজিজিয়াম, ক্যালেন্ডুলা প্রভৃতি ওষুধের কথা ভাবা হয়। তবে সর্বদাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাবেন। নিজে ডাক্তারি করতে গেলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।