বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
করোনা ছাড়া এখন জ্বর ও তার কারণ
১. ম্যালেরিয়া ২. টাইফয়েড ৩. ডেঙ্গু ৪. ইনফ্লুয়েঞ্জা ৫. নিউমোনিয়া বা ফুসফুসে সংক্রমণ ৬. কিডনির সংক্রমণ বা মূত্রনালীর সংক্রমণ
৭. অন্যান্য অসুখ।
জ্বরের প্রকারভেদ
১. কাঁপুনি দিয়ে জ্বর সাধারণত ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া বা মূত্রনালীর সংক্রমণ থেকে হয়। তবে এই জ্বরের ধাঁচ অনেকটাই পাল্টেছে। ম্যালেরিয়ায় কাঁপুনি নাও হতে পারে।
২. উত্তরোত্তর জ্বর বৃদ্ধি— সাধারণত টাইফয়েডে দেখা যায়।
৩. দিনভর জ্বর— সারাদিনে একবারও জ্বর নামছে না। এটাও টাইফয়েডের লক্ষণ।
৪. পাঁচদিনের পরও জ্বর কমছে না— ভাইরাসঘটিত জ্বর বা ইনফ্লুয়েঞ্জা হওয়ার আশঙ্কা কমে।
৫. পরিবারের অনেকের একসঙ্গে জ্বর— সংক্রামক রোগ যেমন করোনা, ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ভাইরাসঘটিত জ্বর হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
জ্বর ছাড়াও আনুষঙ্গিক উপসর্গ
১. হাড়ে হাড়ে ব্যথা— ডেঙ্গুর লক্ষণ।
২. গায়ে লাল লাল দাগ— ডেঙ্গুর লক্ষণ। ডেঙ্গুতে জ্বরের শুরুতে এবং পাঁচদিনের মাথায় একরকম দাগ দেখা যায়। এছাড়া ডেঙ্গুতে রক্তের অণুচক্রিকার মাত্রা (প্লেটলেট) কম হয়ে যায়।
৩. কাশি ও সঙ্গে হলুদ কফ বেরলে হতে পারে তা ফুসফুসের সংক্রমণ।
৪. প্রস্রাবে জ্বালা— মূত্রনালীর সংক্রমণ।
৫. কোষ্ঠকাঠিন্য— টাইফয়েডের লক্ষণ।
৬. পদ্মপাতায় জলবিন্দুর মত গায়ে দাগ ও ব্যথা— চিকেনপক্সের লক্ষণ।
কী কী পরীক্ষা—
বেশকিছু বছর ধরেই বিভিন্ন রোগব্যাধির চরিত্র পাল্টাচ্ছে। উপসর্গগুলিও চেনা ছকে বাঁধা নেই। ডেঙ্গুর মতো ভাইরাল জ্বরে এখন অনেকসময়ই ডায়ারিয়ার উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। ভাইরাল এবং ব্যাকটেরিয়াঘটিত বিভিন্ন জ্বর অনেকক্ষেত্রেই একই বা কাছাকাছি উপসর্গ নিয়ে হাজির হচ্ছে। নিবিড় পরীক্ষানিরীক্ষা এবং জরুরি কতগুলি টেস্ট রিপোর্ট ছাড়া রোগী ঠিক কোন অসুখে আক্রান্ত তা জোর দিয়ে বলা কঠিন হয়ে পড়ছে পোড়খাওয়া বহু চিকিৎসকদের পক্ষেও। তাই রোগলক্ষণ দেখলে কালবিলম্ব না করে ব্যক্তিগত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। কারণ, আন্দাজে চিকিৎসা করার দিন শেষ। জীবাণুর প্রমাণ পেয়ে তবেই চিকিৎসা করতে হবে। তবে বিশেষ করে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যকরী হতে পারে।
১. রক্তের ম্যালেরিয়া পরীক্ষা এবং ডেঙ্গুর অ্যান্টিজেন পরীক্ষা জ্বর হলেই করতে পারেন।
২. রক্তের কালচার— টাইফয়েডের জন্য সর্বোত্তম পরীক্ষা। জ্বরের সাতদিনের মাথায় টাইফয়েডের অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা যেতে পারে।
৩. বুকের এক্স-রে— ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছে কি না দেখার জন্য করা যেতে পারে।
৪. প্রস্রাবের রুটিন এবং কালচার পরীক্ষা— মূত্রনালীর সংক্রমণ আছে কি না দেখার জন্য করা প্রয়োজন পড়তে পারে।
এছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শমতো রক্তের আরও কিছু পরীক্ষা করানোর দরকার হতে পারে।
চিকিৎসা কীভাবে?
১. জিভের নীচে থার্মোমিটার রেখে যদি দেখা যায় জ্বর ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইট, তাহলে ওষুধ দিতে হবে। অবস্থা বুঝে প্যারাসিটামল ৫০০ বা প্যারাসিটামল ৬৫০ দিনে তিন থেকে চারবার খাওয়াতে হতে পারে।
সাধারণত ভাইরাল জ্বর অথবা ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে পাঁচ দিন এই চিকিৎসায় রোগ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
২. প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। ৩. সহজপাচ্য খাবার খান। ৪. শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য মাছ, ডাল, সবুজ শাকসব্জি এবং টাটকা ফল খেতে হবে। ৫. কফ-কাশি হলে উপসর্গমাফিক কাশির সিরাপ খেতে পারেন। তবে সত্যি কথা বলতে কাশির সিরাপ খেয়ে মানসিক স্বস্তি ছাড়া বিরাট লাভ হয় না। বরং নিয়মিত স্টিম বা গরম জলের ভাপ নিলে ভালো হয়। ৬. নিজে থেকে কোনওমতেই অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না। পরীক্ষা করে যে রিপোর্ট আসবে, তার ভিত্তিতে ডাক্তারবাবুর পরামর্শ মেনে ওষুধ খান।