পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
মাছ, মাংস, ডিমজাতীয় আমিষবর্জিত আহারকে সাধারণত নিরামিষ আহার বলা হয়। নিরামিষ খাদ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদজাত ও দুগ্ধজাত দ্রব্য।
কেন নিরামিষ?
১. নিরামিষ খাদ্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে। শাকসব্জি, রঙিন ফলমূলে থাকে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেলস, ডায়েটারি ফাইবার, বিভিন্নপ্রকার অ্যান্টি অক্সিডেন্টস, তথা ফাইটো নিউট্রিয়েন্টস।
২. এই উপাদানগুলিই শরীরে পুষ্টির যোগান অটুট রাখে ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৩. আমিষ খাদ্য থেকে আমাদের শরীরে বিপাকক্রিয়ায় বহুপ্রকার ক্ষতিকর পদার্থ বা টক্সিন নির্গত হয়। এছাড়া, আমিষ প্রোটিন সাধারণত হজমের সমস্যা তৈরি করে।
৪. আমিষ প্রোটিনে ডায়েটারি ফাইবারের মাত্রা খুবই কম থাকায় বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি নানা ধরনের সমস্যা ঘটায়।
৫. বিভিন্ন প্রকার সব্জিতে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার থাকায় পাকস্থলী ও অন্ত্রে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে, হজমে সহায়তা করে ও কোষ্ঠ পরিষ্কার রাখে। এই ফাইবার আমাদের পেট ভরতি রেখে খিদে কমায়, অন্ত্রে খাবারের ধীর গতিতে শোষণ হয়, ফলে রক্তে সুগারের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৬. আমিষ খাদ্যে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের মাত্রা বেশি থাকায় রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়। রক্তবাহী ধমনিতে রক্তচলাচলে বিঘ্ন ঘটায়। ফলে উচ্চ রক্তচাপ ও বিভিন্ন প্রকার কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ যেমন হার্টের রোগ, অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস ইত্যাদির প্রাদুর্ভাব ঘটে। তাই হার্টের রোগীর ক্ষেত্রে আনস্যাচুরেটেড খাবারের দিকে নজর দিতে হবে।
৭. ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে আমাদের খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন প্রকার শাকসব্জি, দানাশস্য ও ফল বেছে নিতে হবে। এই ধরনের খাদ্যের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। ফলে এই খাদ্য আমাদের রক্তে সুগারের মাত্রা চট করে বাড়িয়ে তোলে না।
৮. তবে মূল ও কন্দ জাতীয় সব্জিতে শর্করার মাত্রা বেশি থাকে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীর এই ধরনের খাদ্য কম খাবেন। তাঁদের মূলত ক্যালরি বিচার করে খাদ্যগ্রহণ করতে হয়।
৯. ডায়েটারি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার সুগার রোগী ও যাঁদের ওজন বেশি রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে উপকারী।
১০. নিরামিশাসীদের প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন প্রকার ডাল, সয়াবিন বা সয়াবিন জাত দ্রব্য যেমন সয়া মিল্ক, সয়া পনির, আমন্ড, আখরোট, দুধ থেকে তৈরি পনির ইত্যাদি গ্রহণ করা দরকার।
১১. বিভিন্ন প্রকার মিনারেলস-এর অভাবজনিত সমস্যা যেমন আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে ডুমুর, কাঁচকলা, পালং, কুলেখারা, বেদানা ইত্যাদি খাওয়া যায়। ক্যালশিয়ামের অভাব দূর করতে সয়াবিন, দুধ, দুগ্ধজাত দ্রব্য, যেমন দই ঘোল, ছানা পনির ইত্যাদি গ্রহণ করতে হবে।
১২. আবার বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন-এর অভাবজনিত সমস্যা দূর করতে শাকসব্জি ফলমূল ইত্যাদি বিচার বিশ্লেষণ করে গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া কিছু কিছু ঔষধিগুণসম্পন্ন শাকসব্জি ফলমূল ও ঘরোয়া মশলা আছে যাদের বিভিন্ন প্রকার যোগে ব্যবহার করে রোগ প্রতিরোধ বা রোগ নিরাময়ে ব্যবহার করা যায়।