পঠন-পাঠনে আগ্রহ বাড়লেও মন চঞ্চল থাকবে। কোনও হিতৈষী দ্বারা উপকৃত হবার সম্ভাবনা। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
আমেরিকার ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি কোভিড আক্রান্তদের নিয়ে একটি গবেষণা চালায়। পুরুষ-মহিলাদের মধ্যে সংক্রমণে ঝুঁকির হার নির্ধারণ করাই ছিল গবেষণার মূল বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক জানিয়েছেন, পুরুষদের মাথায় চুল কম থাকলেই সংক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। আবার একেবারে না থাকলেও বিপত্তি। অর্থাৎ বিপদ লুকিয়ে টাকেও! ফ্র্যাঙ্ক গাব্রিন ছিলেন একজন মার্কিন চিকিৎসক। তাঁর মাথায় তেমন চুল ছিল না। কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। পরে তিনি মারাও যান। গাব্রিনের মৃত্যুকে সামনে রেখেই পর্যবেক্ষণ শুরু করে করেছিলেন গবেষকরা। সেই কারণেই কোভিড সংক্রমণের এই নতুন প্রবণতার নাম রাখা হয়েছে ‘গাব্রিন সাইন’।
কী বলছে নয়া গবেষণা? গবেষকরা জানাচ্ছেন, বিশ্বে মৃত্যুর পরিসংখ্যান ঘাঁটতে গিয়ে দেখা যায়, মেয়েদের তুলনায় বেশি মারা যাচ্ছে পুরুষরা। মৃত্যুর হার দ্বিগুণেরও বেশি। কারণ হিসেবে প্রথমে বলা হয়, নারী ও পুরুষের জীবনযাত্রার ধরন, ধূমপানের অভ্যাস কিংবা দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতার দিক দিয়ে মেয়েরা অনেক বেশি সংযত। তাই তাঁদের উপর করোনার কোপও অনেকটা কম। কিন্তু আরও গভীরে কাটাছেঁড়া করতে গিয়ে গবেষকরা অ্যান্ড্রোজেন হরমোনকে ‘খলনায়ক’ হিসেবে চিহ্নিত করেন। এই পুরুষ হরমোনটিই আসলে পুরুষদেরই শত্রু। তাঁদের অভিমত, অ্যান্ড্রোজেন নিঃসৃত এনজাইম একদিকে চুল পড়ার হার বাড়ায়। অন্যদিকে, করোনার সংক্রমণে অনুঘটকের কাজ করে। এর আগে মনে করা হতো, অ্যান্ড্রোজেনের অতিরিক্ত ক্ষরণ প্রস্টেট ক্যান্সারকে ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে। কিন্তু পরবর্তী গবেষণায় ধরা পড়েছে, অ্যান্ড্রোজেনের একটি বিশেষ উৎসেচক (টিএমপিআরএসএস-২) কোভিড ভাইরাসেরও শক্তিকে বাড়িয়ে তোলে।
ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কার্লোস ওয়েম্বিয়ার স্পেনের মাদ্রিদের তিনটি হাসপাতালে কোভিড আক্রান্তদের উপর একটি সমীক্ষা চালান। তিনি দেখেন, ৭৯ শতাংশ পুরুষের মাথায় চুল নেই, বা কম আছে। এর আগে আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ডারমাটোলজিতে প্রকাশিত একটি জার্নালে বলা হয়, ১২২ জন রোগীর মধ্যে গবেষণা করে দেখা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৭১ শতাংশ রোগীর মাথায় চুল নেই। সমীক্ষার ফলাফল হাতে আসতেই চিকিৎসকদের একাংশ নিদান দিচ্ছেন, অ্যান্ড্রোজেনের প্রভাব রোধ করলে করোনা রোধে ফল মিলতে পারে। ফলে চুল পড়া কমানোর ওষুধ কাজে লাগিয়ে সংক্রমণ ঠেকানে যায় কি না, তার গবেষণাও শুরু হয়েছে আমেরিকায়। তবে ব্রিটেনের প্রস্টেট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ক্যারেন স্টলবোর মতো বহু চিকিৎসক মনে করছেন, ‘করোনা-হরমোনের সখ্য নিয়ে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে না আসাই ভালো। গবেষণা এখনও প্রাথমিক স্তরে। নিরাময়ের পথ বাতলানোর কথা আসবে অনেক পরে।’