বিদ্যার্থীরা কোনও বৃত্তিমূলক পরীক্ষার ভালো ফল করবে। বিবাহার্থীদের এখন ভালো সময়। ভাই ও বোনদের কারও ... বিশদ
আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বেশ কয়েকটি হাসপাতালে দেখা গিয়েছে, গাইনি বিভাগই সংক্রমণের উৎস। উপসর্গ না থাকায় সকলে নিরাপত্তা সরঞ্জাম পরে অপারেশনে না নামায় একের পর এক স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসক পজিটিভ হয়েছেন। অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিতে হয়েছে ওয়ার্ড, লেবার রুম, ওটি।
এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ এবং পিজি হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ সুভাষচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আমরা হয়ত অনেকেই জানি না, সুগার, হার্টের অসুখ, ক্যান্সারের মতো রোগে যেমন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে, একইভাবে গর্ভধারণের সময়ও মায়েদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। একে ‘ইমিউনো কম্প্রোমাইজড’ অবস্থা বলা হয়। ফলে সতর্কতা না নিলে সহজেই সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আমার পরামর্শ, গর্ভাবস্থায় মন ভালো রাখুন, ভালো বই, গান শুনুন, সিনেমা দেখুন, স্ট্রেস বাড়তে দেবেন না। অবশ্যই হাঁটাচলা করুন। পারলে রোজ নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম ও স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ কাজের হতে পারে। আর হাই প্রোটিন ডায়েট খান। মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়া ইত্যাদি স্বাস্থ্যবিধি মানা তো আছেই।
বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডাঃ দেবলীনা ব্রহ্ম বলেন, গর্ভাবস্থায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে। তাই মায়েদের করোনা সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। আমরা দেখছি, সিংহভাগ ক্ষেত্রে উপসর্গ থাকছে না। সিজার বা সাধারণ প্রসব হওয়ার পর শরীরের হর্মোনগত পরিবর্তন হওয়া এবং স্ট্রেস বাড়ায় উপসর্গগুলি দেখা দিতে শুরু করছে। তিনি বলেন, যেভাবে উপসর্গহীনদের সংখ্যা বাড়ছে, এখন ইমার্জেন্সিতে আসা কোনও আসন্নপ্রসবার অবিলম্বে প্রসবের প্রয়োজন হলে তিনি কোভিড পজিটিভ ধরেই আমরা এগচ্ছি। কারণ, ওই পরিস্থিতিতে তো আর কোভিড পরীক্ষার কোনও অবকাশই নেই। ‘ফুল পিপিই’ পরে অপারেশনে নামছি। আর প্ল্যানড বা কিছুদিন বাদে অপারেশনের দিনক্ষণ থাকলে ভর্তি করিয়ে পরীক্ষা করে নিচ্ছি।
স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞদের কথা সমর্থন করেছেন স্বাস্থ্য প্রশাসকরাও। মেডিক্যালের সুপার ডাঃ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস, কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ অশোক ভদ্র প্রমুখ জানিয়েছেন, বহু প্রসূতি গোড়ায় উপসর্গহীন থাকছেন। প্রসবের পর উপসর্গ ধরা পরছে, ধরা পড়ছে কোভিডও। রাজ্যের করোনা প্রোটোকল তৈরিতে যুক্ত বিশিষ্ট ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুগত দাশগুপ্ত বলেন, ২০০৯ সালে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পরা ইনফ্লুয়েঞ্জা প্যানডেমিক (এইচ ১ এন ১)-এর সময়ও বহু মা মহামারীর কবলে পড়েন। এবার আক্রান্ত প্রসূতির সংখ্যা বাড়লেও, কারও ক্ষেত্রে পরিস্থিতি জটিল হয়নি, এটাই রক্ষে।