ব্যবসা সূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন ... বিশদ
বর্তমানে মহিলাদের মধ্যে ব্রেস্ট ক্যান্সার যথেষ্ট দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত, ২০ থেকে ৫৯ বছর বয়সি মহিলারা এই রোগের প্রকোপে বেশি পড়ে থাকেন। তাই সমগ্র বিশ্ব জুড়েই ব্রেস্ট ক্যান্সার সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। সেই উপলক্ষে গোটা অক্টোবর মাসটিকে ব্রেস্ট ক্যান্সার সচেতনতা বৃদ্ধির মাস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ভারতের মতো দেশে ব্রেস্ট ক্যান্সারকে নিয়ে মাথা ব্যথার অবশ্যই অনেক কারণ রয়েছে—
তথ্য বলছে, প্রতি ২৮ জন ভারতীয় মহিলার মধ্যে ১ জন ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হন।
পশ্চিমের দেশগুলির তুলনায় আমাদের দেশে অনেক কম বয়সেই মহিলারা ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। যেখানে পশ্চিমের দেশগুলিতে মহিলারা গড়ে ৫৩ থেকে ৫৭ বছর বয়সে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন, সেখানে ভারতীয় মহিলারা গড়ে ৪৩ থেকে ৪৬ বছর বয়সে এই রোগে আক্রান্ত হন।
এক্ষেত্রে পাশ্চাত্যের দেশগুলির মহিলাদের তুলনায় এ দেশের মহিলাদের ব্রেস্ট ক্যান্সারের ধরন অনেক বেশি বিপজ্জনক।
ভারতের সামাজিক ব্যবস্থায় অনেক ক্ষেত্রেই মহিলারা নিজের বন্ধু বা পরিবারের লোকেদের সঙ্গে ব্রেস্টের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে ভয় বা লজ্জা পান। এই কারণে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সারও ধরা পড়ে না।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
পরিবারের কেউ ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকলে ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষত, মা, বোন, দিদির মতো প্রথম পর্যায়ের আত্মীয়রা ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেশি থাকে।
সন্তানহীন মহিলা বা বেশি বয়সে সন্তানের জন্ম দেওয়া মহিলাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। অপরদিকে ব্রেস্ট ফিডিং এই রোগের ঝুঁকি কমায়।
এছাড়া স্থূলত্ব, মদ্যপান, রেডিয়েশন, ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন সহ বিভিন্ন ধরনের হরমোন থেরাপি ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। তবে ওর্যাল কনট্রাসেপটিভ পিল গ্রহণ করার সঙ্গে এই রোগের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ নেই।
জানার বিষয় হল, মহিলা এবং পুরুষ দুই দলই ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্তে হতে পারেন। তবে পুরুষের তুলনায় মহিলারাই এই রোগে ব্যাপক হারে আক্রান্ত হন।
রোগ লক্ষণ
ব্রেস্টে শক্ত পিণ্ড ব্রেস্টের ত্বক কুঁচকে যাওয়া বা ত্বকে টোল পড়া নিপলের সঙ্কোচন নিপল থেকে তরল বেরনো। বিশেষত, রক্ত মেশানো তরল নিপলের আশপাশের ত্বকে আলসার।
সাধারণত এই সমস্যাগুলিতে ব্যথা থাকে না বললেই চলে। তবে বেশকিছু সময় ব্রেস্ট লাল দেখায়, যন্ত্রণা হয়— ইনফেকশনের মতো লক্ষণ দেখা যায়।
বিরল ক্ষেত্রে ব্রেস্ট ক্যান্সারে ব্রেস্টে কোনও লক্ষণ দেখা না যেতেও পারে। তখন শরীরের অন্য অঙ্গে লক্ষণ দেখা দেয়। এক্ষেত্রে বগলে বা কাঁধে শক্ত পিণ্ড দেখা দিতে পারে, রোগ হাড়ে ছড়িয়ে গিয়ে থাকলে পিঠে বা হাড়ে ব্যথা হয়, ফুসফুসে ছড়িয়ে থাকলে কাশি, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসা
প্রাথমিক পর্যায়ে ব্রেস্ট ক্যান্সার ধরা পড়লে এই সমস্যাকে একদম হারানো সম্ভব। তাই ব্রেস্টে কোনও লক্ষণ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক ক্যান্সার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ইমেজিং টেস্ট এবং বায়োপসি দিয়ে থাকেন। একবার ক্যান্সার নিশ্চিত হলে প্রয়োজন মতো সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি, হরমোনাল থেরাপি, টার্গেটেড থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা চলে।