পরামর্শে সুশ্রুত আই ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের চিকিৎসক ডাঃ নলিনাক্ষী করণ

কালীপুজো বা দিওয়ালিতে ‘ফায়ার ক্রেকার্স’ বা বাজি ফাটানো খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু সেখান থেকে নানান দুর্ঘটনা হতে পারে। তুবড়ি, রংমশাল ইত্যাদি জাতীয় বাজি হঠাৎ ফেটে গিয়ে চোখের নানান ক্ষতি করতে পারে। চোখের চারপাশ আইরিশ, আইলিড পুড়ে যেতে পারে। চোখের ভেতরে কর্নিয়া ইনজুরি, চোখ ফেটে যাওয়া বা গ্লোব র‌্যাপচার, চোখের ভেতরে রক্তক্ষরণ হতে পারে, যাকে ‘হাইফিমা’ বলে। এমনকী সিরিয়াস হেমারেজ হতে পারে, চোখের পর্দা ছিঁড়ে যেতে পারে যাকে রেটিনাল ডিটাচমেন্ট বলা হয়। এমনকী চোখের প্রেশার বেড়ে গিয়ে গ্লকোমাও হতে পারে। এই সকল আঘাত ছোট থেকে বড় যে কোনও বয়সে হতে পারে, তাতে স্থায়ী দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি হয়।
সুতরাং আমাদের যথেষ্ট সচেতনতা বজায় রেখে বাজি ফাটানো উচিত। নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে বাজি ব্যবহার করতে হবে।
সবচেয়ে বেশি আঘাত ছোটরা পায়। সুতরাং কোনও বাচ্চাই যেন বাবা-মা অথবা অভিভাবকের অনুপস্থিতিতে বাজি ব্যবহার না করে। রকেট, তুবড়ি ইত্যাদি যদি একবারে না ফাটে সেটাকে নিয়ে বেশি নাড়াচাড়া যেন না করা হয়। আধপোড়া বাজি জল দিয়ে নিভিয়ে দিন। যাঁদের সর্দিকাশি বা অ্যালার্জির প্রবণতা আছে তাঁদের জন্য শব্দবাজির ধোঁয়া অত্যন্ত ক্ষতিকারক। ধোঁয়ায় থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক থেকে চোখের লিপিড লেয়ার নষ্ট হয় এবং চোখ জ্বালা করে ও চোখ দিয়ে অনবরত জল পড়ে। এই সময়ে ড্রাই আইয়ের জন্য কৃত্রিম চোখের জল ব্যবহার করা উচিত।
সিন্থেটিকের ঢিলেঢালা পোশাক পরে বাজি পোড়াবেন না। সুতির এমন পোশাক পরুন যা প্রয়োজনে তাড়াতাড়ি খোলা যায়। কোনওভাবে আগুনের ফুলকি বা বাজির টুকরো চোখে ঢুকে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিন। চাপ দিয়ে চোখ রগড়াবেন না। নিকটবর্তী চোখের ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। আমাদের দেহে চোখ অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাই যদি কিছু প্রকার আঘাত লাগে তাহলে বিন্দুমাত্র বিলম্ব না করে নিকটবর্তী কোনও চোখের হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করবেন।