উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
গ্রীষ্মের অন্যতম প্রধান সমস্যা হল ডি-হাইড্রেশন এবং সান স্ট্রোক। এছাড়া গরমে জ্বর, পেটের সমস্যাও প্রায়ই হয়ে থাকে। এইসব সমস্যা প্রতিকারের প্রধান উপায় হল জল এবং অন্যান্য তরল খাদ্য বা পানীয় নিয়মিত গ্রহণ। শরীর থেকে ঘামের সঙ্গে জলীয় অংশ বেরিয়ে যায়। তাই জলের ভারসাম্য বজায় রাখতে নানা ভেষজ পানীয় বা শরবত পান করা খুবই উপকারী।
১ ডাবের জল: এটি বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন সফট ড্রিংকস যা সকলের জন্য উপকারী। এই পানীয়ে কোনও সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে না। পুষ্টিগুণও অজস্র। ডাবের জলে শরীরে আয়নের ভারসাম্য বজায় থাকে। হার্ট থাকে সুস্থ। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে করা সম্ভব হয়। রক্তচাপও থাকে আয়ত্তের মধ্যে। এই পানীয়ে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি এজিং গুণ। ক্লান্ত দেহের ইলেকট্রোলাইটস ব্যালেন্স ফিরিয়ে আনে ডাবের জল। এছাড়া চরম ক্লান্তিতে ডাবের জল পান করলে শরীরে হারানো এনার্জি ফিরে আসে।
২ ঘোল: এই পানীয় হালকা এবং সহজপাচ্য। তাই গরমে ঘোল পান করা খুবই উপকারী। ঘোলের সঙ্গে সামান্য জিরে, জোয়ান, এবং সৈন্ধব লবণ চূর্ণ মিশিয়ে পান করলে পেটেরে সবরকম সমস্যায় উপকার হয়। যাঁরা পাইলস-এর সমস্যায় ভুগছেন তাঁদের জন্য তক্র বা ঘোল।
৩ দারুচিনির শরবত: দারুচিনি পাউডার (২ চামচ) এক গ্লাস গরম জলে মিশিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। ঠান্ডা জলে ছেঁকে সামান্য মধু মিশিয়ে অথবা মধু ছাড়াই পান করা যায়। এই পানীয় ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া পানীয়টি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল গুণযুক্ত। এই পানীয় নিয়মিত পান করলে ওজন কমে ও গরমের নানা রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
৪ বার্লির শরবত: একটি পাত্রে জল নিন। আঁচে বসান। এবার যতটা জল নিয়েছেন তার চারভাগের একভাগ বার্লি নিয়ে জলে মেশান ও ফোটান। সামান্য নুন যোগ করতে পারেন। পানীয়টি ঠান্ডা করে ছেঁকে নিয়ে তার মধ্যে অল্প লেবুর রস ও টিচনি মিশিয়ে পান করুন। এই শরবত শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এছাড়া পানীয়টি হজমের সমস্যায় উপকারী, ওজন কমায়, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, গরমের নানা অসুখ থেকে রক্ষা করে।
ফলসা -খেজুর-দ্রাক্ষা শরবত: সমস্ত ফলের দানা বাদ দিয়ে জল মিশিয়ে একসঙ্গে মিশিয়ে নিন ও লেই এর মতো করে ফেলুন। এই পানীয় ছেঁকে পান করতে পারেন আবার এমনিও পান করা যায়। ইচ্ছে হলে এক চামচ মধু এবং সামান্য এলাচ চূর্ণ যোগ করা যায়। এই পানীয় গ্রীষ্মের ক্লান্তি দূর করে। জ্বর এবং দাহ কমে।
৫ চিঞ্চা পানক: চিঞ্চা শব্দের অর্থ হল তেঁতুল। অল্প তেঁতুল নিয়ে ১ থেকে ২ ঘণ্টা সময় নিয়ে জলে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর হাত দিয়ে ঘষে ওই তেঁতুল জলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। পানীয়টি ছেঁকে নিয়ে তার সঙ্গে সামান্য চিনি, নুন, অল্প জিরে এবং গোলমরিচ চূর্ণ মিশিয়ে নিতে হবে। অত্যন্ত উপকারী পানীয়টি খিদে বাড়ায়, গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
৬ খর্জুরাদি মন্থ: খেজুর (দানা ছাড়া), বেদানা, দ্রাক্ষা, আমলকী (দানা ছাড়া), তেঁতুল, ফলসা ফলগুলি সমমাত্রায় নিয়ে তার চারগুণ জল মিশিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সব উপকরণ গরম হয়ে গেলে ভালো করে জলের সঙ্গে মিশিয়ে ছেঁকে নিয়ে হবে। প্রচুর পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই খর্জুরাদি মন্থ প্রবল গ্রীষ্মেও এনার্জি বজায় রাখে। পানীয়টি সহজপাচ্য। তাই খেলাধুলো করে এমন বাচ্চাদের নির্দ্বিধায় দেওয়া যায়।
৭ চন্দন কেশর শরবত: এক লিটার জলে ৫০ গ্রাম চিনি ও ১৫ মিলিলিটার লেবুর রস মিশিয়ে কম আঁচে ফুটিয়ে সিরাপ বানাতে হবে। ঠান্ডা হলে তার মধ্যে ৩ গ্রাম চন্দন পাউডার ভালো করে মিশিয়ে ছেঁকে নিন। সব শেষে সামান্য কেশর জলে মিশিয়ে ওই মিশ্রণ সিরাপে মিশিয়ে নিতে হবে। এই শরবতে ৩ গ্রাম মতো সাইট্রিক অ্যাসিড যোগ করা যায়। এই শরবত পানে শরীর ঠান্ডা হয়, ত্বক ভালো রাখে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।