কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
আতলান্তিক মহাসাগরের বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের মতোই ভারতের ওড়িশাতেও এমন এক কাল্পনিক ত্রিভুজ রয়েছে। ‘ভারতের বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল’ নামে পরিচিত এই ত্রিভুজটি যে তিনটি কাল্পনিক বিন্দু নিয়ে গঠিত হয়েছে, তার একটি বিন্দু রয়েছে ওড়িশার আমারদা রোড এয়ারফিল্ডে, দ্বিতীয় বিন্দুটি রয়েছে ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়ায় এবং তৃতীয় বিন্দুটি বাঁকুড়ার কাছে পিয়ারডোবায়।
হঠাৎ কেন এই অঞ্চলের সঙ্গে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের তুলনা করা হল?
প্রথম থেকে শুরু করা যাক। সালটা ১৯৪৪। ৪ মে-র ঘটনা। সেই সময় আমারদা রোড বিমানঘাঁটির কাছে মার্কিন লিবারেটর যুদ্ধবিমানের সঙ্গে হার্ভার্ড দ্য হাভিল্যান্ড বিমানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। মারাত্মক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় দুই বিমানে থাকা চার অফিসারেরই। এর ঠিক তিন দিনের পর অর্থাৎ ৭ মে ফের দুর্ঘটনা হয়। আরেকটি লিবারেটর যুদ্ধবিমান টেক অফ করার ২০ মিনিটের মধ্যেই ভেঙে পড়ে। মারা যান বিমানে থাকা ১০ জন! এর সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই ১৩ মে আবারও আমারদা রোড থেকে টেক অফ করার পরই ফের ভেঙে পড়ে আরও একটি হাভিল্যান্ড বিমান। তবে, এই দুর্ঘটনায় কেউ মারা যাননি।
এরপরের ঘটনাটি ঘটে ১৯৪৫ সালের ২৬ জুলাই। এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে যায় এদিনই। দু’টি চার ইঞ্জিনের বোমারু বিমান ব্রিটিশ রয়্যাল যুদ্ধবিমান বি-২৪ লিবারেটরের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। নেহাতই প্রশিক্ষণে ব্যস্ত থাকার সময়ই ওই দুর্ঘটনা ঘটে যায়। মারা যান ১৪ জন। শেষবার বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে বছর পাঁচেক আগে— ২০১৮ সালে। সব ক্ষেত্রেই একটা বিষয় দেখা গিয়েছে। আবহাওয়া ছিল চমৎকার। অন্তত দুর্ঘটনা ঘটার মতো নয়। বিমানগুলিতে যান্ত্রিক গোলমালও ছিল না। তাহলে কেন? এই অমোঘ প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি। সেই উত্তর খুঁজে চলেছে কৌতূহলী মানুষ।
১৯৪০ সালে ৩ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা আমারদা বিমানবন্দরটি আজ প্রায় পরিত্যক্ত। কীভাবে ‘মৃত্যু উপত্যকা’য় পরিণত হল এই জায়গাটি, তা নিয়ে বিভিন্ন তত্ত্ব সামনে এনেছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সেই চারের দশকে বিমানবন্দরটি ছিল ব্যস্ততায় ভরা। এই বিমানঘাঁটির কাছেই রয়েছে ঝাড়খণ্ডের জাদুগোরা ইউরেনিয়াম খনি। তেজস্ক্রিয় ইউরেনিয়ামের প্রভাবে বিমানের যন্ত্র বিকল হয়ে যেতে পারে বলে দাবি করেছেন অনেক বিজ্ঞানী। আর সেই কারণেই বিমানের কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। যা থেকে দুর্ঘটনা ঘটা বিচিত্র নয়। যদিও এই তত্ত্বের সারবত্তা আজও প্রমাণিত নয়। প্রায় আট দশকের দীর্ঘ এই ধাঁধার উত্তর কি কোনও দিন মিলবে? সেই উত্তরও বুঝি রয়ে গিয়েছে মহাসাগরের অতলান্ত প্রদেশেই।