রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
যাই হোক, একবার তিনি তাঁর ছাত্রদের মধ্যে একজনকে লক্ষ করলেন যে, সে প্রচণ্ড পরিশ্রমী। ছাত্রটি সন্ধ্যার পরেও তাঁর ক্যাভেনডিশ ল্যাবরেটরিতে থেকে কাজ করে। একদিন রাদারফোর্ড সেই ছাত্রটিকে তাঁর কাছে ডেকে পাঠালেন। ছাত্রটি ভাবল যে, তার মাস্টারমশাই হয়তো তার ল্যাবরেটরিতে কঠিন পরিশ্রমের কারণে খুবই প্রসন্ন।
ছাত্রটি রাদারফোর্ডের কাছে এলে তিনি তাকে প্রশ্ন করলেন, ‘আচ্ছা, তুমি তো ল্যাবে সন্ধ্যার পরেও দেখি কাজকর্ম কর, তাহলে তুমি নিশ্চয়ই খুব ভোরে এসেও কাজ করতে পারবে।’ ছাত্রটি তো অতি উৎসাহের সঙ্গে মাস্টারমশাইকে বলেই ফেলল, ‘হ্যাঁ, স্যার কোনও অসুবিধা নেই। আমি ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্তই কাজ করব।’ রাদারফোর্ড তখন তাকে অত্যন্ত গম্ভীর ভাবে বললেন, ‘সারাদিন তুমি যদি শুধু কাজই কর, তাহলে কাজ করার জন্য যে ভাবনা চিন্তা করার দরকার সেটা কখন করবে?’
রাদারফোর্ড মনে করতেন বৈজ্ঞানিক কাজকর্মের জন্য পরিশ্রম যতটা না প্রয়োজন, তার থেকেও বেশি প্রয়োজন বিজ্ঞান বিষয়ে সঠিক চিন্তা-ভাবনা। একবার লর্ড রাদারফোর্ডকে তাঁর আর্থিক বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেছিলেন, আসলে আমরা বিজ্ঞানীরা টাকা পয়সা তো বিশেষ পাই না, তাই শুধু বসে বসে চিন্তাই করি।’ বিজ্ঞানের বিষয়গুলির মধ্যে তাঁর কাছে পদার্থবিজ্ঞানের স্থান ছিল সবার উপরে। এই কারণে তিনি বলতেন, ‘সমস্ত বিজ্ঞান মানেই হল পদার্থ বিজ্ঞান, আর বাকি সব স্ট্যাম্প কালেকশন।’
রাদারফোর্ড একবার একটি আলোচনা সভায় বক্তৃতা দিতে গিয়েছেন সভা মঞ্চে উঠেই লক্ষ করলেন দর্শকাসনের একেবারে সামনের সারিতেই বসে রয়েছেন আরেক বিশিষ্ট পদার্থ বিজ্ঞানী লর্ড কেলভিন। রাদারফোর্ড ভাবছে, এই রে! আমি তো পৃথিবীর বয়স নিয়ে আমার গবেষণাটা বলব, আর কেলভিন চোখা চোখা সব প্রশ্ন করে বক্তৃতাটাই মাটি করে দেবেন। আসলে পৃথিবীর বয়স সংক্রান্ত ব্যাপারে রাদারফোর্ড আর কেলভিনের ধারণা ছিল পরস্পর বিরোধী। কিন্তু কেলভিন সেদিন রাদারফোর্ডকে বক্তৃতা চলাকালীন বিব্রত করতে পারেননি। কারণ বক্তৃতা চলাকালীন কেলভিন দর্শকাসনে বসেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন।
রাদারফোর্ড চাইতেন পদার্থ বিজ্ঞানকে সকল মানুষের কাছেই সহজ ভাবে উপস্থাপন করতে। এই কারণে তিনি বলতেন যে, ‘কোনও কঠিন তত্ত্বকে তখনই ভালো বলা হবে যদি সেই তত্ত্বকে কোন হোটেলের সার্ভিস বয়কেও বোঝানো যায়।’ তিনি সব সময়েই বিজ্ঞানের যে কোনও তত্ত্বের সরলীকরণে বিশ্বাসী ছিলেন। এই জন্য তিনি বলতেন, সমস্ত পদার্থ বিজ্ঞানই তুচ্ছ বলে মনে হবে, যদি তা বুঝতে পারা যায়। আর না বুঝলে পুরোটাই দুরূহ।