রবিকাকার অবন
পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় : রবীন্দ্রনাথের সাদা ধবধবে দাড়ি। সে দাড়িকে করতে হবে কালো কুচকুচে। পাকা দাড়িকে কাঁচা করা কি আর সহজ কাজ! কে করবেন সে-দুরূহ কাজ? কেন, অবনীন্দ্রনাথ! অনেক মাথা খাটিয়ে রবীন্দ্রনাথের দাড়ির ভোল বদলের একটা উপায় বের করে ফেললেন তিনি। ‘রবিকাকা’ তাঁকে বড্ড ভালোবাসেন, বড় স্নেহময় মানুষ!
ঠাকুরবাড়িতে নিজেদের মতো করে আনন্দ-লাভের দেদার ব্যবস্থা ছিল। ‘খামখেয়ালি সভা’-য় সাহিত্যপাঠের সঙ্গে খাওয়াদাওয়ার এলাহি আয়োজন, ‘ড্রামাটিক ক্লাব’-এ বাড়ির সবাই মিলে নাটক করার আনন্দ! অভিনয় ঘিরে কী হুলস্থুল কাণ্ডই না হতো!
ড্রামাটিক ক্লাবের ব্যবস্থাপনায় একবার অভিনীত হয়েছিল জ্যোতিরিন্দ্রনাথের ‘অলীকবাবু’। হাস্যরসে ভরপুর, ভারী মজাদার নাটক। সে-নাটকে কাকা-ভাইপো দু’জনেই অভিনয় করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন নাম-ভূমিকায়, হয়েছিলেন অলীকবাবু। অবনীন্দ্রনাথ সেজেছিলেন ব্রজদুর্লভ। কেমন ছিল সে চরিত্রটি, তিনি নিজেই জানিয়েছেন, ‘একটা বখাটে বুড়োর’।
কাকা-ভাইপো মিলে নাটক করেছেন আরও। শুধু অভিনয় নয়, অবনীন্দ্রনাথ মঞ্চও সাজিয়েছেন। ‘শারদোৎসব’ নাটকে বক উড়িয়ে দিয়েছিলেন ব্যাকগ্রাউণ্ডে। কুশীলবদের সাজানোর দায়িত্বও পালন করতেন, অবনীন্দ্রনাথ তখন মেকাপম্যান । ‘রবিকাকা’-র পাকা দাড়ি নিয়ে একবার কী বিপত্তি, সত্যিই বিপদে পড়েছিলেন অনুগত ভাইপোটি! অবনীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘এখন, রবিকাকার যত দাড়ি পাকছে সেই পাকা দাড়িতে কালো করতে আমাদের প্রাণ বেরিয়ে যাচ্ছে । কোনও রকম করে তো দাড়িতে কালো রঙ লাগিয়ে অভিনয় কাজ সারা হত কিন্তু অভিনয়ের পরে রাত্তিরে সেই কালো রঙ ওঠানো সে এক ব্যাপার। ভেসলিন তেল মেখে সাবান দিয়ে ঘষে ঘষে তার রঙ ওঠাতে হয়।’
সেবার অভিনীত হল ‘তপতী’। রবীন্দ্রনাথ সেজেছিলেন রাজা। নিজের মেকাপ তিনি নিজেই করতেন। প্রয়োজনে অবনীন্দ্রনাথও হাত লাগাতেন। সাদা দাড়িতে কালো রং লাগাতে গিয়ে খানিক মুখেও লাগিয়ে ফেললেন রবীন্দ্রনাথ। সে-বিপত্তির কথা বলতে গিয়ে অবনীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘আচ্ছা করে গালের উপর কালো রঙ ঘষেছেন — তাতে দাড়ি কালো হয়েছে বটে, সঙ্গে সঙ্গে গালের চামড়া ও মুখের চারদিক কালো হয়ে অতি বিচ্ছিরি একটা ব্যাপার হল দেখতে।’
রবীন্দ্রনাথের পুত্রবধূ, যাঁকে কবি বলতেন ‘মামণি’, সেই প্রতিমা দেবীর দুশ্চিন্তা কবির এই কালি মাখামাখিতে। চিন্তিত পুত্রবধূর কণ্ঠে শোনা গেল, ‘রোজ এই রাত্তিরে জল ঘাঁটাঘাঁটি করে শেষে বাবামশায়ের একটা অসুখবিসুখ করবে।’
‘রবিকাকা’-র সাদা দাড়ি কালো হবে, আবার রং মেখে মুখও কালো হবে না, কী করে তা করবেন, ভাবতে গিয়ে অবনীন্দ্রনাথ পড়লেন মহাফ্যাসাদে! রাতের ঘুম উধাও। বিছানায় শুয়ে শুয়ে বিস্তর ভাবাভাবি, শেষে মুশকিল আসান। সকালে ঘুম থেকে উঠেই কোথায় প্রতিমা দেবী, শেষে তাঁর দেখা পেয়েই জানালেন, ‘তোরা মেয়েরা যে অনেক সময়ে মাথায় কালো রঙের গজের কাপড় দিস – তাই গজখানেক আনা দেখি ।’
আনা হল তেমন কাপড়। অবনীন্দ্রনাথ তাঁর ‘রবিবকাকা’কে বললেন, ‘তুমি আজ আর রঙ মেখো না দাড়িতে। আমি তোমার দাড়ি কালো করে দেব।’ শুধু মুখে বলা নয়, কাজে করে দেখালেন অবনীন্দ্রনাথ। এমন নিখুঁত করে গোঁফে দাড়িতে কালো কাপড় লাগিয়ে দিলেন যে স্টেজে আলো পড়তেই সবাই অবাক! বলাবলি করল, কী সুন্দর, চমৎকার কালো দাড়ি হয়েছে কবির! দারুণ বুদ্ধি অবনের, খুশি হলেন তাঁর ‘রবিকাকা’। দাড়ির রং তোলা কী সহজ কাজ! সে ঝুটঝামেলা থেকে বাঁচালেন অবনীন্দ্রনাথ।
রবীন্দ্রনাথের মেজদা সত্যেন্দ্রনাথ থাকতেন বিরজিতলার বাড়িতে। বিরজিতলাতেও মাঝেমধ্যে অভিনয়ের আয়োজন হতো। একবার হয়েছিল ‘শারদোৎসব’। রবীন্দ্রনাথের তখন বয়েস হয়েছে, পার্ট মনে রাখতে পারেন না। অবনীন্দ্রনাথেরও পার্ট ভুলে যাওয়ায় দুর্নাম! একটা উপায় বার করলেন অবনীন্দ্রনাথ। দু’জন প্রম্পটার নামিয়ে দিলেন স্টেজে। আড়াল থেকে নয়, অবনীন্দ্রনাথের কারসাজিতে কুশীলবদের কাছাকাছি পাশাপাশি থেকে, সকলের অগোচরে কৌশলে পার্ট বলে দিলেন তারা ।
ভারী মজার, নীলচিটে কালচিটে পাতলা কাপড়ের বোরখার মতো তৈরি করে পরানো হল প্রম্পটারদের। অবনীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘চোখের আর মুখের জায়গাটা একটু ফাঁক রাখলুম অবিশ্যি। হাতে দিলুম বড়ো একটা বাঁশের ডাণ্ডা। সোনালি রুপোলি কাগজ দিয়ে চক্বোর মতো লাগিয়ে দিলুম সেই ডাণ্ডাতে। ...ভিতর দিকে রইল বইয়ের পাতা সুতো দিয়ে আটকানো। ...ডাণ্ডা হাতে নিয়ে দুইজন প্রম্পটার দু’পাশ থেকে স্টেজের অ্যাকটরদের পিছনে ঘুরে ঘুরে প্রম্পট করে দিতে লাগল। আমাদের বড়ো সুবিধা হয়ে গেল, আর ভুল নেই, অভিনয় চলল।’
শুধু নাটকের নয়, নানা কাজেই ‘রবিকাকা’-র সঙ্গী ছিলেন তাঁর স্নেহের অবন। রবীন্দ্রনাথই প্রথম উপলব্ধি করেছিলেন, মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে থাকা ছেলেভুলানো ছড়ার গুরুত্ব কতখানি! ছড়া-সংগ্রহে অবনীন্দ্রনাথকে কাজে লাগিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ছেলেভুলানো ছড়া নিয়ে অবনীন্দ্রনাথেরও ছিল খুব আগ্রহ-কৌতূহল। ‘রবিকাকা’-র ডাকে সাড়া দিয়ে সানন্দে নেমে পড়েছিলেন ছড়া-সংগ্রহে।
দশ বছরের ছোট এই ভ্রাতুষ্পুত্রকে ঘিরে রবীন্দ্রনাথের একটা নির্ভরতার জায়গা ছিল। অবনীন্দ্রনাথের আঁকাআঁকির তিনি ছিলেন পরম গুণগ্রাহী । অবনীন্দ্রনাথের আঁকা ছবি দিয়ে বেরিয়েছে রবীন্দ্রনাথের ‘চিত্রাঙ্গদা’। তখনও অবনীন্দ্রনাথ ছবি আঁকতে তেমন চৌকস হয়ে ওঠেননি। বছর কুড়ি মোটে বয়েস। হয়তো তাঁকে উৎসাহিত করার জন্যই ছবির বরাত দিয়েছিলেন ‘রবিকাকা’। অবনীন্দ্রনাথ নিজেই বলেছেন সে-কথা, ‘চিত্রাঙ্গদা তখন সবে লেখা হয়েছে। রবি’কা বললেন ছবি দিতে হবে। আমার তখন একটু সাহসও হয়েছে, বললুম রাজী আছি, ... এখন অবশ্য সে সব ছবি দেখলে হাসি পায়।’
ক্রমেই পরিণত হয়ে ওঠা অবনীন্দ্রনাথের ‘চিত্রাঙ্গদা’-র ছবি দেখে হাসি পেলেও রবীন্দ্রনাথের বইয়ের প্রথম চিত্রাঙ্কন করার কৃতিত্ব অবশ্য তাঁরই প্রাপ্য। ‘রবিকাকা’-র বেশ কটি পোট্রেট এঁকেছিলেন। করেছিলেন তাঁর কুটুম-কাটাম। তাঁকে নিয়ে লিখেছেন একাধিক স্মৃতি-মেশানো লেখাও।
ছোটদের কথা ভেবে অবনীন্দ্রনাথের যে লেখালেখি, শিশুসাহিত্যে খ্যাতির শিখরে পৌঁছানো, তা ‘রবিকাকা’ অনুপ্রাণিত না করলে আদৌ সম্ভব হতো কি, সে-প্রশ্ন তো রয়েই যায়!
অবনীন্দ্রনাথ মুখে মুখে ভারী সুন্দর গল্প বলতে পারতেন, তাঁর সে-দক্ষতা চোখ এড়িয়ে যায়নি রবীন্দ্রনাথের। বাড়ির ছোটরা সাহিত্য রচনা করবে, তাদের অনুশীলনের একটি জায়গা হবে ভেবে জ্ঞানদানন্দিনী দেবী ‘বালক’ পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন। বউঠানের সম্পাদনায় প্রকাশিত সে-পত্রিকা রবীন্দ্রনাথই পুরোপুরি সামলাতেন। ততদিনে ‘বালক’ বন্ধ হয়ে গেছে। হঠাৎই এরপর ঠিক করা হল, পরিবারের উদ্যোগে ‘বাল্যগ্রন্থাবলী’ সিরিজের কয়েকটি বই পরপর ছাপা হবে। তখন পর্যন্ত অবনীন্দ্রনাথ ছোটদের কথা ভেবে এক লাইনও লেখেননি। রবীন্দ্রনাথই এই সিরিজের পরিকল্পক, তাঁর বড় ইচ্ছে প্রথম বইটি আর কেউ নন, লিখুন তাঁর অবন। একদিন তাঁকে কাছে ডেকে বললেন সে-কথা, দিলেন ভরসা, ‘তুমি লেখ-না; ভাষার কিছু দোষ হয় – আমিই তো আছি।’ ‘রবিকাকা’ বলছেন, অবনের কাছে সে-কথার অনেক গুরুত্ব। মনে ‘বড় জোর’ পেলেন। একদিন সাহস করে সত্যিই লিখতে বসে গেলেন। ‘একঝোঁকে’, না থেমে লিখে ফেললেন ছোট্ট একটি বই।
সে-বইয়ের নাম ‘শকুন্তলা’। লিখেই ছুটলেন রবিকাকার কাছে । রবীন্দ্রনাথ মন দিয়ে পড়লেন আগাগোড়া। ‘পল্বলের জল’ কথাটা সংস্কৃত বলেই বদলাতে গিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত আর বদলালেন না। ‘না থাক’ বলে রেখে দিলেন। রবিকাকার স্বীকৃতি পেয়ে কী আনন্দ, কী আনন্দ! আনন্দ ধরা পড়েছে অবনীন্দ্রনাথের লেখায়, ‘সেই প্রথম জানলুম আমার বাংলা বই লিখবার ক্ষমতা আছে।’
এরপরই যেন ছোটদের লেখক হিসেবে অবনীন্দ্রনাথ নিজেকে আবিষ্কার করলেন। ছবি আঁকিয়ে হিসেবে তখন তিনি খ্যাতির শিখরে, শুরু হল তাঁর নতুন পথ-চলা। পটাপট লিখে ফেললেন আরও কয়েকটি বই। ঠাকুরবাড়ির ‘বাল্যগ্রন্থাবলী’র প্রথম বই ‘শকুন্তলা’। দ্বিতীয় বই রবীন্দ্রনাথের ‘নদী’। পরের বইটি অবনীন্দ্রনাথের, প্রকাশিত হল ‘ক্ষীরের পুতুল’। ‘ক্ষীরের পুতুল’ প্রকাশের আড়ালে ‘রবিকাকা’-র কাছে নয়, অবনীন্দ্রনাথের ঋণ রয়েছে কাকিমার কাছে। কবির কথা মতো কবির স্ত্রী মৃণালিনী দেবী এর-তার থেকে জানা-অজানা রূপকথার গল্প লিখে রাখতেন একটি খাতায়। সেই খাতা থেকে ‘ক্ষীরের পুতুল’-এর মূল গল্পটি সংগ্রহ করেছিলেন অবনীন্দ্রনাথ।
অবনীন্দ্রনাথের সাহিত্য- সৃষ্টির ক্ষেত্রে যেমন রবীন্দ্রনাথ ভূমিকা নিয়েছিলেন, তেমনই ‘রবিকাকা’-র কোনও কোনও রচনার আড়ালে রয়েছে অবনীন্দ্রনাথের সক্রিয়তা। অবনীন্দ্রনাথ -গগনেন্দ্রনাথ ভূমিকা না নিলে ‘বিসর্জন’ নাটক রবীন্দ্রনাথ লিখতেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। ‘বউঠাকুরানীর হাট’ উপন্যাসটি-র বর্ণনা-অংশ কেটেছেঁটে নাটকে রূপ দিতে চেয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ-গগনেন্দ্রনাথ। ইচ্ছে ছিল কাটাছা্ঁটা ‘বউঠাকুরানীর হাট’- এর অভিনয়। রবীন্দ্রনাথের কাছে সে-খবর পৌঁছনো মাত্র তলব করলেন। জানতে চাইলেন ব্যাপার কী, দেখতে চাইলেন নাট্যরূপ দেওয়া খাতা। অবনীন্দ্রনাথ ‘ঘরোয়া’তে রবিকাকার খাতা দেখতে চাওয়ার ঘটনাটি জানিয়েছেন, ‘দেখে বললেন, এ চলবে না—আমি নিয়ে যাচ্ছি খাতাটা, শিলাইদহে বসে লিখে আনব, তোমরা এখন আর কিছু কোরো না।’
সত্যিই রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে থেকে ফিরেছিলেন আস্ত একটি নাটক নিয়ে। ‘বউঠাকুরানীর হাট’-এর কাহিনি নিয়েই সে- নাটকটি লেখা, ‘বিসর্জন’।
বিশ্বের দরবারে রবীন্দ্রনাথকে পরিচিত করার পেছনে বড় ভূমিকা রয়েছে রোটেনস্টাইনের। সেই রোটেনস্টাইনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ। এ-ব্যাপারে গগনেন্দ্রনাথেরও ভূমিকা ছিল।
রবিকাকার সঙ্গে কত না আনন্দমুখর সময় কেটেছে অবনীন্দ্রনাথের। কখনও রবীন্দ্রনাথ গান ধরেছেন, গানের সঙ্গে এস্রাজ বাজিয়েছেন অবনীন্দ্রনাথ। কলকাতায় তখন মহামারী। প্লেগ-কবলিত শহরে আর্ত মানুষের সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সে-সময় পাশে ছিলেন অবনীন্দ্রনাথ। ছিলেন আরেকজন, তিনি ভগিনী নিবেদিতা ।
অবনকে কাছে পেলে ভারী খুশি হতেন রবীন্দ্রনাথ। তখন জোড়াসাঁকো ছেড়ে ডানলপের কাছে দ্বারকানাথ গুপ্তের বাগানবাড়িতে সপরিবারে থাকতেন অবনীন্দ্রনাথ। অবন ছাড়া সব ফাঁকা-ফাঁকা। তাই জোড়াসাঁকো থেকে তাঁকে দেখতে ক’দিনের জন্য গুপ্তনিবাসে গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সে-সময় এক কাণ্ড ঘটে। রাতদুপুরে চুরির আশায় চোর এসেছিল গুপ্তনিবাসে। হঠাৎ মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায় রবীন্দ্রনাথের। খুটখাট কীসের শব্দ! রবীন্দ্রনাথ বেরিয়ে পড়লেন ঘরের বাইরে। পাশের ঘরে চোরবাবাজি তখন মহানন্দে তল্পিতল্পা বাঁধছে। হঠাৎ তার সামনে এসে দাঁড়ালেন দীর্ঘদেহী এক দাড়িওলা ব্যক্তি। আলো-আঁধারিতে রবীন্দ্রনাথকে বাড়ির দারোয়ান ভেবে চোরবাবাজি তক্ষুনি জিনিসপত্র ফেলে পড়িমরি করে দৌড় দিল! রবীন্দ্রনাথকে দারোয়ান ভেবে অন্তত কেউ কখনও ভয় পায়নি। এ এক নিদারুণ অভিজ্ঞতা!
রবীন্দ্রনাথ প্রয়াণের পর আরও দশ বছর বেঁচেছিলেন অবনীন্দ্রনাথ। সে দিনগুলি ছিল বেদনাবিধুর। যেদিন রবীন্দ্রনাথ মারা গেলেন , রোদনভরা সেই কালবেলায় কোলাহল থেকে দূরে , নির্জনে বসে অবনীন্দ্রনাথ এঁকেছিলেন কবির অন্তিমযাত্রার ছবি। ছবির নীচে লিখেছিলেন ‘সমুখে শান্তি পারাবার’। ‘রবিকাকা’-র, ভালোবাসার ‘রবিকা’-র স্মৃতি আঁকড়ে বাকি দিনগুলি কাটিয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ। ভালোবাসার মানুষ হারিয়ে গেলে কি ভালো থাকা যায়!
09th May, 2021