ভৌতবিজ্ঞানে সব অধ্যায়কেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে পরামর্শে হিন্দু স্কুলের ভৌতবিজ্ঞানের শিক্ষক অনিন্দ্য দে। কোভিড পরিস্থিতির জন্য পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এই বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার পাঠ্যসূচি কিছুটা কমিয়ে এনেছেন। ভৌতবিজ্ঞানও তার ব্যতিক্রম নয়। তোমাদের দশম শ্রেণির সম্পূর্ণ পাঠক্রম থেকে তাপ, পরমাণুর নিউক্লিয়াস, অজৈব রসায়ন, ধাতুবিদ্যা আর জৈব রসায়ন-এর অংশ এবারের পরীক্ষার জন্য বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলত, অধ্যায় অনুযায়ী নম্বরের বিভাজনেরও কিছু পরিবর্তন হয়েছে। তবে একটা কথা কিন্তু ভুললে চলবে না যে-অধ্যায়গুলো পরীক্ষায় থাকছে, তাদের সবগুলো থেকেই প্রশ্ন থাকবে, এবং সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নের উত্তরই তোমাদের লিখতে হবে। সুতরাং, এবারের পরীক্ষার জন্য বেছে নেওয়া অধ্যায়গুলোর কোনওটাকেই ছেড়ে যাওয়া চলবে না। তবে তার মধ্যে থেকে কিছু কিছু বিষয়ের উপরে একটু বেশি নজর দিলে হয়তো তোমরা পাঠ্য-বিষয়ের আয়তনটাকে কিছুটা কমিয়ে আনতে পারবে। তোমাদের জন্য সেরকম একটা তালিকা নীচে দেওয়ার চেষ্টা করছি। অধ্যায়ের নামের পাশের বন্ধনীতে ওই অধ্যায় থেকে কত নম্বরের প্রশ্ন করা হবে সেটা লেখা থাকছে। কিন্তু মনে রেখো, এটা কোনও সাজেশন নয়। 
পরিবেশের জন্য ভাবনা (৫): বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের উচ্চতাভেদে উষ্ণতা ও চাপের তারতম্য, গ্রিন হাউস এফেক্ট, বিশ্ব উষ্ণায়ন, জীবাশ্ম জ্বালানির তাপন মূল্য
গ্যাসের আচরণ (৮): বয়েল ও চার্ল্‌সের সূত্র, লেখচিত্র, অ্যাভোগ্যাড্রো সূত্রের বিবৃতি ও প্রয়োগ, গতিতত্ত্বের ধারণা থেকে ব্যাপনের ব্যাখ্যা এবং চাপ ও আয়তনের উপর উষ্ণতার প্রভাব
রাসায়নিক গণনা (৪): এই অধ্যায় থেকে অঙ্ক তো তোমাদের করতেই হবে। তার সঙ্গে আণবিক ওজন ও বাষ্প ঘনত্বের সম্পর্কটা গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। 
আলো (১৭): গোলীয় দর্পণের ক্ষেত্রে R = 2f প্রমাণ, উত্তল ও অবতল দর্পণে প্রতবিম্ব গঠনের চিত্র, প্রিজমের বিচ্যুতি কোণ ও ন্যূনতম চ্যুতি, বিচ্ছুরণ, আকাশের নীলিমা, মানুষের চোখের ত্রুটি ও প্রতিকার
চলতড়িৎ (১৭): রোধাঙ্ক ও পরিবাহিতাঙ্ক, কৃতকার্য, বার্লো চক্র, ফ্যারাডের সূত্র, CFL ও LED, অ্যাম্পিয়ারের সন্তরণ নিয়ম, ফ্লেমিং-এর বামহস্ত নিয়ম 
পর্যায় সারণি (১০): আধুনিক পর্যায় সূত্র, পর্যাবৃত্ত ও অপর্যাবৃত ধর্ম,  শ্রেণিগত ও পর্যায়গত অবস্থান (ক্ষার ধাতু, ক্ষারীয় মৃত্তিকা ধাতু, হ্যালোজেন ও নোব্‌ল গ্যাস), শ্রেণি ও পর্যায় বরাবর পরিবর্তন (তড়িৎ ঋণাত্মকতা, জারণ ধর্ম, বিজারণ ধর্ম, পরমাণুর আকার)
আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন (১৫): আয়নীয় কঠিনের সাধারণ ধর্ম (বিশেষত তড়িৎ পরিবাহিতা), সঙ্কেত ওজন, লুইস ডট চিত্র
তড়িৎ প্রবাহের রাসায়নিক ক্রিয়া (১৪): মৃদু ও তীব্র তড়িৎ বিশ্লেষ্য, তড়িৎ বিশ্লেষ্য ও ধাতব পরিবাহীর তুলনা, ধাতু নিষ্কাশন, তড়িৎ লেপন এর সঙ্গে আরও কয়েকটা বিষয় বলে রাখি। গ্যাসের আচরণ, আলো ও চলতড়িৎ অধ্যায় থেকে তোমাদের গাণিতিক সমস্যা সমাধানের অভ্যেস করে যেতে হবে। আলোসংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর লেখার সময়ে ছবি আঁকার চেষ্টা করবে। চলতড়িৎ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর লেখার ক্ষেত্রেও বর্তনী আঁকতে হবে। আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন বিষয়ক প্রশ্নের উত্তরে লুইস ডট গঠনের ছবি এঁকে দেওয়ার চেষ্টা করবে। আর যেকোনও রাশির এককের দিকেও তোমাদের খুব ভালো করে লক্ষ রাখতে হবে। সেই সঙ্গে পরীক্ষার খাতা পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করবে। হাতের লেখা যেন পাঠযোগ্য হয়। পাতার দু’ ধারে যেন মার্জিন থাকে। ক্রম অনুযায়ী উত্তর লিখবে। প্রয়োজনের বেশি উত্তর লিখবে না। সকলের জন্য রইল অনেক শুভ কামনা।