পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
কোভিড মহামারীর প্রভাবে বহুদিন বিদ্যালয়ের নিয়মিত পঠন-পাঠন বন্ধ ছিল। অনলাইন ক্লাস চালু থাকলেও সবাই হয়তো সেই সুবিধা গ্রহণ করতে পারনি। তাই তোমরা হয়তো চিন্তিত, কীভাবে বিষয়গুলি সম্পূর্ণ করে পরীক্ষায় ভালো ফল করবে। পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক শিক্ষাপর্ষদ তোমাদের কথা ভেবে ইতিপূর্বে সিলেবাস বা পাঠক্রমের কিছুটা ভার লাঘব করেছে তা তোমরা সকলেই জানো।
মাধ্যমিকে ভূগোলের অধ্যায় অনুযায়ী নম্বর বণ্টনের তালিকায় সামান্য কিছু রদবদল হয়েছে। হ্রাসপ্রাপ্ত পাঠক্রমে প্রশ্নমান ১-এর অন্তর্গত বহুবিকল্পভিত্তিক ও অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নের সংখ্যা ও মান পূর্বের ন্যায় হলেও প্রাকৃতিক ভূগোলের অংশ হ্রাস ও পরিবেশ ভূগোল বাদ হওয়ার কারণে প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রশ্নের সংখ্যা আঞ্চলিক ভূগোল অংশ (৫নং অধ্যায়) অপেক্ষা কম হয়েছে। তাই ৫নং অধ্যায় মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। ভূগোল বিষয়ে ভালো নম্বর করতে হলে কতকগুলি কথা মনে রাখতে হবে—
১. পাঠ্যপুস্তকটি প্রথমে ভালো করে বুঝে পড়বে, প্রয়োজনে আরও দু-একটি বইয়ের সাহায্য নাও। টেস্টপেপার থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের উত্তর অনুশীলন করবে। তবে মনে রাখবে উত্তর মুখস্থ করার চেষ্টা না করাই শ্রেয়, যত বেশি অনুশীলন করবে তত বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে।
২. বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নের ক্ষেত্রে প্রশ্ন ও তার বিকল্পগুলি এবং অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নগুলি ভালো করে পড়তে হবে। তার জন্য অযথা তাড়াহুড়ো করার প্রয়োজন নেই, এতে ভুল হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
ক. শুদ্ধ বা অশুদ্ধ লেখার ক্ষেত্রে পুরো বাক্যটি লিখে শুদ্ধ বা অশুদ্ধ লিখলে ভালো, কারণ অনেক সময় প্রশ্নের নম্বর লিখতে ভুল হলে শুধু শুদ্ধ বা অশুদ্ধ লেখা থাকলে নম্বরের ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে।
খ. শূন্যস্থানের ‘—’ চিহ্নিত জায়গায় একাধিক শব্দ ব্যবহার না করে সঠিক শব্দটি চয়ন করে লেখো, প্রয়োজনবোধে বাক্যটি সম্পূর্ণ করতে শব্দের সঙ্গে বিভক্তি যোগ করতে পারো।
গ. একটি বা দুটি শব্দে উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বাক্য না লিখলেও হবে।
ঘ. সংক্ষিপ্ত বা সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নের উত্তরের ক্ষেত্রে কোনও প্রশ্নের উত্তর যথাযথ না হলে ওই প্রশ্নের ‘অথবা’ প্রয়োজনবোধে লিখতে পারো। এক্ষেত্রে একই প্রশ্নের যে উত্তরটি বেশি নম্বর হবে সেটিই গ্রহণীয় হয়।
৩. সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নের সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকলেও ৫নং অধ্যায়ের প্রশ্ন সংখ্যা বেশি। এক্ষেত্রেও ভালো করে পড়বে ও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর অনুশীলন করবে। অতিরিক্ত লিখবে না, উদাহরণ দিতে পারো, তবে আঁকার প্রয়োজন নেই উল্লেখ না থাকলে।
৪. সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নের সংখ্যা অপরিবর্তিত আছে। বৈশিষ্ট্য, পার্থক্য এই ধরনের প্রশ্নের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন তিনটি উত্তর লিখতেই হবে। অতিরিক্ত পয়েন্ট বা পার্থক্য দিতে পারো। প্রয়োজনানুযায়ী অঙ্কন দিতে হতে পারে, মনে রাখবে বেশি লিখলে তোমাদেরই সময় নষ্ট হবে। তখন অনেকক্ষেত্রেই সময়ের অভাবে অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর সংক্ষিপ্ত করতে হবে।
৫. ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক ভূগোলের অংশ থেকে দুইটি প্রশ্ন হবে। পূর্বে ১, ২, ৩নং অধ্যায় মিলিয়ে ৪টি প্রশ্ন হতো, তবে এবার শুধু ১নং অধ্যায় থেকে ৪টি ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নের মধ্যে ২টি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। তাই প্রাকৃতিক ভূগোলের ১ নম্বর অধ্যায়টি অনেক বেশি খুঁটিয়ে পড়তে হবে। অর্থনৈতিক ভূগোল অংশে ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন পূর্বের মতো একই সংখ্যায় পাবে।
৬. হাতের লেখা ও আঁকা পরিষ্কারভাবে করবে। প্রয়োজন হলে Colour Pen বা Pencil ব্যবহার করতে পারো। তবে লাল রং বাদে অন্যান্য Colour ব্যবহার করবে। পয়েন্টের heading দিলে ভালো হয় ও উত্তরের প্রধান অংশকে underline বা highlight করতে পারো।
৭. মানচিত্র চিহ্নিত করণের ক্ষেত্রে মানচিত্রের মধ্যে প্রতীক বা চিহ্ন ও প্রশ্নের নম্বর লিখবে এবং মানচিত্রের পাশে নির্দেশিকা করে চিহ্ন বা প্রতীক নামসহ লিপিবদ্ধ করবে। এক্ষেত্রে রঙের ব্যবহার করতে পারো। তবে মানচিত্রের মধ্যে চিহ্ন ও নাম দুটি লিখলে অনেক সময় জবরজঙ্গ বা Clumsy হয়ে যেতে পারে।
সর্বশেষে বলা যায়, হ্রাসপ্রাপ্ত পাঠক্রমের অধ্যায়সমূহ তোমরা খুব গুরুত্ব সহকারে খুঁটিয়ে পড়ো। ২০২০ সালের অন্তর্ভুক্ত অধ্যায়ের এসে যাওয়া প্রশ্নসমূহে কম জোর দিয়ে অধ্যায়ের বাকি অংশ থেকে প্রশ্ন-উত্তর সময় ধরে লেখার অভ্যাস করো। তাহলে তোমাদেরকে পরীক্ষার হল-এ সময়ের অভাবে প্রশ্ন ছেড়ে আসতে হবে না। এসময় পরীক্ষা নিয়ে অধিক চিন্তিত না হয়ে প্রতিদিন আঁকা, লেখা, পড়ার অভ্যাস চালিয়ে গেলে কাঙ্ক্ষিত নম্বরে পৌঁছতে পারবে।