পরামর্শে বালিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষক অরণ্যজিৎ সামন্ত।

মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে। তার রুটিন দেওয়া হয়েছে। এটাই খুব ভালো খবর। যে অবস্থার মধ্যে আমরা ছিলাম, সেখান থেকে বেরনোর আলো দেখা যাচ্ছে, স্বাভাবিক হয়ে আসার উৎসাহ আসছে, এটাই অনেক। লকডাউন কার্যত পড়াশোনা থেকে পরীক্ষা ব্যবস্থাকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। পড়াশোনা চালানো গেলেও পরীক্ষা নেওয়ার অনেক অসুবিধা দেখা গেছে। সেই পরীক্ষা, যেটা আমাদের পড়াশোনাকে চালিয়ে নিয়ে যায় বলে আমরা মনে করি। প্রশ্ন আর উত্তর, ক্রমাগত সমাধান করতে করতে আর পরীক্ষা দিতে দিতে এগনোর চর্চা। সেটা থেকে সরে গিয়ে, পরীক্ষাটাকে কিছুটা দূরে ঠেলে এইসময়ে অনেকেই মন দিয়েছে বইটাকে ভালো করে পড়ায়। তারা পড়েছে, নিজেদের তৈরি করেছে। সেটাই আসল পড়া। তারা বুঝেছে।
সিলেবাস যেমন হোক, প্রস্তুতি থাকলে আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সহজ যুক্তিটা হল, নম্বর এক রেখে যদি সিলেবাস কমে, তাহলে ধরে নিতে হবে, ছোট হয়ে যাওয়া সিলেবাসের অধ্যায়গুলি থেকে আরও বেশি প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বাড়ল। কাজেই তখন আরও খুঁটিয়ে পড়তে হবে, এটাই নিয়ম। বিস্তার কমলে গভীরতা বাড়বে, এটাই দস্তুর। তোমরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছ, জানি। 
এখনও বেশ কিছুটা সময় তোমাদের হাতে আছে। বহুবার একই বিষয় পড়তে পড়তে নিশ্চয় ক্লান্তি আসছে। তাই যদি হয়, যারা আগামীদিনে বিজ্ঞান নিয়ে পড়বে ভাবছ, তারা একাদশ শ্রেণীর পড়াশোনা শুরু করতে পারো। যারা অন্যকিছু পড়বে, সেভাবে প্রস্তুত হও। কিছুটা এগিয়ে রাখলে সুবিধা হবে। আবার পরীক্ষার আগে পুরনো পড়া দেখে নিলেই হবে। এই বাড়তি সময় যেন কাজে লাগে। ক্লান্তিতে নষ্ট না হয়। 
পৃথিবীর মহামারীর ইতিহাস পড়ে দেখো, করোনা ভাইরাসের চাইতে বহুগুণ ক্ষতিকারক নানা সংক্রমণ আগেও এসেছে। মানুষ বিপদে পড়েছে। পরে, আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে সবকিছু। স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আমরাও মনে রাখিনি সেই ইতিহাস। তোমাদের তাই বলছি, আশাহত হওয়ার কিছু নেই। দুশ্চিন্তা না করে, সামনের দিকে তাকাতে হবে। ‘আমরা চলি সমুখপানে, কে আমাদের বাঁধবে, রইল যারা পিছুর টানে, কাঁদবে তারা কাঁদবে’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই কথাগুলি মনে রেখো।