পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
পাঠ্যবই ও ব্যাকরণ খুঁটিয়ে পড়তে হবে। পরামর্শ দিচ্ছেন হিন্দু স্কুলের বাংলার শিক্ষক স্বাগত বিশ্বাস।
দেখতে দেখতে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা প্রায় চলে এল। তাই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এই বিষয়গুলি খেয়াল রেখো—
১. ১নং দাগের বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নগুলোর উত্তর দাগ নং অনুযায়ী পর পর লেখো। গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ (২×৩)= ৬ নম্বর ও ব্যাকরণ থেকে ৮
নম্বর =১৭।
২. ২নং দাগে চারটি বিভাগ থাকে। গল্প থেকে ৪টি, কবিতা থেকে ৪টি, প্রবন্ধ ৩টি এবং ব্যাকরণ থেকে ৮টি প্রশ্ন=১৯ নম্বর।
৩. ৩নং দাগের গল্প ও কবিতা থেকে আলাদা আলাদা ভাবে দুটি করে চারটি প্রশ্ন থাকে। গল্প ও কবিতা থেকে যেকোনও একটি করে মোট দুটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে কমবেশি ৬০টি শব্দে।
গল্প থেকে ‘বহুরূপী’, ‘পথের দাবী’ ও ‘অদল বদল’ এবং কবিতা থেকে ‘আফ্রিকা’,‘অসুখী একজন’, ‘প্রলয়োল্লাস’, ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ বেশি জোর দাও।
৪. ৪নং, ৫নং ও ৬নং দাগ থেকে যথাক্রমে গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ প্রতিটি থেকে দুটি বিকল্পের মধ্যে থেকে বেছে নিয়ে কম-বেশি ১৫০ শব্দে মোট ৩টি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে।
গল্প: ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে তপন চরিত্র, নামকরণ, জ্ঞানচক্ষু শব্দের অর্থ অনুসারে গল্পে দুবার কেমন করে তপনের বোধোদয় হল এবং ‘পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?’, কিংবা ‘শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন’ এমন সব তাৎপর্যপূর্ণ অংশ তৈরি হও। ‘অদল বদল’ গল্প থেকে অমৃত ও ইসাবের মিল ও অমিল, নামকরণ, দুই বন্ধুর অকৃত্রিম বন্ধুত্ব, আত্মত্যাগ একেই কীভাবে খাঁটি জিনিস বলে ইসাবের বাবা মনে করেছেন।
‘পথের দাবী’ উপন্যাসাংশ থেকে গিরিশ মহাপাত্রর অদ্ভুত চেহারা, বেশ-ভূষা, শখ-শৌখিনতা এবং অপূর্ব’র উপলব্ধি। একই সঙ্গে অপূর্ব চরিত্র, মহাপাত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কথোপকথন এবং পরাধীন দেশে অবিচারের শিকার হওয়ার প্রসঙ্গগুলো গুরুত্ব দাও।
কবিতা: ‘অসুখী একজন’ কবিতায় যুদ্ধের ভয়াবহ পরিণতি এবং অপেক্ষায় মেয়েটির পরিচয় ও তার মৃত্যু হল না কেন?
‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় কাদের এবং কেন কবি সংঘবদ্ধ হয়ে থাকার উপর জোর দিয়েছেন।
‘অভিষেক’ কবিতা থেকে ইন্দ্রজিৎ চরিত্র, দেবী লক্ষ্মী ও রাবণের সঙ্গে তার কথোপকথন, ইন্দ্রজিতের বীরত্বের প্রসঙ্গে পৌরাণিক ঘটনা।
‘প্রলয়োল্লাস’ থেকে কেন ও কাদের জয়ধ্বনি কবি করেছেন, সুন্দর কেমন করে ও কীভাবে আসে?
প্রবন্ধ : কালির কলম আবিষ্কারের কাহিনী, প্রাবন্ধিকের প্রথম ফাউন্টেন কলম কেনার অভিজ্ঞতা, ‘আশ্চর্য সবই অবলুপ্তির পথে’, ‘সব মিলিয়ে লেখালেখি রীতিমতো ছোটখাট একটা অনুষ্ঠান’, ‘কলমকে বলা হয় তলোয়ারের চেয়ে শক্তিধর’।
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চার কী কী বাধা আছে এবং তার জন্য প্রাবন্ধিকের কী পরামর্শ, ‘শব্দের ত্রিবিধ কথা’, ‘এতে রচনা উৎকট হয়’।
৫. ৭নং দাগের নাটকের দুটির মধ্যে একটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে । ওয়াটস ও মঁসিয়ে লা’র সঙ্গে সিরাজের কথোপকথন ও রাজ কর্মচারীদের সঙ্গে সিরাজের কথোপকথন, সিরাজ চরিত্র, লুৎফা চরিত্র, ‘জানি না, আজ কার রক্ত সে চায়। পলাশি, রাক্ষসী পলাশি!’।
৭. ৪নং দাগের জন্য সহায়ক পাঠ ‘কোনি’ থেকে চারটি প্রশ্নের মধ্যে দুটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। কোনি চরিত্র, কোনির পারিবারিক জীবন, দারিদ্র্য ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে কোনির লড়াই, ক্ষিতীশ সিংহ চরিত্র, কোনির জীবনে ক্ষিতীশের অবদান, কোনির জন্য ক্ষিতীশ যে কঠোর অনুশীলনের ব্যবস্থা করেন। এছাড়া ১, ৩, ৬, ৭, ১২, ১৪নং পরিচ্ছেদ থেকে খুঁটিয়ে পড়ো।
৭. ৯নং দাগ চলিত গদ্যে বঙ্গানুবাদ। ইংরেজি অংশটা বারবার পড়ো এবং আক্ষরিক অনুবাদ না করে ভাবানুবাদ করো। ছোট ছোট করে বাংলায় অর্থ করে বাংলা বাক্যের ক্রম অনুযায়ী সাজিয়ে বাক্য লিখবে।
৮. ১০নং দাগে সংলাপ বা প্রতিবেদন যেকোনও একটি লিখতে হবে। প্রতিবেদনের নিজস্ব গঠন কাঠামো মানতে হবে। সংলাপ হবে মুখের ভাষা নির্ভর, ছোট ছোট বাক্যে গঠিত এবং উক্তি ও প্রতি-উক্তিমূলক। সাম্প্রতিক ঘটনা ও বিষয় কেন্দ্রিক। যেমন: প্লাস্টিক দূষণ, জলসংকট ও জলসংরক্ষণ, পাশ ফেল প্রথা,বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান মেলা, রক্তদান শিবির আয়োজন ইত্যাদি।
৯. ১১নং দাগে চারটি বিষয় থেকে বেছে নিয়ে যেকোনও একটি বিষয়ে প্রবন্ধ রচনা করতে হয়। উত্তর হবে নির্দিষ্ট পয়েন্ট ভিত্তিক, অনাবশ্যক তথ্যের ভারে ভারাক্রান্ত করো না। বেশ গুছিয়ে লিখতে গিয়ে অসম্পূর্ণ রেখে এসো না। বিজ্ঞান ও পরিবেশ বিষয়ক, বাংলার উৎসব, চরিত্র গঠনে খেলাধূলা, একটি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, তোমার প্রিয় কবি, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, এছাড়া উপযোগিতা ও আত্মকথামূলক কিছু তৈরি করে রাখো।
১০. ব্যাকরণ: চারটি অধ্যায় থেকে MCQ এবং অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নের জন্য -
কারক : কারক শব্দের ব্যুৎপত্তি, কারক ও অকারক কাকে বলে ও কী কী?; বিভক্তি, নির্দেশক ও অনুসর্গ কাকে বলে, উদাহরণ, প্রত্যেকের মধ্যে পার্থক্য; প্রযোজক, প্রযোজ্য, ব্যতিহার, সহযোগী,
নিরপেক্ষ, সমধাতুজ কর্তা কাকে বলে ও উদাহরণ। কর্মের বীপ্সা ও সমধাতুজ কর্ম ও করণ ইত্যাদি। এছাড়া, বিভক্তি যোগে কারক ও অকারক পদ নির্ণয় তো থাকবেই।
সমাস: ব্যুৎপত্তি, ক’প্রকার ও কী কী? সমাস শব্দের অর্থ, সন্ধি ও সমাস পার্থক্য, কোন সমাসে সমস্ত পদে কোন পদের প্রাধান্য, একশেষ দ্বন্দ্ব, উপপদ তৎপুরুষ,উপমান-/উপমিত/রূপক কর্মধারয়, ব্যাধিকরণ/সমানাধিকরণ/সহার্থক/ব্যতিহার বহুব্রীহি, অলোপ, নিত্য সমাস, বাক্যাশ্রয়ী সমাস কাকে বলে ও উদাহরণ। এছাড়া ব্যাসবাক্য সহ সমাসের নির্ণয় ।
বাক্য: ব্যুৎপত্তিগত অর্থ, বাক্য গঠনের শর্ত, গঠন ও অর্থ অনুসারে বাক্যের শ্রেণীভাগ ও তাদের বৈশিষ্ট্য, সংজ্ঞা,উদাহরণ, বাক্যখণ্ড, পরস্পরের মধ্যে অর্থ এক রেখে পরিবর্তন।
বাচ্য: ব্যুৎপত্তিগত অর্থ, ক’প্রকার ও তাদের সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ, বাচ্যের বিকল্প ভাগ, বাচ্য পরিবর্তন।
সব মিলিয়ে উপরোক্ত আলোচ্য বিষয়গুলি ভালো করে খুঁটিয়ে পড়লে মাধ্যমিকে বাংলা পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া কঠিন নয়।