যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
গরম কিন্তু বাড়ছে বাড়বেই তো। প্রত্যেকদিন পেট্রোল, ডিজেলে অসংখ্য গাড়ি চলছে। সেই গাড়ির ধোঁয়ার সঙ্গে বেরচ্ছে কার্বন ডাই অক্সাইড। এছাড়া কয়লার সাহায্যে চালু থাকা কলকারখানার ধোঁয়া তো রয়েইছে। এত কার্বন ডাই অক্সাইড সব জমা হচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে! কার্বন ডাই অক্সাইড প্রচুর তাপ শোষণ করে। ফলে যত কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বাড়ছে ততই, বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বাড়ছে। পৃথিবীটা হয়ে পড়ছে আগুনের গোলা!
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পরিবেশে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বাড়ার ফলে বহু প্রাণী মারা পড়ছে। বিশেষ করে, অসংখ্য সামুদ্রিক জীব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এমনই চললে, পৃথিবীতে প্রাণের চিহ্ন বলে কিছু থাকবে না। আমাদের চেনাজানা পৃথিবীটা হয়ে পড়বে মৃত গ্রহ! আমাদের প্রিয় পৃথিবীতে তখন আর থাকা যাবে না। তাই আমাদের বসবাসের জন্য পৃথিবীর মতোই অন্য এক গ্রহের খোঁজ করা ছাড়া কোনও উপায় হাতে নেই।
তেমন গ্রহ কি আদৌ আছে?
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, এমন গ্রহ আছে। কারণ পৃথিবীর মতোই গ্রহ খোঁজার দায়িত্ব দিয়ে মহাকাশে পাঠানো হয়েছে ‘কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ’কে। সেই টেলিস্কোপ মহাকাশে নজরদারি চালিয়ে বেশ কতকগুলি গ্রহকে চিহ্নিত করেছে যেগুলি অনেকটা পৃথিবীর মতোই। অর্থাৎ, ওই গ্রহগুলিও সূর্যের মতো একটি নক্ষত্রের চারদিকে ঘোরে। আর সূর্যের কাছ থেকে পৃথিবী যে পরিমাণ তাপ ও আলো পায়, নতুন গ্রহগুলিও ওই নক্ষত্রের কাছে সেই একই পরিমাণ তাপ ও আলো পায়। ফলে ওইসব গ্রহে প্রাণ থাকা আশ্চর্য নয়! আর মহাকাশে এমন গ্রহ শুধু একটা নয়, রয়েছে অনেকগুলি! দেখে নেওয়া যাক সেগুলি কী কী—
গ্লিস ৬৬৭সিসি
এই গ্রহটি অবশ্য কেপলার আবিষ্কার করেনি। করেছে, চিলিতে থাকা ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরির একটি টেলিস্কোপ। পৃথিবী থেকে মাত্র ২২ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে গ্রহটি। পৃথিবী থেকে অন্তত সাড়ে চার গুণ বড় এই গ্রহটি! তবে গ্রহটি পাথুরে নাকি শুধু গ্যাসেই ভরতি? বিজ্ঞানীরা সেই বিষয়ে পরিষ্কার করে সবটা বলতে পারছেন না। তবে জানা গিয়েছে, একটি বামন নক্ষত্রকে ঘিরে গ্লিস ৬৬৭ সিসি পাক খাচ্ছে। আর সেই বামন গ্রহের চারদিকে ঘুরতে গ্লিস সময় নেয় ২৮ দিন। এক কথায় ২৮ দিনে বছর!
কিন্তু এ বড় মুশকিলের খবর! গ্লিস ৬৬৭ সিসি গ্রহে বাস করতে হলে মহাবিপদ হবে। কারণ ২৮ দিনে কি অ্যানুয়াল পরীক্ষায় বসার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হবে!
কেপলার ২২বি
গ্লিসের তুলনায় সামান্য একটু দূরে রয়েছে কেপলার ২২বি। কেপলারে ২২বি গ্রহে যেতে হলে পার করতে হবে ৬০০ আলোকবর্ষ। গ্রহটি আকারে পৃথিবীর তুলনায় আড়াইগুণ বড়। আর গ্রহটির বছর ২৯০ দিনে! যাক তাও ভালো। পাশ করার জন্য পড়ার সময় মিলবে খানিকটা।
কেপলার ৬৯সি
পৃথিবী থেকে ২৭০০ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে কেপলার ৬৯সি। বিশালাকায় এই গ্রহ পৃথিবীর থেকে ৭০ শতাংশ বড়। তা একদিকে ভালো। বড় বড় খেলার মাঠ পাওয়া যাবে। কিন্তু মুশকিল একটাই। বিজ্ঞানীরা গ্রহটির সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য দিতে পারছেন না। শুধু জানা গিয়েছে, গ্রহটির বছর হয় ২৪২ দিনে।
কেপলার ৬২এফ
এও এক দৈত্য গ্রহ। আকারে পৃথিবীর তুলনায় ৪০ শতাংশ বড়। পৃথিবী থেকে ১২০০ আলোকবর্ষ দূরে থাকা গ্রহটির বছর হয় ২৬৭ দিনে।
কেপলার ১৮৬এফ
পৃথিবীর থেকে প্রায় ১০ শতাংশ বড় গ্রহটি। এই গ্রহটিকে আপাতভাবে বাসযোগ্য মনে হচ্ছে। তবে প্রশ্নও আছে। কেননা বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যে নক্ষত্রটির চারদিকে গ্রহটি ঘুরছে, সেটি একটি লাল রঙের বামন নক্ষত্র। তেমন তেজও নেই তার। সূর্য থেকে পৃথিবী যদি তিন ভাগ শক্তি পায়, বামন নক্ষত্র থেকে কেপলার ১৮৬এফ সেই শক্তির মাত্র এক ভাগ পায়। পৃথিবী থেকে ৫০০ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে কেপলার ১৮৬এফ।
কেপলার ৪৫২বি
নাসার তরফে জানানো হয়েছে, এই গ্রহটিকেই একমাত্র পৃথিবীর যমজ বলা যেতে পারে। কারণ যে নক্ষত্রটির চারদিকে গ্রহটি ঘুরছে, সেই নক্ষত্রটি অনেকটা সূর্যের মতোই। পাথুরে গ্রহটিতে প্রাণ থাকার সম্ভবনা রয়েছে অনেকটাই।
গ্রহটি আকারে পৃথিবীর তুলনায় ১.৬ গুণ বড়। পৃথিবী থেকে ১৪০০ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে গ্রহটি।
ব্যস আবার কী। ঠিক করে নাও কোন গ্রহটি তোমাদের বেশি পছন্দ। কোথায় গেলে বেশি ভালো লাগবে।
সুপ্রিয় নায়েক ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে