উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
এই ধরনের বিড়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু ধরনের বিড়াল পৃথিবীতে দেখতে পাওয়া যায়। তাদেরই একটি বন্য বিড়াল বা জাঙ্গল ক্যাট। বিড়াল প্রজাতির এই প্রাণীটি রিড ক্যাট বা সোয়াম্প ক্যাট নামেও পরিচিত। এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্বের বেশ কিছু দেশে এই প্রাণীর দেখা মেলে। আমাদের দেশে একটা সময় এই ধরনের বিড়াল প্রচুর সংখ্যায় দেখা গেলেও, এখন আর প্রায় দেখতে পাওয়া যায় না। কারণ, মানুষ শিকার করে এই বিড়ালগুলির প্রজাতিকে শেষ করে ফেলছে। এছাড়া বিড়ালগুলির মূল বাসস্থান হল জলাভূমি। এদিকে ক্রমশ জলাভূমি বুজিয়ে বাড়িঘর গড়ে ওঠার কারণেও এই বিড়ালের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে।
জানলে অবাক হবে, মাঝারি মাপের মেটে হলুদ রঙের বিড়ালটিকে দেখার জন্য বহু বিদেশি পর্যটক আমাদের দেশে আসেন। অথচ এই প্রাণীটিকে রক্ষা করার জন্য কোনও প্রকল্প আমাদের দেশে নেওয়া হয়নি এখনও!
দেখতে কেমন?
সাধারণ বিড়ালের তুলনায় জাঙ্গল ক্যাটের আকার বেশ বড় হয়। এই বিড়ালের পা লম্বা, মুখ গোল, কানের আকার ছুঁচালো এবং লম্বা। লেজ ও পায়ের শেষ অংশে দুটো থেকে তিনটে রিং থাকে। এই রিং দেখেই এই প্রজাতির বিড়ালকে জাঙ্গল ক্যাট হিসাবে চেনা যায়। সাধারণত দিনের বেলা শিকার ধরে। একবারে ৬-৭ কিলোমিটার অবধি একটানা হাঁটতে পারে। লুকিয়ে থাকে ঝোপঝাড়ে। আর সুযোগ বুঝে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছোট ইঁদুর, খরগোশ, বড় আকারের পোকা, ব্যাঙের ওপর। এমনকী মাছ শিকার করেও খায়। তবে শীতকালে এদের ফল খেতেও নাকি দেখা গিয়েছে! মোটকথা এইভাবেই পরিবেশে ভারসাম্য বজায় রাখে এরা।
পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জলজ অরণ্যে এদের অস্তিত্ব এখনও পাওয়া যায়। তার মধ্যে অন্যতম হল সুন্দরবন। সুন্দরবনের বিরাট অঞ্চলের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে এদের ইদানীংকালে দেখা যাচ্ছে। আগেই বলেছি, গ্রামে গঞ্জের জলাভূমিতে এই ধরনের বেড়াল বসবাস করে। আজকাল বর্ধমানের পূর্বস্থলীতেও এই জাঙ্গল ক্যাটকে দেখা যাচ্ছে। প্রকৃতির মধ্যে অতি সুন্দর প্রাণী জাঙ্গল ক্যাট।
আমাদের সকলের উচিত এই প্রাণীটির রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা, নইলে ভবিষ্যতে পৃথিবীর অনেক প্রাণীর মতো জাঙ্গল ক্যাটও অবলুপ্ত হতে বেশি সময় লাগবে না। বন্ধুরা তোমরাও এগিয়ে এসো এই প্রাণীকুলকে রক্ষা করতে। তোমরাও খেয়াল রাখো, কোনও জাঙ্গল ক্যাটকে যেন মানুষ শিকার না করে!
ছবি: লেখক