বাড়তি অর্থ পাওয়ার যোগ আছে। পদোন্নতির পাশাপাশি কর্মস্থান পরিবর্তন হতে পারে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পক্ষে থাকবে। ... বিশদ
এবারের রাশিয়া বিশ্বকাপেও কিন্তু জঙ্গি হানার আতঙ্ক থেকেই যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই বলা হচ্ছে সিরিয়া এবং ইরাক থেকে অনেক আইএসআইএস জঙ্গি এবার রাশিয়ায় ঢুকে পড়েছে। তাদের নানা ধরনের নাশকতার ছক রয়েছে। প্রথম রাশিয়াকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছে ফ্রান্স। তারপর জার্মানি। নাশকতার আশঙ্কা করার মতো কারণও অবশ্য আছে। গত কয়েকমাস ধরে আইএসআইএসের ওয়েবসাইটে বারবার নাশকতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। একটি পোস্টারে দেখা যাচ্ছে, আর্জেন্তিনার খেলোয়াড় লিওনেল মেসি কাঁদছে। সেই কান্না হল রক্ত। সিরিয়ায় আসাদ সরকারের সঙ্গে রাশিয়া যেভাবে হাত মিলিয়ে সেখানে জঙ্গি নিকেশ করতে নেমেছে, তাতেই তাদের রাগ বেড়েছে। পুলিশের আশঙ্কা, জঙ্গিরা সম্ভবত ড্রোন দিয়ে আক্রমণ চালাতে পারে। তার সাহায্যেই রাসায়নিক বা জৈব হামলা হতে পারে। তাদের টার্গেট একই সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং বিশ্বকাপ ফুটবল। রাশিয়ার পুলিশ যদিও বলছে, কোনও ভয় নেই। তবুও কিন্তু জুজুর ভয় থেকে তারা একেবারেই মুক্ত নয়। পুতিন নিজে বিষয়টি নিয়ে নজরদারি করছেন। বেশ কিছু নির্দেশ তিনি দিয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম হল, বিশ্বকাপ ফুটবল চলাকালীন রাশিয়ায় সমস্ত রকমের ড্রোন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে অস্ত্র কেনাবেচাও। বিশ্বকাপের আগে রাশিয়া ঘরপোড়া গোরু। তাই জঙ্গি হুমকিকে তারা সিঁদুরে মেঘের মতো ভয় করছে। গত বছরের এপ্রিল মাসে সেন্ট পিটার্সবার্গের মেট্রোতে জঙ্গিরা বিস্ফোরণ ঘটায়। সেই ঘটনায় মোট ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তারপর থেকে সতর্ক রাশিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্বকাপের আসরকে নির্বিঘ্নে করার জন্য। এমন একটা আন্তর্জাতিক আসরকে কিছুতেই তারা জঙ্গিদের লীলাক্ষেত্র হতে দেবে না। পাশাপাশি জঙ্গিদেরও একটা বদলার চ্যালেঞ্জ আছে। তাদের নাকি টার্গেট মেসি বা নেইমাররা। যেভাবে হোক বিশ্বকাপের আসরকে রক্তাক্ত করে রাশিয়াকে মুখতোড় জবাব দেওয়াটাই তাদের কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ।
এর পাশাপাশি আছে হুলিগানদের হামলা ও মারপিটের আশঙ্কা। এক হুলিগান সংগঠন বিশ্বকাপের আসরকে ‘হাঙ্গামার উৎসব’ বলে বর্ণনা করেছে। রাশিয়া অবশ্য সে সব আশঙ্কার মেঘকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে। সর্বত্র অত্যন্ত কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তবে জঙ্গি হানার থেকেও রাশিয়া এখন ভয় পাচ্ছে পঙ্গপালের দলকে। জঙ্গি নাশকতা ঠেকাতে যে চক্রব্যূহ রচনা করা হয়েছে, তা একশো শতাংশ কার্যকর হবে বলে রাশিয়ার পুলিশের বিশ্বাস। কিন্তু লক্ষ লক্ষ পঙ্গপালের ঝাঁককে কীভাবে রোখা সম্ভব, তা তারা ভাবতেও পারছে না। রাশিয়ার মাঠগুলো এখন সবুজ হয়ে আছে। বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে সর্বত্র সবুজের সমারোহ। সেই সবুজের টানেই দলে দলে উড়ে এসে মাঠ ছেয়ে ফেলতে পারে পঙ্গপাল। ভয়ঙ্কর আক্রমণাত্মক তারা। কখন যে তারা আসবে, তা কেউ জানে না। বা আদৌ আসবে কিনা, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছে না রাশিয়ার কৃষিবিভাগ। কৃষিদপ্তরের এক কর্তা পিওতর চেকমারেভ বলেছেন, পঙ্গপাল আসবেই যেমন বলা যায় না। আবার আসবে না, সেটাও বলা যায় না। তবে আমরা জানি, ওরা এলে কী করে মোকাবিলা করা হবে।
কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা অবশ্য তিনি বলেননি। আগে থেকে নানা ধরনের পেস্টিসাইড দিয়ে তাদের আসার পথ বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে যদি ওরা একবার ঢুকতে শুরু করে, তবে কিছু করার থাকবে না বলে কৃষি দপ্তরের কেউ কেউ মনে করছেন। কেননা লক্ষ লক্ষ পঙ্গপালের দল মাঠের সবুজ কচি ঘাস কিছুক্ষণের মধ্যে খেয়ে ছিবড়ে করে ফেলবে এবং মাঠ হয়ে উঠবে খেলার সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত। এবং খেলার পবিবেশটাই নষ্ট হয়ে যাবে। সেখানেই সব থেকে বেশি ভয় রাশিয়ার। জঙ্গি মোকাবিলার কৌশল তাদের অনেকটা রপ্ত হলেও পঙ্গপাল ঠেকানোর ব্যাপারে তারা ততটা আশান্বিত নয়। তাই এখন তারা পঙ্গপাল ঠেকাতে ঈশ্বরের উপরই ভরসা করে আছেন।