গুরুজনের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা ও মানসিক উদ্বেগ। কাজকর্মে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। বয়স্কদের স্বাস্থ্য সমস্যা ... বিশদ
বয়স হয়েছিল নব্বই। বার্ধক্যজনিত কারণে মানুষটা অনেকদিন থেকেই কষ্ট পাচ্ছিলেন। কাচের গাড়িতে শোয়ানো প্রাণহীন শরীরটাকে প্রণাম করল নীলাঞ্জন। ড্রাইভারের পাশের সিট থেকে বড় জেঠুর ছেলে অলকদা আর মেজো জেঠুর ছেলে সমীরদা নামতেই নীলাঞ্জন এগিয়ে গেল। তিন ভাইকে একপলক দেখলেন অরুণবাবু। তারপর ভিড় থেকে সরে দাঁড়ালেন। সিকিউরিটির লোকটা বলল, ‘ডেথ সার্টিফিকেট আর আধার কার্ডের কপিটা দেখি।’ কাগজ হাতে নিয়ে প্রশ্ন করল, ‘বরুণ মিত্রের ছেলে কি আপনি? অফিসে আসুন।’ সমীর, নীলাঞ্জন আর ড্রাইভার ধরাধরি করে মৃতদেহ হল ঘরের ভিতরে নিয়ে এল। জায়গাটা লোকে লোকারণ্য। একটি মৃতদেহকে ঘিরে লোকজন ছবি তুলছে। পাশের কয়েকজন উচ্চকণ্ঠে হরির ধ্বনি দিচ্ছে। দু’জন জপের মালা নিয়ে এককোণে মাদুর পেতে বসে আছে।
মৃতদেহ রেখে ড্রাইভার চলে গেল। সমীর বলল, ‘তুই একটু থাক, আমি দেখি অলকদা কী করছে।’ নীলাঞ্জন প্রশ্ন করল, ‘কেমন আছিস দাদা?’ সমীর সামান্য একটা চাকরি করে। খুড়তুতো ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে ম্লান হেসে বলল, ‘ভালো।’ সুতপা মৃতদেহের উপর সাদা ফুল দিচ্ছে। দাদাদের সঙ্গে অনেক বছর নীলাঞ্জনের দেখা-সাক্ষাৎ নেই। অলক একটা দোকান চালায়। সমীরের সঙ্গে তার ভালোই যোগাযোগ। ওদের বউ-বাচ্চাদের মধ্যেও বেশ মিল। ওই গণ্ডিতে নীলাঞ্জন, সুতপা কোনওদিন ঢুকতে চায়নি। তাদের জগৎটা একদম আলাদা। ছোটবেলায় নীলাঞ্জন দেখেছে অন্য ছবি। ভাইদের মধ্যে তার বাবার রোজগার ছিল সবচেয়ে কম। বাকিরা সম্মানজনক চাকরি বা ব্যবসা করতেন। তবুও সব পারিবারিক অনুষ্ঠানে নীলাঞ্জনদের ডাক আসত। সবাই চাইতেন ওরা আসুক। তার বাবা-মায়ের মতো স্বার্থহীন পরিশ্রম করতে আর কাউকে সে দেখেনি।
প্রিয়জন বিয়োগ দুঃখের নয়, যদি তা বেশি বয়সে এবং রোগ ভোগের পর হয়। এইসব সাতপাঁচ ভাবনার মধ্যে শিশিরকাকু সপরিবার এগিয়ে এসে বললেন, ‘তোরা কখন এলি?’ বরুণবাবুর খুড়তুতো ভাই শিশির। আশি পেরিয়েও নিজেকে নীরোগ রেখেছেন। ওদের সঙ্গে কেবল পারিবারিক অনুষ্ঠানেই দেখা হয়। কাকিমা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, ‘যোগাযোগ দিন দিন কমে যাচ্ছে। আমরা চলে গেলে সেটুকুও থাকবে না।’ কথার মধ্যেই বরুণবাবুর মেয়ে-জামাই এসে দাঁড়াল। নীলাঞ্জনদের সঙ্গে এদের যোগাযোগও সামান্য। বরুণবাবুর শালা এসেছেন তার ভাইকে নিয়ে। সকলেরই বয়স হয়েছে। বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা কষ্টকর। সমীর বলল, ‘তোমরা কি বসবে? আরও একটু সময় লাগবে কিন্তু।’ এসব কথার মধ্যেই একটা গণ্ডগোল কানে এল। একটি মৃতদেহের সঙ্গে লরি বোঝাই করে লোক এসেছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন মদ্যপ অবস্থায় ঘোরাঘুরি
করছিল। জনগণের ধৈর্যের আয়ু সীমিত। কয়েকজন চুল্লি ঘরের সামনের কোলাপসিবল গেট ধরে নাড়াচ্ছে আর বলছে, আমাদের
কখন হবে?
দু’জন ডোম এতক্ষণ বোঝানোর চেষ্টা করছিল, একটা বডি পোড়াতে ঘণ্টাখানেক সময় লাগে। আপনারা অপেক্ষা করুন। একথা শুনে জনৈক মাতাল চিৎকার করে উঠল, ‘যদি অপেক্ষা না করি তাহলে কী করবি শালা!’ মোটা চেহারার হেড ডোম দূরে দাঁড়িয়ে ছিল। এবার সে ক্ষিপ্র বাঘের মতো দৌড়ে এসে মাতালের হাতটা ধরে বলল, ‘এই রঘু চুল্লির শাটার তোল, এই মালটা ভেতরে গিয়ে দেখে আসুক।’ পুলিসের জলকামান বা কাঁদানে গ্যাসের সামনে জনতা যেমন ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়, হেড ডোমের কথায় তেমনই কাজ হল। সেই মাতাল তো বটেই বাকিরাও দৌড়াতে শুরু করল। এমন একটা আকস্মিক ঘটনায় হতভম্ব হয়ে গেল মিত্র পরিবারের সকলে। আর একটু হলেই কয়েকজন বরুণবাবুর দেহটার উপর উঠে পড়ছিল। বিশ্রী সেই ঘটনাটা কোনওভাবে আটকে গেল সমীরের উপস্থিত বুদ্ধিতে।
জনতা হল ঘর থেকে বেরিয়ে যেতেই নেমে এল শ্মশানের স্তব্ধতা। সেই নীরবতা ভেঙে নীলাঞ্জন বলল, ‘তুই ওইভাবে ঘুরে না দাঁড়ালে কী যে হতো সমীরদা!’ কথাটা বলেই তার মনে হল, প্রকাশ্যে কোনওদিন সে সমীরের প্রশংসা করেনি। এই ভাবনার মধ্যেই পুরোহিত এসে প্রশ্ন করল, ‘কাজ কে করবে?’ অলকদা এগিয়ে যেতেই বলল, ‘জল এনেছেন?’ মাটির ঘটিটা নিয়ে নীলাঞ্জন তৎক্ষণাৎ গেল জল আনতে। খানিকটা দূরে দাঁড়িয়ে নিশ্চুপে সবটা দেখছেন অরুণবাবু।
পরপর তিনটে মৃতদেহ চুল্লিতে ঢুকতেই ঘরটা অনেকটা ফাঁকা হয়ে গেল। এই ঘরে একে একে লাইন করে রাখা হয় মৃতদেহ। একটা চুল্লিতে গেলেই অন্যগুলোকে একটু একটু করে এগিয়ে দেয় বাড়ির লোক। এখন মৃতদেহ বাঁশের চটার উপর শোয়ানো। গাড়ির ড্রাইভার ভাড়া আর স্ট্রেচার নিয়ে চলে গিয়েছে। কোলাপসিবল গেটের ভেতর থেকে একজন ডোম উঁচু গলায় ডাকছে, এগিয়ে আসুন এগিয়ে আসুন। কথাটা কয়েকবার শোনার পর বোঝা গেল, সে মৃতদেহগুলো এগিয়ে দিতে বলছে। বাঁশের চটা ধরে মৃতদেহ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া দু-একজনের কাজ নয়। আর একটু হলেই দেহটা মাটিতে পড়ে যেত। ঠিক এই সময়ে সেই মাতাল এসে বলল, ‘আমি কি ধরে দেব?’ লোকটার দিকে তাকিয়ে হেসেই ফেলেছিল নীলাঞ্জন। লোকটাকে দেখে হেড ডোম দূর থেকে বলে উঠল, ‘তবে রে!’ তার হুঙ্কার শুনে মাতাল পালিয়ে যেতেই ডোম বলল, ‘কীভাবে ধরতে হয় তাও জানেন না! আপনি এক নম্বর আর তিন নম্বরটা ধরুন। আর এই যে আপনি, ওই দিকে চলে যান।’
বরুণবাবুর দেহ চুল্লির মধ্যে চলে যেতেই পারিবারিক জমায়েতটা বাইরে বেরিয়ে এল। তারপর এক এক করে কমতে লাগল লোকজন। হল ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসার সময় নীলাঞ্জন ডোমকে প্রশ্ন করল, ‘প্রতিদিন কতগুলো ডেডবডি আসে?’ ছেলেটা গুটকা চিবোতে চিবোতে বলল, ‘ঠিক নেই। আশি থেকে একশো ধরে রাখুন।’ চোখ ঘুরিয়ে বিরাট হল ঘরটা দেখল নীলাঞ্জন। আর কোনও মৃতদেহ এখন অপেক্ষায় নেই। তার চোখের ভাব দেখে ডোম বলল, ‘এখন নেই, আবার যখন আসবে, তখন দেখবেন একসঙ্গে দশ-বিশটা বডি এসে যাবে। নীলাঞ্জন আবার প্রশ্ন করল, একটু আগে যে একটা গাড়ি এল?’ ডোম গুটকার থুতু ফেলে বলল, ‘ওটা ভিআইপি। ওদের অন্য ব্যবস্থা।’ কথার মধ্যেই সমীর এসে বলল, ‘তুই চা খাবি? আমরা যাচ্ছিলাম।’ নীলাঞ্জন বলল, ‘চল আমি সবাইকে চা খাওয়াচ্ছি।’
অস্থি আর ডেথ সার্টিফিকেট সংগ্রহ ছাড়া আর কিছুই করার নেই জেনে পারিবারিক জমায়েতটা সরে গেল চায়ের দোকানে। আলোচনা ধীরে ধীরে মৃত্যু থেকে ছড়িয়ে যেতে লাগল অন্যদিকে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা, চিকিৎসা, চাকরি, রাজনীতি...। এলাকা খালি হয়েছে দেখে অরুণ এগিয়ে গেলেন চুল্লির দিকে। সেখানে দেওয়ালে হেলান দিয়ে দুই হাঁটুর মাঝে মাথা গুঁজে একজন বসে রয়েছেন। অরুণ নিজেও বসলেন তাঁর পাশে। প্রবল দুঃখে কাতর অবস্থা লোকটার। পরম মমতায় অরুণ তাঁর পিঠে হাত রাখলেন। তাঁর স্পর্শে লোকটা ধীরে ধীরে মাথা তুলে তাকালেন। তারপর চেয়ে রইলেন শূন্যদৃষ্টিতে। অরুণ মাথা নেড়ে বললেন, এখন বিশ্বাস হয়েছে তো? লোকটা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রয়েছেন তার দিকে। তিনি আবার বললেন, সেই সকাল থেকে বলছি। এখন অন্তত চল। এবার আমারও কষ্ট হচ্ছে। আর মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই বড়দা।
কয়েকবার চোখ মোছার চেষ্টা করে তিনি বলতে শুরু করলেন, ইদানীং রাতে ঘুম হয় না। অনেকদিন থেকেই তো বিছানায়। কলকব্জা সব খারাপ হচ্ছে। গত ক’দিন খেতে পর্যন্ত পারছিলাম না। ঘড়িতে রাত তিনটে বাজার শব্দ শুনলাম। তারপরই শরীরটা কেমন করতে লাগল। মনে হল, ভিতরটা যেন নিংড়ে দিচ্ছে কেউ। বুকে হঠাৎ একটা দামামা বাজতে শুরু করেছে। সে যে কী কষ্ট! একটা ঘোড়া যেন বুকে লাথি মেরে মেরে পাঁজরগুলো ভেঙে দিচ্ছে। আমি চিৎকার করতে চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না। ছোটবেলায় ভয়ের স্বপ্ন দেখে যেমন কুঁকড়ে যেতাম, অনেকটা সেই রকম। তখনও শরীরে যতটা শক্তি ছিল, তাই দিয়ে আমি শ্বাস নিতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু বুঝলাম, শ্বাস নিতে পারছি না। এইভাবে কয়েক মুহূর্ত যাওয়ার পর, মনে হল কেউ আমার হৃৎপিণ্ডটা ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে দিচ্ছে। আমি আবার প্রাণপণ শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করলাম। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল। মনে হল আমাকে আলো-বাতাসহীন একটা অন্ধকার কুয়োর মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে। গভীর অন্ধকারে ডুবে যেতে যেতে আমি আবার শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করলাম। কী আশ্চর্য! হঠাৎ উপলব্ধি করলাম নিজেকে খুব হালকা লাগছে। মনে হল আমার শরীরে আর কোনও কষ্ট নেই। পর-মুহূর্তেই চমকে উঠলাম। যখন দেখলাম, আমার শরীরটা খাটের উপর নিথর পড়ে আছে। তবে কি, শ্বাস নিতে গিয়ে আমিই শ্বাস হয়ে বেরিয়ে পড়েছি! উন্মাদের মতো আমি আবার শরীরে ঢোকার চেষ্টা করলাম। পারলাম না। অনেক ব্যর্থ চেষ্টার পর বুঝলাম, আমি শরীরের চেয়ে অনেক বড় হয়ে গিয়েছি। তখন তোর বউদিকে ডাকলাম। অলকের নাম ধরে গলা ফাটালাম। ওরা কেউ আমার কথা শুনতে পেল না। আমার সর্বনাশ হয়েছে, বুঝে যখন মাথায় হাত দিয়ে মেঝেতে বসলাম, তখন দেখলাম তুই সোফায় বসে পা দোলাচ্ছিস।
বরুণ আবার হাঁটুর উপর মাথা রাখলেন। প্রশ্ন করলেন, এমন কেন হল বল তো? দাদাকে টেনে তুলতে তুলতে অরুণ বললেন, কারণ তুমি মৃত্যুর পরের অবস্থায় এসে পৌঁছেছ। এবার আমাদের যেতে হবে। বরুণ রেগে গিয়ে বললেন, সকাল থেকে তোর এই এক কথা, যেতে হবে! আরে, যাব কোথায়? তাছাড়া, অলক আর তোর বউদিকে না বলে গেলে আমি কি শান্তি পাব! অরুণ জোর গলায় বললেন, যেতে তোমাকে হবেই। প্রত্যেকটা অবস্থার জন্য আলাদা আলাদা অবস্থান আছে। এই অবস্থা তোমাকে মেনে নিতেই হবে।
ভাইয়ের হাত ছাড়িয়ে দিয়ে বরুণ বললেন, আর ক’দিন বাদেই নাতনিটার উচ্চ মাধ্যমিক। এই গোলমালের মধ্যে ওর কি পড়াশোনা হবে! শেষে যদি রেজাল্ট খারাপ হয়! তোর ছেলেটা পড়াশোনায় ভালো। সে যদি ভাইঝির একটু খোঁজ নিত! যোগাযোগ ওদের মধ্যে নেই বললেই চলে। ক’দিন পর কেউ আর কাউকে চিনবে না। তখন কী হবে ভেবে দেখেছিস?
এইসব কথার মধ্যেই একজন ডোম গেট ঠেলে ভিতরে এল। অরুণ আবার বললেন, প্রকৃতির নিয়ম দাদা, চাইলেও তাকে বদলানো যায় না। উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বরুণবাবু বললেন, তবে সব কিছুরই একটা ভালো দিক আছে। দেখ, ওরা ভাইবোন সবাই আজ কত কাছাকাছি চলে এসেছে। দাদার হাতটা ধরে বন্ধ কোলাপসিবল গেটের ভিতর থেকে বাইরে আসতে আসতে অরুণ মনে মনে বললেন, জীবন-মৃত্যু, ভালো-খারাপ সবই যে এক-একটা ঢেউয়ের মতো। একবার ওঠে আবার নেমে যায়। এসব জটিল কথা তুমি কি এখন বুঝবে! বরুণ বললেন, চল ওদের ভাই বোনদের একবার একসঙ্গে দেখি।
চায়ের ভাঁড়টা ফেলে দিয়ে সমীর বলল, ‘সময় প্রায় হয়ে এসেছে। এবার আমাদের যাওয়া উচিত।’ অলক ঘড়ি দেখে বলল, ‘চল তাহলে।’ চায়ের দাম মেটাতে মেটাতে নীলাঞ্জন বলল, ‘আমিও আসছি।’ ছেলেমেয়েগুলোর দিকে গভীরভাবে তাকিয়ে আছেন বরুণবাবু। অরুণ বুঝলেন, জোর করে কিছু করা যাবে না। ভাবতে ভাবতে হঠাৎ একটা ছবি তার মাথায় এল। বললেন, গ্রামের কথা তোমার মনে পড়ে দাদা? আমাদের ছোটবেলার কথা। দুপুরবেলা বারান্দায় মাদুর পেতে আমরা পাশাপাশি শুতাম। মনে আছে? ভাইয়ের কথায় পিছন ফিরে বরুণ বললেন, মনে নেই আবার। তখন রোজ আমি তোকে ঠকাতাম। বলতাম, তুই আমার পিঠে একশোবার হাত বুলিয়ে দে, তারপর আমি দেব। তুই মহানন্দে হাত বুলিয়ে দিতিস আর আমি কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়তাম। অরুণ হেসে বললেন, চল, আজ তোমাকে আবার ঘুম পাড়াই। সেই কোন ভোর থেকে জেগে রয়েছ। ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে হাসলেন বরুণ।
শ্মশানে খাটের অভাব নেই। অরুণ দাদার পিঠে ছোটবেলার মতো হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। আরামে ডুবে যেতে যেতে বরুণ প্রশ্ন করলেন, এত প্রিয়জন থাকতে তুইই কেন আমাকে নিতে এলি? অরুণ মৃদু হাসলেন। মনে মনে ভাবলেন, যে নিজে শান্ত সেই পারে সান্ত্বনা দিতে। যে পৌঁছেছে, সেই অর্জন করেছে পথ দেখাবার অধিকার। তন্দ্রার গভীরে ডুবে যাচ্ছেন তার বড়দা। অরুণ উঠে পড়লেন। এবার বড়দাকে নিয়ে যেতে আর বেগ পেতে হবে না।