Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ক্রমাগত
সুমন দাস

সকালের ট্রেন। আপ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল। ঠাসাঠাসি ভিড়। তিল ধারণেরও জায়গা নেই। একে ভিড়, তায় আবার গরম। বৈশাখ মাসের সকাল। দশটাও বাজেনি, অথচ সীমাহীন গরমে দরদর করে ঘামছে বিকাশ। একটু হাওয়ার জন্যে হন্যে হয়ে রয়েছে সে। বাকিরাও তাই। কয়েকজন ভিড় করে রয়েছে গেটে। ভিতরেও ভিড়। মুক্ত বাতাস চলাচলের সমস্ত পথই বন্ধ প্রায়। বাঙ্কারে ঠেসে রয়েছে ব্যাগ। ব্যাগ রাখার পরিসরও অপ্রতুল। বেশির ভাগটাই ঝুলছে জানালায়, দরজায়। যার যেখানে সুযোগ, সেখানেই সে ঝুলিয়েছে ব্যাগ। সামান্য একটু পরিসরও অকারণে অপচয় করা হয়নি আপ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালে। ইঞ্চি ইঞ্চি পরিসরও প্রাসঙ্গিক ভাবে ব্যবহৃত। এসবের মাঝেই কোনও রকমে জায়গা করে দাঁড়িয়ে আছে বিকাশ। গরমে ঘামছে। ঠাসাঠাসি ভিড় যেন জাপটে ধরে রেখেছে তাকে। সম্পূর্ণ শরীরটাই যেন কী এক অপার্থিব জাদুবলে স্থির হয়ে আছে। ভিড়ের সঙ্গে প্রয়োজনে প্রয়োজনে সামনে পিছনে ডাইনে বাঁয়ে ঝুঁকে গতির সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছে বিকাশের ঘামে ভেজা শরীর। এই বিন্যাসের একটু ব্যতিক্রম হলেই ভিড়ের তাল কাটে। বাকিরা অমনি রে রে করে ওঠে। এভাবেই এক নাগাড়ে চলতে থাকে আপ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালের প্রভাতী সিম্ফনি। তার মধ্যেই ছোট ছোট ইঙ্গিতপূর্ণ কথায় রসিকতা চলছে যাত্রীদের। এক-একটা স্টেশনে বন্যার জলের মতন ঢুকছে জনতা। ঠেলাঠেলি করে দাঁড়াবার মতন একটু জায়গা আবিষ্কার করে নিয়ে স্থির সঙ্কল্পে দাঁড়িয়ে পড়ছে তারা। বসার জায়গার জন্য কারও কোনও গরজ নেই। আশাও নেই! শুধু দাঁড়ানোর জায়গাটুকু পেলেই জীবন ধন্য তাদের! 
—হ্যাঁ রে! চোকের মাতা খেইচিস নাকি!
ওঠার সময় এক যাত্রীর কনুয়ের গুঁতোয় আহত আর একজন চেঁচিয়ে ওঠে।
এর বেশি কিছু ক্ষোভ দেখানোর সুযোগ তার নেই। কারণ আলাদা করে কাউকেই চিনে নেওয়া যায় না। কার কনুই! কার গুঁতো! অগত্যা তার প্রতিবেশী যাত্রীর কাছেই ক্ষোভ জানায়। বলে, ‘এত দোড়াদোড়ি করে উটে  কোতায় যাবে কে জানে! দোড়ত এটুকুই। বসতি তো পাবিনে।’ প্রতিবেশী যাত্রীও হাসে। বলে, ‘বসা কি সোজা কাজ কাকা। সকালের টেরেনে ছিট হল সরকারি ছিট। যদি ভিতরে তোমার দুটো নোক থাকে তো পেলে নইলে কেউই ও জিনিস আশা করেনে।’ যাত্রীর কথায় খানিকক্ষণ একটা হাসির রোল ওঠে। এসব রঙ্গ-রসিকতা নিয়েই ছুটে চলে আপ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল। 
যাদবপুর স্টেশনে ভিড়ের একটা অংশ নেমে যেতেই একটু হালকা লাগে। দু’জন মানুষের মাঝে তিন-চার আঙুলের ব্যবধান সৃষ্টি হয়। সেই ব্যবধানেই বাইরের বাতাস কেরামতি করে যাতায়াত করে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিকাশ। এখন একটু সুবিধা লাগছে। জল খেলে ভালো হতো। কিন্তু বাঙ্কার থেকে ব্যাগ নামিয়ে বোতল বের করে জল খাওয়ার জন্য যে ঝক্কি, পিপাসা তার চাইতে কম। অন্তত অঙ্কের সাধারণ হিসেবে এমনই মনে হল তার। অগত্যা দাঁড়িয়েই থাকে সে। ঢোঁক গেলে। হঠাৎ বিপরীত দিকের জটলার ভিতর থেকে চেঁচিয়ে ওঠে কেউ— ‘বিকাশ না!’
মাথা ঘুরিয়ে একটু কাত হয়ে দেখে বিকাশ। শামিম। হাসে বিকাশ। কথা বলে না। তার শরীর নিঙড়ে সব শক্তি শুষে নিয়েছে সকালের আপ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল। শামিমই কথা বলে। 
—কোতায় যাবি? 
অগত্যা কথা বলতেই হয়। 
—শিয়ালদা। তুই? 
—খালা ঘর যাব। ফিরব আজই। মা গেচে পরশু। মারে আনতি যাই।
বিকাশের পাশের গ্রামেই শামিমের বাস। প্রাইমারিতে একই ক্লাসে পড়ত দু’জন। সেকেন্ডারিতেও। সে অনেক দিন আগের কথা। পরে আর স্কুলে যায়নি শামিম।
—তোর কি কাজ হয়েচে কিচু?
ভিড়ের মধ্যেই জানতে চায় শামিম। এবারে হাসে বিকাশ।
—হয়েছে। তবে প্রতিদিন এই ভিড় ঠেলে যাব কীভাবে, তাই ভাবছি।
যেন খুব অবাক হয় শামিম। বলে, ‘কোতায় পেলি কাজ!’ 
—বউবাজারে। সিকিউরিটি গার্ডের কাজ। বাবার কাজটাই পেয়েছি। 
—ভাগ্যি তোর বাপের একটা কাজ ছেল। না হলি আজকের দিনে হন্যি হয়ি ঘুরলেও তো একটা কাজ জোটে না।
—তুই কি করছিস এখন!
—করি না কিচু।
—মাঝে যে যাচ্চিলি খিদিরপুর!
—সে যাচ্চিলাম ওস্তাগারের কাজে। তবে সে ভালো লাগলনি! 
—কেন?
—ঝক্কি অনেক। ট্যাকা নেই তেমন। তায় থাকা কাজ। আমি রাজি হলাম না!
বিষয়টায় একটু অবাক হয় বিকাশ। সে যতদূর জানে একটা কাজ খুব প্রয়োজন শামিমের। উত্তরটা শামিমই দেয়।
—রাতে মাকে একা রেকে থাকতি পারলাম না।
বেশ অবাক হয় বিকাশ। এই শামিমকে তো সে চেনে না। মনে হয় কীভাবে বদলাল সে এতটা! কোথা থেকে শিখল সে এই  দায়িত্ববোধ!
—তোর কাজের ক’দিন হল?
জানতে চায় শামিম।
—আজই প্রথম দিন। কী জানি কতদিন চালাতে পারব!
দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিকাশ। শামিম বলে, ‘চিন্তা করিস নে। অব্যেস হয়ি যাবে। কি সুকুমারদা! হবে তো?’
জটলার ভিতর থেকে হাসে সুকুমার। মাথা ভরা কাঁচাপাকা চুল তার। সুকুমারকে নিয়ে কিছু সময় মশগুল থাকে জটলাটা। জটলার মাঝে সুকুমার খানিকটা সরল। তাই প্রতিদিনই হয়তো এমনই নানা প্রসঙ্গে নানা ইঙ্গিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে সে।
—সুকুমারদা’রে তো প্রথম দিন কোলে নে তুললাম আমরা। মনে পড়ে!  হ্যাঁ গো সুকুমারদা?
সুকুমার হাসে। কিন্তু সঙ্কোচে ভিতরে ভিতরে যেন গুটিয়ে যায় সে। জটলার ভিতর থেকেই দ্বিতীয়জন বলে 
—পোথম দিন তো কেঁদে দিয়েচিলি। তাই না! হ্যাঁ রে সুকুমারদা! কতা কইচিস না কেন! 
সুকুমার সলজ্জ হাসিতে সম্মতি জানায়। বলে, ‘মরণ না এলি কেউ এ গাড়িতে ওটে!’ 
—তা তুই তো একদিনের জন্যিও মরলি নে! 
হাসে সুকুমার। বলে, ‘অব্যেস!’
শামিমও হাসে। জটলার বাকিরাও সে হাসিতে যোগ দেয়। যদিও সে আলোচনায় যোগ দেয় না বিকাশ। চুপ করে থাকে সে। মনে হয় অভ্যাস ব্যাপারটা কীভাবে সম্ভব! কতদিনে সম্ভব! ততদিনে দম বন্ধ হয়ে মরে যাবে না তো সে! মনে হয় বাবা পারত কীভাবে! এ তো ভিড় নয়! এ যন্ত্রণা! প্রতিদিন হয়তো এই যন্ত্রণাকেই অভ্যাস করতে করতে হঠাৎ অসময়ে চলে গেল বাবা। এবার হয়তো তার পালা। 
—নেবে গেলাম রে! 
শামিমের ডাকে চিন্তার গ্রন্থিটা কেটে যায় বিকাশের। হেসে হাত নেড়ে বিদায় জানায় সে শামিমকে। তারপর বালিগঞ্জ স্টেশনে ভিড়ের আরও খানিকটা অংশ নেমে গেলে বুক ভরে শ্বাস নেয় সে এবার। এখন আবহাওয়াটা অনেকটাই বাসযোগ্য মনে হয় তার। অনন্ত প্রতীক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন বসার সুযোগ পেয়ে ধন্য বোধ করে। বিকাশও বসে। পা দুটো ছড়িয়ে দেয় সে সামনে। এখন যেন প্রত্যেকটা মানুষকে আলাদা করে চেনা যায়। অন্ততপক্ষে বাইরের কাঠামোটুকু বোঝা যায়। নইলে তো সব ভিড় বই কিছুই না! এমনই যেন মনে হয়। ট্রেনের দরজার কাছে একজন মানুষের দিকে আলাদা করে চোখ পড়ে বিকাশের। দরজার পাশে বসে বুক ভরে শ্বাস নিচ্ছে। ঢকঢক করে জল খাচ্ছে বারবার। ঘামছে দরদর করে। হাঁ করে যেন চলন্ত ট্রেনের বাইরে থেকে ছুটে আসা সমস্ত বাতাসই গিলে নিতে চাইছে সে। কী চেহারা তার! মলিন একটা টেরিকটের জামার নীচে তার রোগা শরীর দ্রুত নিঃশ্বাসের সঙ্গে ওঠানামা করছে। যেন খুব চেনা মনে হয় মানুষটাকে। চুলটা যেন তার গ্রামের মেহের আলিরই মতন ছাঁটা। হঠাৎ দেখলে মেহের আলিই বলে যেন মনে হয়। নিঃসম্বল মেহের আলি। জোগাড়ের কাজে প্রতিদিন একটা ঝুড়ি কোদাল নিয়ে পাড়ি দেয় সে কলকাতায়। রোজ কাজ জোটে না তার। যেদিন কাজ পেল সেদিন সে ফেরে সেই সাড়ে ন’টার নামখানা লোকালে। নাহলে কলকাতার পথে পথে বেলা পর্যন্ত ঘোরাঘুরি করে আবার ডাউন গাড়ি ধরে ফেরে সে বাড়িতে। নতুন হাটে বাপির চা দোকানে প্রতিদিন চা খাওয়া চাই তার। 
সেখানেই বিকেলে এক কাপ চা খায় সে। সেদিনের দামটা খাতাতেই লিখে রাখতে বলে মেহের আলি। তারপর কোদালটা  কাঁধে তুলে ঝুড়িটা হাতে নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটে সে। মানুষটাকে দেখে সেই মেহের আলির মতনই মনে হয় যেন। লোকটার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে থাকে বিকাশ।   মুঠোমুঠো জল নিয়ে একটু একটু করে মাথা ভিজোচ্ছে মানুষটা। হয়তো অসুস্থ। আর বসে থাকতে পারে না বিকাশ। কাছে যায়। নিজের জলের বোতলের ছিপি খুলে জল দেয়। বলে, ‘খান।’ লোকটা ইশারা করে।   হাওয়াটা আটকাতে না করে। বিকাশের দেখাদেখি আরও কয়েকজন আসে। অল্পবয়সি একজন বলে, ‘কি কাকা আজও শরীল খারাপ!’
ছেলেটার দিকে একবার চোখটা তুলে আর কোনও উত্তর করে না মানুষটা। দরজার পাশে মাথাটা এলিয়ে দিয়ে বসে থাকে। আর এক জন বলে, ‘পারছে না আর। বয়স হয়েছে না!’
—এই তো গতকালও ফিট হয়ে গেচিল।
—সম্ভব নাকি বলুন তো! আমরা জোয়ান লোকগুলোই হেদিয়ে যাচ্ছি। তা উনি এই বয়সে পারবেন কেন!
—ছেলেটার চাকরি না হলে আর মুক্তি নেই! 
কথাগুলো হয়তো কানে যায় মানুষটার। চোখ দুটো উদাস করে হয়তো সেই কথাই ভাবে! সত্যিই আর হয়তো পারছেন না তিনি। তার ক্লান্ত, বিশৃঙ্খল শরীরটা দেখে বাবার কথা মনে পড়ে বিকাশের। কে জানে এভাবে কতবার জীবন যুদ্ধে হারতে হারতে শুধু পরিবারটুকুর কথা ভেবেই আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিল বাবা! ভেবেছিল, বিকাশের একটা কাজ হলেই দুঃখ ঘুচবে। বলেছিল, তুই তৈরি হ। আমি যতদিন আছি, তুই তৈরি হ। বিকাশ পড়েছে। মাস্টার্স করেছে। তৈরি হয়েছে বিকাশ। কিন্তু কাজ সে পায়নি। দিস্তা দিস্তা দরখাস্ত তার সরকারি দপ্তরে জমে আছে হয়তো বা এখনও। কিন্তু সে কাজ পায়নি। অগত্যা বাবার কাজটাই পেল বিকাশ। সিকিউরিটি গার্ডের কাজ। 
ট্রেন শিয়ালদায় ঢুকতে ঢুকতেই বিপরীতগামী যাত্রীরা সিট দখলের জন্য হুড়মুড় করে ওঠা শুরু করে। দীর্ঘ যাত্রা শেষে অসহ্য গরমে ক্লান্ত বিপন্ন অবস্থায় দ্রুত নামবে বলে যারা গেটের মুখে ভিড় করেছিল তাদের সঙ্গে গেটের মুখে একচোট বচসাও হয় তাদের। পরে একে একে সবাই নেমে যায়। বিকাশ বসেই থাকে। মনটা ভীষণ খারাপ তার। বাবার কথা খুব মনে পড়ছে আজ। সকাল থেকেই বাবার ফেলে আসা পথের অপরিমিত যন্ত্রণাকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যেন সমস্ত কলকব্জা তার কাহিল হয়ে গিয়েছে। বোতলে যতটুকু জল ছিল সেইটা খেয়ে ধীরে ধীরে প্ল্যাটফর্মে নামে বিকাশ। সাউথ থেকে নর্থ সেকশনের দিকে পা বাড়ায় সে। এনকয়ারির আগে বাঁ দিক দিয়ে নেমে খানিকটা পথ এগতেই একটা জটলা দেখে এগিয়ে যায়। চরম রোদে দরদর করে ঘামছে বিকাশ। জটলার কাছে এসে বুকটা ধক করে ওঠে তার। রাস্তার উপর টানটান হয়ে পড়ে আছে ট্রেনের সেই প্রবীণ  মানুষটা। চুলটা এখনও দেখে মেহের আলির মতনই মনে হচ্ছে তার। চারপাশে কৌতূহলী জনতার ভিড়।  একজন জল ঢালছে মাথায়। কিন্তু সাড়া মিলছে না কিছু। মুখটা তখনও হাঁ করে যেন বাইরের সমস্ত বাতাসকে বুকে ভরে নিতে চাইছেন তিনি। চোখ দুটো তার তখনও উদাস। শান্ত। যেন পরাজয়ের গ্লানিতে অভিভূত। পাশ থেকে আর একজন বলে, ‘শেষ মনে হয়!’
—হাসপাতালে নিয়ে চলুন। 
—মনে হয় না বেঁচে আছে বলে।
জল ঢালছিল যে, তিনিই বলেন কথাটা।
বিকাশ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। মৃত্যুকে এত কাছ থেকে দেখে যেন হতবাক হয়ে গিয়েছে সে। চোখ দুটো জলে ঝাপসা হয়ে আসে তার। ধীরে ধীরে জটলার ভিড়   কমতে থাকে। কয়েকজন তখনও নানান কথায় পরিস্থিতির বিশ্লেষণ করে। কিছুই আর ভালো লাগে না বিকাশের। বুকের ভিতর কান্নার একটা চাপা অনুভূতি গুমরে গুমরে উঠতে চায় যেন। অপ্রাসঙ্গিক ভাবেই হঠাৎ মনে হয়, কী কাজ করতেন উনি! এবার বাপের চাকরিটাই হয়তো পাবে ওঁরও ছেলে! বাবার কথা মনে পড়ে বিকাশের। কান্না পায়। পিছনে তখনও আলোচনা চলছে,
—কঠিন সময়। গত মাসেও একজন ফিট হয়ে মারা গেল না!
—হ্যাঁ। ওই তো ট্যাক্সি স্টান্ডের কাছে। বউবাজার ব্যাঙ্কের সিকিউরিটি গার্ড!
অঙ্কন : সোমনাথ পাল
04th  June, 2023
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। বিশদ

31st  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। বিশদ

24th  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
গুরুদ্বার সিস গঞ্জ

দিল্লি দেখতে এসে চাঁদনী চক যাওয়া হবে না? তা কীভাবে হয়? অতএব দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ভ্রমণস্থল চাঁদনী চক।
বিশদ

17th  March, 2024
দেখা যায় না, শোনা যায় পুতুল বাড়ি
 

আকর্ষণ, বিতর্ক, কৌতূহলের চিরন্তন কেন্দ্রবিন্দু অলৌকিক দুনিয়া। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দুই শিবিরেরই এব্যাপারে আগ্রহ ষোলোআনা। তাই ভৌতিক সাহিত্য হোক বা সিনেমা, বাজারে কাটতি বরাবরই বেশি।
বিশদ

17th  March, 2024
প্রস্থান
দীপারুণ ভট্টাচার্য

শববাহী গাড়িটা গেটের ভিতর ঢুকতেই অরুণবাবু চারপাশটা দেখলেন। বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে তার ছেলে নীলাঞ্জন আর বউমা সুতপা। নীলাঞ্জন বড় চাকরি করে। সে ফোন পেয়েছিল অফিসে যাওয়ার পর। সুতপাকে বলেছিল, ‘বেরতে একটু সময় লাগবে। বিশদ

10th  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: জাহান আরার সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ পরব চলছে। আগ্রা জুড়ে উৎসবের উচ্ছ্বাস। এখন ১৬৪৪। বাদশাহ শাহজাহানের আগ্রা দুর্গে সবথেকে বেশি উজ্জ্বল আয়োজন। স্বাভাবিক। প্রতি বছর নভরোজের সময় আগ্রা দুর্গ এভাবেই সেজে ওঠে। সম্রাটের পুত্রকন্যারা এই সময়টায় পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন। বিশদ

10th  March, 2024
অতীতের আয়না: বাঙালির সার্কাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

১৯২০ সালের ২০ মে। নিজের ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নিয়ে সিঙ্গাপুরে ট্যুরে গিয়ে জন্ডিস হয়ে মারা গেলেন প্রিয়নাথ বসু। শুধু উপমহাদেশের সার্কাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও উৎকর্ষের নতুন মানদণ্ড ছাড়াও, বিনোদন শিল্প হিসেবে সার্কাসকে দৃঢ় ভিত দিয়ে গেলেন তিনি। বিশদ

10th  March, 2024
ভোগ
শুচিস্মিতা  দেব

পুতুলকে সদ্যই নিমতিতা থেকে ‘রায়চৌধুরী ভিলা’তে এনেছে তার পিসি সবিতা। সবিতা এই পরিবারের বহু দিনের থাকা-খাওয়ার মাসি। টিভি সিরিয়ালের মতো প্রকাণ্ড বাড়িখানা দেখে পেরথমেই ভেবলেছে পুতুল। ফুটবল মাঠের মতো বৈঠকখানা। বিশদ

03rd  March, 2024
রুপোর চাকু

আলমারিটা খুলতেই দাদার চোখ চলে গিয়েছিল। উপরের তাকে জামা কাপড়ের পাশে খালি জায়গায় শোয়ানো ছিল। বাজপাখির চোখ দাদার।
বিশদ

25th  February, 2024
অপরাজিতা
মীনাক্ষী সিংহ

জুনিয়র ডাক্তার সুমন সান্যাল জানিয়ে গেল অপারেশন থিয়েটার রেডি, এবার ডাঃ মিত্রকে যেতে হবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠলেন সার্জেন মাধবিকা মিত্র। আজ একটা ক্রিটিক্যাল অপারেশন। বছর সতেরোর মেয়েটির মায়ের মুখ মনে পড়ল মাধবিকার। বিশদ

18th  February, 2024
একনজরে
কানাডার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সোনা চুরির ঘটনা। পুলিসের জালে দুই ভারতীয় বংশোদ্ভূত সহ ৬। গত বছর টরেন্টোর প্রধান বিমানবন্দর থেকে ৪০০ কেজির সোনার বার ও ...

বাচ্চার জন্য দুধ গরম করতে গিয়ে গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ। আর সেই আগুনে তিনটি বাড়ি ভস্মীভূত হল। জলের অভাবে আগুন নেভাতে পারলেন না বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভরতপুর থানার গোপালপুর গ্রামে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ...

পুরো দেশে কান ঝালাপালা বিজেপির ‘মোদি কি গ্যারান্টি’র প্রচার। ঢাক পেটানো হচ্ছে ডাবল ইঞ্জিনের। কেন্দ্রে গত ১০ বছর সরকারে নরেন্দ্র মোদি। ঝালোরে গত ২০ বছর ...

শহরজুড়ে ফ্লেক্স-ব্যানার। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের ধাক্কায় শহর মুড়েছে প্লাস্টিকের পতাকা এবং আরও কিছু প্লাস্টিকের তৈরি প্রচার সামগ্রীতে। ভোট মিটলে সেগুলির প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়। হয়ে ওঠে বর্জ্য। রাস্তার ধারে পড়ে থাকে। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৪৫১: দিল্লির বাদশাহ আলম শাহ সিংহাসন ছাড়েন
১৭৭০: ক্যাপ্টেন কুক অস্ট্রেলিয়া আবিষ্কার করেন
১৮৮২: বিবর্তনবাদের স্রষ্টা চার্লস ডারউইনের মৃত্যু
১৮৬৭: ভারতীয় পণ্ডিত ও কলকাতা হিন্দু সমাজের বিশিষ্ট নেতা স্যার রাজা রাধাকান্ত দেব বাহাদুরের মৃত্যু
১৯০৬: নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী  পিয়ের ক্যুরির মৃত্যু
১৯০৯: শ্রীরামকৃষ্ণ অনুশাসনের স্বামী লোকেশ্বরানন্দ জন্ম গ্রহণ করেন
১৯৩৩: ক্রিকেট বিশ্বের শ্রেষ্ঠ আম্পায়ার ডিকি বার্ডের জন্ম
১৯৪৫: জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্ত অভিনেত্রী সুরেখা সিক্রির জন্ম
১৯৪৮: বাংলা রঙ্গমঞ্চের অভিনেত্রী তারা সুন্দরী প্রয়াত হন  
১৯৫৫: শিকারি ও লেখক জিম করবেটের মৃত্যু
১৯৫৪: পাকিস্তানের গণপরিষদে উর্দু এবং বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়
১৯৫৬: অভিনেতা মুকেশ ঋষির জন্ম  
১৯৫৭: শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির জন্ম
১৯৫৮: সাহিত্যিক অনুরূপা দেবীর মৃত্যু
১৯৬৮: অভিনেতা আরশাদ ওয়ারশি’র জন্ম
১৯৭২: ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার রিভাল্ডোর জন্ম  
১৯৭৫: ভারত প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ আর্যভট্ট উৎক্ষেপন করে
১৯৭৭: ভারতীয় দীর্ঘ জাম্পার অঞ্জু ববি জর্জের জন্ম
১৯৮৭: রুশ টেনিস খেলোয়াড় মারিয়া শারাপোভার জন্ম  
১৯৯৫: ভারতীয় ক্রিকেটার দীপক হুড্ডার জন্ম



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.০৩ টাকা ৮৪.১২ টাকা
পাউন্ড ১০২.৮৭ টাকা ১০৫.৫০ টাকা
ইউরো ৮৮.০২ টাকা ৯০.৪৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৪,৩৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৪,৭০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭১,০০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৪,১০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৪,২০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
18th  April, 2024

দিন পঞ্জিকা

৬ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪। একাদশী ৩৬/৫৮ রাত্রি ৮/৫। মঘা নক্ষত্র ১৪/১০ দিবা ১০/৫৭। সূর্যোদয় ৫/১৬/৫৪, সূর্যাস্ত ৫/৫৪/৪২। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৫৭ মধ্যে পুনঃ ৭/৪৭ গতে ১০/১৯ মধ্যে পুনঃ ১২/৫১ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/১৪ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/২৫ গতে ৮/৫৬ মধ্যে পুনঃ ৩/০ গতে ৩/৪৪ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১২ মধ্যে পুনঃ ৩/৪৪ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/২৬ গতে ১১/৩৫ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৫ গতে ১০/১০ মধ্যে। 
৬ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪। একাদশী রাত্রি ৮/৫৬। মঘা নক্ষত্র দিবা ১২/১১। সূর্যোদয় ৫/১৭, সূর্যাস্ত ৫/৫৬। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ৭/৩৮ গতে ১০/১৫ মধ্যে ও ১২/৫১ গতে ২/৩৫ মধ্যে ও ৪/২০ গতে ৫/৫৬ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩২ গতে ৯/০ মধ্যে ও ২/৫০ গতে ৩/৩৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১১ মধ্যে ও ৩/৩৪ গতে ৫/১৬ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৭ গতে ১১/৩৭ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৬ গতে ১০/১২ মধ্যে। 
৯ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
মণিপুরের মইরাংয়ে ভোট চলাকালীন একটি পোলিং বুথে চলল গুলি

12:16:15 PM

লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ (প্রথম দফা): সকাল ১১ টা পর্যন্ত মেঘালয়ে- ৩১.৬৫ শতাংশ, মিজোরামে- ২৬.২৩ শতাংশ, নাগাল্যান্ডে- ২২.৫০ শতাংশ, পুদুচেরীতে- ২৭.৬৩ শতাংশ, রাজস্থানে- ২২.৫১ শতাংশ, সিকিমে- ২১.২০ শতাংশ ভোট পড়ল

12:14:07 PM

কোচবিহারের ভেটাগুড়ির খারিজবালাডাঙা গ্রামে রাস্তায় পড়ে তাজা বোমা

12:14:02 PM

লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ (প্রথম দফা): সকাল ১১ টা পর্যন্ত আলিপুরদুয়ারে ৩৫.২০ শতাংশ ও কোচবিহারে ৩৩.৬৩ শতাংশ ভোট পড়ল

12:13:09 PM

তৃণমূলের কর্মীদের ভোট দিতে যেতে বাধা শীতলকুচির ছোট শালবাড়ির পঞ্চারহাট এলাকায়, প্রতিবাদে পথ অবরোধ

12:12:23 PM

দেওয়ানকোর্টে জয়দুয়ার গ্রামে ২৫১ নম্বর বুথে তৃণমূলের ক্যাম্প অফিসে হামলার অভিযোগ, কাঠগড়ায় বিজেপি

12:10:45 PM