Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

মাটির প্রদীপ
সুব্রত দাস

কাঁকড়ার ঘিলু সিদ্ধ হয়েছে মেটে হাঁড়িতে, শুকনো পাতার জ্বালে। তাকে অতি যত্ন করে নুন লঙ্কা দিয়ে মেখেছে ফুলুদির সাত বছরের মেয়ে মিতালি। আজ দুপুরে সকলের পাতেই ভাত আর ওই ঘিলুমাখা।
মেনুটা দেখে মনে মনে কিছুটা মুষড়ে পড়ল সায়ন্তী। প্রথমে ঠিক বিশ্বাস করতে পারেনি। তার পর যখন বুঝল এইটাই সব, আর কিছু নেই, তখন বাঁ হাতের তালু দিয়ে কপালের ঘাম মুছে ডান হাতে ভাত স্পর্শ করল।
খিদেয় পেট চোঁ চোঁ করছে। মাছ মাংস চাই না, এমনকী একটা ডিমসেদ্ধও চাই না, একটুখানি ডাল আর যে-কোনও একটু সব্জি হলেই দিব্যি খাওয়া হয়ে যায় সায়ন্তীর। অথচ তেমন কোনও ব্যবস্থা পাতে নেই।
গ্রামে দারিদ্র্য আছে ঠিকই। ঘরে ঘরে প্রবল দারিদ্র্য। চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন আজও মানুষের এই অবস্থা। ফুলুদিদের অবস্থাও খুবই খারাপ। ডালপালা, মাটি, বাঁখারি, নানা ধরনের বড় বড় পাতা, একটু আধটু প্লাস্টিক ইত্যাদি জড়িয়ে কোনরকমে মাথানত করে দাঁড়িয়ে রয়েছে তাদের চালাটা। তাই বলে আমন্ত্রিত অতিথির পাতে এই মেনু? না হয় একটু ধারদেনাই করত! নিদেন পক্ষে একটু আলুভাজাও কি করা যেত না?
বেজার মনে মোটা লালচে চালের ফ্যানাফ্যানা একমুঠো ভাত দলা করে মুখে তুলল সায়ন্তী। ঘিলুমাখার দিকে তাকাতে ইচ্ছে করছে না। কিন্তু খেতে হবেই, এটা তার নিজের কাছে নিজেরই অঙ্গীকার। ছোট হাতে বেশি বেশি ভাত পরমানন্দে খেতে খেতে মিতালি হঠাৎ উঠে দাঁড়িয়ে বলে উঠল, ‘মাসিমণি, একটু তেঁতুল নেবে? আনব?’ প্রশ্নটার মাথামুণ্ডু কিছু বুঝল না সায়ন্তী। তেঁতুল দিয়ে কী করবে সে? নিজেকে সামলে নিয়ে হাসার চেষ্টা করে সে বলল, ‘না রে মনা, তেতুঁল লাগবে না। তুই খা।’ তার পর আঙুলে করে একটু ঘিলু মুখে দিল। সেটা ভিতরে যেতেই মনে হল সামান্য সরষের তেল, কাসুন্দি, ধনেপাতা, পেঁয়াজ কুচি দিয়ে মাখলে গরম ভাতের সঙ্গে খুব মন্দ লাগত না জিনিসটা। কিন্তু সেসব কোথায়!
নিজের মায়ের মুখটা মনে পড়ে সায়ন্তীর। ফের আঙুলে করে ঘিলু মুখে তোলে সে। ছোটবেলা থেকেই ওদের পরিবারের একটা শিক্ষা আছে। মা শিখিয়েছে, খিদের সময় যেখানে যতটুকু যা পাবে তা-ই খাবে, সোনামুখ করে খাবে। এটা খাই না, ওটা খাব না— এমন ধারা শিক্ষা হয়নি সায়ন্তীর। ফলে, সবটা ভাত এবং ঘিলুমাখা শেষ পর্যন্ত শেষ করল সে। পুরো এক গ্লাস জল খেয়ে আন্তরিক তৃপ্তির একটা ছোট্ট ঢেকুরও তুলে ফেলল এবং সেটা তুলে ফেলেই সঙ্গে সঙ্গে অভ্যাসবশত মুখে হাত ঠেকিয়ে বলল, ‘সরি।’
শহরে যারা ফুটপাথে থাকে, তারা রাস্তার আনাচেকানাচে নিজেদের ছেঁড়াফাটা জামাকাপড় ধুয়ে মেলে রাখে। অনেকটা তেমন ভাবেই মিতালিদের নোনা গ্রাম পড়ে আছে সমুদ্রের ধারে। এখানেই গত তিন-তিনটে দিন কাটিয়েছে সায়ন্তী, অ্যানথ্রপোলজির ফিল্ড ওয়ার্কের জন্য। চার বন্ধু মিলে উঠেছে এখান থেকে কিছুটা দূরে বেসরকারি একটা গেস্ট হাউজে। সেখানে খাওয়াদাওয়া সহ শহুরে জীবনযাত্রার মোটামুটি সমস্ত ব্যবস্থাই আছে। দেখে বেশ ভালো লেগেছিল সায়ন্তীর। কিন্তু গ্রামের ভিতরে যত সে ঢুকেছে তত টের পেয়েছে হ্যাভস্ আর হ্যাভ-নটস্-এর পার্থক্যটা বাস্তবে ঠিক কেমন। তার জন্য অ্যাসাইনড্ এই গোটা গ্রামটা সে হেঁটে হেঁটে ঘুরেছে জলের বোতল, ফোন, ক্যামেরা আর বিস্কুট নিয়ে। যেচে যেচে আলাপ করেছে বেশ কিছু ভাঙাচোরা মানুষের সঙ্গে। ছবি তুলেছে প্রচুর।
গ্রামে পুরুষ কম, ষাট-সত্তরের উপরে যাদের বয়স তারা কিছু জন আছে। কমবয়সি মহিলাও খুব কম। তবু কয়েকজন আছে। তাদের মধ্যে ফুলুরানি নস্করকে চমৎকার লেগেছে সায়ন্তীর। প্রথম আলাপেই লাজুক চাহনি আর মিষ্টি মুখের মেয়েটি বলেছিল, ‘দিদি বলে ডেকেছ যখন তাহলে আমাদের বাড়িতে একদিন খেয়ে যেতে হবে।’ সায়ন্তী ফুলুকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল, ‘ঠিক আছে ফুলুদি। কাল দুপুরে তোমার ওখানেই খাব।’
দক্ষিণ কলকাতার নতুন রেস্তরাঁর স্কয়ার টেবিলে গুগলির স্যুপ দেখে ফুলুদির কথাই প্রথম মনে এল সায়ন্তীর। কাঁকড়াসিদ্ধ খেতে খেতে গুগলির কথা আলোচনা করেছিল ফুলুদি। কথাগুলো মনে পড়ে সায়ন্তীর চোখটা ঝাপসা হয়ে আসে। জানলার পর্দা সরিয়ে কাচের ভিতর দিয়ে নীচে বয়ে চলা শহরের দিকে তাকায় সে। দীপ্তেশ গিয়েছে ওয়াশ রুমে। ভরদুপুরে এসির আরামদায়ক ঠান্ডায় সায়ন্তীর চোখটা বুজে আসে। অন্যমনস্ক হয়ে পড়ে সে। একটু পর মিতালির সেই তেঁতুল অফার করার কথা ভেবে সায়ন্তী আনমনে হেসে ফেলে চোখ খুলল। দীপ্তেশ এসে উল্টো দিকে বসেছে। স্যানিটাইজারে হাত মুছে সে বলল, ‘হাসিস না। এসব আর শুধু আদিবাসীদের খাদ্য নয়। কলকাতাও কষিয়ে খাচ্ছে। হাই প্রোটিন।’ সায়ন্তী কোনও জবাব দিল না। একটা চামচ হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেটা দেখছে আনমনে। দীপ্তেশও যে ওকে দেখছে সেটা খেয়াল নেই ওর। একটু বিরক্তি আড়াল করার চেষ্টা করল দীপ্তেশ। স্বাভাবিক গলায় বলল, ‘কী হল? খা!’ সায়ন্তী এবারও কোনও কথা বলল না। শুধু একটু মাথা নাড়ল। নীরবে এক চামচ স্যুপ মুখে দিল। তারপর এমনভাবে একটা প্রশ্ন করল যেন আলোচনাটা চলছিলই। সায়ন্তী বলল, ‘আচ্ছা, তুই কখনও কাঁকড়াসিদ্ধ খেয়েছিস?’ দীপ্তেশ হেসে জবাব দিল, ‘কাঁকড়াসিদ্ধ? না, কাঁকড়া খেয়েছি, তবে সিদ্ধ না। তুই খেয়েছিস নাকি? কোথায়?’ সায়ন্তী স্যুপের মধ্যে চামচ নাড়তে নাড়তে গল্পটা বলছিল ওকে।
দীপ্তেশ ব্যাপারটা মোটামুটি আন্দাজ করে নিয়ে মাঝপথে বাধা দিয়ে বলল, ‘বুঝেছি বুঝেছি। আর বলতে হবে না।’ সায়ন্তী বুঝতে পারল না, দীপ্তেশের গলায় এত অস্থিরতা কীসের। একটা ঢোক গিলে গম্ভীর গলায় সে বলল, ‘সরি। আমি বুঝতে পারিনি তুই বোর হবি।’ দীপ্তেশ হাসার চেষ্টা করে বলল, ‘বোর হওয়ার ব্যাপার না। আসলে দেখ, গত বেশ কিছু দিন ধরে তোর এবং আমার দু’জনেরই কিছু অ্যাসাইনমেন্ট ছিল। ফলে অনেকদিন আমরা মিট করতে পারিনি। অভিয়াসলি হোয়াটস্অ্যাপে কথা হয়েছে। বাট স্টিল, এত দিন পর দু’জনে মিট করলাম, আর তুই সেই তোর একই সাবজেক্ট শুরু করলি।’ সায়ন্তীর অবাক ভাবটা যেন বেড়ে গেল। বলল, ‘আমি তো বাই দি বাই একটা এক্সপিরিয়েন্স শেয়ার করছিলাম। এতে তোর এভাবে রিঅ্যাক্ট করার মানেটা ঠিক বুঝতে পারলাম না কিন্তু?’ দীপ্তেশ অন্য কিছু কথা বলতে এসেছিল। শুরুতেই সব উল্টোপাল্টা হয়ে যাচ্ছে দেখে আরও ঘেঁটে গেল সে। দাঁতটা কিড়মিড় করে বলল, ‘ও কে, ফাইন। তা এবার কি তুই দারিদ্র্য দূরীকরণ কর্মসূচিতে নামবি? তো যা, গিয়ে নাম। আর দাঁড়া, এই নে, কিছু ডোনেশনও নিয়ে যা।’ বলেই সে মানিব্যাগ বের করে পাঁচশো টাকার একটা নোট এগিয়ে দিল।
সায়ন্তী অত্যন্ত অবাক হয়ে দীপ্তেশের দিকে তাকাল। কই, এমন সুন্দর, নরম মনের ছেলেটাকে এতটা নির্মম আগে তো কখনও মনে হয়নি। এ কি সেই দীপ্তেশ? সায়ন্তীর মনে পড়ে বছর তিনেক আগে বড়বাজারের একটা কথা। এক বয়স্ক মুটে মাথায় ভারি বস্তা নিয়ে একপা-দুপা করে এগচ্ছিল। মে মাসের দুপুরে তার সারা শরীর দিয়ে ঘাম ঝরছিল। হাঁটু দুটো থরথর করে কাঁপছিল। তখন দীপ্তেশ একটা কাণ্ড করে বসল। সটান গিয়ে বলল, ‘চাচা, দেখি আমাকে দিন তো বস্তাটা। কোথায় যাবেন? আমি পৌঁছে দিচ্ছি।’ বৃদ্ধ ঘাবড়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল। আশপাশের লোকজন সন্দেহজনক চোখে তাকাল। একজন জোয়ান মুটে এগিয়ে এসে হিন্দিতে বলল, ‘আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। কিন্তু এ আমাদের রোজের কাজ।’ আরও কয়েকজন দীপ্তেশকে বোঝাল। সেদিন সারাক্ষণ দীপ্তেশ শুধু একটা কথাই বলছিল যে, কেন একজন মানুষকে এমন পশুর মতো খাটায় লোকজন। সায়ন্তী দীর্ঘশ্বাস ফেলল। সেই দীপ্তেশ আর নেই। হি ইজ নাও অ্যান অ্যাসপিরেন্ট ওয়ান। সময় নিয়ে খুব শান্ত গলায় সায়ন্তী বলল, ‘দীপ্তেশ, আমি নামব কি না এখনও ভাবিনি। কিন্তু ছিঃ ছিঃ, তুই কখনও এভাবে নেমে যাস না যেন।’
ফাইনাল সেমেস্টারের ছাত্র দীপ্তেশ বুঝল সায়ন্তীর কথাটার ইঙ্গিত। আর বুঝল বলেই সে যেন আরও রেগে গেল। সত্যি বলতে কী, সায়ন্তীর মধ্যে একটা শিক্ষিত সুন্দরী নির্ঝঞ্ঝাট বউয়ের স্বপ্নই দেখছিল সে বছর চারেক ধরে। শান্তিনিকেতনে খোয়াইয়ের হাটে ওদের আলাপ হয়েছিল। প্রথম দেখাতেই দীপ্তেশ ভেবেছিল একেই তো সে খুঁজছে। কিন্তু স্বপ্নটা কিছুতেই ঠিকঠাক দানা বাঁধছিল না। এখন ভাবছে, একেই কি সে খুঁজেছিল? চার বছর আগের সায়ন্তী কি বদলে গিয়েছে? না কি দীপ্তেশের খোঁজ বদলে গিয়েছে? সায়ন্তী ওর কাছে যেভাবে এসেছিল তার একটা বদল হয়েছে ঠিকই। ওর মুখের কথার মধ্যে প্রচুর বইয়ের শব্দ। সে সব বইয়ের অনেকগুলোর নামই শোনেনি দীপ্তেশ। সায়ন্তী প্রায় সবসময়ই কোনও-না-কোনও প্রসঙ্গে এক ধরনের ফালতু আলোচনা জুড়ে দেয়। ওর হালচাল কিছুতেই ঠিক বোঝে না সে। দীপ্তেশ বলতে চায়, আরে ভাই, দেশে গরিব আছে সবাই জানে। তারা না খেয়ে মরে, অখাদ্য খেয়ে মরে সবাই জানে। তাই বলে প্রতিদিনের জীবনে সেগুলোকে টেনে এনে লাভ কী? লোকে খেতে পাচ্ছে না বলে আমাদের সব শখ-আহ্লাদ সব ছেড়ে দিতে হবে নাকি? দিস ইজ রিয়েলি ডিজগাস্টিং। তবু হাল ছেড়ে দেওয়ার আগে আরও কিছুটা চেষ্টা করতে চায় সে। কিন্তু আজও সায়ন্তীর রকমসকম বেগতিক দেখে রাগে কী করবে বুঝতে পারল না। শেষে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে বলল, ‘দেখ, এই বাড়াবাড়িগুলো ছাড় এবার। নিজের লাইফ সিকিওর্ড রেখে অন্যের জন্য কাঁদুনি গাইতে আমাদের লজ্জা করা উচিত।’
সায়ন্তীকে যেন কেউ গলা টিপে ধরেছে। বলতে ইচ্ছে করছে অনেক কথা। কিন্তু ভালো লাগছে না। নিজেকে অত্যন্ত ছোট মনে হচ্ছে। উঠে দাঁড়িয়ে সায়ন্তী বলল, ‘শোন, আমার একটা জরুরি কাজ আছে! আজ চলি।’ বলেই সে পা বাড়াল। কিন্তু আশ্চর্য, পা চলতে চাইছে না সায়ন্তীর। সম্পর্ক এমন ঠুনকোও কি হতে পারে? কিছুতেই বিশ্বাস হয় না তার। নিজেকে শক্ত মেয়ে বলেই সে বিশ্বাস করত। হঠাৎ চোখের অবাধ জল সে বিশ্বাসে চির ধরাল।
বড় রাস্তার ধারে এসে দাঁড়িয়েছে সায়ন্তী। দীপ্তেশ তার সামনে দিয়ে বাইকে চেপে সাঁ করে বেরিয়ে গেল। স্বাভাবিকের চেয়ে একটু যেন বেশি জোরেই গেল, যাওয়াটা ভালো করে বোঝানোর জন্যই বোধহয়। সায়ন্তীর দিকে একবার তাকাল পর্যন্ত না। ছেলেটার মধ্যে এত ঔদ্ধত্য জন্ম নিল কোথা থেকে? এত আত্মসর্বস্বতা নিয়ে কী করে হস্টেলের পিছনে বস্তির ছেলেগুলোকে পড়ায় ও? এসবের কোনও কুল কিনারা পায় না সায়ন্তী। ব্রেক-আপের যন্ত্রণা থেকেও অন্য কোনও একটা যন্ত্রণা বেশি বিদ্ধ করে তাকে। মনটা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। মাথার মধ্যে ঘুরছে, তাহলে কি কোনও দিন কোনও ভালোবাসা ছিল না ওদের মধ্যে? তা যদি না থাকে তো কী ছিল এত দিন ধরে? চিন্তাগুলো বড় একটা সাঁড়াশির মতো চেপে ধরতে চায় সায়ন্তীকে। কিন্তু যত সে আশপাশে তাকায়, তত যেন সাঁড়াশির আঁটুনি ঢিলে হয়। বাইরে ঝাঁকুনি লাগলেও একেবারে ভিতরটায় খুব একটা শূন্যতা তৈরি করতে পারে না।
সায়ন্তী দাঁড়িয়েই আছে রাস্তার ধারে। ওপাড়ে পুরু কাচঘেরা পাঁচতলা বাজারের গায়ে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের বিশাল ফ্লেক্স। তার পিছনে ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে সূর্যটা। সেই দিকে সায়ন্তীর চোখ আটকে রয়েছে। আচমকা একটা বাইক এসে ব্রেক কষল সায়ন্তীর সামনে। চমকে দু’পা পিছিয়ে গেল সায়ন্তী। তাকাল শব্দটার দিকে। একটা হেলমেট এগিয়ে দিয়ে দীপ্তেশ বলল, ‘বোস। যেতে যেতে তোর ফুলুদির বাকি গল্পটা শুনি।’ কিন্তু সায়ন্তী নড়ল না। দীপ্তেশ আবার বলল, ‘কী হল, বোস!’ সায়ন্তীর চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ল। দীপ্তেশ বাইক থেকে নেমে কাছে এসে দাঁড়াল। নরম গলায় বলল, ‘কাঁদছিস কেন বলত ফ্যাচফ্যাচ করে?’ সায়ন্তী চোখ মুছে বলল, ‘ওইটুকু মেয়ে অত যত্ন করে আমাকে কাঁকড়া মেখে দিল। অথচ ওর গালটা ধরে একবারও বললাম না যে, মামণি, মাখাটা খুব সুন্দর হয়েছে।’ দীপ্তেশ বলল, ‘পরশু রোববার, সকাল সকাল রওনা দিলে আমিও যেতে পারি। যাবি?’ 
অঙ্কন : সুব্রত মাজী
23rd  April, 2023
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। বিশদ

31st  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। বিশদ

24th  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
গুরুদ্বার সিস গঞ্জ

দিল্লি দেখতে এসে চাঁদনী চক যাওয়া হবে না? তা কীভাবে হয়? অতএব দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ভ্রমণস্থল চাঁদনী চক।
বিশদ

17th  March, 2024
দেখা যায় না, শোনা যায় পুতুল বাড়ি
 

আকর্ষণ, বিতর্ক, কৌতূহলের চিরন্তন কেন্দ্রবিন্দু অলৌকিক দুনিয়া। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দুই শিবিরেরই এব্যাপারে আগ্রহ ষোলোআনা। তাই ভৌতিক সাহিত্য হোক বা সিনেমা, বাজারে কাটতি বরাবরই বেশি।
বিশদ

17th  March, 2024
প্রস্থান
দীপারুণ ভট্টাচার্য

শববাহী গাড়িটা গেটের ভিতর ঢুকতেই অরুণবাবু চারপাশটা দেখলেন। বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে তার ছেলে নীলাঞ্জন আর বউমা সুতপা। নীলাঞ্জন বড় চাকরি করে। সে ফোন পেয়েছিল অফিসে যাওয়ার পর। সুতপাকে বলেছিল, ‘বেরতে একটু সময় লাগবে। বিশদ

10th  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: জাহান আরার সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ পরব চলছে। আগ্রা জুড়ে উৎসবের উচ্ছ্বাস। এখন ১৬৪৪। বাদশাহ শাহজাহানের আগ্রা দুর্গে সবথেকে বেশি উজ্জ্বল আয়োজন। স্বাভাবিক। প্রতি বছর নভরোজের সময় আগ্রা দুর্গ এভাবেই সেজে ওঠে। সম্রাটের পুত্রকন্যারা এই সময়টায় পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন। বিশদ

10th  March, 2024
অতীতের আয়না: বাঙালির সার্কাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

১৯২০ সালের ২০ মে। নিজের ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নিয়ে সিঙ্গাপুরে ট্যুরে গিয়ে জন্ডিস হয়ে মারা গেলেন প্রিয়নাথ বসু। শুধু উপমহাদেশের সার্কাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও উৎকর্ষের নতুন মানদণ্ড ছাড়াও, বিনোদন শিল্প হিসেবে সার্কাসকে দৃঢ় ভিত দিয়ে গেলেন তিনি। বিশদ

10th  March, 2024
ভোগ
শুচিস্মিতা  দেব

পুতুলকে সদ্যই নিমতিতা থেকে ‘রায়চৌধুরী ভিলা’তে এনেছে তার পিসি সবিতা। সবিতা এই পরিবারের বহু দিনের থাকা-খাওয়ার মাসি। টিভি সিরিয়ালের মতো প্রকাণ্ড বাড়িখানা দেখে পেরথমেই ভেবলেছে পুতুল। ফুটবল মাঠের মতো বৈঠকখানা। বিশদ

03rd  March, 2024
রুপোর চাকু

আলমারিটা খুলতেই দাদার চোখ চলে গিয়েছিল। উপরের তাকে জামা কাপড়ের পাশে খালি জায়গায় শোয়ানো ছিল। বাজপাখির চোখ দাদার।
বিশদ

25th  February, 2024
অপরাজিতা
মীনাক্ষী সিংহ

জুনিয়র ডাক্তার সুমন সান্যাল জানিয়ে গেল অপারেশন থিয়েটার রেডি, এবার ডাঃ মিত্রকে যেতে হবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠলেন সার্জেন মাধবিকা মিত্র। আজ একটা ক্রিটিক্যাল অপারেশন। বছর সতেরোর মেয়েটির মায়ের মুখ মনে পড়ল মাধবিকার। বিশদ

18th  February, 2024
একনজরে
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর কেটে গিয়েছে প্রায় ১৮ বছর। তবু রাজ্যে তৈরি হয়নি পুলিস কমপ্লেন সেন্টার। ফলে এবার স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে রিপোর্ট তলব করল প্রধান বিচারপতি ...

শহরজুড়ে ফ্লেক্স-ব্যানার। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের ধাক্কায় শহর মুড়েছে প্লাস্টিকের পতাকা এবং আরও কিছু প্লাস্টিকের তৈরি প্রচার সামগ্রীতে। ভোট মিটলে সেগুলির প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়। হয়ে ওঠে বর্জ্য। রাস্তার ধারে পড়ে থাকে। ...

আজ, শুক্রবার প্রথম দফার ভোটগ্রহণ হবে উত্তরবঙ্গের তিনটি লোকসভা আসনে। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে মোট ৩৭ জন প্রার্থীর ভাগ্যবন্দি হবে ইভিএমে। গণতন্ত্রের এই উৎসবে ...

পুরো দেশে কান ঝালাপালা বিজেপির ‘মোদি কি গ্যারান্টি’র প্রচার। ঢাক পেটানো হচ্ছে ডাবল ইঞ্জিনের। কেন্দ্রে গত ১০ বছর সরকারে নরেন্দ্র মোদি। ঝালোরে গত ২০ বছর ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৪৫১: দিল্লির বাদশাহ আলম শাহ সিংহাসন ছাড়েন
১৭৭০: ক্যাপ্টেন কুক অস্ট্রেলিয়া আবিষ্কার করেন
১৮৮২: বিবর্তনবাদের স্রষ্টা চার্লস ডারউইনের মৃত্যু
১৮৬৭: ভারতীয় পণ্ডিত ও কলকাতা হিন্দু সমাজের বিশিষ্ট নেতা স্যার রাজা রাধাকান্ত দেব বাহাদুরের মৃত্যু
১৯০৬: নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী  পিয়ের ক্যুরির মৃত্যু
১৯০৯: শ্রীরামকৃষ্ণ অনুশাসনের স্বামী লোকেশ্বরানন্দ জন্ম গ্রহণ করেন
১৯৩৩: ক্রিকেট বিশ্বের শ্রেষ্ঠ আম্পায়ার ডিকি বার্ডের জন্ম
১৯৪৫: জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্ত অভিনেত্রী সুরেখা সিক্রির জন্ম
১৯৪৮: বাংলা রঙ্গমঞ্চের অভিনেত্রী তারা সুন্দরী প্রয়াত হন  
১৯৫৫: শিকারি ও লেখক জিম করবেটের মৃত্যু
১৯৫৪: পাকিস্তানের গণপরিষদে উর্দু এবং বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়
১৯৫৬: অভিনেতা মুকেশ ঋষির জন্ম  
১৯৫৭: শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির জন্ম
১৯৫৮: সাহিত্যিক অনুরূপা দেবীর মৃত্যু
১৯৬৮: অভিনেতা আরশাদ ওয়ারশি’র জন্ম
১৯৭২: ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার রিভাল্ডোর জন্ম  
১৯৭৫: ভারত প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ আর্যভট্ট উৎক্ষেপন করে
১৯৭৭: ভারতীয় দীর্ঘ জাম্পার অঞ্জু ববি জর্জের জন্ম
১৯৮৭: রুশ টেনিস খেলোয়াড় মারিয়া শারাপোভার জন্ম  
১৯৯৫: ভারতীয় ক্রিকেটার দীপক হুড্ডার জন্ম



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.০৩ টাকা ৮৪.১২ টাকা
পাউন্ড ১০২.৮৭ টাকা ১০৫.৫০ টাকা
ইউরো ৮৮.০২ টাকা ৯০.৪৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৪,৩৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৪,৭০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭১,০০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৪,১০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৪,২০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
18th  April, 2024

দিন পঞ্জিকা

৬ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪। একাদশী ৩৬/৫৮ রাত্রি ৮/৫। মঘা নক্ষত্র ১৪/১০ দিবা ১০/৫৭। সূর্যোদয় ৫/১৬/৫৪, সূর্যাস্ত ৫/৫৪/৪২। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৫৭ মধ্যে পুনঃ ৭/৪৭ গতে ১০/১৯ মধ্যে পুনঃ ১২/৫১ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/১৪ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/২৫ গতে ৮/৫৬ মধ্যে পুনঃ ৩/০ গতে ৩/৪৪ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১২ মধ্যে পুনঃ ৩/৪৪ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/২৬ গতে ১১/৩৫ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৫ গতে ১০/১০ মধ্যে। 
৬ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪। একাদশী রাত্রি ৮/৫৬। মঘা নক্ষত্র দিবা ১২/১১। সূর্যোদয় ৫/১৭, সূর্যাস্ত ৫/৫৬। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ৭/৩৮ গতে ১০/১৫ মধ্যে ও ১২/৫১ গতে ২/৩৫ মধ্যে ও ৪/২০ গতে ৫/৫৬ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩২ গতে ৯/০ মধ্যে ও ২/৫০ গতে ৩/৩৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১১ মধ্যে ও ৩/৩৪ গতে ৫/১৬ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৭ গতে ১১/৩৭ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৬ গতে ১০/১২ মধ্যে। 
৯ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
লোকসভা নির্বাচন ২০২৪: জয়পুরে ভোট দিলেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী দিয়া কুমারী

11:03:50 AM

উত্তরপ্রদেশের আমরোহায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী জনসভা, রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও

10:56:57 AM

লোকসভা নির্বাচন ২০২৪: চেন্নাইতে ভোট দিলেন অভিনেতা বিজয় সেতুপথি

10:52:15 AM

ছত্তিশগড়ের বিজাপুরে বোমা বিস্ফোরণে জখম এক সিআরপিএফ জওয়ান

10:50:45 AM

লোকসভা নির্বাচন ২০২৪: গ্যাংটকে ভোট দিলেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং

10:50:39 AM

কোচবিহারের তুফানগঞ্জে অশান্তি
কোচবিহারের তুফানগঞ্জে ভোটকে কেন্দ্র করে অশান্তি। তুফানগঞ্জ দুই নং ব্লকের ...বিশদ

10:48:34 AM