Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

অমূল্য রতন
প্রদীপ আচার্য

একেবারে বাজপাখির মতো ছোঁ মেরে বইটাকে তুলে নিলেন প্রমদাকান্ত। উত্তেজনায় থরথর করে কাঁপছিলেন তিনি। এই বইটা তিনি এভাবে ফুটপাতে পাবেন কোনওদিন স্বপ্নেও ভাবেননি। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কিন্তু, তিনি এই মুহূর্তে যা দেখছেন, তা কোনও ভোজবাজি বা স্বপ্ন নয়। কোনও দৃষ্টিভ্রমও নয়। একেবারে দিনের আলোয় জ্বল জ্বল করছে এক নির্মম সত্যি। প্রমদাকান্তর উত্তেজনা বেড়ে যায়। গলায় খরা লেগে যায়। একগ্লাস জল পেলে ভালো হতো এখন। এই বই তিনি কিছুতেই হাতছাড়া করতে পারবেন না। হাজার টাকা দিতে হলেও দেবেন প্রমদাকান্ত। 
ছেলেটা দেখেনি ভাগ্যিস। দেখলে দাম বাড়িয়ে বলত নির্ঘাত। ফুটপাতের দোকানদার ওরা। কাস্টমারের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বোঝে। প্রমদাকান্তও কম যান না। এই ফুটপাত থেকে জলের দরে দেশি-বিদেশি সাহিত্যের অনেক অমূল্য রতন তুলে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। সেই যে সেই যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখো তাই...। প্রমদাকান্ত তাই করেন। তবে কোনও বই নিয়ে বেশি আগ্রহ দেখালে ওরা বুঝতে পারে। ভেবে নেয় পাখি ফাঁদে পড়েছে। উড়ে যাবে না। তাই নট নড়নচড়ন। তখন ফিক্সড প্রাইসের গাওনা গায়। আরে রাখ তোমার ফিক্সড প্রাইস। ফুটের বইয়ের দোকান। কোনও বাড়ির মনিব মারা গিয়েছে। ছেলেরা বিদেশে থাকে। বাড়ির চাকর বইয়ের আলমারি ফাঁক করে ঝেড়ে দিচ্ছে। নইলে এত পুরনো এডিশনের রেয়ার বই এত কমে বেচো কী করে চাঁদু? ওসব আমাকে শেখাতে এসো না। মনে মনে এসবই বিড়বিড় করেন প্রমদাকান্ত। আবার ভাবেন, সবই কি বাড়ির চাকর ঝাড়ে? ছেলেরাও তো জঞ্জাল সাফ করার জন্য আলমারি ধরেই বেচে দিচ্ছে আজকাল। বাবা হয়তো অভাবের মধ্যেও কষ্টের টাকায় বই কিনেছেন।  আহাম্মকের মতো কাজ করেছেন। যেমন তিনি করছেন।
কবে আছেন কবে নেই। একবার তাঁর ছেলে অর্ক তাঁর একটা ছবি বাঁধানোর আর্জেন্ট অর্ডার দিলেই হল। সাদা কাপড়ের ম্যারাপ খোলা ইস্তক তর সইবে না, আলমারি ধরেই হয়তো বেচে দেবে।
ছেলেকে ডাক্তার বানিয়ে কানমলা খেয়েছেন তিনি। সাহিত্যের সাতশো কিলোমিটার দূর দিয়ে হেঁটে চলে যায়। বইগুলো সব ওজন দরেই হয়তো বেচে দিয়ে বেঁচে বর্তে যাবে। প্রমদাকান্ত ভাবেন, অর্কর বউ মধুরিমাও তো ডাক্তার। তাঁর তো বইয়ের প্রতি বেশ আগ্রহ আছে। ছেলেটা অমন বেরসিক হল কী করে? বাপের কিসসু পায়নি অর্কটা। উল্টে বউমা মধুরিমা যেন শ্বশুরের ধাঁচ পেয়েছে। রীতিমতো বইপত্তর পড়েটড়ে। আজকের এই ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের ই-বুকের এরাতেও ওই বয়সি একটা মেয়েকে বই পড়তে দেখলে নতুন করে বাঁচতে ইচ্ছে করে।
পেনশনের টাকায় এমনিতেই টেনেটুনে চলতে হয় প্রমদাকান্তকে। সেই টাকায় থাবা বসাচ্ছে বই। একেবারে বাঘের থাবা। রেহাই নেই। কী করবেন প্রমদাকান্ত? রেয়ার বই পড়া, সেসব বই সংগ্রহে রাখার নেশা মদের নেশার চেয়েও মারাত্মক। সেই নেশাতেই সপ্তাহে একবার অন্তত এই অঞ্চলে ঢুঁ না মারলে পেটের ভাত পাকস্থলী ইস্তক পৌঁছবে না প্রমদাকান্তর।
হাতে বইটা নিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁপতে থাকেন প্রমদাকান্ত। ছেলেটার অবশ্য হুঁশ নেই। শেষমেশ জলের দরেই বইটা পেয়ে গেলেন তিনি। বইটাকে শুধু রেয়ার কালেকশন বললে ভুল হবে। রেয়ার অব দ্য রেয়ারেস্ট যাকে বলে।
প্রমদাকান্তর বয়স বাহাত্তর ছুঁই ছুঁই। বলতে গেলে জীবনের একেবারে শেষ প্রান্তে এসে এই মহার্ঘ প্রাপ্তিতে তাঁর দু’চোখ ফেটে জল এসে গেল। বইটাকে সাইডব্যাগে সযত্নে গুছিয়ে রাখেন। পাঞ্জাবির পকেট থেকে রুমালটাকে দ্রুত তুলে নিলেন মুঠোর মধ্যে। চশমার কাচ ঝাপসা হয়ে আছে। তাই দু’চোখ রুমালে মুছে নিলেন তিনি। ফুটপাতে একটু ছায়া খুঁজে গিয়ে দাঁড়ালেন। রুমালে মুখ, গলা ও ঘাড়ের ঘাম মুছে নিলেন। চশমাটা ফের চোখে রাখলেন। ভাবলেন, জীবনের এই প্রাপ্তির ঘটনাটা কারওর সঙ্গে শেয়ার না করলে স্বস্তি নেই তাঁর। কিন্তু এই ঘটনা তো রামা-শ্যামার সঙ্গে শেয়ার করা চলে না। বাড়িতে নীলিমাকে বলতে গেলে ভিক্ষে চাই না কুকুর ঠেকাও পরিস্থিতি হবে। বউমা মধুরিমা অবশ্য বুঝবে। তবে ওকে বলারও ইচ্ছে হল না। ইচ্ছে হল না কারণ, প্রমদাকান্তর মনে ও মগজে এসে উঁকিঝুঁকি দিতে শুরু করেছে সুবিনয়। প্রমদাকান্তর প্রিয় ছাত্রদের মধ্যে একজন। তাঁর বিচারে সুবিনয় সবার সেরা। সবচেয়ে প্রিয়। সেরা সমঝদার। প্রমদাকান্তর এক-এক সময় মনে হয়েছে অর্কর বদলে সুবিনয় যদি তাঁর নিজের ছেলে হতো, তাহলে বেশ হতো। অর্কর মতো একটা নীরস আত্মকেন্দ্রিক ছেলে তিনি কামনা করেননি। এমন একটা ঘটনা শুধু সুবিনয়ের সঙ্গেই শেয়ার করতে পারলেই যেন প্রমদাকান্ত স্বস্তি পেতেন। শরীরের সব জ্বালাপোড়ার উপশম হয়ে যেত। কিন্তু সুবিনয় তো তাঁর কাছ থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছে। সেই যাদবপুরে গিয়ে ফ্ল্যাট কিনে সেটেল্ড হয়েছে।  প্রমদাকান্ত ভাবেন, তিনি এখনই সুবিনয়ের কাছে চলে যাবেন নাকি? যাদবপুরেই চলে যাবেন নাকি? নিজের ভেতরে দোটানা চলতে থাকে। তিনিও চলতে থাকেন ডালহৌসি এলাকা ছেড়ে শিয়ালদার দিকে। রাস্তা অনেকটা। তবু বাস ট্রামের তোয়াক্কা করেন না প্রমদাকান্ত। শিয়ালদহে নেমে হামেশাই ধর্মতলা আর ডালহৌসি চত্বরে হেঁটেই চলে আসেন। আবার হেঁটেই ফেরেন। সেই চিরকেলে এগারো নম্বর বাস। একটু হাঁটাচলার মধ্যেই থাকতে চান তিনি। নইলে বয়স পেয়ে বসবে। কলকব্জা সব অকেজো হতে শুরু করবে। শরীর এখনও টানটান মেদহীন। বয়স না বললে ধরা যায় না।
শিয়ালদার খুব কাছাকাছি এসে আবার পোকা নড়ে বসল প্রমদাকান্তর মগজে। নড়ছে তার কারণ, হঠাৎই তাঁর মনে পড়ল, আজ বুধবার। সুবিনয়ের উইকলি ডে অফ। ছুটির দিন নিশ্চয়ই বাড়িতে থাকবে। রেস্ট নেবে। মধ্যমগ্রামের বাড়িতে থাকতে তো বলত, কাল ডে অফ। সূর্যেরও মুখ দেখব না। সত্যিই তো খবরের কাগজের কাজ। চব্বিশ ঘণ্টাই ডিউটি আওয়ার। ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ছোকরা বেশ মজার কথা বলে। বলে, ‘স্যার আটঘণ্টা কাজের দাবিতে যখন আন্দোলন হয়েছে, তখন বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছিলাম আমরা। তাই আমাদের এখন চব্বিশ ঘণ্টা ডিউটি। আর গুলির সামনে যারা বুক পেতে দিয়েছিল, তারা সবাই এখন গিয়ে বসেছে সরকারি চেয়ারে।’ প্রমদাকান্ত ভাবেন, ছেলেটার এই রসবোধের জন্যেই তিনি বয়সের ব্যবধান ভুলে একদা ছাত্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়েছেন। মধ্যমগ্রামে ছিল, কাছে ছিল। দেখা হতো, আড্ডা হতো। ছেলেটার সঙ্গে কথা বলে সুখ আছে। এমন তুখোড় সেন্স অব হিউমার যে, কাকে কী বলে বোঝাবেন প্রমদাকান্ত। বেশ চোস্ত চৌকস ছেলেটা। সুন্দর অবজার্ভেশন। অভিজ্ঞতার অর্জন কিছু কম নয়। প্রমদাকান্ত মনে মনে ছাত্রকেই গুরু মানেন। এই ডিজিটাল যুগে তো তিনি একেবারেই ডিসকোয়ালিফাইড। সাদা কাগজে মার্জিন টেনে কলমে লেখার দিন তো গিয়েছে। প্রমদাকান্তর একটু আধটু লেখালিখির বাতিক আছে। সুবিনয় বলে, ‘স্যার, একটা স্মার্টফোন কিনে নোটপ্যাডে লিখুন। অনেক সুবিধা।’ অর্কর বউ মধুরিমাও বেশ কয়েকবার ঝোঁক তুলেছে, বলেছে, ‘বাবা, চলো তোমাকে একটা দামি ফোন কিনে দিই। আমি সব শিখিয়ে দেব। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে দেব।’
আরে ধুর ওসব দিয়ে কী হবে? আবার ভাবেন প্রমদাকান্ত, ফেসবুকে নাকি অনেক পুরনো বন্ধুর হদিশ মেলে। কৈশোরের বেশ কয়েকজন বন্ধুর কথা তাঁর খুব মনে পড়ে। তাঁরা সব কোথায় যে যার মতো ছিটকে গিয়েছে। তাঁর মধ্যমগ্রামে তিনি একা শিবরাত্রির সলতের মতো আছেন। বসুনগর, বঙ্কিমপল্লিতে যে দু-চারজন ছিল, তাঁদের ছবিতে মালা উঠেছে। বাসুদেব, মলয় ওরা সব কোথায় থাকে? বেঁচে বর্তে আছে কি না ভেবে বুকের ভেতরে এক ধরনের শূন্যতা অনুভব করেন। তাঁর স্কুলের সহকর্মীদের মধ্যে কেউই তাঁকে তেমনভাবে টানে না যে, গিয়ে দু’দণ্ড আড্ডা দিয়ে সময় কাটাবেন। তারচেয়ে তাঁর বইবন্ধু অনেক প্রিয়। অল্প বয়সে পড়া বইগুলো ফিরে ফিরে পড়েন। সেই পড়ার মধ্যে দিয়ে ফিরে ফিরে আসে তাঁর হারিয়ে যাওয়া অনেক মুখ। তলিয়ে যাওয়া অনেক ঘটনা। বেশ রোমাঞ্চ জাগে। তাঁর এই ফিলিংসটা সুবিনয় বেশ ধরতে পারত, বুঝতে পারত। এসব ভাবতে ভাবতেই প্রমদাকান্ত তাঁর অজান্তেই কখন শিয়ালদা সাউথ স্টেশনের দিকে হেঁটে চলে এসেছেন। তার মানে সুবিনয়ই টানছে তাঁকে। আর তাই প্রমদাকান্তকে যেন কোনও ক্লান্তি স্পর্শ করতে পারছে না। আজকের অমূল্য রতন প্রাপ্তির কথা সুবিনয়কে না বলা পর্যন্ত যেন তাঁর কোনও নিস্তার নেই। বাড়ি ফিরতে নির্ঘাত অনেক রাত হয়ে যাবে। বাড়িতে নীলিমা ভাববে। হয়তো বার বার ফোনে তাঁকে ধরার চেষ্টা করবে। তা করুক গে। ফোন বেজে যাক। প্রমদাকান্ত আজ ফোন ধরবেন না। আজ তাঁর কাউকে কোনও কৈফিয়ত দেওয়ার দায় নেই। তাঁর রক্তে এখন যে রোমাঞ্চ জেগে আছে, তাতে সুবিনয়ের সঙ্গে দেখা না হলে সব মাটি হয়ে যাবে।
একটা লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালে ভিড় ঠেলে উঠে গেলেন প্রমদাকান্ত। অফিসযাত্রীদের বাড়ি ফেরার ভিড়। এই কুৎসিত ভিড়ের ট্রেনে ওঠার পাত্র তিনি নন। মধ্যমগ্রাম থেকে দুপুরের ট্রেনে উঠে শিয়ালদা আসেন, ভিড় থাকে না। ফেরার সময় ধীরেসুস্থে বারাসাত লোকালে উঠে সিনিয়র সিটিজেনের সিট। ব্যস নো টেনশন। সেই টেনশন আজ ছুঁতে পারছে না প্রমদাকান্তকে। দিব্যি ময়দা ঠাসা ভিড়ে কাঁধের ঝোলাটাকে কোনওমতে সামলে দাঁড়িয়ে রইলেন। যাদবপুর স্টেশনে হুড়োপাটা করে নেমেও গেলেন। 
স্টেশন থেকে রিকশয় বেশ অনেকটাই পথ। অটোতেও উঠতে পারতেন। সেখানে লাইনে দাঁড়ানোর তর সইবে না প্রমদাকান্তর। তিনি এখন পারলে উড়ে চলে যাবেন সুবিনয়ের কাছে। সেই পাখনাও যেন তাঁর গজিয়ে যেতে পারে। তাঁর কাঁধের ঝোলায় দুষ্প্রাপ্য বইটিকে তিনি পরম যত্নে ভরে রেখেছেন। ঝোলার মুখের কাছটাকে খামচে মুঠো করে ধরে রেখেছেন। প্রমদাকান্ত যেন কোনও এক অলীক পাখিকে ঝোলায় পুরেছেন। যেন মুঠি আলগা করলেই সেই পাখি এই সন্ধেরাতের অন্ধকারেই ফুরুৎ উড়াল দিয়ে পালিয়ে যাবে। একেবারে সুবিনয়ের সামনে গিয়েই এই মুঠি আলগা করবেন তিনি।
সুতনুকা অ্যাপার্টমেন্টের সামনে এসে রিকশ থেকে নেমে পড়লেন তিনি। ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে তরতর সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে তিনতলায় উঠে গেলেন। কে বলবে তিনি বাহাত্তুরে বুড়ো। ডোর বেল চেপে দিলেন। দরজা খুলে সুদেষ্ণা বলল, ‘আরে স্যর আপনি!’
‘সুবিনয় বাড়ি আছে তো?’
‘হ্যাঁ, আছে। আসুন। আপনি ভেতরে আসুন।’ প্রমদাকান্ত ধীর পায়ে ঘরে ঢুকলেন। গন্তব্যে পৌঁছনোর পরে আর কীসের ব্যস্ততা? সুদেষ্ণা মেয়েটি আগাগোড়াই বেশ আন্তরিক। সে চেঁচিয়ে ডাকল সুবিনয়কে, ‘এই যে দেখ কে এসেছেন।’ সুবিনয় বেডরুম থেকে বেরিয়ে এসে ভূত দেখল। ‘এ কী! স্যার আপনি? কোত্থেকে এলেন?’ প্রমদাকান্ত এখন শান্ত। গম্ভীর কণ্ঠে বললেন, ‘চলো আগে বসি। তারপরে বলছি।’ প্রমদাকান্তকে ডিভানের কাছে বসাল সুবিনয়। নিজে গুছিয়ে বসল  ডিভানে। প্রমদাকান্ত বললেন, ‘আমার লেখা একটা বই তোমায় দিয়েছিলাম তোমাদের কাগজে রিভিউ করতে। মনে পড়ে তোমার?’
‘হ্যাঁ, স্যার। অনেকদিন হল। তবে বইটা আমি আমার কাছে যত্নেই রেখেছি। রিভিউ হবে।’
‘বইটা তোমার কাছে থাকতে পারে না সুবিনয়। কারণ বইটা আজ আমি ফুটপাত থেকে কিনে এনেছি। এই দেখ, আমার নিজের হাতের লেখা, শ্রীমান সুবিনয়কে সমালোচনার জন্য...’
অলংকরণ : সোমনাথ পাল
01st  January, 2023
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। বিশদ

31st  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। বিশদ

24th  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
গুরুদ্বার সিস গঞ্জ

দিল্লি দেখতে এসে চাঁদনী চক যাওয়া হবে না? তা কীভাবে হয়? অতএব দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ভ্রমণস্থল চাঁদনী চক।
বিশদ

17th  March, 2024
দেখা যায় না, শোনা যায় পুতুল বাড়ি
 

আকর্ষণ, বিতর্ক, কৌতূহলের চিরন্তন কেন্দ্রবিন্দু অলৌকিক দুনিয়া। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দুই শিবিরেরই এব্যাপারে আগ্রহ ষোলোআনা। তাই ভৌতিক সাহিত্য হোক বা সিনেমা, বাজারে কাটতি বরাবরই বেশি।
বিশদ

17th  March, 2024
প্রস্থান
দীপারুণ ভট্টাচার্য

শববাহী গাড়িটা গেটের ভিতর ঢুকতেই অরুণবাবু চারপাশটা দেখলেন। বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে তার ছেলে নীলাঞ্জন আর বউমা সুতপা। নীলাঞ্জন বড় চাকরি করে। সে ফোন পেয়েছিল অফিসে যাওয়ার পর। সুতপাকে বলেছিল, ‘বেরতে একটু সময় লাগবে। বিশদ

10th  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: জাহান আরার সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ পরব চলছে। আগ্রা জুড়ে উৎসবের উচ্ছ্বাস। এখন ১৬৪৪। বাদশাহ শাহজাহানের আগ্রা দুর্গে সবথেকে বেশি উজ্জ্বল আয়োজন। স্বাভাবিক। প্রতি বছর নভরোজের সময় আগ্রা দুর্গ এভাবেই সেজে ওঠে। সম্রাটের পুত্রকন্যারা এই সময়টায় পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন। বিশদ

10th  March, 2024
অতীতের আয়না: বাঙালির সার্কাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

১৯২০ সালের ২০ মে। নিজের ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নিয়ে সিঙ্গাপুরে ট্যুরে গিয়ে জন্ডিস হয়ে মারা গেলেন প্রিয়নাথ বসু। শুধু উপমহাদেশের সার্কাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও উৎকর্ষের নতুন মানদণ্ড ছাড়াও, বিনোদন শিল্প হিসেবে সার্কাসকে দৃঢ় ভিত দিয়ে গেলেন তিনি। বিশদ

10th  March, 2024
ভোগ
শুচিস্মিতা  দেব

পুতুলকে সদ্যই নিমতিতা থেকে ‘রায়চৌধুরী ভিলা’তে এনেছে তার পিসি সবিতা। সবিতা এই পরিবারের বহু দিনের থাকা-খাওয়ার মাসি। টিভি সিরিয়ালের মতো প্রকাণ্ড বাড়িখানা দেখে পেরথমেই ভেবলেছে পুতুল। ফুটবল মাঠের মতো বৈঠকখানা। বিশদ

03rd  March, 2024
রুপোর চাকু

আলমারিটা খুলতেই দাদার চোখ চলে গিয়েছিল। উপরের তাকে জামা কাপড়ের পাশে খালি জায়গায় শোয়ানো ছিল। বাজপাখির চোখ দাদার।
বিশদ

25th  February, 2024
অপরাজিতা
মীনাক্ষী সিংহ

জুনিয়র ডাক্তার সুমন সান্যাল জানিয়ে গেল অপারেশন থিয়েটার রেডি, এবার ডাঃ মিত্রকে যেতে হবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠলেন সার্জেন মাধবিকা মিত্র। আজ একটা ক্রিটিক্যাল অপারেশন। বছর সতেরোর মেয়েটির মায়ের মুখ মনে পড়ল মাধবিকার। বিশদ

18th  February, 2024
একনজরে
ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার পক্ষে সওয়াল করলেন পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মারিয়ম নওয়াজ। শুক্রবার কর্তারপুর সাহিব গুরুদ্বারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ...

ধুবুড়ির কালবেলায় একটি ছোট ক্যাম্প অফিসে ডাঁই করে রাখা অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট বা এইআইইউডিএফের ফ্ল্যাগ। এত ফ্ল্যাগ কবে লাগাবেন? ক্যাম্পের কর্মী আনিমুল হক খানিক গম্ভীর গলায় বলে উঠলেন, ‘ওই ফ্ল্যাগ না লাগালেও আমাদের কিছু হবে না। ...

ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা তৃণমূলের ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক সওকত মোল্লার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ল ভাঙড়ে। এই নিয়ে শোরগোল পড়েছে এলাকায়। কোথাও তাঁকে অশান্তির কারিগর তকমা দেওয়া হয়েছে, কোথাও আবার ঘুরিয়ে বহিরাগত বলে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। ...

তীব্র দাবদাহের মধ্যে পানীয় জলের সংকট। শুক্রবার ক্ষোভে হরিরামপুর-ইটাহার রাজ্য সড়ক অবরোধ করলেন মহিলারা। হরিরামপুর থানার বিশাল ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৫২৬: পানিপথের যুদ্ধে মোগলরা আফগানদের পরাজিত করে
১৭৭০: আজকের দিনে ক্যাপ্টেন কুক অস্ট্রেলিয়া আবিষ্কার করেন
১৮৪৪: বাংলার নবজাগরণের অন্যতম ব্যক্তিত্ব দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যাযয়ের জন্ম
১৮৭৯: ডিরোজিওর অন্যতম শিষ্য, কলকাতার প্রথম শেরিফ রাজা দিগম্বর মিত্র প্রয়াত হন 
১৮৮৯: ফরাসী বিপ্লবের শতবর্ষ পূর্তিতে স্মারকস্তম্ভ হিসেবে ৯৮৫ ফুট উঁচু আইফেল টাওয়ার নির্মাণের কাজ শেষ হয়
১৮৮৯: জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাডলফ হিটলারের জন্ম
১৯০৫: অগ্নিযুগের বিপ্লবী, সুভাষচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ অনুগামী জ্যোতিষচন্দ্র জোয়ারদারের জন্ম
১৯১২: আইরিশ লেখক ব্রাম স্টোকারের মৃত্যু
১৯১৮: বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ এবং বাংলা ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা শওকত আলীর জন্ম
১৯২০: ভারতের কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী যূথিকা রায়ের জন্ম 
১৯৪৬: সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়
১৯৪৮: বলিউড অভিনেত্রী ববিতার জন্ম
১৯৫০: রাজনীতিক তথা অন্ধ্রপ্রদেশের ১৩তম মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডুর জন্ম
১৯৫২: বাংলা ভাষার সুরকার ও সঙ্গীতজ্ঞ সুধীরলাল চক্রবর্তীর মৃত্যু
১৯৬০: বংশীবাদক ও সুরকার পান্নালাল ঘোষের মৃত্যু
১৯৭২: চাঁদের মাটিতে নামল অ্যাপোলো ১৬
১৯৭২: বলিউড অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নির জন্ম
১৯৯৯: কলেরাডোর কলম্বাইন হাইস্কুলে ১৩ জনকে হত্যা করে আত্মহত্যা করল এরিক হ্যারিস এবং ডিলান কেবোল্ড
২০১৩: চীনের সিচুয়ান প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত ১৫০ 
২০১৯ : বাঙালি লোকসঙ্গীত শিল্পী ও লেখক অমর পালের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.১০ টাকা ৮৪.১৯ টাকা
পাউন্ড ১০২.৫৮ টাকা ১০৫.২২ টাকা
ইউরো ৮৭.৭৯ টাকা ৯০.২২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৪,১৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৪,৫০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭০,৮৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৩,৪০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৩,৫০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৭ বৈশাখ, ১৪৩১, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪। দ্বাদশী ৪৩/৩৫ রাত্রি ১০/৪২। পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র ২২/০ দিবা ২/৪। সূর্যোদয় ৫/১৬/৬, সূর্যাস্ত ৫/৫৫/৫। অমৃতযোগ দিবা ৯/৮ গতে ১২/৫১ মধ্যে। রাত্রি ৮/১১ গতে ১০/২৭ মধ্যে পুনঃ ১১/৫৯ গতে ১/২৯ মধ্যে পুনঃ ২/১৪ গতে ৩/৪৪ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫১ মধ্যে পুনঃ ১/১০ গতে ২/৪৫ মধ্যে পুনঃ ৪/২০ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ৭/২০ মধ্যে পুনঃ ৩/৫১ গতে উদয়াবধি।
৭ বৈশাখ, ১৪৩১, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪। দ্বাদশী রাত্রি ১০/৫৮। পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র দিবা ২/৪৩। সূর্যোদয় ৫/১৬, সূর্যাস্ত ৫/৫৬। অমৃতযোগ দিবা ৯/২২ গতে ১২/৫১ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/১৬ গতে ১০/২৭ মধ্যে ও ১১/৫৬ গতে ১/২২ মধ্যে ও ২/৩ গতে ৩/৩৩ মধ্যে। কালবেলা ৬/৫১ মধ্যে ও ১/১১ গতে ২/৪৬ মধ্যে ও ৪/২১ গতে ৫/৫৬ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/২১ মধ্যে ও ৩/৫১ গতে ৫/১৬ মধ্যে। 
১০ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
ট্রাম্পের বিচার চলাকালীন আদালতের বাইরে নিজের গায়ে আগুন ব্যক্তির
আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা এবারের রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার ...বিশদ

10:25:08 AM

হলদিয়ার সুপার মার্কেটে ভয়াবহ আগুন, ভস্মীভূত একাধিক দোকান
গভীর রাতে হলদিয়ার দুর্গাচক সুপারমার্কেটে ভয়াবহ আগুন লেগে ভস্মীভূত হল ...বিশদ

10:08:57 AM

বাঘাযতীন বাজারে প্রচার চালাচ্ছেন যাদবপুর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য

10:06:00 AM

দৌলতাবাদে নির্বাচনী প্রচারে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিম

10:04:00 AM

প্রখর রোদের তাপ এড়াতে সকাল সকাল নামাবলি গায়ে প্রচারে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ

10:02:00 AM

পাঞ্জাবের সাঙ্গরুর জেলে  বন্দিদের মধ্যে সংঘর্ষ, মৃত ২
বন্দিদের মধ্যে ব্যাপক হিংসা ছড়াল পাঞ্জাবের সাঙ্গরুর জেলে। এই সংঘর্ষের ...বিশদ

09:58:52 AM