Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ভালোবাসার বাগান
বিতস্তা ঘোষাল

‘অরণী কোম্পানির অসাধারণ পেন আমি এখন আপনাদের দেখাতে চলেছি। হলফ করে বলতে পারি এর আগে যত বল পেন আপনারা ব্যবহার করেছেন, এই পেনে একবার লিখলে আগের সব পেন বাতিল করে দেবেন। জিরো পয়েন্ট  ফাইভ রিফিল, অখাদ্য হাতের লেখাকেও সোনার মতো করে তুলবে। ভাবছেন নিশ্চয়ই অনেক দাম। ঠিকই ভাবছেন। এমন একটা পেনের মূল্য যে কোনও দোকানে গেলে মিনিমাম তিরিশ টাকা। এখানে কোনও দোকানের লোক থাকলে তিনি নিশ্চয়ই একমত হবেন। কিন্তু অবাক হবেন আজ আমাদের কোম্পানি কী দামে এই কলম আপনাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন জেনে...’ 
এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে ছেলেটি বাসে বসা মানুষগুলোর মুখের দিকে তাকাল। কী যেন নিরীক্ষণ করে সামনের সিটে বসা ছেলেটির দিকে একটা কাগজ আর পেনটা এগিয়ে দিয়ে লিখে দেখতে বলল। ছেলেটি লিখতে লিখতেই সে আবার বলে উঠল, ‘কোম্পানি শুধুমাত্র এই একটি পেনই আজ বিক্রি করছেন না, তার সঙ্গে দিচ্ছে আরও দুটো পেন,’ বলে পকেট থেকে আরও দু’টি প্রায় একই রকম দেখতে পেন বের করল। হাতে ধরে সেটা চারদিকে দেখাতে দেখাতে বলল, ‘এর গায়েও দেখুন লেখা অরণী। একেকটির দাম মিনিমাম কুড়ি টাকা। হাতে নিয়ে দেখতে পারেন,’ বলে আবার একটু থেমে যাত্রীদের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। যেন বোঝার চেষ্টা করল ক্রেতাদের প্রতিক্রিয়া। 
নাহ, এখনও আমার বলা শেষ হয়নি। চারদিকে একবার তাকিয়ে নতুন উদ্যমে বলে উঠল, ‘এর সঙ্গে রয়েছে দুটো ছ’টাকা দামের রিফিল। যদি আমরা হিসেব করি তাহলে দেখা যাবে এই তিনটে পেন আর রিফিল মিলিয়ে মোট দাম পড়ছে ৮২ টাকার মতো। আপনারা যাঁরা ভেবেছিলেন এই পেন নেবেন, দাম শুনে নিশ্চয়ই ভাবছেন আর নেওয়া হল না। কিন্তু না, মন খারাপের কোনও অবকাশ নেই। কোম্পানি এই তিনটে পেন ও রিফিল দিচ্ছেন প্রায় বিনামূল্যে। অনুমান করে বলতে পারবেন কত হতে পারে?’
ডান দিকের জানলার ধারে বসা একটি ছেলে বলে উঠল কুড়ি। তার দেখে আরও দু-একজন বলল, পঁচিশ, তিরিশ, পঞ্চাশ...।
পিয়াসা খুব মন দিয়ে দেখছিল ছেলেটিকে। তার বিক্রি করার পদ্ধতিটা দেখে মজা লাগছিল। প্রায় দশ বছর পর সে বাসে উঠেছে। শিয়ালদার নার্সারি থেকে গাছ কিনে ফিরছে। আজকাল তার বাগান করার নেশা তীব্র হয়েছে। অন্য কোথাও হলে গাড়িতেই যেত, কিন্তু রাস্তার উপরের এই গাছের নার্সারিগুলোর সামনে গাড়ি রাখার কোনও সুযোগ নেই। তাই বাসেই এসেছিল। সঙ্গে সমুদ্র। অফিস থেকে হোয়াটসঅ্যাপ করা মাত্র সমুদ্র ফোন করে বলেছিল, ‘একা যাবে না। আমি আসছি গাড়ি নিয়ে।’
—কিন্তু ওখানে গাড়ি রাখা যায় না। বাসে যেতে হবে।
—বাসে কেন? এসে তাহলে ক্যাব বুক করে নিচ্ছি। অপেক্ষা কর।
কলেজ স্ট্রিটে তার অফিসে এসে সমুদ্র যখন ফোন করে তাকে নীচে ডাকল আকাশ অন্ধকার হয়ে এসেছে। এক ফোঁটা দু’ফোঁটা করে বৃষ্টি গায়ে এসে পড়ল। পিয়াসা সেদিকে লক্ষ করে বলল, ‘কী করবে? যাবে?’
সমুদ্র বলল, ‘দু’মিনিট দাঁড়িয়ে তাহলে ক্যাবটা বুক করে নিই।’
সমুদ্রের হাতটা নিজের হাতে ধরে পিয়াসা আদুরে গলায় বলল, ‘শোনো না, আজ বাসে যাবে? কতদিন বাসে উঠিনি।’ 
—তুমি বাসে উঠতে পারবে না সোনা। বসার জায়গা পাবে না, রড ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে গেলে তোমার মাথা ঘুরবে। 
—কিচ্ছু হবে না। আগে তো উঠতাম।
—তখন তোমার বয়স অনেক কম ছিল। অভ্যস্ত ছিলে।
কিন্তু পিয়াসা জেদ করল, ‘আমি গেলে বাসেই যাব। নইলে ছেড়ে দাও।’
‘আচ্ছা বেশ, চলো,’ বলে অনিচ্ছা নিয়েই বাস স্টপের দিকে এগিয়ে গেল সমুদ্র। বাসে ওঠামাত্র তুমুল বৃষ্টি নামল। বসার জায়গা পেলেও জলের ঝাপটায় প্রায় ভিজে গেল দু’জনেই। এমনকী বাসের সিলিং থেকেও জল গড়িয়ে গায়ে পড়ছে। কন্ডাক্টর বলল, ‘বাস পরের সপ্তাহেই কাটাইতে যাবে। তাই আর মালিক সারাচ্ছে না।’
সমুদ্র বিরক্ত হলেও পিয়াসা তার দুটো হাত দিয়ে ধরে রেখেছিল সমুদ্রের হাত। ‘এই পাগলিকে নিয়ে যে কী করি! এমন অবুঝ হয়ে যাও মাঝে মাঝে,’ সমুদ্র হাতে চাপ দিয়ে বলল।
পিয়াসা বলল, ‘দুটো অপশন। এক মেনে নাও, নয় ছেড়ে দাও।’ 
সমুদ্র হাসল— ‘এত বছর ধরে মেনেই নিয়েছি। ছাড়ার কথা ভুলেও ভেব না।’
শিয়ালদায় নামার পরেও বৃষ্টি পড়ছিল। ভিজতে ভিজতেই একটা নার্সারিতে গিয়ে ঢুকল দু’জনে। সেখানে বিক্রেতা খাবার রান্না করে সদ্য ধোঁয়া ওঠা ভাত আর মাছের ঝোল খাচ্ছে। তাদের দেখে সরিয়ে রাখতে গেল তাড়াতাড়ি। পিয়াসা বলল, ‘খেয়ে নিন। তারপর নেব। এমনিতেও এত বৃষ্টিতে কিনেও সঙ্গে সঙ্গে বেরতে পারব না। আমরা বরং এই বেঞ্চে বসি আপনার অনুমতি পেলে।’
লুঙ্গি আর খালি গায়ের বয়স্ক মানুষটি দাঁত খুঁটতে খুঁটতে বলল, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ দিদিমণি বসুন। আমি খেয়ে নিই।’
অন্য সময় তার সামনে কেউ দাঁত, নাক খুঁটলে বমি পায় পিয়াসার। কিন্তু আজকের দিনটা যেন সবের থেকেই আলাদা। একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে সমুদ্র। এই মানুষটির সঙ্গে দীর্ঘদিন ঘর করেও রোজই নতুনভাবে তাকে খুঁজে পায় সে। রাস্তায় জমে যাওয়া জল আর অজস্র গাছেদের চাড়ার মাঝে বসে অদ্ভুত একটা ভালো লাগায় মন ভরে যাচ্ছিল তার। তাই লোকটিকে উপেক্ষা করে গাছেদের দিকে তাকিয়ে রইল। 
পৃথিবীতে যখন কোনও প্রাণী ছিল না, তখন চারদিকে ছিল কেবল জল। আর এই জলেই প্রথম জন্ম নেয় উদ্ভিদ। প্রথমে এককোষী জীব শ্যাওলা। তাও দুশো কোটি বছর আগে। প্রথম ফুলের উৎপত্তিও দেড় কোটি বছর হল। সামনে রাখা নানান রকম গাছেদের দিকে তাকিয়ে পিয়াসা ভাবছিল এসব কথাই। এই যে একটা সময় পৃথিবীর অর্ধেক জল আর অর্ধেকেরও কম স্থলভাগের একটা বড় অংশ জুড়ে জঙ্গল গড়ে উঠল মানুষ তাকেই বাসস্থান গড়ার প্রয়োজনে ধীরে ধীরে কেটে পরিষ্কার করে বাসভূমিতে পরিণত করল। আচ্ছা, আমি যদি টারজান হতাম কেমন হতো! গাছেতেই থাকতাম। সারাদিন সবুজের সঙ্গে। তাতে কী এই জীবনটা নষ্ট হতো! 
তার ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে গাছ বিক্রেতা বলল, ‘আমি খেয়ে একটু না গড়িয়ে পারি না বুঝলেন দিদিমণি। তা কী কী গাছ লাগবে?’ একটা বিড়ি ধরাল সে।
পিয়াসা মাটির ভাঁড়ে, নানা আকৃতির পাত্রে লাগানো গাছগুলো থেকে কয়েকটা বেছে নিল। সমুদ্রকে বলল, ‘আপাতত এতেই হবে কী বল?’
সমুদ্র হাসল। কর্ত্রীর ইচ্ছায় কর্ম। মুখে বলল, ‘আরও কিছু পছন্দ করলে করতে পার।’
পিয়াসার চোখ দুটো আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠল। সমুদ্রের সবচেয়ে বড় গুণ তার কোনও কিছুতেই সে বাধা দেয় না। 
পিয়াসা মাঝে মাঝে উত্তেজিত হয়ে বলে, আমার সব অত্যাচার তুমি কেন নীরবে মেনে নাও? প্রতিবাদ কর না কেন?
সমুদ্র দার্শনিক সুলভ ভঙ্গিতে বলে, ভালোবাসলে সেটা অত্যাচার মনে হয় না। সেটা তখন নিজেরই চাওয়া হয়ে যায়।
পিয়াসার ইচ্ছে করে খুব রাগ করতে, চেঁচিয়ে বকতে, কিন্তু সমুদ্রের কথা শুনে হেসে ফেলে। কাছে গিয়ে ফিস ফিস করে বলে, খ্যাপা একটা।
....
গাছ কিনে আবারও যখন বাসে উঠল, তখন বৃষ্টি থেমে গিয়ে রোদ উঠে গিয়েছে। বাসে বসার জায়গায় বসে পিয়াসা গুনগুন করল, ‘মেঘের কোলে রোদ হেসেছে বাদল গেছে টুটি...’ আর ঠিক তখনই হকারটা উঠে লেডিস সিট আর জেনারেল সিটের মাঝখানে দাঁড়িয়ে পেন নিয়ে বলতে শুরু করল।
পিয়াসার চোখ এখন হকারটির দিকে। একদম সাধারণ একটা মানুষ। হাজার লোকের ভিড়ে দেখলে আলাদা করে চেনাও যাবে না। পরনে অতি সাধারণ একটা শার্ট আর প্যান্ট। কাঁধ থেকে ঝোলাটা নামিয়ে হাতে পেন নিয়ে সে তার কথা শুরু করেছিল। পিয়াসা তার প্রোডাক্ট বিক্রির অসাধারণ ক্ষমতা দেখছিল। এমনই দেখত যখন ট্রেনে বা বাসে বহু বছর আগে সে সফর করত। ঝালমুড়ি, শিঙাড়া, ছোলামাখা, চিরুনি, গামছা, সেপ্টিপিন, হজমের গুলি, ফল, খেলনা, বই— কী নিখুঁত দক্ষতায় একেক জন বিক্রি করত। তার মনে হতো কোনও ইনস্টিটিউট বা স্কুলে এমনভাবে ট্রেনিং দেওয়া হয় না। অনেক টাকা দিয়ে এমবিএ ডিগ্রি নিয়েও নিজের প্রোডাক্টকে এভাবে বেচার ক্ষমতা সকলের থাকে না।
বাবা বলত, জীবনের পাঠশালায় এরা প্রতিদিন লড়তে লড়তে এতটাই শিক্ষা পেয়েছে যে, তাতেই তারা উচ্চ শিক্ষিত হয়ে উঠেছে। আমাদের জীবনের থেকে বড় শিক্ষক আর স্কুল কোথাও নেই রে।
হকারটি হঠাৎ তার সামনে এসে বলল, ‘দিদিভাই, আপনি বলুন তো কত হতে পারে এতগুলো পেনের দাম?’
পিয়াসা মাথা নেড়ে বলল, ‘কোনও ধারণা নেই।’
উল্টো দিকের সিটে বসে থাকা সমুদ্র বলল, ‘আছে আছে, হাতিবাগানে ঘুরে যখন তিনশো টাকার জামা পঁচাত্তর টাকায় কিনতে দর করতে সেই দিনগুলো মনে কর।’
পিয়াসা লাজুক মুখে বলল, ‘তুমি তিরিশ বছর আগের কথা বলছ। সে দিন গেছে চলে।’
হকার ছেলেটি হেসে বলল, ‘এখানে কোনও দরাদরি নেই।’ তারপর একটু সরে গিয়ে বলল, ‘যাত্রীরা, বন্ধুরা আজ আমাদের কোম্পানি এই তিনটে দামি পেন, সঙ্গে দুটো রিফিল নিয়ে পুরো পাঁচটার সেট দিচ্ছে মাত্র দশ টাকায়। একশো নয়, পঞ্চাশ নয়, পঁচিশও নয়। মাত্র দশ টাকায়। মানে প্রায় বিনামূল্যে। বলুন কার কার লাগবে?’
অনেকগুলো হাত তৎক্ষণাৎ এগিয়ে গেল হকারের দিকে।
পিয়াসার সেদিকে তাকিয়ে মনে পড়ল ট্রেন যাত্রার দিনগুলো। যা যা জিনিস উঠত তার যাত্রাপথে দরকার হোক, না হোক সব সে কিনত। সঙ্গীরা রাগ করলে বলত, কোনটা কখন কার কাজে লাগবে কে জানে? তাছাড়া আমরা না কিনলে ওদেরই বা চলবে কী করে? 
আহা রে! দাতা কর্ণ! তা এতই যখন দরদ তখন নিজের দামি দামি জিনিসগুলো এদের দিয়ে দিতে পারিস তো! নিত্য যাত্রী রিমার বক্রোক্তি শুনে সে বলেছিল, ভুলে যাস না, এদের আত্মসম্মান আছে। দান গ্রহণ করতে হলে এত ঝুঁকি নিয়ে এরা এভাবে জিনিস বিক্রি করত না। আর কিছু না পারিস এই প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানাতে তো পারিস।
রিমা পরদিন থেকে কমপারমেন্ট বদলে নিয়েছিল।
সেই কথাগুলো মনে করে পিয়াসা সমুদ্রকে ইশারায় পেন নিতে বলল। তারপর পাশের যাত্রীর দিকে তাকাল। একটা ছোট্ট ফোল্ডিং পাখা নাড়তে নাড়তে মেয়েটি তার সঙ্গীকে বলছে, ‘এই শুনছ দাদু ক্রমাগত ফোন করছে। কী বলি বল তো ?’
ড্রাইভারের পাশের সিটে বসা তার সঙ্গী বিরক্তি নিয়ে বলল, ‘বল রাস্তায় জল জমে জ্যামে বাস আটকে। এত যখন প্রেম নাতনির জন্য গাড়ি দিয়ে পাঠালেই তো পারতেন।’
মেয়েটি সে প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ফোন ধরে বলল, ‘হ্যাঁ দাদু, আমি এখন সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউতে। আর দশ মিনিটের মধ্যেই এসে যাব। তুমি খেয়ে নাও। দেরি কর না।’
বাসটা শিয়ালদা ফ্লাইওভার থেকে নেমে দাঁড়াল। রেলিংয়ে বিশাল পোস্টার এক হিরোর। গেঞ্জির বিজ্ঞাপন। সেদিকে তাকিয়ে পিয়াসার মনে পড়ল জনপ্রিয় একটা গান— ফুল কলি রে ফুল কলি বল তো এটা কোন গলি। ও এই গলিতে যদি কেউ একবার আসে সেই তো ফাঁসে... এ যেন এক অন্ধ গলি গোলক ধাঁধা চোখ যে বাঁধা...। কত গলি উপগলি পথ যে পেরতে হয় সমস্ত জীবন ধরে ভাবতে ভাবতে বাসের ভিতরে তাকিয়ে দেখল সেই হকার নেমে গিয়েছে কখন, সে টেরও পায়নি। তার বদলে এখন এক অন্ধ ভিক্ষে করছে। তার বসার সিটের সামনেটায় অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে। সেখান থেকে মাথা গলিয়ে তার দৃষ্টি সমুদ্রকে খুঁজল। দেখতে না পেয়ে সে চিৎকার করে ডেকে উঠল, ‘সমুদ্র, তুমি কোথায়? এখানে এসো, আমি নেমে যাব।’
‘এখনও কলেজ স্ট্রিট আসেনি,’ সমুদ্রর উত্তর ভেসে এল। 
—বাকি পথটুকু হেঁটেই যাই।  
সমুদ্র গাছের চারায় ভরা ভারী ব্যাগটা নিয়ে সামনে এসে বলল, ‘অনেকটা হাঁটতে হবে।’ এই বলে পিয়াসার হাত ধরে সিঁড়ির দিকে এগল।
পিয়াসা বাস থেকে রাস্তায় নেমে সমুদ্রের প্রায় বুকের কাছে মুখ নিয়ে এসে বলল, ‘আদিম মানুষ একদিন এভাবেই পাড়ি দিয়েছিল হাঁটতে হাঁটতে, সঙ্গে ছিল বীজ, চারা, নতুন বসতির আশপাশে খেত বানানোর জন্য। আমরাও একটা বাগান বানাচ্ছি। তার নাম দিয়েছি ভালোবাসার বাগান। এটুকু অতিক্রম করতেই হবে।’
অঙ্কন : সুব্রত মাজী
04th  December, 2022
সখা হে
সোমজা দাস

খাওয়া দাওয়া সেরে সবে সিরিয়াল দেখতে বসেছিল বনানী। আর ঠিক তখনই মোবাইলটা বেজে উঠেছিল। অচেনা নম্বর, অপরিচিত কণ্ঠস্বর। টিভির পর্দা থেকে চোখ না সরিয়ে ফোনটা কানে ছুঁইয়েছিল বনানী অগাধ নির্লিপ্তি নিয়ে। ঝিমলি তখনও স্কুলে, অনন্ত কারখানায়। বিশদ

05th  March, 2023
বাবলা
আইভি চট্টোপাধ্যায়

‘অ বউদি, দেখো আবার চলে এসেছে।’ দরজা খুলেই চিত্‍কার করে মামিকে ডাকল ছবি মাসি। ‘আবার!’ ঘরের মধ্যে থেকেই চেঁচিয়ে উঠেছে মামি, ‘একদম ঢুকতে দিবি না।’ বিশদ

26th  February, 2023
সুগন্ধের মতো
নিয়তি রায়চৌধুরী

 

সতর্ক হল সৌম্য। কী সব ভাবছে সে। বোধহয় একেই বলে অবচেতন, নাহলে তো কালকের অফিস ফেরত বিকেলটাই এতক্ষণ ঘুরছিল মনে। মা বলেছিল, ফেরার পথে রুকুর জন্য একটা টিফিন-বক্স কিনে আনবি। আগেরটা পুরনো হয়ে গেছে। কফিশপ থেকে বেরিয়ে সেটা কিনতে গিয়ে কিঙ্কি বলল, দাঁড়াও আমি পছন্দ করে দিচ্ছি। বিশদ

19th  February, 2023
নাইট ক্রিম
মহুয়া সমাদ্দার

কথায় কথায় কথাটা বলেই ফেলল বিনায়ক। প্রথমে ভেবেছিল চুমকির জন্যে কোনও উপহার এনে সারপ্রাইজ দেবে তাকে। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারল না। পেট থেকে কথাটা নীচে পড়তেই লুফে নিল চুমকি। এটা অবশ্য জানাই ছিল বিনায়কের। এত সুন্দর ক্যাচ মিস করার মতো প্লেয়ার নয় সে। বিশদ

12th  February, 2023
প্রথম
সুন্দর  মুখোপাধ্যায়

বরানগরে জয় মিত্তির ঘাটের ঠিক পাশে যেখানে বালির ট্রাকগুলো দাঁড়ায়, তার আড়ালে একখানা একহারা গাছ গঙ্গার দিকে হেলে দাঁড়িয়ে। গাছের নীচে একটা ভাঙা তক্তাপোষ ফিট করে রেখেছে পাঁচু বোস। তাতে লেখা, ‘অনুমতি ছাড়া বসা নিষেধ। আদেশানুসারে।’ বিশদ

05th  February, 2023
মহানগরের ঘোড়ার গাড়ি
কলহার মুখোপাধ্যায়

‘অভিনেতা অক্ষয়কুমারের হাত দিয়েই বদলে গেল কলকাতার ঘোড়ার গাড়ির ইতিহাস...’ শুনেই হেঁয়ালির মতো লাগল। তবে প্রথমেই সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে পুরোটা শোনার পর বোঝা গেল গল্পটা।
বিশদ

29th  January, 2023
স্কুলছুট
সায়ন্তনী বসু চৌধুরী

সকাল আটটা সাড়ে আটটা থেকেই আকাশে মেঘ জমছিল। বেলা বাড়তে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে শুরু হল টিপটিপ বৃষ্টি। চড়াইদিঘি স্কুলের পাশে এতক্ষণ ব্যাজার মুখে দাঁড়িয়েছিল সুখেন বাউড়ি।
বিশদ

29th  January, 2023
বর্ণাশ্রম
ভগীরথ মিশ্র

নিজে পুরোপুরি নিরক্ষর হলেও মানুষটি মনেপ্রাণে চেয়েছে, নয়ন পড়েশুনে মহা-দিগগজ হোক। সম্ভবত সেই কারণেই, একেবারে শিশুকাল থেকেই, সুযোগটি পাওয়ামাত্র, ঠিক বাচ্চাকে মোয়ার লোভ দেখানোর ভঙ্গিতে  বলত, ‘তুয়াকে কিন্তু মন দিয়ে লিখাপড়া কইরতে হব্যেক বাপ। বিশদ

22nd  January, 2023
পৌষের পিঠেপুলি
হারাধন চৌধুরী

রবীন্দ্রনাথ পিঠেপুলি ভীষণ ভালোবাসতেন। তাই শান্তিনিকেতনের অনেকেই নানারকম পিঠে বানিয়ে কবির কাছে পাঠাতেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য শিক্ষক নেপালচন্দ্র রায়ের স্ত্রী ও পুত্রবধূ। ঠান্ডার আমেজ আসামাত্র কবিই জিজ্ঞেস করতেন নেপালবাবুকে, ‘পৌষপার্বণের আর কত দেরি?’
বিশদ

15th  January, 2023
বস্তির ছেলে
কাবেরী রায়চৌধুরী

অর্পিতার মেজাজ যে খারাপ করে দিয়েছে সে বুঝেই চায়ের কাপে চুমুক দিয়েই ডাকল, অপু! শুনছ? অপুউউ...!
অপ্রসন্ন মুখ অর্পিতার, বলল, ‘বল, কী?’  বিশদ

08th  January, 2023
অন্তরের আলো জ্বালাতেই
কল্পতরু উৎসব
সন্দীপন বিশ্বাস

১ জানুয়ারি। বাংলা নববর্ষের পাশাপাশি বাঙালির কাছে ইংরেজি নববর্ষের এই দিনটিও বেশ আনন্দের। সেই আনন্দের স্বাদ পেতে বাঙালি সেদিন বেরিয়ে পড়েন পথে। কারও গন্তব্য পার্ক স্ট্রিট, কারও চিড়িয়াখানা, কারও ইকো পার্ক, আবার কেউবা কোনও বিনোদনস্থল বা পর্যটনকেন্দ্রে চলে যান। বিশদ

01st  January, 2023
অমূল্য রতন
প্রদীপ আচার্য

একেবারে বাজপাখির মতো ছোঁ মেরে বইটাকে তুলে নিলেন প্রমদাকান্ত। উত্তেজনায় থরথর করে কাঁপছিলেন তিনি। এই বইটা তিনি এভাবে ফুটপাতে পাবেন কোনওদিন স্বপ্নেও ভাবেননি। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কিন্তু, তিনি এই মুহূর্তে যা দেখছেন, তা কোনও ভোজবাজি বা স্বপ্ন নয়। কোনও দৃষ্টিভ্রমও নয়। বিশদ

01st  January, 2023
দেশ-বিদেশের আলোর উৎসব
তরুণ চক্রবর্তী

আমাদের মনের আলো, আমাদের চেতনার আলো জ্বালিয়ে দিতে চেয়েই আজকের দিনটিতে এই পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন মহামানব যিশু খ্রিস্ট। ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় যন্ত্রণাক্ত হতে হতে তিনি জীবন উৎসর্গ করেছিলেন তাঁর ঘাতকদেরও ক্ষমা করে। আজ আলোই বুঝি তাঁকে প্রণামের সর্বোত্তম উপাদান। বিশদ

25th  December, 2022
অঙ্গুরীমাল
সঞ্জয় রায়

বাবার পাশে বসে বিনোদ দেখত পুকুর ধারে ভেজা মাটি খুঁড়তেই কিলবিল করতে থাকা ক্ষুদ্র কীটগুলো উঠে আসছে। বাবা বলত, ‘এগুলো মাছের খাবার।’ তারপর কিলবিল করতে থাকা সরু লম্বা লম্বা কীটগুলোকে বাবা একটা ভাঁড়ে মাটির ভিতর জমিয়ে রাখত। বিশদ

11th  December, 2022
একনজরে
সোনার গয়না ও কাঁসার বাসন পালিশ করার নামে অলঙ্কার হাতানোর ঘটনায় এবার বিহার যোগ মিলল। বাঁকুড়া জেলার একাধিক থানা এলাকায় এমন ঘটনায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে পুলিসের। অবশেষে নাকা চেকিং করে বিহার ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করেছে ...

স্বামীর পরকীয়ার প্রতিবাদ করে খুন হতে হল স্ত্রীকে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে তুফানগঞ্জের নাককাটিগছ পঞ্চায়েতে। স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর গলার নলি কেটে নৃশংসভাবে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। পুলিস জানিয়েছে, মৃতার বয়স ৪১ বছর। ...

২০১৫ সালের জুলাইয়ে দুই বছরের জন্য আইপিএলে খেলার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংসের উপর। যার ফলে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে তারা অংশ নিতে পারেনি কোটিপতি লিগে। ...

শুক্রবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর থানার কালদীঘি এলাকার একটি বাড়িতে দুঃসাহসিক চুরি হয়। তা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিস জানিয়েছে, ওই বাড়িতে থাকেন ওয়ারেশ মিঞা।  ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

সাংগঠনিক কর্মে বড় সাফল্য পেতে পারেন। উপস্থিত বুদ্ধি আর সাহসের জোরে কার্যোদ্ধার। বিদ্যায় সাফল্য। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

 
১৫৭০: পোপ পঞ্চম পায়াম কর্তৃক ব্রিটেনের রানী প্রথম এলিজাবেথ ধর্মচ্যুত হন
১৫৮৬: সম্রাট আকবরের সভাসদ বীরবলের মৃত্যু
১৭৫৪: ইংরেজ কবি উইলিয়াম হ্যামিলটনের মৃত্যু
১৮৪৩: টেমস নদীর বিখ্যাত সুড়ঙ্গ খোলা হয়
১৮৬২: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম কাগজের মুদ্রা চালু হয়
১৮৯৬: আধুনিক অলিম্পিক ক্রীড়ার প্রথম স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়
১৮৯৮: স্বামী বিবেকানন্দ মার্গারেট এলিজাবেথ নোবেলকে দীক্ষান্তে নিবেদিতা নামকরণ করেন
১৯২৭: হকি খেলোয়াড় লেসলি ক্লডিয়াসের জন্ম
১৯৪৮: অভিনেতা ফারুক শেখের জন্ম
১৯৮৪: ক্রিকেটার অশোক দিন্দার জন্ম
২০১০: ভারতীয় বাঙালি আলোকচিত্রী নিমাই ঘোষের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.৪৮ টাকা ৮৩.২২ টাকা
পাউন্ড ৯৯.৩৬ টাকা ১০২.৮০ টাকা
ইউরো ৮৭.৫৯ টাকা ৯০.৭৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৬০,১০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৫৭,০০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৫৭,৮৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৭০,১৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৭০,২৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১০ চৈত্র, ১৪২৯, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩। চতুর্থী ২৬/৪৮ অপরাহ্ন ৪/২৪। ভরণী নক্ষত্র ১৯/৬ দিবা ১/১৯। সূর্যোদয় ৫/৪০/২৩, সূর্যাস্ত ৫/৪৫/২৯। অমৃতযোগ দিবা ৯/৪১ গতে ১২/৫৫ মধ্যে। রাত্রি ৮/৮ গতে ১০/৩১ মধ্যে পুনঃ পুনঃ ১২/৬ গতে ১/৪১ মধ্যে পুনঃ ২/২৯ গতে ৪/৪ মধ্যে। বারবেলা ৭/১২ মধ্যে পুনঃ ১/১৩ গতে ২/৪৪ মধ্যে পুনঃ ৪/১৪ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ৭/১৪ মধ্যে পুনঃ ৪/১১ গতে উদয়াবধি। 
১০ চৈত্র, ১৪২৯, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩। চতুর্থী রাত্রি ৭/৩। ভরণী নক্ষত্র দিবা ৩/৫৯। সূর্যোদয় ৫/৪২, সূর্যাস্ত ৫/৪৬। অমৃতযোগ দিবা ৯/৩৫ গতে ১২/৫৩ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/১০ গতে ১০/২৯ মধ্যে ও ১২/২ গতে ১/৩৫ মধ্যে ও ২/২১ গতে ৩/৫৪ মধ্যে। কালবেলা ৭/১২ মধ্যে ও ১/১৪ গতে ২/৪৫ মধ্যে ও ৪/১৫ গতে ৫/৪৬ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/১৫ মধ্যে ও ৪/১২ গতে ৫/৪১ মধ্যে। 
২ রমজান।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
মল্লারপুরে উদ্ধার বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা তৈরির মশলা, ধৃত ১
বীরভূমের মল্লারপুর থানার জুবুনি গ্রামে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণে ...বিশদ

03:05:16 PM

সিভিক ভলান্টিয়ারদের এক্তিয়ার নিয়ে জারি হল নির্দেশিকা
রাজ্যে সিভিক ভলান্টিয়ারদের দায়িত্ব কী! প্রশাসনিক ও আইনগত দিক দিয়ে ...বিশদ

02:37:00 PM

প্রশ্ন করা থামাব না, সাংবাদিক বৈঠকে বললেন রাহুল
গতকাল সাংসদ পদ খারিজের পর আজ সাংবাদিক বৈঠক করলেন কংগ্রেস ...বিশদ

01:29:00 PM

আদালতে ২ বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত বিধায়ক-সাংসদদের সদস্যপদ খারিজের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা
কোনও অভিযোগে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর দু’বছর বা তার ...বিশদ

12:56:34 PM

দিল্লির ইডি অফিসে হাজিরা দিলেন সিউড়ির ইনস্পেক্টর মহম্মদ আলি

12:48:16 PM

আজ সাংবাদিক বৈঠক করবেন রাহুল গান্ধী
সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যাওয়ার পর প্রথম সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি ...বিশদ

12:10:06 PM