Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ছোট গল্প
রসাল কথা
এষা দে

গ্রিনভিউ হাউসিং কমপ্লেক্স যে সার্থকনামা সে বিষয়ে কারও দ্বিমত নেই। মহানগরীর পূর্বপ্রান্তে বছর পঁচিশেক আগে তৈরি চারটি বিল্ডিং, মাঝখানে বেশ বড় পরিসরে সবুজের সমারোহ। গোড়াতেই আবাসিকদের সভায় স্থির সিদ্ধান্ত কোনও ফলের গাছ লাগানো হবে না, কারণ ফলফুলরি হাতের কাছে থাকলেই অবধারিত পরিণতি ছোটদের দৌরাত্ম্য, অশান্তি এবং তার জেরে আবাসনের আবহ নষ্ট। অতএব পরিসরটিতে শুধু পত্রপুষ্পশোভা, প্রধানত প্রথমটাই।
বেশিরভাগ ফ্ল্যাট মালিক তখন জীবিকা এবং জীবনে স্থিত, শৈশব অতিক্রান্ত ছেলেমেয়েরা স্কুলে পড়ে। কারও কারও অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ বাবা-মাও সঙ্গে থাকেন। যেমন থাকতেন পরেশ ও অনুভা ব্যানার্জিরা এ থ্রি/ টু’ অর্থাৎ ‘এ’ বিল্ডিংয়ের তিন তলার দু’নম্বর ফ্ল্যাট। জীবনসায়াহ্নে ধ্যানজ্ঞান ছোট ছেলে সুশান্তর একমাত্র সন্তান, শ্রীময়ী। সুশান্ত এবং দীপা দুজন কর্মব্যস্ত ইঞ্জিনিয়ার। তাদের প্রাত্যহিক দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে শ্রীময়ী বা শ্রী, শৈশব থেকে দাদাভাই, দিদার অতিরিক্ত মনোযোগ এবং প্রশ্রয় লাভ করে একটি বিচ্ছু মেয়েতে পরিণত। গ্রিনভিউর ছেলেমেয়েদের লিডার, যদিও আজ পলাশ, কাল অভ্র, পরশু অদিতির সঙ্গে আড়ি হাতাহাতি লেগেই থাকে। বেড়ে ওঠার স্বাভাবিক নিয়মে আজ যার সঙ্গে মারপিট কাল তারই সঙ্গে গলায় গলায় ভাব। ক্রমে গ্রিনভিউয়ের বাবা-মায়েরা তার কাণ্ডকারখানায় উত্তেজিত না হতে শিখে গেলেন।
সে যখন বয়ঃসন্ধিতে উপনীত, সদ্য টিনএজার, তখন সে এমন একটি কাণ্ড করে বসল যে সকলে মিলে রে রে করে তেড়ে এল।
 ‘না, এটা চলবে না।’
‘আবাসনের বিধিনিয়ম সবাইকে সমানভাবে মানতে হয় নইলে একসঙ্গে থাকা যায় না।’
গ্রিনভিউয়ের এতদিনের নিস্তরঙ্গ জীবন উথালপাতাল।
কী করেছে শ্রী? দল বেঁধে রথের মেলায় গিয়েছিল। যাক্‌।  ঩সেখানে বড়দের সব বারণ, সাবধানবাণী অগ্রাহ্য করে আকণ্ঠ নিষিদ্ধ স্ন্যাক্স গরম গরম সামনে তৈরি জিলিপি, পাঁপড় ভাজা, বেগুনি, পেঁয়াজি খাওয়া হয়েছে। কী সর্বনাশ! তার ওপর সন্ধ্যায় ফেরার সময় একটি আম গাছের চারা কিনে নিয়ে এসে লুকিয়ে রেখে পরদিন সাতসকালে চুপচাপ মালি বিশুর কোদাল খুরপি ইত্যাদি হাতসাফাই করে হাউজিংয়ের খোলা সবুজের প্রায় মাঝখানে মাটি খুঁড়ে সেটি পুঁতে ফেলেছে। সকলের গভীর সন্দেহ বিশু, ছোটদের কাছের মানুষ মাঝবয়সি বিশুকাকা, গোপনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। নইলে এত নিপুণভাবে মাটি তৈরি করে কী করে মেয়েটা গাছ লাগাতে পারল? ব্যানার্জিদের ফ্ল্যাটে দল বেঁধে ডেলিগেশন গেল। মেয়ের কীর্তিতে শ্রীর বাবা-মা মর্মাহত লজ্জিত, তার অপরাধের গুরুত্বের বিষয়ে বাকি বাসিন্দাদের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। দোষীকে সামনে আনা হল। হাউজিং একটি কোঅপারেটিভ, যার নিয়ম নীতি সিদ্ধান্ত সব বোঝানো হল। কমিটি প্রেসিডেন্ট সুজয়বাবু বললেন, ‘বুঝতে পারছ তো কেন ওই আম গাছ এ হাউজিংয়ে চলবে না?’
মাথা নাড়ে শ্রী, ‘না, বুঝতে পারছি না। রথের মেলায় লোকে যেমন তেলে ভাজা খায় তেমনই গাছের চারাও কেনে। কত রকমের গাছ লোকেরা কিনছিল। দিদা বলে আমরা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে নিজেদের ট্র্যাডিশন কিছু শিখিনি। আমাদের দেশে সিজন অনুযায়ী পরব। কালীপুজোর সময় বাজি পোড়াই কারণ শ্যামাপোকার মতো ইনসেক্ট হয় তাই। বসন্তকালে ফুল ফোটে। আমরা ফুলের হলুদ, লাল, বেগুনি রঙে ফাগ আবিরে দোল খেলি। বর্ষাকাল গাছ লাগানোর বেস্ট টাইম। তাই সে সময় রথের মেলায় হয় গাছ বিক্রি। দাদাভাইয়ের কাছে সব শুনেছি। তোমরা বড়রা জানো না কেন?’
একাধিক গলা হাঁ হাঁ করে ওঠে। সুজয়বাবু সবাইকে থামিয়ে বলেন, ‘ট্র্যাডিশন কাস্টমফাস্টম সব ঠিক আছে। কিন্তু সব সময় মানা যায় না। কালীপুজোয় কি আমরা হাউজিংয়ে শব্দবাজি ফাটাতে পারি? ফ্ল্যাটে তুমি দোল খেলতে পার? না। সেই রকম সর্বত্র সবরকম গাছও লাগানো যায় না। পাঁচজনের সঙ্গে বাস করতে হলে অন্যের সুবিধা-অসুবিধা দেখতে হয়।’
‘কার অসুবিধা আমগাছ থাকলে? সব তোমাদের জবরদস্তি।’ ফোঁস করে ওঠে শ্রী। 
‘এই হাউজিং-এ ফলের গাছ লাগানো বারণ, সকলের মত। তুমি একা মানবে না কেন?’
‘ওটা তুলে ফেলতে হবে।’ কমিটি মেম্বার গীতি লাহিড়ীর আদেশ।
শক্ত মুখে শ্রী ঘোষণা করে, ‘না। রথের মেলায় কেনা আমগাছ থাকবে। কেউ যদি আমার গাছে হাত দিয়েছ তো দেখো আমি কী করি। এই হাউজিংয়ে আমার গাছ যদি না থাকতে পারে তাহলে আমিও থাকব না। পুলিস এসে তোমাদের ধরবে। তখন শত কান্নাকাটি করেও আর আমাকে ফেরাতে পারবে না, বলে দিলাম।’ ঘর থেকে গট গট করে বেরিয়ে গেল।
সবাই বাক্যহীন।
‘দেখুন, দয়া করে আপনারা গাছটায় হাত-টাত দেবেন না। বড় অভিমানী মেয়ে। কী অনর্থ করে বসবে ভাবলে বুক কাঁপে,’ দিদার কাতর মিনতি।
‘একটা আম গাছ লাগানো তো অপরাধ নয়। একটু যুক্তি দিয়ে চিন্তা করুন। হ্যাঁ আপনারা একটা নিয়ম করেছেন। সেটা কিন্তু কোনও আইনমাফিক কাজ নয়’, দাদাভাই নাতনির হয়ে লড়ে যান।
‘না, না, জানেন তো ফলের গাছ থাকলেই অশান্তি।’
‘সেটা তো আপনাদের অনুমান মাত্র। প্রতি সিজনে মৌসুমি ফুল হয়। কত সুন্দর সব ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, দোপাটি। কোনও দিন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে কি?’ দাদাভাই নাছোড়বান্দা।
‘কিছু মনে করবেন না, আপনাদের প্রশ্রয়েই মেয়েটা এমন বেয়াড়া হয়ে উঠেছে।’ বি ফোর/ থ্রি-র ঠোঁটকাটা মিলি মিত্তির মুখের ওপর বলে দেন।
গম্ভীর মুখে দিদা বলেন, ‘দস্যিপনা করে সত্যি, কিন্তু ক্লাসে বরাবর ফার্স্ট হয়। মিসেস মিত্র, আপনার মেয়ে মৌলি প্রায়ই আসে শ্রীর কাছে অঙ্ক না কীসে জানি হেল্প নিতে।’
সি ওয়ান/ ফোর-এর সুনন্দা বাগচী ফুট কাটেন, ‘আমার ছেলে শৌণকও ফার্স্ট হয়। অবশ্য ওর অন্য ক্লাস। তাই বলে একেবারে যা ইচ্ছে তাই করবে, গুরুজনদের কথার তোয়াক্কা করবে না, এমন শিক্ষা আমরা ছেলেকে দিইনি।’
সকলে যেন ভুলেই গিয়েছে শ্রী মোটেই একলা রথের মেলায় যায়নি। প্রতিবাদী প্রতিবেশীদের ছেলেমেয়েরা বেশ কয়েকজন সঙ্গে ছিল। রীতিমতো একটা দল। তবে লিডার নিঃসন্দেহে ওই দস্যি মেয়ে। সকলে মিলেই তেলেভাজাটাজা খাওয়া হয়েছে। নিশ্চয় সকলের সামনেই গাছ কেনা। লাগানোর পরিকল্পনাতে নির্ঘাত সবাই শামিল। বাবা-মায়ের জেরার জবাবে বাধ্য পুত্র-কন্যাদের এক উত্তর, ‘কখন যে শ্রী ওটা কিনল কেউ খেয়ালই করতে পারিনি। ওর সঙ্গে তো একটা ঝোলা ব্যাগ ছিল আমাদের জলে বোতল ক্যারি করার জন্য। তার মধ্যে পুরে এনেছে নিশ্চয়, দেখতে পাইনি।’
বৃক্ষরোপণ কাণ্ডের বিভিন্ন পর্যায়ে সমষ্টির ভূমিকা রহস্যই রয়ে গেল। শেষমেশ দোষের ভাগী হয়ে রইল একমাত্র বিশু মালি। আসামিকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদে মাথা চুলকে স্বীকার করল, ‘আজ্ঞে একটা শুভ দিনে শ্রীদিদি গাছটা কিনেছেন, ‘না’ বলি কী করে!’
দিনের আবার শুভ-অশুভ কী। এই একবিংশ শতকেও সাধারণ মানুষের মনের মধ্যে কত অযৌক্তিক সনাতন ধ্যান-ধারণা রাজত্ব করছে সে নিয়ে কমিটির জরুরি মিটিংয়ে সমবেত ক্ষোভ প্রকাশ। অপেক্ষাকৃত বয়স্কদের মত, বাধা দিলে ছোটদের জেদ বাড়ে। সহ্য করে চুপচাপ থাকলে আপনি ঘাড় থেকে ভূত নেমে যাবে। গাছ তো খেলনা নয় যে ইচ্ছেমতো আজ খেলবে, কাল ফেলে রেখে দেবে। ও তো একটা প্রাণ, শিশুর মতো যাকে আদর যত্নে পালন করতে হয়। একটা আমের চারা বড় করা কি চাট্টিখানি কথা। কত বড় দায়িত্ব তা কি ওই এতটুকু মেয়ে জানে! ক’দিন তার বৃক্ষপ্রীতি টেকে দেখ। অতএব রসাল শিশুর অবশ্যম্ভাবী বিয়োগাত্মক পরিণতিতে নিশ্চিত হয়ে সকলে হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন।
সবাইকে অবাক করে স্কুল টিউশন সব সামলে নিয়মিত চলে দস্যি মেয়েটার আমের চারা লালনপালন। বলাবাহুল্য দাদু দিদার সক্রিয় সাহায্য ও ক্রমাগত উৎসাহদান। নইলে তার নিজস্ব ছোট ঝাঁঝরি খুরপি আসে কোত্থেকে। বিশুর অন্তর্ঘাতমূলক কার্যকলাপও স্পষ্ট। শিশুচারাটিকে ঘিরে একটি শক্তপোক্ত লোহার তারের জালি বেড়া রাতারাতি গজিয়ে উঠল। রোজই শ্রীকে দেখা যায় তার গাছের কাছে। পোঁতার সময় তার উচ্চতা ছিল ফুটখানেক। যেদিন হাঁটু ছুঁল, অভ্র আর মেধাকে শ্রী বলল, ‘জানিস হিমু দিব্যি বড় হচ্ছে।’
‘হিমু আবার কে?’
‘বা রে মনে নেই সেই যে গাছটা বিক্রি করল, সেই লোকটাই তো বলল ওর নাম হিমসাগর, চিনির মতো মিষ্টি আম দেবে। মস্ত বড় নাম হিমসাগর, ছোট করে আমি ওকে হিমু বলি।’
‘তুই এমনভাবে বললি যেন হিমু তোর একটা ছোট ভাই বা বোন’, অভ্র ঠাট্টা করে।
শ্রী লাফিয়ে ওঠে, ‘দি আইডিয়া। হিমুকে আমার ছোট ভাই করলাম।’
মেধা খেপায়, ‘ভাইফোঁটা দিবি তো?’
‘নিশ্চয় দেব।’
অতঃপর শ্রীর দলবল মহা উৎসাহে হিমুকে ঘিরে ফি বছর ভাইফোঁটা রাখিবন্ধন অনুষ্ঠানে হইহই করে, চিপস্‌ ক্যাডবেরি খায়, বলাবাহুল্য ফিনান্সিয়ের দাদাভাই। জন্মদিনে অর্থাৎ তার গ্রিনভিউতে আগমনের দিনে দিদার হাতের পায়েস। সে সবের বিবরণ তাদের বাবা-মায়ের কানে ওঠে। ‘যত্ত সব আদিখ্যেতা। মুখ বেঁকান মিলি মিত্তির। বয়েই গেল শ্রী’র। গাছগাছালিরও প্রাণ আছে। বড়রা কি জানে না জগদীশচন্দ্র বসুর আবিষ্কার? নিয়ম করে হিমুর সঙ্গে সময় কাটায়। গাছেরা নাকি ভালোবাসা চায়।
দেখতে দেখতে হিমু লম্বায় ধাঁ ধাঁ করে দিদিকে ছাড়াল। বেশ ডালপালা ছড়িয়ে গায়ে পায়েও দিব্যি ডাগরটি। কিন্তু কই আমের তো দেখা নেই। ততদিনে শ্রীর উঁচু ক্লাস, পড়ার চাপ প্রচণ্ড, দশ ক্লাস, বারো ক্লাস, জয়েন্ট এন্ট্রান্স। পরীক্ষা আর পরীক্ষা। কত স্বপ্ন তার নিজের এবং তাকে ঘিরে তার বাবা-মায়ের, দাদাভাই দিদার। 
এদিকে হিমুকে নিয়ে তার দুশ্চিন্তা। তার গায়ে হাত বোলাতে বোলাতে জিজ্ঞাসা করে, ‘তোর কি কোনও কষ্ট আছে?’
তার সবুজ পাতার রাশি বাতাসে দোলে, ‘না, আমি দিব্যি আছি।’
প্রবল বিরূপতার পারিপার্শ্বিকের জবাবেই যেন হিমু ঘন পাতা ভরা সমান শাখা-প্রশাখা চারদিকে ছড়িয়ে দিব্যি মানানসই সুন্দর আকৃতি নেয়। এমন বাহার যে তার এককাট্টা বিরোধীদের চোখেও ভালোই লাগে। আমের যে দেখা নেই এতে তাঁরা উচ্চগ্রামে বিশেষ সন্তোষ প্রকাশ করে থাকেন। ঠোঁটকাটা মিলি মিত্তির বলে বেড়ান, ‘যেমন বেয়াড়া মেয়ে শ্রী, তেমনই বেয়াড়া তার গাছ, কস্মিনকালেও ফল দেবে না।’
বিশুকাকা অবশ্য সকলের অগোচরে শ্রীকে বুঝিয়েছে, ‘ব্যস্ত হও না দিদি। তোমার হিমু মানুষের তৈরি কলমের গাছ নয় যে সাত তাড়াতাড়ি ফল ধরবে। ও হচ্ছে ভগবানের নিয়মে আঁটি থেকে গজানো গাছ, অন্তত সাত-আট বছর সময় লাগবে ফল ধরতে।’
এদিকে দিনে বারো-চোদ্দো ঘণ্টা ধরে চলছে শ্রীর পড়াশোনা। গ্রিনভিউয়ের এতগুলি ছেলেমেয়ের মধ্যে একমাত্র সে-ই যখন আইআইটিতে অ্যাডমিশন পেল, খুশির চেয়ে বেশি যেন মন খারাপ। হিমুকে ছেড়ে যেতে হবে। তার গায়ে হাত বুলিয়ে বিশুকাকাকে মিনতি করে ‘হিমুকে দেখো কিন্তু।’
‘আমি যখন যা দরকার ঠিক করে যাব। তুমি নিশ্চিন্তে যাও, মন দিয়ে পড়াশোনা কর। আর কলেজের ছুটিতে তো আসবে।’ প্রতিবার ছুটিতে এসে প্রথমেই হিমুর সার্বিক সুস্থতা পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করে শ্রী। আবাসনের বাসিন্দাদের পার্মানেন্ট হাসির খোরাক।
কেটে গিয়েছে সময়। গ্রীষ্মকাল। গ্রিনভিউ আবাসনের সবুজ পরিসরে সকলের নজর কেড়ে সগর্বে দাঁড়িয়ে ফলভরা বিশাল রসাল বৃক্ষ। আঁকশি দিয়ে বুড়ো বিশু বাচ্চাদের আম পেড়ে দেয়। মহানন্দে তারা খায়। বছর বছর কত শত আম দিয়ে যাচ্ছে হিমু। আর হিমুর ধাত্রী সেই অবাধ্য বেয়াড়া মেয়েটা কই। কত কাল হল চলে গিয়েছে আমেরিকায়। ইঞ্জিনিয়ার বাবা-মাও এখন সে দেশে স্থিতু। দাদাভাই-দিদা পৃথিবীতে নেই। ফ্ল্যাটে এখন নতুন মালিক। রয়েছে শুধু হিমু। তার অফুরন্ত সম্ভার নিয়ে অপেক্ষা করে আছে কবে তার সেই দস্যি দিদি ফিরবে, দেখবে তার হিমু চিনির মতো মিষ্টি আম বিলিয়ে যাচ্ছে সবাইকে।
অঙ্কন : সুব্রত মাজী
21st  November, 2021
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। বিশদ

31st  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। বিশদ

24th  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
গুরুদ্বার সিস গঞ্জ

দিল্লি দেখতে এসে চাঁদনী চক যাওয়া হবে না? তা কীভাবে হয়? অতএব দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ভ্রমণস্থল চাঁদনী চক।
বিশদ

17th  March, 2024
দেখা যায় না, শোনা যায় পুতুল বাড়ি
 

আকর্ষণ, বিতর্ক, কৌতূহলের চিরন্তন কেন্দ্রবিন্দু অলৌকিক দুনিয়া। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দুই শিবিরেরই এব্যাপারে আগ্রহ ষোলোআনা। তাই ভৌতিক সাহিত্য হোক বা সিনেমা, বাজারে কাটতি বরাবরই বেশি।
বিশদ

17th  March, 2024
প্রস্থান
দীপারুণ ভট্টাচার্য

শববাহী গাড়িটা গেটের ভিতর ঢুকতেই অরুণবাবু চারপাশটা দেখলেন। বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে তার ছেলে নীলাঞ্জন আর বউমা সুতপা। নীলাঞ্জন বড় চাকরি করে। সে ফোন পেয়েছিল অফিসে যাওয়ার পর। সুতপাকে বলেছিল, ‘বেরতে একটু সময় লাগবে। বিশদ

10th  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: জাহান আরার সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ পরব চলছে। আগ্রা জুড়ে উৎসবের উচ্ছ্বাস। এখন ১৬৪৪। বাদশাহ শাহজাহানের আগ্রা দুর্গে সবথেকে বেশি উজ্জ্বল আয়োজন। স্বাভাবিক। প্রতি বছর নভরোজের সময় আগ্রা দুর্গ এভাবেই সেজে ওঠে। সম্রাটের পুত্রকন্যারা এই সময়টায় পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন। বিশদ

10th  March, 2024
অতীতের আয়না: বাঙালির সার্কাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

১৯২০ সালের ২০ মে। নিজের ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নিয়ে সিঙ্গাপুরে ট্যুরে গিয়ে জন্ডিস হয়ে মারা গেলেন প্রিয়নাথ বসু। শুধু উপমহাদেশের সার্কাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও উৎকর্ষের নতুন মানদণ্ড ছাড়াও, বিনোদন শিল্প হিসেবে সার্কাসকে দৃঢ় ভিত দিয়ে গেলেন তিনি। বিশদ

10th  March, 2024
ভোগ
শুচিস্মিতা  দেব

পুতুলকে সদ্যই নিমতিতা থেকে ‘রায়চৌধুরী ভিলা’তে এনেছে তার পিসি সবিতা। সবিতা এই পরিবারের বহু দিনের থাকা-খাওয়ার মাসি। টিভি সিরিয়ালের মতো প্রকাণ্ড বাড়িখানা দেখে পেরথমেই ভেবলেছে পুতুল। ফুটবল মাঠের মতো বৈঠকখানা। বিশদ

03rd  March, 2024
রুপোর চাকু

আলমারিটা খুলতেই দাদার চোখ চলে গিয়েছিল। উপরের তাকে জামা কাপড়ের পাশে খালি জায়গায় শোয়ানো ছিল। বাজপাখির চোখ দাদার।
বিশদ

25th  February, 2024
অপরাজিতা
মীনাক্ষী সিংহ

জুনিয়র ডাক্তার সুমন সান্যাল জানিয়ে গেল অপারেশন থিয়েটার রেডি, এবার ডাঃ মিত্রকে যেতে হবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠলেন সার্জেন মাধবিকা মিত্র। আজ একটা ক্রিটিক্যাল অপারেশন। বছর সতেরোর মেয়েটির মায়ের মুখ মনে পড়ল মাধবিকার। বিশদ

18th  February, 2024
একনজরে
দুবাইয়ের বৃষ্টিতে ধুয়ে গেল কুস্তিগির দীপক পুনিয়া ও সুজিত কালকের প্যারিস ওলিম্পিকসের যোগ্যতা অর্জনের সুযোগ। কিরগিজস্থানে আয়োজিত এশিয়া কুস্তি ...

ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা তৃণমূলের ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক সওকত মোল্লার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ল ভাঙড়ে। এই নিয়ে শোরগোল পড়েছে এলাকায়। কোথাও তাঁকে অশান্তির কারিগর তকমা দেওয়া হয়েছে, কোথাও আবার ঘুরিয়ে বহিরাগত বলে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। ...

ধুবুড়ির কালবেলায় একটি ছোট ক্যাম্প অফিসে ডাঁই করে রাখা অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট বা এইআইইউডিএফের ফ্ল্যাগ। এত ফ্ল্যাগ কবে লাগাবেন? ক্যাম্পের কর্মী আনিমুল হক খানিক গম্ভীর গলায় বলে উঠলেন, ‘ওই ফ্ল্যাগ না লাগালেও আমাদের কিছু হবে না। ...

বৃহস্পতিবার রাতে উল্লাসে তৃণমূলের প্রতীকে জেতা সাংসদ সুনীল মণ্ডলের উল্লাসের বাড়িতে কেক কাটলেন বিজেপির দিলীপ ঘোষ। আবার শুক্রবার সকালে প্রাতঃভ্রমণ করার সময় বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলেন বর্ধমান শহরের তৃণমূল কাউন্সিলার অজিত খাঁ ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৫২৬: পানিপথের যুদ্ধে মোগলরা আফগানদের পরাজিত করে
১৭৭০: আজকের দিনে ক্যাপ্টেন কুক অস্ট্রেলিয়া আবিষ্কার করেন
১৮৪৪: বাংলার নবজাগরণের অন্যতম ব্যক্তিত্ব দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যাযয়ের জন্ম
১৮৭৯: ডিরোজিওর অন্যতম শিষ্য, কলকাতার প্রথম শেরিফ রাজা দিগম্বর মিত্র প্রয়াত হন 
১৮৮৯: ফরাসী বিপ্লবের শতবর্ষ পূর্তিতে স্মারকস্তম্ভ হিসেবে ৯৮৫ ফুট উঁচু আইফেল টাওয়ার নির্মাণের কাজ শেষ হয়
১৮৮৯: জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাডলফ হিটলারের জন্ম
১৯০৫: অগ্নিযুগের বিপ্লবী, সুভাষচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ অনুগামী জ্যোতিষচন্দ্র জোয়ারদারের জন্ম
১৯১২: আইরিশ লেখক ব্রাম স্টোকারের মৃত্যু
১৯১৮: বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ এবং বাংলা ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা শওকত আলীর জন্ম
১৯২০: ভারতের কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী যূথিকা রায়ের জন্ম 
১৯৪৬: সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়
১৯৪৮: বলিউড অভিনেত্রী ববিতার জন্ম
১৯৫০: রাজনীতিক তথা অন্ধ্রপ্রদেশের ১৩তম মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডুর জন্ম
১৯৫২: বাংলা ভাষার সুরকার ও সঙ্গীতজ্ঞ সুধীরলাল চক্রবর্তীর মৃত্যু
১৯৬০: বংশীবাদক ও সুরকার পান্নালাল ঘোষের মৃত্যু
১৯৭২: চাঁদের মাটিতে নামল অ্যাপোলো ১৬
১৯৭২: বলিউড অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নির জন্ম
১৯৯৯: কলেরাডোর কলম্বাইন হাইস্কুলে ১৩ জনকে হত্যা করে আত্মহত্যা করল এরিক হ্যারিস এবং ডিলান কেবোল্ড
২০১৩: চীনের সিচুয়ান প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত ১৫০ 
২০১৯ : বাঙালি লোকসঙ্গীত শিল্পী ও লেখক অমর পালের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.১০ টাকা ৮৪.১৯ টাকা
পাউন্ড ১০২.৫৮ টাকা ১০৫.২২ টাকা
ইউরো ৮৭.৭৯ টাকা ৯০.২২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৪,১৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৪,৫০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭০,৮৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৩,৪০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৩,৫০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৭ বৈশাখ, ১৪৩১, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪। দ্বাদশী ৪৩/৩৫ রাত্রি ১০/৪২। পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র ২২/০ দিবা ২/৪। সূর্যোদয় ৫/১৬/৬, সূর্যাস্ত ৫/৫৫/৫। অমৃতযোগ দিবা ৯/৮ গতে ১২/৫১ মধ্যে। রাত্রি ৮/১১ গতে ১০/২৭ মধ্যে পুনঃ ১১/৫৯ গতে ১/২৯ মধ্যে পুনঃ ২/১৪ গতে ৩/৪৪ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫১ মধ্যে পুনঃ ১/১০ গতে ২/৪৫ মধ্যে পুনঃ ৪/২০ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ৭/২০ মধ্যে পুনঃ ৩/৫১ গতে উদয়াবধি।
৭ বৈশাখ, ১৪৩১, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪। দ্বাদশী রাত্রি ১০/৫৮। পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র দিবা ২/৪৩। সূর্যোদয় ৫/১৬, সূর্যাস্ত ৫/৫৬। অমৃতযোগ দিবা ৯/২২ গতে ১২/৫১ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/১৬ গতে ১০/২৭ মধ্যে ও ১১/৫৬ গতে ১/২২ মধ্যে ও ২/৩ গতে ৩/৩৩ মধ্যে। কালবেলা ৬/৫১ মধ্যে ও ১/১১ গতে ২/৪৬ মধ্যে ও ৪/২১ গতে ৫/৫৬ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/২১ মধ্যে ও ৩/৫১ গতে ৫/১৬ মধ্যে। 
১০ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: চেন্নাইকে ৮ উইকেটে হারাল লখনউ

19-04-2024 - 11:30:00 PM

আইপিএল: ৮২ রানে আউট কেএল রাহুল, লখনউ ১৬১/২ (১৭.১ ওভার), টার্গেট ১৭৭

19-04-2024 - 11:15:12 PM

আইপিএল: ৫৪ রানে আউট কুইন্টন ডিকক, লখনউ ১৩৪/১ (১৫ ওভার), টার্গেট ১৭৭

19-04-2024 - 10:57:07 PM

আইপিএল: ৪১ বলে হাফসেঞ্চুরি ডিককের, লখনউ ১২৩/০ (১৪.১ ওভার), টার্গেট ১৭৭

19-04-2024 - 10:53:44 PM

আইপিএল: ৩১ বলে হাফসেঞ্চুরি কেএল রাহুলের, লখনউ ৯৮/০ (১০.৪ ওভার), টার্গেট ১৭৭

19-04-2024 - 10:34:00 PM

আইপিএল: লখনউ ৫৪/০ (৬ ওভার), টার্গেট ১৭৭

19-04-2024 - 10:13:07 PM