Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ঘাম

ধ্রুব মুখোপাধ্যায়: টানটান চাদরে ঢাকা তক্তার এক কোণে বালিশ-তোশকের স্তূপ, রংচটা সিমেন্টের দেওয়ালটাকে কিছুটা আড়াল করতে একখানা আয়না বসানো। চেরি রঙের আলমারি আর তার ঠিক পাশেই একটা টিভি যার সামনে ছেলেমানুষের মতো গড়াগড়ি খাচ্ছে চ্যানেল চেঞ্জ করার নব। আমাদের শোবার ঘরটা বরাবর এমনই। গ্রীষ্মের সন্ধেতে, চটা-ওঠা লাল মেঝেতে জল ঢেলে, আলো বন্ধ করে, মা আমাকে ডাকল, ‘বাবু শুবি তো আয়! ঘরটা কেমন ঠান্ডা করে দিয়েছি দেখ।’ আমি তখন মাঠ থেকে ফিরে ঘামে ভিজে একসার। মুছলেও মুহূর্তে ভিজে যাচ্ছে শরীর। মায়ের পাশে শুলাম বটে তবে মেজাজটা একেবারে তুঙ্গে। ‘ধুর, এভাবে ঠান্ডা হয়? বাবাকে বলে জল ছাদটা করালেই তো পারো!’ বলতেই মা পাশ ফিরে বুকে হাত বুলিয়ে বলল, ‘কীরকম ঘেমেছিস রে!’ আমি সঙ্গে সঙ্গে শরীরটাকে উল্টিয়ে, উপুড় হয়ে শুলাম। মেঝেতে শুয়ে পিঠটা কেমন ঘেমেছে, সেটা দেখাতে। ‘স্থির হয়ে নিজের শ্বাস-প্রশ্বাস গোন। দেখ গরম কমে যাবে। তারপর দেখবি এই ঘর, এই জগৎ সংসার সবই কেমন ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে।’ মায়ের কথা শুনে ভিতরটা তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠল। ‘জগৎ সংসার আর ঠান্ডা করতে হবে না, আগে নিজের ঘরটা ঠান্ডা করলেই তো পারো,’ খেঁকিয়ে বলতেই মা শাড়ির আঁচল দিয়ে পিঠটা মুছতে মুছতে বলল, ‘জগৎ সংসার গরম বলেই না ঘরটা গরম।’ উত্তর দিতে না পারার আফশোসটা কমন হলেও মায়ের কাছে উত্তর করতে না পারার ক্ষোভটা ছেলেপুলেদের খেপিয়ে দেয়। মায়েরা বোধ হয় এই জন্যই সবার আগে চুপ থাকার কৌশলটা শিখে রাখে। আমি একটু কসরত দেখিয়ে উঠে টিভিটা চালালাম। নবটাকে টেবিলের সামনে থেকে তুলে, টিভির বেখাপ্পা ভাবে বেরিয়ে থাকা সাদা হুকটাতে লাগিয়ে মুহূর্তের মধ্যে পটপট করে রেগুলেটরটাকে যতদূর ঘোরানো সম্ভব ঘুরিয়ে নিলাম। তারপর পিছনে ঘুরিয়ে একটা গানের চ্যানেলে রেখে আবার একটু কেরামতি দেখিয়ে শুতে যাব কী, ‘উঠলি-ই যখন এক গ্লাস জল দিবি। সেই দুপুর থেকে জল খায়নি।’ আমি ‘পারব না’ বলে আবার শুতে গেলে, মা নিজেই পাশ ফিরে উঠতে লাগল। আবার সেই। কিছু করতে না পারার ক্ষোভ। ‘থাক, আর উঠতে হবে না’ বলে দু’লাফে রান্নাঘরে অ্যালুমিনিয়ামের কলসিটা গড়িয়ে এক গ্লাস জল এনে আবার কেরামতি দেখিয়ে শুয়ে পড়লাম ঠিক সেই একই জায়গায়। গলগল করে ঘামলেও মায়ের আটপৌরে শাড়ির আঁচলের স্পর্শটা বেশ লাগছিল। সাদা-কালো টিভির ঝিলঝিল করা ভিডিওটাও তখন যেন স্পষ্ট। আর তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘরের জানলায় ঝুলিয়ে রাখা প্রায়-শুকনো চাদরগুলোকে উড়িয়ে শুরু হল কালবৈশাখী। এক ঝলক বিদ্যুতে, সন্ধের আকাশের সঙ্গে ঘরের ভিতরটাও ঝলসে উঠল। মায়ের হাতটা কখন যে আমার চোখ দুটোকে চেপে ধরেছিল আমি বুঝিনি। তাচ্ছিল্যের সঙ্গে হাতটা সরিয়ে দিতেই গুরগুর আওয়াজে কেঁপে উঠল গোটা ঘর। একতলার ঘরে কালবৈশাখী শুধু ঠান্ডা বাতাস আনে না, ফ্রিতে মুঠো মুঠো ধুলোও ছুড়ে দিয়ে যায়। মা তাই তড়িঘড়ি টিভির প্ল্যাগটা খুলে, বন্ধ করে দিল সবক’টা জানলা। আর শেষে এক ডেকচি আচার হাতে বলল, ‘চেখে দেখ তো। তেলটা কেমন মজেছে।’ আমার ভিতরটাও যেন অনেকক্ষণ ধরে কিছু একটা চাইছিল। কিন্তু সেই চাওয়া-পাওয়ার হিসাবটা এভাবে হুবহু মিলে যাবে বুঝিনি। আচারটা মুখে দিতেই কিস্তিমাত! ‘আমাকে না হয় না বলিস, কিন্তু অন্য কেউ জল চাইলে দিস যেন বাবু,’ আবার শুরু করল মা। মায়েরা সব বোঝে। সন্তান কখন কোন মুডে কী চায় এমনকী সমস্ত রকম মুডের ওষুধও। তবে আমি আর কোনও প্রতিবাদ করিনি। আর মা-ও যেন খুব ভালো করেই জানত যে, আমি কোনও প্রতিবাদ করব না। তাই সেই সুযোগে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, ‘মরার সময় মুখে জলটা দিবি তো?’ এবার আর পারিনি, ‘পাশে শুলেই কি তোমাকে যতসব বাজে বকতে হয়? দু-দণ্ড শান্তিতে শুলে কি গায়ে জ্বালা ধরে?’ আর তারপরেই সব চুপ। এরকম ঘটনা আমার স্কুল জীবনে বহুবার ঘটেছে আর প্রতিবারই মা সেই একই বস্তাপচা কথাগুলো বলে এসেছে, ‘দশ মাস, দশ দিন পেটে ধরলাম। কিছু তো সাধ থাকবেই! নিজে যখন বাপ-মা হবি বুঝবি।’ কিন্তু এবার আর কিছু বলল না। বার কয়েক আওয়াজ দিলেও চুপ! পাশ ফিরে মায়ের শরীরটাকে জোরে জোরে ঝাঁকালাম আমি। কিন্তু দেহটা যেন অসাড়। গলাটা শুকিয়ে আসছিল। কালবৈশাখীর শেষে বাইরে তখন ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। জগৎ সংসার ভীষণ ঠান্ডা। ঠান্ডায় আমার হাড়গোড় কাঁপছে তবুও সারা শরীরে ঘাম। ভিতরটা হালকা হয়ে আসছিল। ‘মা, কিছু তো বলো।’ চিৎকার করতেই ঘুমটা ভেঙে গেল। হকচকিয়ে উঠে দেখি ঘরের ভিতরটা হিম শীতল। যদিও সারা শরীর ঘেমে একসার। আলোটা জ্বলছিল। বোতল থেকে এক ঢোঁক জল খেতেই আরও ঘেমে গেলাম। রুমের জানলাটা তখন হাঁ করে গিলে খাচ্ছে বাইরের ঠান্ডা বাতাস। এদেশে জানলা খুলে ঘুমানো মানে নিজের বিপদ নিজে ডেকে আনা। জানলাটা নামিয়ে, ঘামে ভেজা শরীরটা মুছতেই হাজার হাজার প্রশ্ন যেন চারপাশ থেকে ঘিরে ধরছিল। এমনটা তো আগে কক্ষনও হয়নি! এর আগে আমি মনে রাখার মতো, ভয়ঙ্কর, ঘাম ঝরানো স্বপ্ন দেখেছি মাত্র একটাই, এইচএসে অঙ্ক পরীক্ষার দিন ইংলিশ পড়ে যাবার স্বপ্ন। কিন্তু...। থেকে থেকে ভিতরটা হালকা হয়ে আসছিল।
সাউথ হ্যাম্পটন শহরটা বড্ড একঘেয়ে। আটলান্টিকের ঠান্ডা হাওয়া, ইংলিশ চ্যানেলের পার থেকে প্রাণবন্ত ফ্রান্সের হাতছানি আর মেঘ-বৃষ্টির হুটোপুটি। একটানা অনেকদিন থাকলে ডিপ্রেস্‌ড লাগে। আর আমার তো বছর পাঁচেক হয়েই গেল। অফিস, বাড়ি আর মাঝে মধ্যে ছুটিতে সামনের সাধের আইল অফ হোয়াইট। বাড়িতে বাড়িতে টাইটানিকে ডুবে যাওয়া মৃতের গল্পে ভরা এই শহরে উচ্চমাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষায় ইংরেজি পড়ে যাওয়ার স্বপ্নও যেন বিলাসিতা। মনকে এভাবেই অনেকক্ষণ মানানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু পারলাম না। তাহলে ভিডিওটা? মা কী...? সন্ধে থেকে বারবার মাকে ফোন করলেও, ফোনটা সুইচড অফ। মায়ের মুখটা এভাবে কোনওদিনও মনে পড়েনি। পড়বেই বা কী করে! সারাটা জীবন তো দৌড়েই গেলাম। সেই কবে গ্রীষ্মের দুপুরে ঘামে ভিজে যাওয়া শরীর নিয়ে বিরক্ত হয়ে বলেছিলাম, পালাব এই ঘামের দেশ ছেড়ে। তারপর থেকেই বাবার পান বিড়ির দোকানটাকে বুড়ো আঙুল দেখানোর প্ল্যান। বাবা যদিও বেশি কিছু বলার সুযোগ পায়নি, তবে মা পেয়েছে। কিন্তু মা আবার কোনওদিনও কিছু বললই না। আফশোসটা হুট করে রাগ হয়ে গেল। ‘কেন কিছু বলল না মা?’ বহুদিন পর আবার আবার সেই, মায়ের উপর রাগ।
আবারও ফোন করলাম। কিন্তু সেই এক। তাহলে কী মায়ের? মা বরাবর চুপচাপ। টাকা পাঠালে উদাস হয়ে বলে, ‘কী হবে টাকা নিয়ে?’ তবে শরীর খারাপ হলে আমি যখন তেড়েমেড়ে বলেছি, ‘একটু ভালো করে খাও! একাদশী-অমাবস্যা করলে কি আর বাবা ফিরে আসবে?’ তখন কিছুটা জোর গলায় বলেছে, ‘একার জন্য আর রাঁধতে ভালো লাগে না রে।’ মায়ের ভিতরটা হয়তো দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে শুধু আমাকে একবার বলতে যে, ‘বাবু, ফিরে আয়।’ কিন্তু বলেনি। আমিও সুযোগ যে খুব একটা কম পেয়েছি তা নয়! পঁচিশে ডিসেম্বরের লম্বা ছুটিতে কিংবা অ্যানুয়াল লিভে বছরে অন্তত একবার তো যেতেই পারতাম। কিন্তু বারবার সেই বিশাল অঙ্কের টিকিট অথবা ফিরলে একেবারেই ফিরে যাব, দড়ি বেঁধে আটকে দিয়েছে। ‘ছিঃ’ কে যেন কানের পাশে বলল। ভীষণ যেতে ইচ্ছে করছিল! কিন্তু আমার ইচ্ছেগুলো বরাবরই এইরকম। বেইমান। 
বিগত এক মাস ধরে গোটা বিশ্বে লক-ডাউন। ভারতে তো বাড়ি থেকে পাড়ার দোকানে যেতেও হাজার বিধি নিষেধ। সেখানে এই ইংল্যান্ড থেকে জল, স্থল পার করে ভারতবর্ষ! ভিতরটা ভারহীন লাগছিল। মোবাইলে আবার দেখলাম ভিডিওটা। একটা জেসিবি, প্যাকেটে মোড়া দেহটাকে পুঁতে দিচ্ছে একটা মাঠে। খুব ভালো করে দেখলাম। জায়গাটা ভীষণ চেনা। গ্রামের স্কুল-বাড়ির পিছনের ধু-ধু প্রান্তরটাই। দূরের সারি সারি গাছের জঙ্গলটাও বেশ স্পষ্ট। মুখাগ্নি করার মাঠ। গ্রামে সেভাবে কেউ চেনে না আমাকে। বাবা মারা যাবার পরপরই মফস্‌স঩লের বাড়িটা বেচে গ্রামেই বাড়ি তৈরি করেছে মা। বড্ড জেদ। বলে, ‘তোর বাবাও নেই, তোকে পড়ানোর ভালো স্কুলেরও আর দরকার নেই। কেন থাকব বলত?’ আমিও কতবার বলেছি আসতে। কিন্তু আসেনি। কিছু করতে না পারার রাগটা আস্তে আস্তে মাথায় উঠছিল। আবার ফোন করলাম। কিন্তু কোনও লাভ হল না। অবশেষে, সুমনকে কল করলাম। সুমন গ্রামেরই ছেলে। মুদির দোকান আছে। গ্রামের মোটামুটি সবাইকেই চেনে। কিন্তু সুমনও তুলল না। ভিতরটা হালকা হয়ে আসছিল। ভিডিওটাতে আমি স্পষ্ট শুনেছি, ‘একাকী মহিলার মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য। করোনা সন্দেহে প্রশাসনের তৎপরতায় জেসিবি করে দেহ কবর দিল গ্রামবাসী।’ ‘মরার সময় মুখে জল দিবি তো?’ ভাবতেই বুকটা ছ্যাঁত করে উঠল। আমি আরও আরও নেট ঘাঁটলাম কিন্তু শুধু ওইটুকুই। আর কোনও খবরই নেই। তাহলে কী? রু
মের জানলাটা তুলে দিলাম। গরমটা আর সহ্য হচ্ছিল না। এর থেকে আমার ভারতের ভর দুপুর অনেক অনেক স্বস্তির। পাগলের মতো মায়ের মোবাইল নম্বরটার নীচের সবুজ বটনটাকে টিপেই গেলাম। কিন্তু সেই এক! মোবাইলটা বিছানায় ছুঁড়ে মুখটা বের করে দিলাম জানলার বাইরে। একটা স্থির ঠান্ডা গলাটাকে আস্তে আস্তে চেপে ধরছিল। শ্বাস নিতে কষ্ট হলেও আমার বেশ লাগছিল। আর ঠিক তক্ষুনি বেজে উঠল ফোনটা। মায়ের নম্বর! ওয়েব কল করাটা মাকে বেশ ভালোই শিখিয়ে দিয়েছে সুমন। সেই সঙ্গে জিএমটি আর ডে-লাইট সেভিংস এর ফান্ডাটাও। আমি ব্যস্ততার সঙ্গে ফোনটা ধরলেও কিছু শুনতেই পেলাম না। পকেটে থাকা মোবাইল থেকে ভুল করে কল চলে গেলে যেমনটা হয়, ঠিক তেমনটা। হুট করে চোখ গেল ঘড়িতে, ভোর পাঁচটা। এখানকার সময়ের হিসাব মা বেশ ভালোই জানে। তাছাড়া এই অসময়ে কখনও ফোনও করেনি মা! তাহলে কী গ্রামের কেউ? ফিরতি পথে? অস্থিরতায় দরদর করে ঘেমে গেল গোটা শরীর। আবার পাগলের মতো মায়ের মোবাইল নম্বরের নীচের সবুজ বটন। কিন্তু সে-ই এক! আধ-খোলা জানলায় মুখটা বের করে দাঁড়ালাম আবার। ভোরের সূর্য তখন প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। একটা লালচে আলো চারিপাশটাকে ঘিরে ধরছে। সেই সঙ্গে আমাকেও যেন ঘিরে ধরছে একটা ভয়। ঘামে ভিজে যাওয়ার ভয়। ঠিক তক্ষুনি আবার বেজে উঠল ফোনটা। আমি আর নম্বরও দেখিনি। উন্মাদের মতো বলে উঠেছিলাম , ‘মা’। ওপার থেকে শুধু একটাই কথা, ‘কিরে বাবু! ঘুম আসছে না?’ আমি কী শুনেছিলাম জানি না, তবে রাগে তখন আমার মেজাজ তুঙ্গে। 
‘একটা ফোনও করতে পারো না?’ 
‘করলাম তো কালকেই! কী হয়েছে বাবু?’
‘তোমার ফোন লাগছিল না কেন?’
‘চার্জ শেষ হয়ে গিয়েছিল ফোনের। কারেন্ট নাই, কাল থেকে। এই এল।’
‘মা খুব গরম, কষ্ট হচ্ছে।’ কথাগুলো নিজে থেকেই মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল। ‘ঘেমে গেছিস নাকি? কারেন্ট নাই?’ মায়ের পরের কথাগুলো আমাকে নিজে থেকেই বলিয়ে নিল,‘মা বাড়ি যাব।’ আর বাড়ির কথা বলতেই মা যেন প্রাণ ফিরে পেল। 
‘চলে আয়! কতদিন তোকে সামনে থেকে দেখিনি। পাঁজরের হাড়গুলো বেরিয়ে গেছে এতদিনে!’
‘কিন্তু এখন তো সব বন্ধ। লকডাউন,’ বলতে বলতেই, ঘামে ভিজে একসার আমি। এই ঘামের থেকেই তো পালিয়ে বাঁচতে এসেছিলাম! নিজের উপর ভীষণ হাসি পাচ্ছিল। তারপর থেকে যতদিন লকডাউন চলেছে, যতদিন দেশে ফিরতে পারিনি, ততদিন আমি রোজ শ্বাস-প্রশ্বাস গুনেছি। যাতে আর ঘামতে না হয়।
অলঙ্করণ: সোমনাথ পাল
01st  August, 2021
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। বিশদ

31st  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। বিশদ

24th  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
গুরুদ্বার সিস গঞ্জ

দিল্লি দেখতে এসে চাঁদনী চক যাওয়া হবে না? তা কীভাবে হয়? অতএব দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ভ্রমণস্থল চাঁদনী চক।
বিশদ

17th  March, 2024
দেখা যায় না, শোনা যায় পুতুল বাড়ি
 

আকর্ষণ, বিতর্ক, কৌতূহলের চিরন্তন কেন্দ্রবিন্দু অলৌকিক দুনিয়া। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দুই শিবিরেরই এব্যাপারে আগ্রহ ষোলোআনা। তাই ভৌতিক সাহিত্য হোক বা সিনেমা, বাজারে কাটতি বরাবরই বেশি।
বিশদ

17th  March, 2024
প্রস্থান
দীপারুণ ভট্টাচার্য

শববাহী গাড়িটা গেটের ভিতর ঢুকতেই অরুণবাবু চারপাশটা দেখলেন। বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে তার ছেলে নীলাঞ্জন আর বউমা সুতপা। নীলাঞ্জন বড় চাকরি করে। সে ফোন পেয়েছিল অফিসে যাওয়ার পর। সুতপাকে বলেছিল, ‘বেরতে একটু সময় লাগবে। বিশদ

10th  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: জাহান আরার সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ পরব চলছে। আগ্রা জুড়ে উৎসবের উচ্ছ্বাস। এখন ১৬৪৪। বাদশাহ শাহজাহানের আগ্রা দুর্গে সবথেকে বেশি উজ্জ্বল আয়োজন। স্বাভাবিক। প্রতি বছর নভরোজের সময় আগ্রা দুর্গ এভাবেই সেজে ওঠে। সম্রাটের পুত্রকন্যারা এই সময়টায় পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন। বিশদ

10th  March, 2024
অতীতের আয়না: বাঙালির সার্কাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

১৯২০ সালের ২০ মে। নিজের ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নিয়ে সিঙ্গাপুরে ট্যুরে গিয়ে জন্ডিস হয়ে মারা গেলেন প্রিয়নাথ বসু। শুধু উপমহাদেশের সার্কাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও উৎকর্ষের নতুন মানদণ্ড ছাড়াও, বিনোদন শিল্প হিসেবে সার্কাসকে দৃঢ় ভিত দিয়ে গেলেন তিনি। বিশদ

10th  March, 2024
ভোগ
শুচিস্মিতা  দেব

পুতুলকে সদ্যই নিমতিতা থেকে ‘রায়চৌধুরী ভিলা’তে এনেছে তার পিসি সবিতা। সবিতা এই পরিবারের বহু দিনের থাকা-খাওয়ার মাসি। টিভি সিরিয়ালের মতো প্রকাণ্ড বাড়িখানা দেখে পেরথমেই ভেবলেছে পুতুল। ফুটবল মাঠের মতো বৈঠকখানা। বিশদ

03rd  March, 2024
রুপোর চাকু

আলমারিটা খুলতেই দাদার চোখ চলে গিয়েছিল। উপরের তাকে জামা কাপড়ের পাশে খালি জায়গায় শোয়ানো ছিল। বাজপাখির চোখ দাদার।
বিশদ

25th  February, 2024
অপরাজিতা
মীনাক্ষী সিংহ

জুনিয়র ডাক্তার সুমন সান্যাল জানিয়ে গেল অপারেশন থিয়েটার রেডি, এবার ডাঃ মিত্রকে যেতে হবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠলেন সার্জেন মাধবিকা মিত্র। আজ একটা ক্রিটিক্যাল অপারেশন। বছর সতেরোর মেয়েটির মায়ের মুখ মনে পড়ল মাধবিকার। বিশদ

18th  February, 2024
একনজরে
বৃহস্পতিবার রাতে উল্লাসে তৃণমূলের প্রতীকে জেতা সাংসদ সুনীল মণ্ডলের উল্লাসের বাড়িতে কেক কাটলেন বিজেপির দিলীপ ঘোষ। আবার শুক্রবার সকালে প্রাতঃভ্রমণ করার সময় বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলেন বর্ধমান শহরের তৃণমূল কাউন্সিলার অজিত খাঁ ...

ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার পক্ষে সওয়াল করলেন পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মারিয়ম নওয়াজ। শুক্রবার কর্তারপুর সাহিব গুরুদ্বারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ...

ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা তৃণমূলের ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক সওকত মোল্লার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ল ভাঙড়ে। এই নিয়ে শোরগোল পড়েছে এলাকায়। কোথাও তাঁকে অশান্তির কারিগর তকমা দেওয়া হয়েছে, কোথাও আবার ঘুরিয়ে বহিরাগত বলে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। ...

ধুবুড়ির কালবেলায় একটি ছোট ক্যাম্প অফিসে ডাঁই করে রাখা অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট বা এইআইইউডিএফের ফ্ল্যাগ। এত ফ্ল্যাগ কবে লাগাবেন? ক্যাম্পের কর্মী আনিমুল হক ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৫২৬: পানিপথের যুদ্ধে মোগলরা আফগানদের পরাজিত করে
১৭৭০: আজকের দিনে ক্যাপ্টেন কুক অস্ট্রেলিয়া আবিষ্কার করেন
১৮৪৪: বাংলার নবজাগরণের অন্যতম ব্যক্তিত্ব দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যাযয়ের জন্ম
১৮৭৯: ডিরোজিওর অন্যতম শিষ্য, কলকাতার প্রথম শেরিফ রাজা দিগম্বর মিত্র প্রয়াত হন 
১৮৮৯: ফরাসী বিপ্লবের শতবর্ষ পূর্তিতে স্মারকস্তম্ভ হিসেবে ৯৮৫ ফুট উঁচু আইফেল টাওয়ার নির্মাণের কাজ শেষ হয়
১৮৮৯: জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাডলফ হিটলারের জন্ম
১৯০৫: অগ্নিযুগের বিপ্লবী, সুভাষচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ অনুগামী জ্যোতিষচন্দ্র জোয়ারদারের জন্ম
১৯১২: আইরিশ লেখক ব্রাম স্টোকারের মৃত্যু
১৯১৮: বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ এবং বাংলা ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা শওকত আলীর জন্ম
১৯২০: ভারতের কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী যূথিকা রায়ের জন্ম 
১৯৪৬: সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়
১৯৪৮: বলিউড অভিনেত্রী ববিতার জন্ম
১৯৫০: রাজনীতিক তথা অন্ধ্রপ্রদেশের ১৩তম মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডুর জন্ম
১৯৫২: বাংলা ভাষার সুরকার ও সঙ্গীতজ্ঞ সুধীরলাল চক্রবর্তীর মৃত্যু
১৯৬০: বংশীবাদক ও সুরকার পান্নালাল ঘোষের মৃত্যু
১৯৭২: চাঁদের মাটিতে নামল অ্যাপোলো ১৬
১৯৭২: বলিউড অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নির জন্ম
১৯৯৯: কলেরাডোর কলম্বাইন হাইস্কুলে ১৩ জনকে হত্যা করে আত্মহত্যা করল এরিক হ্যারিস এবং ডিলান কেবোল্ড
২০১৩: চীনের সিচুয়ান প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত ১৫০ 
২০১৯ : বাঙালি লোকসঙ্গীত শিল্পী ও লেখক অমর পালের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.১০ টাকা ৮৪.১৯ টাকা
পাউন্ড ১০২.৫৮ টাকা ১০৫.২২ টাকা
ইউরো ৮৭.৭৯ টাকা ৯০.২২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৪,১৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৪,৫০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭০,৮৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৩,৪০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৩,৫০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৭ বৈশাখ, ১৪৩১, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪। দ্বাদশী ৪৩/৩৫ রাত্রি ১০/৪২। পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র ২২/০ দিবা ২/৪। সূর্যোদয় ৫/১৬/৬, সূর্যাস্ত ৫/৫৫/৫। অমৃতযোগ দিবা ৯/৮ গতে ১২/৫১ মধ্যে। রাত্রি ৮/১১ গতে ১০/২৭ মধ্যে পুনঃ ১১/৫৯ গতে ১/২৯ মধ্যে পুনঃ ২/১৪ গতে ৩/৪৪ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫১ মধ্যে পুনঃ ১/১০ গতে ২/৪৫ মধ্যে পুনঃ ৪/২০ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ৭/২০ মধ্যে পুনঃ ৩/৫১ গতে উদয়াবধি।
৭ বৈশাখ, ১৪৩১, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪। দ্বাদশী রাত্রি ১০/৫৮। পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র দিবা ২/৪৩। সূর্যোদয় ৫/১৬, সূর্যাস্ত ৫/৫৬। অমৃতযোগ দিবা ৯/২২ গতে ১২/৫১ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/১৬ গতে ১০/২৭ মধ্যে ও ১১/৫৬ গতে ১/২২ মধ্যে ও ২/৩ গতে ৩/৩৩ মধ্যে। কালবেলা ৬/৫১ মধ্যে ও ১/১১ গতে ২/৪৬ মধ্যে ও ৪/২১ গতে ৫/৫৬ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/২১ মধ্যে ও ৩/৫১ গতে ৫/১৬ মধ্যে। 
১০ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
উপাচার্য: আজ বৈঠক রাজভবনে
উপাচার্য নিয়োগ ইস্যুতে ফের বিরোধ বাধল শিক্ষামন্ত্রী এবং রাজ্যপালের মধ্যে। ...বিশদ

09:28:09 AM

১১২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারে যাদবপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ

09:13:00 AM

আপনার আজকের দিনটি
মেষ: নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। বৃষ: নতুন ...বিশদ

08:43:08 AM

ইতিহাসে আজকের দিনে
১৫২৬: পানিপথের যুদ্ধে মোগলরা আফগানদের পরাজিত করে ১৭৭০: আজকের দিনে ক্যাপ্টেন কুক অস্ট্রেলিয়া ...বিশদ

08:33:48 AM

বাসুকি নাগের সন্ধান!
পৌরাণিক কাহিনি কি তবে সত্যি হল? সমুদ্রমন্থনের সময় সাহায্য নেওয়া ...বিশদ

08:05:00 AM

আইপিএল: চেন্নাইকে ৮ উইকেটে হারাল লখনউ

19-04-2024 - 11:30:00 PM