Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

পিশাচ সাধু
পর্ব  ১০

জয়ন্ত দে: তেত্রিশ দিন হয়ে গেল অথচ সহজের জীবনে ক্যাপ্টেনের করা ভবিষ্যদ্বাণী মিলল না। পরমেশ্বরের কথা শুনে ক্যাপ্টেনকে ফোন করে সহজ বলে দিল, ‘আপনি ফ্লপ! আপনার ভবিষ্যদ্বাণী ফ্লপ!’ সেদিন রাতেই বাড়ি ফিরে বাবার কাছ থেকে সহজ জানতে পারল, তার নামে একটি অফিসিয়াল চিঠি এসেছে। তারপর...
  এই ঘরের অনেকটা জায়গা মাটির। খুব সুন্দর করে জায়গাটা নিকিয়ে রাখে বঁড়শি। যাবতীয় পুজোআচ্চার আয়োজন এখানেই হয়।  দু’হাত জায়গা জুড়ে বালির বিছানা করা। তারই এক ধারে হয় যজ্ঞের আয়োজন। বঁড়শি দেখল তার স্বামী সেই মাটির জায়গায় লম্বা হয়ে শুয়ে আছে। একটু আগে পাশের গোলা থেকে খবর দিল ফোন আছে—। ফোন ধরে এসেই মানুষটা চুপচাপ শুয়ে পড়লেন। বঁড়শি এসে বসল ওঁর মাথার কাছে। বলল, ‘কী হয়েছে?’
মানুষটা চুপ করে থাকলেন। বঁড়শি আবার বলল, ‘ও ক্যাপ্টেন কী হয়েছে?’
বঁড়শির মুখে ‘ক্যাপ্টেন’ শুনে মানুষটা চোখ চেয়ে তাকালেন। ‘তুই আবার আমাকে ক্যাপ্টেন বলছিস কেন?’ 
এক-একজন মানুষ থাকে যাদের অভিধানে বিরক্ত শব্দটা থাকে না। সেই জায়গায় থাকে রাগ। বঁড়শি জানে এই মানুষটাও সেই গোত্রের। পছন্দ না হলেই রেগে যান। নাহলে সব কিছু ঠিক আছে। আজ মানুষটা যেন বিরক্ত হলেন। চোখে আগুন নেই। কেমন যেন একটা ভাব! বললেন, ‘ক্যাপ্টেন বলে ওই লুচ্চা লাফেঙ্গারা, তুই কেন ক্যাপ্টেন বলবি?’
বঁড়শি ফিক করে হাসল। 
খুব ছোট ছোট দাঁত বঁড়শির। হাসলে নীচের পাটির দাঁত দেখা যায় না। পাতলা ঠোঁট। কিন্তু ঠোঁট আর নাকের গঠন একটু ভালো করে দেখলেই বোঝা যায়, এ মেয়ের দাপট আছে। কথা বলার আগে-পরে ঠোঁট নাক সবসময় পরস্পরকে ঠেলা মারছে। 
‘কেন আমি ভালো নাকি? আমিও তো লুচ্চা!’ বঁড়শি শুধু কথা বলল না, এটুকু কথায় এমন ঠোঁট মোচড়াল!
মানুষটা অদ্ভুত চোখে তার দিকে তাকালেন। বললেন, ‘না, তুই ক্যাপ্টেন বলবি না। আমি তোর ক্যাপ্টেন নই, আমি তোর বর।’
বঁড়শি বরের মাথায় হাত বোলাল, বলল, ‘আমার সাধু!’
‘পিশাচ সাধু!’
‘ওই আপনার এককথা। পিশাচ শুনলেই আমার গায়ের মধ্যে কেমন রি রি করে ওঠে—।’
সাধু একটা হাত বাড়িয়ে মাথার পাশে বসে থাকা বঁড়শির কোমর জড়িয়ে ধরেন আলতো করে। এত সরু কোমর সাধুর একহাতের পাকেই পুরোটা চলে আসে। তিনি বলেন, ‘কোন গা— আমাকে দেখা, দেখাস না তো কখনও!’
‘উহু! খুব শখ। বিষ নেই কুলোপনা চক্কর!’ সাধুর হাতটা নিয়ে ছুঁড়ে দেয় বঁড়শি। ‘হঠাৎ ফোন ধরে এসে আছাড় খেয়ে শুয়ে পড়লেন কেন? কে ফোন করেছিল বলুন আমাকে, দেখি সে কে?’
‘পিশাচ সাধুকে কে ফোন করতে পারে বল?’ ম্লান মুখে হাসলেন তিনি, ‘পিশাচকে ফোন করবে ভূত প্রেত পেতনি শাকচুন্নি!’
‘শুনুন ভূত প্রেত ফোন করুক দুঃখ নেই, কিন্তু কোনও পেতনি শাকচুন্নি এদিকে তাকালে তার চোখ গেলে দেব। এবার বলুন কে ফোন করেছিল, শঙ্করবাবু নাকি?’
‘না।’
‘তবে?’ বঁড়শি ছাড়ার পাত্রী নয়। তার দু’চোখ এখন স্থির হয়ে— ভাবছে। ঠোঁট আর নাকে চিন্তার রেশ। ফুলে উঠছে, কাঁপছে।
পিশাচ সাধু চুপ করে থাকেন। তারপর আক্ষেপের সুরে বলেন ‘পিশাচ! পিশাচ! ভালো কথা মেলে না। মিলবেও না। অথচ খারাপ কথাগুলো টপাটপ মিলে যায়। একটাও ভালো কথা কি আমি বলতে পারব না কোনওদিন। শালা বলে আমার পাওয়ার নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পাওয়ার ছিলই না কোনওদিন, নষ্ট কী হবে? ঢপ! ঢপ! ঢপ দিলেই মিলে যায়, আমি সাধু! আমি পিশাচ সাধু!’
বঁড়শি ঠোঁট টেপে, ‘অত পিশাচ পিশাচ করবেন না। খারাপ কথা বলেন কেন? আপনার আগের বউগুলো বড্ড ফালতু ছিল। তারা আপনাকে একদম গাইড করেনি। আপনার জীবনে আমি যদি আগে আসতাম— আপনাকে দিয়ে ভালো ভালো কথা বলাতাম। খারাপ কথা বলতেই দিতাম না। খারাপ কথা বলেন বলেই আপনার নিজেকে পিশাচ পিশাচ লাগে। পচা দুর্গন্ধ টের পান! কই আমার তো আপনাকে পিশাচ লাগে না, সাধুই লাগে। কারণ আপনার সাহস নেই আমাকে খারাপ কথা বলার। জানেন, বঁড়শিকে একটা খারাপ কথা বললে সে ধুরধুরি নেড়ে দেবে। বঁড়শি যে সে মেয়ে নয়! সে ফোঁস করতে জানে।’
‘তার ছোবলও আছে।’ পিশাচ সাধু বিড়বিড় করেন। ‘হ্যাঁ, সে ছোবলে বিষও আছে! এবার ঝেড়ে কাসুন কে ফোন করল?’
‘বললাম তো ভূত প্রেত!’
‘ওই ছেলেটা নচে? নচে কি অপঘাতে মরল?’
‘নচে কেন অপঘাতে মরবে?’
‘কেন মরবে না? সেদিন তো গলাবাজি করে বলে এলেন— তুই অপঘাতে মরবি। বেচারা আমাদের যত্ন করে মাছ, মাংস খাওয়াল। আর আপনি তাকেই কি না কালো বিল্লি দিয়ে কেটে এলেন! তবে কি ওই ছেলেটা— যার হাতে তেত্রিশদিনের মাদুল কবজ বেঁধে দিয়ে এলেন? বলে এলেন— তোর ভাগ্য খুলে যাবে? তার তেত্রিশ দিন কি হয়ে গেল? ফক্কা! মেলেনি বুঝি!’
পিশাচ সাধু চকিতে বঁড়শির দিকে তাকাল। এ মেয়ে সাধারণ নয়! ঠোঁট কেন আলটাগরাতেও নয়, এ মেয়ে তো বুকের ভেতর বঁড়শি বিঁধিয়ে ফুসফুস থেকে হাওয়ামাখা কথা টেনে আনে। ঠিক ধরে ফেলল কথাটা। পিশাচ সাধু একটু নড়ে উঠলেন।
বঁড়শি বলল, ‘ফোন করে ডেকে সেই সংবাদটাই দিল— ক্যাপ্টেন তেত্রিশ দিন হয়ে গিয়েছে, তোমার কথা মেলেনি। তুমি একটা ঢপ। ব্যস, তাতেই আপনি মুঝড়ে ঩গিয়ে যজ্ঞের মাটিতে এসে পড়েছেন। তাই তো! ভালো কথা বলেছেন— মেলেনি। এই দুঃখ! আপনার খারাপ কথা মিলে যায়, ভালো কথা মেলে না।’
পিশাচ সাধু চুপ করে বঁড়শিকে দেখছিলেন। তার উনিশ মাসের বিয়ে করা বউ। তার ছিয়াত্তর, বঁড়শির ছাব্বিশ! সে তো চায়নি এই মেয়েকে বিয়ে করতে। জুটিয়েছিলেন যেমন, ভাগানোর জন্যও অনেক কসরত করেছেন। এ মেয়ে এমন গলা জড়িয়ে ধরে যে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। তবু ছাড়ানো গেল না। কম ঝটকা তো দিলেন না।
দেখা হয়েছিল কালীকঙ্কালী তলায় যোগীনবাবার আশ্রমে। রাতে ঘুমের মধ্যে যোগীনবাবা মরল। সে এক হইহই ব্যাপার। সাতসকালে ‘বাবা’ ‘বাবা’ করে এক ভক্তরা ডাকতে এসে দেখল, যোগীনবাবা মরে কাঠ। মুখের কাছে এক কলসি বমি। নিজের ঘরে বমি করে মরেছে। বড্ড কষ্ট পেয়েছ গো! সারারাত ধরে কাতরেছে হয়তো, অথচ কেউ জানতে পারেনি। সন্ধেবেলা গাঁজা টেনেছিল একসঙ্গে,  কত কথা বলল। অথচ ভোর না হতে হতেই মরে কাঠ! রাতে প্রসাদ নিল, তারপরেই নিশ্চয়ই অঘটনটি ঘটেছে। 
সাধু সন্ন্যাসীরা মরলে ডেথ সার্টিফিকেট লাগে না। কিন্তু এক্ষেত্রে কয়েকজন ভক্ত বললে, উহুঁ বাবাকে কেউ বিষ দিয়েছে। বিষ দিয়ে মেরেছে। ডাকো ডাক্তার। ডাক্তার এসে বলুক যোগীনবাবার মৃত্যু স্বাভাবিক। 
কিন্তু ডাক্তার এসে ঘোরতর সন্দেহ প্রকাশ করল। বলল, স্বাভাবিক তো ঠেকছে না, বরং বড্ড অস্বাভাবিক। পোস্টমর্টেম করাতে হবে। পুলিস কেস!
কয়েকজন ভক্ত আপত্তি তুলল, না, না, এটা পাপ হবে। বাবাকে কেন কাটা ছেঁড়া করবে ডোমেরা? কয়েকজন বলল, সন্দেহ যখন আছে, তখন দেখে নেওয়া দরকার, কে এই কাজটা করল? 
সারা আশ্রম জুড়ে হইচই। আকচাআকচি। তবে বেশিরভাগ ভক্তই মনে করল, এটা ঠিক নয়, সন্দেহের বশে বাবার দেহ তুলে নিয়ে গিয়ে কুকুর ছাগলের মতো কাটাকাটি করলে মারাত্মক কাণ্ড হবে। প্রলয় ঘটে যাবে। আর যোগীনবাবাকে কে বিষ দেবে? কার এত সাহস যে, বাবাকে বিষ দেবে, আর বাবা টেরটি পাবেন না, খেয়ে নেবেন! না এ হতেই পারে না। 
কেউ কেউ আবার প্রমাদ গুনলেন বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটলে পুলিস কাউকে ছাড়বে না। সবাইকে আটকে রেখে দেবে এই আশ্রমে, টানাটানি করবে। আর বিষ প্রয়োগের কথা বাইরে ছড়ালে কেউ কোনও দিন বাবার আশ্রমে আসবে না। এই আশ্রমে ঘুঘু চরবে। বেশিরভাগ ভক্তই বেঁকে বসল, বাবার দেহ তারা ছাড়বে না, পুলিস এলে রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে যাবে। রটে গেল, বাবা স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁর দেহলীলা সঙ্গ হওয়ার লগ্ন আসন্ন। বাবা জানতেন— তিনি চলে যাবেন। তাই অনেক কাছের মানুষকে ডেকেছিলেন, ওই তো বিরাজীবাবাকে ডেকেছেন। ওই তো কাছের মানুষ পিশাচসিদ্ধ মিলিটারি ক্যাপ্টেন সাধু এসেছেন। এঁরা কেন আসবেন?
পিশাচ সাধু অল্প বয়সে মিলিটারিতে চাকরি করতেন। সাধু মহলে তাঁকে অনেকেই ক্যাপ্টেন সাধু বলেন। তিনি নিজেকে যতই পিশাচ সাধু বলুন, সাধু মহলে তিনি ক্যাপ্টেন সাধু। যোগীনবাবা কেন ডেকে এনেছিলেন ক্যাপ্টেন সাধুকে। এই ডেকে আনার মানে শেষ সময়ে তাঁর সঙ্গ পাবেন বলে। 
শেষ পর্যন্ত সাধুদের ভক্তদের কথাই রাখা হয়। যোগীনবাবার দেহ আর পোস্টমর্টেম করা হল না। আশ্রম প্রাঙ্গণেই তাঁকে সমাধি দেওয়া হয়। পুলিস প্রশাসনও শান্তির নিঃশ্বাস ফেলে। সেখানে আগেই ক্যাপ্টেনের সঙ্গে আলাপ হয় বঁড়শির। বঁড়শির বাবাও একজন সাধু ছিলেন। দেহ রেখেছেন বেশ কয়েক বছর আগে। মায়ের কাছে থাকত বঁড়শি। মা মরল। তারপর সে চলে এসেছিল যোগীনবাবার কাছে। কিন্তু যোগীনবাবার আকস্মাৎ মৃত্যুতে বঁড়শি যখন ভাবছিল, সে কোথায় যাবে, তখনই ক্যাপ্টেন তাকে বলে— আমার সঙ্গে চ।
‘চ মানে? আপনার কি আশ্রম আছে?’
‘আশ্রম টাশ্রম নেই। আমি গৃহী। ঘরে থাকি।’
‘তাহলে আমি গিয়ে কী করব?’
‘আমার পুজোযজ্ঞের আয়োজন করে দিবি।’
‘আপনি তো গৃহী বললেন— আপনার বউ জোগাড় দেয় না?’
‘বউ থাকে ছেলেদের সঙ্গে। আমি একাই থাকি। যাবি তো চ। এখানে কী করবি? এখানে এখন খুব গোলমেলে কাণ্ড ঘটবে!’
একা মানুষ, বলছে যখন চলেই যাবে, বঁড়শি দ্বিধায় ভুগছিল। সে সাধু ছাড়া এ-জীবনে কারও সঙ্গে থাকবে না। আর এই লোকটাকে যোগীনবাবা বেশ খাতির করছিলেন। ভক্তদের বলছিলেন, এ লোক মিলিটারি ক্যাপ্টেন ছিল। মাথার ভূত নড়তে সাধু হয়েছেন গো। এ-জীবন বেছে নিয়েছেন। গৃহী সাধু। গৃহে থাকে সংসারধর্ম করেন। কিন্তু এ মস্ত মানুষ। বেশ কিছু চমৎকারী আছে ওঁর। পিশাচ সিদ্ধ! যোগযাগে এ ভয়ঙ্কর। তোরা এই বাবাকে বেঁধে রেখে দে এখানে, যেতে দিবি নে। এ আমার অনেক দিনের বন্ধুলোক! একে ডেকেছি কয়েদ করব বলে। তোরা সবাই বল— বাবা এখানে থাকো সাধন পূজন করো। ধ্যান জপ করো। এ আশ্রম তোমার। তোমার শ্রীচরণে আমাদের ঠাঁই দাও।
যোগীনবাবার কথা শুনে বঁড়শিও খুব খাতির করছিল পিশাচসাধুকে। আশ্রমে থাকা দিনগুলোয় সেবা করছিল। মানুষটা সারাদিন গুম মেরে বসে থাকেন। বড় একটা কথাটথা বলেন না। উচ্চস্বরে সাধনভজনও করেন না। বই পড়েন। হাঁ করে মানুষ দেখেন। তাকেও দেখে হাঁ করে। যেন গিলে খাবে।
বঁড়শি বলেছিল, ‘আগে এয়েছেন এখানে?’
‘আগে তোকে তো দেখিনি।’
‘আমি এই ছ’মাস এসেছি?’
‘কেন এসেছিস?’
‘বাড়িতে ভালো লাগে না। আমি বাবার পথে যাব, সংসার জীবনযাপন করব না। সারাজীবন সাধু সেবা করে কাটাব। তাই এয়েছি।’
‘বেশ করেছিস। এসেছিস যখন থেকে যা।’
কিন্তু বঁড়শি থেকে যেতে পারল কই। বঁড়শি বুঝতে পারছিল, বাবা ছাড়া এই আশ্রমে এখন খেয়োখেয়ি শুরু হবে। কে দখল নেবে এই আশ্রম তা নিয়ে যুদ্ধ চলবে। মা মরতে এই আশ্রমে এসে উঠেছিল, এখন সে আশ্রয়টুকুও গেল। 
পথে আসতে আসতে শুনল, এই লোক গৃহী। কিন্তু গৃহী বলে গৃহী। চরম গৃহী। আগে তিন তিনখানা বিয়ে করেছেন। এক গণ্ডা বাচ্চার বাপ। বঁড়শির যোগীনবাবার কথা মনে পড়ছিল, তবে এ লোক সাধন করল কবে, আর সংসারই বা করল কবে?
এ লোককে শক্ত হাতে ধরতে হবে।
শক্ত হাতে ধরেছিল বঁড়শি। মাঝে মাঝে মনে হতো, এ সাধু কোথায়? এ তো মাতাল। মদ খেয়ে নেশা করে, গাঁজা টেনে নেশা করে, শরীরেও নেশা করে। কিন্তু লোকটার চমৎকারী আছে। ওর ঠোঁটে প্রথম যেদিন হাত দিল। হাত দিয়ে বলল— কী লাল টুকটুকে!
বঁড়শি আয়না দেখল— তার ঠোঁট তো এত লাল ছিল না কোনওদিন। লোকটার আঙুলে কি রং ছিল! সে রংই ধরল বঁড়শির মনে। নইলে যখন বলল, ‘পালা এখান থেকে।’ 
বঁড়শি বলল, ‘পালাব বলে এয়েছি নাকি?’
‘তবে বিয়ে কর আমাকে।’
বঁড়শি ঘাড় নাড়ল, রাজি!
‘দু-বউ এসে কিন্তু তোকে ঠ্যাঙাবে।’
‘আমি তোমার পেতনি আর শাকচুন্নির চোখ গেলে দেব। আসুক না এখানে।’
বঁড়শি বলল, ‘উঠুন মাটি ছেড়ে। না মিলুক, তবু ভালো ভালো কথাই বলুন।’
(চলবে) 
25th  April, 2021
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। বিশদ

31st  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। বিশদ

24th  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
গুরুদ্বার সিস গঞ্জ

দিল্লি দেখতে এসে চাঁদনী চক যাওয়া হবে না? তা কীভাবে হয়? অতএব দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ভ্রমণস্থল চাঁদনী চক।
বিশদ

17th  March, 2024
দেখা যায় না, শোনা যায় পুতুল বাড়ি
 

আকর্ষণ, বিতর্ক, কৌতূহলের চিরন্তন কেন্দ্রবিন্দু অলৌকিক দুনিয়া। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দুই শিবিরেরই এব্যাপারে আগ্রহ ষোলোআনা। তাই ভৌতিক সাহিত্য হোক বা সিনেমা, বাজারে কাটতি বরাবরই বেশি।
বিশদ

17th  March, 2024
প্রস্থান
দীপারুণ ভট্টাচার্য

শববাহী গাড়িটা গেটের ভিতর ঢুকতেই অরুণবাবু চারপাশটা দেখলেন। বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে তার ছেলে নীলাঞ্জন আর বউমা সুতপা। নীলাঞ্জন বড় চাকরি করে। সে ফোন পেয়েছিল অফিসে যাওয়ার পর। সুতপাকে বলেছিল, ‘বেরতে একটু সময় লাগবে। বিশদ

10th  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: জাহান আরার সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ পরব চলছে। আগ্রা জুড়ে উৎসবের উচ্ছ্বাস। এখন ১৬৪৪। বাদশাহ শাহজাহানের আগ্রা দুর্গে সবথেকে বেশি উজ্জ্বল আয়োজন। স্বাভাবিক। প্রতি বছর নভরোজের সময় আগ্রা দুর্গ এভাবেই সেজে ওঠে। সম্রাটের পুত্রকন্যারা এই সময়টায় পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন। বিশদ

10th  March, 2024
অতীতের আয়না: বাঙালির সার্কাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

১৯২০ সালের ২০ মে। নিজের ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নিয়ে সিঙ্গাপুরে ট্যুরে গিয়ে জন্ডিস হয়ে মারা গেলেন প্রিয়নাথ বসু। শুধু উপমহাদেশের সার্কাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও উৎকর্ষের নতুন মানদণ্ড ছাড়াও, বিনোদন শিল্প হিসেবে সার্কাসকে দৃঢ় ভিত দিয়ে গেলেন তিনি। বিশদ

10th  March, 2024
ভোগ
শুচিস্মিতা  দেব

পুতুলকে সদ্যই নিমতিতা থেকে ‘রায়চৌধুরী ভিলা’তে এনেছে তার পিসি সবিতা। সবিতা এই পরিবারের বহু দিনের থাকা-খাওয়ার মাসি। টিভি সিরিয়ালের মতো প্রকাণ্ড বাড়িখানা দেখে পেরথমেই ভেবলেছে পুতুল। ফুটবল মাঠের মতো বৈঠকখানা। বিশদ

03rd  March, 2024
রুপোর চাকু

আলমারিটা খুলতেই দাদার চোখ চলে গিয়েছিল। উপরের তাকে জামা কাপড়ের পাশে খালি জায়গায় শোয়ানো ছিল। বাজপাখির চোখ দাদার।
বিশদ

25th  February, 2024
অপরাজিতা
মীনাক্ষী সিংহ

জুনিয়র ডাক্তার সুমন সান্যাল জানিয়ে গেল অপারেশন থিয়েটার রেডি, এবার ডাঃ মিত্রকে যেতে হবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠলেন সার্জেন মাধবিকা মিত্র। আজ একটা ক্রিটিক্যাল অপারেশন। বছর সতেরোর মেয়েটির মায়ের মুখ মনে পড়ল মাধবিকার। বিশদ

18th  February, 2024
একনজরে
তীব্র দাবদাহের মধ্যে পানীয় জলের সংকট। শুক্রবার ক্ষোভে হরিরামপুর-ইটাহার রাজ্য সড়ক অবরোধ করলেন মহিলারা। হরিরামপুর থানার বিশাল ...

ধুবুড়ির কালবেলায় একটি ছোট ক্যাম্প অফিসে ডাঁই করে রাখা অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট বা এইআইইউডিএফের ফ্ল্যাগ। এত ফ্ল্যাগ কবে লাগাবেন? ক্যাম্পের কর্মী আনিমুল হক খানিক গম্ভীর গলায় বলে উঠলেন, ‘ওই ফ্ল্যাগ না লাগালেও আমাদের কিছু হবে না। ...

দুবাইয়ের বৃষ্টিতে ধুয়ে গেল কুস্তিগির দীপক পুনিয়া ও সুজিত কালকের প্যারিস ওলিম্পিকসের যোগ্যতা অর্জনের সুযোগ। কিরগিজস্থানে আয়োজিত এশিয়া কুস্তি ...

ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার পক্ষে সওয়াল করলেন পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মারিয়ম নওয়াজ। শুক্রবার কর্তারপুর সাহিব গুরুদ্বারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৫২৬: পানিপথের যুদ্ধে মোগলরা আফগানদের পরাজিত করে
১৭৭০: আজকের দিনে ক্যাপ্টেন কুক অস্ট্রেলিয়া আবিষ্কার করেন
১৮৪৪: বাংলার নবজাগরণের অন্যতম ব্যক্তিত্ব দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যাযয়ের জন্ম
১৮৭৯: ডিরোজিওর অন্যতম শিষ্য, কলকাতার প্রথম শেরিফ রাজা দিগম্বর মিত্র প্রয়াত হন 
১৮৮৯: ফরাসী বিপ্লবের শতবর্ষ পূর্তিতে স্মারকস্তম্ভ হিসেবে ৯৮৫ ফুট উঁচু আইফেল টাওয়ার নির্মাণের কাজ শেষ হয়
১৮৮৯: জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাডলফ হিটলারের জন্ম
১৯০৫: অগ্নিযুগের বিপ্লবী, সুভাষচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ অনুগামী জ্যোতিষচন্দ্র জোয়ারদারের জন্ম
১৯১২: আইরিশ লেখক ব্রাম স্টোকারের মৃত্যু
১৯১৮: বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ এবং বাংলা ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা শওকত আলীর জন্ম
১৯২০: ভারতের কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী যূথিকা রায়ের জন্ম 
১৯৪৬: সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়
১৯৪৮: বলিউড অভিনেত্রী ববিতার জন্ম
১৯৫০: রাজনীতিক তথা অন্ধ্রপ্রদেশের ১৩তম মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডুর জন্ম
১৯৫২: বাংলা ভাষার সুরকার ও সঙ্গীতজ্ঞ সুধীরলাল চক্রবর্তীর মৃত্যু
১৯৬০: বংশীবাদক ও সুরকার পান্নালাল ঘোষের মৃত্যু
১৯৭২: চাঁদের মাটিতে নামল অ্যাপোলো ১৬
১৯৭২: বলিউড অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নির জন্ম
১৯৯৯: কলেরাডোর কলম্বাইন হাইস্কুলে ১৩ জনকে হত্যা করে আত্মহত্যা করল এরিক হ্যারিস এবং ডিলান কেবোল্ড
২০১৩: চীনের সিচুয়ান প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত ১৫০ 
২০১৯ : বাঙালি লোকসঙ্গীত শিল্পী ও লেখক অমর পালের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.১০ টাকা ৮৪.১৯ টাকা
পাউন্ড ১০২.৫৮ টাকা ১০৫.২২ টাকা
ইউরো ৮৭.৭৯ টাকা ৯০.২২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৪,১৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৪,৫০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭০,৮৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৩,৪০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৩,৫০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৭ বৈশাখ, ১৪৩১, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪। দ্বাদশী ৪৩/৩৫ রাত্রি ১০/৪২। পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র ২২/০ দিবা ২/৪। সূর্যোদয় ৫/১৬/৬, সূর্যাস্ত ৫/৫৫/৫। অমৃতযোগ দিবা ৯/৮ গতে ১২/৫১ মধ্যে। রাত্রি ৮/১১ গতে ১০/২৭ মধ্যে পুনঃ ১১/৫৯ গতে ১/২৯ মধ্যে পুনঃ ২/১৪ গতে ৩/৪৪ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫১ মধ্যে পুনঃ ১/১০ গতে ২/৪৫ মধ্যে পুনঃ ৪/২০ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ৭/২০ মধ্যে পুনঃ ৩/৫১ গতে উদয়াবধি।
৭ বৈশাখ, ১৪৩১, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪। দ্বাদশী রাত্রি ১০/৫৮। পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র দিবা ২/৪৩। সূর্যোদয় ৫/১৬, সূর্যাস্ত ৫/৫৬। অমৃতযোগ দিবা ৯/২২ গতে ১২/৫১ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/১৬ গতে ১০/২৭ মধ্যে ও ১১/৫৬ গতে ১/২২ মধ্যে ও ২/৩ গতে ৩/৩৩ মধ্যে। কালবেলা ৬/৫১ মধ্যে ও ১/১১ গতে ২/৪৬ মধ্যে ও ৪/২১ গতে ৫/৫৬ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/২১ মধ্যে ও ৩/৫১ গতে ৫/১৬ মধ্যে। 
১০ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
দূরদর্শনের লোগোর গৈরীকিকরণ নিয়ে কী বললেন মমতা
দূরদর্শনের লোগোর গৈরীকিকরণ নিয়ে এবার  বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মমতা ...বিশদ

06:45:26 PM

বালুরঘাটের তৃণমূল প্রার্থী  বিপ্লব মিত্রর সমর্থনে রোড শো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

04:26:00 PM

এনআরসি-ক্যা-ইউসিসি না চাইলে বিজেপিতে একটাও ভোট নয়: মমতা

04:25:16 PM

একমাত্র তৃণমূল তখন অসমে গিয়েছিল, কিন্তু ওরা ঢুকতে দেয়নি: মমতা

04:24:33 PM

ভোট কেটে সুবিধা করতে এটা বিজেপির প্ল্যান: মমতা

04:12:44 PM

মোদি সরকার বাংলার টাকা বন্ধ করে দিল, কংগ্রেস-সিপিএম মুখ খোলেনি: মমতা

04:11:59 PM