পিশাচ সাধু
পর্ব ১০
জয়ন্ত দে: তেত্রিশ দিন হয়ে গেল অথচ সহজের জীবনে ক্যাপ্টেনের করা ভবিষ্যদ্বাণী মিলল না। পরমেশ্বরের কথা শুনে ক্যাপ্টেনকে ফোন করে সহজ বলে দিল, ‘আপনি ফ্লপ! আপনার ভবিষ্যদ্বাণী ফ্লপ!’ সেদিন রাতেই বাড়ি ফিরে বাবার কাছ থেকে সহজ জানতে পারল, তার নামে একটি অফিসিয়াল চিঠি এসেছে। তারপর...
এই ঘরের অনেকটা জায়গা মাটির। খুব সুন্দর করে জায়গাটা নিকিয়ে রাখে বঁড়শি। যাবতীয় পুজোআচ্চার আয়োজন এখানেই হয়। দু’হাত জায়গা জুড়ে বালির বিছানা করা। তারই এক ধারে হয় যজ্ঞের আয়োজন। বঁড়শি দেখল তার স্বামী সেই মাটির জায়গায় লম্বা হয়ে শুয়ে আছে। একটু আগে পাশের গোলা থেকে খবর দিল ফোন আছে—। ফোন ধরে এসেই মানুষটা চুপচাপ শুয়ে পড়লেন। বঁড়শি এসে বসল ওঁর মাথার কাছে। বলল, ‘কী হয়েছে?’
মানুষটা চুপ করে থাকলেন। বঁড়শি আবার বলল, ‘ও ক্যাপ্টেন কী হয়েছে?’
বঁড়শির মুখে ‘ক্যাপ্টেন’ শুনে মানুষটা চোখ চেয়ে তাকালেন। ‘তুই আবার আমাকে ক্যাপ্টেন বলছিস কেন?’
এক-একজন মানুষ থাকে যাদের অভিধানে বিরক্ত শব্দটা থাকে না। সেই জায়গায় থাকে রাগ। বঁড়শি জানে এই মানুষটাও সেই গোত্রের। পছন্দ না হলেই রেগে যান। নাহলে সব কিছু ঠিক আছে। আজ মানুষটা যেন বিরক্ত হলেন। চোখে আগুন নেই। কেমন যেন একটা ভাব! বললেন, ‘ক্যাপ্টেন বলে ওই লুচ্চা লাফেঙ্গারা, তুই কেন ক্যাপ্টেন বলবি?’
বঁড়শি ফিক করে হাসল।
খুব ছোট ছোট দাঁত বঁড়শির। হাসলে নীচের পাটির দাঁত দেখা যায় না। পাতলা ঠোঁট। কিন্তু ঠোঁট আর নাকের গঠন একটু ভালো করে দেখলেই বোঝা যায়, এ মেয়ের দাপট আছে। কথা বলার আগে-পরে ঠোঁট নাক সবসময় পরস্পরকে ঠেলা মারছে।
‘কেন আমি ভালো নাকি? আমিও তো লুচ্চা!’ বঁড়শি শুধু কথা বলল না, এটুকু কথায় এমন ঠোঁট মোচড়াল!
মানুষটা অদ্ভুত চোখে তার দিকে তাকালেন। বললেন, ‘না, তুই ক্যাপ্টেন বলবি না। আমি তোর ক্যাপ্টেন নই, আমি তোর বর।’
বঁড়শি বরের মাথায় হাত বোলাল, বলল, ‘আমার সাধু!’
‘পিশাচ সাধু!’
‘ওই আপনার এককথা। পিশাচ শুনলেই আমার গায়ের মধ্যে কেমন রি রি করে ওঠে—।’
সাধু একটা হাত বাড়িয়ে মাথার পাশে বসে থাকা বঁড়শির কোমর জড়িয়ে ধরেন আলতো করে। এত সরু কোমর সাধুর একহাতের পাকেই পুরোটা চলে আসে। তিনি বলেন, ‘কোন গা— আমাকে দেখা, দেখাস না তো কখনও!’
‘উহু! খুব শখ। বিষ নেই কুলোপনা চক্কর!’ সাধুর হাতটা নিয়ে ছুঁড়ে দেয় বঁড়শি। ‘হঠাৎ ফোন ধরে এসে আছাড় খেয়ে শুয়ে পড়লেন কেন? কে ফোন করেছিল বলুন আমাকে, দেখি সে কে?’
‘পিশাচ সাধুকে কে ফোন করতে পারে বল?’ ম্লান মুখে হাসলেন তিনি, ‘পিশাচকে ফোন করবে ভূত প্রেত পেতনি শাকচুন্নি!’
‘শুনুন ভূত প্রেত ফোন করুক দুঃখ নেই, কিন্তু কোনও পেতনি শাকচুন্নি এদিকে তাকালে তার চোখ গেলে দেব। এবার বলুন কে ফোন করেছিল, শঙ্করবাবু নাকি?’
‘না।’
‘তবে?’ বঁড়শি ছাড়ার পাত্রী নয়। তার দু’চোখ এখন স্থির হয়ে— ভাবছে। ঠোঁট আর নাকে চিন্তার রেশ। ফুলে উঠছে, কাঁপছে।
পিশাচ সাধু চুপ করে থাকেন। তারপর আক্ষেপের সুরে বলেন ‘পিশাচ! পিশাচ! ভালো কথা মেলে না। মিলবেও না। অথচ খারাপ কথাগুলো টপাটপ মিলে যায়। একটাও ভালো কথা কি আমি বলতে পারব না কোনওদিন। শালা বলে আমার পাওয়ার নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পাওয়ার ছিলই না কোনওদিন, নষ্ট কী হবে? ঢপ! ঢপ! ঢপ দিলেই মিলে যায়, আমি সাধু! আমি পিশাচ সাধু!’
বঁড়শি ঠোঁট টেপে, ‘অত পিশাচ পিশাচ করবেন না। খারাপ কথা বলেন কেন? আপনার আগের বউগুলো বড্ড ফালতু ছিল। তারা আপনাকে একদম গাইড করেনি। আপনার জীবনে আমি যদি আগে আসতাম— আপনাকে দিয়ে ভালো ভালো কথা বলাতাম। খারাপ কথা বলতেই দিতাম না। খারাপ কথা বলেন বলেই আপনার নিজেকে পিশাচ পিশাচ লাগে। পচা দুর্গন্ধ টের পান! কই আমার তো আপনাকে পিশাচ লাগে না, সাধুই লাগে। কারণ আপনার সাহস নেই আমাকে খারাপ কথা বলার। জানেন, বঁড়শিকে একটা খারাপ কথা বললে সে ধুরধুরি নেড়ে দেবে। বঁড়শি যে সে মেয়ে নয়! সে ফোঁস করতে জানে।’
‘তার ছোবলও আছে।’ পিশাচ সাধু বিড়বিড় করেন। ‘হ্যাঁ, সে ছোবলে বিষও আছে! এবার ঝেড়ে কাসুন কে ফোন করল?’
‘বললাম তো ভূত প্রেত!’
‘ওই ছেলেটা নচে? নচে কি অপঘাতে মরল?’
‘নচে কেন অপঘাতে মরবে?’
‘কেন মরবে না? সেদিন তো গলাবাজি করে বলে এলেন— তুই অপঘাতে মরবি। বেচারা আমাদের যত্ন করে মাছ, মাংস খাওয়াল। আর আপনি তাকেই কি না কালো বিল্লি দিয়ে কেটে এলেন! তবে কি ওই ছেলেটা— যার হাতে তেত্রিশদিনের মাদুল কবজ বেঁধে দিয়ে এলেন? বলে এলেন— তোর ভাগ্য খুলে যাবে? তার তেত্রিশ দিন কি হয়ে গেল? ফক্কা! মেলেনি বুঝি!’
পিশাচ সাধু চকিতে বঁড়শির দিকে তাকাল। এ মেয়ে সাধারণ নয়! ঠোঁট কেন আলটাগরাতেও নয়, এ মেয়ে তো বুকের ভেতর বঁড়শি বিঁধিয়ে ফুসফুস থেকে হাওয়ামাখা কথা টেনে আনে। ঠিক ধরে ফেলল কথাটা। পিশাচ সাধু একটু নড়ে উঠলেন।
বঁড়শি বলল, ‘ফোন করে ডেকে সেই সংবাদটাই দিল— ক্যাপ্টেন তেত্রিশ দিন হয়ে গিয়েছে, তোমার কথা মেলেনি। তুমি একটা ঢপ। ব্যস, তাতেই আপনি মুঝড়ে গিয়ে যজ্ঞের মাটিতে এসে পড়েছেন। তাই তো! ভালো কথা বলেছেন— মেলেনি। এই দুঃখ! আপনার খারাপ কথা মিলে যায়, ভালো কথা মেলে না।’
পিশাচ সাধু চুপ করে বঁড়শিকে দেখছিলেন। তার উনিশ মাসের বিয়ে করা বউ। তার ছিয়াত্তর, বঁড়শির ছাব্বিশ! সে তো চায়নি এই মেয়েকে বিয়ে করতে। জুটিয়েছিলেন যেমন, ভাগানোর জন্যও অনেক কসরত করেছেন। এ মেয়ে এমন গলা জড়িয়ে ধরে যে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। তবু ছাড়ানো গেল না। কম ঝটকা তো দিলেন না।
দেখা হয়েছিল কালীকঙ্কালী তলায় যোগীনবাবার আশ্রমে। রাতে ঘুমের মধ্যে যোগীনবাবা মরল। সে এক হইহই ব্যাপার। সাতসকালে ‘বাবা’ ‘বাবা’ করে এক ভক্তরা ডাকতে এসে দেখল, যোগীনবাবা মরে কাঠ। মুখের কাছে এক কলসি বমি। নিজের ঘরে বমি করে মরেছে। বড্ড কষ্ট পেয়েছ গো! সারারাত ধরে কাতরেছে হয়তো, অথচ কেউ জানতে পারেনি। সন্ধেবেলা গাঁজা টেনেছিল একসঙ্গে, কত কথা বলল। অথচ ভোর না হতে হতেই মরে কাঠ! রাতে প্রসাদ নিল, তারপরেই নিশ্চয়ই অঘটনটি ঘটেছে।
সাধু সন্ন্যাসীরা মরলে ডেথ সার্টিফিকেট লাগে না। কিন্তু এক্ষেত্রে কয়েকজন ভক্ত বললে, উহুঁ বাবাকে কেউ বিষ দিয়েছে। বিষ দিয়ে মেরেছে। ডাকো ডাক্তার। ডাক্তার এসে বলুক যোগীনবাবার মৃত্যু স্বাভাবিক।
কিন্তু ডাক্তার এসে ঘোরতর সন্দেহ প্রকাশ করল। বলল, স্বাভাবিক তো ঠেকছে না, বরং বড্ড অস্বাভাবিক। পোস্টমর্টেম করাতে হবে। পুলিস কেস!
কয়েকজন ভক্ত আপত্তি তুলল, না, না, এটা পাপ হবে। বাবাকে কেন কাটা ছেঁড়া করবে ডোমেরা? কয়েকজন বলল, সন্দেহ যখন আছে, তখন দেখে নেওয়া দরকার, কে এই কাজটা করল?
সারা আশ্রম জুড়ে হইচই। আকচাআকচি। তবে বেশিরভাগ ভক্তই মনে করল, এটা ঠিক নয়, সন্দেহের বশে বাবার দেহ তুলে নিয়ে গিয়ে কুকুর ছাগলের মতো কাটাকাটি করলে মারাত্মক কাণ্ড হবে। প্রলয় ঘটে যাবে। আর যোগীনবাবাকে কে বিষ দেবে? কার এত সাহস যে, বাবাকে বিষ দেবে, আর বাবা টেরটি পাবেন না, খেয়ে নেবেন! না এ হতেই পারে না।
কেউ কেউ আবার প্রমাদ গুনলেন বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটলে পুলিস কাউকে ছাড়বে না। সবাইকে আটকে রেখে দেবে এই আশ্রমে, টানাটানি করবে। আর বিষ প্রয়োগের কথা বাইরে ছড়ালে কেউ কোনও দিন বাবার আশ্রমে আসবে না। এই আশ্রমে ঘুঘু চরবে। বেশিরভাগ ভক্তই বেঁকে বসল, বাবার দেহ তারা ছাড়বে না, পুলিস এলে রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে যাবে। রটে গেল, বাবা স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁর দেহলীলা সঙ্গ হওয়ার লগ্ন আসন্ন। বাবা জানতেন— তিনি চলে যাবেন। তাই অনেক কাছের মানুষকে ডেকেছিলেন, ওই তো বিরাজীবাবাকে ডেকেছেন। ওই তো কাছের মানুষ পিশাচসিদ্ধ মিলিটারি ক্যাপ্টেন সাধু এসেছেন। এঁরা কেন আসবেন?
পিশাচ সাধু অল্প বয়সে মিলিটারিতে চাকরি করতেন। সাধু মহলে তাঁকে অনেকেই ক্যাপ্টেন সাধু বলেন। তিনি নিজেকে যতই পিশাচ সাধু বলুন, সাধু মহলে তিনি ক্যাপ্টেন সাধু। যোগীনবাবা কেন ডেকে এনেছিলেন ক্যাপ্টেন সাধুকে। এই ডেকে আনার মানে শেষ সময়ে তাঁর সঙ্গ পাবেন বলে।
শেষ পর্যন্ত সাধুদের ভক্তদের কথাই রাখা হয়। যোগীনবাবার দেহ আর পোস্টমর্টেম করা হল না। আশ্রম প্রাঙ্গণেই তাঁকে সমাধি দেওয়া হয়। পুলিস প্রশাসনও শান্তির নিঃশ্বাস ফেলে। সেখানে আগেই ক্যাপ্টেনের সঙ্গে আলাপ হয় বঁড়শির। বঁড়শির বাবাও একজন সাধু ছিলেন। দেহ রেখেছেন বেশ কয়েক বছর আগে। মায়ের কাছে থাকত বঁড়শি। মা মরল। তারপর সে চলে এসেছিল যোগীনবাবার কাছে। কিন্তু যোগীনবাবার আকস্মাৎ মৃত্যুতে বঁড়শি যখন ভাবছিল, সে কোথায় যাবে, তখনই ক্যাপ্টেন তাকে বলে— আমার সঙ্গে চ।
‘চ মানে? আপনার কি আশ্রম আছে?’
‘আশ্রম টাশ্রম নেই। আমি গৃহী। ঘরে থাকি।’
‘তাহলে আমি গিয়ে কী করব?’
‘আমার পুজোযজ্ঞের আয়োজন করে দিবি।’
‘আপনি তো গৃহী বললেন— আপনার বউ জোগাড় দেয় না?’
‘বউ থাকে ছেলেদের সঙ্গে। আমি একাই থাকি। যাবি তো চ। এখানে কী করবি? এখানে এখন খুব গোলমেলে কাণ্ড ঘটবে!’
একা মানুষ, বলছে যখন চলেই যাবে, বঁড়শি দ্বিধায় ভুগছিল। সে সাধু ছাড়া এ-জীবনে কারও সঙ্গে থাকবে না। আর এই লোকটাকে যোগীনবাবা বেশ খাতির করছিলেন। ভক্তদের বলছিলেন, এ লোক মিলিটারি ক্যাপ্টেন ছিল। মাথার ভূত নড়তে সাধু হয়েছেন গো। এ-জীবন বেছে নিয়েছেন। গৃহী সাধু। গৃহে থাকে সংসারধর্ম করেন। কিন্তু এ মস্ত মানুষ। বেশ কিছু চমৎকারী আছে ওঁর। পিশাচ সিদ্ধ! যোগযাগে এ ভয়ঙ্কর। তোরা এই বাবাকে বেঁধে রেখে দে এখানে, যেতে দিবি নে। এ আমার অনেক দিনের বন্ধুলোক! একে ডেকেছি কয়েদ করব বলে। তোরা সবাই বল— বাবা এখানে থাকো সাধন পূজন করো। ধ্যান জপ করো। এ আশ্রম তোমার। তোমার শ্রীচরণে আমাদের ঠাঁই দাও।
যোগীনবাবার কথা শুনে বঁড়শিও খুব খাতির করছিল পিশাচসাধুকে। আশ্রমে থাকা দিনগুলোয় সেবা করছিল। মানুষটা সারাদিন গুম মেরে বসে থাকেন। বড় একটা কথাটথা বলেন না। উচ্চস্বরে সাধনভজনও করেন না। বই পড়েন। হাঁ করে মানুষ দেখেন। তাকেও দেখে হাঁ করে। যেন গিলে খাবে।
বঁড়শি বলেছিল, ‘আগে এয়েছেন এখানে?’
‘আগে তোকে তো দেখিনি।’
‘আমি এই ছ’মাস এসেছি?’
‘কেন এসেছিস?’
‘বাড়িতে ভালো লাগে না। আমি বাবার পথে যাব, সংসার জীবনযাপন করব না। সারাজীবন সাধু সেবা করে কাটাব। তাই এয়েছি।’
‘বেশ করেছিস। এসেছিস যখন থেকে যা।’
কিন্তু বঁড়শি থেকে যেতে পারল কই। বঁড়শি বুঝতে পারছিল, বাবা ছাড়া এই আশ্রমে এখন খেয়োখেয়ি শুরু হবে। কে দখল নেবে এই আশ্রম তা নিয়ে যুদ্ধ চলবে। মা মরতে এই আশ্রমে এসে উঠেছিল, এখন সে আশ্রয়টুকুও গেল।
পথে আসতে আসতে শুনল, এই লোক গৃহী। কিন্তু গৃহী বলে গৃহী। চরম গৃহী। আগে তিন তিনখানা বিয়ে করেছেন। এক গণ্ডা বাচ্চার বাপ। বঁড়শির যোগীনবাবার কথা মনে পড়ছিল, তবে এ লোক সাধন করল কবে, আর সংসারই বা করল কবে?
এ লোককে শক্ত হাতে ধরতে হবে।
শক্ত হাতে ধরেছিল বঁড়শি। মাঝে মাঝে মনে হতো, এ সাধু কোথায়? এ তো মাতাল। মদ খেয়ে নেশা করে, গাঁজা টেনে নেশা করে, শরীরেও নেশা করে। কিন্তু লোকটার চমৎকারী আছে। ওর ঠোঁটে প্রথম যেদিন হাত দিল। হাত দিয়ে বলল— কী লাল টুকটুকে!
বঁড়শি আয়না দেখল— তার ঠোঁট তো এত লাল ছিল না কোনওদিন। লোকটার আঙুলে কি রং ছিল! সে রংই ধরল বঁড়শির মনে। নইলে যখন বলল, ‘পালা এখান থেকে।’
বঁড়শি বলল, ‘পালাব বলে এয়েছি নাকি?’
‘তবে বিয়ে কর আমাকে।’
বঁড়শি ঘাড় নাড়ল, রাজি!
‘দু-বউ এসে কিন্তু তোকে ঠ্যাঙাবে।’
‘আমি তোমার পেতনি আর শাকচুন্নির চোখ গেলে দেব। আসুক না এখানে।’
বঁড়শি বলল, ‘উঠুন মাটি ছেড়ে। না মিলুক, তবু ভালো ভালো কথাই বলুন।’
(চলবে)
25th April, 2021