Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

পিশাচ সাধু

 

জয়ন্ত দে : হঠাৎ বর্ণিনীর সঙ্গে রাস্তায় দেখা হয়ে যায় সহজের। বনির গন্তব্য বিচিত্রদার বাড়ি। সহজকে সঙ্গী করে বনি। জনগণের স্বার্থে লড়াই করতে গিয়ে বহুবার পেটানি খাওয়া বিচিত্র ঘোষাল বিশ্বাস করে, এ দেশে একদিন বিপ্লব হবেই। কথায় কথায় বিচিত্রদাও সহজকে সাবধান করে দেয়, সে যেন পিশাচ সাধুর পাল্লায় না পড়ে। তারপর...
 সহজ মিত্র হতে পারে বড্ড সোজা। সোজাসাপ্টা।  সহজপাঠ! কিন্তু সে ভেড়া নয়। পরমেশ্বর ব্যানার্জি ভেড়া হয়েছে। তাকে ভেড়া বানিয়েছে পিশাচ সাধু।
শনিবারের বারবেলায় পরমেশ্বরের অফিসে ঢুকে সহজ বলল, ‘পরমেশ্বরদা তোমাদের ক্যাপ্টেনের কথা কিন্তু মিলল না।’
শনি আর রবিবার পরমেশ্বরের অফিসে ফালতু কেউ থাকে না। এদিন যারা তার অফিসে থাকে তারা সবাই ভালো ভালো মুখ। মুখ না বলে তাদের পরমেশ্বরের মুখোশ বলা যায়। পরমেশ্বরের বারণ আছে, শনি-রবি কোনও কানকাটা, গালে ক্ষুরটানা, অ্যালকোহলে তেলা মুখ— কেউ তার অফিসে আসবে না। আর একটা কথা সবাই জানে, এটা পার্টি অফিস নয়। শনি-রবিবার কোনও পার্টি পলিটিক্স চলবে না এখানে। এদিন পরমেশ্বর সাদা জামা পরে, দু’হাতের দশ আঙুলে ছ’টা সোনার আংটি পরে— লাল নীল সবুজ পাথরের। কারণ, এই দু’দিন পার্টি আসে। ফ্ল্যাট কেনার পার্টি। ব্যাঙ্কের লোক আসে। এই দুটো দিন বিজনেসের। এছাড়াও যাদের জমি আছে, দালালরা শনিবার-রবিবারই তাদের সঙ্গে মিটিং সেট করে। তারাও আসে। তারা যদি এসে পরমেশ্বরকে সোনাহীন দেখে, তারা কী করে বিশ্বাস করবে— এই লোকটা এত টাকার প্রজেক্ট শেষ করবে! এর পকেটে টাকা আছে! নাকি মাছের তেলে মাছ ভাজবে? সবার বিশ্বাস জোগানোর জন্যই পরমেশ্বর এদিন আর্থিকসঙ্গতিপূর্ণ সাউন্ড বিজনেসম্যান সাজে। অফিসের টেবিলে ইংরেজি, বাংলা মিলিয়ে তিনটে খবরের কাগজ রাখে। এদিন সে পরম বা ঈশ্বর নয়, পুরোপুরি পরমেশ্বর ব্যানার্জি। একজন সফল প্রোমোটার অ্যান্ড ল্যান্ড ডেভলপার। মাথার পিছনে লেনিন, মার্কস আছেন তো কী হয়েছে, দু’হাতে ছ’টা নানা রঙের আংটিও তো আছে!
পরমেশ্বর মন দিয়ে খবরের কাগজ পড়ছিল। ঘরে ছিল ল’ইয়ার তরুণবাবু।  তিনি কোর্টের কাগজ সাজাচ্ছিলেন। পরশু দুটো ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন আছে। তবে এই দু’দিন সহজের আসায় বাধা নেই। বরং এদিন সহজ থাকলে পরমেশ্বর বেশ খুশি হয়। অনেক সময়ই পার্টিদের সঙ্গে সহজের পরিচয় করিয়ে দেয়, এ ম্যাথমেটিক্সের স্কলার। এর বাবা খুব নামী ইনকাম ট্যাক্স ল’ইয়ার। সহজ সে সবদিনগুলোয় গম্ভীর হয়ে বসে থাকে। আর মনে মনে গালাগাল দেয়— স্কলার, না ছাই —!
ভানুদা থাকলে, পরিচয় হয় রিটায়ার্ড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। ভানুদা নড়ে না, চড়ে না। হয়তো মনে মনে বলে— ধরণী দ্বিধা হও। তিনি ব্যাঙ্ক কর্মচারী ছিলেন, ম্যানেজার নন। প্রতিবাদ করে কোনও লাভ নেই। চুপচাপ বসে থাকো। আর সত্যিকারের ঈশ্বরকে ডাকে— কেউ যেন চেনা না বেরিয়ে পড়ে, সে যেন না বলে বসে— দুর মশাই, ভানুবাবু আবার কবে অফিসার হলেন!
সহজের কথায় খুব যেন মজা পেল পরমেশ্বর। বলল, ‘তোর সেই তেত্রিশ দিন হয়ে গেল এরমধ্যে! ক্যাপ্টেনের কথা মিলল না তাহলে?’
‘না, একটি পাতাও খসেনি, ঝড় ওঠা তো দূরের কথা।’
‘তুইও তাহলে ক্যাপ্টেনের পাল্লায় পড়েছিলি— একটা একটা করে তেত্রিশ দিন গুনছিলি!’
‘হ্যাঁ, উনি তো তেত্রিশ দিনই বলেছিলেন সেদিন।’
‘ক্যাপ্টেন তোকে দিন বেঁধে দিয়েই ফ্লপ করল। সাদা পাতায় কালো অক্ষর— এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। নে অনন্তকাল ভাব, ভেবে যা। কিন্তু তেত্রিশ দিন! মালটাকে ফোন করবি নাকি? ফোন করে বল— তোর তেত্রিশ দিন কেটে গিয়েছে। কোনও সুসংবাদের দেখা মেলেনি, ভাগ্য ফেরা তো দূরের কথা। এবার কী করব?’
সহজ হাসল, বলল, ‘বেচারা ক্যাপ্টেন! উনি যা ইনফরমেশন পেয়েছিলেন তাই বলেছেন। কিন্তু ওই তেত্রিশ দিনটা একটু বেশি হয়ে গিয়েছে। ওভারডোজ!  নাহলে ধরা পড়তেন না।’
‘ফোন কর, ফোন কর। ফোন করে বল তোমার ভবিষ্যদ্বাণী মায়ের ভোগে গিয়েছে। খিস্তি দে মাতালটাকে। নাতনির বয়সি মেয়েকে বিয়ে করলে সব অলৌকিক ক্ষমতাই ভোগে যায়।’
‘মেয়েটার কী দোষ! তোমাদের মতো ওই মেয়েটাও হয়তো ফাঁদে পড়েছে। আমার কাছে ওর ফোন নম্বর নেই।’
‘আমার কাছে আছে ওর নম্বর। ওখানে নম্বর লাগা। বল, ক্যাপ্টেনকে ডেকে দিতে, দশ মিনিট বাদে ফোন করছি।’
‘কার নম্বর?’
‘ক্যাপ্টেনের বাড়ির পাশেই একটা টালির গোলা আছে, তাদের ফোন।’
‘কেন ওর বউয়ের তো মোবাইল আছে। নম্বর জানো না তুমি?’
‘তুই কি আমাকে শঙ্কর পেয়েছিস— অন্যের বউয়ের ফোন নম্বর টুকে রাখব। এই নে টালির গোলার নম্বর।’
পরমেশ্বর তার সামনে থাকা ডায়েরি এগিয়ে দেয়। সহজ নম্বর মিলিয়ে ফোন করে। বলে, দশ মিনিট পরে ফোন করছি। ক্যাপ্টেনকে চা‌ই।
দশ মিনিট পরে ফোন করতেই ক্যাপ্টেন ধরে। সহজ খুব ঠান্ডা গলায় বলে— ‘আমি সহজ বলছি, চিনতে পারছেন। সেই সুজিদার সাধে—’
‘হ্যাঁ, হ্যাঁ কেন চিনতে পারব না। স্মৃতিশক্তি দুর্বল হোক তোর। অ্যালঝা‌ইমার্স, ডিমেনসিয়া হোক তোর বাপের। আমি এখনও টাটকা তাজা, মজাদার!’
সহজ হাসল, বলল, ‘সে হোক। তাহলে চিনতে পারছেন? কিন্তু তেত্রিশ দিন হয়ে গেল, আপনার ভবিষ্যদ্বাণী যে মিলল না।’
ক্যাপ্টেন বললেন, ‘এর মধ্যে তেত্রিশ দিন হয়ে গেল! কী আশ্চর্য! কীভাবে দিন যায়!’
‘আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। প্রতিদিন সূর্য ওঠে, অস্ত যায়— একটা করে দিন শেষ হয়। এভাবেই তেত্রিশ দিন হয়েছে। আমার কিছু হয়নি— নো সুসংবাদ!’
ফোনের ওপারে চুপ! চুপ করে আছে ক্যাপ্টেন। সহজ সেই শুকনো মুখটা যেন দেখতে পাচ্ছিল। বলল, ‘আপনি ফ্লপ! আপনার ভবিষ্যদ্বাণী ফ্লপ!’
পিছন দিক থেকে পরমেশ্বর চিৎকার করে, ‘ক্যাপ্টেন, তুমি মায়ের ভোগে।’ 
নীরবতা ভেঙে ক্যাপ্টেন বলল, ‘আমি হাত গুনি না, কোষ্ঠী বিচার করি না রে ভাই, আমার যা মনে হয়েছিল তাই বলেছিলাম। মেলেনি তো মেলেনি, আমি কী করব?’
‘হ্যাঁ আপনি তো বলেছিলেন লাগে তুক, না-লাগে তাক! পুরো ঢপ!’ সহজের গলায় তীব্র শ্লেষ!
 ‘হ্যাঁ, পুরো ঢপ, তবু বলব, ওই কালো মানুষজন, প্রমোটার, ভাঙোয়ার, দালালগুলোর সঙ্গে থাকিস না। হুল্লোড়ে মাতিস না। এটা আমি ঠিক বলছি। নিজেকে খরচা করে ফেলিস না।’
সহজ বুঝল ধরা পড়ে লোকটা এবার জ্ঞান দিচ্ছে। এসব কথা বলার জন্য পিশাচ সাধু হতে হয় না। তার বাবা সম্বুদ্ধ মিত্র হলেও হয়। বনি হলেও হয়। সহজ বলল, ‘আপনি যে কথা বলছেন, তা আমার বাবা সম্বুদ্ধ মিত্রও বলেন, আমার এক বন্ধু আছে সে-ও বলে। আপনি নতুন কিছু বলছেন না।’
ক্যাপ্টেন বিষণ্ণ গলায় বলল, ‘বুঝতে পেরেছি, তুই বলছিস আমি তোকে জ্ঞান দিচ্ছি।’ কথাটা বলে চুপ করে গেলেন। বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ। সহজের মনে হল লোকটা ফোন ছেড়ে দিয়েছে, সে বলল, ‘হ্যালো—।’
‘একটা কথা ভাবছিলাম, সারা জীবন ধরে আমি অনেক অনেক খারাপ কথা বলেছি। নতুন কাউকে দেখলে আমার খারাপ কথাগুলোই ভেসে ওঠে।   কিন্তু সেটা খারাপ কথা, ভালো কথা নয়। আমি স্পষ্ট কালো ছোপ দাগ দেখতে পাই। আমি ভালো দেখতে পাই না। আমার জীবনে দু-একজন মানুষকে দেখে ভালো ভালো কথা বলতে ইচ্ছে করেছিল। তার মধ্যে তুই একজন। মনে হয়েছিল, আমি ভালো বলতে পারি। ভালো কিছুও দেখতে পারি। আমি শুধু পিশাচ নই, মানুষের হাড় মাংস ছাই ভস্ম শুধু নই। ভুল হয়ে গেল। না রে আমার ভালো দেখার ক্ষমতা নেই। পরি ঠিক চিৎকারই করছে, আমার ক্ষমতা নেই। ভালো বলার ক্ষমতা নেই।  পরিকে বলে দে— ক্যাপ্টেন ইজ ডেথ!’
কট করে ফোন কেটে গেল। 
সহজ ফোনটা রেখে চেয়ার টেনে বসল। পরমেশ্বর উঠে জানলার সামনে দাঁড়াল। ওর মনটা হঠাৎ অস্থির অস্থির লাগছে। এই হাঁটুর বয়সি ছেলেটা ক্যাপ্টেনকে ধাপ্পাবাজ বানিয়ে দিল। অথচ এত বছর ধরে সে ক্যাপ্টেনকে ফলো করে এসেছে। এলাকায় থাকেনি। এটা নিয়ে অনেক হাসি-ঠাট্টা শুনেছে। ক্যাপ্টেন তো তার পিঠে হাত দিয়ে বলেছিল— পিঠ বাঁচা। তার পিঠ বেঁচেছিল অজিতের প্রাণের বিনিময়ে।
সহজ বলল, ‘তোমার ক্যাপ্টেন যে এত সহজে হার মেনে নেবে ভাবিনি। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল।’
মাথা নাড়ল পরমেশ্বর। ‘লোকটার ক্ষমতা চলে গিয়েছে— ফুল ফর্মে থাকা ক্যাপ্টেনকে দেখিসনি। ও! কী দাপট, তোকে আঙুল গুনিয়ে তেত্রিশ দিন গোনাত,  মেনে নিত না। অনেক তর্ক করত, ঝামেলা করত। দেখ আমি রঞ্জন মুখার্জির মতো একজন সিনিয়র লিডারকে দেখেছি, সন্দেহজনক মানুষ ধরে ধরে ক্যাপ্টেনের বাড়ি নিয়ে যেতেন। তার সম্পর্কে কী বলে শুনতেন। শোন তোকে একটা গল্প বলি। এই গল্পটা আমাকে ক্যাপ্টেনই বলেছিল। বিম্বিসার আর অজাতশত্রুর গল্প। অজাতশত্রুকে দেখে বুদ্ধ বুঝেছিল— এই ছেলে পিতা বিম্বিসারের দুঃখের কারণ হবে।  বুদ্ধের কথা মিলে যায়। বিম্বিসার ও বুদ্ধকে হত্যা করতে যান অজাতশত্রু। ব্যর্থ হন। বিম্বিসার তাঁকে ক্ষমা করেন। কিন্তু অজাতশত্রু পরে আবার বিম্বিসার আর তাঁর পারিষদদের বন্দি করে মগধের সিংহাসনে বসেন। গৃহবন্দি অবস্থায় বিম্বিসারের মৃত্যু ঘটে। বুদ্ধকেও হত্যা করতে যান। কিন্তু পিতার মৃত্যুর পরে অজাতশত্রুর অনুশোচনা হয়। তিনি বুদ্ধের শরণ নেন।
এই ঘটনাটা আমার জীবনেও ঘটেছে।
কমরেড রঞ্জন মুখার্জির কাজ ছিল, বা খেলা বলতে পারিস— মাঝে মাঝে একে তাকে ধরে নিয়ে যেতেন ক্যাপ্টেনের বাড়ি। দেখতেন ক্যাপ্টেন তার সম্পর্কে কী বলে— একবার একটা খুব কাছের ছেলেকে ধরে নিয়ে গেল ক্যাপ্টেনের কাছে। ওই ছেলেটাকে দেখে ক্যাপ্টেন সাবধান করে দিয়েছিল রঞ্জনদাকে। বলেছিল— এ ছেলে তোমার দুঃখের কারণ হবে। রঞ্জনদা এটা অনেক সময়ই হাসতে হাসতে গল্প করত। বলত,  ক্যাপ্টেনের এটা ফলস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কিছুদিন পরে, সেই ছেলে ওই রঞ্জন মুখার্জিকেই উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। জানাজানি হয়ে যায়। তার বাবাও পার্টি মেম্বার। তিনি গিয়ে ক্ষমা চান। রঞ্জনদা ক্ষমা করে দেন। সেবারও ক্যাপ্টেন গিয়ে রঞ্জনদাকে বলেছিল— ক্ষমা করে ভুল করলে রঞ্জন। ও তোমাকে আবার ছোবল দেবে। ক্যাপ্টেনের কথা কিন্তু মিলে গিয়েছিল। ছেলেটা সত্যি এবার ছোবল দিল। বাণপ্রস্থে পাঠিয়ে দিয়েছিল রঞ্জন মুখার্জিকে। পরে তার অনুশোচনা হয়। ততদিনে দেরি হয়ে গিয়েছে। সে সেই অনুশোচনা নিয়ে ক্যাপ্টেনের কাছে যায়। ক্যাপ্টেন হাসেন, বলেন— তুমিই এখন মগধের সিংহাসনে বসো। সেই ছেলেটা আমি। তখনই ক্যাপ্টেন আমাকে গল্পটা বলেছিল। যা আমার আজও মনে আছে। আমি ক্যাপ্টেনকে বিশ্বাস করি কি না বলতে পারব না, কিন্তু চেষ্টা করি অবিশ্বাস করার, পারি না। তুই পারলি ওর মায়াজাল কেটে বেরিয়ে যেতে।’
হ্যাঁ, সহজ পারল, পিশাচ সাধুর তেত্রিশ দিনের মায়াজাল কেটে বেরিয়ে যেতে।
সহজ আজ সারাদিন ধরে হাসছে, রাস্তায় বসা জ্যোতিষীদের টিয়াপাখিগুলোর মতো মনে হচ্ছে ক্যাপ্টেনকে। খাঁচা থেকে বেরিয়ে এসে একটা কাগজের টুকরো টেনে দিয়ে চলে গিয়েছে। সে কাগজের টুকরোয় লেখা সহজের ভবিষ্যদ্বাণী!
সন্ধেবেলায় পড়াতে গেলে সৃজনী বলল, ‘স্যার আপনার সেই গুড নিউজটার কী হল?’
‘হলে বলব।’
‘এখনও কি সময় হয়নি? গুড নিউজগুলো এত দেরি করে কেন?’
সৃজনীকে পড়িয়ে সহজ গিয়েছিল নচের ঠেকে। নচে বলল, ‘পাখি তো আজ বিকেলে ফুরুত। দাদা এলাকায় নেই, পাহাড়ে। কাল থেকে কোম্পানির মালিক সাজবে সুজিদা।’
খানাপিনা সেরে বাড়ি ফিরতে একটু রাত হয়ে গিয়েছিল। সাধারণত এসময়ে ঠাকুমা, বাবা, মা কারও সঙ্গে দেখা হয় না সহজের। বা বলা যায় দেখতে চায় না। অচলদা দরজা খুলে দিতেই সোজা ওপরে চলে যায়। খাবার ওপরেই দেওয়া থাকে। আজও দরজা খুলে ওপরে চলে যাচ্ছিল সহজ। হঠাৎই বাবার  গলার আওয়াজে থমকে দাঁড়াল—  ‘শোনো, আজ তোমার একটা চিঠি এসেছে। আমার কাগজের তাড়ার মধ্যে পড়েছিল— এই নাও।’
‘আমার চিঠি?’
‘হ্যাঁ, তোমার নামই তো লেখা। অফিসিয়াল চিঠি, কিন্তু খোলা চিঠি—  চিঠিটা আমি পড়েছি। পড়ে খুশি হয়েছি। তাই অন্যের চিঠি পড়ার জন্য  দুঃখিত হয়ে সরি জানাতে পারছি না।’
চিঠিটা দু’আঙুলে নিয়ে সম্বুদ্ধ মিত্র হাসছেন।
(চলবে)                       
18th  April, 2021
পিশাচ সাধু

পরমেশ্বরের অফিসে শঙ্করের সঙ্গে এক চোট হয়ে গেল সহজের। মজা করতে গিয়েই এই বিপত্তি। সুজি কিছুতেই ক্যাপ্টেনের কথাগুলো ভুলতে পারছে না। এদিকে, পরমেশ্বর বিকেলে সহজকে একজনের বাড়িতে নিয়ে গেল। তারপর... 
বিশদ

13th  June, 2021
ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১৫
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

শঙ্কর বলল, ‘তুমি চান্স নাও। সব পাখি মাছ খায় দোষ হয় মাছরাঙার! আমার দরকার নেই। আমার অনেক আছে।’ বিশদ

06th  June, 2021
ছাতা হারানোর পর
রিমি মুৎসুদ্দি

কলি জানত, মম্পা নিজে পড়াশোনা বিশেষ করে না। সারাক্ষণ মিটিং মিছিল নিয়েই ওর সময় কাটে। এমন মিটিং মিছিল করা ছেলের সঙ্গে কী করেই বা ও জড়াত নিজেকে? আর তাও যদি মম্পার রেজাল্টটা তেমন কিছু হতো তাহলেও কিঞ্চিৎ বিবেচনায় ওকে রাখতে পারত।  বিশদ

30th  May, 2021
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব  ১৪
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

বিচিত্রদাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে গিয়ে একপ্রস্থ নাটক হল। যদিও শেষপর্যন্ত বিচিত্রদার কপালে বেড জুটল। নচের নানা মজার কীর্তি বর্ণিনীকে শোনাল গৌর। এদিকে, ক্যাপ্টেনের অলৌকিক শক্তি যে কমেনি, তা সহজের গল্প প্রকাশের সুবাদে আরও একবার পরমেশ্বরের গ্রুপে প্রমাণ হয়ে গেল। তারপর... বিশদ

30th  May, 2021
কালা চশমা 
শুচিস্মিতা দেব

সুমিতাকে প্রবাস জীবনের শুরুতে সংসারের বাঙালি স্বাদগন্ধ বজায় রাখতে কম মেহনত করতে হয়নি! কোথায় মেলে বাঙালি পুরুতঠাকুর... শুক্তো-মুড়িঘণ্ট, স্পেশালিস্ট বঙ্গ ক্যাটারার... গাওয়া ঘি-গোবিন্দভোগ চাল অথবা শারদীয় পত্রপত্রিকা! কর্তাটি তার নির্ভেজাল খাঁটি বাঙাল ফলে দীর্ঘ দিল্লিবাসে যাবতীয় বঙ্গসমাচার এখন সুমিতার নখদর্পণে। 
বিশদ

23rd  May, 2021
পিশাচ সাধু 
জয়ন্ত দে

ক্যাপ্টেনকে গালমন্দ করতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনল সুজি। ‘কাক হয়ে কোকিলের বাচ্চা মানুষ করবি সুজি,’ পিশাচ সাধুর মুখ থেকে বেরিয়ে এল কয়েকটি ভয়ঙ্কর শব্দ। যা তাকে সারা জীবন কুড়ে কুড়ে খাবে। এদিকে, বর্ণিনীর ফোন এল সহজের মোবাইলে বিচিত্রদার অবস্থা ভালো নয়।  
বিশদ

23rd  May, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে 

সহজের কাছে চিঠিটি এসেছে ‘স্বদেশ’ পত্রিকা থেকে। সেখানে তার গল্প ছাপা হবে। এদিকে, ক্যাপ্টেনের ভবিষ্যদ্বাণী ব্যর্থ হয়েছে শুনে বেজায় খুশি সুজি। পিশাচ সাধুর শক্তি সম্বন্ধে তার বক্তব্য, ‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর’। পরের দিন সহজকে নিয়ে ক্যাপ্টেনের বাড়ি যাবে ঠিক করে সুজি।  
বিশদ

16th  May, 2021
ছোঁয়া
বিতস্তা ঘোষাল
 

অফিস থেকে বেরিয়ে নীচে বেশ খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে পর্ণা। এই দাঁড়িয়ে থাকাটা কোনও কিছুর অপেক্ষায় নয়। এটা তার অভ্যাস। আসলে একটানা চার দেওয়ালের ঘেরাটোপে কাজ করতে করতে ভীষণ হাঁফ ধরে যায়। গুমোট লাগে ঘরটা। বিশদ

09th  May, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব  ১১
জয়ন্ত দে

 

সহজের ফোনটা পেয়ে কেমন যেন চুপচাপ হয়ে গেলেন পিশাচ সাধু। তাহলে তাঁর খারাপ কথাগুলো মিলে গেলেও কারও ভালো ভবিষ্যদ্বাণী করলে, তা মেলে না! বঁড়শি বারবার জানতে চায় তার কী হয়েছে। অনুমান করে ফেলে ফোন করেছিল সহজ। সে স্বামীকে বোঝায়, না মিলুক, তবুও তিনি যেন মানুষকে ভালো কথাই বলেন। বিশদ

09th  May, 2021
ছোট গল্প
সম্ভবামি যুগে যুগে

 

মহাপ্রস্থানের পথে অর্জুনের পতনের পর ভীম ও যুধিষ্ঠির আরও উত্তরদিকে এগিয়ে গেলেন। সেই বরফে ঢাকা শ্বেত প্রান্তরে মৃত্যুর অপেক্ষা করতে করতে অর্জুনের মন আসন্ন স্বর্গ না নরক এই দুর্ভাবনার  থেকেও শেষজীবনের পরাজয় ও হতাশায় আচ্ছন্ন হয়ে রইল। তিনি চিরকালের শৌর্যাভিমানী। বিশদ

25th  April, 2021
পিশাচ সাধু
পর্ব  ১০

তেত্রিশ দিন হয়ে গেল অথচ সহজের জীবনে ক্যাপ্টেনের করা ভবিষ্যদ্বাণী মিলল না। পরমেশ্বরের কথা শুনে ক্যাপ্টেনকে ফোন করে সহজ বলে দিল, ‘আপনি ফ্লপ! আপনার ভবিষ্যদ্বাণী ফ্লপ!’ সেদিন রাতেই বাড়ি ফিরে বাবার কাছ থেকে সহজ জানতে পারল, তার নামে একটি অফিসিয়াল চিঠি এসেছে। তারপর... বিশদ

25th  April, 2021
মিষ্টু
উৎপল দাস

রিমা ভিতরে ভিতরে জ্বলে পুড়ে মরে। এ পৃথিবীতে কেউ নেই যে তার অবস্থা বোঝে। মিষ্টুকে বিদায় না করতে পারলে যেন ওর শান্তি নেই।  বিশদ

11th  April, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৮

সহজের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় পরমেশ্বর শান্ত গলায় বলেছিল— বিচিত্রদা সেই বিরল মানুষ যারা এখনও মনে করে বিপ্লব হবে। কখন হবে, কীভাবে হবে কেউ জানে না, শুধুমাত্র একটা স্ফুলিঙ্গ। সেই স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল হয়ে যাবে। বিশদ

11th  April, 2021
বিদিশা কি ভানুমতী?
আশিস ঘোষ

বেশি কথা বা শব্দ, আলো এখন ভালো লাগছে না। বিদিশাকে বলতেই, ও টিউব লাইট নিভিয়ে জিরো পাওয়ারের নীল আলো জ্বালিয়ে দিল। জানলার পর্দা হাওয়ায় উড়ছে। বাইরের রাস্তায় গাড়ির শব্দ। বিদিশা আমার দিকে চেয়ে আছে। কিছুই বলছে না। বিশদ

04th  April, 2021
একনজরে
মসজিদে নামাজ পরতে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীদের হাতে প্রহৃত হলেন এক প্রবীণ ব্যক্তি। কেটে দেওয়া হল দাড়ি। প্রহৃত ব্যক্তির নাম আব্দুল সামাদ। প্রথমে তাঁকে অটো থেকে নামিয়ে জঙ্গলের মধ্যে অবস্থিত একটি কুঁড়ে ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। ...

দু’মাস আগের কথা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তুফান তুলে দেওয়াই বিজেপি’র একনিষ্ঠ নেতা-কর্মী হওয়ার অন্যতম মাপকাঠি ছিল। সময়ের ফেরে সেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন নেতাদের পোস্ট করাই কার্যত ‘ব্যান’ করে দিল বিজেপি নেতৃত্ব। ...

কোচবিহার পুরসভায় দু’শোরও বেশি ‘ভূতুড়ে’ শ্রমিক! বাস্তবে যাদের কোনও হদিশ মিলছে না। অথচ বেশ কয়েকমাস ধরে প্রতিমাসে ১৪ লক্ষ টাকা করে তাদের বেতন দেওয়া হয়েছে। ...

নন্দীগ্রামের গঙ্গামেলার মাঠে হলদি নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ তিনজনের দেহ উদ্ধার হল সোমবার। এদিন ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে কাঁটাখালি ও ১০কিলোমিটার দূরে জেলিংহাম এলাকায় ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহ বৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৯৬: জাপানে সুনামিতে ২২ হাজার মানুষের মৃত্যু
১৯৫০: শিল্পপতি লক্ষ্মী মিত্তালের জন্ম
১৯৫৩: চীনের প্রেসিডেন্ট জি জিনপিংয়ের জন্ম
১৯৬০: বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়
১৯৬৯: জার্মানির গোলকিপার অলিভার কানের জন্ম 



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭২.৪৩ টাকা ৭৪.১৪ টাকা
পাউন্ড ১০১.৬৬ টাকা ১০৫.১৭ টাকা
ইউরো ৮৭.০৬ টাকা ৯০.২৭ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
14th  June, 2021
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৯, ১০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৬, ৬০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৭, ৩০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৭২, ০০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৭২, ১০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
14th  June, 2021

দিন পঞ্জিকা

৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮, মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১। পঞ্চমী ৪৫/৪ রাত্রি ১০/৫৭। অশ্লেষা নক্ষত্র ৪১/৫৬ রাত্রি ৯/৪২। সূর্যোদয় ৪/৫৫/৩৮, সূর্যাস্ত ৬/১৮/১২। অমৃতযোগ দিবা ৭/৩৬ মধ্যে পুনঃ ৯/২৩ গতে ১২/৩ মধ্যে পুনঃ ৩/৩৭ গতে ৪/৩১ মধ্যে। রাত্রি ৭/০ মধ্যে পুনঃ ১১/৫৭ গতে ২/৫ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ২/৪৪ গতে ৩/৩৭ মধ্যে পুনঃ ৪/৩১ গতে ৫/২৪ মধ্যে। রাত্রি ৮/২৫ গতে ৯/৫০ মধ্যে। বারবেলা ৬/৩৬ গতে ৮/১৬ মধ্যে পুনঃ ১/১৭ গতে ২/৫৭ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/৩৮ গতে ৮/৫৮ মধ্যে। 
৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮, মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১। পঞ্চমী রাত্রি ৭/৩৬। অশ্লেষা নক্ষত্র রাত্রি ৭/৭। সূর্যোদয় ৪/৫৫, সূর্যাস্ত ৬/২০।  অমৃতযোগ দিবা ৭/৪০ মধ্যে ও ৯/২৭ গতে ১২/৮ মধ্যে ও ৩/৪২ গতে ৪/৩৫ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৫ মধ্যে ও ১২/২ গতে ২/৯ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ২/৪৮ গতে ৩/৪২ মধ্যে ও ৪/৩৫ গতে ৫/২৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/৩০ গতে ৯/৫৫ মধ্যে। বারবেলা ৬/৩৬ গতে ৮/১৭ মধ্যে ও ১/১৮ গতে ২/৫৯ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/৪০ গতে ৮/৫৯ মধ্যে। 
৪ জেল্কদ।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
ইউরো কাপ: হাঙ্গেরি ০ পর্তুগাল ৩ (ফুলটাইম)

11:28:00 PM

ইউরো কাপ: হাঙ্গেরি ০ পর্তুগাল ০ (হাফটাইম)

10:28:19 PM

যে এলাকায় সংক্রমণ বেশি সেখানে কড়াকড়ি করতে হবে, নির্দেশ রাজ্য প্রশাসনের 
যে এলাকায় সংক্রমণ বেশি সেখানে কড়াকড়ি করতে হবে। আজ, মঙ্গলবার ...বিশদ

07:51:00 PM

করোনা: গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তরপ্রদেশে আক্রান্ত ৩৪০, মৃত ৫৭ 

07:39:36 PM

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতীয় দলে কে কে রয়েছেন, জানুন 
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের জন্য আজ, মঙ্গলবার ভারতীয় দল ঘোষণা ...বিশদ

07:23:31 PM

করোনা: গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তরাখণ্ডে আক্রান্ত ২৭৪, মৃত ১৮ 

07:22:21 PM