Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

মাটির গন্ধ
অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী

একথা বলে সুমন মিটিমিটি হাসতে লাগল। তখন আমরা মাঠ পেরচ্ছি। দইয়ের ডোবা, মুক্তি ডোবা— আমাদের আশপাশের ডোবাদের নাম। ডোবা মানে যে বিশাল ব্যাপার, তা কিন্তু নয়। একেবারে নাতিদীর্ঘ আয়তন, বর্ষায় টইটম্বুর হয়ে ফুলে থাকে। জল যত কমে, টুলু পাম্প বসিয়ে তুলে নেয় চাষিরা। তখন জল নেমে যায় নীচে, সেখানে তখন বনকলমি আর কচুরিপানার দাম জল ছেয়ে ফেলে। তেমনই একটি জায়গা দেখিয়ে সুমন বলল, ‘ওখানে রহস্য আছে।’
‘কী রহস্য?’
‘ফি-বর্ষায় ওই জায়গাটা গোল হয়ে বসে যায়। এবারেও গিয়েছে। তুই হয়তো বুঝতে পারছিস না, কিন্তু গিয়েছে। আমি মাটি চিনি। মাটির জাত জানি। নতুন ঘাস যতই সে মাটি ঢেকে দিক, আমার চোখ সে এড়াতে পারবে না। আমার কী মনে হয় জানিস, ওখানে কোনও প্রাচীন জন্তু বাস করে।’
‘মাটির নীচে?’
‘হ্যাঁ।’
আমি একটু অবাক হয়ে বলি, ‘সে কোন জন্তু?’
‘কচ্ছপ।’
‘কচ্ছপ!’ আমি আরও অবাক। বলি, ‘মাটির নীচে থেকে সে বেঁচে থাকে কী করে?’
সুমন বলে, ‘হ্যাঁ। এখানেই থাকে সে। এখানের মাটির নীচ দিয়ে মুক্তির ডোবার ভেতর চলাচলের একটি রাস্তা আছে। কচ্ছপটা সেই পথে গিয়ে ডোবার জল-মাটি-নুন খেয়ে আসে। শতাব্দী প্রাচীন কচ্ছপ ওটা। মাটির নীচে ওর বাস। সেখানেই ও ডিম পাড়ে।’
‘বাচ্চা দেখেছিস কখনও?’
‘না।’
‘তবে?’
‘তবু আমার মন হয়, ওটি একটি কচ্ছপ।’
কথা বলতে বলতে আমরা মা মনসার ঢিপি পেরিয়ে যাচ্ছি। বনের ভিতরেই এই ঢিপি। একদা এখানে মা মনসার পুজো হতো। কিন্তু বেদিটা ছিল আমাদের পাশের গ্রাম গণেশপুরের এক লোকের। সে পরে মা মনসাকে তুলে নিয়ে চলে যায়। সেই থেকে জায়গাটা পরিত্যক্ত। ঝোপঝাড় আর জংলাগাছ, সঙ্গে সাপ-শিয়ালের গর্ত আছে পরপর।
হাঁটতে হাঁটতে আমরা চলে এলাম সুমনের নিজের জমিতে। সেখানে সে তার নিজস্ব ভিটে তৈরি করতে চলেছে। কোমর অবধি দেল গেঁথে ফেলে রেখেছে সুমন। দুটি বর্ষা খেয়ে সেই দেলের উপর সবুজ শ্যাওলা ধরেছে। সঙ্গে অনুচ্চ ফার্ন গাছ।
আলপথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমরা মাটির গন্ধ পাচ্ছিলাম। সোঁদা গন্ধের কথা আমরা সকলে জানি। কিন্তু যারা মাটির কাছাকাছি থাকে, মাটির গন্ধ একমাত্র তারাই পায়। ধান রোয়ার সময় মাটির যে গন্ধ থাকে, ধান পাকলে সে গন্ধ যায় পাল্টে। আবার সে ধান কাটার সময়ও মাটির গন্ধ অন্য। রোদের গন্ধ একেবারে মুছে গেলে সন্ধের গন্ধ উঠে আসে মাটির তল থেকে।
সুমন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ‘ওকে ছেড়েই দেব ভাবছি। একদম কাগজে-কলমে ছেড়ে দেব। যাকে বলে, ডিভোর্স। এতদিন তো ওর সঙ্গে লড়াই করলুম। কিন্তু এখন ক’দিন ওর কথা খুব মনে পড়ছে। মনে হল, যে থাকতে চায় না, তাকে জোর করে ধরে রেখে লাভ কী? ও ছেড়ে দেওয়াই ভালো। তাতে ও বাঁচে, আমিও বাঁচি। শুধুমুদু গোঁ ধরে বসে থেকে লাভ নেই। তোর উকিল কাকাও বলছিল, আর টানা-হেঁচড়া করিস না সুমন, ওকে তুই ছেড়ে দে। ৪৯৮-এ তে যদি কেস দেয়, তুই পালিয়েও বাঁচতে পারবি না।’
সুমনের মুখের দিকে তাকালাম। ওর এই কথায় যে আমি বেশ অবাক হয়েছি, বুঝতে পারছি। মাসখানেক আগেও ও আমাকে বলেছিল, ‘ছাড়াছাড়ির কোনও প্রশ্নই নেই, আমি লড়ে যাব। আবাগীর বেটিকে দেখিয়ে দেব আমার ক্ষমতা, আমার জেদ। ওর জন্য কম টাকা খরচ করেছি? ওর এমএ পড়ার খরচ আমি দিয়েছি। কত গয়না গড়িয়ে দিয়েছি বিয়ের আগেই। ওর বাপকেও টাকা দিয়েছি, দোকান কেনার জন্য। নইলে কাজ করত তো পরের দোকানে। আমি ছাড়ব! বিয়ের আগে আমার যে তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে ওর জন্য, তা ফেরত দিক—তখন ভাবব।’
তখন আমি বলেছিলাম, ‘ওকে বিয়েটা করাই তোর ভুল ছিল। নিজে প্রেম করে বিয়ে করেছিস, আমাদের কিছু বলার ছিল না। ও এমএ পাশ আর তুই ক্লাস সেভেন— ম্যাচ খায়?’ তখন সুমন বলে, ‘সেটা প্রেম করার সময় মাথায় রাখা উচিত ছিল ওর— আমি তো লুকাইনি। সেদিন আমার টাকা দেখে আমার সঙ্গে জুড়েছিল। আর আজ আমি নিঃস্ব দেখে আমায় ছেড়ে দিতে চায়। এমন ব্যবহার এখন করছে যেন লাখপতির বাপের একলতি মেয়ে। ওদিকে বাপ তো টিপছাপ পাশ, রেল বাজারের দোকানে সাইকেল সারায়।’ তারপর একটু থেমে বলেছিল, ‘জমি বেচার টাকায় ঘটা করে বিয়ে করেছি, ওকে আমি ছাড়ব না। অন্য কাউকে বিয়ে করতেও দেব না— আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব।’
জমি বেচার টাকায় সুমন লোক খাইয়েছে— বিয়ের দিনেই শুনেছিলাম। এখনও শুনলাম। জমি বেচে লোকে মেয়ের বিয়ে দেয়, ছেলের বিয়েতেও জমি বেচতে হয়—শুনিনি কোনওদিন।
সুমন যখন দিল্লিতে থাকত, তখন বেশ টাকাকড়ি করেছিল। ওরা তিন ভাই, দু’বোন। সুমন সবচেয়ে ছোট। সেভেনে ফেল করে জুয়েলারি কাজে ও দিল্লি চলে গেল। আমাদের এদিকের গ্রামের পর গ্রাম কেবল ওই একটি কাজের ভরসায় বড়লোক হয়ে গেল। প্রায় সকলেরই পাকা বাড়ি, কালার টিভি, ফ্রিজ, বাইক। এখন চল হয়েছে বাড়িতে মেসিন বসিয়ে জল তুলে ছাদের ট্যাঙ্কে ভরে রাখা। রান্নাঘর, বাথরুমে ট্যাপকল, বেসিন। একেবারে শহুরে ব্যবস্থা।
সুমনও এইসব করতে পারত। দিল্লিতে নাকি ওর নিজস্ব দোকান ছিল, একটা ফ্ল্যাটও কিনেছিল। কিন্তু ও যখন পাকাপাকিভাবে ফিরে এল, তখন ও নিঃস্ব! শুনেছিলাম, ওর এক দাদাও দিল্লিতে থাকত। কিন্তু সেখানে জুয়ার ঠেকে যাওয়ার অভ্যাস ছিল তাঁর। সেখানে একবার তার প্রাণ সংশয় হয়। পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তবে নাকি সে ছাড়া পায়। আর এই টাকার সবটাই দিয়েছিল সুমন। এই ঘটনার দু’বছর পর সুমন ফিরে আসে। বিয়ে করে। চাষির ছেলে, চাষের কাজে জুড়ে যায় আবার।
তবে, ওদের নিজেদের জমি তেমন নেই। ভাই, দাদা, জ্যাঠা, কাকা—ইত্যাদিতে ভাগ বাঁটোয়ারা হতে হতে যা হাতে আসে তা সবার জন্য এক ছটাক করে বরাদ্দ হল। সেখানে কেউ বাড়ি তুলেছে, কেউ খামার করেছে, কেউ আম-জাম-কাঁঠালের বাগান করেছে।
ওর জমিটা সুমন ঘিরে দিয়েছে। বাঁশ আর বাঁখারি সহযোগে। এতটুকুন জমিতে সে নানাপ্রকার সব্জি ফলিয়ে রেখেছে। মুলো, বেগুন, লেবু, ঢ্যাঁড়স—কী নেই? মাটিতে পড়ে থাকা কাতানটা নিয়ে খ্যাঁচ খ্যাঁচ করে আখগাছে কোপ মারল। আখের কিনার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে বর্ষার জল। সেখানে বর্ষার মাছ। তারা ভয় পেয়ে চকিতে ধানগাছের ভেতর ঢুকে গেল।
আখ ছুলতে ছুলতে সে বলে, ‘ধানগাছের যে কী সুন্দর গন্ধ—আঃ!’
‘আর ধানফুল?’
‘সেও অতি চমৎকার!’
গ্রামে যাত্রা হবে। গ্রামের ছেলেরাই তা করবে। তার জন্য সুমনের বাড়িতে ছেলের দল চাঁদা চাইতে এল। তিনশো টাকা ধার্য হয়েছে তার জন্য। দলের লিডার বলল, ‘জানি তোকে এখানেই পাব, তাই এই পথেই তোদের পাড়ায় ঢুকলুম।’ সুমন আঁতকে উঠে বলল, ‘তিনশো! কী করে হয়? আমি দেব কোত্থেকে? আমার হাল তো জানো।’ লিম্বু বলে, ‘পুরো টাকা একসঙ্গে না দিলেও হবে। এ মাসে হাফ, বাকিটা ও মাসে দিবি। ঐতিহাসিক যাত্রাপালা—ড্রেসভাড়া করতেই অনেকগুলি টাকা খরচা হয়ে যাবে। তাছাড়া ফিমেলের রেট বেড়েছে। তিনজন ফিমেল আসছে। না করিস না। তোরা না দিলে দেবে কারা বল তো?’
‘আমার বর্তমান অবস্থা তুমি জানো লিম্বুদা। আমি চাষির ব্যাটা, মাঝে দশ বারো বচ্ছর জুয়েলারি কাজে দিল্লি গেছিলাম বটে, কিন্তু নানান কারণে আজ আমি নিঃস্ব। নিজের জমি নেই, পরের জমিতে মুনিষ খেটে খাই। বাঘাটির জগু সিংহরায়দের জমি দেখাশোনা করি। সেই ভোর পাঁচটায় খাবার বেঁধে বেরিয়ে যাই, ফিরি সন্ধেতে। আঝ ফিরলুম তাড়াতাড়ি কেন না আমার বন্ধু দেখা করতে এসেছে অনেকদিন বাদে। ও আমার সঙ্গে দেখা করতে সেই সিংহরায়দের জমি অবধি চলে গেছিল— এমনি টান, তার জন্য এট্টু আগে চলে না এলে হয়? তার উপর দেখছ, এই বাড়িখানা আমি আধখানা করে ফেলে রেখেছি, লিংটন অবধি যেতে পারিনি। দু’টি মাত্র ঘর বানাব, মাথায় টালি দেব—তাও কোঁকাচ্ছি! অথচ একদিন কত লোককে আমি খাইয়েছি। যাক, পুরনো কথা কিছু তুলছি না, তিনশো নয়, আমি একশো টাকা দেব।’
লিম্বু বলে, ‘জানি রে। ডিভোর্সটা আটকে আছে তোর। শুনি সে নাকি গরলগাছার কোনও এক হাইস্কুলে প্যারাটিচার পেয়েছে?’
মুখ গোঁজ করে সুমন বলে, ‘ওসব জানি না, খবর রাখি না।’
একটা শ্বাস ফেলে লিম্বু বলে, ‘যাক, ছাড় ওসব। একশো নয়, দুশো টাকা দিস ভাই। নইলে পালা নামাতে পারব না। গ্রামের মানুষ চাইল প্রতিবারে সামাজিক পালা হয়, এবারে ঐতিহাসিক হোক— তাই করা। যাই হোক, সোনাইদিঘি পালা করছি—পরেরবার আবার সামাজিক করব—ওতে খরচা কম।’
বলে পাঁচজনের দলটি আখ চিবতে চিবতে চলে যায়। চারদিক আবার নিস্তব্ধ হতে শুরু করে। এদিক-ওদিক থেকে পাখিরা আলগোছে ডাকে। সুমন বলে, ‘পাঁচ বছর প্রেম করেছি, বিয়ের পর এক বছর একসঙ্গে থাকা। ও ভেবেছিল বিয়ের পর আমরা দিল্লি চলে যাব, সেখানে গিয়ে থাকব। কিন্তু এটা বুঝতে পারেনি, ওখানে আর আমার ফিরে যাওয়ার কিছু ছিল না।’
সন্ধের পর মাঠের ধারে এসে সুমন প্রায়দিন বসে থাকে। যখন পুরো পূর্ণিমা থাকে, ও মাঠের ভেতর চলে যায়। সাপ বা অন্যান্য জীবজন্তুর ও ভয় পায় না— সকলেই ওকে চেনে জানে— ভয় কীসের? সেখানে দিনের আলোর মতো করে রাত জেগে থাকে। সে গ্রামের কোনও ক্লাবে যায় না, কোনও আড্ডায়ও থাকে না। মনুষ্য-বিবর্জিত হয়ে ও থাকে বলে ওকে আর তেমন কেউ ডাকে না। যাত্রাপালায় চাঁদা দিলেও ও যাত্রা দেখবে না—একথা হলফ করে বলা যায়। আমাদের সঙ্গেও আর যোগাযোগ রাখে না। আমিই ওর কাছে এলাম প্রায় এক বছর পর।
সুমন বলল, ‘হ্যাঁরে, মানুষের জীবনে কি কিছুই থাকে না? স্থায়ী বলে কিছু নেই? ছয় বছরের সম্পর্ক এইভাবে শেষ হয়ে যাবে— আমি কল্পনাতেও আনিনি। বলেছিলাম, মাটির বাড়িতে থাকতে হবে না তোমায়, আমি যেটা ভাগে পেয়েছি, সেখানে দু’কামরা ঘর তুলছি একটা, একটা বছর আর কষ্ট কর। শুনলই না! চলে গেল। ভেবে এখনও তেমন কিছু বুঝতে পারি না, বিয়ে জিনিসটা আসলে ঠিক কীরকম!’
এইভাবে একদিকে ও যেমন একলা হয়ে যাচ্ছে, নিজেকে একলা করে নিচ্ছে, অন্যদিকে ওর জন্য খুলে যাচ্ছে এক অন্যরকম জগতের সুবিশাল, অনন্ত এক দিগন্ত। সেখানে দেওয়ার কিছু নেই, আছে শুধু নেওয়ার। তা, সুমন কার্পণ্য করে না সে সব অমূল্যধন অঞ্জলি ভরে নিতে।
ঘাস, জলকাদা আর ভেজা বালিমাটির উঠোনে আমরা আধলা ইট পেতে বসে আছি। সুমন বলে, ‘কী করে ভুলব বল দিকি!’
আমি বলি, ‘অভ্যেস হয়ে যাবে।’
‘ও যেদিন নতুন করে আবার বিয়ে করবে, আমায় খবর দিস—কেমন?’
কী বলব? বলার কিছু নেই। ওর বউকে আমি দেখেছি দু’বার। বিয়ের দিন আর বিয়ের পরে একবার—যখন আমরা বন্ধুরা মিলে দলবল নিয়ে এসেছিলাম। সেদিন ওর স্ত্রীর আচরণ আমাদের কারও ভালো লাগেনি। সেদিন তাকে খুব অহংকারী ও উদ্ধত লেগেছিল। আমরা সকলেই এখন চাকরি-বাকরি করি, পড়াশোনা শিখেছি। কিন্তু আলটিমেট সুমন আমাদের বন্ধু, তা সে যত কমই লেখাপড়া করুক না কেন। সেদিন আমাদের মনে হয়েছিল, একজন এমএ পাশ মেয়ে প্রায় অশিক্ষিত একটি পরিবারের বউ হয়ে এসে তাদের মাথা যেন কিনে নিয়েছে।
সুমন পাতকুয়ো থেকে জল তুলে নিয়েছে। সারাদিনের পরিশ্রম ধুয়ে ফেলছে সেই ঠান্ডা জলে। ছোট বালতির সেই জল মাথায় ঢালছে আর মুখ দিয়ে একটা শব্দ করছে। খানিক পরেই সন্ধে নামবে বলে পাখিরা ফিরে যাচ্ছে। ঘাসের ভিতর, জলের ভিতর ও অন্তরীক্ষ থেকে নানারকম শব্দ ভেসে আসছে। বর্ষার ব্যাঙ ও উচ্চিংড়েরা ইতিমধ্যেই হল্লা মাচিয়ে আমাদের ঘিরে ফেলেছে। দইয়ের ডোবার ধার দিয়ে ফেরার সময় যে রুগ্ন বউটিকে দেখেছিলাম, সে এখন গোরুর দড়ি ধরে আলপথ দিয়ে ফিরছে। যে মাছেরা উঁকি দিচ্ছিল আখগাছের গোড়ায়, তারা কি ফিরে এসেছে আবার? ওই যে, শুকিয়ে যাওয়া একটি আমপাতা খসে পড়ল সেই জলে। আর এইভাবে একটি সন্ধে এসে উপস্থিত হল সুমনের অর্ধ-সংসারে।
মাঠঘাট, জলজঙ্গল ঘিরে এই যে সুমনের এক একাকী অদ্ভুত জগৎ, তার ভেতর থেকে আমি আমাদের চেনাজানার বাইরের আর এক সুমনকে চিনে নিতে থাকি। বুঝতে পারি, বউ চলে যাওয়ার পর সুমন এই বন-মাটি-জলজঙ্গল, গাছপালার সঙ্গে বড় একাত্ম হয়ে পড়েছে। এই এলাকার মাঠের ধারে ও মাঠের ভেতর যত ঝোপঝাড়, লতাপাতা, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ, বিল-ডোবা-পুকুর ও বন্যপ্রাণ আছে—সকলকে সে হাতের তালুর মতো চেনে। সেই সুমনকে আমরা কেউ চিনি না। যার গা থেকে উঠে আসে অন্যতর এক মাটির গন্ধ। 
অঙ্কন: সুব্রত মাজী
17th  January, 2021
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। বিশদ

31st  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। বিশদ

24th  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
গুরুদ্বার সিস গঞ্জ

দিল্লি দেখতে এসে চাঁদনী চক যাওয়া হবে না? তা কীভাবে হয়? অতএব দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ভ্রমণস্থল চাঁদনী চক।
বিশদ

17th  March, 2024
দেখা যায় না, শোনা যায় পুতুল বাড়ি
 

আকর্ষণ, বিতর্ক, কৌতূহলের চিরন্তন কেন্দ্রবিন্দু অলৌকিক দুনিয়া। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দুই শিবিরেরই এব্যাপারে আগ্রহ ষোলোআনা। তাই ভৌতিক সাহিত্য হোক বা সিনেমা, বাজারে কাটতি বরাবরই বেশি।
বিশদ

17th  March, 2024
প্রস্থান
দীপারুণ ভট্টাচার্য

শববাহী গাড়িটা গেটের ভিতর ঢুকতেই অরুণবাবু চারপাশটা দেখলেন। বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে তার ছেলে নীলাঞ্জন আর বউমা সুতপা। নীলাঞ্জন বড় চাকরি করে। সে ফোন পেয়েছিল অফিসে যাওয়ার পর। সুতপাকে বলেছিল, ‘বেরতে একটু সময় লাগবে। বিশদ

10th  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: জাহান আরার সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ পরব চলছে। আগ্রা জুড়ে উৎসবের উচ্ছ্বাস। এখন ১৬৪৪। বাদশাহ শাহজাহানের আগ্রা দুর্গে সবথেকে বেশি উজ্জ্বল আয়োজন। স্বাভাবিক। প্রতি বছর নভরোজের সময় আগ্রা দুর্গ এভাবেই সেজে ওঠে। সম্রাটের পুত্রকন্যারা এই সময়টায় পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন। বিশদ

10th  March, 2024
অতীতের আয়না: বাঙালির সার্কাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

১৯২০ সালের ২০ মে। নিজের ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নিয়ে সিঙ্গাপুরে ট্যুরে গিয়ে জন্ডিস হয়ে মারা গেলেন প্রিয়নাথ বসু। শুধু উপমহাদেশের সার্কাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও উৎকর্ষের নতুন মানদণ্ড ছাড়াও, বিনোদন শিল্প হিসেবে সার্কাসকে দৃঢ় ভিত দিয়ে গেলেন তিনি। বিশদ

10th  March, 2024
ভোগ
শুচিস্মিতা  দেব

পুতুলকে সদ্যই নিমতিতা থেকে ‘রায়চৌধুরী ভিলা’তে এনেছে তার পিসি সবিতা। সবিতা এই পরিবারের বহু দিনের থাকা-খাওয়ার মাসি। টিভি সিরিয়ালের মতো প্রকাণ্ড বাড়িখানা দেখে পেরথমেই ভেবলেছে পুতুল। ফুটবল মাঠের মতো বৈঠকখানা। বিশদ

03rd  March, 2024
রুপোর চাকু

আলমারিটা খুলতেই দাদার চোখ চলে গিয়েছিল। উপরের তাকে জামা কাপড়ের পাশে খালি জায়গায় শোয়ানো ছিল। বাজপাখির চোখ দাদার।
বিশদ

25th  February, 2024
অপরাজিতা
মীনাক্ষী সিংহ

জুনিয়র ডাক্তার সুমন সান্যাল জানিয়ে গেল অপারেশন থিয়েটার রেডি, এবার ডাঃ মিত্রকে যেতে হবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠলেন সার্জেন মাধবিকা মিত্র। আজ একটা ক্রিটিক্যাল অপারেশন। বছর সতেরোর মেয়েটির মায়ের মুখ মনে পড়ল মাধবিকার। বিশদ

18th  February, 2024
একনজরে
নির্বাচনী কাজে চরম ব্যস্ততা রয়েছে পুলিসের। এছাড়া ভোট আবহে নিত্যদিন বিভিন্ন সভা থেকে মিছিলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা সহ নাকা চেকিংয়ে চরম ব্যস্ত পুলিস-প্রশাসন ...

এরাজ্যে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে প্রথম কারখানা খুলবে মাদার ডেয়ারি। তা থেকে সরাসরি কর্মসংস্থান হতে পারে প্রায় ৪০০। কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল ডেয়ারি ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের ...

পিছনে লেগে রয়েছে ইডি। চীনা ভিসা দুর্নীতি মামলায় ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে চার্জশিটও জমা পড়েছে আদালতে। রাহুল গান্ধী সহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের সমালোচনা ...

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে শ্রীরামপুর লোকসভায় জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সাত বিধানসভার মধ্যে একমাত্র শ্রীরামপুরেই লিড পাননি ঘাসফুলের দাপুটে প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এই কেন্দ্রে পুরনো ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস
১৮০৯: ইউরেশীয় কবি, যুক্তিবাদী চিন্তাবিদ ও শিক্ষক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর জন্ম
১৮৫৩: এশিয়ায় প্রথম ট্রেন চালু হয়
১৮৮৮: সাহিত্যিক হেমেন্দ্রকুমার রায়ের জন্ম
১৯১৬: অভিনেত্রী ললিতা পাওয়ারের জন্ম
১৯৩০: ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামে অংশ নিয়ে মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে বিপ্লবীরা চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখল করে
১৯৫৫ - নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন পদার্থ বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের মৃত্যু
১৯৫৮ - ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার ম্যালকম মার্শালের জন্ম
১৯৬২: অভিনেত্রী পুনম ধিলনের জন্ম
১৯৬৩: ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার ফিল সিমন্সের জন্ম
১৯৭১: কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন
১৯৮০: জিম্বাবুইয়ে স্বাধীনতা লাভ করে
১৯৮১: সুরকার, গীতিকার ও লোকগীতি শিল্পী তথা বাংলার লোকসঙ্গীতের প্রসারে ও প্রচারে যাঁর অবদান অসীম সেই নির্মলেন্দু চৌধুরীর মৃত্যু
১৯৮৬:  স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতা, লোকসভার প্রাক্তন সদস্য অতুল্য ঘোষের মৃত্যু
১৯৯২: ক্রিকেটার কেএল রাহুলের জন্ম



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.০৩ টাকা ৮৪.১২ টাকা
পাউন্ড ১০২.৫৫ টাকা ১০৫.১৬ টাকা
ইউরো ৮৭.৪৮ টাকা ৮৯.৮৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
17th  April, 2024
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৪,৩৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৪,৭০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭১,০০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৪,১০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৪,২০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৫ বৈশাখ, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪। দশমী ৩০/৩৫ অপরাহ্ন ৫/৩২। অশ্লেষা নক্ষত্র ৬/৩৮ দিবা ৭/৫৭। সূর্যোদয় ৫/১৭/৪৩। সূর্যাস্ত ৫/৫৪/১৬। অমৃতযোগ রাত্রি ১২/৪৪ গতে ৩/১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ প্রাতঃ ৬/৫৯ মধ্যে পুনঃ ১০/২০ গতে ১২/৫২ মধ্যে। বারবেলা ২/৪৫ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ১১/৩৫ গতে ১/০ মধ্যে। 
৫ বৈশাখ, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪। দশমী রাত্রি ৭/৫। অশ্লেষা নক্ষত্র দিবা ৯/৫২। সূর্যোদয় ৫/১৮, সূর্যাস্ত ৫/৫৬। অমৃতযোগ রাত্রি ১২/৪০ গতে ২/৫৩ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ১০/১৫ গতে ১২/৫১ মধ্যে। কালবেলা ২/৪৬ গতে ৫/৫৬ মধ্যে। কালরাত্রি ১১/৩৭ গতে ১/২ মধ্যে। 
৮ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
যৌন হেনস্তা মামলা: আজ শুনানি, দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে এলেন ব্রিজভূষণ শরণ সিং

10:44:24 AM

মহারাষ্ট্রের গড়চিরৌলিতে মাওবাদীদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে সেনা জওয়ানরা

10:42:59 AM

দেউলটির পানিত্রাসে নিবার্চনী প্রচারে তৃণমূল প্রার্থী সাজদা আহমেদ, সঙ্গে রয়েছেন আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল

10:38:07 AM

অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ায় একটি গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, অকুস্থলে দমকল

10:34:37 AM

চাঁচলে রক্তাক্ত তৃণমূল সমর্থক
সরকারি সাব মার্সিবলকে নিজের সম্পত্তি বলে দাবি কংগ্রেস পরিবারের। তৃণমূল ...বিশদ

10:31:41 AM

বিজেপি নেতার বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ
জামুরিয়া থানার বাগদিহা সিদ্ধপুর গ্রামে বিজেপি নেতা কাজল গড়ায়ের বাড়িতে ...বিশদ

10:25:07 AM