উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। হিসেব করে চললে তেমন আর্থিক সমস্যায় পড়তে হবে না। ব্যবসায় উন্নতি ... বিশদ
ড্রিকের পুরো নামটাও উচ্চারণে বেশ ঝামেলা। ও নিজেই বলল ড্রিক বলো, অসুবিধা নেই। তা ড্রিক এখন তাকে বাতিঘর, মূল শহর থেকে দু’দিকে উত্তাল সমুদ্রকে চিরে সরু লেজের মত যে রাস্তাটা চলে গিয়েছে সমুদ্রের ভেতরে, সেখানে যেতে দিতে নারাজ। বলছে, ‘ওটা দেখতে গেলে তোমাকে আরও সকালে আসতে হবে। এখান থেকে একটা সাইকেল নিয়ে নিও, সময় লাগবে ঘুরে দেখতে।’ ড্রিকের ডাচ ঘেঁষা ইংরেজি থেকে সব কথা উদ্ধার করতে না পারলেও মোটমাট যা বুঝছে তা হল এই।
মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ, কনকনে ঠান্ডা। সমুদ্রে ঘেরা হেরিটেজ শহরটির সি সাইডের এই ফুলে ফুলে ভরা চওড়া উঁচু টেরাসটা এখন ফাঁকা। সামনে অনেক পালতোলা অপূর্ব সাজানো লঞ্চ ঢেউয়ের দোলায় দুলছে। এপ্রিল-মে মাসে বেলাটা আর একটু বড় হয় কিন্তু ছুটির দিনে একা নিজের সঙ্গে থাকতে হবে এই মানসিক অবস্থায় ভেবে আজ উইকএন্ডের সকালেই বেড়িয়ে পড়েছে পৃথা। তার গুজরাতি রুমমেট সোনালের তখন মাঝরাত। কাল অফিস থেকে ফিরে পৃথা ওকে বলেছিল, রাজি হয়নি সোনাল। ওর নাকি অন্য প্রোগ্রাম আছে। সোনাল অন্য অফিসের। এখানে আছে অনেকদিন। ওর বন্ধুবান্ধব আলাদা।
বাসে আসার পথে চারপাশে চোখজুড়ানো দৃশ্যের মধ্যে পৃথা শুধু অভীকের পাঠানো মেসেজগুলি পড়ে ফেলছিল আবার। ‘সময়ের সঙ্গে সম্পর্কও বদলায়, নাহলে এত এত প্রেমের বিয়ের ডিভোর্স হতো না। সত্যি বলতে তোর প্রতি সেই টানটা এখন আর অনুভব করি না। হ্যাঁ, একসঙ্গে ছিলাম ঠিকই, সে তো দু’জনের সম্মতিতেই।’
দু’জনের সম্মতিতে যে সম্পর্ক শুরু হয়, একার সিদ্ধান্তে সেই এত বছরের সম্পর্ক কী করে ভেঙে দিতে পারিস তুই? না, একথা বলেনি সে, এইটুকু আত্মমর্যাদা বাঁচিয়ে রেখেছে এখনও। শুধু এই অপমানটা নিতে পারছে না পৃথা, পুড়ে যাচ্ছে ভিতরে। চারমাস আগে সে অন-সাইটে চলে আসার আগে থেকেই বুঝতে পারছিল অভীক যেন এড়িয়ে যাচ্ছে তাকে। ফোনে দায়সারা কথা, হোয়াটস অ্যাপে তার উচ্ছ্বাসের উত্তরে শুকনো ভদ্রতা। সে অভিমান করলে ব্যস্ততা দেখাত। তখনও বিশ্বাস ধরে রেখেছিল পৃথা। টানা দু’বছর লিভ ইনে ছিল তারা পুনেতে। জানাশোনা তারও আগে সেই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময় থেকে। এমন আচমকা সেই সম্পর্কে বিশ্বাস হারায় কোন পাগলে? আরও ভালো অফার পেয়ে যখন চেন্নাই চলে গেল অভীক, তখনও তো সব ঠিকই ছিল। কিন্তু তারপর সে জানল সব, নতুন সম্পর্কে জড়িয়েছে অভীক এবং সে থাকাকালীনই তার শুরু। অর্ণা তারই সম্পর্কিত বোন, চেন্নাই যাওয়ার পর পৃথাই যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিল দু’জনের। আলাদা কোম্পানি, কিন্তু একই শহরে তো, ভেবেছিল প্রয়োজনে চেনাশোনা কেউ থাকবে পাশে।
‘এর পরের ট্রিপ দুটো পনেরো। ভলেনডাম পৌঁছবে তিনটে পঁয়তাল্লিশ। তুমি কী করবে ভাবছ? আমি বলব, ক্রুজে যাওয়াটা তুমি ভীষণ উপভোগ করবে, ওটা মিস কোরো না প্লিজ ।’
ড্রিক এই মার্কেন ভলেনডাম এক্সপ্রেস নামের লাক্সারি ক্রুজটির টিকিট বিক্রেতার ছেলে। পনেরো-ষোলোর ছেলেটি স্কুলে পড়ে, ছুটির দিনে ওর বাবার ডিউটি করে দেয়, ওর বাবা সেদিন ওদের খেতের ফসলের দেখাশোনা করে।
প্রচণ্ড অশান্ত মনে একা একা এলোমেলো ভাবে শতাব্দী প্রাচীন বিচিত্র সব গাড়ি, লাল নীল কালো সবুজ অপরূপ সব ফুলে ছাওয়া বাড়ি, ক্যানেলে ভাসা রাজহাঁস, সমুদ্রের অনেকটা ভিতরে চলে যাওয়া পরিত্যক্ত ডেক আর দিগন্ত ছুঁয়ে ফেলা সবুজ খেত মিলে রূপকথার জগৎ মার্কেনকে দেখেও প্রবল শূন্যতায় আচ্ছন্ন পৃথা যখন এই খাঁড়ির ধারে দাঁড়িয়েছিল একটু, ড্রিক দৌড়ে এসেছিল। ‘ক্রুজে যাবে তো? এসো, টিকিট কেটে নাও।’
এগারোটার ক্রুজ ছেড়ে যাওয়ার পর আপাতত ড্রিকের হাতে কোন কাজ নেই। এ সময় সে বই পড়ে, মাঝে মাঝে নিজেকে চাঙ্গা করতে দু’-চার পাক দৌড়ে আসে, পরের ট্রিপের প্যাসেঞ্জার খোঁজে। এ সময় থেকে ট্যুরিস্ট আসা শুরু হয়ে যায়। কিন্তু চীনে নাকি কী একটা সাংঘাতিক ভাইরাস ছড়িয়েছে, তাই এত কম এবার, বলছিল ড্রিক। ক্রুজের ছোট টিকিটঘরের সামনের চেয়ারটা ছেলেটা দিয়েছে তাকে। পৃথা বলল, হ্যাঁ, মারাত্মক ভাইরাস নাকি! তবে সে তো উহানে! এই স্বপ্নের চেয়েও সুন্দর হেরিটেজ শহরটার বাইরে ড্রিকের জগৎ কিছু নেই, সে উৎসাহ নিয়ে সেসব গল্প করছিল। ওদের বিখ্যাত উডেন স্যু হাউসের কথায় পৃথা ব্যাগ থেকে বের করেছে ছোট দুটো কাঠের জুতো। এই দেখো, বলতে গিয়ে তার চোখে কেন জল এল সে নিজেই জানে না। এর একজোড়া যদি তার হয়, অন্যটা অভীকের ছাড়া কার হতে পারে! সময়ের সঙ্গে তার সম্পর্কের পাত্র তো বদল হয়নি।
ক’দিন আগেই মা ফোন করে বলেছে, ‘স্বাধীনতা নিয়ে অনেক ছেলেখেলা করলে, আমাদের কথা না শুনে ওকে বিশ্বাস করে তো ঠকলে। তোমার দিদি বলছে বাইরে থেকে ফিরে এবার কলকাতায় বদলি নিয়ে কাছাকাছি থাকো। তোমার বাবা নেই, অন্তত আমাকে একটু শান্তি দাও।’ তাদের দু’জনের একসঙ্গে থাকার খবর জানাজানির পর মা আর দিদি বহুদিন সম্পর্ক রাখেনি। সে ভেবেছিল, সারাজীবন সে আর অভীক একসঙ্গে থেকে এর জবাব দেবে। সে আর হল না। পৃথিবীটা বড় ছোট এখন। আর অর্ণা তাদের আত্মীয়, সবাই জেনে গেছে পৃথার অপমান।
প্রথম চাকরির পোস্টিং যখন পুনেতে হল, অভীকই প্রস্তাব দিয়েছিল, আমরা একটা ফ্ল্যাটই ভাড়া নিই, টু রুম ফ্ল্যাট, নিজেদের মতো থাকব। মেসে টেসে থাকলে পেটের বারোটা বাজবে।’
একসঙ্গে থাকার স্বপ্ন তো সেই কবে থেকে, তবুও মুখে পৃথা না না করেছিল। অভীক উড়িয়ে দিয়েছিল, ‘আরে আজকাল কেউ কারও ব্যক্তিগত স্পেসে নাক গলায় না। এ বরং ভালো, সংসার সংসার ট্রায়াল দেওয়া হয়ে যাবে। সেইজন্যই তো দুটো ঘর, নইলে তো ওয়ান বি এইচ কে অনেক কমে হয়ে যেত।’ একটা ঘর বাড়তিই ছিল টানা দু’বছর। এক জায়গায় পোস্টিং শুনে মা বলেছিল, ‘তোরা বরং বিয়েটা করেই নে।’ এ কথায় অভীক কেন, পৃথাও পাত্তা দেয়নি। সদ্য চাকরিতে ঢুকেছে, এখনই বিয়ে কি! একটু গুছিয়ে নিই।
এর মধ্যে বার দুই কফি-বিস্কিট খেয়েছিল পৃথা। এই তীব্র ঠান্ডার ভিতরেও সমুদ্রের পাড়ের ক’টা রেস্তরাঁয় খাচ্ছে লোকজন। ছেলেবুড়ো সবার হাতে মগ ভর্তি বিয়ার। মাঝে মাঝে লাল বলটা লুফতে লুফতে ড্রিক ঘুরে আসছে ওদিকে, ক্রুজের প্যাসেঞ্জারের সন্ধানে। দু’-চারজন এলে হাসিমুখে ক্রুজের টিকিট দিচ্ছে আর কাজ শেষ করেই গল্পের মধ্যে ফিরে আসছে আবার। ইন্ডিয়ার নাম শুনেছে ও, কিন্তু এর আগে কোন ইন্ডিয়ান দেখেনি। বন্ধুদের বলবে তার একজন ইন্ডিয়ান বন্ধু হয়েছে!
‘না ড্রিক, বন্ধু না! ভাই বলি তোমাকে? তোমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে? তাহলে বেশ যোগাযোগ থাকবে, ছবি পাঠাব আমি। আমাদের দেশটাও খুব সুন্দর ড্রিক।’
না, ওসব নেই ড্রিকের, অবসরে সে বই পড়ে। কিন্তু ফোন নম্বর আছে। তারপরে ড্রিক হাসতে লাগল, ‘তুমি বলছ আমি তোমার ভাই? তা কী করে হবে? অপরিচিত ছেলেমেয়ে পরিচয় হলে বন্ধু হয়। আমি বন্ধুই।’
‘ইস, এতটুকু ছেলে নাকি আমার বন্ধু?’ বলে তারা এমন হাসাহাসি করতে লাগল যেন বহুকাল আগে থেকে চেনে পরস্পরকে।
বিশাল লাক্সারি ক্রুজের ভিতর থেকে নীচের ডেকে দাঁড়ানো ড্রিককে আরও ছোট্ট দেখাচ্ছে এখন। ড্রিকের ইচ্ছে ছিল পৃথা একদম ছাদের ডেকে বসে যায়, উত্তাল সমুদ্রের মধ্যে মার্কেন সহ তার লেজকে দূর থেকে দেখাও এক অভিজ্ঞতা। পৃথা রাজি হয়নি। একেই তার ঠান্ডার ধাত, তার ওপর ওই হু হু হাওয়া!
‘আমার আর তোমাদের লাইটহাউসটা দেখা হল না ড্রিক।’
‘হবে, তুমি আবার আসবে এখানে, আমি বলছি দেখো। আমাদের মার্কেনের ঘোড়াকে যদি কেউ দেখতে চায় মন থেকে, ও তাকে ঠিক টেনে আনে। এপ্রিল-মে-তে এখানে প্রচুর টিউলিপ ফুটবে।’ ড্রিক তার হাত ছুঁয়ে হাসল, ‘তখন সিস্টার, আবার এসো তুমি।’
পৃথাও হাসছে। এই কিশোরকে তার মনে পড়বে খুব। কতদিন পর সে অমন ভিতর থেকে হেসে উঠেছিল! ড্রিকেরও কি! দূর, কত ট্যুরিস্ট আসে যায় ওদের! কিন্তু জাহাজটা চোখের আড়ালে না যাওয়া পর্যন্ত যে তাকিয়ে হাত নাড়ছিল ড্রিক, হাওয়ায় উড়ছে ওর সোনালি চুল, ওরকম করেই কি সব ট্যুরিস্টদের বিদায় জানায় ও?
আস্তে আস্তে সমুদ্রঘেরা অপরূপ মার্কেন তার শেষপ্রান্তের বাতিঘর সহ মিলিয়ে যাচ্ছে। চারপাশে অবর্ণনীয় বর্ণিল এক আকাশ আর সমুদ্র স্নিগ্ধ নীলে মেশামেশি। অদ্ভুত শিহরণ হচ্ছিল পৃথার। অভীক তার বিশ্বাস ভেঙে দেবার পর সে কতবার মৃত্যুর কথা ভেবেছে বোকার মতো! অথচ এই অসীম অনন্তের মাঝে কত তুচ্ছ ক’দিনের মাত্র জীবন তাদের! কনকনে ঠান্ডা হাওয়া তার জ্যাকেট স্কার্ফ ভেদ করে বিঁধছে মুখে শরীরে। পৃথা খোলা জানলা থেকে মুখ ফেরাল না।
ব্রেকফাস্টে আজ শুধু গরম স্যুপ বানিয়ে এনে খাচ্ছিল পৃথা। সেদিন ঠান্ডাটা জোর লেগেছে, টনসিলে ব্যথা খুব, জ্বরও আছে। কিন্তু এই নিয়েই ক’দিন অফিস যেতে হচ্ছে, প্রজেক্ট শেষ করার তাড়া। হঠাৎ সোনাল উত্তেজিতভাবে ঢুকল। ‘তুমি কোন ইমেল পেয়েছ পৃথা?’
সোনাল তার রুমে কমই আসে। এই সকালে ওকে এত টেনশড দেখে পৃথা একটু অবাক হয়ে তাকাল। সোনাল তাড়া দিয়ে বলল, ‘তোমার মেলটা একবার চেক করো তো। আমার অফিস জানিয়েছে, আমাদের নাকি দেশে ফিরে যেতে হবে।’
পরের দু’দিন ঝড়ের গতিতে কাটল তাদের। হাতে মাত্র এক সপ্তাহ সময়, অফিস টিকিট পাঠিয়ে দিয়েছে। এক বছরের জন্য পাঠিয়েছিল অফিস, সেইমত নিয়ে আসা বিস্তর জিনিসপত্র গুছোনো, ক্লায়েন্টের বাকি কাজ বুঝে নেওয়া, এই ঠান্ডায় ঘোরাঘুরি করে শরীরটা আরও খারাপ লাগছে পৃথার। সেই মারণ ভাইরাস চীন থেকে ছড়িয়ে গিয়েছে অনেক দেশে। ইতিমধ্যেই ইতালির ভয়ঙ্কর সব মৃত্যুর ছবি আসছে টিভিতে। স্পেনেরও। মারাত্মক ছোঁয়াচে এই ভাইরাসের কোন ওষুধ নেই এখনও। সব দেশেই নাকি দ্রুত সমস্ত রকম কাজকর্ম বন্ধ করে লকডাউন করে দেওয়া হচ্ছে। সব অফিস ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে নিজেদের এমপ্লয়িদের। মুখে সবার মুখোশ উঠে গিয়েছে। তাদের এখানকার অফিস বন্ধ হয়ে গেল, বাড়ি থেকে কাজ এখন থেকে। মাত্র দু’-চারদিনের মধ্যে আমস্টারডাম শহরের রাস্তাঘাট জনশূন্য। তারা ক’জন শুধু ফেরার অপেক্ষায় নিজেদের কোটরে। মা দিদি বন্ধুরা উদ্বিগ্নভাবে ফোন করছে বারবার, আর প্রতিবার রিং হলেই সে চমকে উঠছে, সেই বিশেষ ফোনটা আর কোনওদিন আসবে না জেনেও।
মাঝে মাত্র দু’দিন। পার্সে টিকিট, পাসপোর্ট সব গোছাতে গোছাতে পৃথার মনে পড়ল ড্রিককে। তাহলে ড্রিক, এপ্রিল-মে-তে বেলা বাড়বে, টিউলিপ ফুটবে মাঠ আলো করে, কিন্তু তোমার কথা মিলবে না। মার্কেনের ঘোড়া আমাকে ডাকবে না। এ দেশে আসাই হয়তো হবে না আর।
ড্রিকের নম্বরটা খুঁজছিল পৃথা, বলবে চলে যাচ্ছে সে। তার আগে কিচেন থেকে একটু গরম জল করে আনতে হবে, খুকখুকে কাশিটা কমছে না। টনসিলাইটিসের রোগী, চিরদিন তার এই সমস্যা। রুম থেকে বেরতে গিয়ে দেখল সোনাল দরজায় দাঁড়িয়ে ভয়ার্ত চোখে দেখছে তাকে। সে বলল, ‘কিছু বলবে সোনাল?’
সোনাল কোন কথা না বলে প্রায় ছিটকে সরে গেল। হাসি পেল পৃথার, কী যে ভাইরাস এল, সামান্য হাঁচি-কাশিতেই লোকজন ভয়ে অস্থির। গরম জল খেয়ে আরাম লাগছিল তার, এবার ড্রিককে একটা ফোন করা যাক।
বাইরের দরজায় কেউ নক করল। কিছু কথা হচ্ছে, মুহূর্তের মধ্যে দুজন গ্রহান্তরের প্রাণী ঘরে ঢুকে এল। ডাচ ভাষায় কিছু বলছে তাকে, পৃথা ভীষণ চমকে তাকিয়ে আছে। অন্যজন ইংরেজিতে বলল, ‘চলুন, হাসপাতাল যেতে হবে আপনাকে।’ সে বলতে গেল, ‘ না না এটা সে অসুখ নয়, ঠান্ডা লাগলেই আমার ...।’ একজন ততক্ষণে তার কপালে একটা যন্ত্র ছুঁইয়েছে, মাস্কের মধ্যে খসখসে গলায় বলল, ফিভার। অন্যজন দরজার দিকে হাত দেখিয়ে বলল, প্লিজ।
সোনালকে খুঁজল পৃথা, নেই কোথাও। খবর ও-ই দিয়েছে। এদেশের তৎপর মেডিক্যাল টিম একদম রক্ষাকবচের পোশাক পরে মুহূর্তে হাজির। প্রতিবাদ করে লাভ নেই, যেতেই হবে। জিনিসপত্র পড়ে রইল। নিশ্চিন্ত যে, এখন কেউ ছোঁবে না। তার একটুও ভয় করছে না, কিচ্ছু হয়নি তার সে জানে। খুব তাড়াতাড়িই ফিরবে সে। ড্রিককে ফোনটা করা হল না, ঠিক আছে ফিরে এসেই করবে।