Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ফেয়ার-ওয়েল
অঞ্জনা চট্টোপাধ্যায়
(১)

নাইন-বি এর ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে ধীরপায়ে সিঁড়ির দিকে এগিয়ে চললেন অলকানন্দা রায়চৌধুরী, ছাত্রীদের প্রিয় শিক্ষিকা ‘অলকা দি’। গতকাল রাত থেকেই হাঁটুর ব্যথাটা আবার চাগাড় দিয়েছে, পা মুড়তে বেশ কষ্ট হচ্ছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে মনের ভিতর যে ব্যথাটা জমে রয়েছে তার কাছে এই হাঁটুর ব্যথাটা তো একেবারেই তুচ্ছ। রেলিং ধরে ধীরে ধীরে একতলার দিকে নামতে শুরু করলেন অলকা।
সেই কবে, আজ থেকে প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর আগে এই আনন্দময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে বাংলার শিক্ষিকা হয়ে এসেছিলেন। তখন টালির চালের গোটা পাঁচেক ঘর আর কাজ চালাবার মতো একটা শৌচাগার নিয়ে তৈরি আনন্দময়ী বালিকা বিদ্যালয় ছিল আশেপাশের চার-পাঁচটা গ্রামের মধ্যে একমাত্র মেয়েদের স্কুল। মেয়েরা ক্লাস এইট পর্যন্ত নিশ্চিন্তে পড়াশোনো করতে পারত এখানে। এ অঞ্চলের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী বিশ্বনাথবাবু তাঁর নিরক্ষর মায়ের স্মৃতির উদ্দেশে এই স্কুলটি তৈরি করেছিলেন। তবে সকালবেলার প্রাইমারি সেকশনে ছাত্রীসংখ্যা বেশ ভালো হলেও দুপুরের স্কুলে ছাত্রীর সংখ্যা ছিল নগণ্য। চারটি ক্লাস মিলিয়ে খুব বেশি হলে শ’খানেক ছাত্রী ছিল। তার ওপর ক্লাস এইটের জনা পনেরো মেয়ের মধ্যে দু’-তিন জন তো আবার ‘বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে’ বলে মিড সেশনেই লেখাপড়ায় ইতি টানত। তবে শম্বুকগতিতে হলেও ধীরে ধীরে বাবা-মায়েদের সচেতনতা বাড়ল, স্কুলেও বাড়তে লাগল ছাত্রীর সংখ্যা। প্রথমে শুরু হল মাধ্যমিক আর তার বছর পাঁচেক পর থেকে উচ্চমাধ্যমিকের পঠন-পাঠন। টালির চালের ঘরগুলো আস্তে আস্তে বদলে গেল তিনতলা বিল্ডিংয়ে। স্কুল ইউনিফর্মের সাদা শার্ট আর কমলা স্কার্ট পরা মেয়েগুলো ক্লাস এইট পাশ করার পর কমলা শাড়ি আর সাদা ব্লাউজে পুরোদস্তুর মহিলা সেজে স্কুলে আসতে লাগল। এখন অবশ্য মেয়েদের আর শাড়ি পরে স্কুলে আসতে হয় না। শাড়ি পরলে সাইকেল চালাতে অসুবিধা হয়, তাই হেড-মিসট্রেস উঁচু ক্লাসের ছাত্রীদের জন্য সালোয়ার-কামিজ বরাদ্দ করেছেন। সাদা সালোয়ার, হাঁটু অবধি লম্বা কমলা কামিজ, সাথে সাদা ওড়না। শুধু ছাত্রীরাই নয়, এখন তো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফল হয়ে শিক্ষকতা করতে আসা বেশ কিছু নব্য শিক্ষিকাও অসাচ্ছন্দ্যের দোহাই দিয়ে ছোট ছোট কুর্তি আর গায়ের সঙ্গে মিশে থাকা লেগিংস পরে স্কুলে আসছে। অলকার মতো কিছু প্রাচীনপন্থী শিক্ষিকা প্রথম প্রথম ওজর-আপত্তি করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘ছাত্রীদের কাছে, তাদের অভিভাবকদের কাছে সর্বোপরি সাধারণ মানুষের কাছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটা আলাদা সম্মান আছে। তাঁদের কি আর অফিসযাত্রীদের মতো সাজগোজ করলে চলে!’ কিন্তু পরিবর্তনের খরস্রোতে ওঁদের রক্ষণশীল ধ্যানধারণাগুলো খড়কুটোর মতোই ভেসে গিয়েছিল।
স্কুলের পরিবর্তনের মতোই অলকার মধ্যেও ঘটে গিয়েছে অনেক পরিবর্তন। সেদিনের সদ্য এমএ পাশ করা, পড়া না পারলে বকাঝকা করে ছাত্রীদের কান মুলে দেওয়া, মতের অমিল হলে সহশিক্ষিকাদের সঙ্গে ঝগড়া করা অলকা আজ সহিষ্ণু, ছাত্রীদের মাতৃসমা, সহ-প্রধান শিক্ষিকা। চাকরি করতে করতে সহ্য করার ক্ষমতাটা ধীরে ধীরে অনেক বেড়ে গিয়েছে অলকার। না হলে যখন ওঁর মতো অভিজ্ঞ শিক্ষিকাকে হেড-মিসট্রেস না করে, মাত্র দুবছর আগে এই স্কুলে অঙ্কের শিক্ষিকা হয়ে আসা সুনন্দাকে সেই পদে বসানো হয়, তখনও চুপ করে থাকেন। তবে উনি চুপ করে থাকলেও ওঁর মতো পুরনো শিক্ষিকারা কেউই আর চুপ করে থাকেননি, প্রতিবাদে মুখর হয়েছিলেন সকলে। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল বেশ কিছু নতুন মুখও। সেই প্রতিবাদের জোরেই শেষ পর্যন্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট হেড-মিসট্রেসের তকমা পাওয়া।
দীর্ঘশ্বাস ফেললেন অলকা। মনের ভিতর জমে থাকা ক্ষোভ আর অভিমানের পরিমাণও কিছু কম নয়, তবুও আজ সেসবের জায়গায় কষ্টটাই বেশি নাড়া দিচ্ছে মনকে। আজ যে এই স্কুলে শেষদিন অলকার, শেষ ক্লাস নেওয়া। কাল থেকে আর স্কুল থাকবে না, থাকবে না রুটিনমাফিক জীবন।
সিঁড়ির শেষ ধাপে এসে খেয়াল করলেন নোনতা বাষ্পে চশমার কাঁচ দুটো একেবারে ঝাপসা হয়ে গিয়েছে। শাড়ির আঁচল দিয়ে চশমাটাকে মুছে নিয়ে অফিসরুমের দিকে তাকালেন অলকা। একটু পরেই ওখানে শুরু হবে ওঁর ফেয়ার-ওয়েল— চাকরিজীবন সুষ্ঠুভাবে সুসম্পন্ন করার পুরস্কার। আজ, এই শেষের দিনে সব মনোমালিন্য ভুলে, শত্রু-মিত্র নির্বিশেষে সবাই অবসর জীবন সুখে-শান্তিতে কাটাবার শুভেচ্ছা জানাবে, দেবে ছোট বড় নানা ধরনের উপহার।
চোখে জল নয়, মুখে সেই চিরপরিচিত হাসি নিয়ে অলকা পা বাড়ালেন অফিসরুমের দিকে।
(২)
দরজার বাইরে মিনিট তিনেক দাঁড়িয়ে থাকার পর বিরক্ত হয়ে দ্বিতীয়বার কলিং বেলের ওপর চাপ দিলেন অলকা, এবার একটু বেশিক্ষণ ধরে। ভিতর থেকে হাওয়াই চটির শব্দ পেয়ে বুঝলেন প্রেমাংশুবাবু হন্তদন্ত হয়ে আসছেন দরজা খুলে দিতে। ফুলের তোড়া আর চকচকে রঙিন কাগজে মোড়া উপহারের বাক্স নিয়ে জড়ভরতের মতো পাশে দাঁড়ানো মাসকাবারি রিকশওয়ালা পাঁচুর দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করলেন অলকা। পাঁচু প্রায় দশ বছর ধরে অলকাকে সময়মতো স্কুলে পৌঁছে দিচ্ছে, ঠিক সময় বাড়ি ফেরত আনছে, দরকার পড়লে টুকটাক ফাইফরমাশও খাটছে। কাল থেকে ওরও ছুটি।
প্রেমাংশুবাবুর দিকে বিরক্তমুখে তাকিয়ে ঘরে ঢুকলেন অলকা। পাঁচুকে ইশারায় জিনিসপত্র ডাইনিং টেবিলের উপর রাখতে বলে, ফ্রিজ খুলে একটা ঠান্ডা জলের বোতল বের করে ঢকঢক করে বেশ খানিকটা জল খেলেন। শাড়ির আঁচলে মুখ মুছে, হাতব্যাগ থেকে টাকা বের করে কাঁচুমাচু মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকা পাঁচুর মাসমাইনে মিটিয়ে দিলেন।
‘দিদিমণি, যখনই কোথাও যাবার দরকার পড়বে, আমাকে একটা ফোন করে দেবেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে চলে আসব।’
‘আচ্ছা। এটা নাও, ছেলেমেয়েদের দিও’, টেবিলের উপর রাখা বাক্সগুলোর মধ্যে থেকে সবচেয়ে ছোট মিষ্টির বাক্সটা নিয়ে পাঁচুর হাতে দিলেন অলকা। নমস্কার করে পাঁচু চলে গেল।
‘মাসিমা, আপনাকে কি এখন চা দেব ?’, রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এসে প্রশ্ন করল শ্যামলী।
এতক্ষণে তাহলে টনক নড়েছে মহারানির। একেবারে অপদার্থ এই কাজের মেয়েটা, নাহলে বেল বাজিয়ে এভাবে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অলকাকে। কলিং বেলের আওয়াজ পেয়েও দরজা খোলার নাম নেই, রান্নাঘরে যে কী রাজকার্য করছিল কে জানে? মাস তিনেক হল কাজে ঢুকেছে, এখনও কিছুই শিখে উঠতে পারল না। একটা ভালো ঝি পেলেই একে ছাড়িয়ে দেবেন কাজ থেকে।
‘দাও, আর শোনো, শরবতের মতো একগাদা চিনি ঢেলে দিও না যেন’, কড়া গলায় নির্দেশ দিয়ে শোওয়ার ঘরে ঢুকে পড়লেন অলকা। শ্যামলীর ব্যাবহারে মাথাটা একেবারে গরম হয়ে গিয়েছে। মাথা আর তার সঙ্গে শরীর, দুটোকেই ঠান্ডা করার জন্য জামাকাপড় ছেড়ে ঢুকে পড়লেন লাগোয়া বাথরুমে।
(৩)
গায়ে দু’-চার মগ জল ঢালার পর মাথাটা একটু ঠান্ডা হল। মনে পড়তে লাগল পুরনো দিনের কথা।
প্রেমাংশুবাবু গ্রামীণ ব্যাঙ্কে চাকরি পেয়ে এই গোবিন্দপুরে এসেছিলেন। একটা ভালো বাড়িভাড়া দেখে মাস ছয়েকের মধ্যেই স্ত্রী-পুত্রকেও নিয়ে এসেছিল নিজের কাছে। তবে গোবিন্দপুরে আসার পর অলকার সঙ্গে বাপের বাড়ি আর শ্বশুরবাড়ির যোগাযোগ প্রায় ছিন্নই হয়ে গিয়েছিল। প্রতিমাসে একটা করে চিঠি লিখলেও যাতায়াত হতো কালেভদ্রে। তাই প্রাইভেটে এমএ পাশ করার পর যখন স্কুলে চাকরির সুযোগ এল তখন অলকা খুবই চিন্তায় পড়লেন। ছেলে দীপুর বয়স তখন মাত্র দু’বছর। এতটুকু ছেলেকে কার কাছে রেখে যাবেন? নিজেদের ভরা সংসার ফেলে ঠাকুমা, দিদিমা কেউই তো আর আসবে না নাতির দেখাশোনা করতে। তাহলে কি এত ভালো সুযোগটা শেষপর্যন্ত হাতছাড়া হয়ে যাবে? সংসার সামলানোর জন্য জলাঞ্জলি দিতে হবে কেরিয়ারকে?
সেই সময়ই একদিন দেখা পেলেন বাসন্তীর। বাসন্তী তখন বছর তিরিশের বিধবা, দশ-বারো বছরের মেয়েকে নিয়ে দাদাদের সংসারে থাকত। মা যতদিন বেঁচে ছিল, ততদিন খুব একটা অসুবিধা হচ্ছিল না। কিন্তু মা মারা যাওয়ার পর দাদা-বউদিরা ওর জীবন একেবারে অতিষ্ট করে দিয়েছে। উঠতে বসতে মুখনাড়া, খাওয়ার খোঁটা, খেতে দিচ্ছে বলে বাচ্চা মেয়েটাকেও সারাদিন গাধার খাটুনি খাটায়। তাই বাসন্তী ঠিক করেছে দাসীবৃত্তি যদি করতেই হয়, তাহলে পরের বাড়িতেই করবে, তাতে হাতে দু’পয়সা আসবে, মেয়েটার বিয়ের জন্য পণের টাকা জোগাড় হবে।
হাতে চাঁদ পেলেন অলকা। সংসারের দায়িত্ব বাসন্তীকে দিয়ে নিশ্চিন্তে স্কুলের চাকরিতে যোগদান করলেন।
কয়েক বছরের মধ্যেই ভাড়া বাড়ি থেকে চলে এলেন নিজস্ব বাড়িতে। দীপু ভর্তি হল স্থানীয় ছেলেদের স্কুলে। মেয়ে ষোলো বছরে পা দেওয়ার আগেই তার বিয়ে দিয়ে দিল বাসন্তী। জীবন এগিয়ে চলল নিজের নিয়মে। দীপু ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে ভালো চাকরি পেয়ে ভুবনেশ্বরে চলে গেল, দেখেশুনে নিজের পছন্দের মেয়ের সঙ্গে ছেলের বিয়ে দিলেন অলকা। এখন সাত বছরের নাতনি আর চার বছরের নাতিকে নিয়ে ছেলে-বউমার সাজানো সংসার। এত বছরে এত কিছুর পরিবর্তন হল কিন্তু বাসন্তীর কোনও পরিবর্তন হল না। ও আগের মতোই অলকার দেখানো পদ্ধতিতে কাজ করে যেতে লাগল।
সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল, ছন্দপতন হল মাস ছয়েক আগে। হঠাৎ একদিন বাসন্তী কাজ ছাড়ার আর্জি জানাল। বাসন্তীর কথা শুনে আকাশ ভেঙে পড়ল অলকার মাথায়। সামনেই স্কুলের হাফ-ইয়ারলি পরীক্ষা, ক্লাস সেভেনের প্রশ্নপত্র তৈরির দায়িত্ব পড়েছে অলকার ঘাড়ে। এ সময় বাসন্তী কাজ ছেড়ে দিলে চলবে কী করে?
অলকা অনেক বোঝালেন বাসন্তীকে। মাইনে বাড়িয়ে দেওয়ার লোভ দেখালেন, কিন্তু বাসন্তী নারাজ। ওর মেয়ে টিবি-তে ভুগছে, দেখাশোনা করার কেউ নেই, ছোঁয়াচে রোগ তাই হাত গুটিয়ে নিয়েছে সবাই। কিন্তু মায়ের মন কি আর অসুখবিসুখ মানে! তাই যে মেয়ে ইদানীং খোঁজখবর নেওয়াও প্রায় বন্ধই করে দিয়েছিল, আজ তার অসুখের খবর পেয়ে সবকিছু ছেড়েছুড়ে অনিশ্চিতের পথে পা বাড়াতে চায় বাসন্তী।
অলকা বুঝলেন আর কোনও আশা নেই, বাসন্তী কাজ ছাড়বেই। মৌখিক সম্মতি জানালেও আসন্ন অসুবিধার কথা ভেবে মনে মনে বাসন্তীর উপর রেগে রইলেন অলকা। ওর সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিলেন, কাজেকর্মে দোষত্রুটি খুঁজতে লাগলেন। এমনকী বাসন্তীর চলে যাওয়ার দিনেও ওর সঙ্গে ভালো করে দুটো কথা বললেন না, বিরক্ত মুখে হিসেব করে ওর মাইনেপত্র মিটিয়ে দিলেন। বাসন্তী অবশ্য কাজ ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে ওর ভাইঝি শ্যামলীকে সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে গেল।
(৪)
ঘাড়ে-গলায় মৃদুগন্ধী ট্যালকম পাউডার লাগিয়ে একটা পাতলা ম্যাক্সি পরে সোফায় এসে বসলেন অলকা। ডাইনিং-টেবিলের ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গিফট-বক্সগুলো গুছিয়ে রাখছিল শ্যামলী। অলকাকে দেখতে পেয়ে তাড়াতাড়ি করে রান্নাঘর থেকে চায়ের কাপ এনে সামনের টি-টেবিলে রেখে দিল।
প্রেমাংশুবাবু পিতলের ফুলদানি থেকে রঙিন কাপড়ের ফুলগুলোকে সরিয়ে দিয়ে তার জায়গায় অলকার আনা রজনীগন্ধার স্টিক সাজিয়ে রাখছিলেন। অলকাকে থমথমে মুখে বসে থাকতে দেখে সে সব ফেলে রেখে ওঁর পাশে এসে বসলেন। অলকার মনের অবস্থা আঁচ করতে পারছিলেন প্রেমাংশুবাবু। বছর কয়েক আগে উনিও তো পেরিয়ে এসেছেন এই পরিস্থিতি। রিটায়ারমেন্টের দিন ওঁর মনও খুব খারাপ ছিল। অলকার হাতে হাত রেখে প্রেমাংশুবাবু বললেন, ‘ছাত্রীদের কথা খুব মনে পড়ছে ?’
জলভরা চোখে তাকালেন অলকা। কী উত্তর দেবেন প্রেমাংশুবাবুর প্রশ্নের? অলকার মনে তো তখন ঘুরপাক খেয়ে চলেছে একটাই প্রশ্ন, বাসন্তী নামের যে কাজের মহিলাটি ওঁর কাছে এত বছর ধরে মুখ বুজে কাজ করে গেল, যাওয়ার বেলায় তারও কি একটা ফেয়ার-ওয়েল পাওনা ছিল না?
অঙ্কন: সুব্রত মাজী
28th  June, 2020
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। বিশদ

31st  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। বিশদ

24th  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
গুরুদ্বার সিস গঞ্জ

দিল্লি দেখতে এসে চাঁদনী চক যাওয়া হবে না? তা কীভাবে হয়? অতএব দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ভ্রমণস্থল চাঁদনী চক।
বিশদ

17th  March, 2024
দেখা যায় না, শোনা যায় পুতুল বাড়ি
 

আকর্ষণ, বিতর্ক, কৌতূহলের চিরন্তন কেন্দ্রবিন্দু অলৌকিক দুনিয়া। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দুই শিবিরেরই এব্যাপারে আগ্রহ ষোলোআনা। তাই ভৌতিক সাহিত্য হোক বা সিনেমা, বাজারে কাটতি বরাবরই বেশি।
বিশদ

17th  March, 2024
প্রস্থান
দীপারুণ ভট্টাচার্য

শববাহী গাড়িটা গেটের ভিতর ঢুকতেই অরুণবাবু চারপাশটা দেখলেন। বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে তার ছেলে নীলাঞ্জন আর বউমা সুতপা। নীলাঞ্জন বড় চাকরি করে। সে ফোন পেয়েছিল অফিসে যাওয়ার পর। সুতপাকে বলেছিল, ‘বেরতে একটু সময় লাগবে। বিশদ

10th  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: জাহান আরার সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ পরব চলছে। আগ্রা জুড়ে উৎসবের উচ্ছ্বাস। এখন ১৬৪৪। বাদশাহ শাহজাহানের আগ্রা দুর্গে সবথেকে বেশি উজ্জ্বল আয়োজন। স্বাভাবিক। প্রতি বছর নভরোজের সময় আগ্রা দুর্গ এভাবেই সেজে ওঠে। সম্রাটের পুত্রকন্যারা এই সময়টায় পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন। বিশদ

10th  March, 2024
অতীতের আয়না: বাঙালির সার্কাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

১৯২০ সালের ২০ মে। নিজের ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নিয়ে সিঙ্গাপুরে ট্যুরে গিয়ে জন্ডিস হয়ে মারা গেলেন প্রিয়নাথ বসু। শুধু উপমহাদেশের সার্কাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও উৎকর্ষের নতুন মানদণ্ড ছাড়াও, বিনোদন শিল্প হিসেবে সার্কাসকে দৃঢ় ভিত দিয়ে গেলেন তিনি। বিশদ

10th  March, 2024
ভোগ
শুচিস্মিতা  দেব

পুতুলকে সদ্যই নিমতিতা থেকে ‘রায়চৌধুরী ভিলা’তে এনেছে তার পিসি সবিতা। সবিতা এই পরিবারের বহু দিনের থাকা-খাওয়ার মাসি। টিভি সিরিয়ালের মতো প্রকাণ্ড বাড়িখানা দেখে পেরথমেই ভেবলেছে পুতুল। ফুটবল মাঠের মতো বৈঠকখানা। বিশদ

03rd  March, 2024
রুপোর চাকু

আলমারিটা খুলতেই দাদার চোখ চলে গিয়েছিল। উপরের তাকে জামা কাপড়ের পাশে খালি জায়গায় শোয়ানো ছিল। বাজপাখির চোখ দাদার।
বিশদ

25th  February, 2024
অপরাজিতা
মীনাক্ষী সিংহ

জুনিয়র ডাক্তার সুমন সান্যাল জানিয়ে গেল অপারেশন থিয়েটার রেডি, এবার ডাঃ মিত্রকে যেতে হবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠলেন সার্জেন মাধবিকা মিত্র। আজ একটা ক্রিটিক্যাল অপারেশন। বছর সতেরোর মেয়েটির মায়ের মুখ মনে পড়ল মাধবিকার। বিশদ

18th  February, 2024
একনজরে
আজ, শুক্রবার প্রথম দফার ভোটগ্রহণ হবে উত্তরবঙ্গের তিনটি লোকসভা আসনে। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে মোট ৩৭ জন প্রার্থীর ভাগ্যবন্দি হবে ইভিএমে। গণতন্ত্রের এই উৎসবে ...

বাচ্চার জন্য দুধ গরম করতে গিয়ে গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ। আর সেই আগুনে তিনটি বাড়ি ভস্মীভূত হল। জলের অভাবে আগুন নেভাতে পারলেন না বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভরতপুর থানার গোপালপুর গ্রামে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ...

শহরজুড়ে ফ্লেক্স-ব্যানার। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের ধাক্কায় শহর মুড়েছে প্লাস্টিকের পতাকা এবং আরও কিছু প্লাস্টিকের তৈরি প্রচার সামগ্রীতে। ভোট মিটলে সেগুলির প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়। হয়ে ওঠে বর্জ্য। রাস্তার ধারে পড়ে থাকে। ...

বাটলারের বিস্ফোরণ এখনও ভোলেনি ইডেন। ব্যাট হাতে কেকেআরের বিরুদ্ধে রুদ্রমূর্তি ধরেন রাজস্থানের তারকা ব্যাটার। ঘরের মাঠে কেকেআরকে হারানোর নায়ক তিনি। স্টার্ক, বরুণদের কার্যত বল ফেলার জায়গা দেননি ইংল্যান্ডের এই ক্রিকেটার। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৪৫১: দিল্লির বাদশাহ আলম শাহ সিংহাসন ছাড়েন
১৭৭০: ক্যাপ্টেন কুক অস্ট্রেলিয়া আবিষ্কার করেন
১৮৮২: বিবর্তনবাদের স্রষ্টা চার্লস ডারউইনের মৃত্যু
১৮৬৭: ভারতীয় পণ্ডিত ও কলকাতা হিন্দু সমাজের বিশিষ্ট নেতা স্যার রাজা রাধাকান্ত দেব বাহাদুরের মৃত্যু
১৯০৬: নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী  পিয়ের ক্যুরির মৃত্যু
১৯০৯: শ্রীরামকৃষ্ণ অনুশাসনের স্বামী লোকেশ্বরানন্দ জন্ম গ্রহণ করেন
১৯৩৩: ক্রিকেট বিশ্বের শ্রেষ্ঠ আম্পায়ার ডিকি বার্ডের জন্ম
১৯৪৫: জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্ত অভিনেত্রী সুরেখা সিক্রির জন্ম
১৯৪৮: বাংলা রঙ্গমঞ্চের অভিনেত্রী তারা সুন্দরী প্রয়াত হন  
১৯৫৫: শিকারি ও লেখক জিম করবেটের মৃত্যু
১৯৫৪: পাকিস্তানের গণপরিষদে উর্দু এবং বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়
১৯৫৬: অভিনেতা মুকেশ ঋষির জন্ম  
১৯৫৭: শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির জন্ম
১৯৫৮: সাহিত্যিক অনুরূপা দেবীর মৃত্যু
১৯৬৮: অভিনেতা আরশাদ ওয়ারশি’র জন্ম
১৯৭২: ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার রিভাল্ডোর জন্ম  
১৯৭৫: ভারত প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ আর্যভট্ট উৎক্ষেপন করে
১৯৭৭: ভারতীয় দীর্ঘ জাম্পার অঞ্জু ববি জর্জের জন্ম
১৯৮৭: রুশ টেনিস খেলোয়াড় মারিয়া শারাপোভার জন্ম  
১৯৯৫: ভারতীয় ক্রিকেটার দীপক হুড্ডার জন্ম



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.০৩ টাকা ৮৪.১২ টাকা
পাউন্ড ১০২.৮৭ টাকা ১০৫.৫০ টাকা
ইউরো ৮৮.০২ টাকা ৯০.৪৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৪,৩৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৪,৭০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭১,০০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৪,১০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৪,২০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
18th  April, 2024

দিন পঞ্জিকা

৬ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪। একাদশী ৩৬/৫৮ রাত্রি ৮/৫। মঘা নক্ষত্র ১৪/১০ দিবা ১০/৫৭। সূর্যোদয় ৫/১৬/৫৪, সূর্যাস্ত ৫/৫৪/৪২। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৫৭ মধ্যে পুনঃ ৭/৪৭ গতে ১০/১৯ মধ্যে পুনঃ ১২/৫১ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/১৪ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/২৫ গতে ৮/৫৬ মধ্যে পুনঃ ৩/০ গতে ৩/৪৪ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১২ মধ্যে পুনঃ ৩/৪৪ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/২৬ গতে ১১/৩৫ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৫ গতে ১০/১০ মধ্যে। 
৬ বৈশাখ, ১৪৩১, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪। একাদশী রাত্রি ৮/৫৬। মঘা নক্ষত্র দিবা ১২/১১। সূর্যোদয় ৫/১৭, সূর্যাস্ত ৫/৫৬। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ৭/৩৮ গতে ১০/১৫ মধ্যে ও ১২/৫১ গতে ২/৩৫ মধ্যে ও ৪/২০ গতে ৫/৫৬ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩২ গতে ৯/০ মধ্যে ও ২/৫০ গতে ৩/৩৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১১ মধ্যে ও ৩/৩৪ গতে ৫/১৬ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৭ গতে ১১/৩৭ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৬ গতে ১০/১২ মধ্যে। 
৯ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: পাঞ্জাবকে ৯ রানে হারাল মুম্বই

18-04-2024 - 11:50:54 PM

আইপিএল: ২১ রানে আউট হরপ্রীত ব্রার, পাঞ্জাব ১৮১/৯ (১৯ ওভার) টার্গেট ১৯৩

18-04-2024 - 11:46:48 PM

আইপিএল: ৬১ রানে আউট আশুতোষ শর্মা, পাঞ্জাব ১৬৮/৮ (১৭.১ ওভার) টার্গেট ১৯৩

18-04-2024 - 11:36:00 PM

আইপিএল: ২৩ বলে হাফসেঞ্চুরি আশুতোষ শর্মার, পাঞ্জাব ১৫১/৭ (১৫.৩ ওভার) টার্গেট ১৯৩

18-04-2024 - 11:22:48 PM

আইপিএল: ৪১ রানে আউট শশাঙ্ক সিং, পাঞ্জাব ১১১/৭ (১২.১ ওভার) টার্গেট ১৯৩

18-04-2024 - 11:02:15 PM

আইপিএল: ৯ রানে আউট জীতেশ শর্মা, পাঞ্জাব ৭৭/৬ (৯.২ ওভার) টার্গেট ১৯৩

18-04-2024 - 10:48:50 PM