বিদ্যার্থীদের উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে মধ্যম ফল আশা করা যায়, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। ব্যবসাতে যুক্ত ... বিশদ
‘কেন? আস্তে কথা বলব কেন? আমি কি কাউকে ভয় পাই?’
‘ভয় পাস কিনা জানি না, তবে বিরক্ত লাগছে। এসব শুনলে বিরক্ত লাগে আমার।’
‘বিরক্ত!’
‘হ্যাঁ। দেখছিস একে টিভিটার ভলিউম কম, তার ওপর তুই যদি কানের কাছে বকবক করিস, কার কথা শুনব বলত?’
‘এটা কি টিভি দেখার জায়গা?’
‘কীসের জায়গা তাহলে? তোর গেঁথে দেব শোনার?’
‘মুখ সামলে কথা বল দিনু! নাহলে...’
‘নাহলে কী করবি? গেঁথে দিবি?’
টিভির রিমোট টিপতে টিপতে আচমকাই আজ এই চ্যানেলটা খুঁজে পেয়েছিল দিনু। বিদেশি চ্যানেল। বাংলা ডাবিং। জিরাফের গলা কেন লম্বা হয়, সেই নিয়ে বোঝাচ্ছে একজন। এমনিতে এসব দেখতে ভালো লাগে না। মারদাঙ্গা দক্ষিণী সিনেমাই বেশি পছন্দ ওদের। তবু জিরাফের গলা নিয়ে বলা তথ্যগুলো আজ খারাপ লাগছিল না। কার্টুনের কারসাজিতে ডারউইন তত্ত্ব আর ল্যামার্কবাদ বোঝাচ্ছে একটা লোক— ‘ল্যামার্ক বলেছিলেন, এখন যে লম্বা গলার জিরাফ আমরা দেখি তাদের পূর্বপুরুষদের গলা আসলে লম্বা ছিল না। বিবর্তনের কারণে জিরাফের খাদ্যাভ্যাস বদলে গিয়েছিল। তখন উঁচু উঁচু গাছের পাতা খেতে গিয়ে জিরাফের গলা ক্রমশ লম্বা হতে থাকে। ডারউইন বলেছিলেন আবার অন্য কথা। তাঁর মতে, লম্বা গলা, খাটো গলা সব জিরাফই ছিল আগে। বেঁচে থাকার লড়াইয়ে লম্বা গলার জিরাফ টিকে যায়, খাটো গলার জিরাফ লুপ্ত।’
ব্যাপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং! বিবর্তন নাকি প্রাকৃতিক নির্বাচন? কোনটা ঠিক? আরও কয়েকটা গালাগাল দেবে বলে তৈরি হচ্ছিল গণেশ। কিন্তু পারল না। থামতে হল। কারণ দরজা ঠেলে ঠিক এই সময় ঘরে ঢুকলেন বিনোদ মাস্টার। ধুতি-পাঞ্জাবি, হাতে লাঠি, চোখে চশমা। প্রতিদিনের মতো আজও ঘরে ঢুকেই নাক কোঁচকালেন। ‘উঁ! একটা পচা গন্ধ পাচ্ছিস? ইঁদুর মরেছে মনে হয়!’
‘পচা গন্ধ! কোথায়?’ ফোঁস ফোঁস করে শ্বাস টানল গণেশ। ‘কই, না তো। এতক্ষণ আমরা আছি, পাইনি তো!’
‘তাহলে কি আমি মিথ্যা কথা বলছি?’ ঝেঁঝে উঠলেন বিনোদ। ‘ঈশ্বর আমাদের পাঁচটা ইন্দ্রিয় কেন দিয়েছেন জানিস? সারাক্ষণ সজাগ রাখার জন্য। বিড়ি-গুঠকা খেয়ে খেয়ে বেশিরভাগই তো নষ্ট করে ফেলেছিস। কোনটা পচা, কোনটা ভালো, বুঝবি কী করে!’
‘ইস! কী যে বলেন স্যার!’ জিভ কাটল গণেশ। লজ্জা লজ্জা মুখ করে বলল, ‘বিশ্বাস করুন, কোনও নেশা করি না আমরা। আনারদানা অবধি খাইনি কোনওদিন।’
জিরাফের গলায় মন দিয়েছিল দিনু। তারই ফাঁকে ফুট কাটল, ‘হ্যাঁ স্যার, গণেশের শুধু একটাই নেশা। সুযোগ পেলে সুকুর বাড়ির সামনে ঘুরঘুর করা।’
আগুনে ঘি পড়ল সঙ্গে সঙ্গে। চেয়ার ছেড়ে তেড়ে এল গণেশ। ‘মুখ সামলে কথা বল দিনু! নাহলে...’
‘নাহলে কী করবি? গেঁথে দিবি তো?’
‘তুই কিন্তু বড্ড বাড়াবাড়ি করছিস!’
‘কোনটা বাড়াবাড়ি?’
গণেশ আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল। কিন্তু ওকে থামিয়ে এবার ধমক দিলেন বিনোদ মাস্টার, ‘চুপ! একদম চুপ! নিজেদের মধ্যে তোরা গন্ডগোল করছিস কেন? মারপিট করবি নাকি!’
‘দিনুর কথাটা শুনলেন? ও কী বলল!’ ফুঁসছে গণেশ।
পাঁচ বছর হল কানের পর্দা অকেজো হয়ে গিয়েছে বিনোদ মাস্টারের। মেশিন লাগিয়েও কাজ হয় না। নর্মাল ভলিউমের চেয়ে দু-তিন ঘাট উঁচুতে না কথা বললে শুনতে পান না। ফিসফিস করে বলা দিনুর কথা তাই কানে ঢোকেনি। তবু গন্ডগোলের আঁচ পেয়ে বললেন, ‘পার্টি অফিসের ভিতর এসব জিনিস বরদাস্ত করব না আমি। খবরদার! অন্তর্দ্বন্দ্ব একবার যদি শুরু হয় তাহলে কিন্তু সেটা ভাইরাসের চেয়েও ভয়ংকর!’
মানুষের স্বার্থ, মানুষের অধিকার, রাজনীতি, অন্তর্দ্বন্দ্ব— কথাগুলো শুনে শুনে কানের চামড়া মোটা হয়ে গিয়েছে দিনুর। সত্যি কথা বলতে কী, একটা সময় এগুলোকে মন্ত্র মনে হতো। শুনলে শরীর মন চাঙ্গা হতো। বিনোদ মাস্টার যা বলতেন মনে হতো গুরুবাণী। শুধু বিনোদ মাস্টার কেন, ভোলা পাল, বটা দত্ত, হারাধন শীল মগজ ধোলাইয়ের লোক কম ছিল না তখন। মিটিং হলে কত সব পাড়া কাঁপানো ডায়ালগ। দিনু ঘুণাক্ষরেও তখন আন্দাজ করতে পারেনি ওগুলো সবই আসলে ভুয়ো আওয়াজ! বুঝলে কি আর পড়ে থাকত? যখন বুঝল, ততদিনে ভোলা পাল ফ্ল্যাট কিনে ফেলেছে কলকাতায়। বটা দত্ত নিজের নামে রেশনের ডিলারশিপ বের করে ফেলেছে। আর হারাধন শীল? ছেলে, বউ, ভাইপো, ভাইজি, শালা, শালী যেখানে যত আত্মীয় আছে সবাইকে মোটামুটি মিলিয়ে গুছিয়ে ঢুকিয়ে ফেলেছে প্রাইমারি স্কুল, পঞ্চায়েত, বিডিও অফিসে। এই সময় দিনুর মনে হতো পার্টি অফিস মানে সোনার খনি। আর কিছুদিন ধৈর্য ধরলে ওরও নির্ঘাত একটা কিছু হয়ে যাবে। তাছাড়া বিনোদ মাস্টারের বুলি তখনও থামেনি। পিঠে হাত রেখে বলতেন, ‘লেগে থাক। আমি তো রইলাম। সবাই চলে গেলেও আমি তোদের পাশে থাকব। কথা দিলাম।’
বিনোদ মাস্টার কথা রেখেছেন। দল যেদিন থেকে হারতে শুরু করেছে, পার্টি অফিসও মোটামুটি ফাঁকা হতে শুরু করেছে। কিন্তু বিনোদ মাস্টার আসা বন্ধ করেননি। কেউ না এলেও প্রতিদিন একবার করে আসেন তিনি। সকাল সন্ধে ধূপ দেখানোর মতো খোলেন পার্টি অফিসটা। ফাটা স্পিকারের টিভিতে দেশ-বিদেশের খবর দেখেন। খরা, বন্যা, আন্ত্রিক, ডেঙ্গু, কামাক্ষা, কাশ্মীর। দিনুও লেগে আছে। তবে কোন কিছুর আশায় আর নয়। খাওয়া-ঘুমের মতো পার্টি অফিস আসাটা শুধুই এখন একটা অভ্যাস ওর।
গণেশের কথায় পাত্তা দেয়নি দিনু। একইভাবে রিমোর্ট টেপাটেপি করছে। টিভির ভলিউম বাড়ছে না। বাড়লেও এমন ফ্যার ফ্যার করছে, কিচ্ছু বোঝা যাচ্ছে না। ষোলো বছরের টিভি। দু’বছর হল স্পিকার ফেটেছে। মিস্ত্রি দেখানো হয়েছিল। যা খরচ হবে বলেছে, অত টাকা ফান্ডে নেই। বিনোদ মাস্টারকে দেখে গণেশ আবার শুরু করল, ‘আজ কিন্তু আমি ছাড়ব না স্যার। মিছিল থেকে কেউ যদি গন্ডগোল করতে আসে তাকে পুরো গেঁথে দেব!’
‘না, ওসব করতে যাস না। যখন মিছিল যাবে দরজাটা শুধু বন্ধ করে রাখিস।’
‘কেন? কীসের ভয়ে দরজা বন্ধ করব? আমরা হেরে গেছি বলে? আমাদের দল ক্ষমতা হারিয়েছে বলে? তাছাড়া দরজা বন্ধ করলেই কি ভাবছেন ছেড়ে দেবে ওরা?’
বিনোদ মাস্টার উত্তর দিলেন না। চুপ করে রইলেন।
দিনু ঘাড় ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘মাস্টারমশাই, আপনি কি এখন নিউজ দেখবেন?’
‘কেন? তোরা কি কিছু দেখবি?’
‘না, মানে...ওই আর কী। একটা সিনেমা দেখতাম।’
‘সিনেমা! কী সিনেমা? কার সিনেমা? উত্তমকুমারের?’
‘না। ইমরান হাসমির।’
আকাশ ছোঁয়া বহুতল। মাথায় জলের ট্যাঙ্ক। তার উপর বসে আছে নায়ক নায়িকা। ব্যাকগ্রাউন্ডে ফাটা স্পিকারের গান, ‘কভি মেরে সাথ, কোই রাত গুজার...’
দেখব না দেখব না করেও গণেশের চোখ চলে যাচ্ছে টিভির দিকে। এসব সিন মিস করা যায়? মাম্পির কথা মনে পড়ছে। মাম্পির চোখ, মুখ, নাক ঠোঁট। মাম্পি কী করছে এখন? গেলে কি একবার দেখতে পাওয়া যাবে?
সত্যিকথা বলতে কী, আগে বিনোদ মাস্টারের সামনে এসব গান চালাত না দিনু। এই ধরনের সিন তো নয়ই। ভুলভাল কিছু দেখলে বরং চ্যানেল ঘুরিয়ে দিত। কিন্তু এখন চ্যানেল তো ঘোরায়ই না উল্টো যাই চলুক ভলিউম বাড়িয়ে দিয়ে দেখতে থাকে।
ভাবখানা এমন, যেন বিনোদ মাস্টারকে অপ্রস্তুতে ফেলতে চায় দিনু। এটাতেই ওর আনন্দ। কেন? কেন দিনু এরকম করে?
আর হয়ও তাই। সত্যিই বিনোদ মাস্টার অপ্রস্তুতে পড়ে যান। ইমরান হাসমিকে দেখেও অপ্রস্তুতে পড়ে গেলেন। টিভি থেকে চোখ সরিয়ে পুরনো খবরের কাগজ ওলটাচ্ছেন। নাড়াঘাঁটা করছেন পার্টির লিফলেট।
ঘড়িতে এখন আটটা কুড়ি। মানে, মাম্পির এখন দোতলায় থাকার কথা। নির্ঘাত ফোনে কারুর সঙ্গে কথা বলছে। একবার কি বারান্দায় আসবে ও? গেলে দেখতে পাবে গণেশ? কিন্তু এইসময় মাম্পিদের পাড়ায় যাওয়াটা বেশ সমস্যার। সুকুর দোকানে চাপ থাকে এই সময়। খদ্দেরদের ভিড় থাকে। গণেশ গেলে নির্ঘাত কারওর না কারওর চোখে পড়ে যাবে। তখন আবার যদি...!
আগের ঘা’টা শুকোয়নি এখনও। খেতে গেলে চোয়াল টনটন করে। কষের দাঁতটা কি নড়ে গিয়েছিল একটু? আসলে দোষটা গণেশেরই ছিল সেবার। একটু বাড়াবাড়িই করে ফেলেছিল। মাম্পির কথা শুনে যদি না পাইপ বেয়ে বারান্দায় উঠতে যেত তাহলে...
খদ্দেরদের মধ্যে ট্যারা নিতাই ছিল সেদিন। নিতাই অপোনেন্ট পার্টির ক্যাডার। ওরাই এখন ক্ষমতায়। গণেশকে তাই ওই অবস্থায় দেখতে পেয়ে যেন হাতে চাঁদ পেয়ে গিয়েছিল। রীতিমত হট্টগোল বাঁধিয়ে দিয়েছিল সঙ্গে সঙ্গে। গণেশকে ল্যাম্প পোস্টে বেঁধে ওদের পার্টির ছেলেদের ডেকে ‘যেমন খুশি মারো’ টাইপ বক্সিং কম্পিটিশন শুরু করে দিয়েছিল। আর মাঝে মাঝে হুঙ্কার ছাড়ছিল, ‘ডাক তোর বাপকে! দেখি কী করতে পারে!’
বাপ বলতে যে বিনোদ মাস্টারের কথা বলছিল নিতাই সেটা বুঝতে অসুবিধে হয়নি। কিন্তু কেন? কেন বলবে এসব? বিনোদ মাস্টার গণেশদের নেতা ঠিকই। কিন্তু তাই বলে...। তাছাড়া বিনোদ মাস্টার এসেই বা কী করত? গণেশকে বাঁচাত? গণেশ কি জানে না এই মুহূর্তে বিনোদ মাস্টার আসলে একটা ভোঁতা ছুড়ি? কিচ্ছু করার ক্ষমতা নেই ওর? নিজের অজান্তেই চোয়ালে হাত বোলালো গণেশ। বহুতল ছেড়ে নায়ক-নায়িকা এবার সমুদ্র সৈকতে। ঢেউ দাপিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে বালিতে। কিন্তু ফাটা স্পিকারের গান আর শোনা যাচ্ছে না। ঢাকা পড়ে যাচ্ছে বাইরের হট্টগোলে। কারণ বাইরে এবার শুরু হয়ে গিয়েছে কান ফাটানো মাইকের আওয়াজ। বিজয় মিছিল। মাইকটা এগিয়ে আসছে এদিকে। তার সঙ্গে উল্লাস, স্লোগান, বোমের আওয়াজ। ওরা মুখ চাওয়া-চাওয়ি করল তিনজন। বিনোদ মাস্টার শুকনো গলায় জিজ্ঞেস করলেন, ‘আজকের মিছিলটা কীসের জন্য রে? বিজয় মিছিল?’
‘হ্যাঁ।’
‘বিজয় মিছিলে এত হইচই?’
‘কেন হয় না? আমরা করিনি?’ দিনু চেঁচিয়ে উঠল হঠাৎ। গলা চড়িয়ে বলল, ‘পেশীর জোর দেখানোর জন্য, ক্ষমতার বড়াই করার জন্য, সংগঠন মজবুত রাখার জন্য আমরা মিছিল করতাম না? ওদের চমকাতাম না? ইট ছুড়লে পাটকেল তো খেতেই হবে স্যার, এটাই তো নিয়ম।’
‘হ্যাঁ। না, মানে...’ উত্তর খুঁজছেন বিনোদ।
ঠিক সেই সময়েই বোমটা এসে পড়ল দরজার কাছে। বিকট আওয়াজ। কানে তালা লেগে গেল সবার। তার সাথে চোখ জ্বালা করা ধোঁয়া!
না, দরজাটা আর বন্ধ করা যাবে না কোনওদিন। পাল্লা দুটো ভেঙে গিয়েছে। আজকের বোমটা মনে হয় একটু বেশিই জোরালো ছিল। একটা পাল্লা এমনভাবে ফেটেছে মনে হচ্ছে সারা ঘরে কেউ যেন কাঠের কুঁচো ছড়িয়ে দিয়ে গিয়েছে!
শুধু দরজা ভাঙা নয়, আজ একটু বেশিই সাহসী হয়ে উঠেছিল ওরা। পার্টি অফিসে ঢুকে হট্টগোল করে গিয়েছে। আবির ছড়িয়েছে। আবির মাখিয়েছে। তছনছ করে দিয়েছে পুরো ঘর। বিশেষ করে ট্যারা নিতাই। বিনোদ মাস্টারকে অবধি ছাড়েনি! ধুতি ধরে টানাটানি করছিল। পাঞ্জাবি ছিঁড়ে দিয়েছে। কারওর বারণ শুনছিল না। শেষে ওদের নেতা বিজয় ঘোষাল এসে ধমক দেওয়ায় থেমেছিল। বিজয় ক্ষমা চেয়েছিল। বলেছিল, ‘কিছু মনে করবেন না মাস্টারমশাই। একটু বেশিই বাড়াবড়ি করে ফেলেছে ছেলেরা। আমি ওদের বকে দেব কেমন? আসলে, বোঝেনই তো সব...’
হ্যাঁ। বিনোদ মাস্টার সব বোঝেন। পোর খাওয়া লোক। আজ থেকে রাজনীতি করছেন না। একটু আগে বলা দিনুর কথাগুলোও সত্যি। ইট ছুঁড়লে পাটকেল তো খেতেই হবে। কিন্তু একটা অন্য ব্যাপার দেখে আজ থম মেরে গিয়েছেন তিনি। ভিড়ের মধ্যে যে মুখগুলো ছিল সবাই কি অচেনা? না, তা তো নয়!
দীর্ঘ নীরবতার পর মুখ খুলল গণেশ, ‘শয়তানগুলোকে চিনতে পারলেন স্যার? কী বলে গেল শুনলেন?’
বিনোদ চুপ।
‘কার কথা বলছিস? বটা দত্ত?’ জিজ্ঞেস করল দিনু।
‘হ্যাঁ।’
‘ঠিকই বলেছে ও। এই ভাবে টিকে থাকা যায় না।’
‘মানে?’
‘জিরাফের গলা কেন লম্বা হয়েছিল জানিস?’
মুহূর্তের মধ্যে নীরব পুরো ঘর। মোটা কাঁচের ভিতর থেকে বড় বড় চোখ করে তাকালেন বিনোদ মাস্টার। এসব কী বলছে ছেলেটা!
‘দাঁড়া, দেখাচ্ছি।’ বলে রিমোট টিপল দিনু। বোতাম টিপে টিপে খুঁজছে সেই চ্যানেলটা। পাচ্ছে না। তবু আজ ও কিছুতেই হাল ছাড়ল না। যে করেই হোক চ্যানেলটা খুঁজে বের করবেই। ল্যামার্ক ঠিক নাকি ডারউইন ঠিক, জানতেই হবে আজ।
কিন্তু... প্রোগ্রামটা কি চলছে এখনও?