Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

হেঁড়ল
হামিরউদ্দিন মিদ্যা 

ধর! ধর! ধর!ছাগল নিয়েছে রে! হেঁড়লে ছাগল নিয়েছে!
সবেমাত্র খাওয়া-দাওয়া করে সারাদিন খেতে-খামারে খেটে আসা ক্লান্ত মানুষগুলো শুয়েছে, ঠিক তখনই বাগদিপাড়া থেকে সমস্বরে হইচই করে মাঠে নেমে এল কয়েকজন। হাতে টর্চ, লাঠি, কেউবা খালি হাতেই বেরিয়ে এসে ইঁটের টুকরো, শুকনো ঢিল তুলে নিয়েছে হাতে।
অঘ্রাণ শেষ হয়ে পৌষ মাস পড়ে গেল। বুকে লাড়া নিয়ে জমিগুলো চিৎ হয়ে পড়ে পড়ে শিশির খাচ্ছে। কেলে বাগদি ঘরের সামনে যে মাঠটার লাড়াগুলো কোঁদাল দিয়ে চেঁছে পরিষ্কার করে, অস্থায়ী খামার করেছে— সেখানে খড়-পোয়াল জ্বেলে আগুন পোহাচ্ছিল কয়েকজন।
হঠাৎ চিৎকার চেঁচামেচি শুনে আগুনের ওম ছেড়ে সবাই উঠে পড়ল। কেলে, গনা, বংশে বাগদি ছাড়াও হাসু মণ্ডলও গুটিসুটি মেরে আগুনের কাছে বসেছিল। বাগদি পাড়াটা মুসলমান পাড়ার কাছ ঘেঁষে। হাসু খেয়েদেয়ে রোজকার মতোই একটু পায়চারি করতে বেরিয়েছিল, আগুন পোহাতে দেখে হাত পা-গুলো আঁচে সেঁকার লোভ সামলাতে পারেনি।
আগুন ফেলে রেখেই সবাই মাঠে নেমে পড়ল। এদিক সেদিক টর্চের আলো পড়ছে। দলটার কাছাকাছি পৌঁছে হাসু জিজ্ঞেস করল, কার বাড়ির ছাগল নিয়েছে রে?
—আর বল না কত্তা! আমাদের সেই পাঁইশে রঙের ছাগল-ছা’টা ধরেছে গো! শালার হেঁড়ল কয়েকদিন ধরেই তক্কে তক্কে ছিল। গোহালের ভেতর ছাগলগুলো ভরে টর্চটা আনতে গেছি, এসে সব গোঁজে বাঁধব ভেবেছি। গিয়ে দেখি ছাগল হাপিস! লেউলের বাঁশতলায় ছাগলটা একবার ভ্যাবালেক। ছুটে গেলাম, সেখানেও নাই!
কথাগুলো হাফাতে হাফাতে বলল ভক্তে বাগদি। দলের মধ্যে ভক্তের বউ চম্পাও আছে।
—চল,চল। আখবাড়ির ভিতরটা একবার দেখে আসি। কয়েকজন তেঁতুলের ঝোপটার কাছে গিয়ে দেখ। আর কী জিয়ন্ত রাখবেক! তবু বলা যায় না, হইচই শুনে যদি ভয়ে ছেড়ে দিয়ে পালাইছে। হাসু মণ্ডল নির্দেশ দিয়েই, লুঙ্গিটা সেঁটে, চম্পার হাত থেকে লাঠিটা কেড়ে নিয়ে হন্তদন্ত হয়ে আখবাড়ির দিকে দৌড় লাগাল। ভক্তের ব্যাটা, আর চম্পাও হাসুর পিছু নিল।
ধানকাটা ফাঁকা মাঠের মধ্যে হন্তদন্ত হয়ে ছুটছে ওরা। আকাশে ভাসা মেঘ পাকা ধান রঙা চাঁদটার গা একবার করে ঢেকে দিয়েই কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে। গ্রামের ধারে ধারে তাল, খেঁজুর আর বাঁশবনের মাথায় অন্ধকারটা কেলে সাপের মতো ফণা তুলে আছে। পিছন ফিরে দেখার সময় নেই কারও। মশ্ মশ্ পা ফেলে সিংদের আখবাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পাশের গ্রাম কুসুমডোবার সিংবাবুরা কয়েকঘর আখ লাগিয়েছে।
রাঢ় বাংলার গাঁ-গ্রামে ধান পেকে এলে এমনিতেই শিয়াল, খঁটাশ, হেঁড়লের উপদ্রব। তার উপর মাঠগুলো ফাঁকা হলে বাসস্থান হারিয়ে, খাবার জন্য হা-পিত্যেশ করে ঘুরে মরে। শুকনো মাঠে তো আর নিশাচর পাখি, বা বালিহাঁস, বাচকা-বক মেলে না! তখন গ্রামের ভেতর ঢুঁ মারে। শেয়ালে দরমা ফাঁক করে হাঁস-মুরগির টুঁটি ধরে নিয়ে যায়, হেঁড়লে ছাগল ছানা। একসাথে দু’-তিনটে এলে ধাড় ছাগল নিয়ে যাওয়াও তাদের কাছে কিছুই নয়।
চম্পার বুকটা ঢিপ ঢিপ করছে! রাতদিন খেটেখুটে কত কষ্ট করে সংসারটা দাঁড় করিয়ে রেখেছে। মরদটা খাবার সময় খায়, আর রোজ মদ গেলে। ছেলেটা ইস্কুলে পড়ছে। পড়াশোনা বাদ দিয়েও কখনও মাঠে শীষ কুড়িয়ে, ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে ঝুরো ধান বের করে ঘরে আনে। জ্বালনটা-কুটোটা জোগাড় করে। সংসারের হাল ফেরানোর উদ্দেশ্যেই চম্পা হাসু মণ্ডলের বউয়ের কাছ থেকে একটা ছাগল ভাগে নিয়েছে। দুটো ছানা হলে একটা চম্পার, আর একটা ধাড় সমেত ফেরত দেবে, এই শর্তে।
সেই ধাড় ছাগলটারই একটা ছানা হেঁড়লে নিয়েছে। কাজকর্ম সেরে এসেও মাঠ থেকে চারটি ঘাস ছিঁড়েখুঁড়ে এনে ছাগলটার মুখের সামনে দেয় চম্পা। ছেলেটা বটের ডাল, শ্যাওড়া পাতা এনে খাওয়ায়। তবেই গতরটা লেগেছিল ধাড়টার। কয়েকমাস পর গোব্বিন হল। ভগবানের ইচ্ছায় দু’-দুটো হালোয়ান ছানা হল। ঘাস-পাতা খেলেও এখনও মায়ের দুধ ছাড়েনি।
চম্পা মণ্ডলগিন্নিকে কথামতো ধাড় সমেত একটা ছানা ফেরত দিতে গিয়েছিল। মণ্ডলগিন্নি বলল, আর একটু ফর-ফরে হোক চম্পা। এত ছোট ছা’ আমরা মানুষ করতে পারবনি। তুর কাছেই আর কিছুদিন থাক।
চম্পা ঠিক করেই রেখেছে পাঁইশে রঙা ছানাটা তার, আর কালো রঙেরটা মণ্ডলগিন্নিকে দেবে। কিন্তু ভাগ্যের কী লিখন, মরার হেঁড়লে নিল নিল, চম্পার শখের ছাগলটায় নিল!
আখবাড়ির কাছে পৌঁছে হাসু তিন ব্যাটারির টর্চটা মারল। মুখে শব্দ করল, হেয় হুট,হাট। হাতে তালি মেরে চম্পা, চম্পার ব্যাটাও জোরে জোরে শব্দ করে মুখে অদ্ভুত আওয়াজ করতে লাগল। যাতে হেঁড়ল ভয়ে ছাগল ছেড়ে পালায়।
নেকড়ে বাঘের মতো দেখতে শেয়ালেরই এক হিংস্র প্রজাতি হেঁড়ল। ফাঁকা মাঠে মানুষকে সামনে পেলেও আক্রমণ করতে পিছ-পা হয় না। ছাগল ধরলে সঙ্গে সঙ্গে মেরে ফেলে না। গোহাল থেকে ঘাড় বা কান ধরে চড়চড় করে টেনে সুবিধা মতো জায়গায় নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলে। পরের দিন সকালে হাঁড়-পাজরার টুকরো, পায়ের খুর আর দাঁতকপাটিটা ঝোপেঝাড়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
শব্দ শুনেও কেউ বেরিয়ে এল না। চম্পা এবার ডাকল, মতি-ই-ই! আ,আ,আ...
এই ডাক শুনে ছাগল ছানাটা যেখানেই থাকুক, ম্যাঁ ম্যাঁ করে ভেবিয়ে একছুটে চম্পার কাছে চলে আসত। এখন চম্পার ডাকটা ফাঁকা মাঠে ঘুরতে ঘুরতে নিজের কানেই ফিরে এল।
হাসু টর্চ জ্বেলে আখবাড়ির চারিধার ঘুরে দেখছে। গ্রামের বড় চাষি সে। বিঘে বিঘে ধানিজমি। খামারে বড় বড় ধানের মরাই বাঁধে। নিজেদের পুকুর, ইঁটভাটা, ট্রাক্টর গাড়ি সব আছে। খেতে-খামারে বারোমাস অনেকগুলো মুনিষ খাটায়।
চম্পার মরদ ভক্তে বাগদি শুধু ইঁটের পাঁজা করার সময় ইঁট কাটে। চম্পা চাষের সময়ে হাসুর খেতে-খামারে কাজ করে। সেই রাশভারি মানুষটা এখন চম্পার মতো তুচ্ছ এক মেয়ে মানুষের ছাগল ছানা খুঁজতে এসেছে আখবাড়িতে! তাও আবার কনকনে শীতের রাতে! চম্পার কেমন সন্দেহ হয়। আধবুড়ো হাসুর যে তার গতরটার দিকে বহুদিনের নজর, তা চম্পাকে হাবেভাবে, আকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়েছে। চম্পা পাত্তা দেয়নি। তবুও হাল ছাড়েনি হাসু।
চম্পা একবার হাসুর গোহালে বসে বঁটি দিয়ে গোরুর জন্য খড় কাটছিল, হাসু সুর সুর করে পেছনে এসে দাঁড়িয়েছিল। লোভার্ত চোখে দেখছিল তাকে। চম্পা পেছন পানে তাকাতেই চমকে উঠেছিল। শাড়ির আচলটা ঠিক করে কাঁপা কাঁপা গলায় বলেছিল, কিচু বলবে কত্তা!
মুখে কেমন একটা হাসি এনে হাসু মণ্ডল বলেছিল, খড়-টড় লাগলে নিয়ে যাবি চম্পা। গিন্নিকে বলার দরকার নাই। যা দরকার আমাকে বলবি।
সেই থেকে হাসু চম্পার পেছনে ছুঁকছুঁক করে। চম্পা নিজে ধরা দেয় না। শুধু একটু খেলা করে। তাতেই অনেক কিছু পায় সে। ধানের সময় পোয়াল ঝাঁড়া দু’-এক মন ধান গিন্নির চোখের আড়ালে হাসু কাউকে দিয়ে পাঠিয়ে দেয় চম্পার বাড়ি।
হঠাৎ আখবাড়ি থেকে অন্ধকার ফুঁড়ে বেরিয়ে এল একটা কালো মূর্তি। বেরিয়েই গ্রামের দিকে ভং ভং করে ছুট লাগাল। মরণ দৌড় দিয়েছে। ব্যাপারটা এত তাড়াতাড়ি ঘটল যে, মুখটাও ঠিক মতো বোঝা গেল না। চম্পাও ছুটতে দেখল। তারপর হাসুর চোখাচোখি হল। হাসুর সেই ক্ষমতা নেই, যে ছুটে গিয়ে ধরবে।
চম্পার ব্যাটা বলল, লোকটা এমন খ্যাপার মতন ছুটছে কেনে মা?
হাসু বলল, চুপ করে দাঁড়া, আমি দেখছি।
শীতের রাতে এমন নির্জন জায়গায় মানুষটা কে ছিল? আর আখবাড়িতেই বা কী মতলবে! কেউ বুঝে উঠতে পারল না।
চম্পা বলল, আখ চুরি করতে এইছেল মনে হয়।
হাসু বলল, আখ চুরি করলে এমন দৌড় মারার কী আছে! আর আমাদের কথাবার্তা তো কানে গেছে। আমরা যে মালিক লয়, এটা তো নিশ্চয়ই টের পেইছে।
চম্পা বলল, ভিতরটা দেখোদিনি কত্তা। আমার তো মনে হচ্চে আরও কেউ আছে। যদি অনুমান সত্যি হয়, থাকারই কতা।
—ঠিকই বলেছিস। তুরা দাঁড়া আমি ঢুকে দেখছি।
দু’ধারে আখের সারি, মাঝে জল পেরনোর সরু দাঁড়া। সেই ফাঁক দিয়ে কোনওরকম হাসু শরীরটাকে গলিয়ে দিয়ে ভেতরে তন্ন তন্ন করে খুঁজতে লাগল। কত বড় খেত! বিঘে তিনেক হবে। হঠাৎ টর্চের আলোটা অনেক দূরে একটা ঝাঁকাল আখ গাছের গোড়ায় থমকে গেল। একটা শাড়ি পরা মেয়ের পিঠের দিকটা নজরে পড়েছে। হাসু কাছে গিয়ে দাঁড়াল। মাথাটা নীচে নামিয়ে গুটিসুটি মেরে বসে আছে মেয়েটা। ভয়ে থর-থর করে কাঁপছে। পেছন থেকে চুলের মুঠি ধরে মুখটা সামনের দিকে করল হাসু। দেখেই চমকে উঠল! জনবালি শেখের বিধবা মেয়ে লাইলি! দু’বছর হল স্বামীর মাথা খেয়ে ভাইদের ঘরে ঠাঁই নিয়েছে। বাপটা অভাগা মেয়েটাকে আর কোথাও উদ্ধার করতে পারেনি। নাতিটার নামে বিঘে দেড়েক ধানিজমি লিখে দিয়েছে। মরদের মতো খেটেখুটে পেটের ভাতটা জোগাড় করলেও শরীরের খিদে মেটাবে কে!
চম্পা আখবাড়ির বাইরে থেকে হাঁক পাড়ল, কিছু পেলে কত্তা?
হাসুর মনে অন্য এক ফন্দি মাথা চাড়া দিয়ে উঠল। জেগে উঠল সুপ্ত ইচ্ছাটা। লাইলির থর থর করে কাঁপতে থাকা শরীরটার দিকে তাকিয়ে চোখগুলো কেমন চকচক করে উঠল। ঢোক গিলে বলল, কই! কেউ নাই তো!
লাইলি ফিসফিস করে বলল, বাঁচালে কত্তা।
হাসু বলল, একদম নড়িস না। আমি যাব আর আসব। কথার অমান্য যদি করিস,তাইলে ভালো হবেক নাই কিন্তু! সব ফাঁস করে দিব। গাঁয়ে টিকতে পারবি নাই।
আখবাড়ির বাইরে বেরিয়ে এল হাসু। সারা গায়ে কুটোকাটা, মাকড়সার জাল লেগেছে। ছাড়াতে ছাড়াতে বলল, মনে হয় আমাদের কথাবার্তা শুনে মেয়েটা আগেই সুরসুর করে কেটে পড়েছে। না হলে ওসব কিছু লয়, আখ চুরি করতেই এসেছিল লোকটা।
চম্পা বলল, আখ চুরি লয় কত্তা। আমি এবার বুঝতে পেরিচি। ওই ছোড়া মেহের আলির নাতি। সেই চুলে লাল রং করেছে গো, ওই নাতিটা। কী যেন নাম!
—জমিরউদ্দিন?
—হ্যাঁ, হ্যাঁ, ঠিক বলেছ। উয়ার সাথেই তো লটরপটর। তুমি তো উ ধারে ছিলে, মুখটা তেমন দেখনি। আঁধারে দেখলেও আমি ঠিক চিনেছি।
—উ এখানে কী করবেক?
—ন্যাকা! জানো না বুজি! গোটা গাঁ জানে সে কতা! তুমাদের শেখপাড়ার বেধবা মেয়েটা গো, ওই ছেমড়িই তো ছোড়ার মাথাটা খেইচে। আমি একদিন বার বসতে উঠে দেখেছেলম, রেতের বেলা গুটগুট করে মাঠের পানে যাচ্চে দু’টিতে। কাউকে কিচু বলিনি। সোয়ামি নাই যার, তার কেউ নাই। শরীলের খিদের জ্বালা সইবে কেমন করে!
চম্পার মুখে শরীর, লটরপটর এই শব্দগুলো শুনে হাসু মণ্ডলের বয়সটা যেন রাতারাতি কমে যেতে থাকে। মনেপ্রাণে ভর করে সেই যুবক বয়সের তীব্র বাসনা। গা-টা শিরশির করে ওঠে। ছাগল খোঁজার কথা ভুলে গেল হাসু। চম্পার ব্যাটা একটা আখ ভেঙেছে। এমন মোক্ষম সুযোগ হাত ছাড়া করেনি। রাতের বেলাতেই মুখে দিয়েছে। ছাল ছিঁলে চিবোবে চিবোতে পিছু পড়ে যাচ্ছে।
চম্পা ডাকল, টপটপ আয় লালু।
হাসু বলল, তুই চিন্তা করিস না চম্পা। ছাগলটা না পেলে, বাকি ছা’টা তোকেই দিয়ে দিব। কী আর করবি! উপরওয়ালার মার!
মাঠের পূর্ব ধারে তেঁতুলের ঝোপ। বহুবছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা একটা আদ্যিকালের তেঁতুলগাছ, তাকে ঘিরেই লতাগুল্মর বেষ্টনী। ডালপালার বিস্তার বিশাল! যতরাজ্যের পাখিরা এসে বাসা করেছে। মাঠের মুনিষরা গ্রীষ্মের দিনে খেত থেকে উঠে এসে ছায়ায় জিরোয়। সেই ঝোপে হেঁড়ল বাবাজির ঘাপটি মেরে বসে থাকা অসম্ভব নয়। কয়েকজন সেখানেও খুঁজতে গেছে। হঠাৎ সেদিক থেকেই ওদের ‘ধর!ধর!’ চিৎকার শোনা গেল। তাহলে হেঁড়লটা ও’ধারেই ঢুকেছে!
চম্পার ব্যাটা আধখাওয়া আখটা ফেলে দিয়েই ছুটতে আরম্ভ করল। চম্পাও হনহন করে এগিয়ে গেল।
হাসু পিছু ডাকল, লাঠিটা নিয়ে যা চম্পা। আর দৌড়তে পারছি নাই। তুরা যেয়ে দেখ ছাগলটা পেলেক কিনা। আমি ঘর চললাম।
পৌষের শীত ফাঁকা মাঠে বতর পেয়ে যেন পিঠে চাবুক মারছে। হাত-পাগুলো শীতে কনকন করে উঠলেও, হাসুর রক্তটা ফুটছে টগবগ করে। যুবক বয়সের সেই তেজ যেন ঢুকে পড়েছে শরীরে।
চম্পাকে তেঁতুলের মাঠের দিকে চলে যেতে দেখে হাসুর বুক ঠেলে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল। হেঁড়লের মুখ থেকে ছাড়া পাওয়া ছাগলের মতো চলে যাচ্ছে চম্পা।
হাসু এবার আখবাড়ির দিকে গুটিগুটি পা বাড়াল। আর একটু পৌঁছে গেলেই শীত ভাবটা কেটে যাবে। যত কাছাকাছি পৌঁছয়, খিদেটা ততই তীব্র হতে থাকে।
আখবাড়ির কাছে এসে হাসু ডাক পাড়ল, কই গো লাইলি!
ভেতর থেকে কোনও সাড়া-শব্দ ভেসে এল না। বুকটা ধক করে উঠল হাসুর! চোখে ধুলো দিয়ে পালাল নাকি!
খ্যাপা মোষের মতো আখের পাতা-ফাতা ঠেলে ভেতরে ঢুকে পড়ল হাসু। যেখানে লাইলি মুখ গুঁজে বসে ছিল, দেখল সেখানটাও ফাঁকা। রাগে, অভিমানে, অতৃপ্ত আত্মাটা ফুঁসে উঠল— নচ্ছার মেয়ে কোথাকার!
খেত থেকে বেরিয়ে এল হাসু। বার কয়েক লাইলির নাম ধরে জোরে জোরে ডাকল। শরীরের উষ্ণ রক্তটা এবার জুড়িয়ে যেতে বসেছে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর একবুক হতাশা নিয়ে গ্রামের দিকে পা বাড়াল। শীতের এই কনকনে রাতে এই সময় হাসুকে দূর থেকে যদি কেউ দেখে, নির্ঘাত ভাববে একটা হেঁড়ল হেঁটে আসছে। 
12th  January, 2020
 

বাংলা ছবির দিকপাল চরিত্রাভিনেতারা একেকটা শৈল্পিক আঁচড়ে বঙ্গজীবনে নিজেদের অমর করে রেখেছেন। অভিনয় ছিল তাঁদের শরীরে, মননে, আত্মায়। তাঁদের জীবনেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক অমূল্য রতন। তাঁরই খোঁজে সন্দীপ রায়চৌধুরী। আজ ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়- অষ্টম কিস্তি।
বিশদ

19th  January, 2020
 

চলতি বছর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতজন্মবর্ষ। সেই উপলক্ষে মাইলফলক দেখে ইংরেজি সংখ্যা শেখাই হোক বা বিধবা বিবাহ প্রচলনের জন্য তীব্র লড়াই— বিদ্যাসাগরের জীবনের এমনই নানা জানা-অজানা কাহিনী দিয়ে সাজানো এ ধারাবাহিকের ডালি। 
বিশদ

19th  January, 2020
নজরদার
সঞ্জয় রায়

—‘হ্যাঁ গো চাঁপার মা, এই তো সেদিনই তেল আনালাম। এর মধ্যেই শেষ?’
—‘ও মা অত্তগুলো নোকের রান্না, তা তেল লাগবে নাকো।’ 
বিশদ

19th  January, 2020
আজও তারা জ্বলে

বাংলা ছবির দিকপাল চরিত্রাভিনেতারা একেকটা শৈল্পিক আঁচড়ে বঙ্গজীবনে নিজেদের অমর করে রেখেছেন। অভিনয় ছিল তাঁদের শরীরে, মননে, আত্মায়। তাঁদের জীবনেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক অমূল্য রতন। তাঁরই খোঁজে সন্দীপ রায়চৌধুরী। আজ ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়- সপ্তম কিস্তি। 
বিশদ

12th  January, 2020
অথৈ সাগর
বারিদবরণ ঘোষ

বিদ্যাসাগর মশায় কলকাতায় এলেন। বাবা ঠাকুরদাস বুঝতে পেরেছিলেন গাঁয়ের টোলে পড়িয়ে ছেলের কোনও ভবিষ্যৎ তৈরি হবে না। কলকাতার একটা ছাপের দরকার। সব দেশেই সব সমাজে পরামর্শদাতার অভাব হয় না। এমন করে তাঁরা কথা বলেন যে, সেই বিষয়ে তাঁর চেয়ে দিগ্‌গজ পণ্ডিত আর নেই।  
বিশদ

12th  January, 2020
আজও তারা জ্বলে 

বাংলা ছবির দিকপাল চরিত্রাভিনেতারা একেকটা শৈল্পিক আঁচড়ে বঙ্গজীবনে নিজেদের অমর করে রেখেছেন। অভিনয় ছিল তাঁদের শরীরে, মননে, আত্মায়। তাঁদের জীবনেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক অমূল্য রতন। তাঁরই খোঁজে সন্দীপ রায়চৌধুরী। আজ ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ষষ্ঠ কিস্তি।

 
বিশদ

05th  January, 2020
অথৈ সাগর 
বারিদবরণ ঘোষ

জগতে কোন মা কবে ছেলের কাছে এমনধারা গয়না চেয়েছিলেন— আমাদের জানা নেই। এই গয়না চুরি হয় না, এই গয়না সবাই মিলে ভাগ করে নিতে পারে, এই গয়না কারও একার হয় না— দেশের সম্পদ হয়। 
বিশদ

05th  January, 2020
আজও তারা জ্বলে

বাংলা ছবির দিকপাল চরিত্রাভিনেতারা একেকটা শৈল্পিক আঁচড়ে বঙ্গজীবনে নিজেদের অমর করে রেখেছেন। অভিনয় ছিল তাঁদের শরীরে, মননে, আত্মায়। তাঁদের জীবনেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক অমূল্য রতন। তাঁরই খোঁজে সন্দীপ রায়চৌধুরী। আজ ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় পঞ্চম কিস্তি। 
বিশদ

29th  December, 2019
অথৈ সাগর 

আগামী বছর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতজন্মবর্ষ। তার প্রাক্কালে মাইলফলক দেখে ইংরেজি সংখ্যা শেখাই হোক বা বিধবা বিবাহ প্রচলনের জন্য তীব্র লড়াই— বিদ্যাসাগরের জীবনের এমনই নানা জানা-অজানা কাহিনী দিয়ে সাজানো এ ধারাবাহিকের ডালি।  বিশদ

29th  December, 2019
হিসেব-নিকেশ
অঞ্জনা চট্টোপাধ্যায় 

অটোরিকশর পিছনের সিটে, দু’জনের মাঝখানে বসে, প্যাচপ্যাচে গরমে ঘেমেনেয়ে একেবারে কাহিল অবস্থা হচ্ছে বিমলবাবুর। অতি কষ্টে প্যান্টের পকেট থেকে রুমালটা বের করে, মুখের ওপর জমে থাকা ঘামের বিন্দুগুলি মুছে নিয়ে, বিমলবাবু আবার একবার হাতঘড়ির দিকে দেখলেন।  বিশদ

29th  December, 2019
আজও তারা জ্বলে
পর্ব-৪

বাংলা ছবির দিকপাল চরিত্রাভিনেতারা একেকটা শৈল্পিক আঁচড়ে বঙ্গজীবনে নিজেদের অমর করে রেখেছেন। অভিনয় ছিল তাঁদের শরীরে, মননে, আত্মায়। তাঁদের জীবনেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক অমূল্য রতন। তাঁরই খোঁজে সন্দীপ রায়চৌধুরী। আজ ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়-চতুর্থ কিস্তি। 
বিশদ

22nd  December, 2019
অথৈ সাগর
বারিদবরণ ঘোষ

আগামী বছর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতজন্মবর্ষ। তার প্রাক্কালে মাইলফলক দেখে ইংরেজি সংখ্যা শেখাই হোক বা বিধবা বিবাহ প্রচলনের জন্য তীব্র লড়াই— বিদ্যাসাগরের জীবনের এমনই নানা জানা-অজানা কাহিনী দিয়ে সাজানো এ ধারাবাহিকের ডালি। 
বিশদ

22nd  December, 2019
ডাকনাম ফড়িং
স্বপন পাল

অখিলেশের চাকরি জীবন থেকে অবসর নেওয়া প্রায় চার বছর হয়ে গেল। তার এই অবসর জীবনে সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে, অবসর সময় কাটানো নিয়ে সময় খুঁজে বের করা। বই বা খবরের কাগজ পড়ে কতটাই বা সময় কাটানো যায়। টিভি অখিলেশ খুব একটা দেখে না। চোখের ওপর চাপ পড়ে। গেল মাসে ডান চোখটায় ছানি অপারেশন হয়েছে। 
বিশদ

22nd  December, 2019
আজও তারা জ্বলে
পর্ব-৩ 

বাংলা ছবির দিকপাল চরিত্রাভিনেতারা একেকটা শৈল্পিক আঁচড়ে বঙ্গজীবনে নিজেদের অমর করে রেখেছেন। অভিনয় ছিল তাঁদের শরীরে, মননে, আত্মায়। তাঁদের জীবনেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক অমূল্য রতন। তাঁরই খোঁজে সন্দীপ রায়চৌধুরী। আজ ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়-তৃতীয় কিস্তি। 
বিশদ

15th  December, 2019
একনজরে
নয়াদিল্লি, ২১ জানুয়ারি: আগামী শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ শুরু করছে ভারত। গ্লেন টার্নার-রিচার্ড হ্যাডলিদের দেশে পাঁচটি টি-২০, তিনটি একদিনের ম্যাচ এবং দু’টি টেস্ট খেলবে বিরাট ...

 বিএনএ, বারাকপুর: বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে আরও একটি জুট মিল বন্ধ হয়ে গেল। মঙ্গলবার সকালে টিটাগড়ের এম্পায়ার জুট মিল কর্তৃপক্ষ সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস ঝুলিয়ে দেয়। এতে কাজ হারালেন প্রায় দুই হাজার শ্রমিক। মিল বন্ধের প্রতিবাদে এদিন বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকরা। ...

 নয়াদিল্লি, ২১ জানুয়ারি (পিটিআই): শিরোমণি অকালি দল সরে গেলেও দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধেছে জেডিইউ। সোমবারই সেই ঘোষণা হয়েছে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি ...

সংবাদদাতা, ইংলিশবাজার: রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি নিয়ে প্রচারের হাতিয়ার এখন ছাত্র-যুব উৎসব। জনস্বার্থে রাজ্য সরকার যেসব কর্মসূচি নিয়েছে সেসব নিয়ে অনুষ্ঠান পরিবেশন করে এই উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা। মালদহ জেলাও তার ব্যতিক্রম নয়।  ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৬৬৬: মুঘল সম্রাট শাহজাহানের মৃত্যু
১৯০০ - টেলিপ্রিন্টার ও মাইক্রোফেনের উদ্ভাবক ডেভিট এ্যাডওয়ার্ড হিউজ।
১৯০১: রানি ভিক্টোরিয়ার মৃত্যু
১৯২৭ - প্রথমবারের মতো বেতারে ফুটবল খেলার ধারাবিবরণী প্রচার।
১৯৭২: অভিনেত্রী নম্রতা শিরোদকরের জন্ম



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭০.৩৬ টাকা ৭২.০৬ টাকা
পাউন্ড ৯০.৯৮ টাকা ৯৪.২৫ টাকা
ইউরো ৭৭.৫৪ টাকা ৮০.৪৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪০,৫৩০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৩৮,৪৫৫ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৩৯,০৩০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৪৬,৬৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৪৬,৭৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৭ মাঘ ১৪২৬, ২২ জানুয়ারি ২০২০, বুধবার, ত্রয়োদশী ৪৮/৩৬ রাত্রি ১/৪৯। মূলা ৪৪/৫৩ রাত্রি ১২/২০। সূ উ ৬/২২/৩৮, অ ৫/১৩/২৬, অমৃতযোগ দিবা ৭/৪৯ মধ্যে পুনঃ ১০/০ গতে ১১/২৬ মধ্যে পুনঃ ৩/২ গতে ৪/২৮ মধ্যে। রাত্রি ৬/৫ গতে ৮/৪৩ মধ্যে পুনঃ ২/০ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৯/৫ গতে ১০/২৬ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৭ গতে ১/৯ মধ্যে। কালরাত্রি ৩/৬ গতে ৪/৪৪ মধ্যে।
৭ মাঘ ১৪২৬, ২২ জানুয়ারি ২০২০, বুধবার, ত্রয়োদশী ৮৯/২৭/৪৪ রাত্রী ২/১৩/৯। মূলা ৪৬/৪২/৪৪ রাত্রি ১/৭/৯। সূ উ ৬/২৬/৩, অ ৫/১১/৩৯, অমৃতযোগ দিবা ৭/৪৭ মধ্যে ও ১০/০ গতে ৪/৩৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/১৫ গতে ৮/৫০ মধ্যে ও ২/০ গতে ৬/২৬ মধ্যে। কালবেলা ৯/৭/২৭ গতে ১০/২৮/৯ মধ্যে, কালরাত্রি ৩/৭/২৭ গতে ৪/৪৬/৪৫ মধ্যে।
 ২৬ জমাদিয়ল আউয়ল

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আজকের রাশিফল
মেষ: ব্যবসায় অর্থাগম হবে। বৃষ: কর্মপ্রার্থীদের শুভ যোগাযোগ ঘটবে। মিথুন: ব্যবসায় উন্নতি ও ...বিশদ

07:11:04 PM

ইতিহাসে আজকের দিনে
১৬৬৬: মুঘল সম্রাট শাহজাহানের মৃত্যু১৯০০ - টেলিপ্রিন্টার ও মাইক্রোফেনের উদ্ভাবক ...বিশদ

07:03:20 PM

রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য জবরদখল উচ্ছেদ, গায়ে আগুন লাগালেন মহিলা 
রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য জবর দখল উচ্ছেদের চেষ্টা পুলিস ও প্রশাসনের। ...বিশদ

04:27:00 PM

কলকাতা বইমেলার জন্য শুরু হল অ্যাপ, রয়েছে স্টল খুঁজে পাওয়ার সুবিধাও 

04:13:45 PM

কৃষ্ণনগরে এনআরসি বিরোধিতায় শুরু হল মিছিল, রয়েছেন রাজীব বন্দ্যেপাধ্যায় এবং মহুয়া মৈত্র 

04:02:00 PM

২০৮ পয়েন্ট পড়ল সেনসেক্স 

03:58:42 PM