Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

তর্পণ
দেবাঞ্জন চক্রবর্তী

রাত শেষ হয়ে এসেছে। এই সময় স্বপ্নটা দেখছিল সমীরণ। স্বপ্ন বলে কোনওভাবেই সেটাকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। অথচ সে স্পষ্ট বুঝতে পারছে— এখন যা ঘটছে তা বাস্তবে ঘটা সম্ভব নয়। বাবা চলে গেছেন আজ পঁচিশ বছর হল। পঁচিশ বছরে বাবার মাত্র একটা স্বপ্ন দেখেছে সে। এই নিয়ে সমীরণের মনের মধ্যে দুঃখও আছে। লোকে নাকি মৃতদের নিয়ে স্বপ্ন দেখে। মৃত্যুর পরে মানুষ তার নিকটজনদের কাছে স্বপ্নের মধ্যে দিয়ে আসে। কখনও কখনও কথাও বলে। সতর্কও করে। পৃথিবীটা ঠিক কী জিনিস এটা পুরো বুঝে ওঠার আগেই যাওয়ার ঘণ্টা পড়ে যায়। খেলা শেষ করে মানুষকে চলে যেতে হয় মাঠ ছেড়ে।
আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে হঠাৎ করে আসা তীব্র কার্ডিয়াক অ্যাটাকে কয়েক মিনিটের মধ্যে নেই হয়ে গিয়েছিল বাবা। সেটা মেনে নিতে বেশ কিছুদিন খুব অসুবিধা হয়েছিল সমীরণের। সবচাইতে যেটা খারাপ লেগেছিল তা হল বাবার শরীরটা জানান দিচ্ছিল। সমীরণের প্রশ্নের উত্তরে বাবা জানিয়েছিল— তার শরীর একদমই ভালো নেই। শুনেই সে গোপালদাদুকে ফোন করে। ডাক্তার গোপাল রায় ছিলেন বিধান রায়ের প্রিয় ছাত্র। বাবাকে তিনি ছোটবেলা থেকে চিকিৎসা করেছেন। বাবার শরীরের ঘাঁত-ঘোঁত সবই তার নখদর্পণে।
গোপালদাদু সময় দিয়েছিলেন। বিকালে বাবা মা’কে সঙ্গে নিয়ে গোপালমামার কাছে নিজেকে দেখাতে গিয়েছিল। তাকে ওপর ওপর পরীক্ষা করে গোপালদাদু গোটা দুয়েক টনিক লিখে বাবার পিঠ চাপড়ে ছেড়ে দেয়। যাও, তুমি ঠিকই আছ। তোমার কিছুই হয়নি। চিন্তা কোরো না।
আদ্যন্ত লাজুক মানুষটা নিজের শরীর নিয়ে সাতকাহন করে কোনওদিনই কাউকে কিছু বলেননি। সেদিন তবুও তার মুখে কিন্তু কিন্তু ভাব ফুটে উঠেছিল। অথচ গোপালমামাকে কিছুই বলতে পারেনি বাবা। মা-ও আলাদা করে কিছু বলেনি। শুধু ভেবেছিল— গোপালমামা ছাড়াও আর একজন ডাক্তারকে দিয়ে বাবাকে দেখাবে। মানুষটা কোনও দিন নিজের শরীর খারাপের কথা বলে না। সে কি না দু’দিন হল মাঝে মধ্যেই সেটা বলছে: লক্ষণ সুবিধার নয়।
পরের দিন সন্ধ্যার সময় মাত্র মিনিট চারেকের মধ্যে ওরকম জলজ্যান্ত ডাকাবুকো মানুষটা হঠাৎ করে নেই হয়ে গেল। শুনে তার গোপালমামা স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি কপালে করাঘাত করে মাঝে মাঝেই বলতেন— রবিটা আমার কাছে এল। বলল— মামা, শরীরটা খারাপ লাগছে। আর আমি একটুও বুঝতে পারলাম না! ওকে আরও ভালো করে কেন দেখলাম না!
খুব বেশি দিন এই আক্ষেপ করতে হয়নি ডাক্তার গোপাল রায়কে। মাস তিনেকের ব্যবধানে তিনিও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সাধনোচিত ধামে চলে যান। তাঁর বয়স হয়েছিল আশির ঘরের মাঝামাঝি। ভাগ্নের শোকে তিনি কাতর হয়েছিলেন। বাবা তাঁকে খুব কাতরভাবে অনুরোধ করছে।
বলছে— আমাকে তোর অফিসটা দেখাবি? আমার খুব ইচ্ছে। সমীরণ শুনে অবাক হয়ে গেল। মাত্র দু’বছর হল সে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছে। এতদিন বাবা কেন এল না? খুব সহজ হতো তার সব ক’টা অফিস বাবাকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখানো। এখন বাবাকে এই অবস্থায় নিয়ে যেতে গেলে কেউ যদি তাকে অপমান করে, কিংবা বাবাকেই কিছু বলে বসে! সে কীভাবে সেটাকে সামলাবে!
তার মনে পড়ছিল জ্ঞান হওয়া থেকে বাবার সব অফিসে সে গিয়েছে। কোথাও কোথাও গিয়ে থেকেওছে। বাবার প্রতিষ্ঠা আর তার দাপট দেখেছে। বাবার সুনাম, তার চারিত্রিক দৃঢ়তা, তাঁর সততার কথা বারবার বাবার সহকর্মীদের কাছে শুনেছে। বাবারও নিশ্চয়ই ইচ্ছে হয়েছে তার অফিসে যাওয়ার। অথচ বাবা কোনও দিন কখনও মুখ ফুটে সেকথা বলেনি।
বাবা কি কখনও তার কাছে কিছু চেয়েছে? সমীরণ অনেক ভেবেও সেরকম কিছু বের করতে পারল না। কেবল বাবা একবার তার গ্র্যাজুয়েশনের পর বলেছিল— এখন থেকে দুটো বছর যদি তুমি নিজের দিকে তাকাও আর খুব পরিশ্রম করো তাহলে বাকি জীবন তুমি খুব আনন্দে আর আরামে কাটাবে। লোককে উপদেশ দেবে। আর এই দুটো বছর যদি তুমি আনন্দ আর আরামে কাটাও তাহলে লোকে তোমাকে সারাজীবন উপদেশ দেবে আর তুমি কষ্ট করবে। চয়েজ ইস ইয়োরস।
বাবা সমীরণকে কোথাও একা ছাড়ত না। বন্ধুদের সঙ্গে কোথাও যাওয়ার কথা থাকলে বলত তোমার মা’র কাছ থেকে অনুমতি নাও। মা রাজি হলে আমার আপত্তি নেই। মা’র কাছে গিয়ে অনুমতি চাইলে মা বলত— বাবা যদি রাজি থাকে তাহলে আমার আপত্তি নেই। একবার বাবার কাছে, একবার মা’র কাছে দরবার করতে করতে সমীরণ বুঝতে পারত আসলে তারা তাকে অনুমতি দেবে না।
বাবাকে সে একবার বলেছিল— তুমি সব সময় আমার সঙ্গে এইভাবে ব্যবহার কোরো না। তুমি যে বাবা আর আমি যে তোমার ছেলে এটা একটা ডিভাইন অ্যাক্সিডেন্ট। তুমি আমার ছেলেও হতে পারতে— বাবা না হয়ে। তখন যদি আমি বাবা হয়ে তোমার সঙ্গে এরকম ব্যবহার করতাম তোমার কেমন লাগত?
বাবা এটা শোনার পর চুপ হয়ে গিয়েছিল। মা সবটা শুনছিল। তখন কিছু বলেনি, কিন্তু পরে বলেছিল। বলেছিল— তুই এটা তোর বাবাকে বলতে পারলি? বাবাকে?
—তো? ভুল বলেছি কিছু?
—বুঝবি বুঝবি। আরও বড় হ। নিজে যখন বাবা হবি তখন বুঝবি।
—কী বুঝব!
—বুঝবি বাবাকে এসব কথা বলা যায় না।
—খুব যায়। বাবা-মাকেই সব কিছু বলা যায়। তোমাদের সময় অন্যরকম ছিল। এখন আমাদের সময়। আমি মনে করি বলা যায়।
মাকে খুব হতাশ লেগেছিল। মাত্র কয়েকদিন আগে ঠাকুমা বাবার ওপর রাগ করে তাকে যে কথাটা বলেছিল তাতে বাবা-মা দু’জনের ওপরেই সমীরণের ক্রোধ হয়েছিল।
কথাটা ঠাকুমার বলা উচিত হয়নি। বুড়ি সমীরণকে বলেছিল তার জন্মেরও আগের কথা। মায়ের পেটে তখন সে এসে পড়েছে। মা তখন সাড়ে তিন মাসের পোয়াতি। সে সময় বাবা বিশু ডাক্তারকে বাড়ি নিয়ে এসেছিল। যাতে সে পৃথিবীর আলো না দেখে। অ্যাবরশান জিনিসটা তখনও সর্বতোভাবে বেআইনি। লুকিয়ে-চুরিয়ে হতো।
বিশু ডাক্তার কাজ শুরু করেছিল চুপিসারে। সজাগ ছিল ঠাকুমা। বুড়ি নাকি আগের রাতে স্বপ্ন দেখেছিল। সহস্রফণা নাগের স্বপ্ন। যে আসছে সে বংশের মুখ উজ্জ্বল করবে। তাকে আসতে দাও। তার যেন কোনও বিঘ্ন না ঘটে!
বিশু ডাক্তারকে চিৎকার করে বাড়ি থেকে ভাগিয়ে দিয়েছিল ঠাকুমা। তার বংশের বড়ছেলের সন্তান আসছে। হতে পারে বউমার বয়স অল্প। হতে পারে অবাঞ্ছিত মাতৃত্ব। তাই বলে ঘরের মধ্যে আগামী প্রজন্মকে গর্ভের মধ্যে খুন! এটা হেমবালা কখনওই মেনে নেবেন না!
রক্তারক্তি কাণ্ড শুরু হয়েছিল গর্ভপাতের চেষ্টায়। ঠাকুমার উদ্যোগে উল্টোপথে হাঁটা শুরু হল। গর্ভ বাঁচানোর চেষ্টা। আশ্চর্য! সবটার পিছনে ছিল একটা স্বপ্ন। সহস্র নাগের স্বপ্ন। ফণা তুলে সহস্রনাগ আসছে। ঠাকুমা আগের রাতেই এই স্বপ্নটা কী করে দেখল! কেন দেখল! সত্যিই কি বুড়ি এই স্বপ্নটা দেখেছিল? নাকি নিজে থেকে বানিয়ে বলেছিল?
নিজের ছেলের ওপর বুড়ির যতটা রাগ হয়ে থাকুক সমীরণকে এই গল্পটা করা তার একদমই উচিত হয়নি! শোনার পর বাবার ওপর অপরিসীম রাগ হয়েছিল সমীরণের। প্রতিটি ব্যবহারের নতুন মানে আবিষ্কৃত হচ্ছিল তার মনে। সে অবাঞ্ছিত ছিল। বাবা তাকে চায়নি। মা’র শরীর অপুষ্ট ছিল, সন্তানধারণের উপযুক্ত বয়স হয়নি— সব কিছুই সে তখন ভুলে গিয়েছিল। শুধু রাগ— বাবার ওপর, মায়ের ওপর শুধু রাগ। সেই রাগ এমন ছিল যা ভুলিয়ে দিয়েছিল বাবা তাকে সবরকম খেলা শিখিয়েছে, বাবা তাকে অ আ ক খ, এক দুই তিন চার, এবিসিডি সব শিখিয়েছে। রোজ রাতে বাবা তাকে নিয়ে পড়তে বসেছে। ট্রানজিস্টার বাজিয়ে খবর শুনিয়েছে, গান শুনিয়েছে। মা তাকে অত আদর, অত প্রশ্রয় দিয়েছে। বাবা দু’হাতে দুটো ব্যাগ ভর্তি করে বাজারের সেরা জিনিসগুলো কিনে এনেছে। মা যত্ন করে মন দিয়ে রেঁধেছে। তার শরীর-মন পুষ্ট হয়েছে। মা আর বাবা পালা করে সঞ্চয়িতা আর গীতবিতান থেকে কবিতা আর গান শুনিয়েছে। তার কোনও অভাব রাখেনি কোনও বিষয়ে।
এরকম দেবতার মতো বাবা-মা সম্পর্কে সে কি না অনেকটা সময় শুধু ক্রোধই রেখেছে! ঠাকুমা তাকে যেসব কথা বলেছে, পরে সে ভেবে দেখেছে— তা ঠাকুমার বলা একদমই উচিত হয়নি।
সাংঘাতিক রাগ হয়েছিল ঠাকুমার, বাবার ওপর। কারণ অবশ্যই ছিল। কিন্তু তাই বলে...।
বাবা শুধু ক্যারাম বোর্ড, ফুটবল আর ক্রিকেট ব্যাটই কিনে দেয়নি, তার সঙ্গে খেলেওছে। কলকাতার ইডেনে যখন ফুটবল খেলা হতো তখন বাবা তাকে মাঠে খেলা দেখাতে নিয়ে গেছে। ফুটবলের সময় ফুটবল, ক্রিকেটের সময় ক্রিকেট সব খেলারই টিকিট জোগাড় করত বাবা। মা’র নিষেধ উপেক্ষা করে বাবা তাকে মাঠে নিয়ে যেত। এইরকম একটা বাবা— যে কি না সে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিতভাবে বন্ধু হয়ে উঠেছিল— তার ওপর রাগ করার কোনও মানেই হয় না। আর সে তো তখন জন্মায়নি। বাবা-মা তো ইচ্ছে করলে ঠাকুমার কথা না শুনে অন্য কোথাও গিয়ে তাকে এই পৃথিবীতে না আনার ব্যাপারটা করতে পারত। কিন্তু তারা তো সেটা করেনি। উল্টে, সে যাতে নিরাপদে এই পৃথিবীর আলো দেখে সেই চেষ্টাই তার পর থেকে করে গেছে। কিন্তু তখন সমীরণের এই বুদ্ধিটা আসেনি।
স্বপ্ন কিন্তু বোঝা যাচ্ছে সমীরণ স্বপ্নই দেখছে, এই অবস্থায় বাবা এসেছে তার অফিসে। বাবাকে কীরকম ছোটখাট, কৃশ দেখাচ্ছে। গালে তিন চারদিনের না-কামানো সাদা দাড়ি।
এই সময় প্রণয় এসে বলল, স্যার ইনি কে? আপনার কেউ হন?
প্রণয় কর্মীদের মধ্যে ওস্তাদ গোছের। কিন্তু সমীরণকে সে খুব মান্য করে। সমীরণ তাকে একটুও পছন্দ করে না। এখন সমীরণের মনে হল প্রণয়ের সাহায্য নিতে হবে। বাবাকে বেশ দুর্বল দেখাচ্ছে। এতটা বাবা ঘুরে ঘুরে দেখতে পারবে না। সে নিজেই দু’বছর আগে অবসর নিয়েছে।
যখন আমি চাকরিতে ছিলাম তখন তুমি কেন এলে না বাবা? সমীরণ আস্তে অস্ফুটে বাবাকে বলছিল। তখন তো সব কিছুই সহজ ছিল।
হঠাৎ পাশ থেকে চিরকাকুকে দেখা গেল। সমীরণের মনে পড়ল এই চিরকাকু তার জন্মের আগের ঘটনাটার কথা জানে। বছর দুয়েক আগে মা মারা যাওয়ার আগের সপ্তাহে সমীরণ মা’র কাছে এই ঘটনার সত্যতা জানতে চেয়েছিল। বহু বছর ধরে মা’কে জিজ্ঞাসা করা উচিত কি না, করলে কীভাবে সেটা করা যেতে পারে ভাবতে ভাবতে বছরগুলো কেমন হুস হুস করে চলে গেল। যারা এটা সম্পর্কে বলতে পারত তার মধ্যে ছিল ঠাকুমা, ঠাকুরদা, বাবা, মা আর বিশু ডাক্তার। মা ছাড়া আর সবাই মরে গেছে। তাই সমীরণ মরিয়া হয়ে মাকে জিজ্ঞাসা করেছিল— মা, তোমরা কি আমাকে অ্যাবর্ট করার চেষ্টা করেছিলে?
শুনে মা’র চোখের মণি দুটো ছোট আর রহস্যময় হয়ে গেল। আক্রান্ত হয়ে মানুষের চোখ এরকম হয়ে যায়।
কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে মা বলল— তোকে কে বলল?
তার মানে ঘটনাটা সত্যি ঘটেছিল। ঠাকুমা তাহলে ঠিকই বলেছিল।
ঠাকুমা। বলল সমীরণ। মা’র মুখের দিকে তাকিয়ে থাকল সে। আর মা সন্তানের মুখের দিকে। তার আশ্চর্য দৃষ্টি। ভাবতেই পারছে না জীবনের প্রান্তে এরকম একটা প্রশ্ন তার ছেলের কাছে শুনতে হবে।
হ্যাঁ। ছোট্ট একটা শব্দ বের হল মা’র মুখ দিয়ে। সেই মুহূর্তে সমীরণের মা’র জন্য খুব অহংকার হল। মা’কে তার আদর করতে ইচ্ছা করছিল। সন্তানের কাছে মা কোনও মিথ্যা বলতে চায়নি। সমীরণ জানত মা’র শরীর সে সময় খুব খারাপ হয়েছিল। মা’কে বাঁচাতেই বাবা এই গর্ভপাতের চেষ্টাটা করতে গিয়েছিল। কিন্তু এসব কিছুই মা বলল না। কোনও অজুহাত দিল না। শুধু বলল— চিরবাবু তোর বাবাকে বারণ করেছিল। সে বলেছিল— যে আসছে তাকে আসতে দাও। তোমার পুত্র আসছে। তোমার কোনও ক্ষতি সে করবে না। সমীরণের মনে পড়ল চিরকাকুর সামনে বাবা কীরকম অস্বস্তিতে থাকত। একবার চিরকাকু তার দিকে তাকিয়ে বলেছিল— আর একটু হলেই হয়ে গিয়েছিল আর কি!
বাবা সঙ্গে সঙ্গে বলেছিল— চির। কণ্ঠস্বরে ধমক এবং শাসন দুটোই ছিল। চুপ করে গিয়েছিল চিরকাকু।
প্রণয় বলল, স্যার, মেসোমশাই তো এতটা ঘুরতে পারবেন না। আপনি ওকে কাঁধে তুলে নিন।
যত্ন করে বাবাকে নিজের কাঁধে তুলতে তুলতে সমীরণ বুঝতে পারছিল, বাবার ওজন প্রায় নেই। কেন তুমি আগে এলে না বাবা? বলতে বলতে সে বুঝতে পারল তার চোখ দিয়ে উষ্ণ গরম জল পড়ছে। বাবার জন্য তার এত কষ্ট জমেছিল! ভেবে সে আশ্চর্য হয়ে গেল। আর তখনই তার ঘুমটা ভেঙে গেল।
তার চোখ দিয়ে এখনও জল পড়ছে।
08th  September, 2019
ছায়া আছে কায়া নেই 
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

সুকুমার রায়। শিশুসাহিত্যিক ও ভারতীয় সাহিত্যে ‘ননসেন্স রাইম’-এর প্রবর্তক। তিনি একাধারে লেখক, ছড়াকার, শিশুসাহিত্যিক, রম্যরচনাকার, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার ও সম্পাদক। তিনি ছিলেন জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর পুত্র।  বিশদ

29th  September, 2019
পুণ্য ভূমির পুণ্য ধুলোয় 
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়

একান্ন মহাপীঠের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মহাপীঠ হল কামাখ্যা। এই মহাতীর্থে সতীর মহামুদ্রা অর্থাৎ যোনিদেশ পতিত হয়েছিল। দেবীর গুপ্ত অঙ্গ পতিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, পর্বতটি নীলবর্ণ ধারণ করে এবং শত যোজন উচ্চ পর্বত ক্রমশ ভূগর্ভে নেমে যেতে থাকে।   বিশদ

29th  September, 2019
ম্যাজিক
ধ্রুব মুখোপাধ্যায় 

নম্বরগুলো মেলানোর পর যে আনন্দটা হয়েছিল, বিশ্বাস করুন, আমি জীবনে অতটা খুশি কোনওদিনও হয়নি। ‘পঞ্চাশ হাজার’ -না, এমনটা নয় যে আমি কোনওদিনও ভাবিনি। আসলে আমি বিগত কুড়ি বছর ধরে এটাই ভেবে এসেছি। আজকে ভাবনাটা সত্যি হল।
বিশদ

22nd  September, 2019
পুণ্য ভূমির পুণ্য ধূলোয়
চন্দ্রগুট্টির দেবী গুত্তেভারা, পর্ব-২৯
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়  

সেবার কোলহাপুর থেকে সৌন্দত্তি গিয়েছিলাম দেবদাসী তীর্থের ইয়েলাম্মাকে দেখতে। ঠিক তার পরের বছরই ওই একই তিথিতে অর্থাৎ মাঘী পূর্ণিমায় কর্ণাটকেরই আর এক দেবী চন্দ্রগুট্টির গুত্তেভারা দেবীকে দর্শন করতে গেলাম। কিন্তু কেন এত জায়গা থাকতে এই সুদূর দেবীতীর্থে আসা? কারণটা বলছি। 
বিশদ

22nd  September, 2019
ছায়া আছে, কায়া নেই
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়  

২৯

বিয়ের বারো বছর বাদে কন্যা সন্তানসম্ভবা হয়েছে জেনে কবি যথেষ্ট আনন্দিত হয়েছিলেন। তিনি তখন আমেরিকায়। তিনি মেজ বৌঠান জ্ঞানদানন্দিনীকে টেলিগ্রাম করে বেলার সাধভক্ষণের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। শুধু তাই নয় তিনি বাড়ির খাজাঞ্চি যদু চট্টোপাধ্যায়কে পাঁচশো টাকা এই কারণে মেজ বৌঠানের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশও দেন। 
বিশদ

22nd  September, 2019
পুণ্য ভূমির পুণ্য ধূলোয়
সৌন্দত্তির দেবী ইয়েলাম্মা, পর্ব-২৮
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়  

এবার রওনা দেওয়া যাক সুদূর কর্ণাটকের দিকে। এখানে সৌন্দত্তিতে আছেন ভক্তজন বাঞ্ছিতদেবী ইয়েলাম্মা। ইনি হলেন মূলত দেবদাসীদের আরাধ্যা দেবী। প্রতিবছর মাঘীপূর্ণিমা তিথিতে দলে দলে মেয়েরা এই মন্দিরে দেবদাসী হন। 
বিশদ

15th  September, 2019
ছায়া আছে, কায়া নেই
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

২৮
আবার মৃত্যু, কবি-জীবন থেকে ঝরে যাবে আরও একটি ফুল। কবির জ্যেষ্ঠা কন্যা মাধুরীলতা। ডাকনাম বেলা। কবির বেল ফুল-প্রীতির কথা পরিবারের সবাই জানতেন। সেই ভালোবাসার কথা মাথায় রেখেই কবির মেজ বৌঠান জ্ঞানদানন্দিনী দেবী সদ্যোজাত কন্যার নাম রাখলেন বেলা। রবীন্দ্রনাথ তাঁর এই কন্যাকে নানা নামে ডাকতেন, কখনও বেলা, কখনও বেল, কখনও বেলি, কখনও বা বেলুবুড়ি। 
বিশদ

15th  September, 2019
অবশেষে এল সে
রঞ্জনকুমার মণ্ডল 

ঋজু অফিস থেকে ফিরতেই রণংদেহি মূর্তি নিয়ে সামনে দাঁড়াল রিনি, প্রশ্ন করল, ‘তুমি গতকাল আদিত্যদের বাড়িতে গিয়েছিল?’
একটু থমকে দাঁড়াল ঋজু, জানতে চাইল, ‘তুমি কোন আদিত্যর কথা বলছ? আমার কলিগ?’ 
বিশদ

15th  September, 2019
ছায়া আছে, কায়া নেই
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের পুত্র, ব্রাহ্ম নেতা,আচার্য, দানবীর মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর জীবনের শেষ উইলটি এবার করবেন। তাঁর মন আজকে বড়ই শান্ত, কাকে কী দেবেন তা পূর্ব রাত্রেই ঠিক করে ফেলেছেন। মনে আর কোনও দ্বিধা বা সংশয় নেই। কারণ তিনিও যে তার পায়ের শব্দ শুনতে পাচ্ছেন। মৃত্যুর পায়ের শব্দ— দিন ফুরিয়ে এল, এবার ফেরার পালা!
বিশদ

08th  September, 2019
কোলহাপুরের মহালক্ষ্মী - পর্ব-২৭
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়

ভারতের মুখ্য দেবীপীঠগুলির মধ্যে করবীর নিবাসিনী মহালক্ষ্মী হলেন অন্যতমা। করবীর বর্তমানে কোলহাপুর নামে খ্যাত। কোলহাপুরং মহাস্থানং যত্র লক্ষ্মী সদা স্থিতা। পঞ্চগঙ্গার দক্ষিণ তীরে অবস্থিত এবং ৫১ (মতান্তরে ৫২) পীঠের অন্তর্গত এই মহাপীঠে সতীর ত্রিনয়ন (ঊর্ধ্বনেত্র) পতিত হয়েছিল। মহারাষ্ট্রের পুনে থেকে আমি কোলহাপুরে গিয়েছিলাম।
বিশদ

08th  September, 2019
পুণ্য ভূমির পুণ্য ধূলোয়
দেবী সপ্তশৃঙ্গী, পর্ব-২৬
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়  

সহ্যাদ্রি পর্বতে দেবী সপ্তশৃঙ্গীর বাস। তাই এবারে আসা যাক সহ্যাদ্রি পর্বতমালার বুকে নাসিকের সপ্তশৃঙ্গীতে। এর উচ্চতা ৫ হাজার ২৫০ ফুট। কাজেই স্থানটি শীতল ও রমণীয়। 
বিশদ

01st  September, 2019
ছায়া আছে কায়া নেই
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়  

২৬
বাজার সরকার শ্যামলাল গঙ্গোপাধ্যায়ের কন্যা, ঠাকুর পরিবারের অন্যতম কৃতী ও গুণবান সন্তান জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী কাদম্বরী দেবীর মৃত্যু জোড়াসাঁকোর সেই বিখ্যাত বাড়ির সদস্যদের সম্পর্কের ভিতে বোধহয় চোরা ফাটল ধরিয়ে দিয়েছিল। অনেকেই কাদম্বরী দেবীর মৃত্যুর জন্য তাঁর স্বামীর দিকেই আঙুল তুলতেন। তাঁরা মনে করতেন স্বামীর অবহেলা, কথার খেলাপ অভিমানিনী কাদম্বরী দেবী কিছুতেই মেনে নিতে পারতেন না।  
বিশদ

01st  September, 2019
তিথির অতিথি
প্রদীপ আচার্য 

‘বাবা, উনি কাঁদছেন।’ চোখের ইশারায় গোলোকচন্দ্রকে বাইরে ডেকে নিয়ে নিচুস্বরে কথাটা বলল তিথি। গোলোকচন্দ্র আকাশ থেকে সটান মাটিতে পড়লেন। বললেন, ‘ধ্যাৎ, খামোখা কাঁদতে যাবেন কেন?’ 
বিশদ

01st  September, 2019
ছায়া আছে কায়া নেই
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

২৫
‘কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল, সে মরে নাই।’ ‘জীবিত ও মৃত’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছোট গল্প। এখানেও এসেছেন কাদম্বরী দেবী, তবে নিজ নামে নয় কাদম্বিনী নামে। এই গল্পের শেষ অর্থাৎ ক্লাইম্যাক্সে কি হল! শোনাব আপনাদের। ‘কাদম্বিনী আর সহিতে পারিল না; তীব্রকণ্ঠে বলিয়া উঠিল, ‘ ওগো, আমি মরি নাই গো, মরি নাই।  
বিশদ

25th  August, 2019


আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ও মানসিক কষ্ট। দূর ভ্রমণের সুযোগ। অর্থ প্রাপ্তির যোগ। যে কোনও ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৯৪০- ‘দি বিটলস’ ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা, গায়ক জন লেননের জন্ম
১৯৪৫- সারোদবাদক আমজাদ আলি খানের জন্ম
১৯৪৫- অভিনেত্রী সুমিতা সান্যালের জন্ম
১৯৬৭- কিউবার বিপ্লবের প্রধান ব্যক্তিত্ব চে গেভারার মৃত্যু
২০১৫- সংগীত পরিচালক রবীন্দ্র জৈনের মৃত্যু  



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার    
পাউন্ড    
ইউরো    
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৩৮,৭৮৫ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৩৬,৭৯৫ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৩৭,৩৪৫ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৪৫,২০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৪৫,৩০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
05th  October, 2019

দিন পঞ্জিকা

১৮ আশ্বিন ১৪২৬, ৫ অক্টোবর ২০১৯, শনিবার, সপ্তমী ১০/৪৫ দিবা ৯/৫১। মূলা ১৯/২৪ দিবা ১/১৮। সূ উ ৫/৩২/৪৫, অ ৫/১৭/৫৫, অমৃতযোগ দিবা ৬/২০ মধ্যে পুনঃ ৭/৭ গতে ৯/২৮ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৯ গতে ২/৫৭ মধ্যে পুনঃ ৩/৪৪ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ১২/৩৯ গতে ২/১৭ মধ্যে, বারবেলা ৭/০ মধ্যে পুনঃ ১২/৫৪ গতে ২/২৩ মধ্যে পুনঃ ৩/৫১ গতে অস্তাবধি, কালরাত্রি ৬/৫১ মধ্যে পুনঃ ৪/০ গতে উদয়াবধি। 
১৭ আশ্বিন ১৪২৬, ৫ অক্টোবর ২০১৯, শনিবার, সপ্তমী ২১/২৭/৩৯ দিবা ২/৮/০। মূলা ৩১/৪৭/১২ রাত্রি ৬/১৫/৪৯, সূ উ ৫/৩২/৫৬, অ ৫/১৯/৩৬, অমৃতযোগ দিবা ৬/২৩ মধ্যে ও ৭/৯ গতে ৯/২৭ মধ্যে ও ১১/৪৬ গতে ২/৫০ মধ্যে ও ৩/৩৭ গতে ৫/১৮ মধ্যে এবং রাত্রি ১২/৩৭ গতে ২/১৭ মধ্যে, বারবেলা ১২/৫৪/৩৬ গতে ২/২২/৫৫ মধ্যে, কালবেলা ৭/১/১৬ মধ্যে ও ৩/৫১/১৬ গতে ৫/১৯/৩৬ মধ্যে, কালরাত্রি ৬/৫১/১৬ মধ্যে ও ৪/১/১৬ গতে ৫/৩৩/১৮ মধ্যে। 
মোসলেম: ৫ শফর 

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আজকের রাশিফল  
মেষ: অর্থ প্রাপ্তির যোগ। বৃষ: প্রেম-প্রণয়ে অগ্রগতি। মিথুন: গুরুজনের শরীর সম্পর্কে ...বিশদ

07:11:04 PM

ইতিহাসে আজকের দিনে  
১৯৪০- ‘দি বিটলস’ ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা, গায়ক জন লেননের জন্ম১৯৪৫-  সারোদবাদক ...বিশদ

07:03:20 PM

এবছর রসায়নে নোবেল পাচ্ছেন জন বি গুডএনাফ, এম স্ট্যানলি হুইটিংহ্যাম ও আকিরা ইয়োশিনো 

03:42:41 PM

মালদহের বৈষ্ণবনগরে নৌকাডুবি, মৃত ৩ 
ঠাকুর দেখতে যাওয়ার সময় নৌকাডুবি। ঘটনাটি ঘটে মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার ...বিশদ

03:18:19 PM

৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বাড়াল কেন্দ্র, উপকৃত হবেন ৫০ লক্ষ কর্মী ও ৬২ লক্ষ পেনশনভোগী 

02:30:04 PM

ফলতার রামনগরে বিসর্জনের বাজি বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণ, জখম ২ শ্রমিক 

01:20:11 PM