Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

প্রথম গায়েবের
১৫০ বছর
সুমন্ত্র চট্টোপাধ্যায়

মারি সেলেস্টের যাত্রীদের হারিয়ে যাবার খবর আলোড়ন ফেলেছিল সারা ইউরোপ ও আমেরিকায়। এর আগে কেউ কখনও কোন জাহাজ বা তার যাত্রীদের হারিয়ে যাবার কথা শোনে নি।

১৭ই ডিসেম্বর, ১৮৭২। স্পেনের উত্তরে জিব্রাল্টার বন্দরে সকলের মুখে একটাই আলোচনা। জিব্রাল্টার বিশেষ আদালতে সেদিন শুরু হবে ‘মারি সেলেস্টে’ জাহাজ নিয়ে শুনানি। আর হবে নাই বা কেন? এমন ঘটনা কস্মিনকালেও তো কেউ শোনেনি।
মার্কিন পণ্যবাহী জাহাজ ‘মারি সেলেস্টে’কে পাওয়া গিয়েছে আটলান্টিক মহাসাগরে, এজোরেস দ্বীপপুঞ্জের কাছে। দিনটা ছিল ৪ ডিসেম্বর, ১৮৭২। কানাডার ‘দেই গ্রাশিয়া’র নাবিকদের চোখে পড়ে ‘মারি সেলেস্টে’কে। ডেকের উপরে কেউ নেই। মনে হচ্ছে জাহাজটি যেন চালকহীনভাবে ভাসছে। তড়িঘড়ি নামানো হল নৌকা। ‘মারি সেলেস্টে’তে উঠতেই অপেক্ষা করছিল চরম বিস্ময়। গোটা জাহাজে জনমনিষ্যি নেই। এরকম আবার হয় নাকি! বিস্ময়ের তখনও অনেক বাকি—ডেক একদম সাফসুতরো। শুধু একটা পালের কিছুটা অংশ ছিঁড়ে গিয়েছে। ক্যাপ্টেন থেকে ক্রু—সকলের জিনিসপত্র ঠিক আছে। ‘ডিনেচার্ড অ্যালকোহল’ নিয়ে যাচ্ছিল জাহাজটি। তাও ঠিক আছে। নেই বলতে শুধু একটাই জিনিস। লাইফবোট।
কী হয়ে থাকতে পারে?
তন্ন তন্ন করে খোঁজ শুরু করলেন ‘দেই গ্রাশিয়া’র নাবিকরা। জাহাজের গায়ে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। অন্তত একনজরে কিছু নজরে পড়েনি। ফুটো হলে তো জল ঢুকত, জাহাজ ভেসে বেড়াত না। রান্নার রসদ আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। আরও আশ্চর্যের বিষয়, জাহাজের লগ বুকের শেষ এন্ট্রি। লগ বুকে শেষ এন্ট্রি ন’দিন আগের। সেখানে জাহাজের অবস্থান যা লেখা, তা প্রায় ৭৪০ কিলোমিটার দূরে। কাগজপত্র মিলেছে কিছু। তা থেকে জানা গিয়েছে, ক্যাপ্টেনের নাম বেঞ্জামিন ব্রিগস। এই যাত্রায় তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ও শিশুকন্যা। ক্যাপ্টেন সহ অন্যরা যদি ৭৪০ কিলোমিটার দূরে নেমে যান, তাহলে জাহাজটি এত দূর এল কীভাবে! ক্যাপ্টেনের কেবিনে তাঁর তলোয়ারটাও রয়েছে। তবে অনেক দরকারি কাগজপত্রের সঙ্গে নেই জাহাজের দিক নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রও। 
‘দেই গ্রাশিয়া’র ক্যাপ্টেন মোরহাউস নিজে অবশ্য ‘মারি সেলেস্টে’তে যাননি। বদলে বিশ্বস্ত দেভাউয়ের নেতৃত্বে কয়েকজনকে নাবিককে পাঠিয়েছিলেন। দেভাউ ফিরে গোটা বিষয়টি জানালেন ক্যাপ্টেন মোরহাউসকে। দু’জনেই দিশাহারা। এ যেন পরিকল্পনামাফিক মাঝ দরিয়ায় জাহাজ ছেড়ে নৌকা নিয়ে কোথাও চলে গিয়েছেন সবাই। কী করা যায়! সিদ্ধান্ত নিতে বিন্দুমাত্র সময় ব্যয় করলেন না মোরহাউস। জাহাজটিকে এভাবে ছেড়ে যাওয়া চলে না। ঠিক হল, ‘মারি সেলেস্টে’কে নিয়ে যাওয়া হবে ১১০০ কিলোমিটার দূরের জিব্রাল্টার বন্দরে। এর পিছনে অবশ্য একটা ব্যবসায়িক কারণও ছিল। মাঝ দরিয়ায় যদি কোনও জাহাজ অন্য জাহাজকে উদ্ধার করে তাহলে উদ্ধারকারী জাহাজকে বলা হয় ‘স্যালভার’। জাহাজি আইন অনুসারে, এই কাজের জন্য ‘স্যালভার’-এর মোটা টাকা প্রাপ্য হয়। টাকার পরিমাণ নির্ধারিত হয় জাহাজ ও তাতে বাহিত মালের দাম অনুসারে। সঙ্গে দেখা হয়, উদ্ধারকাজে কতটা বিপদ ছিল। বিপদ যত বেশি, টাকাও তত। নিজের জাহাজের আটজন মাল্লাকে সমানভাবে ভাগ করলেন ক্যাপ্টেন মোরহাউস। নিজে থাকলেন ‘দেই গ্রাশিয়া’তে। আর দেভাউয়ের উপর ভার দিলেন ‘মারি সেলেস্টে’কে নিয়ে আসার। ডিসেম্বর মাসের ১২ তারিখে জিব্রাল্টার বন্দরে পৌঁছল ‘দেই গ্রাশিয়া’। পরদিন সকালে এল ‘মারি সেলেস্টে’। কুয়াশার জন্য একটু বেশি সময় লাগে দেভাউদের।
জাহাজ উদ্ধার করে নিয়ে এলে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষ আদালত আছে। জিব্রাল্টারের সেই আদালতে শুরু হল শুনানি। বিচারের তত্ত্বাবধানে জিব্রাল্টারের অ্যাটর্নি জেনারেল সলি ফ্লাড। বিচার করবেন চিফ জাস্টিস স্যার জেমস কচরেন। এই সলি ফ্লাডকে সমসাময়িক ঐতিহাসিকেরা যেভাবে বর্ণনা করেছেন তা এরকম, ‘...তাঁর অহংকার ও আত্মম্ভরিতার সঙ্গে তাঁর বুদ্ধির সম্পর্কটা একেবারে ব্যস্তানুপাতিক।’ তিনি এমন একজন, যিনি একবার যদি কিছু ভেবে নেন, সেই ধারণা থেকে কিছুতেই সরবেন না। তার বিরুদ্ধে শত অকাট্য যুক্তি থাকলেও সিদ্ধান্ত বদলাবেন না সলি। দেভাউয়ের কথা শুনে তাঁর মনে হয়েছে, ব্যাপারটা যা বলা হচ্ছে তা নয়। এর পিছনে বড় অপরাধের চক্রান্ত আছে। আর সব কিছুর মূলে ‘মেরি সেলেস্টে’তে থাকা প্রচুর পরিমাণ অ্যালকোহল। ভেবেচিন্তে ফ্লাডের নির্দেশ, বিশেষজ্ঞ দিয়ে জাহাজের পরীক্ষ করাতে হবে। সার্ভেয়ার লেগে পড়লেন কাজে। সঙ্গী দু’জন ডুবুরি। তাঁদের সার্ভে চলুক। সেই ফাঁকে আমরা একটু ফিরে যাই ‘মারি সেলেস্টে’র আগের ইতিহাসে।
***
‘মারি সেলেস্টে’ অবশ্য এই নাম নিয়ে জন্মায়নি। জাহাজটির নির্মাণ শুরু হয় ১৮৬০ সালে। স্পেন্সর্স দ্বীপের কাছে একটি গ্রামে। ১৮৬১ সালে নাম নথিভুক্তিকরণ হয় ‘আমাজন’ নামে। মালিক ছিলেন ন’জন ব্যক্তির একটি গোষ্ঠী। তাঁদের মধ্যে একজন—রবার্ট ম্যাকেলান ছিলেন এই জাহাজের প্রথম ক্যাপ্টেন। ১৮৬১ সালের জুন মাসে জলে নামে ‘আমাজন’। বিভিন্ন দ্বীপ থেকে কাঠ সংগ্রহ করে লন্ডনে নিয়ে আসা—এই ছিল কাজ। সবে বিভিন্ন দ্বীপ থেকে কাঠ সংগ্রহ চলছে, হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন ক্যাপ্টেন রবার্ট ম্যাকেলান। দিনকয়েক পরেই মৃত্যু। নতুন ক্যাপ্টেন হলেন জন পার্কার। কাঠবোঝাই জাহাজ নিয়ে প্রথম দফায় যান লন্ডনে। এরপরে বেশ কয়েকবছর আর কিছু ঘটেনি। ১৮৬৭ সালে প্রবল ঝড়ের মধ্যে পড়ে ‘আমাজন’। দিক ভুলে পৌঁছয় কানাডার কাছে, কেপ ব্রিটন দ্বীপে। প্রাণহানি না হলেও জাহাজের ক্ষতি হয় মারাত্মক। তৎকালীন মালিকরা আর জাহাজ মেরামত না করার সিদ্ধান্ত নেন।  জলের দরে সেই ভাঙা জাহাজ কিনে নেন এক ব্যক্তি। হাত বদল হয়ে সেই জাহাজ আসে রিচার্ড হেইনস নামে এক ব্যক্তির হাতে। প্রচুর অর্থ ব্যয় করে তিনি নতুন জীবন দেন ‘আমাজন’ জাহাজকে। দেন নতুন নামও। ‘মারি সেলেস্টে’। এরপরও অনেকবার হাতবদল হয় জাহাজের। পরিবর্তন হয় দৈর্ঘ্য, প্রস্থে। যগে হয় একটি নতুন ডেকও। শেষে মালিক ও ক্যাপ্টেন হন বেঞ্জামিন ব্রিগ।
ক্যাপ্টেন হিসেবে যথেষ্ট নামডাক ছিল ব্রিগসের। এই যাত্রার জন্য তিনি বেছে বেছে নাবিক নির্বাচন করেন। ‘মারি সেলেস্টে’ নিয়ে তাঁর প্রথম গন্তব্য ছিল ইতালির জেনোয়া শহর। নিউ ইয়র্কের থেকে শুরু হয় যাত্রা। প্রায় সাড়ে আট হাজার কিলোমিটারের এই সফরে সঙ্গী হন ক্যাপ্টেন ব্রিগসের স্ত্রী ও শিশুকন্যা। ছেলের স্কুল থাকায় সিদ্ধান্ত হয়, সে থাকবে বাড়িতে। ঠাকুমার সঙ্গে। শুরু হল প্রস্তুতি। জাহাজে নিয়ে যাওয়া হবে ১৭০০ পিপে ‘ডিনেচার্ড অ্যালকোহল’। ৫ নভেম্বর, ১৮৭২ যাত্রা শুরু করে ‘মারি সেলেস্টে’। কিছু দূরের বন্দরে তখন নোঙর করা রয়েছে ‘দেই গ্রাশিয়া’। নভেম্বরের ১৫ তারিখে বন্দর ছাড়ে ‘দেই গ্রাশিয়া’। তার গন্তব্য ছিল জিব্রাল্টার। ‘মেরি সেলেস্টে’র সঙ্গে একই যাত্রাপথ ছিল ‘দেই গ্রাশিয়া’রও। শোনা যায় দুই জাহাজের ক্যাপ্টেন পরস্পরের বন্ধুও ছিলেন। সে বিষয়ে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে প্রায় পঞ্চাশ বছর পর ক্যাপ্টেন মোরহাউসের বিধবা স্ত্রী বলেছিলেন, ‘মেরি সেলেস্টে’র যাত্রা শুরুর আগের রাতে একসঙ্গে নৈশভোজ সারেন ব্রিগস ও মোরহাউস।
***
সার্ভেয়ার অস্টিন জানান, তিনি জাহাজের ‘বো’ অর্থাৎ সামনের দিকের ছুঁচল অংশের দু’দিকে কাটা দাগ ছিল। ‘মেরি সেলেস্টে’ কোনও ঝড়ের মুখেও পড়েনি। জাহাজে একটি টেবিলের উপরে সেলাই মেশিনের এক শিশি তেল রাখা ছিল। জাহাজ ঝড়ে পড়লে তা আস্ত থাকত না। অন্য কোন জাহাজের সঙ্গে ‘মেরি সেলেস্টে’র ধাক্কাও লাগেনি। ক্যাপ্টেনের তলোয়ারে রক্তের দাগও রয়েছে। এরপর রানির নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেনদের একটি দল আসে জাহাজ পর্যবেক্ষণে। তাঁরাও জানান, ‘বো’-এর দাগ অত্যন্ত সন্দেহজনক। এর কারণ কোনও দুর্ঘটনা নয়, ইচ্ছাকৃতভাবে করা কোনও কাজের ফলেই এই দাগ। জাহাজের রেলিংয়ে কিছু দাগও দেখতে পেয়েছেন তাঁরা, যা রক্তের দাগ হলেও হতে পারে। সার্ভেয়ার সাহেব রিপোর্ট পাঠালেন লন্ডনের বোর্ড অফ ট্রেডে। রিপোর্টে বলা হল, জাহাজের মাল্লারা মদ খেয়ে মাতাল হয়ে ক্যাপ্টেন, তাঁর পরিবার ও অফিসারদের হত্যা করেছে। তারপরে নৌকা চেপে পালিয়েছে। জাহাজের সঙ্গে অন্য জাহাজের ধাক্কা লেগেছে, এরকম একটা ধারণা দেবার জন্য ‘বো’-এর দাগও তারাই করেছে। অ্যাটর্নি জেনারেল সলি ফ্লাড অবশ্য এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হননি। তাঁর ধারণা, ক্যাপ্টেন মোরহাউস কিছু গোপন করছেন। জাহাজে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা ঘটেছে আরও অনেক পূর্বে। জাহাজের লগ বদলেছেন মোরহাউস। নাবিকহীনভাবে একটা জাহাজ প্রায় সাড়ে সাতশো মাইল পাড়ি দিয়েছে, তা মানতে নারাজ তিনি। জাহাজের অন্য এক অংশীদার উইঞ্চেস্টার এলেন জিব্রাল্টারে। জাহাজে থাকা অ্যালকোহলের পিপেগুলি ফেরত চান তিনি। তাঁকে পিপেগুলি দিতে অস্বীকার করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ইতিমধ্যে ভেবেও নিয়েছেন, এই উইঞ্চেস্টারই মাল্লাদের হাত করে ক্যাপ্টেন ব্রিগসকে খুন করিয়েছে। কিন্তু এরপরেই বড়সড় ধাক্কা খেলেন সলি ফ্লাড। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হল, ক্যাপ্টেন ব্রিগসের তলোয়ারে বা অন্যত্র পাওয়া কোনও দাগই রক্তের নয়। কাজেই জাহাজে মিউটিনি বা হত্যা হয়েছে, এই তত্ত্ব দুর্বল হয়ে পড়ল। তখনও দ্বিতীয় ধাক্কা আসা বাকি ছিল। মার্কিন নৌবহরের ক্যাপ্টেন শ্যুফেল্ট জাহাজ পরীক্ষা করে জানালেন ‘বো’-এর দাগ ইচ্ছাকৃত নয়। দীর্ঘদিন যে জাহাজ জলে চলেছে, তাতে জলের জন্যই কাঠের উপর ওরকম দাগ পড়তেই পারে। একপ্রকার বাধ্য হয়েই ‘মেরি সেলেস্টে’কে ছেড়ে দিলেন ফ্লাড। সে পাড়ি জমাল জেনোয়া শহরের দিকে। তবে নানা রকম সন্দেহের নিরসন না হবার কারণে জাহাজ উদ্ধারের মূল্য ধার্য হল মাত্র ১৭০০ পাউন্ড। সাধারণভাবে যা হওয়া উচিত ছিল অন্তত তার তিন গুণ। ‘মারি সেলেস্টে’র ক্যাপ্টেন বা অন্যদের কোনওদিন খোঁজ পাওয়া যায়নি। কী হয়েছিল তা আজও রহস্য।
‘মারি সেলেস্টে’র ক্যাপ্টেন ও অন্যদের হারিয়ে যাবার খবর আলোড়ন ফেলেছিল ইউরোপ ও আমেরিকায়। এর আগে কেউ কখনও কোনও জাহাজের যাত্রীদের উধাও হয়ে যাওয়ার কথা শোনেনি। আজকের দিনে অবশ্য আমরা এরকম বেশ কিছু ঘটনা জানি। হারিয়ে গিয়েছে অনেক প্লেন, জাহাজ। বারমুডা ট্র্যায়াঙ্গেলের রহস্য তো নিয়মিত চর্চার বিষয়। তখনও কিন্তু মানুষ সেসব রহস্যের কথা জানত না। বারমুডা ট্র্যায়াঙ্গেল নিয়ে চর্চা শুরু হয় অনেক পরে, বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে। ১৯৪৫ সালের ৫ ডিসেম্বর ১৪ জন যাত্রী নিয়ে হারিয়ে যায় ‘ফ্লাইট ১৯’। বারমুডা ট্র্যায়াঙ্গেলে সেই একই দিনে, একই জায়গায় হারিয়ে যায় ‘পি বি এম মেরিনার’ নামে আরেকটি প্লেনও। ‘পি বি এম মেরিনার’ বিমানটি গিয়েছিল ‘ফ্লাইট ১৯’-এর খোঁজ করতে। এমন রহস্যের সন্ধান পেয়ে অনেকেই অনেক রকম ‘থিয়োরি’ খাড়া করেন। এর প্রভাব পড়ে সাহিত্যেও। ১৮৮৪ সালে শার্লক হোমস স্রষ্টা স্যার আর্থার কোনান ডয়েল ‘কর্নওয়াল’ ম্যাগাজিনে ‘জে হ্যাবাকক জেফসনস স্টেটমেন্ট’ নামে একটি গল্প লেখেন। তিনি অবশ্য সব নাম বদলে দিয়েছিলেন। যেমন ক্যাপ্টেন ব্রিগস হয়েছিলেন ক্যাপ্টেন টিবস। এ গল্পে বলা হয় জাহাজের কৃষ্ণাঙ্গ মাল্লারা বিদ্রোহ করে বাকিদের হত্যা করে। তারপর আফ্রিকার কোনও উপকূলে নেমে যায় তারা। 
১৯১৩ সালে বিখ্যাত স্ট্র্যান্ড পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এই জাহাজের এক নাবিকের বক্তব্য। বলেন, তিনি একাই বেঁচে আছেন। বাকিরা গিয়েছে হাঙরের পেটে। পরে অবশ্য এ দাবি ভুয়ো বলে প্রমাণিত হয়। অনেকে মনে করেন, বিমার থেকে প্রচুর টাকা পাওয়ার জন্য পুরোটাই পরিকল্পনা করেন উইঞ্চেস্টার। কেউ কেউ বলেন, মোরহাউস ‘মারি সেলেস্টে’কে মাঝ দরিয়ায় ধরে ফেলে ও জাহাজের লোকজনকে খুন করে। যদিও ‘দেই গ্রেশিয়া’র তুলনায় ‘মেরি সেলেস্টে’র গতি ছিল অনেক কম। জাহাজটি বন্দরও ছাড়ে অনেক পরে। তাহলে তারা ‘মেরি সেলেস্টে’র নাগাল কী করে পেল, সেই প্রশ্নের উত্তর অধরাই থেকে গিয়েছে। ১৯০৪ সালে চেম্বারস জার্নালে যা প্রকাশিত হয়, তা আরও অভিনব। বলা হয়, এক অতিকায় অক্টোপাস নাকি সবাইকে খেয়ে নিয়েছে!
18th  December, 2022
আমরি বাংলা ভাষা
অনুপ বন্দ্যোপাধ্যায়

রোজকার মতো প্রাতঃভ্রমণ সেরে চায়ের দোকানে এসে বসলেন চণ্ডীবাবু। কাগজের দিকে হাত বাড়াতে যাচ্ছিলেন। আর মধ্যেই আমাকে দেখে বলে উঠলেন—
গুড মর্নিং স্যর, হ্যাপি বেঙ্গলি নিউ ইয়ার। বিশদ

14th  April, 2024
রহস্যময় গম্ভীরা

পুরীর গম্ভীরায় জীবনের শেষ আঠারোটা বছর কাটিয়েছিলেন শ্রীচৈতন্যদেব। অন্তর্ধানের আগে মহাপ্রভু অন্তিমবারের মতো বের হয়েছিলেন সেখান থেকেই। সেই গম্ভীরা ঘুরে ইতিহাস-রহস্যের অনুসন্ধান করলেন অনিরুদ্ধ সরকার। বিশদ

07th  April, 2024
জিপিও ২৫০

বুধবারের দুপুরবেলা। দোল-হোলি পর্বের টানা ছুটি কাটিয়ে এবার ছন্দে ফেরার পালা। কিন্তু একটু বড় ছুটি পেলেই মানুষের মতো শহরটাকেও জড়িয়ে ধরে আলস্য। অফিস-কাছারি খুলতেই আড়মোড়া ভাঙছে শহর। রাস্তাঘাটে অবশ্য তেমন ভিড় নেই। বিশদ

31st  March, 2024
অন্ধকূপেই ডাকঘরের জন্ম

শহরের বুক থেকে ইংরেজদের পুরনো কেল্লার সীমানা মুছে গিয়েছে কবেই। ফিকে হয়ে এসেছে নবাব সিরাজদ্দৌলার কলকাতা আক্রমণ, প্রথম যুদ্ধজয় এবং অন্ধকূপ হত্যার স্মৃতি। এমনটাই যে হবে, আগেই অনুমান করতে পেরেছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও ইংরেজরা।
বিশদ

31st  March, 2024
নানা রঙের দোল

বারসানায় এখন পা-টুকু নিশ্চিন্তে রাখার জো নেই! দেহাতি, দক্ষিণ ভারতীয়, বাঙালি, বিদেশি কে নেই সেই বিখ্যাত ভিড়ে। প্রায় সবার মাথায় রংবেরঙের পাগড়ি। কারও হাতে আবির, তো কারও ক্যামেরা। একসপ্তাহ ধরে চলছে রঙখেলা। হোলি... লাঠমার।
বিশদ

24th  March, 2024
 ‘যত মত তত পথ’
পূর্বা সেনগুপ্ত

দক্ষিণেশ্বরের দেবালয়। বিরাট বারান্দার এক কোণের ঘরে বসে ভক্তসঙ্গে ধর্মপ্রসঙ্গ করছেন শ্রীরামকৃষ্ণ। দেবালয়ের পাঁচ টাকা মাইনের পুরোহিত হলে কি হবে...মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা রাণী রাসমণি থেকে তাঁর জামাই মথুরবাবু, সকলেই তাঁকে সমীহ করে চলেন। বিশদ

17th  March, 2024
ওপেনহাইমার ও যুদ্ধবাণিজ্য

কয়েক ঘণ্টার মাত্র অপেক্ষা। লস এঞ্জেলসের আলো ঝলমলে ডলবি থিয়েটারে শুরু হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফিল্মি শোবিজ—অস্কার। এবারের অস্কার হুজুগে সারা পৃথিবীর সংবাদ শিরোনামে ‘ওপেনহাইমার’। ক্রিস্টোফার নোলানের এই সিনেমার সঙ্গেই অতীতকে ফিরে দেখলেন মৃন্ময় চন্দ।
বিশদ

10th  March, 2024
এলিট ইতিহাস
কলহার মুখোপাধ্যায়

সে নিজেই একটা ইতিহাস! তবু বেলা না যেতে খেলা তব গেল ঘুচে। তখন নাইট ক্লাব, হুক্কা বার, হ্যাং আউট, শপিং মলের কথা শোনালে মানুষ ভাবতো তামাশা করছে।
বিশদ

03rd  March, 2024
স্বেচ্ছামৃত্যু
 

গ্রিক ভাষায় ‘ইউ’ মানে ভালো আর ‘থ্যানেটোজ’ মানে মৃত্যু। দুইয়ে মিলে ইউথ্যানেশিয়া বা স্বেচ্ছামৃত্যু। গত বছর ভারতে আইনসিদ্ধ হয় প্যাসিভ ইউথ্যানেশিয়া। আইনত বৈধ হলেও, সেই পদক্ষেপকে ঘিরে দানা বাঁধছে সংশয়। স্বেচ্ছামৃত্যুর ইতিবৃত্ত খতিয়ে দেখলেন মৃন্ময় চন্দ
বিশদ

25th  February, 2024
আ’মরি বাংলা ভাষা

আসছে আরও একটা একুশে ফেব্রুয়ারি। হোয়াটসঅ্যাপ যুগে ক্রমে গুরুত্ব হারাচ্ছে দিনটি। তবুও বাংলা ভাষা বেঁচে আছে। থাকবেও। অসম ও বাংলাদেশ ঘুরে এসে লিখেছেন সুখেন বিশ্বাস। বিশদ

18th  February, 2024
সরস্বত্যৈ নমো নমঃ
কৌশিক মজুমদার

আমাদের নয়ের দশকের মফস্বলে উত্তেজনার খোরাক বলতে খুব বেশি কিছু ছিল না। বিশেষ করে আমরা যারা সেকালে ছাত্র ছিলাম, তাদের জন্য। মাস্টারমশাই আর অভিভাবকদের গণ ছাতাপেটাইয়ের ফাঁকে বুধবার সন্ধ্যায় টিভিতে চিত্রহার আর রবিবার সকালের রঙ্গোলিতে কিছু বস্তাপচা গান বাদে গোটা হপ্তাটাই কৃষিকথার আসর আর ‘খবর পড়ছি দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়’-এর মতো নেহাত নিরেস ছিল। বিশদ

11th  February, 2024
কুল খেতে মানা
সন্দীপন বিশ্বাস

স্কুল থেকে ফেরার পথে বিন্তির চোখে পড়ল, বাজারে বিক্রি হচ্ছে বড় বড় কুল। পাশে রয়েছে আপেল কুল, টোপা কুল। তাই দেখে তার জিভে জল এসে গেল। মনে হল, কেটে নুন দিয়ে মেখে খেলে বিকেলটা জমে যাবে। মায়ের কাছে সে আবদার করল, ‘আমায় একটু কুল কিনে দাও না মা!’  বিশদ

11th  February, 2024
নেতাজির বিমা কোম্পানি
সৌম্যব্রত দাশগুপ্ত

১৯৪১ সাল। শীতের সন্ধ্যা। ঢাকা শহরের নবাবপুর অঞ্চলে এক ব্যক্তি ঘুরছেন। রাত্রি নামার আগে তাঁকে গন্তব্য পৌঁছতেই হবে। কিন্তু রাস্তায় কারও কাছে ঠিকানা জানার হুকুম নেই। চারদিকে পুলিসের জাল বিছানো। নবাবপুর রোডের কাছে রায় কোম্পানির বিখ্যাত বিলাতি মদের দোকানের সামনে এসে চোখ পড়ল একটি বাড়ির দরজায়। বিশদ

04th  February, 2024
আইএনএ’র বিপ্লবী ডাক্তার
বিশ্বজিৎ মাইতি

‘অস্থায়ী হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন শয়ে শয়ে মরণাপন্ন রোগী। চিকিৎসক ও নার্সদের দাঁড়ানোর ফুরসত নেই। আচমকাই সাইরেন বেজে উঠল। মুহূর্তের মধ্যে দৈত্যের মতো আওয়াজ তুলে হাজির যুদ্ধবিমান। প্রাণের ভয়ে পাশের পরিখায় ঝাঁপিয়ে পড়লেন অনেকে। বিশদ

04th  February, 2024
একনজরে
নির্বাচনী কাজে চরম ব্যস্ততা রয়েছে পুলিসের। এছাড়া ভোট আবহে নিত্যদিন বিভিন্ন সভা থেকে মিছিলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা সহ নাকা চেকিংয়ে চরম ব্যস্ত পুলিস-প্রশাসন ...

আটের দশকের শেষ দিক। নাইজেরিয়া থেকে ভারতীয় ফুটবলে পা রেখেছিলেন দীর্ঘদেহী মিডিও। নাম এমেকা এজুগো। পরবর্তীতে ১৯৯৪ বিশ্বকাপে তিনি দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। ময়দানের তিন প্রধানের ...

পিছনে লেগে রয়েছে ইডি। চীনা ভিসা দুর্নীতি মামলায় ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে চার্জশিটও জমা পড়েছে আদালতে। রাহুল গান্ধী সহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের সমালোচনা ...

প্রথম দফার ভোটে প্রচার পর্ব শেষ হয়েছে বুধবার বিকেলেই। অথচ পশ্চিমবঙ্গের তিনটি আসনের জন্য দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে সভা করলেন না বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। অদ্ভুতভাবে বাংলার প্রথম দফার ভোটে ব্রাত্য রইলেন হিন্দুত্বের ‘পোস্টার বয়’ যোগী আদিত্যনাথ। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস
১৮০৯: ইউরেশীয় কবি, যুক্তিবাদী চিন্তাবিদ ও শিক্ষক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর জন্ম
১৮৫৩: এশিয়ায় প্রথম ট্রেন চালু হয়
১৮৮৮: সাহিত্যিক হেমেন্দ্রকুমার রায়ের জন্ম
১৯১৬: অভিনেত্রী ললিতা পাওয়ারের জন্ম
১৯৩০: ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামে অংশ নিয়ে মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে বিপ্লবীরা চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখল করে
১৯৫৫ - নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন পদার্থ বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের মৃত্যু
১৯৫৮ - ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার ম্যালকম মার্শালের জন্ম
১৯৬২: অভিনেত্রী পুনম ধিলনের জন্ম
১৯৬৩: ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার ফিল সিমন্সের জন্ম
১৯৭১: কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন
১৯৮০: জিম্বাবুইয়ে স্বাধীনতা লাভ করে
১৯৮১: সুরকার, গীতিকার ও লোকগীতি শিল্পী তথা বাংলার লোকসঙ্গীতের প্রসারে ও প্রচারে যাঁর অবদান অসীম সেই নির্মলেন্দু চৌধুরীর মৃত্যু
১৯৮৬:  স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতা, লোকসভার প্রাক্তন সদস্য অতুল্য ঘোষের মৃত্যু
১৯৯২: ক্রিকেটার কেএল রাহুলের জন্ম



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.০৩ টাকা ৮৪.১২ টাকা
পাউন্ড ১০২.৫৫ টাকা ১০৫.১৬ টাকা
ইউরো ৮৭.৪৮ টাকা ৮৯.৮৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
17th  April, 2024
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৪,৩৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৪,৭০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭১,০০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৪,১০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৪,২০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৫ বৈশাখ, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪। দশমী ৩০/৩৫ অপরাহ্ন ৫/৩২। অশ্লেষা নক্ষত্র ৬/৩৮ দিবা ৭/৫৭। সূর্যোদয় ৫/১৭/৪৩। সূর্যাস্ত ৫/৫৪/১৬। অমৃতযোগ রাত্রি ১২/৪৪ গতে ৩/১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ প্রাতঃ ৬/৫৯ মধ্যে পুনঃ ১০/২০ গতে ১২/৫২ মধ্যে। বারবেলা ২/৪৫ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ১১/৩৫ গতে ১/০ মধ্যে। 
৫ বৈশাখ, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪। দশমী রাত্রি ৭/৫। অশ্লেষা নক্ষত্র দিবা ৯/৫২। সূর্যোদয় ৫/১৮, সূর্যাস্ত ৫/৫৬। অমৃতযোগ রাত্রি ১২/৪০ গতে ২/৫৩ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ১০/১৫ গতে ১২/৫১ মধ্যে। কালবেলা ২/৪৬ গতে ৫/৫৬ মধ্যে। কালরাত্রি ১১/৩৭ গতে ১/২ মধ্যে। 
৮ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
বিজেপির বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ মমতার

01:15:00 PM

মুর্শিদাবাদের ঘটনায় ওসির উপর হামলা: মমতা

01:14:00 PM

আমি জানতাম না মিঠুন এতবড় গদ্দার: মমতা

01:13:00 PM

বিজেপি লুটেরাদের পার্টি: মমতা

01:12:23 PM

আগে নিজের রাজ্য সামলাক যোগী, উত্তরপ্রদেশে কাউকে কথা বলতে দেওয়া হয় না: মমতা

01:11:37 PM

রাম নবমীর আগে কেন ডিআইজিকে সরানো হল: মমতা

01:10:00 PM