Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

অচেনা সীমান্তে
অজানা গল্প

রাহুল দত্ত :  সীমান্ত....! দু’দেশের মাঝে কাঁটাতারের বেড়া। আর তার দু’দিকে বাস হাজার হাজার মানুষের। যেখানে কাঁটাতার নেই, সীমান্তের ‘উঠোন’ যেখানে উন্মুক্ত, সেখানে বাস করা যে কী কঠিন, কী যন্ত্রণাদায়ক, তা বোধহয় আমার-আপনার মতো বহু মানুষই জানেন না। সপ্তাহান্তে সিনেমা দেখা, ময়দানে পাক খাওয়া, গঙ্গার পাড় বা শপিংমলে ঘুরে একঘেয়েমি কাটানো, স্বাদ বদলাতে রেস্তরাঁয় খাওয়া— এই জীবনযাপনে অভ্যস্ত মানুষজন সীমানাপারের বাসিন্দাদের সংগ্রামকে ‘হয়তো’ উপলব্ধি করতেই পারবেন না। সীমান্তবাসীর এই লড়াকু জীবনযাত্রা করোনার কঠিন সময়ে আপনাকেও হয়তো সেই সংগ্রামের পথ চিনিয়ে দিয়েছে। 
একুশের ভোটের প্রাক্কালে রাজনৈতিক উত্তাপের আঁচ পেতেই উত্তরবঙ্গে আসা। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতায় উঠে আসে কয়েকটি অচেনা গ্রামের কথা। সবক’টি গ্রামই একেবারে সীমান্তপারে। রাজনীতির ওঠাপড়ার খবরের পাশাপাশি মন টানে কাঁটাতার। খোঁজ করতে গিয়ে জানলাম বহু অজানা গল্প। কাজের ফাঁকেই বেরিয়ে পড়লাম সীমান্তপাড়ে ছোট ছোট জনপদের সন্ধানে। জলপাইগুড়ি শহর থেকে হলদিবাড়ি যাওয়ার রাস্তায় পড়ে বেরুবাড়ি গ্রাম। এখানে পৌঁছেই খোঁজ পেলাম সীমান্তের প্রথম অচেনা গ্রামের। এরপর এগিয়ে চললাম অজানার খোঁজে। 
যেতে যেতে পথে পড়ল যমুনা সেতু। নীচ দিয়ে বয়ে চলেছে সরু জলধারা। একে মজে যাওয়া খাল বললেও অত্যুক্তি হয় না। গ্রামবাসীদের কথায়, এর সঙ্গে যমুনা নদীর যোগ রয়েছে। সেখান থেকেই সেতুর এ হেন নামকরণ। এখান থেকে আরও ১০-১২ কিমি এগলে সীমান্ত, সেখানে কাঁটাতার। আমার গন্তব্য সেখানেই। হিন্দুপাড়া, অন্তুপাড়া, খেকিডাঙা, বাঙালপাড়া, সিপাইপাড়া ও খুদিপাড়া— এই ছ’টি গ্রাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কাঁটাতারের গায়ে।
আমি-আপনি যদি নতুন বাইক কিনতে শো-রুমে যাই, তাহলে পছন্দের পর দরদাম রফা হলে ‘বুক’ করে বাড়ি ফিরে আসি। যেদিন ডেলিভারি করা হয়, সেদিন নতুন অতিথিকে এনে বাড়ির গ্যারাজে রাখি। এর অন্যথা খুব একটা হয় না। তবে বেরুবাড়ি সীমান্তের গ্রামগুলিতে গাড়ি আর বাড়ি কিনতে গেলে অন্য গল্প শুনতে হবে। সেখানে বাইক কিনতে গেলে নানা ঝকমারি। যেদিন শো-রুমে গিয়ে বাইক বুক করবেন, সেদিনই আপনাকে সীমান্তবর্তী বিএসএফ ক্যাম্পে গিয়ে বাইকের বিস্তারিত তথ্য জমা দিয়ে আসতে হবে। হাজারো জিজ্ঞাসার পর তারা ছাড়পত্র দিলে তবেই ঘরে তুলতে পারবেন আপনার শখের যানটি।
স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ আজিমুদ্দিনের কথায়, ‘ভা঩গ্যের পরিহাস বোধহয় একেই বলে। রাস্তায় বের হলে সবারই আধার কার্ড সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক। কে ভারতীয়, আর কে বাংলাদেশি দেখে বোঝার উপায় নেই। সমস্যার সূত্রপাত গত শতাব্দীর ন’য়ের দশকে শুরু হলেও নিয়মের কড়াকড়ি গত সাত-আট বছরে খুব বেড়েছে।’ এই জমি ভারতের হলেও কাঁটাতারের বেড়া দিতে গিয়ে আলাদা হয়েছেন তাঁরা। তাঁদের জমি মিশেছে প্রতিবেশী দেশের মাটিতে। ফলে গ্রামে ঢোকা বা বিভিন্ন কাজের সূত্রে দেশের মূল ভূখণ্ডে আসতে হলে আধার কার্ডই একমাত্র রক্ষাকবচ। তা দেখিয়েই নিত্যদিন চলে এপার-ওপার। এখানকার ছ’টি গ্রামের বাসিন্দাদের এই রুটিনই ফলো করতে হয়। দেশের অন্য প্রান্তের বাসিন্দারা যখন নিশ্চিন্তে ব্যাগ বোঝাই করে বাজার থেকে ফেরেন, তখন এখানকার বাসিন্দাদের প্রতিদিন বাজার করে বাড়ি ফেরার পথে ব্যাগ খুলে দেখাতে হয় সীমান্তরক্ষীদের। যন্ত্রণার এখানেই শেষ নয়। আজিমুদ্দিনের মতোই আক্ষেপের কথা শোনালেন আরেক বাসিন্দা মনসুর আলি। বললেন, ‘আত্মীয়-স্বজনরাও এখানে আসতে বেশ বিব্রত বোধ করেন। কারণ তাঁরা তাঁদের ইচ্ছামতো আসতে পারেন না। তাঁরা আসার আগে বিএসএফ ক্যাম্পে গিয়ে আমাদের জানিয়ে আসতে হয়, কারা আসছেন, কী তাঁদের পরিচয়, কোথায় যাবেন, কতক্ষণ বা কতদিন থাকবেন ইত্যাদি। ফলে এত হ্যাপার কারণে অনেকেই কুটুমবাড়ি আসতে চান না। আপনারা করোনাপর্বে ৫০ জনকে নিয়ে বিয়ে বাড়ি চালাতে গিয়ে হাঁফিয়ে উঠছেন, আর আমাদের সারা বছর এই নিয়ম মেনে চলতে হয়। এখানে কারও বিয়ে হলে অনুষ্ঠানে কতজন অতিথি আসবেন, তারমধ্যে কতজন পুরুষ, কতজন মহিলা, তাঁদের নাম-ঠিকুজি— সবই আগাম জানাতে হয় বিএসএফ ক্যাম্পে। এ এক যন্ত্রণার জীবন!’ 
কেন এমনটা হল? গ্রামবাসীদের কথায়, স্বাধীনতার সময় থেকেই এখানকার সীমানা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। ন’য়ের দশকে তা অবশ্য মিটে যায়। সিদ্ধান্ত হয়, ভারত-বাংলাদেশ সীমানায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হবে। এরপরই নতুন সমস্যার সূত্রপাত। জমির আকৃতি একটু অন্যরকম হওয়ায়, কাঁটাতার কীভাবে যাবে, তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত সরকার এই ছ’টি গ্রামকে বাদ রেখেই সোজাসুজি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে দেয়। ফলে ভারতীয় হয়েও ভারতের মূল ভূখণ্ডে থাকার অধিকার হারান তাঁরা। তাঁদের জমি মিশে রয়েছে বাংলাদেশের মাটির সঙ্গে। স্পষ্টবাদী আজিমুদ্দিন বলেন, ‘এই সমস্যা তৈরি হয়েছে প্রায় ২৫ বছর আগে। জমির অবস্থানগত কারণেই কাঁটাতারের ওপাশে রয়েছি আমরা। তাই আমাদের উপর সব সময় কড়া নজরদারি। এই ছ’টি গ্রামের প্রতিটি বাসিন্দা থেকে শুরু করে কোন বাড়িতে ক’টা গোরু, ক’টা ছাগল, ক’টা ভেড়া, বাড়িতে কী কী আসবাব, সাইকেল না বাইক, সব হিসেবই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রয়েছে সীমান্তরক্ষীদের খাতায়। আর রয়েছে চোখরাঙানি। পাছে কেউ ভুল করে না বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে, তারজন্য প্রতিনিয়ত শুনতে হয় ধমক। ভারী বুটের আওয়াজে কান সয়ে গিয়েছে আমাদের। সীমান্তরক্ষীদের চোখরাঙানিও এখন গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে। তবে পরিচয়পত্র সঙ্গে থাকলে ঝক্কি কিছুটা কমে। এভাবেই দিন কাটে আমাদের। ভারতের নাগরিক হয়েও প্রতিদিন আমাদের প্রমাণ দিতে হয় যে, আমরা ভারতীয়। এই জীবন বড়ই কষ্টের!’
সাত-আট বছর আগের কথা। বাঙালপাড়ায় এক গৃহস্থের বাড়িতে জনাকয়েক অতিথি এসেছিলেন। কিন্তু তাঁরা গ্রামে ঢুকে বাড়ি ভুল করে পা রেখেছিলেন বাংলাদেশের মাটিতে। ব্যস, আর যায় কোথায়! সে দেশের সীমান্ত প্রহরীদের চোখ এড়ায়নি বিষয়টি। ফলে যা হওয়ার তাই হল। অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সেই অতিথিদের। এ নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি সেই সময়ে। তারপর থেকেই বিএসএফ ফতোয়া দিয়ে জানিয়ে দেয়, সব গ্রামবাসীকেই সব সময় সঙ্গে আধার কার্ড নিয়ে ঘুরতে হবে। সিপাইপাড়া গ্রামে থাকেন মহম্মদ নবিউল ইসলাম। তাঁর অভিজ্ঞতার কথা শোনাতে গিয়ে বললেন, ‘একদিন বাজারে গিয়েছিলাম। সঙ্গে আধার কার্ড নিয়ে যেতে ভুলে গিয়েছিলাম। ফেরার পথে সীমান্ত চৌকিতে পথ আটকে গ্রামে ঢুকতে বাধা দেন জওয়ানরা। নিরুপায় হয়ে বাড়িতে ফোন করে আধার কার্ড আনার ব্যবস্থা করি। তারপর বাড়ি যাওয়ার অনুমতি পাই। এভাবেই দিন কাটে আমাদের।’ একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা শোনা গেল অন্যদের মুখেও। তাঁদেরই একজন বললেন, কয়েক বছর আগে কাঁটাতারের বেড়ার অবস্থান বদল করে সীমান্তের এই ছ’টি গ্রামকে ভারতের মূল ভূখণ্ডে ঢুকিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেকারণে মাপজোকও হয়েছে বেশ কয়েকবার। কিন্তু, ওই পর্যন্তই। কাজ কবে শুরু হবে, সেদিকেই এখন তাকিয়ে ছ’টি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা। 
ভোট রাজনীতির খোঁজে এবার গন্তব্য পাশের জেলা কোচবিহার। এখানে ছিটমহলের ইতিহাস অনেকেরই জানা। এখানকার বাসিন্দাদের কষ্টের কথাও কমবেশি শুনেছি অগ্রজদের কাছে। কিন্তু, যে এলাকায় গিয়েছিলাম, সেখানকার গল্প একটু অন্যরকম। দিনহাটা ব্লকের মধ্যেই পড়ে নাজিরহাটের মশালডাঙা ছিটমহল এলাকা। একে টপকে গেলেই নোটাফেলা গ্রাম। কাঁটাতার ঘেঁষা এই গ্রাম প্রথম থেকেই ভারতের অংশ। ছিটমহলের মতো যন্ত্রণা এখানকার মানুষকে ভোগ করতে হয়নি। কিন্তু, এ যন্ত্রণাও কম কীসের? বলছিলেন স্থানীয় কৃষক সুশীল বর্মন। বাড়ির কয়েক হাত দূরেই কাঁটাতারের বেড়া। ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত। সীমানার এপারে ঘর, আর ওপারে চাষের জমি। কাঁটাতার পেরিয়ে পাঁচ বিঘা জমিতে রোজ চাষ করতে যান সুশীলবাবু। তাঁর কথায়, সীমান্ত ভাগাভাগি হলেও প্রথমে এত কড়াকড়ি ছিল না। ফলে সেখানে গিয়ে নিজের জায়গায় চাষ করতে অসুবিধাও হতো না। কিন্তু, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কড়াকড়ি বেড়েছে সীমান্তে। এখন কাঁটাতার দু’ভাগ করেছে দুই দেশকে। তাই প্রতিদিন সকালে পরিচয়পত্র দেখিয়ে সীমান্ত চৌকির অনুমতি নিয়ে ওপারের জমিতে চাষ করতে যেতে হয়। আবার বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই কাজ সেরে ফিরে আসতে হয়। ইচ্ছা থাকলেও নিজের জমিতে বেশি সময় থাকার উপায় নেই। সীমান্ত পাহারায় যাঁরা থাকেন, তাঁদের সঙ্গে পরিচিতি হয়ে যাওয়ায় কিছুটা সুবিধা হয় বটে, তবে সেই সুযোগ রোজ মেলে না। অফিসাররা মাঝেমধ্যে বদলি হয়ে গেলে আবার যে কে সেই অবস্থা। নতুন অফিসারের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় না হওয়া পর্যন্ত চলে এ যন্ত্রণা। চলতেই থাকে। 
নোটাফেলা গ্রামেই থাকেন রাজবালা অধিকারী। বয়স চার কুড়ি ছুঁই ছুঁই। স্মৃতি হাতড়ে বলছিলেন সেকালের কথা। তাঁর কথায়, ‘অবিভক্ত বাংলাদেশে জন্মেছি। দেশভাগ হওয়ার পরেও তখন সীমান্তে এত কড়াকড়ি ছিল না। কাঁটাতার তো এ যুগের বেড়া। আমার বয়স যখন ১৫ বছর, তখন স্বামীর সংসার করতে চলে আসি এপারে। তারপর থেকে এখানেই কেটেছে বাকি জীবন। সাংসারিক চাপে একবারের জন্যও আর বাপের বাড়ি যাওয়া হয়নি। এখন সেখানে কেউ বেঁচে আছে কি না, তাও জানি না।’ কাঁটাতার নিয়ে কথা উঠতেই রাজবালাদেবী বলে উঠলেন, ‘তার দিয়ে কখনওই মানুষের মনে বিভেদ তৈরি করা যায় না। বরং ছেদ টানে যোগাযোগ ব্যবস্থায়। আর সেকারণেই মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের দূরত্ব বেড়ে যায়।’  
কথায় কথায় উঠে এল ছিটমহল প্রসঙ্গ। ছিটমহলের বাসিন্দারা কোন দেশের নাগরিক তা নিয়ে বহুদিন থেকেই ধন্দ রয়েছে। তাঁদের নাগরিকত্ব পাওয়া-না পাওয়া নিয়ে তুফান উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। হয়েছে কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ। দু’দেশের সহাবস্থানের ফলে অবশ্য শেষ পর্যন্ত নাগরিকত্ব পেয়েছেন ছিটমহলের মানুষ। কিন্তু হলে কী হবে, সমস্যা রয়ে গিয়েছে সেই তিমিরেই। তাঁদেরই একজন সফিকুল ইসলাম। কয়েক বছর আগে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চাকরির পরীক্ষা দিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু দেশরক্ষার কাজে তাঁকে নেওয়া হয়নি শুধু ছিটমহলের জটের কারণে। কিন্তু, কেন এমনটা হল?
একরাশ যন্ত্রণাকে বুকে চেপে সফিকুল বলছিলেন সেই কথাই। ছিটমহলে থাকাকালীন এখানকার বাসিন্দাদের নিজস্ব কোনও পরিচয়পত্র ছিল না। স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে, মোবাইলের সিম কেনা— সবেতেই দরকার হয় পরিচয়পত্র। আর তা না থাকায় সফিকুলকেও আর পাঁচজনের মতো ভাড়া করতে হয়েছিল ‘বাবা’। অনেকেই ‘ভাড়া করা’ বাবা-মায়ের নামে নিজেদের পরিচয়পত্রও বানিয়েছিলেন সেই সময়। এই গেরোতেই আটকে গিয়েছে চাকরি। সফিকুল দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়কে (যিনি ছিটমহলবাসী ছিলেন না) বাবা বলে পরিচয় দিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন স্কুলে। পরবর্তী সময়ে রেশন কার্ড যখন তৈরি হয়, তখন স্কুলের কার্ডই হয়ে উঠেছিল প্রমাণপত্র। ফলে সেই ভাড়াটে বাবার নামই উঠে আসে রেশন কার্ডে। ২০১৫ সালে ছিটমহল জট কাটাতে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি সম্পাদিত হয়। ফলে এদিকে থাকা বাংলাদেশের ছিটমহল ভারতের জমি হিসেবে চিহ্নিত হয়। একই পরিণতি হয় ওপারের ছিটমহলবাসীদের। এপারের লোক পেয়ে যান ভারতীয় নাগরিকত্ব। একে একে হাতে পান ভারতীয় পরিচয়পত্র অর্থাৎ ভোটার কার্ড, আধার কার্ড। এই পর্বে এসে সফিকুলদের জটিলতা আরও বেড়ে যায়। স্কুলের সার্টিফিকেট আর সরকারি পরিচয়পত্রে দেখা যায় বাবার নাম আলাদা। সফিকুলের দাবি, সেনাবাহিনীতে যখন নির্বাচন হয়েছিল, তখন বলা হয়েছিল, ছিটমহলবাসী হওয়ায় তাঁর ক্ষেত্রে নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হবে। কিন্তু, শর্ত একটাই। যাঁকে তিনি বাবা বানিয়ে এতদিন স্কুলে পড়েছেন কিংবা অন্যান্য পরিচয়পত্র তৈরি করেছেন, তাঁকে দিয়ে লিখিয়ে আনতে হবে বাস্তব ঘটনা। এখানেই বেঁকে বসেন ভাড়াটে বাবা। তিনি ওই স্বীকারোক্তি লিখিতভাবে দিতে অস্বীকার করায় সেনাবাহিনীতে চাকরির সুযোগ হাতছাড়া হয় সফিকুলের। যুবকের আক্ষেপ সেখানেই। 
সফিকুল একা নন, তাঁর মতো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন আরও ন’-দশজন যুবক। এখন নথিপত্রে সঠিক তথ্য লিপিবদ্ধ করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছেন তাঁরা। যদি সেই আর্জি ধোপে না টেকে, তাহলে চাকরি পাওয়ার স্বাদ অধরাই থেকে যাবে সফিকুলদের মতো যুবকদের। এই জটিলতা থেকে দ্রুত মুক্তি চান তাঁরা। তাঁদের কথায়, সীমান্তের জীবনযাত্রা এমনিতেই কঠিন। তার উপর রয়েছে ছিটমহলের কালো ইতিহাস। এই অবস্থায় সরকার এখানকার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যবস্থা না নিলে তাঁদের পক্ষে সুষ্ঠভাবে বেঁচে থাকাই মুশকিল।
ছিটমহলের আরেক যন্ত্রণার ছবি ধরা পড়ল মধ্য মশালডাঙায়। যাকে বলে ‘কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে’। স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন বললেন, তাঁদের জমি-জায়গা ভারতের মধ্যে থাকলেও তা একদা বাংলাদেশের বলেই চিহ্নিত ছিল। তাই রাস্তার ধারে জায়গায় জায়গায় বা চাষের জমির মাঝে বাংলাদেশের পিলার লাগানো হয়েছিল। ছিটমহল হস্তান্তর হলেও, সেই পিলার এখনও সরানো হয়নি। ফলে ভারতের বুকেই জ্বলজ্বল করছে বাংলাদেশের পিলার। বাইরে থেকে যাঁরা আসেন, তাঁরা এসবের ছবি তুলে নিয়ে যান।  স্থানীয় মানুষের কাছে এই পিলার এখনও ছিটমহলের যন্ত্রণাকে মনে করিয়ে দেয়। তাই ছিটমহল থেকে মুক্তি মিললেও সেই জীবনযাত্রা এখনও রয়ে গিয়েছে পরতে পরতে।
কোচবিহারের আরেক প্রান্তে মেখলিগঞ্জ। ভোটের খবর করতে যখন এখানে পৌঁছলাম, তখন মন টানল সেই তিনবিঘা করিডর। এই বিতর্কিত জমি নিয়ে কম রক্ত ঝরেনি এক সময়ে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যবর্তী অংশে এ এক অদ্ভুত জায়গা। বাংলাদেশের মানুষকে প্রতিদিন ভারতের জমির উপর দিয়েই যেতে হয় নিজের দেশের অন্য প্রান্তে। এই সীমান্তের মানুষের কাছে তিনবিঘা করিডরের স্মৃতি বেশ কষ্টদায়ক। এর একদিকে বাংলাদেশের লালমণিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা। অন্যদিকে, তিস্তার চরে বাংলাদেশের দহগ্রাম ও আঙ্গারপোতা গ্রাম। আর ভারতের দু’দিকে ১০৪ নং ফুলকাডাবরি গ্রাম ও দক্ষিণ বেরুবাড়ির ১১৫ নং উপচৌকি কুচলিবাড়ি গ্রাম। এই গ্রামগুলির একেবারে মাঝখান দিয়ে চলে গিয়েছে তিনবিঘা করিডর। স্বাধীনতার সময় থেকেই এ সব গ্রামের কোনটা কোনদিকে থাকবে, তা নিয়ে জোর বিতর্ক চলেছে। শেষ পর্যন্ত পাটগ্রাম, দহগ্রাম ও আঙারপোতা বাংলাদেশে এবং বাগডোগরা ফুলকাবাড়ি ও কুচলিবাড়ি (দক্ষিণ বেরুবাড়ির অংশ) ভারতের অংশ হিসেবে চিহ্নিত হয়। সমস্যার সূত্রপাত এখানেই । কারণ পাটগ্রাম থেকে দহগ্রাম যেতে হলে ভারতের মাটি পেরতেই হবে। গত শতাব্দীর আটের দশকে এনিয়ে দু’দেশের মধ্যে রফাচুক্তি হয়। কিন্তু, তা কার্যকর করতে আরও সময় গড়িয়ে যায়। এরপরে ন’য়ের দশকে এনিয়ে প্রতিবাদে শামিল হন ভারতীয় গ্রামের বাসিন্দারা। শুরু হয় আন্দোলন। শেষ পর্যন্ত ন’য়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে পাটগ্রাম থেকে দহগ্রাম বা আঙ্গারপোতা যাওয়ার জন্য তিনবিঘা করিডরকে বাংলাদেশিদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। যদিও সেই সময় সারাদিনে কয়েক ঘণ্টার জন্য এই করিডর ব্যবহার করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ২০১১ সালে বাংলাদেশিদের স্বার্থে এই করিডোর ২৪ ঘণ্টার জন্য খুলে দেওয়া হয়। লালমণিরহাটের বাসিন্দা বছর ত্রিশের শেখ সালাউদ্দিন অপু বলছিলেন, ‘আমার দিদির বাড়ি আঙ্গারপোতায়। ছোটবেলা থেকে বাবা-মায়ের কাছে শুনেছি সেসব কথা। কিন্তু, কোনওদিন আসার সুযোগ পাইনি। কারণ ভারতের মাটি টপকে আঙ্গারপোতা যাওয়াটা খুব সহজ ছিল না সেই সময়। তাই এতদিন আসা হয়নি। শেষ কয়েক বছরে অবশ্য চিত্রটা অনেকটাই বদলেছে। তাই এখন যখন-তখন দিদির বাড়ি আসা কিংবা দিদির বাপের বাড়ি যাওয়ার সুযোগ হয়েছে।’ অন্যদিকে, ভারতের দক্ষিণ বেরুবাড়ির এক বাসিন্দার কথায়, ‘এই করিডর যদি বাংলাদেশের হতো, তাহলে আমাদের পক্ষে যাতায়াত করা মুশকিল হয়ে যেত। তবে এখন কোনও সমস্যা নেই। দু’দেশের মানুষ অনায়াসেই যাতায়াত করতে পারেন তিনবিঘা করিডর দিয়ে।’ বাংলাদেশের দহগ্রামের এক বাসিন্দা বললেন, দীর্ঘদিন বন্দিদশা কাটিয়ে এখন মুক্তির আনন্দ পেয়েছি। আর আমরা বন্দিদশায় ফিরতে চাই না। 
বাংলাদেশ সীমান্তের অচেনা গ্রামের অজানা কথার টুকরো ছবি দিয়ে সাজানো এই ক্যানভাস অপূর্ণ থেকে যায় ভুটান সীমান্তের চামুর্চির কথা না বললে। জলপাইগুড়ি-ভুটান সীমান্তের ছোট্ট জনপদ চামুর্চি। এখানে ভুটানে প্রবেশদ্বারের মুখেই রয়েছে নিউ চামুর্চি বাজার। এই গল্পটা একটু অন্যরকম। সীমান্তের ভাগাভাগি, উচ্ছেদ, কাঁটাতার— এসব এখানকার মানুষকে আলাদা করেনি। এখানে সীমান্তকে তারিয়ে তারিয়ে উপভোগই করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। চামুর্চি-ভুটান সীমানার ‘শেষ বাড়ি’র বাসিন্দা রেখা ভুটিয়ার কথায়, সীমান্ত খোলা থাকলেও তাঁদের কোনও দুঃখ নেই। কারণ তাঁদের গ্রামের গোটা অর্থনীতি ও মানুষের জীবনযাত্রা পুরোটাই দাঁড়িয়ে আছে সীমান্ত বাণিজ্যের দৌলতে। করোনা আবহে সেই বাণিজ্য এখন বন্ধ। তাই কষ্টেই দিন কাটছে তাঁদের। তাঁদের কাছাকাছি শহর বলতে বানারহাট। কিন্তু, চামুর্চির সিংহভাগ মানুষই নির্ভরশীল ভুটানের সামচি জেলার উপর। ভারতীয় ভূখণ্ডে যোগাযোগ ব্যবস্থা মসৃণ না হওয়ায় এখানকার মানুষকে ভুটানের উপরেই ভরসা করতে হয়। স্থানীয় স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক সুশীল শর্মা জানালেন, প্রায় একশো বছর আগে তাঁর বাবা কর্মসূত্রে এখানে এসেছিলেন। সেই থেকেই এখানে বাস এই পরিবারের। তাঁর জন্মও এখানে। কিন্তু, এত বছরেও বিশেষ বদল হয়নি চামুর্চির। প্রয়োজনে বা বিপদে আপদে বানারহাট বা জলপাইগুড়ি কিংবা শিলিগুড়ি যাওয়ার বদলে এখানকার মানুষ ভুটানকেই বেশি পছন্দ করেন।
করোনা সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে নতুন নতুন সংগ্রামের সম্মুখীন হচ্ছি আমরা। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই লড়াই চালাতে গিয়ে ক্লান্ত সকলেই। একইভাবে ক্লান্ত সীমান্তের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই মানুষজন, যাঁরা নিত্যদিন আরও কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলেছেন উজানের পথে। নতুন সকালের অপেক্ষায় আমরা সকলেই।
 ছবি :. লেখক
 গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল
 সহযোগিতায় : অভিষেক গোস্বামী
04th  July, 2021
বাংলার হারিয়ে যাওয়া নদী

মানব সভ্যতা নদীমাতৃক। অথচ, অনেক ক্ষেত্রে মানুষের সচেতনতার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে বহু নদী। সভ্যতা বাঁচাতে নদীকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই। তাই ‘বিশ্ব নদী দিবসে’ বাংলার হারিয়ে যাওয়া নদীগুলির সন্ধান করা হল। বিশদ

26th  September, 2021
বাতাসে বিষ কমছে আয়ু
অরিন্দম রায়

ছোটবেলায় স্কুলের বইতে বায়ুদূষণ নিয়ে যা পড়েছিলাম সেই ধারণার একটা পরিবর্তন করা দরকার। আমাদের পাঠ্য বইতে বায়ুদূষণের বেশিরভাগ অংশটাই ছিল সালফার-ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড কেন্দ্রিক। আমরা পড়েছিলাম, এই দুই গ্যাস কলকারখানা এবং গাড়ির ধোঁয়া থেকে বেরিয়ে অ্যাসিড বৃষ্টির সৃষ্টি করে। বিশদ

19th  September, 2021
অপু-দুর্গার খোঁজে
পুলক চট্টোপাধ্যায়

ছেলেবেলায় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় যখন স্কুল পালিয়ে লুকিয়ে তাঁর বাবার লেখা ‘পশ্চিমের ডায়েরি’ পড়তেন, তখন থেকেই তাঁর মনের মধ্যে একটা কল্পনার পাখি বাসা বেঁধেছিল। এরপর বিভূতিভূষণ কর্মসূত্রে হাজির হলেন শরৎচন্দ্রের স্মৃতি বিজড়িত ভাগলপুরের আদমপুরে উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে। বিশদ

12th  September, 2021
বাঙালির শিক্ষক
সমৃদ্ধ দত্ত

স্কটল্যান্ডের এবর্ডিন থেকে ২৫ বছর বয়সে বহু দূরের একটি শহর কলকাতায় যখন ডেভিড হেয়ার এলেন, তার কিছুকাল আগেই এই প্রদেশটিতে ভয়ঙ্কর এক দুর্ভিক্ষ ঘটে গিয়েছিল। তাঁর বাবা ছিলেন ঘড়ি নির্মাতা। চার পুত্র জোশেফ, আলেকজান্ডার, জন ও ডেভিড কমবেশি ঘড়ি-বিশেষজ্ঞ। বিশদ

05th  September, 2021
পেগাসাস, রাজকন্যা
ও চুপকথা

থ্রি মাস্কেটিয়ার্স— নিভ-সালেভ-ওমরির নামের আদ্যক্ষর মিলিয়ে তৈরি ইজরায়েলের কুখ্যাত গুপ্তচর সংস্থা এনএসও। কেবল উগ্রপন্থী বা পেডোফাইলস (শিশু যৌন নির্যাতনকারী) পাকড়াতে বিভিন্ন দেশের সরকারকেই নাকি পেগাসাস বিক্রি করা হয়। আরবের রাজকুমারী লতিফা, খুন হওয়া সাংবাদিক জামাল খাশোগি বা মরক্কোর ইতিহাসবিদ্‌ মাতি মনজিব—সকলেই তাহলে ছিলেন পেডোফাইলস বা উগ্রপন্থী? আরব-ইজরায়েল সম্পর্ক সাপে-নেউলে। অথচ, পেগাসাস কেনাবেচার সময় বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও মহম্মদ বিন রশিদ প্রাণের বন্ধু। গোটা বিশ্বের নিরাপত্তাই আজ বিপন্ন। ‘জিরো ক্লিকে’ই পেগাসাস ঢুকে পড়েছে কুলীন আইফোনের বাসরঘরে। রোমাঞ্চ উপন্যাসকেও হার মানানো পেগাসাসের কাণ্ডকারখানার তত্ত্বতালাশে কলম ধরলেন মৃন্ময় চন্দ।   বিশদ

29th  August, 2021
অবিস্মরণীয় চিত্রামৃত
শংকর

অনন্তকালের মহামানবদের বাণী প্রচারে অনেক সময় লেগে যায়। কামারপুকুরের গদাধর চট্টোপাধ্যায় তার ব্যতিক্রম নন। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের পাঁচ টাকা মাইনের পূজারী তাঁর অবসর সময়ে ভক্তজনদের কিছু বললেন, একজন স্কুল মাস্টার তা শ্রদ্ধার সঙ্গে শুনে বাড়ি ফিরে এসে নোটবইতে লিপিবদ্ধ করলেন। বিশদ

22nd  August, 2021
সারদা মায়ের 
স্বদেশি সন্তান
সমৃদ্ধ দত্ত

বরিশালের বানবীপাড়ার যোগেন্দ্রনাথ গুহঠাকুরতা ছিলেন স্বদেশপ্রেমী। সুতরাং নিজের কন্যাটিকেও সেভাবেই তিনি শিক্ষা দিয়েছেন। অন্য বালিকাদের সঙ্গে বড় হওয়ার সময় শিশুদের গ্রাম্য খেলাধুলোয় অংশ নেওয়ার পাশাপাশি, বাবার কাছে মেয়েটি দেশভক্তির আকুলতাও শিখেছিল। যা সেই ছোট থেকেই তার মনের মধ্যে গেঁথে যায়। মেয়ের নাম প্রফুল্লমুখী। বিশদ

15th  August, 2021
অস্তকালের রবি
পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়

বারান্দায় বসে সন্ধ্যার সময় সুনন্দা, সুধাকান্ত ও ক্ষিতিমোহনবাবুর স্ত্রীকে মুখে মুখে বানিয়ে একটা দীর্ঘ গল্প শুনিয়ে তারপরে বাদলা বাতাস ঠান্ডা বোধ হওয়াতে ঘরে গিয়ে কেদারাতে বসেছিলুম, শরীরে কোনো প্রকার কষ্ট বোধ করিনি, অন্তত মনে নেই; কখন মূর্চ্ছা এসে আক্রমণ করল কিছুই জানি নে। 
  বিশদ

08th  August, 2021
ঘড়ির দর্পণে কলকাতা

‘বৈঠকখানায় মেকাবি ক্লাকে টাং টাং টাং করে পাঁচটা বাজলো, সূর্যের উত্তাপের হ্রাস হয়ে আসতে লাগলো। সহরের বাবুরা ফেটিং, সেলফ ড্রাইভিং বগী ও ব্রাউহ্যামে করে অবস্থাগত ফ্রেণ্ড, ভদ্রলোক বা মোসাহেব সঙ্গে নিয়ে বেড়াতে বেরুলেন; কেউ বাগানে চল্লেন।’— মহাত্মা হুতোম লিখেছেন। 
বিশদ

01st  August, 2021
লোককথায় গাঁথা মহাকাব্য

‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা’ কেবল বাঁশবাদির কাহারদের জীবন আখ্যান নয়, এ এক মহাসময়ের সম্পাদ্য। আখ্যানের প্রতিটা বাঁকে মহাকাব্যিক চলন। মানুষের ক্রমে সভ্যতার পথে পা বাড়ানোর ইতিহাসে আগুন আবিষ্কারের আগে থেকেই তার দৃষ্টিশক্তি অন্ধকারেও প্রখর ছিল।
বিশদ

25th  July, 2021
অচেনা তারাশঙ্কর

আমার জীবনে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রভাব এমনই যে, তাঁর স্নেহধন্য হয়ে আজও নিজেকে আমি অতি সৌভাগ্যবান বলে মনে করি। আমার তখন কতই বা বয়স, হাওড়া শ্রীরামকৃষ্ণ শিক্ষালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ি।
বিশদ

25th  July, 2021
অশান্ত স্মৃতি
সোভিয়েত পতনের ৩০ বছর

দড়ি ধরে মারো টান, লেনিন হবে খানখান! এগারো ফুট উঁচু লাল গ্রানাইটের মূর্তিটা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তেই উল্লাসে ফেটে পড়েছিল জনতা। কেউ আনন্দে হাততালি দিয়েছেন, তো কেউ আবার প্রাণখুলে গেয়েছেন জাতীয় সঙ্গীত।
বিশদ

18th  July, 2021
কথা ও কাহিনিতে
বাংলার রথ
তরুণ চক্রবর্তী

এপার ওপার দু’দিকেই ঘন জঙ্গল আর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েকটি জনপদের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে পতিতোদ্ধারিণী গঙ্গা। সেই গঙ্গার নির্জন তীরে পাতায় ছাওয়া এক কুটিরে থাকতেন যে সন্ন্যাসী, হঠাৎই একদিন কোথায় যে উধাও হয়ে গেলেন!কবে কোথা থেকে এসে সেখানে তিনি ডেরা বেঁধেছিলেন, কী তাঁর নাম, তাও তো কেউ জানে না। বিশদ

11th  July, 2021
আদুর বাদুড়
চালতা বাদুড়

মাম্পস-র‌্যাবিস-নিফা-ইবোলা-হেন্ড্রা-সার্স-মার্স-কোভিড প্রভৃতি মারণ ভাইরাসের সূতিকাগার বাদুড়ের শরীর। অথচ বাদুড়ের টিকিটিও কস্মিনকালে তারা স্পর্শ করতে পারেনি। বাদুড় থেকে মানুষে সরাসরি সংক্রমণের নেই কোনও প্রাক-ইতিহাস। মধ্যবর্তী পোষক উট-ঘোড়া-শিম্পাঞ্জি-শুয়োর-পিপীলিকাভুক থেকেই সংক্রমিত হয়েছে মানুষ। নির্বিচারে অরণ্যনিধন, জীববৈচিত্র্যের সমূল বিনাশই প্রতিটা মহামারীর নেপথ্যের এক এবং অদ্বিতীয় কারণ। মানুষের কি সম্বিত ফিরবে না? সেই অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখোমুখি মৃন্ময় চন্দ।   বিশদ

27th  June, 2021
একনজরে
‘কাকা আভি জিন্দা হ্যায়…।’ ‘কাকা’ নামেই ছত্তিশগড়ে খ্যাত ভূপেশ বাঘেল। মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষনেতাকে এই নামেই ডাকতে অভ্যস্ত দলের কর্মী-সমর্থকরা। ...

ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি করতে এসে পুলিসের জালে ধরা পড়ল তিন পাচারকারী। ক্রেতা সেজে রবিবার ভোরে বালুরঘাটের অমৃতখণ্ডের কামারপাড়া থেকে ৮০০০ ইয়াবা সহ তিন জনকে পুলিস ...

লোকসভা এবং রাজ্যসভায় দলের সদস্য সংখ্যার বিচারে একাধিক সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতির পদ ধরে রাখা কংগ্রেসের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। ...

রাজ্যের শস্যভাণ্ডার পূর্ব বর্ধমানে চিন্তা বাড়াচ্ছে ‘শস্য গ্যাং’এর দাপট। জেলার বিভিন্ন গোডাউন থেকে শস্য লুটের ঘটনায় ঘুম উবেছে পুলিসের। গত ১০দিনের ব্যবধানে জেলায় দুই জায়গায় ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

সন্তানের সাফল্যে গর্ব বোধ। আর্থিক অগ্রগতি হবে। কর্মে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। ঘাড়, মাথায় যন্ত্রণা বৃদ্ধিতে বিব্রত ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব পর্যটন দিবস
১৯৫৮ - ভারতীয় হিসাবে প্রথম মিহির সেন ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করেন।
১৯০৭ - বিপ্লবী শহিদ ভগৎ সিংয়ের জন্ম
১৮৩৩: বিশ্বপথিক রাজা রামমোহন রায়ের মৃত্যু
১৯৩২: ভারতীয় চিত্রপরিচালক যশ চোপড়ার জন্ম
২০০৮: প্রখ্যাত ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী মহেন্দ্র কাপুরের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার    
পাউন্ড    
ইউরো    
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম)  
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম)  
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম)  
রূপার বাট (প্রতি কেজি)  
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি)  
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

 ১০ আশ্বিন ১৪২৮, সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১। ষষ্ঠী ২৫/৩৩ দিবা ৩/৪৪। রোহিণী নক্ষত্র ৩০/২৮ সন্ধ্যা ৫/৪২। সূর্যোদয় ৫/৩০/২১, সূর্যাস্ত ৫/২৫/১১। অমৃতযোগ দিবা ৭/৫ মধ্যে পুনঃ ৮/৪০ গতে ১১/৪ মধ্যে। রাত্রি ৭/৪৯ গতে ১১/৪ মধ্যে পুনঃ ২/১৭ গতে ৩/৬ মধ্যে। বারবেলা ৭/০ গতে ৮/২৯ মধ্যে পুনঃ ২/২৭ গতে ৩/৫৬ মধ্যে। কালরাত্রি ৯/৫৭ গতে ১১/২৭ মধ্যে। 
১০ আশ্বিন ১৪২৮, সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১। ষষ্ঠী দিবা ১/৮। রোহিণী নক্ষত্র অপরাহ্ন ৪/২৭। সূর্যোদয় ৫/৩০, সূর্যাস্ত ৫/২৭। অমৃতযোগ দিবা ৭/২৯ মধ্যে ও ৮/৪১ গতে ১০/৫৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩৭ গতে ১০/৫৭ মধ্যে ও ২/১৭ গতে ৩/৭ মধ্যে। কালবেলা ৭/০ গতে ৮/২৯ মধ্যে ও ২/২৮ গতে ৩/৫৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৯/৫৮ গতে ১১/২৯ মধ্যে।
 ১৯ শফর।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল ২০২১ : রাজস্থানের বিরুদ্ধে ৭ উইকেটে জয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদের

11:06:59 PM

আইপিএল ২০২১ : হায়দরাবাদ : ৯১/১ (১০ ওভার)

10:14:16 PM

আইপিএল ২০২১ : সানরাইজার্স হায়দরাবাদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ১৬৫ রান

09:38:30 PM

আইপিএল ২০২১ : রাজস্থান ৮১/৩ (১১ ওভার)

08:27:31 PM

গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে অনেকটাই কমল দৈনিক করোনা সংক্রমণ
গতকালের তুলনায় রাজ্যে অনেকটাই কমল করোনার দৈনিক সংক্রমণ। গত ২৪ ...বিশদ

08:25:56 PM

কয়লাপাচার কাণ্ডে গ্রেপ্তার লালা ঘনিষ্ঠ ৪ অভিযুক্ত
আজ, সোমবার কয়লাপাচার কাণ্ডে লালা ওরফে অনুপ মাজি ঘনিষ্ঠ ৪ ...বিশদ

05:31:00 PM