Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

ছৌ নাচের ইতিকথা
মৃন্ময় চন্দ

পায়ে পায়ে ছৌ পেরিয়েছে মেলা পথ। হারিয়েছে তার আগের জৌলুস। ঐতিহ্যবাহী এই নাচের ইতিহাস ঘেঁটে উঠে এল ছোট ছোট গল্পকথা।

সিঁদুরের বিন্দু বিন্দু মূষিক বাহন/ নমঃ নারায়ণ/ গণেশদেব হর গৌরীর নন্দন...।
তাক ধিন দা ধিন—বেজে উঠল ঢোল-ধামসা। সূত্রধর সানাইয়ে একতালে ঝুমুরে শুরু করেছে গণেশ বন্দনা। হেলতে দুলতে শুঁড় নাড়াতে নাড়াতে, নাচের তালে পা ফেলে আসরে আগমন গণেশ বাবাজির। জল ছিটিয়ে খানিক আগেই গ্রামের মাঝের বিশাল ঝাঁকরা মাথা জইড় গাছটার নীচের মাটির ধুলো মারা হয়েছে। এবার শুরু ‘ছৌ’। এই নাচে ঢোল-ধামসা-সানাই-শিঙে-চড়াচড়ি-মাহুরী-করতালের রংমিলান্তিতে অনুপস্থিত কেবল মাদল। দর্শকের আসনে প্রায় উলঙ্গ একরাশ শিশু-বালক-কিশোর। আর অর্ধাসনে ক্লিষ্ট, মলিন কাপড় পরা কিছু আদিবাসী মহিলা-পুরুষ। অপুষ্টি অনাহারের ছাপ সর্বাঙ্গে। কিন্তু চোখেমুখে ঝিলিক দিচ্ছে অনাবিল সারল্যের সাতরঙা রামধনু। ঝকঝকে দাঁতের ফাঁকে ‘ছৌ’ নাচ চেটেপুটে খাওয়ার বাসনা!
ছোটনাগপুর মালভূমির অন্ত্যজ শবর-সাঁওতালদের একমাত্র বিনোদনই যে ছৌ। গ্রামের ধোপা-নাপিত-তাঁতি—পাথরকোদা শ্রাবস্তীর কারুকাজ শোভিত শরীরে নাচিয়ে কিন্তু সকলেই। মুসলিমরা সেজেগুজে ঢোল ধামসার তালে তালে মুখোশ পরে লাফিয়ে-ঝাঁপিয়ে মারীচ বধে উদ্যত। দর্শকদের চেঁচামেচিতে কে বলবে মাঝরাত! একতাল, ঝাঁপতাল—মারীচ বধ শেষ। রাত সবে বারোটা, এর মধ্যেই কি সাঙ্গ পালা? জনতা উসখুস। ঢোলের বোল বদলাচ্ছে, আছে ধামসার সঙ্গত। সানাইয়ের সুরে ঝুমুরের পালাবদল। দর্শকরাই হঠাৎ সরে সরে বসে আসরটাকে আরও প্রশস্ত করে দিল। নেই চাঁদের আলো। তাই দু’তিনজন ধরে আছেন ‘হুলা’(শাল-কাঠের মশাল)। আলোয় আলোকময় চারিদিক। ভেরেন্ডার ডাল বা জাড়ার বীজ জ্বালিয়েও আলোর বিকল্প বন্দোবস্ত মজুত।
রাত নামার সঙ্গে সঙ্গেই ছৌ মজলিসে দলে দলে গ্রামের যুবক বৃদ্ধরা কাঁধে ঢোল ধামসা নিয়ে হাজির। বাদ যাননি বাড়ির মেয়েরাও। দলমা পাহাড়ের নীচে গোরখুসার লচাই ডুংরির উপত্যকার গাঁওতা ফতে শবরের বাড়ির পাশের মাঠে বসেছে ছৌয়ের আসর। খেড়িয়া মেয়ে-পুরুষে শুরু করলেন নাচ। প্রতি সারিতে ছ’জন নাচিয়ে, দু’সারিতে সমাগত। ‘ছ’ জন নাচিয়ে, তাই নাচটির নাম নাকি ‘ছ’। ইংরেজিতে শহুরে কেতায় ‘ছ’ হল ছৌ। ছয়-এর গুণিতকে নাচের সদস্য-সংখ্যা বাড়তে পারে। দশ মাত্রার মেলতালে তারস্বরে বাজছে ঢোল। অতিথি অভ্যাগত মনের সুখে টান মারছেন চুটিতে, দর্শক ডুবে হাঁড়িয়ায়। মহুয়ার বীজ থেকে তৈরি ‘মহুলে’ (জোরালো মদ) মজেছেন নর্তক-নর্তকীরা। রাত পেরিয়ে আলো ফুটলেও নেশার ঘোরে তাঁরা নাচেন অবিরাম। মাথার উপর হয়তো সুয্যিদেব গা গতর পুড়িয়ে দিয়েছেন ততক্ষণে। থোড়াই কেয়ার!
সুবর্ণরেখার তীরে বুরহাতু গ্রাম, বা টটকর তীরে জিতান বা চান্ডিল থানার নিমাচি গ্রাম—ছবিটা সর্বত্রই এক। রাতে খাওয়াদাওয়ার পর শুরু আসর। নাচিয়েরা বড় কোনও গাছের আড়ালে মুখোশ পরিধানে ব্যস্ত, চলছে মেক আপ পর্ব। একতাল-ঝাঁপতাল-মেলতাল বা চৌতালেই বাঁধা ছৌয়ের তার। মেলতাল ছাড়া অন্য সব তালে দরকার মুখোশ। ঢোল দশ মাত্রার মেলতালে বাজছে, নাচিয়েরা মুখোশহীন। নেই তাদের অঙ্গাভরণ। কোমর থেকে হাঁটু অবধি মালকোঁচা মারা ধুতি। মেয়েদের পরনে গাছকোমর শাড়ি। পায়ে ওজনদার ঘুঙুর। গোড়ালি থেকে ভ্রূভঙ্গি, মাটিতে সশব্দে পদাঘাত থেকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ‘ঝাড়ন-কম্পন-সঞ্চারণ-সঞ্চালন’ বা মাথা ঘোরানো, অপাঙ্গে দৃষ্টিপাত—ছ’জনের হতে হবে হুবহু এক। কোথাও এক তিল ছন্দপতন হলেই পাকা দর্শক ধরে ফেলবেন। ঘুঙুরের শব্দের এদিক ওদিক বেচাল হলেও নেই রেহাই।
ষোলো মাত্রায় নাচ প্রায় শেষ অঙ্কে। ধ্রুবতারা পাটে বসেছে। পাখিরা আড়মোড়া ভাঙছে। পুবের আকাশ রাঙা। বিশাল ঢোল-ধামসা বাজিয়ে ক্লান্ত বাজনদাররা। নাচিয়েরা নিষ্ক্রান্ত হওয়ার পরে হবু নাচিয়েরা সাইডলাইনের ধারে বসে পা নাচিয়ে মক-শো করার চেষ্টা করছে। কবে তাদের সময় আসবে? নাচের তালিম তাদের অনেকদিনই চলছে। কিন্তু শরাবন জ্যাঠার হুঁশিয়ারি, পা নাকি এখনও ব্যাটাদের যথেষ্ট সড়গড় নয়। সময় লাগবে, চলবে কঠোর অনুশীলন। হবু নাচিয়েরা তাই খানিক মনমরা। ঝরে পড়া ঘাম মুছছেন মেলতালের পেশাদার নর্তকরা। আখড়ায় চলছে নতুন পালার আগমনি প্রস্তুতি। হঠাৎ হাজির শরাবন জ্যাঠা। সন্ত্রস্ত সকলে। ভুল কিছু হয়েছে নিশ্চয়। প্রমাদ গোনার শুরু। শরাবন তাঁর দাদার নাতি মনসাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করলেন, ‘শালা নাইচতে জানিস নাই ত মেলতালে নাইচতে যাস কেনে? শালার কুনো মাত্রাজ্ঞান নাই, নাইচটাকে বেতাল কইরে দিলি!’ ততক্ষণে ঢুলি হাজির। তিনিই নাচ শেখান। ‘ছৌ’ নাচের মূল অনুষঙ্গ ঢোল। ঢুলি শরাবনের রাগ কমাতে মিনমিন করে বলেন, ‘একবারই মনসার পা মাটিতে ঠেকে গেছিল। তাতেই গোলমাল।’ ষোলো মাত্রার মেলতালে হাঁপিয়ে পড়লেই মুশকিল। মনসার সামান্য ভুল, গুরুর গুরু শরাবন জ্যাঠার চোখ এড়ায়নি। ঢুলি যে মুহূর্তে বুঝতে পারেন মেলতাল মিলছে না, কোনও একজন বেতালা চলছে, সে ঢোলের বোল পাল্টে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। আপৎকালীন এই মেরামতি ‘রং’ নামে পরিচিত। ‘ছৌ’ নাচের মূল শক্তি ছ’জনের নিখুঁত যুগলবন্দি। মেলতালের এক ছটাক গরমিলেই পণ্ড সব।
চড়িদার গম্ভীর সিং মুড়া
ভারতে সরাইকেলা (ঝাড়খণ্ড), পুরুলিয়া ও ময়ুরভঞ্জই (ওড়িশা) ছৌ নৃত্যের জন্মদাতা। সরাইকেলা ও পুরুলিয়ায় ছৌয়ে মুখোশ লাগবেই। ময়ুরভঞ্জের ছৌয়ে মুখোশ নেই। পুরুলিয়ায় মুখোশ তৈরির সেরা জায়গা বাগমুন্ডি থানার চড়িদা গ্রাম। পদ্মশ্রী, ছৌ শিল্পী গম্ভীর সিং মুড়ার সৌজন্যেও বিখ্যাত এই চড়িদা। দু’বছর বয়সে বাবা জীপা সিং মুড়াকে হারান গম্ভীর। ছৌয়ের শিক্ষা বাবারই সুযোগ্য ছাত্র মধুভাট রায়ের কাছে। সাজগোজে সামান্য দেরি হওয়ায় রাজা মদনমোহনের রাজদরবার থেকে নির্বাসিত হতে হয়েছিল জীপাকে। বহু ঘাটের জল খেতে খেতে আগমন বাগমুন্ডির চড়িদায়, জঙ্গল কেটে শুরু করেন বসত। গোলাম মহম্মদ খান, বাগমুন্ডির রাজা ক্ষেত্রমোহনের শাগরেদ একদিন জীপা সিং মুড়ার ১৫ বছরের ছেলে বাবু সিংয়ের বিস্ময়কর প্রতিভার ফিরিস্তি দিলেন রাজাকে। চৈত্র সংক্রান্তির গাজনে রাজদরবারে ডাক পড়ল বাবু সিং ওরফে গম্ভীর সিং মুড়ার। শোনা যায় একলপ্তে ১০০টি ডিগবাজি খেয়ে রাজমহিষীকে নাকি তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন গম্ভীর। অ্যাক্রোব্যাটিক্স ছৌ নাচের অঙ্গ। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত অ্যাক্রোব্যাটিক্সে কুশলী ছিলেন গম্ভীর। কখনও সেজেছেন মহিষাসুর, কখনও কিরাত। তাঁর মহিষাসুর বা অভিমন্যু বধ বা কিরাত অর্জুন পালা, হরধনু ভঙ্গ, মহিরাবণ বধ দেশ-বিদেশের অগুনতি দর্শককে মুগ্ধ করেছে। রাবণ ছিল গম্ভীর সিং মুড়ার সবথেকে প্রিয় চরিত্র।
জীর্ণ-শীর্ণ চেহারায় বিশাল গোঁফ আর বীররসের নিপুণ মঞ্চায়নে আরও অনেকের সঙ্গেই মন মজেছিল চিন্তামণির। ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর, কলকাতা থেকে ডাক্তার দেখিয়ে ফেরার পথে ট্রেনে গম্ভীরের আকস্মিক মৃত্যু পর্যন্ত ছায়াসঙ্গী ছিলেন স্ত্রী চিন্তামণি। ছৌয়ের আমন্ত্রণে গম্ভীর চষে ফেলেছিলেন প্রায় অর্ধেক পৃথিবী। স্বদেশে-বিদেশে সম্মান, টাকাকড়ি মিলেছিল যথেষ্টই। কিন্তু আজ চড়িদায় শ্রীহীন পলেস্তারা খসা গম্ভীর সিং মুড়ার টালির বাড়িতে দারিদ্রের ছাপ সবদিকে। তাঁর নাগরিকত্ব নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। পিচরাস্তা থেকে ডানদিকে ঘুরলেই চোখে পড়বে অযত্নে দাঁড়ানো গম্ভীর সিং মুড়ার মর্মরমূর্তি। পিছনে তাঁর তৈরি ‘আদিবাসী ছৌ নৃত্য দলের’ কার্যালয়, সমান শ্রীহীন। গম্ভীর সিংয়ের বাড়ির লাল মাটির রাস্তার শেষে দিগন্তবিস্তৃত ধানখেতের মাথা টপকে দূরে দেখা যায় অযোধ্যা পাহাড়। ছোটনাগপুর মালভূমির ভূমিপুত্র গম্ভীর সিং। তাঁর বাড়ি বা নর্দমার জল উপচানো রাস্তার হতশ্রী দশায় বোঝার উপায় নেই ছোটখাট চেহারার মানুষটির বীরবিক্রমে পৃথিবীর মানচিত্রে একদা জ্বলজ্বল করত চড়িদা নামটি। আজ সেখানে শুধুই শূন্যতা।
মুখোশের দিন গিয়াছে
ছৌ মূলত দলগত নৃত্যনাট্য। রামায়ণ-মহাভারত, শ্রীকৃষ্ণ বা পুরাণ কাহিনী নির্ভর। দেহের ভঙ্গি, অঙ্গ সঞ্চালন, চলন-গতি, হাত নাড়াচাড়া—সবেতেই বীর-রসের দাপট। মুখোশগুলোও বীররসের ধারায় তৈরি হয়। প্রায় দেড়শো বছর আগে বাগমুন্ডির রাজা মদনমোহন সিং দেও-র পৃষ্ঠপোষকতায় চড়িদার মুখোশ নির্মাণ শিল্প শুরু হয়েছিল। এখানকার ১১৫টি ঘরে এই মাগ্গিগন্ডার বাজারেও ৩০৮ জন শিল্পী মুখোশ তৈরি করেন। তার মধ্যে ১০০ জন মহিলা। মুখোশ তৈরির মূল উপকরণ দোঁয়াশ মাটি, জল, কাগজের মণ্ড, পুরনো সুতির কাপড়, তেঁতুল বীজের গুঁড়ো, কয়লার মিহি ছাই, কাগজ, ময়দার আঠা, হলুদ, খড়িমাটির রঙ, বার্নিশ, পুঁতি, জরি আর নানারকম শোভাবর্ধক প্লাস্টিকের গয়না বা পালক। আগে ময়ূর বা পায়রার পালক ব্যবহৃত হলেও এখন সে সব নিষিদ্ধ। বালি-কাঁকড় বেছে থেপেথুপে কাদার মণ্ডকে প্রথমে ছাঁচে ঢালা হয়। ভিজে অবস্থাতেই মাখানো হয় ছাই। ঠা ঠা সূর্যের রোদে শুকনো হয় মুখোশকে। ছাঁচ থেকে বের করা ছাইমাখা মুখোশে আবার লেপা হয় ভিজে কাগজের মণ্ড। সেই মুখোশের ওপর মাটির প্রলেপ চড়ানো হয়। মানানসই ফ্যাব্রিকের টুকরোটাকরা জোড়া হয়। কাগজের মণ্ড শক্ত হওয়ার পর মাটি খুঁচিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। মোটামুটি রাম-রাবণ-মারীচ-শ্রীকৃষ্ণ-হনুমান-মা দুর্গা-গণেশ-ভীম-হিড়িম্বা-কার্তিক-বাঘ-সিংহ-বকাসুরের আদলে তৈরি কাগজের মণ্ডের মুখোশকে সাদা রঙে যতটা সম্ভব শ্রীমান/শ্রীময়ী করে তোলা হয়। তারপর বিভিন্ন চকমকি ঝুটো গয়না আর তুলির টানে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয় মুখোশের। তবে এখন কালের নিয়মে ছৌ নাচের নাভিশ্বাস। সনাতন মুখোশ তৈরিরও সেই দিন নেই। পেটের টানে ঘর সাজানোর মেকি মুখোশ তৈরিতে ব্যস্ত চড়িদার আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুখোশ শিল্পীরাও।
ধ্রুপদী নাকি লোকনৃত্য
ময়ূরভঞ্জের ছৌ নাচে নায়ক মহাভারতের ‘শকুনি’; শ্রীকৃষ্ণ বা অর্জুন নয়। সেখানে চোখ-মুখ-গ্রীবাভঙ্গিতেই ফুটে ওঠে শকুনি চরিত্রের জটিল-কুটিল খেলা। মুখ বা ভ্রূ-ভঙ্গির সূক্ষ্ম আলাপ ঢেকে দিত মুখোশ। ময়ূরভঞ্জ ছৌয়ে তাই মুখোশ পরার চল নেই। নাচের শুরুতে ‘শ্রদ্ধাঞ্জলির’ মাধ্যমে রাজা বা রাজপরিবারকে অভিবাদন জানানো রীতি। রাজানুগ্রহেই তো ছৌ নাচের প্রসার ও বিস্তার। সরাইকেলা ছৌয়ে ঋকবেদের ‘রাত্রি-সুক্ত’ অনুসৃত, রাত্রিকে দেবী হিসেবে পুজো করা হয়। নন্দনতাত্ত্বিক সৌকর্যও সরাইকেলা ছৌয়ের অভিজ্ঞান। পুরুলিয়া ছৌ আপাদমস্তক বীররসের জয়গাথা। জুলিয়া হলান্ডার (ইন্ডিয়ান ফোক থিয়েটারস,২০০৭) বা জন আর্ডেন বা শ্রদ্ধেয় আশুতোষ ভট্টাচার্যরা সোঁদা মাটির গন্ধমাখা ছৌ নাচের গায়ে ‘ধ্রুপদী’ বিশেষণের ধবধবে চাদর জড়াতে ব্যস্ত। ধ্রুপদী তকমা না জুড়লে ছৌ নাচিয়েদের বোধহয় ‘সঙ সাজিয়ে’ বিদেশি দর্শকদের কাছে বেচতে অসুবিধা! ঘামে ভেজা, মহুলের গন্ধমাখা লোকনৃত্য ছৌ যে মূলধারার সংস্কৃতিতে আজও ব্রাত্য, তা তো সত্যজিতের ‘আগন্তুকে’ও স্পষ্ট।
মহিলা ও ছৌ
ছৌ নাচে ভাটার টান তো বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে। মহাভারত-রামায়ণ-মহিষাসুর মানুষকে আর টানছে না। আরও বিরক্তিকর বিশালবপু, চওড়া গোঁফের পুরুষ অনন্তকাল ধরে অভিনয় করছেন মহিলাদের ভূমিকায়। যে যুগে মানুষ চাঁদে বা মঙ্গলে পাড়ি জমাচ্ছে, সেই যুগে মা দুর্গা আর সরস্বতীর ভূমিকায় অভিনয়ে রোমশ পুরুষ শরীর! বিসদৃশ, বেমানান তো বটেই, নিতান্ত দৃষ্টিকটুও। এদিকে মহিলারা শ্বশুর-ভাসুর, গাদাগুচ্ছের পুরুষ দর্শকের সামনে রাতের বেলা লজ্জা-শরমের মাথা খেয়ে তাতা থৈথৈ করবে সেটা পুরুলিয়ার অন্ত্যজ সমাজেও যথেষ্ট নিন্দার ছিল। তবে সময় বদলাল। পেটের তাগিদেও পুরুষরা টের পেলেন, মহিলারা থাকলে রোজগারে কিঞ্চিত সুবিধাই। যেমন ভাবা তেমন কাজ। পথ দেখালেন জামবাদের ছৌ দলের নেতা সদানন্দ মাহাত। বউমা অপর্ণা মাহাত, ঝুমুরের তালিম নিচ্ছেন বহুকাল। নাচেনও ভাল। রাত বারোটায় গোপনে শুরু তালিম। কিন্তু আশেপাশের বাড়ি থেকে ঢোল-ধামসার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। ব্যস উঁকিঝুকি শুরু। তারপর কানাকানি। ভ্রূ কোঁচকানো। ‘মেয়েরা শেষে ছৌ নাইচবেক! ছ্যা, ছ্যা, গোল্লায় গেল দেশটা।’ কেউ বলল, ‘উঁয়াদের দ্বারা বীরজারা হবেক লাই গো!’ মেয়েরা ঘরকন্না করবে; তা না রাতবিরেতে মাঠেঘাটে লম্ফঝম্ফ করে অর্জুন-কীরাত-রাবণের ভূমিকায় অভিনয়! এ কেমন রঙ্গ জাদু।
লোক জানাজানি হতেই ঢিঢি পড়ে গেল। গ্রামেগঞ্জে যার বহর একটু বেশিই। সদানন্দ দেখলেন লুকনোর দিন শেষ, হেস্তনেস্ত হয়েই যাক। ঢ্যারা পিটিয়ে গ্রামে-গঞ্জে প্রচার হল, অমুক দিন মহিলাদের ছৌ নাচের আসর বসবে জামবাদে। দূরদূরান্ত থেকে ঝেঁটিয়ে সেদিনের নাচে লোক ভেঙে পড়ল। বিখ্যাত ছৌ নাচিয়েদের আসরে ইদানীং লোকসমাগম হচ্ছিল না! অথচ ২০১৮ সালের সেদিনের সেই মহিলা ছৌ নৃত্য ভিড়ে ঠাসাঠাসি। সদানন্দের পুত্রবধূ অপর্ণা মাহাতর নেতৃত্বে রাতারাতি তৈরি হল ‘জামবাদ পঞ্চমুখী মহিলা ছৌ নৃত্য পার্টি’। বায়নাও আসতে লাগল দেদার। রোজগার বাড়ল পাল্লা দিয়ে। জামবাদের দলটির সাফল্যে তৈরি হল আরও কয়েকটি মহিলা ছৌ নাচের দল, যেমন শীতলপুর বা বোঙ্গাবাড়ির সুনীতা মাহাতর নেতৃত্বে ‘মাতঙ্গিনী হাজরা মহিলা ছৌ নৃত্য পার্টি’।
মহিলাদের কল্যাণে ছৌয়ের মরা গাঙে বান আসতেই পুরুষেরা আর পর্দানসীন করে রাখতে পারলেন না তাঁদের। ছুঁতমার্গ ঝেড়ে ফেললেও বাজনদার (নাকি পাহারাদার!) হিসেবে সঙ্গে রইল ঘরের পুরুষটি। মহিষাসুর বধ পালায় স্বর্গের অপ্সরা সেজে আধুনিক পোশাকে, কোনওসময় হাতকাটা ব্লাউজেও আসরে অবতীর্ণ হলেন সুবেশা তরুণী ও গৃহবধূরা। ব্রহ্মার মনোরঞ্জন পালা আধুনিক নারীরা সফলভাবেই উতরে দিলেন। তারপরে আগমন কার্তিক-গণেশের। তাঁরাও মহিলা। এমনকী কার্তিকের বাহন ময়ূরও মহিলা। ময়ূরের লম্বা পেখমের ফাঁক দিয়ে উঁকি মারছে চুড়িদারের নিম্নাংশ। কার্তিক ময়ূরের পিঠে আসীন। গলার বদলে কার্তিক ধরে ফেললেন ময়ূর মহিলার চুল। আর যায় কোথা! আর্তনাদে ময়ূর পিঠ থেকে ফেলে দিল কার্তিককে! অতঃপর আগমন মা দুর্গার, রণরঙ্গিনী তিনি সমুদ্যত মহিষাসুর বধে। কিন্তু ঢোল বাজাচ্ছেন যে তাঁরই স্বামী। তাই বারেবারে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে স্বামীর ঢোলের আশপাশে বেমানান ঘুরঘুর। স্বামী কুপিত হলে মহিষাসুরের পরিবর্তে হয়তো বা দুর্গাবধ পালাটা বাড়ির ভিতরেই শুরু হয়ে যাবে!
অনেক সময় দুই মহিলার ‘তুই বেড়াল না মুই বেড়ালের’ ঝগড়াও পুরুষ ছৌ নাচের আসরে মুখরোচক খবর। তাতে হয়তো সদ্য তৈরি হওয়া দলটিই ভেঙে গিয়েছে। পুরুষদের ছৌ দলে ইগোর লড়াই মহিলাদের তুলনায় বহুগুণ বেশি হলেও মহিলাদের দল ভাঙার মুচমুচে খবর সবসময়ই শিরোনামে। তবু যাই হোক, নিজ যোগ্যতায় অচলায়তন ভেঙে আজ ছৌয়ের রঙ্গমঞ্চে খ্যাতকীর্ত মহিলারা। আপন ভাগ্য জয় করতে পুরুষদের কাছ থেকে অধিকার ছিনিয়ে নিতে পেরেছেন জামবাদ-শীতলপুর-বোঙ্গাবাড়ির পিছড়ে বর্গের মুখে ঘোমটা ঢাকা মহিলারাই। সেটাই বা কম কী?
............................................
 ঋণস্বীকার: মানভূম তথা পুরুলিয়ার ‘ছ’ নাচ, বিভূতিভূষণ দাশগুপ্ত এবং পিনাকী গাঙ্গুলী, চড়িদা।
 ছবি: লেখকের সৌজন্যে
 গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল
 সহযোগিতায় : স্বাগত মুখোপাধ্যায়
04th  October, 2020
অবিশ্বাস্য
রাতুল ঘোষ

পার্থিব জীবন থেকে মুক্তি মিললেও ডিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা অমর হয়ে থাকবেন। অন্তত এই গ্রহে যতদিন ফুটবল খেলা বেঁচে থাকবে। খ্যাতি-অখ্যাতির নেপথ্যে তাঁর এই চিরপ্রস্থানে ব্যথিত, শোকস্তব্ধ ফুটবল দুনিয়া। ফিফা আয়োজিত ফুটবলপ্রেমীদের গরিষ্ঠাংশের ভোটে মারাদোনা বিংশ শতাব্দীর সেরা ফুটবলারের সম্মান যৌথভাবে পেয়েছিলেন ফুটবল সম্রাট পেলের সঙ্গে ভাগাভাগি করে। বিশদ

29th  November, 2020
হেমন্তের দুর্গা 
সুখেন বিশ্বাস

মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের স্বপ্নে পাওয়া জগদ্ধাত্রী। এই পুজো এখন আর কৃষ্ণনগর বা চন্দননগরে সীমাবদ্ধ নেই। ছড়িয়ে গিয়েছে বাংলার সর্বত্র। হেমন্তকালের শুক্লা কার্তিকের নবমীতিথিতে তাই বাংলায় নতুন করে দেখা যায় শরতের রোদ্দুর। আকাশবাণীর প্রভাতী অনুষ্ঠান বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের ‘আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জীর’ নেই... তবু প্রবাসীরা ঘরে ফেরে। দুর্গাপুজোর মতোই নতুন পোশাকে মানুষ বেরিয়ে পড়ে ঠাকুর দেখতে।  
বিশদ

22nd  November, 2020
শ্যামাসংগীত...
আলাদা একটা অধ্যায়
শ্রীকান্ত আচার্য্য

 ছোটবেলা থেকেই শ্যামাসংগীতে আমার বিশেষ আকর্ষণ ছিল। সেটা পান্নালাল ভট্টাচার্যের গান শুনেই। বাড়িতে রেকর্ড ছিল। ‘দোষ কারও নয় গো মা...’ পাগল করা একটা গান, দাশরথি রায়ের অপূর্ব লিরিক। পুজোআচ্চা বা মন্দিরে যাওয়া, এসবে আমি নেই ঠিকই... কিন্তু ভক্তিগীতি বরাবর ভালো লাগে। শ্যামাসংগীত আমাদের বাংলা গানের ইতিহাসে পৃথক একটা অধ্যায় বলা যেতে পারে। এই গান ঘিরে যে সাহিত্য-সম্পদ তৈরি হয়েছে, তা অমূল্য। বিশদ

15th  November, 2020
একবার দেখা দিলি না মা... 

 আর দশ বছর পরই তাঁর জন্মশতবর্ষ। বাঙালি তাঁকে মনের মণিকোঠায় কতটা রেখেছে, বলবে সময়ের দলিল। কিন্তু একটা বিষয়ে সকলেই একমত... ফুল ছাড়া যেমন পুজো হয় না, পান্নালাল ভট্টাচার্যের শান্ত-মিঠে কণ্ঠ ছাড়া মা কালীর আরাধনাও যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। বহু সাধক-কণ্ঠে মায়ের গান শুনেও পান্নালালের সেই আর্তি খুঁজে পেয়েছেন, এমনটা হলফ কেউ বলতে পারেন না। মায়ের পায়ের জবা হয়ে ফুটে ওঠা পান্নালাল ভট্টাচার্যকে সেদিন ভুলে থাকে, সাধ্য কার! পান্নালালের চেয়ে আট বছরের বড়, তাঁর মেজদা ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য। তাঁরই ছেলে দীপঙ্কর ভট্টাচার্য... পান্নালালের ভাইপো। যিনি গর্ব করে বলতেই পারেন, তাঁর বাবা-কাকার মতো শিল্পী আগামী দু’শো বছরে আর আসবে না এ বাংলায়। বলতেই পারেন, কালীপুজোর নির্ঘণ্ট মানে জবাফুল, বেলপাতা আর পান্নালালের গান। এই অমূল্য রত্নকে কাছ থেকে দেখা ভাইপো দীপঙ্কর ভট্টাচার্যর স্মৃতিচারণায় উঠে এলেন এক অন্য সাধক। শুনলেন অন্বেষা দত্ত। বিশদ

15th  November, 2020
মোদির মিশন বিহার
সমৃদ্ধ দত্ত

নরেন্দ্র মোদি রেকর্ড গড়তে ভালোবাসেন। যে কোনও একটি সাফল্যকেই তাঁর অনুগামী ও দল রেকর্ড হিসেবে প্রচার করে এবং বিশ্বাসও করে। রেকর্ড করতে কে না ভালোবাসে? তাই এটা কোনও অন্যায় নয়। অপার জনপ্রিয়তা, অপরিসীম ক্যারিশমা, দল ও সরকারের উপর একচ্ছত্র অথরিটি।   বিশদ

08th  November, 2020
হোয়াইট হাউসের 
ভাগ্য গণনা
সুদীপ্ত রায়চৌধুরী

ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের কথা। বিকেল গড়িয়ে প্রায় সন্ধে। অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে মোবাইলের চেনা রিংটোন। স্ক্রিনে +৯১... নম্বর, মায়ের। অসময়ে ফোনটা দেখেই নাতাশার ভ্রূ দু’টো একে অপরকে আলতো করে ছুঁয়ে ফেলেছিল। ফোন কানে দিতেই বয়ে এল দুঃসংবাদ। আচমকাই মারা গিয়েছেন শ্বশুর। ব্যাঙ্কের কনফারেন্সে স্বামী তখন অন্য শহরে। বাড়ি ফিরে একটা ব্যাগে টুকিটাকি সমস্ত কিছু গুছিয়ে চার বছরের ছেলেকে নিয়ে সোজা এয়ারপোর্ট। এর মধ্যেই বরকে খবর দেওয়া, প্লেনের টিকিট কাটা...। বিশদ

01st  November, 2020
জাগরিত জ্যোতির্ময়ী 
সৌম্য নিয়োগী

১৯ বছর পর... আরও একবার কার্তিকে মায়ের আগমনি।
আজ মাস পয়লা। ১ কার্তিক, ১৪২৭। ক্যালেন্ডার থেকে আশ্বিনের পাতা ঝরে গিয়েছে। শরৎ নেই। আকাশের দিকে চোখ রাখা যায় না। মাটিতে রোদ্দুরের ছায়া। হেলে পড়া আলো আর বিষাদ। ঋতুর কি কোনও ভাবনা থাকে? মানুষ কি সৃষ্টি করে তাকে?   বিশদ

18th  October, 2020
থিমের বিবর্তন
প্যান্ডেলওয়ালা থেকে শিল্পের সফর
বন্দন রাহা

 একটি অগ্নিকাণ্ড একরাতেই বদলে দিয়েছিল বাংলার দুর্গাপুজো। একচালার সাবেকি দুর্গাপ্রতিমাকে পাঁচটি চালচিত্রে ভেঙে দিয়েছিলেন শিল্পী গোপেশ্বর পাল। দুঃসাহসিক এই পদক্ষেপের নেপথ্যে ছিলেন এক মহান বাঙালি, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। ১৯৩৮ সালে কুমোরটুলি সর্বজনীনে। বিশদ

11th  October, 2020
থিমের বিবর্তন
শিল্প হল ‘সর্বজনীন’
ভবতোষ সুতার

 পুজোয় প্রথম কাজ ২০০০ সালে। বড়িশা জনকল্যাণ সংঘ। বেহালা চৌরাস্তা ও সখেরবাজারের মধ্যিখানে। স্বল্প পরিচিত একটি ক্লাব। তারাই আমার উপর ভরসা রাখার সাহস দেখিয়েছিল। অক্লান্ত পরিশ্রম সেবার ছিল আমার সঙ্গী। দিনরাতের খেয়াল নেই। বিশদ

11th  October, 2020
নিয়ন্ত্রণের জালে
মৃণালকান্তি দাস

যন্ত্রমানব আজও তো এক ফ্যান্টাসি! যা আমার হুকুম মেনে চলবে। চা বানিয়ে দেবে। গাড়ি চালিয়ে দেবে। হাত-পা টিপে দিতে বললে, তাও। আমারই অঙ্গুলিহেলনে নাচ দেখাবে গান শোনাবে... বিশদ

27th  September, 2020
মাতৃরূপেণ...
শান্তনু দত্তগুপ্ত

বিধাননগর স্টেশন থেকে লাইন ধরে দমদমের দিকে নাক বরাবর খানিকটা হাঁটাপথ। পথ আর কই! এ তো রেললাইন! এখানে হাঁটতে মানা। তাও হাঁটে লোকে। এটাই শর্টকাট। তারপর ডানদিকের ঢাল ধরে নেমে যায়। খুচখাচ কয়েকটা কারখানার পথ মেলে এখানেই। দু’টো বস্তি পেরিয়ে বাঁয়ে ঘুরলে দেখা যায় ওই গেটটা। বন্ধ... কোনওরকমে একটা মানুষ গলে যেতে পারে, এমন একটা ফুটো শুধু রয়েছে। তার সামনেই প্লাস্টিকের চেয়ার পেতে বসে আছেন বিধুবাবু। বিধুশেখর বিশ্বাস। চেয়ারটার রং কোনও এক কালে লাল ছিল। এখন তার ছোঁয়া বেঁচেবর্তে আছে।  বিশদ

20th  September, 2020
দ্বিশত শরতে ‘সিদ্ধপুরুষ’
সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

দু’শো বছর আগে ‘আবির্ভাব’ হয়েছিল তাঁর। বিদ্যার সাগর তিনি। করুণার মহাসমুদ্র তিনি। ঈশ্বর ছিল তাঁর মানবজগৎ, ঈশ্বর ছিল তাঁর কর্ম। কর্মেই তিনি ‘সিদ্ধপুরুষ’। চিরন্তন প্রণম্য তিনি। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
বিশদ

13th  September, 2020
অ প রি হা র্য
সৌগত রায়

সালটা ১৯৭৪। কিছুটা ধন্দেই ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাই আলোচনার জন্য ডেকেছিলেন প্রণবদাকে। অর্থমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী। পদের দিক থেকে সুপ্রিম পাওয়ারফুল হয়তো নন, কিন্তু আস্থাভাজন। ইন্দিরা জানতেন, বাস্তবটা একমাত্র উনিই বলতে পারবেন। আর পারবেন কাজটা করতে। ট্যাক্স আইন ফাঁকি দেওয়ার অপরাধে গ্রেপ্তার করতে হবে দুই মহারানিকে। একজন জয়পুরের গায়ত্রী দেবী।   বিশদ

06th  September, 2020
মাস্টার নেগোশিয়েটর প্রণবদা
পি চিদম্বরম

সঠিক মনে করতে পারছি না যে প্রণবদার সঙ্গে আমার কবে এবং কীভাবে প্রথম দেখা হল। কোনও নির্দিষ্ট ইভেন্ট হলে মনে পড়ত। আসলে প্রণবদা মোটামুটি ১৯৭৫ সাল থেকেই তাঁর রাজনীতির জীবনে এবং জাতীয় স্তরে পরিচিত হয়ে গিয়েছিলেন। কারণ, তিনি ততদিনে হয়েছিলেন অর্থমন্ত্রকের একজন জুনিয়র মন্ত্রী। কিন্তু সেভাবে দেখতে গেলে তরুণ রাষ্ট্রমন্ত্রী হলেও সেটা ছিল স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তর এবং যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।   বিশদ

06th  September, 2020
একনজরে
রাজ্য সরকারি কর্মীদের বিজেপি প্রভাবিত সংগঠনের গোষ্ঠী  লড়াই আরও তীব্র হল। বুধবার সরকারি কর্মচারী পরিষদের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে নতুন কমিটি গড়ার কথা ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে সংগঠনের নেতারা জানিয়ে দেন, এতদিন  যে জেলা কমিটিগুলি ছিল তা  ভেঙে দেওয়া হল। ...

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে ভালো ফল করাই এখন লক্ষ্য টিম ইন্ডিয়ার। একদিনের সিরিজের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে দলকে আরও শক্তপোক্ত করার চেষ্টা করবেন বলে ...

সংবাদদাতা, দিনহাটা: এক বছর আগে মৃত্যু হয়েছে মায়ের। গরিব, অসহায় ছেলে সরকারি সুবিধার আশায় মায়ের মৃত্যুর সরকারি নথির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন বছরভর। এখনও মেলেনি ডেথ সার্টিফিকেট।   ...

নয়া কৃষি আইনের প্রয়োগ রাজ্যে রুখে দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের উপর চাপ বাড়াচ্ছে বাম ও কংগ্রেস। তারা চায় অবিলম্বে বিধানসভার অধিবেশন ডাকা হোক। আলোচনার মাধ্যমে রাজ্যস্তরে তৈরি করা হোক একটি পাল্টা আইন। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

অতি সত্যকথনের জন্য শত্রু বৃদ্ধি। বিদেশে গবেষণা বা কাজকর্মের সুযোগ হতে পারে। সপরিবারে দূরভ্রমণের যোগ। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

ভারতীয় নৌ দিবস
১১৩১- পারস্যের কবি ও দার্শনিক ওমর খৈয়ামের মৃত্যু
১৮২৯- সতীদাহ প্রথা রদ করলেন লর্ড বেন্টিঙ্ক
১৮৮৪- ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদারের জন্ম
১৯১০- ভারতের ষষ্ঠ রাষ্ট্রপতি আর বেঙ্কটরামনের জন্ম
১৯২৪- মুম্বইয়ে গেটওয়ে অব ইন্ডিয়ার উদ্বোধন হল
১৯৭৭- ক্রিকেটার অজিত আগরকরের জন্ম  



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭২.৯৯ টাকা ৭৪.৭০ টাকা
পাউন্ড ৯৭.১৫ টাকা ১০০.৫৫ টাকা
ইউরো ৮৭.৯২ টাকা ৯১.১০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৫০, ০৬০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৭, ৫০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৮, ২১০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৩, ৬০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৩, ৭০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪২৭, শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২০, চতুর্থী ৩৪/৫৫ রাত্রি ৮/৪। পুনর্বসু নক্ষত্র ১৮/৫২ দিবা ১/৩৯। সূর্যোদয় ৬/৬/৩, সূর্যাস্ত ৪/৪৭/৩৯। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৮ মধ্যে পুনঃ ৭/৩২ গতে ৯/৪০ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৮ গতে ২/৩৯ মধ্যে পুনঃ ৩/২৩ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৫/৪১ গতে ৯/১৪ মধ্যে পুনঃ ১১/৫৪ গতে ৩/২৭ মধ্যে পুনঃ ৪/২০ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/৪৫ গতে ১১/২৬ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৬ গতে ৯/৪৬ মধ্যে।
১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪২৭, শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২০, চতুর্থী রাত্রি ৫/৪৫। পুনর্বসু নক্ষত্র দিবা ১২/২৮। সূর্যোদয় ৬/৭, সূর্যাস্ত ৪/৪৮। অমৃতযোগ দিবা ৭/২ মধ্যে ও ৭/৪৪ গতে ৯/৫০ মধ্যে ও ১১/৫৭ গতে ২/৫১ মধ্যে ও ৩/২৭ গতে ৪/৪৮ মধ্যে এবং রাত্রি ৫/৪৫ গতে ৯/২১ মধ্যে ও ১২/৩ গতে ৩/৩৮ মধ্যে ও ৪/৩২ গতে ৬/৮ মধ্যে। বারবেলা ৮/৪৭ গতে ১১/২৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৮ গতে ৯/৪৮ মধ্যে। 
১৮ রবিয়ল সানি।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আপনার আজকের দিনটি 
মেষ: সৃষ্টিশীল কাজে কৃতিত্বের সুযোগ। বৃষ: একাধিক উপায়ে অর্থাগমের সুযোগ। ...বিশদ

04:29:40 PM

ইতিহাসে আজকের দিনে 
ভারতীয় নৌ দিবস১১৩১- পারস্যের কবি ও দার্শনিক ওমর খৈয়ামের মৃত্যু১৮২৯- ...বিশদ

04:28:18 PM

আইএসএল: চেন্নাইকে ১-০ গোলে হারাল বেঙ্গালুরু 

09:32:56 PM

আইএসএল: চেন্নাই ০ বেঙ্গালুরু ১ (৫৫ মিনিট) 

08:52:01 PM

ফ্রান্সে বিজয় মালিয়ার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত
ফ্রান্সে বিজয় মালিয়ার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি। যার আনুমানিক মূল্য ...বিশদ

07:31:00 PM

প্রথম টি-২০: অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১১ রানে জিতল ভারত

05:33:31 PM