বিদ্যার্থীদের উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে মধ্যম ফল আশা করা যায়, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। ব্যবসাতে যুক্ত ... বিশদ
তারপর থেকে আরও বেশি করে দেখতাম ওকে... আর কে স্টুডিওয়। অভিনেতা হওয়ার ট্রেনিং চলছে তখন তার। ‘ববি’ ছবির জন্য। স্টুডিওর দোতলার করিডোরে সার দেওয়ার মেকআপ রুমের শেষ মাথার ঘর... ঐতিহ্য যার সঙ্গে মিলেমিশে এক হয়ে গিয়েছে। রাজজির মেক আপ রুম। যা তখন পরিশ্রমী, চনমনে সেই যুবকের দখলে। যে শিক্ষা, যে তালিম তার সামনে পড়ছে, সেটাই ছোঁ মেরে তুলে নিচ্ছে যুবকটি।
নজরে পড়ার মতো হাঁটাচলা ছিল তার... আত্মবিশ্বাসী, প্রত্যয়ী। এক অনবদ্য স্টাইল... মনে পড়িয়ে দিত তার ঠাকুর্দাকে... পৃথ্বীরাজ কাপুর। হেঁটে আসার যে স্টাইল আমি দেখেছিলাম প্রথম কয়েকটা ছবিতে। পরে কিন্তু আর দেখিনি।
বহু ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছি আমরা...
সংলাপ ডেলিভারির সময় মনে হতো... নাঃ এই শব্দটার কোনও বিকল্প নেই। হতে পারে না। ১০০ শতাংশ নিখাদ... সব প্রশ্নের ঊর্ধ্বে।
আর গানের সঙ্গে ঠোঁট মেলানো? তার মতো যে কেউই ছিল না... কখনও না।
হাসিঠাট্টায় মাতিয়ে রাখত পরিবেশটা... সে এক ভয়ঙ্কর ছোঁয়াচে রোগ। চট করে ছড়িয়ে পড়ত সবার মধ্যে। হয়তো বেশ দুঃখের সিকোয়েন্স... তার মধ্যে থেকেও ঠিক খুঁজে বের করে নিত মজার খোরাক। আর আমরা সবাই হেসে গড়িয়ে পড়তাম...!! আর শুধুই কি সেট? ধরুন ওর সঙ্গে কোনও একটা ফর্মাল অনুষ্ঠানে গিয়েছি, গম্ভীর পরিবেশে একটা মুহূর্ত হয়তো খুঁজে নিত, যা হাল্কা করে দিত পরিস্থিতিটাকে... এমনই রত্ন ছিল সে... যার আলো ছড়িয়ে পড়ত সর্বত্র।
হয়তো শট রেডি হয়নি। সবাই বসে আছি। হঠাৎ তার ঝুলি থেকে বেরিয়ে এল তাস। কিংবা আরও কঠিন সেই ব্যাগাটেল বোর্ড। খেলতে হবে... চলে এসো। আর খেলাচ্ছলে খেলা নয় কিন্তু! রীতিমতো কম্পিটিশন। সিরিয়াস কম্পিটিশন।
অসুস্থ হল সে... জানা গেল রোগ... তাও কখনও ভেঙে পড়েনি। সব সময় একটাই কথা... ‘খুব তাড়াতাড়ি দেখা হবে... আরে এটা তো হাসপাতালে রুটিন ভিজিট... কয়েকদিনের মধ্যেই ফিরছি।’
জঁ দ্য ভিভ্র—আক্ষরিক অর্থেই জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করত... এই জিন আসলে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া তার বাবার থেকে... লেজেন্ড রাজ কাপুর। এক এবং অদ্বিতীয়।
কখনও তাকে হাসপাতালে দেখতে যাইনি... সত্যি বলতে দেবতার মতো সেই হাসিতে যন্ত্রণার ছাপ দেখতে চাইনি আমি।
তাও আমি নিশ্চিত... ঠিক অন্তিম মুহূর্তেও ওর ঠোঁটের কোনায় লেগেছিল সেই হাসিটা। চিরকালীন।
অমিতাভ বচ্চনের ব্লগ থেকে