Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

বিস্মৃতপ্রায় সুরেন্দ্রনাথ
রজত চক্রবর্তী

১৮৮৩। মে মাসের গরম। সকাল থেকেই রোদ ঝলসাচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্টের গেটের মুখে আজ ব্রিটিশ পুলিসের সংখ্যা বেশি। হাইকোর্টের সামনের রাস্তার ওপাশের ফুটপাতে লোক জড়ো হচ্ছে ক্রমশ। ভিড় বাড়ছে। বেশিরভাগই ছাত্র-যুব। মাঝবয়সি লোকেরাও আছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে উপচে পড়ল ভিড়। চিৎকার-চেঁচামেচির মাঝেই শুরু হল স্লোগান, সাউটিং। একটা পুলিসের জিপ ঢুকছে তার মধ্যে পথ করে। হাইকোর্টের গেটের কাছে এসে থামল। খটাখট সাদা পুলিস অফিসাররা নামতেই সব পুলিসকর্মী লাইন দিয়ে ব্যারিকেড করে দাঁড়াল। জিপ গাড়ির প্রায় পিছন পিছন প্রবেশ করল একটি কালো পুলিস ভ্যান। উত্তেজিত জনতা যেন তাতে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছে তখন। ‘গো হেল ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘উই স্ট্যান্ড ফর সুরেন ব্যানার্জি’, ‘মেক ফ্রি সুরেন ব্যানার্জি’ স্লোগানে স্লোগানে আদালতের সামনের চত্বর তখন সরগরম। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ধীরে ধীরে এসে দাঁড়ালেন কালো ভ্যানের দরজায়। একবার চশমাটা ঠিক করে নিলেন চোখে। দাড়িটাতেও হাত বুলিয়ে বিন্যস্ত করলেন। মাঝখানে চুলের সিঁথি। পরনে গ্রীষ্মকালীন কোট ও প্যান্ট। ছিপছিপে লম্বা। দাঁড়িয়ে হাত নাড়লেন ভিড়ের দিকে। জনতার গর্জনে কেঁপে উঠল চারপাশ। সামনেই ছাত্রদের দল। ব্যারিকেড ভেঙ্গে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছতে চায় তারা। ভ্যানের কাঁচের জানালা ভেঙ্গে গেল। নেতৃত্বে থাকা ছাত্রটাকে চেনেন সুরেনবাবু। আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। হুগলির জিরাট গ্রামের ছেলে, প্রেসিডেন্সির মেধাবী ছাত্র। পরবর্তীকালে এই ছেলেটিকেই ‘বাংলার বাঘ’ হিসেবে চিনবে ভারতবাসী।
বাঙালির এই জাত্যাভিমানকে দৃঢ়তার সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত করার সময়ের সন্ধিক্ষণ তখন। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাগ্মীতা আকর্ষণ করছে তরুণ প্রজন্মকে। বাঙালির মেরুদণ্ড সোজা করার আহ্বানে অগ্রণী পথিক অগ্রজ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, আছেন কেশবচন্দ্র সেন, সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ। পথ দেখাচ্ছেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও রামমোহন রায়দের ব্রাহ্ম সমাজ আর অন্যদিকে ডিরোজিওর দামাল ছাত্ররা। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবা দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন ডিরোজিও সাহেবের স্নেহধন্য প্যারীচাঁদ মিত্রের প্রিয় বন্ধু। দুর্গাচরণ মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া ছিলেন। ডেভিড হেয়ারের প্রিয় ছাত্র হলেও, সেই সময়কার ‘ইয়ং বেঙ্গল মুভমেন্ট’-এর সমর্থক ছিলেন তিনি। গোঁড়া ব্রাহ্মণ পরিবারে সুরেনের ঠাকুর্দার সঙ্গে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ‘লিবারাল’ বাবার বিরোধাভাষের মধ্যেই কেটেছে সুরেনের ছেলেবেলা। ঠাকুর্দার পাঠশালা থেকে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ছেলেদের স্কুল ‘পেরেন্টাল আকাদেমিক ইনস্টিটিউশন’, সেখান থেকে হিন্দু স্কুল, তারপর ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি। আধুনিক মনস্কতায় বেড়ে উঠেছেন বাবার প্রত্যক্ষ প্রশ্রয়ে।
জন্ম ১৮৪৮ সালে। ১৮৬৮ সালের ৩ ডিসেম্বর রমেশচন্দ্র দত্ত ও বিহারীলাল গুপ্তকে পাশে নিয়ে তিন বন্ধু জাহাজে চেপে পাড়ি দিলেন ইংল্যান্ড। তার আগের দিনই বারাকপুরের পিতৃগৃহ থেকে মাইকেল মধূসুদন দত্তের কাশীপুরের বাড়িতে চলে এসেছিলেন সুরেন। রাতে ছিলেন সেখানেই। মধূসুদন দত্ত বাবার বিশেষ বন্ধু। পরের দিন স্টিমারে করে খিদিরপুরে জাহাজঘাটে মধূসুদন দত্ত তাঁকে উঠিয়ে দিতে এসেছিলেন নিজেই। বারাকপুর থেকে সাতসকালে বাবাও চলে এসেছিলেন সাতসকালে। এর ঠিক ছ’বছর আগে কলকাতায় তৈরি হয়েছে হাইকোর্ট। ব্যারিস্টার বা আইসিএস হওয়ার জন্য বাঙালি ‘ভদ্রলোক’ উচ্চশ্রেণীর একটা অংশ তখন বিলেতমুখো। কিন্তু বছর কুড়ির সুরেন্দ্রনাথ ব্যারিস্টার নয়, আইসিএস হওয়ার উদ্দেশে জাহাজে চেপেছিলেন। পরের বছর আইসিএস পরীক্ষা দিলেন। পাসও করলেন। কিন্তু ‘ডিসকোয়ালিফায়েড’ হলেন বয়সের গণ্ডগোলে। তখন আইসিএস পরীক্ষার বয়সসীমা ছিল ১৬ থেকে ২১-এর মধ্যে। কলকাতা ইউনিভার্সিটির সার্টিফিকেটে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বয়স উল্লেখ করা ছিল ১৬। সেই সার্টিফিকেটটি ইস্যু করা হয়েছিল ১৮৬৩ সালে। তাহলে ১৮৬৯’তে তার বয়স ২১ পেরিয়ে যাচ্ছে, যে বছরে তিনি আইসিএস দিলেন। অতএব বাদ দেওয়া হল সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। পাস করা সত্যেও। তিনি আপিল করলেন। তাঁর বেশ কয়েকটি প্রশ্ন জাত্যাভিমানকে প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিল। তুলে আনলেন ভারতীয়দের প্রতি ব্রিটিশ অবহেলার প্রশ্নও। প্রতিবাদ জানালেন মহারাজ রমানাথ ঠাকুর, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মহারাজ যতীন্দ্রমোহন ঠাকুর, রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র প্রমুখ বিদ্বজ্জনেরা। ভারতবর্ষের নানা কাগজে লেখা হল এই ঘটনার প্রতিবাদী লেখা। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যাপাধ্যায় তাঁর আত্মজীবনী, ‘A Nation on Making’ বইটির এক জায়গায় লিখছেন, ‘I won the case but my father died on 20th Feb, 1870’। পিতার মৃত্যুর খবর পেলেন বিদেশেই। তাঁকে আবার পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হল এবং তিনি পাশ করলেন ১৮৭১ সালে।
১৮৭১ সালের আগস্ট মাস। অঝোরে বৃষ্টি পড়ছে। ঘোড়ার গাড়ি থেকে একদম হাওড়া স্টেশনের সামনে নামলেন কেশবচন্দ্র সেন। গাড়োয়ান ছাতা খুলে ধরে হাওড়া স্টেশনের পূবমুখো দোরগোড়ায় পৌঁছে দিল। হাওড়া স্টেশনের সামনে পাথরপাতা পথে ঘোড়া পা ঠুকছে। উল্টোদিকে গঙ্গার গা বরাবর নেটিভদের ঘোড়ার গাড়ি রাখার জায়গা। আর সাহেবদের ঘোড়ার গাড়ি রাখার জায়গা স্টেশন লাগোয়া। একটু দূরে স্টেশনের বাঁদিকে সারসার পালকি। বেহারারা আশেপাশে হোগলার শেডের তলায়। কেশবচন্দ্র স্টেশনে ঢুকলেন। সুরেন বোম্বেতে নেমেছে জাহাজে। বোম্বে থেকে ট্রেন জার্নি করে আসছে। কালাপানি পেরিয়ে আসা, ম্লেচ্ছদের দেশ থেকে আসা লোক সরাসরি গোঁড়া ব্রাহ্মণ বাড়ি ঢুকতে পারবে না। তাই কেশব সেন তাঁকে নিয়ে গেলেন তাঁদের বাড়ি। বেশ কিছুদিন পর মা ও ভাই সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরিবারে নিলেন যা সেই সময়ের প্রেক্ষিতে উল্লেখযোগ্য। কলকাতা টাউন হলে কেশবচন্দ্র সেন, সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের উদ্যোগে সংবর্ধনা দেওয়া হয় তাঁকে। সিলেটে পোস্টিং অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যাজিস্ট্রেট পদে। আবার বিতর্ক। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস সি সাথারল্যান্ড তাঁর বিরুদ্ধে ডিপার্টমেন্টাল পরীক্ষা না পাশ করতে পারা ও কাজে গাফিলতির অভিযোগ আনলেন। আবার বিলেত যাত্রা। আবার আপিল। কেস। ফিরে আসেন পরাজিত বিধ্বস্ত নায়ক। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁকে মেট্রোপলিটন স্কুলে দু’শো টাকার মাস-মাইনে ইংরাজি অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিলেন ১৮৭৫ সালে। তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেন। তারপর সিটি কলেজ, তারপর চার্চ কলেজ, তারপর প্রেসিডেন্সি ইনস্টিটিউশন... ১৮৭৫ থেকে ১৯১২ পর্যন্ত শিক্ষকতা করেছেন আর বাগ্মী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন শিক্ষিত সমাজে। এই সময়ে তাঁর তেজস্বী বক্তৃতায় ব্রিটিশ বিরোধী ভারতবাসীর উঠে দাঁড়াবার আহ্বানে সাড়া দিচ্ছিল বাংলার শিক্ষিত যুব সমাজ। সেই বক্তৃতায় উদ্দীপিত বিপ্লবী ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়, আনন্দমোহন বসু আরও অনেকেই। আবার একইদিকে প্রেসিডেন্সি ইনস্টিটিউশনে অধ্যাপনার সময় তাঁর নাম পাল্টে রিপন কলেজ করার বিষয়েও উদ্যোগী তিনি– ‘With Lord Ripon’s permission, obtained on the eve of his departure, I named the institute after him, and it is now knoen as Ripon College. (A Nation in Making – S. N. Banerjee)
মার্চ মাস। গঙ্গার ধার বরাবর সবুজ গাছের সারি। অদূরে জাহাজের চিমনি দিয়ে কালো ধোঁয়া উঠছে আকাশে। হাওড়ার ব্রিজ পেরিয়ে বহু মানুষ পায়ে হেঁটে পৌঁছে গিয়েছে টাউন হলে। টাউন হলের পাশে গভর্নর হাউসের বিশাল বাগান। তাঁর পাশে হাইকোর্ট। সাহেব পাড়া কাছেই। রাইটারদের লাল অফিস, রাইটার্স বিল্ডিং। সামনেই বিরাট জলাশয় সহ বাগান। টাউন হলে আজ ছাত্রদের ভিড় উপচে পড়েছে। ভলান্টিয়াররা সামলাতে পারছে না। মঞ্চে বসে আছেন কেশবচন্দ্র সেন, সভাপতি আজকের সভার। আছেন সুরেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়। আনন্দমোহন বোস সম্পাদক আর অক্ষয় কুমার সরকার সহঃ সম্পাদক। প্রধান অতিথি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও বিশেষ অতিথি প্রিন্স দ্বারকানাথ মিত্র। ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম পাবলিক মিটিং। বলা যায় ভারতবর্ষে প্রথম নিজেদের দাবি-দাওয়া আদায়ের প্রথম সংগঠিত দল গঠন। ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন তৈরি করলেন সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৬ জুলাই ১৮৭৬। সঙ্গে যেমন পেলেন একঝাঁক কলেজ পড়ুয়া তরুণকে, তেমনই সঙ্গে পেলেন প্রাজ্ঞ কেশবচন্দ্র, বিদ্যাসাগর এবং প্রিন্স দ্বারকানাথের মতো সমাজের বিদ্বজ্জনদের। সেদিন যেন বাঙালি তরুণ সমাজ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল টাউন হলের সভায়। ২৪ মার্চ ১৮৭৭। দিনটি মনে হয় জাতিয়তাবাদী চিন্তার বীজ বপনের দিন। বিদ্যাসাগর মশাই যদিও চেয়েছিলেন ‘বেঙ্গল অ্যসোসিয়েশন’ নামকরণ, কিন্তু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখে তখন ভারতবর্ষের স্বপ্ন। এর পরের দু’বছর তিনি সারা ভারতবর্ষ ঘুরে বেড়িয়েছেন আর মিটিং করেছেন। হেনরী কটন তাঁর ‘নিউ ইন্ডিয়া’ বইতে লিখেছেন– ‘The educated classes are the voice and brain of the Country. The Bengalee Babu now rule public opinion from Peshwar to Chittagong.’ একটা মুখপত্র দরকার সংগঠনের। বেচারাম চট্টোপাধ্যায় কিছুদিন চালিয়েছিলেন ‘Bengalee’ বলে একটি পত্রিকা। গ্রাহকের অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া সেই পত্রিকা কিনে নিলেন সুরেন। ১৮৭৯ সাল থেকে তাঁর সম্পাদনায় ‘ Bengalee’ অসম্ভব সাড়া ফেলল শিক্ষিত জনমানসে। ব্রিটিশ বিরোধী লেখায় ও ভারতীয়দের জ্যাত্যাভিমান উস্কে দেওয়ার লেখায় পত্রিকার পাতা ভরিয়ে তুলতেন সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্রিটিশ সরকার গ্রেপ্তার করল তাঁকে। কোর্টে আনার সময় হাইকোর্টের সামনে জনসমুদ্র। উত্তাল ছাত্রদের নেতৃত্বে দেখা যাচ্ছে আশুতোষ মুখোপাধ্যায়কে। অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। আশুতোষও। ৫ মে ১৮৮৩ থেকে ৪ জুলাই ১৮৮৩ সুরেন্দ্রনাথের কারাবাস।
যেদিন তাঁর কারাবাসের আদেশ হয়, সেই ৫ মে সমস্ত দোকান-পাঠ বন্ধ ছিল কলকাতায়। বাংলায় প্রথম বিদেশিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সরাসরি রূপরেখা তৈরি হল। বাংলায় প্রথম খোলা আকাশের নীচে ‘পাবলিক মিটিং’ শুরু হল ওই সময় থেকে। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জেল থেকে বেরিয়ে সারা ভারতবর্ষ ঘুরে বেড়ালেন। সংগঠন বাড়ছে। ছড়িয়ে পড়ছে জাতীয়তাবাদের সুর। তখনও কংগ্রেস আত্মপ্রকাশ করেনি। ১৮৮৩ সালের ২৮ থেকে ৩০ ডিসেম্বর কলকাতায় হল প্রথম ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন’ এর প্রথম অধিবেশন। ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছিল প্রতিনিধি। ১৮৮৫ সালে দ্বিতীয় অধিবেশন। সেইসময় কংগ্রেসের আত্মপ্রকাশ। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রস্তাব আসে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার। ১৮৮৬ সালে কলকাতার কংগ্রেস অধিবেশনে সুরেন্দ্রনাথ তাঁর দল নিয়ে যোগ দিলেন কংগ্রেসে। এরপর সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বভারতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে। ১৮৯৫ এবং ১৯০২ সালে জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি। ভারতবর্ষের রাজনৈতিক চালচিত্র দ্রুত পাল্টাচ্ছে। বাংলায় তৈরি হচ্ছে অরবিন্দ ঘোষের নেতৃত্বে ‘গুপ্ত সমিতি’। গড়ে উঠেছে ‘অনুশীলন সমিতি’, তারপর ‘যুগান্তর’ দল যাঁরা সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা চাইছে। গান্ধীজির উত্থান, সুভাষ বোস, নেহরুদের মতো নেতৃত্ব কংগ্রেসের, পূর্ণ স্বাধীনতার পক্ষে। সুরেনের ‘নরম পন্থা’ বা ‘মডারেট’ ভাবধারা, নিবেদনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্বের সংখ্যা বাড়িয়ে ক্ষমতা দখলের ভাবনা পরিত্যাজ্য হচ্ছে।
১৯১৮ সালে অতন্ত তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে কংগ্রেস ত্যাগ করেন তিনি। পরবর্তীকালে তাঁর চিন্তাভাবনা ইতিহাসে সমালোচিত হয়েছে ও হতেই পারে। কিন্তু সুরেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় প্রথম বাঙালি, যিনি সংগঠিত করতে পেরেছিলেন ভারতবর্ষে রাজনৈতিকভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে সর্বধর্মের ঐক্যমত গড়ে তুলতে। যিনি প্রথম জাতীয়তাবাদের বীজমন্ত্র প্রোথিত করেছিলেন দেশের মানুষের মননে। ১৮৭৬ সালের ২৬ জুলাই তাঁর ছেলের মৃত্যু হয়। সেইদিনও তিনি পূর্বনির্ধারিত মিটিং করেছেন। ২৩ ডিসেম্বর ১৯১১’তে স্ত্রী-বিয়োগ। তখন তিনি রাজনৈতিক ভাবে দ্বিধাদীর্ণ।
১৯২৫ সালের ৬ আগস্ট ৭৭ বছর বয়সে বারাকপুরের বাড়িতেই জীবনাবসান হয় সুরেন্দ্রনাথের। তিনি আজ শুধু মাত্র একটি কলেজের নাম ও একটি রাস্তার নাম হিসেবেই থেকে গিয়েছেন। কিন্তু বাঙালিকে শিড়দাঁড়াটা সঠিক শিড়দাঁড়ার অবস্থানে রাখতে শিখিয়েছিলেন তিনিই।
.............................................................
ছবি  ডাঃ শঙ্করকুমার নাথের সৌজন্যে
10th  November, 2019
শতবর্ষে জনসংযোগ
সমীর গোস্বামী

অনেকে মজা করে বলেন, সেলুনে যিনি হেয়ার স্টাইল ঠিক করেন, তিনি অনেক সময় বিশিষ্ট মানুষের কানেও হাত দিতে পারেন। জনসংযোগ আধিকারিক বা পিআরও’রাও খানিকটা তেমনই। প্রচারের স্বার্থে তাঁরা কেবল সাহসের উপর ভর করে অনেক কিছু করতে পারেন। মনে পড়ছে, বহু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা গণ্যমান্য ব্যক্তিকে কোনও কিছু উদ্বোধনের সময় ফিতে কাটতে দিতাম না। 
বিশদ

26th  January, 2020
অনন্য বিকাশ 

পাহাড়ী স্যান্যাল থেকে উত্তমকুমার সবাই ছিলেন তাঁর অভিনয়ের গুণমুগ্ধ ভক্ত। হেমেন গুপ্তের ‘৪২’ ছবিতে এক অত্যাচারী পুলিস অফিসারের ভূমিকায় এমন অভিনয় করেছিলেন যে দর্শকাসন থেকে জুতো ছোঁড়া হয়েছিল পর্দা লক্ষ্য করে। এই ঘটনাকে অভিনন্দন হিসেবেই গ্রহণ করেছিলেন তিনি। সেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী অভিনেতা বিকাশ রায়কে নিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু সিনেমায় তাঁর সহ অভিনেতা ও মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান অধ্যাপক ডঃ শঙ্কর ঘোষ।  
বিশদ

19th  January, 2020
যদি এমন হতো! 
সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

যদি এমন হতো? সিমুলিয়ার দত্ত পরিবারে নরেন্দ্রনাথ এসেছেন, ধনীর আদরের সন্তান; কিন্তু শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব পৃথিবীতে আসেননি। তাহলে নরেন্দ্রনাথ কি স্বামী বিবেকানন্দ হতেন! মেধাবী, সাহসী, শ্রুতিধর এই সুন্দর যুবকটি পিতাকে অনুসরণ করে হয়তো আরও শ্রেষ্ঠ এক আইনজীবী হতেন, ডাকসাইটে ব্যারিস্টার, অথবা সেই ইংরেজযুগের সর্বোচ্চ পদাধিকারী, ঘোড়ায় চাপা ব্রাউন সাহেব— আইসিএস। ক্ষমতা হতো, সমৃদ্ধি হতো।
বিশদ

12th  January, 2020
সেলুলয়েডের শতবর্ষে হিচকক 
মৃন্ময় চন্দ

‘Thank you, ….very much indeed’
শতাব্দীর হ্রস্বতম অস্কার বক্তৃতা। আবার এটাও বলা যেতে পারে, মাত্র পাঁচটি শব্দ খরচ করে ‘ধন্যবাদজ্ঞাপন’।
হ্যাঁ, হয়তো অভিমানই রয়েছে এর পিছনে।
বিশদ

05th  January, 2020
ফিরে দেখা
খেলা

আর তিনদিন পরেই নতুন বছর। স্বাগত ২০২০। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে পুরনো বছরকেও। তাই ২০১৯ সালের বেশকিছু স্মরণীয় ঘটনার সংকলন নিয়ে চলতি বছরের সালতামামি। 
বিশদ

29th  December, 2019
ফিরে দেখা
বিনোদন

আর তিনদিন পরেই নতুন বছর। স্বাগত ২০২০। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে পুরনো বছরকেও। তাই ২০১৯ সালের বেশকিছু স্মরণীয় ঘটনার সংকলন নিয়ে চলতি বছরের সালতামামি।  
বিশদ

29th  December, 2019
ফিরে দেখা
রাজ্য 

আর তিনদিন পরেই নতুন বছর। স্বাগত ২০২০। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে পুরনো বছরকেও। তাই ২০১৯ সালের বেশকিছু স্মরণীয় ঘটনার সংকলন নিয়ে চলতি বছরের সালতামামি।   বিশদ

29th  December, 2019
ফিরে দেখা
দেশ-বিদেশ 

আর তিনদিন পরেই নতুন বছর। স্বাগত ২০২০। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে পুরনো বছরকেও। তাই ২০১৯ সালের বেশকিছু স্মরণীয় ঘটনার সংকলন নিয়ে চলতি বছরের সালতামামি।  
বিশদ

29th  December, 2019
বঙ্গ মিষ্টিকথা 
শান্তনু দত্তগুপ্ত

মিষ্টান্ন ভোজন। যার সঙ্গে জড়িয়ে বাঙালির আবেগ, অনুভূতি, অ্যাডভেঞ্চার। ডায়েটিংয়ের যুগে আজও বহু বাঙালি ক্যালরির তোয়াক্কা করে না। খাওয়া যতই আজব হোক, মিষ্টি না হলে ভোজ সম্পূর্ণ হয় না যে! 
বিশদ

22nd  December, 2019
সংবিধানের ৭০
সমৃদ্ধ দত্ত

ভারত এবং বিশেষ করে আগামীদিনের শাসক কংগ্রেসের সঙ্গে এভাবে চরম তিক্ততার সম্পর্ক করে রেখে পৃথক পাকিস্তান পাওয়ার পর, সেই নতুন দেশের নিরাপত্তা কতটা সুনিশ্চিত? কীভাবে সম্ভাব্য পাকিস্তানের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করা যাবে? কী কী সমস্যা আসতে পারে?  
বিশদ

15th  December, 2019
রাজ সিংহাসন
প্রণবকুমার মিত্র

 দরবারে আসছেন মহারাজ। শিঙে, ঢাক, ঢোল, কাঁসর ঘণ্টার বাদ্যি আর তোপের শব্দ সেটাই জানান দিচ্ছে। তারপর সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে মহারাজ ধীর পায়ে গিয়ে বসলেন রাজ সিংহাসনে। আগেকার দিনে রূপকথার গল্পে এটাই বলা হতো।
বিশদ

08th  December, 2019
আ ম্মা হী ন তামিল রাজনীতি
রূপাঞ্জনা দত্ত

২৪ ফেব্রুয়ারি। তামিলনাড়ুর কাছে এটা একটা বিশেষ দিন। মন্দিরে মন্দিরে উপচে পড়ত ভিড়। সবার একটাই প্রার্থনা, ‘আম্মা নাল্লামাগা ইরঙ্গ’। ‘আপনি ভালো থাকুন’। ওইদিন তিনিও যেতেন মন্দিরে। নিজের জন্মদিনে ভক্তদের ভালোবাসা বিলোতে। সেটাকে অবশ্য ‘পুরাচি থালাইভি’র আশীর্বাদ বলেই গণ্য করত সবাই।   বিশদ

01st  December, 2019
অর্ধশতবর্ষে শ্বেত বিপ্লব 
কল্যাণ বসু

‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে...’
রায়গুণাকর ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্যে ঈশ্বরী পাটনীর কালজয়ী বর প্রার্থনা ছিল এটাই। ‘অন্নপূর্ণা ও ঈশ্বরী পাটনী’র এই অবিস্মরণীয় পংক্তিতে সন্তানের মঙ্গলচিন্তা যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে সন্তানের মঙ্গলার্যে বিরাট কোনও লোভ না দেখিয়ে শুধুমাত্র দুধ-ভাতের আজীবন জোগান প্রার্থনা করা। সুস্থ-সবল সন্তানের জন্য ভাতের সঙ্গে দুধের অপরিহার্যতার কথাও আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রয়েছে এই প্রার্থনায়।  
বিশদ

24th  November, 2019
অচেনা অযোধ্যা
সমৃদ্ধ দত্ত

 সরযূ নদীর নয়াঘাটে মাঝেমধ্যেই দেখা যাবে এক টানাপোড়েনের দৃশ্য। গোন্দা জেলার মানকপুর গ্রামের রমাদেবী নিজের মেয়ের সামনে হাতজোড় করে বলছেন, ‘আমাকে ছেড়ে দে রে..আমি কয়েকদিন পর আবার চলে যাব..সত্যি বলছি যাব।’ মেয়ে জানে মায়ের কথার ঠিক নেই। আজ বিশ্বাস করে ছেড়ে দিলে, সত্যিই কবে যাবে, কোনও ঠিক নেই।
বিশদ

17th  November, 2019
একনজরে
 ওয়াশিংটন: আরও একবার রেকর্ড ছাড়িয়েছে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড ও অন্য গ্রিনহাউস গ্যাসের উপস্থিতি। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব ...

 আগ্রা, ২৫ জানুয়ারি: কথায় বলে প্রেমের কোনও বয়স হয়না। এই প্রবাদবাক্যটি ফের একবার বাস্তবে ধরা পড়ল। আর তার ঘটল খোদ তাজমহলেরই শহর আগ্রায়। যার রূপকার ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। ব্যবসায়ীদের উন্নতির আশা রয়েছে। বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। আত্মীয়দের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেবে। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৯২৬: জন লগি বেয়ার্ড লন্ডনে প্রথম টেলিভিশন সিস্টেমকে জনসমক্ষে নিয়ে আসেন
১৯৩৬: জনগণের জন্য লন্ডনে শুরু হল বিবিসি-র সম্প্রচার
১৯৩৯: আমেরিকায় নিয়মিতভাবে টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু
১৭৮২ – বাঁশের কেল্লা খ্যাত বিপ্লবী তিতুমীর তথা সৈয়দ মীর নিসার আলীর জন্ম
১৮৮০ - টমাস আলভা এডিসন বৈদ্যুতিক বাতির বাণিজ্যিক পেটেন্ট করেন।
১৯৬৯: অভিনেতা ববি দেওলের জন্ম
১৯৬৯: চিত্রপরিচালক বিক্রম ভাটের জন্ম
১৯৮৬: বিশিষ্ট সেতারবাদক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু
২০০৯: ভারতের অষ্টম রাষ্ট্রপতি আর ভেঙ্কটরামনের মৃত্যু
২০০২ - নাইজেরিয়ার লেগোস শহরে এক বিস্ফোরণে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি মানুন গৃহহীন হন।



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭০.৬৪ টাকা ৭২.৩৪ টাকা
পাউন্ড ৯১.৭৩ টাকা ৯৫.০২ টাকা
ইউরো ৭৭.৩৫ টাকা ৮০.৩৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪০,৯৮৫ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৩৮,৮৮৫ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৩৯,৪৭০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৪৭,১০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৪৭,২০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
26th  January, 2020

দিন পঞ্জিকা

১১ মাঘ ১৪২৬, ২৬ জানুয়ারি ২০২০, রবিবার, (মাঘ শুক্লপক্ষ) দ্বিতীয়া ৫৯/৪৫ শেষ রাত্রি ৬/১৬। ধনিষ্ঠা অহোরাত্র। সূ উ ৬/২১/৫৩, অ ৫/১৬/১৩, অমৃতযোগ দিবা ৭/৫ গতে ১০/০ মধ্যে। রাত্রি ৭/১ গতে ৮/৪৬ মধ্যে। বারবেলা ১০/২৭ গতে ১/১০ মধ্যে। কালরাত্রি ১/২৭ গতে ৩/৬ মধ্যে। 
১১ মাঘ ১৪২৬, ২৬ জানুয়ারি ২০২০, রবিবার, দ্বিতীয়া ৫৬/১৭/৫২ শেষরাত্রি ৪/৫৬/৫। ধনিষ্ঠা ৫৮/৫৪/২৯ শেষরাত্রি ৫/৫৮/৪৪। সূ উ ৬/২৪/৫৬, অ ৫/১৪/৫৬, অমৃতযোগ দিবা ৭/১ গতে ৯/৫৯ মধ্যে ও রাত্রি ৭/৮ গতে ৮/৫১ মধ্যে। কালবেলা ১১/৪৯/৫৬ গতে ১/১১/১১ মধ্যে। কালরাত্রি ১/২৮/৪১ গতে ৩/৭/২৬ মধ্যে।
৩০ জমাদিয়ল আউয়ল 

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আজকের রাশিফল
মেষ: বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। বৃষ: নিজের প্রতিভার দ্বারা বিশেষ প্রতিষ্ঠা লাভ করতে ...বিশদ

07:11:04 PM

ইতিহাসে আজকের দিনে
১৯২৬: জন লগি বেয়ার্ড লন্ডনে প্রথম টেলিভিশন সিস্টেমকে জনসমক্ষে নিয়ে ...বিশদ

07:03:20 PM

গিরিশ পার্ক এলাকায় ১১ মাসের শিশুকে অপহরণের অভিযোগ

04:55:03 PM

আনন্দপুরে একটি বাড়িতে ঢুকে মহিলাকে বেঁধে লুটতরাজ দুষ্কৃতীদের, তদন্তে পুলিস 

04:18:31 PM

৮৩ যাত্রী নিয়ে আফগানিস্তানের গজনিতে ভেঙে পড়ল বিমান

04:15:59 PM

৪৫৮ পয়েন্ট পড়ল সেনসেক্স 

04:11:36 PM