Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

জাতীয়তাবাদ ও রবিঠাকুর 
সমৃদ্ধ দত্ত

জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞা তাঁর কাছে আলাদা। বিশ্বাস করতেন, গ্রামই ভারতের চেতনা। সম্পদ। তাই শুধু ইংরেজ বিরোধিতা নয়, রবিঠাকুরের লক্ষ্য ছিল ভারতের উন্নয়ন। ভারতবাসীর উন্নয়ন। তাঁদের স্বনির্ভর করে তোলা। অন্যরকম তাঁর স্বদেশপ্রেম। আরও এক ২২ শ্রাবণের আগে স্মরণ এই অন্য রবীন্দ্রনাথকে।

বিশ্বভারতীর জন্য অর্থসংগ্রহের কারণে প্রচুর ঘুরতে হচ্ছে। হাতে সময় নেই। মনও বিষণ্ণ। এমন সময় একটা রচনা দৃষ্টিগোচর হল আমেরিকায় বসে। রচনাটির শিরোনাম ‘ঈভল রট বাই দ্য ইংলিশ মিডিয়াম’। প্রকাশিত হয়েছে ‘ইয়ং ইন্ডিয়া’ পত্রিকায়। ১৯২১। লিখেছেন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। গান্ধীজির লেখা? পড়তে হচ্ছে। তাই টেনে নিয়েছিলেন লেখাটি। কিন্তু যতই পড়ছেন ততই যেন ক্ষোভ সঞ্চারিত হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের মধ্যে। কারণ গান্ধীজি সেই রচনায় লিখেছেন, ‘নিজেদের ভাবনাকে যদি ইংরেজি ভাষায় আবদ্ধ রেখে ইংরেজিতেই সেই ভাবধারা প্রকাশ করার প্রবণতা থেকে রামমোহন রায় কিংবা লোকমান্য তিলক বিরত থাকতেন, তাহলে তাঁরা আরও অনেক বড় সমাজ সংস্কারক হতে পারতেন।’ গান্ধীজি লিখেছেন, ‘আমাদের দেশে অনেক কুসংস্কারই বিরূপ প্রভাব ফেলেছে, কিন্তু তার মধ্যেও সবথেকে বেশি যে কুসংস্কারটির ক্ষতিকর প্রভাব এদেশে রয়েছে, সেটি হল ইংরেজি ভাষাজ্ঞান ছাড়া স্বাধীন চিন্তা আর ভাবনার সঠিক প্রকাশ করা যায় না, এই মনোভাব।’ গান্ধীজি আরও লিখেছেন ‘এভাবে বস্তুত ইংরেজি ভাষার শিক্ষার ব্যবস্থা ভারতের শরীর, মন, আত্মাকে ক্ষুদ্র বামনত্বে পর্যবসিত করার প্রবণতাই দেখিয়েছে।’ সোজা কথায় গান্ধীজির ধারণা, রামমোহন রায় ইংরেজি ভাষায় অতি নির্ভরশীল হওয়ার কারণেই সমাজ সংস্কারের শীর্ষবিন্দু স্পর্শ করতে পারেননি। আর রবীন্দ্রনাথ রামমোহন রায়ের কোনওরকম বিরুদ্ধতা সহ্যই করবেন না। এক মুহূর্ত দেরি না করে রবীন্দ্রনাথ সি এফ অ্যান্ড্রুজকে চিঠিতে লিখলেন, ‘আধুনিক শিক্ষার অন্ধ বিরোধিতা করতে গিয়ে যেভাবে মহাত্মা গান্ধী আধুনিক ভারতের অন্যতম ব্যক্তিত্ব রামমোহন রায়ের ভূমিকাকে লঘু করার চেষ্টা করেছেন, আমি সেই প্রয়াসের তীব্র প্রতিবাদ করি।’ রবীন্দ্রনাথের পাল্টা যুক্তি হল, দেশীয় সংস্কৃতি ও শিক্ষায় রামমোহন রায় এতটাই উচ্চমানের ছিলেন যে, তাঁকে কখনও বিদেশি শিক্ষার অনুগামী হিসেবে নিজেকে প্রতিভাত করতে হয়নি। প্রাচ্যের জ্ঞান ও প্রতীচ্যের শিক্ষার ওই নিখুঁত মেলবন্ধনই তাঁকে পশ্চিমের কাছে গ্রহণযোগ্য ও শ্রদ্ধার পাত্র করে তুলেছিল। বস্তুত রবীন্দ্রনাথের আজীবনের ধ্রুবপদ ছিল দিবে আর নিবে মিলিবে মেলাবে। তিনি যে কোনও প্রকার দরজা বন্ধ করার বিরুদ্ধে। তাই তিনি ছিলেন গান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলনের কঠোর বিরোধী। ১৯২১ সালেরই সেপ্টেম্বর মাসে গান্ধীজি কলকাতায় জোড়াসাঁকোতে এলে রবীন্দ্রনাথ তাঁকে বলেছিলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ভারতীয় হিসেবে পশ্চিম থেকে আমাদের শুধু যে অনেক কিছু শেখার আছে তাই নয়, আমাদেরও অনেক কিছু দেওয়ার আছে পশ্চিমী সভ্যতাকে। তাই পশ্চিমের দরজা বন্ধ করার চেষ্টা যেন আমরা না করি।’
রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বিশ্ব মানবতাবাদী। তিনি তাই বরাবর জাতীয়তাবাদের উপরে স্থান দিয়েছেন মানবতাবাদকে। জাতীয়তাবাদ যে উগ্র দেশপ্রেমে পর্যবসিত হয়ে শেষ পর্যন্ত দেশীয় মানুষের কাছেও একপ্রকার বিপদ নিয়ে আসে, সেকথা তিনি ‘ঘরেবাইরে’ উপন্যাসেই দেখিয়েছেন। মডার্ন রিভিউ পত্রিকায় ‘দ্য কল অব ট্রুথ’ নামক একটি প্রবন্ধে তিনি লিখলেন, ‘আমার সাম্প্রতিক বিদেশ সফরে এরকম অনেকের সঙ্গে দেখা হল যাঁরা জাতীয়তাবাদের বন্ধন ছিন্ন করে মানব ঐক্যের লক্ষ্যে পৌঁছতে সংকল্প করেছেন।’ রবীন্দ্রনাথ নিজে অসহযোগের মতো আন্দোলনকে নেতিবাচক ভেবে এসেছেন। এই ভাবনাগত লড়াইয়ে তিনি প্রতিনিয়ত আক্রান্ত ও কোণঠাসাও হয়েছেন। অসহযোগের বিরোধিতা করায় তাঁর নিজের বড়দাদা দ্বিজেন্দ্রনাথ পর্যন্ত গান্ধীজিকে একটি ব্যক্তিগত চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, ‘রবি ভুল পথ গ্রহণ করেছে। ভারত যখন অনেক এগিয়ে গিয়েছে তার নতুন সন্তান স্বরাজের জন্ম দেওয়ার পথে, তখন রবি নিজের চারপাশে সঙ্গীত আর আনন্দের একটা আবহ রচনা করে রয়েছে...’। আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় রবীন্দ্রনাথের সমালোচনা করে গান্ধীজিকে চিঠি লিখেছিলেন (৫ অক্টোবর, ১৯২১), ‘কিছু কিছু সময় নীরবতাই স্বর্ণসম উজ্জ্বল এবং ভাষণ নিছকই রুপোর মতো। আমার ধারণা রবীন্দ্রনাথ এই আপ্তবাক্য অনুসরণ করলে সবথেকে বেশি ভারতের স্বার্থের পক্ষে হত।’ রবীন্দ্রনাথ ১৯১৬-১৭ সালে আমেরিকা ও জাপানে তাঁর প্রদান করা বক্তৃতাতেও এই একইভাবে জাতীয়তাবাদের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন। বক্তৃতাগুলি মডার্ন রিভিউ পত্রিকায় পড়ে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ এতটা‌ই ঩বিস্মিত হয়েছিলেন যে, তিনি ১৯১৭ সালের এপ্রিলে বলেছিলেন, ‘স্বদেশির সেই দিনগুলিতে যে রবীন্দ্রনাথ বাংলার মাটি, বাংলার জলকে পূর্ণ করার, পূণ্য করার কামনা জানিয়েছিলেন ঈশ্বরের কাছে, সেই তিনিই এখন তাহলে স্যার রবীন্দ্রনাথে পরিণত হয়েছেন?’ কিন্তু ক্রমাগত চতুর্দিক থেকে আসা নানাবিধ আক্রমণ ও সমালোচনার তির রবীন্দ্রনাথকে নিজের অবস্থান থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। তিনি আজীবন অবিচল রইলেন বিশ্বমানবতার সৌভ্রাতৃত্বের মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে। তাই অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে অনশনে শায়িত গান্ধীজির পাশে দাঁড়াতে ৭০ বছর বয়সে অসুস্থ শরীর নিয়েও পুনের ইয়েরওয়াড়া জেলে ছুটে গিয়েছিলেন কলকাতা থেকে। তাঁকে সামনে পেয়ে দু’হাতে জড়িয়ে ধরেছিলেন মহাত্মা গান্ধী।
রবীন্দ্রনাথ তাহলে কি জাতীয়তাবাদী ছিলেন না? তিনি স্বদেশপ্রেমকে তাহলে কী চোখে দেখতেন? ঠিক এখানেই রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে মহাত্মা গান্ধীর বিস্ময়কর সাদৃশ্য। কারণ এই দুই মহান আত্মাই মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন ভারতের আত্মা থাকে গ্রামে। রবীন্দ্রনাথ মনে করতেন স্বদেশপ্রেমের অর্থ হল স্বদেশবাসীর আত্মসম্মান অর্জন। স্বাবলম্বী হওয়া। স্বদেশি আন্দোলনের সময় বারংবার কংগ্রেস অধিবেশনে কিংবা স্বদেশি সমাজ সম্মেলনে বলেছেন গ্রামকে শক্তিশালী করার কথা। কিন্তু তিনি লক্ষ্য করেন ঩নেতারা নিছক বক্তৃতা, অধিবেশন আর রাজনীতি নিয়ে গরম গরম কর্মসূচিতেই ব্যস্ত। তাঁর প্রস্তাবে কেউ গুরুত্বই দেয়নি। রবীন্দ্রনাথ স্থির করলেন তিনি নিজের মতো চেষ্টা করবেন। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কনিষ্ঠ পুত্রকে নির্দেশ দিয়েছিলেন জমিদারি পরিচালনার। বাংলায় তিনটি পরগনায় তাঁদের জমিদারি ছিল। তিনটি পৃথক জেলায়। পাবনার শাহজাদপুর, রাজশাহির কালীগ্রাম এবং নদীয়ার বিরাহিমপুর। বিরাহিমপুর পরগনার সদর কাছারি ছিল শিলাইদহ। সেটাই প্রধান সদর দপ্তর করলেন রবীন্দ্রনাথ। প্রথমেই তিনি গ্রামের প্রজাদের মধ্যে সালিশি বিচারের প্রবর্তন করেন। বিরাহিমপুর ও কালীগ্রামের কিছু গ্রাম নিয়ে স্থির হল ফৌজদারি ছাড়া অন্য কোনও মামলা নিয়ে আদালতে কেউ যাবে না। সালিশির বিচার পছন্দ না হলে আপিল করা যাবে। পৃথক আপিল সভাও নির্বাচিত হয়। একটা সময় পর দেখা যায় আদালতে গেলে অনেক খরচ, তাই গ্রামের পর গ্রাম আর কেউ আদালতে গেল না। গ্রামবাসীদের কাছে এই বিচারসভাই সবথেকে সুবিধাজনক হয়ে গেল।
পুত্র রথীন্দ্রনাথকে আমেরিকায় কৃষিবিজ্ঞান পড়তে পাঠিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। তাঁর আশা ছিল রথীন্দ্রনাথ ফিরে এসে গ্রামের কৃষি উন্নয়নের কাজে লাগবেন। রথীন্দ্রনাথ তাই করেছিলেন। শিলাইদহে কুঠিবাড়ির কিছু জমি খাস করে সেখানে আমেরিকা থেকে যন্ত্র নিয়ে এসে চাষবাস শেখানো হয়েছিল কৃষকদের। রাসায়নিক ল্যাবরেটরি গড়ে তোলা হল। ক্রমেই গ্রামে গ্রামে আলু, আখ, টমেটোর চাষ বাড়তে লাগল। ইতিমধ্যেই রবীন্দ্রনাথ গ্রামে গ্রামে হিতৈষী সভা গঠন করেছেন। হিতৈষী সভা গ্রামের উন্নয়নের রূপকার। জমিদারের দান হিসেবে যাতে কেউ মনে না করে, তাই রবীন্দ্রনাথ এমন ব্যবস্থা করলেন, যাতে মনে হয় প্রজা ও গ্রামবাসী নিজেরাই করছেন নিজেদের কাজ। এখানে তাঁর কোনও ভূমিকাই নেই। তাই নিয়ম হল খাজনার প্রতি টাকার সঙ্গে তিন পয়সা করে চাঁদা দিতে হবে। সেই টাকা জমা হবে হিতৈষী সভার তহবিলে। এর নাম সাধারণ ফান্ড। গ্রামে গ্রামে কোনও স্কুল নেই। একমাত্র ধনীদের পুত্রদের গ্রামের বাইরের স্কুলে পাঠানোর মতো সঙ্গতি আছে। গরিব প্রজাদের সন্তানদের পড়াশোনা হয় না। হিতৈষী সভাকে দিয়ে রবীন্দ্রনাথ তাই এবার দু’টি বিষয়ে জোর দিলেন। স্কুল নির্মাণ আর হাসপাতাল গঠন। দুই বছরের মধ্যে ওই সাধারণ ফান্ড থেকেই একঝাঁক পাঠশালা, মিডল ইংলিশ স্কুল আর দুটি হাই স্কুল নির্মাণ করা হল। কিন্তু দূর গ্রাম থেকে আসা ছাত্ররা কোথায় থাকবে? তাই ছাত্রাবাস নির্মাণ করার টাকা রবীন্দ্রনাথ নিজের এস্টেটের তহবিল থেকেই দিয়ে দিলেন। কয়েক বছরের মধ্যেই তিন পরগনার প্রতিটি গ্রামেই একটি করে স্কুল অথবা পাঠশালা হয়ে গেল। সম্পূর্ণ সরকারের সাহায্য ছাড়াই।
কৃষি কিংবা মৎস্যচাষ তো গ্রামবাসী জানেই। কিন্তু কাপড় বোনা, ক্ষুদ্রশিল্প ইত্যাদি শিল্প কীভাবে শিখবে তাঁরা? তাই শান্তিনিকেতন থেকে নিয়ম করে এই কর্মীদের এইসব পরগনায় ডেপুটেশনে পাঠাতেন রবীন্দ্রনাথ। তিনি যখন পদ্মাবোটে সন্ধ্যার নিভৃতিতে কবিতা, গান বা পত্র রচনা করছেন, সেদিনই দ্বিপ্রহরে পতিসর থেকে আত্রাই সাত মাইল রাস্তা নির্মাণের কাজও তদারকি করে এসেছেন। দিনের পর দিন। কারণ তিনি দেখেছেন বর্ষায় গ্রাম-গ্রামান্তরে গ্রামবাসীদের যেতে হয় শস্যক্ষেতের আল ধরে। তাই তিনি নিজের এস্টেটের টাকায় রাস্তা নির্মাণ করেছেন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে।
বাংলার গ্রামবাসীর অভিশাপ হল ঋণ। ঋণ পরিশোধ আর হয় না। সুদই মেটানো যায় না, আসল কবে মিটবে? এর একটা বিহিত করতে রবীন্দ্রনাথ নিজের পরিচিতদের থেকে ধারদেনা করে পতিসর পরগনায় একটি কৃষিব্যাঙ্ক স্থাপন করলেন। যাঁকে শান্তিনিকেতনের বিদ্যালয় চালানোর জন্য সারা বছর ধরে ভারত ও ভারতের বাইরে ঘুরে ঘুরে ঋণ গ্রহণ করতে হচ্ছে, সেই কবি বাংলার এক প্রত্যন্ত পরগনায় তাঁর প্রজাদের সুরাহার জন্য একটা আস্ত কৃষিব্যাঙ্ক স্থাপনের জন্য কয়েকহাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করলেন! ৮ শতাংশ সুদে কৃষকরা এই ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেবেন। আবার ১২ শতাংশ সুদে শোধ করে দেবেন। এই ছিল পরিকল্পনা। দ্রুত সফল হল সেই প্রয়াস। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে কৃষকরা মহাজদের ধার মিটিয়ে দিল। একে একে কালীগ্রাম, পতিসরের মহাজনদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেল। একটা সময় চাহিদা এতই বেড়ে গেল, অথচ ব্যাঙ্কে সেই পরিমাণ টাকার সংস্থান নেই। কী করা যায়? আর তো ধারদেনার জায়গাও নেই। রবীন্দ্রনাথ এক অবিস্মরণীয় কাজ করলেন। নোবেল পুরস্কারে পাওয়া ১ লক্ষ ৮ হাজার টাকা ওই গ্রামের কৃষিব্যাঙ্কে বিনা দ্বিধায় ডিপোজিট রাখলেন!
বাঙালির কবিগুরু বন্দনার তীব্র ঔজ্জ্বল্যে অন্য এক রবীন্দ্রনাথ চিরকালই যেন কিছুটা আড়ালে। তিনি হলেন কর্মী রবীন্দ্রনাথ। উগ্র দেশপ্রেম কিংবা উত্তুঙ্গ স্লোগানধর্মী বক্তৃতা নয়। রবীন্দ্রনাথের আজীবনের লক্ষ্য ছিল দেশবাসীর আত্মিক ক্ষমতায়ন। স্বয়ম্ভরতা। আত্মমর্যাদা। আত্মবিশ্বাস। এবং ঐক্য। তিনি লিখেছেন, ‘মিলনের পন্থাই ভারতপন্থা।’ রবীন্দ্রনাথের কাছে এই ছিল স্বদেশপ্রেম।

গ্রাফিক্স: সোমনাথ পাল
সহযোগিতায়: উজ্জ্বল দাস 
04th  August, 2019
আরাধনা ৫০
সমৃদ্ধ দত্ত

 রবি শর্মার বাড়িতে গুরু দত্ত এসেছেন। প্রায় মধ্যরাত। এত রাতে কী ব্যাপার? রবি শর্মা চোখে জিজ্ঞাসু দৃষ্টি। গুরু দত্ত বললেন, ‘রবি আমি একটা গান চা‌ই। একটি মানুষ অনেক রাত পর্যন্ত মুশায়রার আসর থেকে বাড়ি ফিরেছে। তার সবেমাত্র বিয়ে হয়েছে। অপূর্ব সুন্দরী স্ত্রী। সেই মেয়েটি স্বামীর জন্য অপেক্ষা করে করে একসময় ঘুমিয়ে পড়েছে। স্বামী ভদ্রলোক বাড়ি ফিরে দেখছেন স্ত্রী গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।
বিশদ

03rd  November, 2019
ডাকাত কালী
সুভাষচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়

 কয়েকশো বছর আগের কাহিনী। তখন এখানে চারপাশে ঘন জঙ্গল। বহু জায়গায় সূর্যালোক পর্যন্ত পৌঁছত না। ছিল একাধিক হিংস্র পশুও। পাশেই সরস্বতী নদীর অববাহিকা। সেখানে বহু ডাকাতের বসবাস ছিল। বাংলার বিখ্যাত রঘু ও গগন ডাকাতও এই পথ দিয়ে ডাকাতি করতে যেতেন।
বিশদ

27th  October, 2019
মননে, শিক্ষায় পুরোপুরি বাঙালি

সুইডিশ অ্যাকাডেমি ঘোষণাটা করার পর কিছু সময়ের অপেক্ষা। আগুনের মতো খবরটা ছড়িয়ে গিয়েছিল গোটা দেশে... একজন বাঙালি, একজন ভারতীয় আরও একবার জগৎসভায় দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। অমর্ত্য সেনের পর অর্থনীতিতে নোবেল পাচ্ছেন তিনি। বিশদ

20th  October, 2019
অর্থনীতিতে নীতি
অনির্বাণ মুখোপাধ্যায়

 লেখাটা শুরু করা যেতে পারে আমার ছাত্রজীবনে রাশিবিজ্ঞানের ক্লাসে শোনা একটা গল্প দিয়ে। কোনও একসময় ইংল্যান্ডের স্কুলশিক্ষা দপ্তর ঠিক করেছিল, স্কুলের বাচ্চাদের দুধ খাইয়ে দেখবে তাদের স্বাস্থ্যের উপর তার কোনও সুপ্রভাব পড়ে কি না। সেইমতো স্কুলগুলিতে কোনও একটি ক্লাসের অর্ধেক বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো হয় এবং বাকিদের তা দেওয়া হয়নি। বিশদ

20th  October, 2019
বাহন কথা 
রজত চক্রবর্তী

আকাশে সোনার থালার মতো চাঁদ। বাড়িতে বাড়িতে দোরগোড়া থেকে লতানে ধানের শিষ। এঁকে বেঁকে চলে গিয়েছে চৌকাঠ ডিঙিয়ে, ডাইনিংয়ের পাশ দিয়ে প্রতিটি ঘরে ঘরে... এমনকী সিঁড়ির পাশ দিয়েও উঠেছে দোতলায়। ধানের শিষের পাশে পাশে ছোট্ট ছোট্ট সুন্দর পায়ের ছাপ।  
বিশদ

13th  October, 2019
প্র তি মা র বি ব র্ত ন
সোমনাথ দাস

বর্ষা আর শরৎ এখন মিলেমিশে একাকার। বিশ্ব উষ্ণায়নের কৃপাদৃষ্টিতে শহরবাসীর পক্ষে আর এই দু’টি ঋতুকে আলাদা করা সম্ভব নয়। তবে ভাদ্রের সমাপ্তি এবং আশ্বিনের সূচনা বাঙালির জীবনে নিয়ে আসে এক অনাবিল আনন্দ। মা দুর্গার আগমনবার্তায় আমাদের হৃদয় নেচে ওঠে।   বিশদ

29th  September, 2019
পুজোর ফুলের যন্ত্রণা
বিশ্বজিৎ মাইতি

 বিশ্বজিৎ মাইতি: হাওড়া‑খড়্গপুর রেলওয়ে শাখার বালিচক স্টেশন। মার্চ মাসের এক শুক্রবারের সকালে বেশ কয়েকজনকে ধরেছেন টিটি। বিনা টিকিটে ট্রেন সফর। তাঁদের মধ্যে এক যুবকের হাতে গোটা চারেক বস্তা। হাতে একগুচ্ছ ব্যাগ। গাল ভর্তি দাড়ি। উসকো-খুসকো চুল। পরনে নানান দাগে ভর্তি জামা ও হাফপ্যান্ট। করুণ চোখে আচমকাই নিজের মানিব্যাগ টিটির মুখের সামনে দেখিয়ে ধরা গলায় বলল, ‘স্যার একটা টাকাও নেই। পুরো শরীর চেক করে দেখুন...।
বিশদ

22nd  September, 2019
ভো-কাট্টা

বিশ্বকর্মা পুজোর সঙ্গে ঘুড়ি ওড়ানোটা সমার্থক হয়ে গিয়েছে। বিশ্বকর্মা পুজো মানেই আকাশজোড়া ঘুড়ির আলপনা। অসংখ্য ঘুড়ির ভেলায় যেন স্বপ্ন ভাসে। বহু কৈশোর আর যৌবনের মাঞ্জায় লেগে আছে ঘুড়ি ওড়ানোর স্মৃতি। যে ছেলেটা কোনওদিন সকাল দেখেনি, সেও বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে সূর্য ওঠার আগেই ঘুড়ি-লাটাই নিয়ে ছাদে উঠে যায়।  
বিশদ

15th  September, 2019
নির্মাণশিল্পী বিশ্বকর্মা
সন্দীপন বিশ্বাস

জরাসন্ধ তখন প্রবল প্রতাপান্বিত। বারবার মথুরা আক্রমণ করছিলেন। কিন্তু সপ্তদশ প্রচেষ্টাতেও মথুরা জয় করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। তাই ফের তিনি মথুরা আক্রমণের প্রস্তুতি নিতে লাগলেন। কৃষ্ণ অবশ্য জানতেন জরাসন্ধ কিছুতেই মথুরা জয় করতে পারবেন না।
বিশদ

15th  September, 2019
আগুন বাজার
বীরেশ্বর বেরা

 ‘কেন? আপনি যে পটল বেচছেন, এমন পটল তো আমরা ৩০-৩২ টাকায় কিনছি!’ গ্রাম্য যুবক তাঁর আপাত-কাঠিন্যের খোলস ছেড়ে সহজ হয়ে গেলেন হঠাৎ। তেলের টিনের উপর চটের বস্তা বেঁধে টুলের মতো বসার জায়গাটা এগিয়ে দিয়ে বললেন, ‘বসুন তাহলে, বলি। বিশদ

08th  September, 2019
সমাপ্তি
সমৃদ্ধ দত্ত

মহাত্মা গান্ধীর প্রকাশিত রচনাবলীর খণ্ড সংখ্যা ৯০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এ পর্যন্ত জওহরলাল নেহরুর লেখা নিয়ে প্রকাশিত যত রচনা আছে, তা প্রায় ৫০ খণ্ড অতিক্রান্ত। বাবাসাহেব আম্বেদকরের সারা জীবনের যাবতীয় রচনা সমন্বিত করে এখনও পর্যন্ত ১৬টি খণ্ডসংবলিত রচনাবলী প্রকাশ পেয়েছে। 
বিশদ

01st  September, 2019
রাজীব ৭৫
মণিশঙ্কর আইয়ার

 ছিয়াশি সালের ডিসেম্বর। অঝোরে তুষারপাত হচ্ছে। আমরা যাচ্ছি কাশ্মীর। কিন্তু একটা সময় আর্মি জানাল, আর যাওয়া সম্ভব নয়। এত তুষারপাতে হেলিকপ্টার ওড়ানো যাবে না। তাহলে? যাব কী করে? বাকিরাও বলল, দিল্লি ফিরে চলুন। কিন্তু প্রধাননমন্ত্রী বললেন, তা হয় না। যাব যখন বলেছি যেতে হবে। লোকেরা অপেক্ষা করে থাকবে যে!
বিশদ

25th  August, 2019
শতবর্ষে  সারাভাই
মৃন্ময় চন্দ

চন্দ্রযান-২’র সাফল্যে গর্বিত ভারত। অভিজাত মহাকাশ ক্লাবের সদস্যদেশগুলির সঙ্গে ভারত আজ এক পংক্তিতে। মহাকাশ গবেষণায় ভারতের ঈর্ষণীয় সাফল্যের রূপকার নিঃসন্দেহে ক্ষণজন্মা বিরল প্রতিভাধর মিতভাষী এক বিজ্ঞানী—বিক্রম সারাভাই। একার হাতে যিনি গড়ে দিয়ে গেছেন ভারতের বিপুলা মহাকাশ সাম্রাজ্য। ১২ই আগস্ট ছিল তাঁর জন্মশতবার্ষিকী। বিশদ

18th  August, 2019
জয় জওয়ান

ঝুঁকি শব্দটি যখনই উল্লেখ করা হয়, তখনই তার সঙ্গে আবশ্যিকভাবে যুদ্ধের বিষয়টি এসে পড়ে। কিন্তু শুধু যুদ্ধে নয়, ঝুঁকি রয়েছে প্রশিক্ষণ পর্বেও। একজন যুদ্ধবিমানের পাইলটকে নানাভাবে তৈরি হতে হয়। আকাশপথে সেই প্রশিক্ষণ যখন শুরু হয়, তখন প্রতিটি স্তরেই ঝুঁকি থাকে। সেগুলো অতিক্রম করে সাফল্য পাওয়াই একজন পাইলটের কাছে চ্যালেঞ্জ। বিশদ

11th  August, 2019
একনজরে
বিএনএ, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদে বিজেপির মণ্ডল কমিটি গঠন নিয়ে নব্য ও আদিদের মধ্যে কোন্দল তুঙ্গে উঠেছে। দ্বন্দ্বের কারণে তারা বহরমপুর উত্তর এবং দক্ষিণ মণ্ডল কমিটির সভাপতির নাম চূড়ান্ত করতে পারেনি।  ...

সংবাদদাতা, বালুরঘাট: বোল্লাকালী তাঁকে মূর্তি গড়তে স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন। সেই স্বপ্নাদেশ পেয়েই ২০১১ সাল থেকে বোল্লাকালীর সুউচ্চ প্রতিমা তৈরি করছেন বালুরঘাটের মাঝিগ্রামের মৃৎশিল্পী হিমাংশু মহন্ত। ২০১১ সালের আগে তাঁর বাবা ভবেন মহন্ত বোল্লাকালীর মূর্তি গড়তেন।  ...

 নয়াদিল্লি, ৮ নভেম্বর (পিটিআই): স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প ঘোষণার মাত্র তিন দিনে বিএসএনএলের ৪০ হাজারেরও বেশি কর্মী তা গ্রহণ করেছেন। রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থার সিএমডি পি কে পুরওয়ার শুক্রবার একথা জানিয়েছেন। ...

 ওয়াশিংটন, ৮ নভেম্বর (পিটিআই): আগামী সপ্তাহেই ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের চারটি দেশ সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এসপার। এই সফরকে তাঁদের অগ্রাধিকারের জায়গা বলেই দাবি করেছে পেন্টাগন। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

নতুন কোনও কর্ম পরিকল্পনায় সাফল্যের ইঙ্গিত। লটারি বা ফাটকায় প্রাপ্তি যোগ। খেলাধূলায় কৃতিত্ব। বাক্যে ও ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৫৮: স্বাধীনতা সংগ্রামী বিপিনচন্দ্র পালের জন্ম
১৮৬২: মুঘল সাম্রাজ্যের শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের মৃত্যু
১৮৬৭: বিজ্ঞানী মেরি কুরির জন্ম
১৮৮৮: নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর বেঙ্কটরমনের জন্ম
১৯২৩: সাহিত্যিক ও সমাজসেবী অশ্বিনীকুমার দত্তের মৃত্যু
১৯৫৪: অভিনেতা কমল হাসানের জন্ম
১৯৭১: অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর জন্ম
১৯৭৯: অভিনেত্রী রাইমা সেনের জন্ম

07th  November, 2019


ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭০.৩৯ টাকা ৭২.০৯ টাকা
পাউন্ড ৮৯.৬৮ টাকা ৯২.৯২ টাকা
ইউরো ৭৭.২৫ টাকা ৮০.২৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৩৮,৫৯০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৩৬,৬১০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৩৭,১৬০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৪৪,৬০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৪৪,৭০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২২ কার্তিক ১৪২৬, ৯ নভেম্বর ২০১৯, শনিবার, দ্বাদশী ২২/৬ দিবা ২/৪০। উত্তরভাদ্রপদ ২২/৪৬ দিবা ২/৫৬। সূ উ ৫/৪৯/২, অ ৪/৫১/৫৪, অমৃতযোগ দিবা ৬/৩৩ মধ্যে পুনঃ ৭/১৭ গতে ৯/৩০ মধ্যে পুনঃ ১১/৪২ গতে ২/৩৯ মধ্যে পুনঃ ৩/২৩ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ১২/৩৮ গতে ২/২২ মধ্যে, বারবেলা ৭/১২ মধ্যে পুনঃ ১২/৪৩ গতে ২/৬ মধ্যে পুনঃ ৩/২৯ গতে অস্তাবধি, কালরাত্রি ৬/২৯ মধ্যে পুনঃ ৪/১২ গতে উদয়াবধি।
২২ কার্তিক ১৪২৬, ৯ নভেম্বর ২০১৯, শনিবার, দ্বাদশী ২১/১২/৩৯ দিবা ২/১৯/৫। উত্তরভাদ্রপদ ২৪/২৩/৮ দিবা ৩/৩৫/১৬, সূ উ ৫/৫০/১, অ ৪/৫২/৪৩, অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৫ মধ্যে ও ৭/২৮ গতে ৯/৩৬ মধ্যে ও ১১/৪৫ গতে ২/৩৭ মধ্যে ও ৩/২০ গতে ৪/৫৩ মধ্যে এবং রাত্রি ১২/৪৩ গতে ২/২৯ মধ্যে, বারবেলা ১২/৪৪/১৩ গতে ২/৭/৩ মধ্যে, কালবেলা ৭/১২/৫১ মধ্যে ও ৩/২৯/৫৩ গতে ৪/৫২/৪৩ মধ্যে, কালরাত্রি ৬/২৯/৫৩ মধ্যে ও ৪/১২/৫১ গতে ৫/৫০/৪০ মধ্যে।
১১ রবিয়ল আউয়ল

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আজকের রাশিফল
মেষ: লটারি বা ফাটকায় প্রাপ্তি যোগ। বৃষ: কর্মে পদোন্নতির সম্ভাবনা। মিথুন: অর্থপ্রাপ্তির ...বিশদ

07:11:04 PM

আজ বিমানবন্দর থেকে বিশেষ বাস পরিষেবা

 বুলবুলের জেরে বন্ধ কলকাতা বিমানবন্দর। তাই বিমানবন্দরে থাকা যাত্রীদের ফেরাতে ...বিশদ

07:36:49 PM

সাগরে আছড়ে পড়ল বুলবুল 
সাগরদ্বীপে ঘণ্টায় ১২০ কিমি বেগে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। এর ...বিশদ

06:45:00 PM

আদালতের রায় খোলা মনে স্বীকার করেছে দেশ: মোদি 

06:12:01 PM

ভবিষ্যতের জন্য কাজ করতে হবে: মোদি 

06:12:00 PM

আসুন সবাই মিলে নতুন ভারত নির্মাণ করি: মোদি 

06:12:00 PM