Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

গণহত্যার সাক্ষী
মৃণালকান্তি দাস

১৯৯৫ সালের ৯ আগস্ট। সন্ধ্যায় নাগাসাকি পিস পার্কে আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলো ততক্ষণে শেষ হয়ে গিয়েছে। হোটেলের লবিতে একদল শিক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকদের সামনে দাঁড়িয়ে সাচিকো ইয়াসুই। সামনের ছেলেমেয়েগুলোকে দেখে আকি, ইচিরো, মিসা, তোশি এবং সেই সঙ্গে নিজের শৈশবের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল সাচিকোর। ডিমের গল্পটা দিয়েই শুরু হয়েছিল দুঃসহ স্মৃতির বর্ণনা।
‘আমার বয়স তখন ছ’বছর। অন্য চার ভাইবোন আকি, ইচিরো, মিসা আর তোশি। ছোট্ট তোশি প্রতিদিনই ডিম খেত। কিন্তু আমাদের মুরগিটা সেদিন ডিম পাড়েনি। মা আর তোশি মিলে অনেকক্ষণ ডিম খুঁজেছিল। পায়নি। আমরা কাদামাটি নিয়ে খেলছিলাম। হঠাৎ করেই আকাশে বি-২৯ বিমানের ইঞ্জিন গর্জে উঠল। পিকাডন! (জাপানি এই শব্দটি দিয়ে মূলত পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণকেই বোঝানো হয়ে থাকে। ‘পিকা’ অর্থ ‘অতি উজ্জ্বল আলো’ এবং ‘ডন’ অর্থ ‘বিস্ফোরণ’) অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে তোশি, আকি, ইচিরো— ওরা সবাই চলে গিয়েছে। চলে গিয়েছে মিসাও। আমার বাবা, আমার মা সবাই। আমিও প্রায় মরেই গিয়েছিলাম।’ এটুকু বলে থেমে গিয়েছিলেন সাচিকো। শেষে শুধু বলেছিলেন, ‘আমার সঙ্গে যা হয়েছে, তা যেন তোমাদের সঙ্গে কোনওদিন না হয়।’
কারেন স্টেলসনের লেখা ‘সাচিকো, আ নাগাসাকি বম্ব সারভাইভার্স স্টোরি’। এক হিবাকুশার গল্প। পারমাণবিক বোমা হামলার পর হিরোশিমা ও নাগাসাকির যারা বেঁচে গিয়েছিলেন, তাদের বলা হয় হিবাকুশা। তাঁরা কেউই হিবাকুশা হতে চাননি, চেয়েছিলেন আর দশজন স্বাভাবিক মানুষের মতোই সুন্দর একটা জীবন কাটাতে। কিন্তু ‘ফ্যাট ম্যান’ ও ‘লিটল বয়’ নামে দুটি অভিশাপ তছনছ করে দিয়েছিল তাঁদের সাজানো সংসার, সাজানো স্বপ্ন সহ সবকিছুই। তেমনই একজন হিবাকুশা সাচিকো ইয়াসুই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তার সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছিল।
যুদ্ধের ফলে নাগাসাকিরও তখন জাপানের অন্য আর পাঁচটা শহরের মতো দুঃসহ অবস্থা। সাচিকোর মনে আছে, বিমান হামলার সাইরেন বাজার সঙ্গে সঙ্গেই গোটা পরিবারকে নিয়ে বাবা পাহাড়ের বুকে তৈরি গুহাগুলোর দিকে ছুটত। সাকামোতো সিমেট্রির কাছেই ছিল সেগুলো। ইচিরোর হাত ধরে সাচিকো ভেজা ঘাসের মধ্য দিয়ে ছুটত। তার গলায় ঝোলানো ব্যাগে রাখা বিস্কুটগুলো বারবার বুকে এসে আঘাত করত। গুহার প্রবেশপথে এসে মাথা নিচু করে ভিতরে ঢুকে যেত সাচিকো। গিয়েই উবু হয়ে বসে পড়ত। ভেজা খড়কুটো বিছানো মেঝের শীতল পরশ তাকে শিহরিত করে তুলত। আমেরিকান বি-২৯ বোমারু বিমানগুলো গুহার উপর দিয়ে গর্জন করে উড়ে যেত। আর গুহার ভিতরে সাচিকোর মাথার উপর তখন ভনভন করে উড়ত অজস্র মশা। কী ভয়ঙ্কর সেই দিনগুলো!
 ৮ আগস্ট, ১৯৪৫
সেই সকালটা আর পাঁচটা উষ্ণ, আর্দ্র গ্রীষ্মের দিনের মতোই ছিল। দরদর করে ঘামছিল মেয়েটি। জামাকাপড়ও ঘামে ভিজে একাকার। জুতো জোড়া পায়ে গলিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিল সাচিকো। তাপে ঝলসে যাচ্ছিল সে। একই অবস্থা সাকামোতো সিমেট্রি, স্যানো শিন্তো মঠ, নাগাসাকি মেডিক্যাল কলেজ এবং পুরনো কর্পূর গাছগুলোর। উত্তপ্ত হচ্ছিল এশিয়ার সর্ববৃহৎ চার্চ হিসেবে খ্যাত উরাকামি ক্যাথেড্রাল এবং ছোট্ট দেজিমা দ্বীপ। যেখানে একসময় পা দিয়েছিল পর্তুগিজ বণিকরা। যখন জাপানের অন্যান্য এলাকার সঙ্গে বহির্বিশ্বের কোনও যোগাযোগ ছিল না, তখনও নাগাসাকির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল পাশ্চাত্য দুনিয়ার।
হাঁটতে হাঁটতে স্যানো মঠের কাছাকাছিই চলে এসেছিল সাচিকো। কর্পূর গাছগুলো আর একটু দূরেই। গাছগুলো প্রায় পাঁচশো বছরের পুরনো। এই গাছগুলোর পিছনেই স্যানো মঠের বৃহদাকার, পাথুরে গেটটি। আধ্যাত্মিকতার চাদরে মোড়া এই জায়গায় দাঁড়িয়ে সাচিকো মনে মনে প্রার্থনা করল। ‘আবার যেন প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হতে পারি!’
গত এপ্রিলের কথা। চারদিকের পরিবেশ তখন চেরি ফুলের গন্ধে সুশোভিত। জাপানের স্কুলগুলোর নতুন শিক্ষাবর্ষ সবেমাত্র শুরু হয়েছে। সাচিকোকে নিয়ে তার বাবা জেনজা প্রাইমারি স্কুলে গিয়েছিলেন। বাবা তাকে বলেছিলেন, ‘স্যার-ম্যাডামদের কথা মেনে চলবে।’ কিন্তু বাবা আর সাচিকো যখন স্কুলে প্রবেশ করলেন, শিক্ষকদের চোখ-মুখে আতঙ্কের ছাপ। মার্কিন বিমান হামলার মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল। বিমান হামলার সাইরেনের জন্য সেদিন সকালেও স্কুল বন্ধ রাখতে হয়েছিল। সাচিকো শুধুমাত্র তার নতুন শিক্ষকের সামনে মাথা নোয়াতে পেরেছিল। এরপরই প্রিন্সিপাল স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা করেন। সাচিকোর প্রথম শ্রেণীতে ভর্তির স্বপ্ন সেখানেই মিলিয়ে যায়। পড়াশোনা শেখার বদলে সে শিখেছিল আঙুল দিয়ে কান এবং চোখগুলো ঢেকে রাখতে। সেই সঙ্গে শিখেছিল বাইরে থাকাকালে ‘টেকি’ (শত্রুপক্ষের বিমান) শব্দটি শুনলে সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে শুয়ে পড়ার বিদ্যা!
 ৯ আগস্ট, ১৯৪৫
সবেমাত্র ঘুম ভেঙেছে সাচিকোর। অসুস্থ এক বন্ধুর খোঁজ নিতে বাবা তাড়াতাড়িই বের হয়ে গিয়েছিলেন সেদিন। মা রান্নাঘরে গমের বল বানাচ্ছিলেন। মাকে কেমন আতঙ্কিত লাগছিল। কিছুক্ষণ পর মা ডাক দিলেন, ‘বাচ্চারা, এস, তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও।’ সকাল ৭টা ৫০ মিনিট। হঠাৎ বিকট এক শব্দে মা মাথা তুলে চাইলেন। ‘বাচ্চারা, তাড়াতাড়ি’, এটুকু বলেই মা তোশিকে কোলে তুলে নিলেন। সাচিকো তার হুডটা খুঁজতে দৌড় দিল। আকি মিসাকে তার হুড খুঁজে দিল। সাচিকোর হাতটা ধরল ইচিরো। থেমে থেমে বাজতে থাকল সাইরেন। সাচিকোর পরিবার আবারও ছুটল সেই গুহাগুলোর দিকে। মাথা নিচু করে গুহার ভিতর ঢুকে স্যাঁতস্যাঁতে মাদুরের উপর বসে পড়ল সাচিকো। সকাল ৮টা বেজে ৩০ মিনিট। সাইরেন থেমে গেল। পরিচিত আরেকটি সাইরেনের শব্দ সবাইকে বুঝিয়ে দিল, বিপদ কেটে গিয়েছে। গুহা থেকে বেরিয়ে এল সবাই। তোশির হাত ধরে রেখেছিলেন মা। ফের মুরগির ডিম খুঁজতে তিনি বেরিয়ে পড়লেন।
কিন্তু পরিকল্পনা খানিকটা অন্যরকমই ছিল বি-২৯ বোমারু বিমান ‘বক্সকার’-র ককপিটে থাকা মেজর চার্লস সোয়েনির। প্লেনটিতে ছিল প্লুটোনিয়ামের তৈরি ‘ফ্যাট ম্যান’ নামে একটি পারমাণবিক বোমা। যার ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা ছিল ২১ হাজার টন টিএনটির সমতুল। সোয়েনির প্রধান লক্ষ্য ছিল শিল্পনগরী কোকুরা। যদি কোনও কারণে কোকুরার মিশন ব্যর্থ হয়, তাহলে তালিকায় পরের নামটি ছিল নাগাসাকি।
সকাল ৯টা বেজে ৪৫ মিনিট। বক্সকারকে নিয়ে কোকুরা শহরের উপর দিয়ে নিরাপদেই উড়ে গেলেন ক্যাপ্টেন সোয়েনি। কিন্তু হঠাৎই বাতাসের বেগ বেড়ে গেল। শুরু হল ঘন মেঘের চলাচলও। সেই মেঘরাশি সোয়েনির চোখ আবছা করে দিল। সোয়েনি কোকুরার উপর দিয়ে দ্বিতীয়বার চক্কর দিলেন। জাপানি অ্যান্টি এয়ারক্রাফট গানগুলো ততক্ষণে গোলাগুলি শুরু করে দিয়েছে। সোয়েনি তৃতীয়বার চক্কর দিলেন। বিমানের ক্রু’রা শঙ্কিত হয়ে পড়লেন। সকালে উড়ানের সময় ফুয়েল পাম্পটা ঠিকমতো কাজ করছিল না, প্রয়োজনের তুলনায় কম তেল নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন এবং সময়ও ফুরিয়ে আসছিল বেশ দ্রুত। দ্রুততার সঙ্গে অবশিষ্ট জ্বালানি নিয়ে একটা হিসাব কষে ফেললেন সোয়েনি। তালিকায় থাকা পরবর্তী নগরী নাগাসাকিতে যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত জ্বালানি তখনও ছিল। সোয়েনি প্লেন ঘুরিয়ে নাগাসাকির পথ ধরলেন। সকাল ১১টা বাজার কয়েক সেকেন্ড পরই বক্সকার নীচের দিকে নামতে শুরু করল। উপর থেকে নাগাসাকিকেও ঠিকমতো দেখা যাচ্ছিল না। পুঞ্জ পুঞ্জ মেঘ নগরীটি ঢেকে রেখেছিল। বক্সকারের টার্গেট ছিল পোতাশ্রয়ে থাকা মিৎসুবিশি শিপইয়ার্ড। কিন্তু উপর থেকে সেটা তারা ঠিকমতো দেখতে পাচ্ছিলেন না। হঠাৎ করেই একখণ্ড মেঘ সরে গেল। ফলে নাগাসাকির ঘনবসতিপূর্ণ উরাকামি উপত্যকা বক্সকারের ক্রুদের কাছে উন্মুক্ত হয়ে গেল। টার্গেট থেকে মাত্র ১ মাইল দূরে। চিৎকার করে উঠলেন সোয়েনি, ‘খুঁজে পেয়েছি, খুঁজে পেয়েছি’। সঙ্গে সঙ্গে নিশানা করে সুইচে চাপ। নাগাসাকির উদ্দেশে ধেয়ে গেল ফ্যাট ম্যান।
সকাল ১১টা বেজে ১ মিনিট। দশ বছর বয়সি মেয়েটি হঠাৎ করেই ভয়ে পাথরের মতো জমে গেল। ‘টেকি’ বলে চিৎকার করে উঠল সে। সঙ্গে সঙ্গেই মাদুরের উপর উপুড় হয়ে গেল সাচিকো। সকাল ১১টা ২ মিনিট। অতি উজ্জ্বল আলো, প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে উঠল গোটা নাগাসাকি। অদ্ভুত, চোখধাঁধানো এক আলো আকাশজুড়ে। লাল, নীল, সবুজ- হরেক রকমের রং। নাগাসাকির আকাশে, প্রায় ৩.২ কিলোমিটার উপরে, ধীরে ধীরে জমাট বাঁধল একটি পারমাণবিক মেঘ। দেখতে অনেকটা বৃহদাকার মাশরুমের মতো। খানিক বাদেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল। ছাদের টাইলসগুলো পুড়ে গেল। ল্যাম্পপোস্টগুলো গলে নুয়ে পড়ল। একসময় সেই মেঘ পুরো আকাশটাকেই ছেয়ে ফেলল। ধূসররঙা, মোটা কম্বলের মতো ঢেকে দিল সূর্যটাকে। নাগাসাকির বুকে ভরদুপুরে নেমে এল রাতের অন্ধকার। সাচিকোকে কে যেন শূন্যে ছুঁড়ে দিয়েছিল। পরক্ষণেই আবার সজোরে মাটিতে আছড়ে পড়েছিল সে। পাথরের টুকরো, ভাঙা টাইলস, গাছের ডাল-পাতা— সবকিছু তার উপর একে একে পড়তে লাগল। ক্রমশ এগুলোর নীচে চাপা পড়তে লাগল সে। নাকে-মুখে ধুলোবালি ঢুকে গিয়েছিল তার। বিস্ফোরণের কেন্দ্রস্থল থেকে মাত্র ৯০০ মিটার দূরে মাটিতে পড়ে কাঁপতে লাগল মেয়েটি। প্রবল হাওয়ায় বৈদ্যুতিক তারগুলো ছিড়ে গিয়েছিল। দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছিল রাস্তায় থাকা গাড়িগুলো। কাচ ভেঙে গিয়েছিল জানালার। কব্জা ভেঙে বেরিয়ে এসেছিল অনেক দরজা। উল্টে পড়েছিল অনেক ঘরবাড়ি। ভাঙা কাচের টুকরাগুলো বাতাসে বুলেটের মতোই এদিক ওদিকে ছুটে যাচ্ছিল। নাগাসাকি মেডিক্যাল কলেজ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ভেঙে পড়েছিল উরাকামি ক্যাথেড্রাল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল স্যানো মঠও। আগুনে পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া কর্পূর গাছগুলো দাঁড়িয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছিল, কী ভয়াবহ ঝড়টাই না বয়ে গিয়েছে তাদের উপর দিয়ে।
এরপর তছনছ হয়ে যাওয়া জীবন নিয়ে সাচিকোর কেটে গিয়েছে কয়েক দশক। পারমাণবিক বোমা হামলার দুঃসহ স্মৃতি, নিজের ভিতরে চেপে রাখা কষ্ট। এই সবকিছু নিয়েই সাচিকো কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ঘুরঘুরে পোকার মতো সে পুষ্টিদ্রব্য সংগ্রহ করত বাবার জ্ঞানের শিকড় থেকে। হেলেন কেলারের সাহস থেকে। এবং ভালোবাসা, অহিংসা ও ন্যায়বিচারের প্রতীক গান্ধীজি ও মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের বিশ্বাস থেকে। ১৯৯৫ সালের ৯ আগস্টের পর থেকে সাচিকো ইয়াসুই জাপান ছুটে বেড়িয়েছেন। গিয়েছেন কানাডা এবং আমেরিকাতে। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচার দিয়েছেন, বিভিন্ন রেডিও, টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে দিয়েছেন সাক্ষাৎকার। সাচিকোর জীবনটা যেন ‘ওলিয়েন্ডার’-এর মতো।
আসলে পরমাণু হামলার পর জাপানের মাটিতে প্রথম ফুটেছিল ওলিয়েন্ডার (করবী ফুল)। যা ঢেকে দিয়েছিল গত শতাব্দীর কলঙ্ক! সাচিকো ছিলেন নাগাসাকির ওলিয়েন্ডার।
গ্রাফিক্স  সোমনাথ পাল
সহযোগিতায়  স্বাগত মুখোপাধ্যায়
ছবি  সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
28th  July, 2019
প্র তি মা র বি ব র্ত ন
সোমনাথ দাস

বর্ষা আর শরৎ এখন মিলেমিশে একাকার। বিশ্ব উষ্ণায়নের কৃপাদৃষ্টিতে শহরবাসীর পক্ষে আর এই দু’টি ঋতুকে আলাদা করা সম্ভব নয়। তবে ভাদ্রের সমাপ্তি এবং আশ্বিনের সূচনা বাঙালির জীবনে নিয়ে আসে এক অনাবিল আনন্দ। মা দুর্গার আগমনবার্তায় আমাদের হৃদয় নেচে ওঠে।   বিশদ

29th  September, 2019
পুজোর ফুলের যন্ত্রণা
বিশ্বজিৎ মাইতি

 বিশ্বজিৎ মাইতি: হাওড়া‑খড়্গপুর রেলওয়ে শাখার বালিচক স্টেশন। মার্চ মাসের এক শুক্রবারের সকালে বেশ কয়েকজনকে ধরেছেন টিটি। বিনা টিকিটে ট্রেন সফর। তাঁদের মধ্যে এক যুবকের হাতে গোটা চারেক বস্তা। হাতে একগুচ্ছ ব্যাগ। গাল ভর্তি দাড়ি। উসকো-খুসকো চুল। পরনে নানান দাগে ভর্তি জামা ও হাফপ্যান্ট। করুণ চোখে আচমকাই নিজের মানিব্যাগ টিটির মুখের সামনে দেখিয়ে ধরা গলায় বলল, ‘স্যার একটা টাকাও নেই। পুরো শরীর চেক করে দেখুন...।
বিশদ

22nd  September, 2019
ভো-কাট্টা

বিশ্বকর্মা পুজোর সঙ্গে ঘুড়ি ওড়ানোটা সমার্থক হয়ে গিয়েছে। বিশ্বকর্মা পুজো মানেই আকাশজোড়া ঘুড়ির আলপনা। অসংখ্য ঘুড়ির ভেলায় যেন স্বপ্ন ভাসে। বহু কৈশোর আর যৌবনের মাঞ্জায় লেগে আছে ঘুড়ি ওড়ানোর স্মৃতি। যে ছেলেটা কোনওদিন সকাল দেখেনি, সেও বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে সূর্য ওঠার আগেই ঘুড়ি-লাটাই নিয়ে ছাদে উঠে যায়।  
বিশদ

15th  September, 2019
নির্মাণশিল্পী বিশ্বকর্মা
সন্দীপন বিশ্বাস

জরাসন্ধ তখন প্রবল প্রতাপান্বিত। বারবার মথুরা আক্রমণ করছিলেন। কিন্তু সপ্তদশ প্রচেষ্টাতেও মথুরা জয় করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। তাই ফের তিনি মথুরা আক্রমণের প্রস্তুতি নিতে লাগলেন। কৃষ্ণ অবশ্য জানতেন জরাসন্ধ কিছুতেই মথুরা জয় করতে পারবেন না।
বিশদ

15th  September, 2019
আগুন বাজার
বীরেশ্বর বেরা

 ‘কেন? আপনি যে পটল বেচছেন, এমন পটল তো আমরা ৩০-৩২ টাকায় কিনছি!’ গ্রাম্য যুবক তাঁর আপাত-কাঠিন্যের খোলস ছেড়ে সহজ হয়ে গেলেন হঠাৎ। তেলের টিনের উপর চটের বস্তা বেঁধে টুলের মতো বসার জায়গাটা এগিয়ে দিয়ে বললেন, ‘বসুন তাহলে, বলি। বিশদ

08th  September, 2019
সমাপ্তি
সমৃদ্ধ দত্ত

মহাত্মা গান্ধীর প্রকাশিত রচনাবলীর খণ্ড সংখ্যা ৯০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এ পর্যন্ত জওহরলাল নেহরুর লেখা নিয়ে প্রকাশিত যত রচনা আছে, তা প্রায় ৫০ খণ্ড অতিক্রান্ত। বাবাসাহেব আম্বেদকরের সারা জীবনের যাবতীয় রচনা সমন্বিত করে এখনও পর্যন্ত ১৬টি খণ্ডসংবলিত রচনাবলী প্রকাশ পেয়েছে। 
বিশদ

01st  September, 2019
রাজীব ৭৫
মণিশঙ্কর আইয়ার

 ছিয়াশি সালের ডিসেম্বর। অঝোরে তুষারপাত হচ্ছে। আমরা যাচ্ছি কাশ্মীর। কিন্তু একটা সময় আর্মি জানাল, আর যাওয়া সম্ভব নয়। এত তুষারপাতে হেলিকপ্টার ওড়ানো যাবে না। তাহলে? যাব কী করে? বাকিরাও বলল, দিল্লি ফিরে চলুন। কিন্তু প্রধাননমন্ত্রী বললেন, তা হয় না। যাব যখন বলেছি যেতে হবে। লোকেরা অপেক্ষা করে থাকবে যে!
বিশদ

25th  August, 2019
শতবর্ষে  সারাভাই
মৃন্ময় চন্দ

চন্দ্রযান-২’র সাফল্যে গর্বিত ভারত। অভিজাত মহাকাশ ক্লাবের সদস্যদেশগুলির সঙ্গে ভারত আজ এক পংক্তিতে। মহাকাশ গবেষণায় ভারতের ঈর্ষণীয় সাফল্যের রূপকার নিঃসন্দেহে ক্ষণজন্মা বিরল প্রতিভাধর মিতভাষী এক বিজ্ঞানী—বিক্রম সারাভাই। একার হাতে যিনি গড়ে দিয়ে গেছেন ভারতের বিপুলা মহাকাশ সাম্রাজ্য। ১২ই আগস্ট ছিল তাঁর জন্মশতবার্ষিকী। বিশদ

18th  August, 2019
জয় জওয়ান

ঝুঁকি শব্দটি যখনই উল্লেখ করা হয়, তখনই তার সঙ্গে আবশ্যিকভাবে যুদ্ধের বিষয়টি এসে পড়ে। কিন্তু শুধু যুদ্ধে নয়, ঝুঁকি রয়েছে প্রশিক্ষণ পর্বেও। একজন যুদ্ধবিমানের পাইলটকে নানাভাবে তৈরি হতে হয়। আকাশপথে সেই প্রশিক্ষণ যখন শুরু হয়, তখন প্রতিটি স্তরেই ঝুঁকি থাকে। সেগুলো অতিক্রম করে সাফল্য পাওয়াই একজন পাইলটের কাছে চ্যালেঞ্জ। বিশদ

11th  August, 2019
জাতীয়তাবাদ ও রবিঠাকুর 
সমৃদ্ধ দত্ত

জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞা তাঁর কাছে আলাদা। বিশ্বাস করতেন, গ্রামই ভারতের চেতনা। সম্পদ। তাই শুধু ইংরেজ বিরোধিতা নয়, রবিঠাকুরের লক্ষ্য ছিল ভারতের উন্নয়ন। ভারতবাসীর উন্নয়ন। তাঁদের স্বনির্ভর করে তোলা। অন্যরকম তাঁর স্বদেশপ্রেম। আরও এক ২২ শ্রাবণের আগে স্মরণ এই অন্য রবীন্দ্রনাথকে। 
বিশদ

04th  August, 2019
বদলের একুশ
জয়ন্ত চৌধুরী

 একুশে জুলাই। শহিদ স্মরণ। তৃণমূলের বাৎসরিক শহিদ তর্পণ। গত আড়াই দশকের বেশি সময় ধরে এটাই চল। ঝড়-জল-বৃষ্টি-বন্যা সবই অপ্রতিরোধ্য একুশের আবেগের কাছে। তাই কেন একুশ, এই প্রশ্নের চাইতে অনেক বেশি জায়গা দখল করে রয়েছে এই দিনকে ঘিরে বাঁধনহারা উচ্ছ্বাস।
বিশদ

21st  July, 2019
অচেনা কাশ্মীর
ফিরদৌস হাসান

 ২০১৪ সালের পর এই প্রথম এত তুষারপাত হয়েছে উপত্যকায়। সাদায় মুখ ঢেকেছিল ভূস্বর্গ। আর তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পাল্লা দিয়েছিল পর্যটনও। বরফঢাকা উপত্যকার নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ কে-ই বা হাতছাড়া করতে চায়! তাই তো জানুয়ারিতে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কোলাহলে উপত্যকা গমগম করছিল।
বিশদ

14th  July, 2019
জল সঙ্কট 

কল্যাণ বসু: দুধ সাদা ধুতি পাঞ্জাবি, মাথায় নেহরু টুপি, গলায় মালা ঝুলিয়ে মন্ত্রী দু’হাত জোড় করে হাসিমুখে মঞ্চের দিকে যাচ্ছেন। চারদিকে জয়ধ্বনি, হাততালি। মঞ্চে উঠে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে মন্ত্রী বলতে শুরু করেছেন সবে।  বিশদ

07th  July, 2019
জগন্নাথের ভাণ্ডার
মৃন্ময় চন্দ

‘রথে চ বামনং দৃষ্ট, পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে’। অর্থাৎ, রথের রশি একবার ছুঁতে পারলেই কেল্লা ফতে, পুনর্জন্ম থেকে মুক্তি। আসলে সর্বধর্মের সমন্বয়ে বিবিধের মাঝে মিলন মহানের এক মূর্ত প্রতিচ্ছবি এই রথযাত্রা। সেই কারণেই নিউজিল্যান্ডের হট প্যান্টের গা ঘেঁষে সাত হাত কাঞ্চীপূরমীয় ঘোমটা টানা অসূর্যমপশ্যা দ্রাবিড়ীয় গৃহবধূও শামিল হন রথের রশি ধরতে। অর্কক্ষেত্র, শঙ্খক্ষেত্র আর শৈবক্ষেত্রের সমাহারে সেই মিলন মহানের সুরটিই সতত প্রতিধ্বনিত নীলাচলে। তাই নীলাচলপতির দর্শনে অক্ষয় বৈকুণ্ঠ লাভের আশায় ভিড়ের ঠেলায় গুঁতো খেতে খেতে চলেন সংসার-বঞ্চিত বাল্যবিধবারা। একই মনোবাসনা নিয়ে চলেছেন অন্ধ, চলেছেন বধির, চলেছেন অথর্ব।
বিশদ

30th  June, 2019


আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ও মানসিক কষ্ট। দূর ভ্রমণের সুযোগ। অর্থ প্রাপ্তির যোগ। যে কোনও ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৯৪০- ‘দি বিটলস’ ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা, গায়ক জন লেননের জন্ম
১৯৪৫- সারোদবাদক আমজাদ আলি খানের জন্ম
১৯৪৫- অভিনেত্রী সুমিতা সান্যালের জন্ম
১৯৬৭- কিউবার বিপ্লবের প্রধান ব্যক্তিত্ব চে গেভারার মৃত্যু
২০১৫- সংগীত পরিচালক রবীন্দ্র জৈনের মৃত্যু  



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার    
পাউন্ড    
ইউরো    
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৩৮,৭৮৫ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৩৬,৭৯৫ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৩৭,৩৪৫ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৪৫,২০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৪৫,৩০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
05th  October, 2019

দিন পঞ্জিকা

১৮ আশ্বিন ১৪২৬, ৫ অক্টোবর ২০১৯, শনিবার, সপ্তমী ১০/৪৫ দিবা ৯/৫১। মূলা ১৯/২৪ দিবা ১/১৮। সূ উ ৫/৩২/৪৫, অ ৫/১৭/৫৫, অমৃতযোগ দিবা ৬/২০ মধ্যে পুনঃ ৭/৭ গতে ৯/২৮ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৯ গতে ২/৫৭ মধ্যে পুনঃ ৩/৪৪ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ১২/৩৯ গতে ২/১৭ মধ্যে, বারবেলা ৭/০ মধ্যে পুনঃ ১২/৫৪ গতে ২/২৩ মধ্যে পুনঃ ৩/৫১ গতে অস্তাবধি, কালরাত্রি ৬/৫১ মধ্যে পুনঃ ৪/০ গতে উদয়াবধি। 
১৭ আশ্বিন ১৪২৬, ৫ অক্টোবর ২০১৯, শনিবার, সপ্তমী ২১/২৭/৩৯ দিবা ২/৮/০। মূলা ৩১/৪৭/১২ রাত্রি ৬/১৫/৪৯, সূ উ ৫/৩২/৫৬, অ ৫/১৯/৩৬, অমৃতযোগ দিবা ৬/২৩ মধ্যে ও ৭/৯ গতে ৯/২৭ মধ্যে ও ১১/৪৬ গতে ২/৫০ মধ্যে ও ৩/৩৭ গতে ৫/১৮ মধ্যে এবং রাত্রি ১২/৩৭ গতে ২/১৭ মধ্যে, বারবেলা ১২/৫৪/৩৬ গতে ২/২২/৫৫ মধ্যে, কালবেলা ৭/১/১৬ মধ্যে ও ৩/৫১/১৬ গতে ৫/১৯/৩৬ মধ্যে, কালরাত্রি ৬/৫১/১৬ মধ্যে ও ৪/১/১৬ গতে ৫/৩৩/১৮ মধ্যে। 
মোসলেম: ৫ শফর 

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আজকের রাশিফল  
মেষ: অর্থ প্রাপ্তির যোগ। বৃষ: প্রেম-প্রণয়ে অগ্রগতি। মিথুন: গুরুজনের শরীর সম্পর্কে ...বিশদ

07:11:04 PM

ইতিহাসে আজকের দিনে  
১৯৪০- ‘দি বিটলস’ ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা, গায়ক জন লেননের জন্ম১৯৪৫-  সারোদবাদক ...বিশদ

07:03:20 PM

এবছর রসায়নে নোবেল পাচ্ছেন জন বি গুডএনাফ, এম স্ট্যানলি হুইটিংহ্যাম ও আকিরা ইয়োশিনো 

03:42:41 PM

মালদহের বৈষ্ণবনগরে নৌকাডুবি, মৃত ৩ 
ঠাকুর দেখতে যাওয়ার সময় নৌকাডুবি। ঘটনাটি ঘটে মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার ...বিশদ

03:18:19 PM

৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বাড়াল কেন্দ্র, উপকৃত হবেন ৫০ লক্ষ কর্মী ও ৬২ লক্ষ পেনশনভোগী 

02:30:04 PM

ফলতার রামনগরে বিসর্জনের বাজি বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণ, জখম ২ শ্রমিক 

01:20:11 PM