যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
রামাইল সান্তুক গ্রামটি যেন এক লুকিয়ে থাকা স্বর্গরাজ্য। প্রকৃত প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য একদম আদর্শ এই গ্রাম। নদী, ঝরনা, পাহাড়— সবই পাবেন এখানে। সবুজ দিয়ে সাজানো এই গ্রাম। প্রকৃতি তার সমস্ত রূপ এখানে ঢেলে দিয়েছে। গ্রামের পাশেই রেলি খোলা। পাহাড়িরা তাদের ভাষায় নদীকে ‘খোলা’ বলে। অনেক বিরল প্রজাতির পাখি, প্রজাপতির দেখা মেলে এখানে। অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসলে তারও সুযোগ পাবেন।
কালিম্পং জেলায় অবস্থিত এই প্রত্যন্ত গ্রাম লেপচা ও রাই সম্প্রদায়ের দ্বারা গঠিত। চারিদিকে সবুজ পাহাড়ে মোড়া ছোট্ট গ্রামটি স্বপ্নের মতো। এখানে অ্যাডভেঞ্চার বেস ক্যাম্প ও কিছু হোম স্টে রয়েছে থাকার জন্য। তবে অ্যাডভেঞ্চার বেস ক্যাম্পে থাকার অভিজ্ঞতা অন্যরকম। অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের নানা সুযোগ তো আছেই, তাছাড়াও রেলি খোলার ধারে পিকনিক, রাতে নদীর ধারে ক্যাম্পিং, সাইহুর জঙ্গলে (নেওড়া ভ্যালির বর্ধিত অংশ) ট্রেক, এসব কিছুও করা সম্ভব। মোট ১৬ জন একসঙ্গে অ্যাডভেঞ্চার বেস ক্যাম্পে থাকতে পারেন। ক্যাম্পের টেন্ট খুবই আধুনিক মানের। চার্জিং পয়েন্ট, লাইট, বালিশ, ব্ল্যাঙ্কেট, স্লিপিং ব্যাগ সবই আছে। ডাইনিং এরিয়াতে বসে সামনের পাহাড়ি মেঘের নয়ন ভোলানো দৃশ্য উপভোগ করুন মন ভরে।
এবার অন্যান্য অ্যাক্টিভিটির কথায় আসা যাক। ক্যাম্পিং, সুইমিং, ফিশিং, ভিলেজ হাইকিং, বার্ড ওয়াচিং , ট্রেকিং অনেক কিছুই করা যাবে একসঙ্গে। রইল বাকি খাওয়াদাওয়া। এখানে খাওয়াদাওয়ায় এক ভিন্ন মাত্রা যুক্ত করে স্থানীয় পদ খম্বুজা। এই পদটি বাঁশের পাত্রে তৈরি করা হয়। বাঁশের জুসের সঙ্গে উপকরণের মিলমিশে স্বাদ একেবারে ভিন্ন মাত্রায় পৌঁছয়। এছাড়াও বিভিন্ন নেপালি খাবার পাবেন এখানে। গ্রামের মানুষই তৈরি করেন এই সব সুস্বাদু পদ। তবে গ্রামের খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এখানকার সব খাবারই অর্গ্যানিক।
ক্যাম্পে থাকার জন্য ১৫০০ টাকা জনপ্রতি নেওয়া হয়। তার মধ্যে থাকা এবং খাওয়ার খরচ ধরা থাকে। খাওয়ার মধ্যে থাকে ওয়েলকাম ড্রিংক, লাঞ্চ, ইভনিং স্ন্যাক্স, ডিনার এবং নেক্সট ডে ব্রেকফাস্ট। সঙ্গে থাকে রাতের ক্যাম্প ফায়ারেরও বন্দোবস্ত। ক্যাম্প ফায়ারের আগুনেই হয় সান্ধ্যকালীন বার-বি-কিউ চিকেন এবং আরও আকর্ষণীয় নানা পদ। পাহাড় ও রাই সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি, তাদের জীবনযাপন আর রামাইল সান্তুকের প্রকৃতির নানা রূপ এই ভ্রমণের ইউএসপি।
কীভাবে যাবেন: শিলিগুড়ি শহর থেকে কালিম্পংয়ের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিমি। কালিম্পং শহর থেকে আলগরা ১৬ কিমি এবং আলগরা থেকে সান্তুক ৪.৫ কিমি। ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন অথবা শিলিগুড়ি স্টেশন আসার পর বাস অথবা শেয়ার গাড়ি বা প্রাইভেট গাড়ি করে পৌঁছে যেতে পারেন এই গ্রামে।