যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
বাঙালি পর্যটকদের অতি প্রিয় সাগর পর্যটন কেন্দ্র গোয়া মূলত আরবসাগর ঘেঁষা ছোট্ট এক টুকরো রাজ্য। এই রাজ্যের মূল আকর্ষণ এর পশ্চিম উপকূলে ছড়িয়ে থাকা একাধিক মনোরম সাগরবেলা। পানাজি হল গোয়ার প্রাণকেন্দ্র।
মাণ্ডবী নদীর তীরে রাজ্যের রাজধানী পানাজি। শহরটা সাজানো গোছানো। একদিকে সবুজ টিলা পাহাড়। নদীর জলে সন্ধেবেলা লঞ্চ ক্রুজ হয়। নদীতে ভেসে রয়েছে বিলাসবহুল ক্যাসিনো জাহাজ। পর্যটকদের জন্যে তার দুয়ার খোলা সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত। শহরে দেখবেন প্রাচীন পর্তুগিজ পাড়া ফনটেনহাম, ইম্যাকুলেট চার্চ, বিধানসভা ভবন। পানাজি শহরের কাছেই ডোনাপাওলা সৈকত আর মিরামার সৈকত। ইচ্ছে হলে থাকতে পারেন পছন্দসই সাগরসৈকতে।
গোয়ার প্রায় সমস্ত সাগর সৈকতের ধারেই থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। গোয়ার দ্রষ্টব্যস্থান ঘুরে দেখার জন্যে রাজ্য পর্যটন দপ্তরের কন্ডাকটেড ট্যুরও আছে। এদের নর্থ গোয়া ও সাউথ গোয়া ট্যুর দু’টি বেশি জনপ্রিয়। এদের ওয়েবসাইট: www.goa-tourism.com। পানাজি সহ গোয়ার নানাস্থানে গোয়া পর্যটনের ট্যুরিস্ট লজ রয়েছে থাকার জন্যে।
গোয়া দীর্ঘদিন পর্তুগিজ শাসকদের দখলে ছিল। পানাজি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের ওল্ড গোয়ায় ছড়িয়ে রয়েছে পর্তুগিজ স্থাপত্যের নানা নিদর্শন। যার মধ্যে অনেকগুলো আবার ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। ওল্ড গোয়ায় একে একে দেখে নিন ব্যাসিলিকা অব জেসাস চার্চ, সেন্ট ক্যাথিড্রাল, সেন্ট আসিসি চার্চ, ক্যাজিটান চার্চ, আর্কিওলজিক্যাল মিউজিয়াম প্রভৃতি। গোয়ার মন্দিরগুলোও দেখার মতো। অভিনব স্থাপত্য। মঙ্গেশি মন্দির, কান্তাদুর্গা মন্দিরের আকর্ষণ পর্যটকমহলে বেশি। দেখে নিন মায়েম হ্রদ, ফার্মাগুড়ি হিলস্টেশন ইত্যাদি।
সবশেষে আসা যাক গোয়ার মনমাতানো সাগরবেলার কথায়। কোলভা, ভাগাটোর, আঞ্জুনা, কালাঙ্গুটে সৈকতে পর্যটকদের রমরমা। ভিড় এড়াতে চাইলে অপেক্ষাকৃত নির্জন সৈকতগুলো বেছে নিন। এক্ষেত্রে আরামবোল, মাজোরদা, বোগমালো, শোবোর, আগোন্ডা, বেতুল প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। পারলে পালোলেম সৈকতে এক রাত কাটাবেন। প্রকৃতি তার সৌন্দর্যের ডালি পালোলেম সৈকতের বুকে উপুড় করে দিয়েছে।
কলকাতা থেকে গোয়া ট্রেনে যেতে দু’রাত সময় লাগে। দীর্ঘ সময়ের এই ট্রেন যাত্রার ধকল নিতে না চাইলে কলকাতা থেকে সরাসরি গোয়া পৌঁছন বিমানে। কলকাতা থেকে গোয়ার ডাবোলিম বিমানবন্দরে পৌঁছতে সময় লাগে দু’ঘণ্টা তিরিশ মিনিট। সেখান থেকে আবার সড়কপথে পানাজি যেতে ৩০ কিলোমিটার পথ পেরতে হবে। আর ট্রেনে শালিমার থেকে অমরাবতী এক্সপ্রেস ধরে সরাসরি গোয়ার মারগাঁও স্টেশনে নামতে পারেন। সেখান থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে পানাজি।
মুম্বই থেকে মারগাঁও অনেক ট্রেন আসছে কোঙ্কন রেলপথ দিয়ে। গোয়া বেড়ানোর সেরা সময় নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি হলেও বর্ষা বাদে সারা বছরই এখানে ঘুরতে আসা যায়।