গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
হৈমন্তী শুক্লা (গায়িকা)
আমি বাপু সেকেলে মানুষ। যাকে তোমরা বলো প্রাচীনপন্থী। আর আমি মানুষটাও তো বেশ প্রাচীন। তাই আমার পছন্দ অপছন্দগুলোও একটু সেকেলে। অনলাইনে কেনাকাটা আমার মোটেই ভালো লাগে না। দোকানে গিয়ে নেড়েচেড়ে, উল্টেপাল্টে দেখে, পাঁচটা জিনিস ঘেঁটে তবেই কিনে শান্তি পাই। তাই বলে ভেব না যে আমি অনলাইনে কিনতে পারি না। আমাকে দু’একজন চ্যালেঞ্জ করেছিল। তা আমি টুকিটাকি কিছু জিনিস অনলাইনে কিনে তাঁদের দেখিয়ে দিয়েছি যে আমিও পারি!
আমার কেনা বলতে দু’টো জিনিস— শাড়ি আর গয়না। বাকি সব জিনিস কেনে আমার সেজোভাই, সেজোভাইয়ের বউয়েরা। আর শাড়ি বলতে আমি ভালোবাসি একটু ভারী ধরনের বেনারসি। আমি গল্ফগ্রিনে থাকি বটে কিন্তু বেনারসি কিনতে যাই শ্যামবাজারে বেনারসি টেক্সটোরিয়ামে। ওখান থেকেই বরাবর কিনি। আসলে আমার বড় হয়ে ওঠা তো শোভাবাজারে, তাই! ওদের দোকানে গিয়ে গদিতে জমিয়ে বসে কাপের পর কাপ চা খেতে খেতে শাড়ি কিনি। ওরা আমাকে বেশ খাতির যত্ন করে। আর গয়নাও আমি পুরনো ধরনের পছন্দ করি। একটু ভারী ধরনের গয়না। আজকালকার এইসব হাল ফ্যাশনের জাঙ্ক জুয়েলারি মোটেই ভালো লাগে না। আমার পছন্দের গয়না আমি পাই বউবাজারের পি সি চন্দ্র জুয়েলারিতে। বরাবর ওখান থেকেই কিনি। এছাড়া বাকি সব কেনাকাটার জন্য আমি কিন্তু পরনির্ভরশীল।
শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় (অভিনেতা)
আমি নিজে কিছুই কেনাকাটা করি না। না, মানে ইদানীং করি না। আগে একটা সময়ে থলে হাতে বাজারে গিয়ে মাছ-সবজিও কিনেছি। এখন মূলত কাজের চাপে কেনাকাটা করা হয়ে ওঠে না। তাছাড়া অনেক সময়ে কিনতে গিয়ে বিড়ম্বনাতেও পড়তে হয়। লোকে সেলফি তোলার আবদার করে। সে আবদার রাখতে গিয়ে কেনাকাটা মাথায় ওঠে। আমাদের বাড়ির যাবতীয় কিছু, তার সঙ্গে আমার জামাকাপড় সবই আমার স্ত্রী কেনে। ও আমার পছন্দ অপছন্দগুলোও ভালো করে জানে।
তাই বলে আমি যে একেবারে কেনাকাটা করি না, তা কিন্তু নয়। আমার কেনাকাটা করার জায়গা হল এয়ারপোর্ট, না হলে দেশের বাইরে কোথাও। এয়ারপোর্টের শো-রুমগুলো থেকে সাধারণত জুতো, বেল্ট এইসব কিনি। তবে কেনার সময় আমি আগে ‘লুক’ দেখি। দেখে মনে ধরলে তবেই হাত দিয়ে দেখি। তারপর দেখি পরে আরাম লাগছে কি না। জুতোর ক্ষেত্রে এ ব্যপারটা মাস্ট। পরে কমর্ফট ফিল না করলে তা কেনা উচিত নয়। আর সব সময় ভালো ব্র্যান্ডের জুতো কেনা উচিত। অন্যান্য ব্যাপারেও আমার কেনার নীতি একই। প্রথমে চোখে দেখে ভালো লাগা। তারপর পরে আরাম লাগা। ব্র্যান্ডটা তারপর আসে।
এই তো লকডাউনের আগে রাজকুমার সন্তোষীর একটা ছবির শ্যুটিং করে এলাম বেঙ্গালুরু থেকে। ছবিটায় মিঠুনদার ছোট ছেলে নমশি নায়ক। খুব ডেডিকেশন ছেলেটার। নাচেও দারুণ। তো সেই সময়েও এয়ারপোর্ট থেকে এটা সেটা কিনলাম।
অনলাইনেও কেনাকাটা করি না। কারণ জানেন বোধহয় যে আমি মোবাইল ফোন ব্যবহার করি না। আমার স্ত্রী করে। কিছুদিন আগে ও ফোনে একটা টিভিও কিনেছে।
লোপামুদ্রা মিত্র (গায়িকা)
আর কেনাকাটা! আমার প্রোগ্রাম বন্ধ হয়ে গিয়েছে, কেনাকাটা করে করবটা কী? কেনাকাটার মানসিকতাটাই হারিয়ে ফেলেছি। আগে প্রোগ্রামে পরার জন্য নিত্য নতুন শাড়ি, গয়না কেনার দরকার পড়ত। এখন তো প্রোগ্রাম বলতে অনলাইনে। সেখানে শুধু মুখটুকু দেখায়। তাই অনলাইনে কিছু মেকআপের সরঞ্জাম কিনেছি। আগে এখানে ওখানে প্রোগ্রাম করতে গিয়ে কত কিছু কিনেছি। বিশেষত কসমেটিক্স, পারফিউম। বিদেশে গেলে এগুলো কিনে আনতাম। এসব জিনিস আমি ভালো ব্র্যান্ড ছাড়া কিনি না। মূলত বিদেশ থেকেই কিনি। আর শাড়ি আমি সব জায়গা থেকেই কিনি। গড়িয়াহাট থেকে যেমন কিনি, তেমন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কিনি। আমার একটা বুটিক আছে। তার মেটিরিয়াল কেনার জন্যও অনেক জায়গায় ঘুরতে হয়। সে সব জায়গা থেকেও নিজের জন্য শাড়ি কিনি। কিন্তু এখনও আমি সেই বুটিক খুলিনি। কারণ আমার বারবার মনে হচ্ছে, মানুষের কি এই পরিস্থিতিতে কেনাকাটার মানসিকতা আছে!
এমনিতে অনলাইনে কেনা আমার না-পসন্দ। তবে মাঝেমধ্যে ভুলভাল কিছু কিনে ফেলি। আর জয়ের (সরকার) জামাকাপড় ও নিজেই দেখেশুনে কেনে। ও যথেষ্ট শৌখিন, আমার মতো নয়।
বিশ্বনাথ বসু (অভিনেতা)
কেনাকাটার ব্যাপারে একটা সময় পর্যন্ত আমি বাবার ওপর নির্ভর করতাম। ২০০৭ সালে আমার বাবা মারা যান। ২০০৮ সালে আমি বিয়ে করি। তারপর থেকে এ ব্যাপারে বউয়ের ওপরই নির্ভরশীল। তবে আমি যে একদম কেনাকাটা করি না, তা কিন্তু নয়। আমার কেনাকাটা শখের। হঠাৎ রাস্তায় যেতে একটা কিছু চোখে পড়ে গেল, কিনে ফেললাম। সেটা তালশাঁসও হতে পারে, আবার টেলিভিশনও! আর বিদেশে গেলে আমি এয়ারপোর্ট থেকে কেনাকাটা করি। সেগুলোও মূলত শখের জিনিস। স্যুভেনির, ভালো জুতো, সানগ্লাস, পারফিউম এসব। এই তো কিছুদিন আগে লন্ডনে গিয়েছিলাম। সেখানে পাউন্ড স্টোর্স থেকে ছেলেদের জন্য ব্যাগ, খেলার সরঞ্জাম এসব কিনে ফেললাম। বউয়ের জন্য কিছু কিনলাম। এছাড়া ব্যাংককও ভালো শপিং ডেস্টিনেশন। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই এইসব আমার বোরিং লাগতে শুরু করে। তখন হাল ছেড়ে দিই। বাকি সব অর্থাৎ জামাকাপড়, বাড়ির দরকারি জিনিস সবই বউ কেনে।
তাছাড়া বাজার করতে আমার খুবই ভালো লাগে, বিশেষত মাছ কিনতে। রুবির পিছনে একটা মাছের দোকান আছে। সেখান থেকে মাছ কিনি। নিজে যেতে পারি না, কিনি ফোনে ফোনে। ফোন করে কী মাছ আছে, কেমন সাইজ এসব জেনে নিই। প্রয়োজনে হোয়াটসঅ্যাপে ছবিও পাঠিয়ে দেয়। তারপর বলে দিলে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। আর আমার প্রিয় পোশাক ধুতি পাঞ্জাবি কিংবা পাজামা পাঞ্জাবি। বিশেষ করে সাদার ওপর সাদা কাজ করা পাঞ্জাবি আমার ভীষণ প্রিয়। তার জন্য আমার বিশেষ একটি দোকান আছে চিৎপুরের নাখোদা মসজিদের পাশে। ওখান থেকেই কিনি। আর শো করতে যাওয়ার জন্য ব্লেজার বা স্যুট দরকার হলে নিউ মার্কেট চলে যাই। ওখানেও আমার একটি চেনা দোকান আছে, বরাবর সেখান থেকেই কিনি।