কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। ব্যবসায়ীদের উন্নতির আশা রয়েছে। বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। আত্মীয়দের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেবে। ... বিশদ
৭ জানুয়ারি। কনকনে শীতের দুপুরে আমরা হাজির গোবিন্দপুরে— মুখরোচকের গর্ভগৃহে। ঘন সবুজ লন ঘিরে রংবেরঙের ফুলের শোভা। বিশাল দিঘি। কমলালেবু ফলেছে গাছে গাছে। এরই মাঝে মুখরোচকের বিশাল ফ্যাক্টরি, অফিস। সেদিন সত্তর বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল পূর্ব ভারতের অন্যতম স্ন্যাকস ব্র্যান্ড মুখরোচক। অনুষ্ঠান শুরুর আগে কথা হচ্ছিল মুখরোচকের কর্ণধার প্রণব চন্দ্রর সঙ্গে। শান্ত বিনীত মানুষটির কথায় অদ্ভুত একটা আত্মবিশ্বাসের সুর। বললেন, আমাদের প্রত্যেকটি স্ন্যাকস, সে চানাচুর হোক বা নিমকি, চিঁড়ে ভাজা হোক বা আলু ভুজিয়া, প্রত্যেকটিই অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতিতে তৈরি হয়। কারিগররা পরিচ্ছন্ন পোশাকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে কাজ করেন। কাজ শুরুর আগে সবাই মেডিটেশন (প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমারীর সন্ন্যাসিনীদের দেখানো পথে) করেন এবং মনে মনে বলেন, ‘আমরা মনোযোগ সহকারে পরিচ্ছন্নভাবে মানুষের জন্য খাদ্যসামগ্রী তৈরি করব। যাতে আমার তৈরি খাবার খেয়ে সবাই সুস্থ থাকেন সেদিকে খেয়াল রাখব।’ প্রণববাবু আরও জানালেন, তাঁদের উপকরণও ভালো মানের। দেশে তো বটেই এখন আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে তাঁদের প্রোডাক্ট।
‘দাদাগিরি’ শোয়ে গিয়েছিলেন প্রণব। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে বলেছিলেন, ‘আমাদের মতো যারা বাধ্য হয়ে ডায়েট কন্ট্রোল করে তাদের জন্য কিছু করুন।’ এছাড়া ছোটদের টিফিনে দেওয়ার মতো স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকসেরও চাহিদা ছিল। তাই মুখরোচক বাজারে এনেছে ডায়েট চিঁড়ে, চাল ভাজা, চিঁড়ে ভাজা ও মশলা মুড়ি। ককটেল স্ন্যাকস হিসেবে মুখরোচকের সল্টেড পিনাটস, ধনিয়া পিনাটস ও কাজু নাটস জনপ্রিয়।
সেদিন সত্তর বছর পূর্তির অনুষ্ঠানটিও ছিল বৈচিত্রে ভরপুর। টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোর কাছে ছোট্ট একটি দোকান ঘরে চানাচুর ভুজিয়ার ব্যাবসা শুরু করেছিলেন প্রণববাবুর বাবা। সেই ছোট্ট ব্যবসাটি কীভাবে আজকের মুখরোচক ব্র্যান্ড হয়ে উঠল তার রোমাঞ্চকর কাহিনী নিয়ে সাংবাদিক অনিলাভ চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন— ‘গল্পটা মুখরোচক’। বইটির উদ্বোধন করলেন বাচিকশিল্পী জগন্নাথ বসু, উর্মি মালা বসু, ক্রিকেটার সংবরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, অভিনেতা বিশ্বনাথ বসু প্রমুখ। মুখরোচকের সত্তর বছরে তাদের নিয়ে একটি গান লিখেছেন শ্রীজাত। জয় সরকারের সুরে গেয়েছেন নচিকেতা। মীরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি অন্তর স্পর্শ করেছিল।
১৮ জানুয়ারি সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রবাদপ্রতীম অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে সম্মান জানানো হয়। গুণীজনের সমাবেশে সন্ধ্যাটি হয়ে উঠেছিল আলোকোজ্জ্বল।