কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। ব্যবসায়ীদের উন্নতির আশা রয়েছে। বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। আত্মীয়দের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেবে। ... বিশদ
প্রথমেই জানতে চাইব যে আপনি কীভাবে ব্লেন্ডারস ফ্যাশন ট্যুরের সঙ্গে যুক্ত হলেন?
আজ থেকে কিন্তু ব্লেন্ডারস প্রাইডের সঙ্গে আমি যুক্ত নই। বহু বছর ধরে ওদের সঙ্গে আমি যুক্ত। এবার ওঁরা আমাকে অ্যাপ্রোচ করে বলেন যে কলকাতায় শো হবে। তখন আমি ভাবলাম কলকাতার ক্লায়েন্টদের জন্য অনেক দিন কোনও শো করিনি। তাই এই শো করতে আমি রাজি হয়ে যাই। তবে ব্লেন্ডারস প্রাইড যে শুধুমাত্র ফ্যাশন শোকে ফোকাস করে তা কিন্তু নয়। ওরা পাশাপাশি ফ্যাশন ওরিয়েনটেড নানারকমের অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী ইত্যাদি করে থাকে যার ব্যপ্তি প্রশংসনীয়। এর সঙ্গে আমার মানসিকতা মেলে। এইসব কারণে আমি এবার ওদের জন্য শো করছি।
আপনার শো’র থিম ‘মাই ক্র্যাফট মাই প্রাইড’ এ ব্যাপারে যদি একটু বলেন—
ভারতের ক্র্যাফটের ভাণ্ডার এতটাই সমৃদ্ধ এবং ঐতিহ্যপূর্ণ ও শক্তিশালী যা নিয়ে আমি বহু বছর ধরে কাজ করে চলেছি। ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় ক্র্যাফটকে আধুনিকীকরণ করে ইন্টারন্যাশানালি আমি উপস্থাপনা করি যা আমার কাছে গৌরবের। যা আমি শো’র মাধ্যমে আবারও দেখাতে চেয়েছি।
আপনার কালেকশন নিয়ে একটু বলুন—
সম্পূর্ণ কালেকশন লাইন ভারতীয় ক্র্যাফটসের ওপর দাঁড়িয়ে যার জন্য প্রচুর আমাকে এক্সপেরিমেন্ট করতে হয়েছে। কালার নিয়েও প্রচুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। আশা করি আপনারা নতুন কিছু দেখবেন।
এই কালেকশনের বিশেষত্ব কী?
এক্সপেরিমেন্টাল কালেকশন। এই কালেকশনে ইন্টাররেস্টিং রিসাইকেল করেছি। আনলিমিটেড কালার প্যালেট, রিচড এমব্রয়ডারি।
এই কালেকশনে নতুন কোনও টেকনিক ব্যবহার করেছেন কী?
হ্যাঁ। বাংলার কাঁথাকে নতুন রূপে উপস্থাপনা করার চেষ্টা করেছি। অ্যাপ্লিক, ডোকরা আর্টকে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে একেবারে অন্য লুকে দেখতে পাবেন। আমার কালেকশনে বেশিরভাগ বাংলার ক্র্যাফটসের ছোঁয়া থাকলেও সম্পূর্ণ ভারতীয় ক্র্যাফটসের একটা ফ্লেভার মিলবে।
আপনি শো স্টপার হিসেবে জাহ্নবি কাপুর এবং অর্জুন কাপুরকে পছন্দ করলেন কেন?
ওঁরা ইয়ং। ফ্যাশন বোঝে। ডায়নামিক। তবে কেন তাদের শো স্টপার হিসেবে পছন্দ করব না?
এ বছরে ফ্যাশন ট্রেন্ড কী?
এ বছরের ফ্যাশন হবে এক্সপেরিমেন্টাল এবং রি-সাইকেলড।
আপনি কি নিজে ইন্ডিয়ান ডিজাইনারের পোশাক পরেন?
অফ কোর্স।
ভারতীয় কোন ডিজাইনারকে আপনি শ্রদ্ধা করেন?
রোহিত বাল, রাজেশ প্রতাপ সিং।
আমাদের পাঠকদের জন্য আপনার ফ্যাশন টিপস কী?
অন্ধের মতো ফ্যাশন ট্রেন্ড ফলো না করাই ভালো। নিজস্ব স্টাইল খুঁজে বের করুন, যাতে আপনি কমফোর্টেবল ফিল করেন।
সোনম কাপুর আপনার কাজের খুব ভক্ত। তিনি কেমন?
অত্যন্ত বুদ্ধিমতী, সুন্দর মনের মানুষ। তাঁকে সম্মান ও ভালোবাসতে ইচ্ছে করে। তিনি আমার মনের কাছাকাছি।
গ্লোবাল ফ্যাশন থেকে ভারতীয় ফ্যাশন কতটা আলাদা?
অনেক তফাৎ আছে, গ্লোবাল ব্যাপারটা অনেক বড়। ভারতীয় ফ্যাশন অনেকটাই ওয়েডিং ওয়্যারের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু ফ্যাশনকে গ্লোবালি অনেক দূর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায়।
একজন ডিজাইনার হিসেবে আপনি অনেক সাফল্য পেয়েছেন। আপনি নিজেই তো একজন কনটেন্ট—
(কথা শেষ না হতেই) আমি সাফল্যে বিশ্বাসী নই। যেদিন আমি মনে করব আমি সফল সেদিন আর এগতে পারব না। তাই এসব মাথায় আসে না। এত বছর পরেও আমার মনে হয় যে আমি সদ্য পথ চলা শুরু করেছি। কনটেন্ট কিনা জানা নেই।
আপনি কীভাবে নিজের ঘর এবং কাজের ব্যালেন্স করেন?
কঠিন কাজ দুটোকে ব্যালেন্স করে চলা। আমার জীবনে দুটোই খুব ভালোবাসার জায়গা। নানা ধরনের মালটি টাস্কের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে আমাকে। তবে আজ অনেকটা সহজ হয়েছে কারণ ছেলেরা বড় হয়ে গিয়েছে। আজও চব্বিশ ঘণ্টা কাজের মধ্যে থাকি।
আপনার মা-তো খুব ফ্যাশন কনশাস। আপনার জীবনে মায়ের অনুপ্রেরণা কতটা?
আমার জীবনে মায়ের ভূমিকা বিরাট। তিনি যে শুধু আমাকে ফ্যাশন সেন্স বাড়াতে সাহায্য করেছেন তা নয়। শৃঙ্খল জীবনযাপন করা তাঁর থেকেই শেখা। আমার মধ্যে মূল্যবোধের শিক্ষা মায়ের থেকে সঞ্চারিত হয়েছে। আজও ১৯৬০-১৯৭০ সালের মায়ের ছবি দেখলে মনে হবে তিনি দিভা। আমার দিদা খুব ভালো এমব্রয়ডারি করতেন। মার হাতের কাজ অসাধারণ। আমার জীবনে এঁদের অবদান অনেকটাই।
আপনার যমজ ছেলেরা এখন বড় হয়েছে। তারাও কি মায়ের পথকে অনুসরণ করছে?
ওরা আমার সব কিছু। ওরা পৃথিবীতে আসার পর আমার জীবন পালটে গিয়েছে। আমি প্রতিটি মূহূর্তে মাতৃত্বকে উপভোগ করি। আমার কাজে এখন ওরা সাহায্য করে। যদিও ওদের জন্য এটা লার্নিং প্রসেস। ওরা আমার প্রিয় বন্ধু, আমার আত্মজ, ওদের মা হিসেবে আমি গর্বিত।