ব্যবসা ও পেশায় ধনাগম ভাগ্য আজ অতি উত্তম। বেকারদের কর্ম লাভ হতে পারে। শরীর স্বাস্থ্য ... বিশদ
মিতালী আঢ্য
‘সবুজের বড়ই দৈন্য, ইট পাথরের জঙ্গলে হারিয়েছে সে হরিৎ তরুণ বর্ণ!’ বিশ্ব উষ্ণায়নের ইঙ্গিত আগেই পেয়েছি, কিন্তু তার গভীরে প্রবেশ করার মাথাব্যথা নেই কারও। শহর উইকেন্ডে বলে গ্ৰামে চলো। শহরকে ভালোবেসে বসবাসের উপযুক্ত করে তোলার ইচ্ছে বা তাগিদ শহরবাসীর নেই। ‘একটি গাছ একটি প্রাণ’ ফুটপাতে শুধুমাত্র এক ব্যানার। সরকারি নিয়মকে আমরা বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বায়োডিগ্রেডেবল আর নন-বায়োডিগ্রেডেবল বর্জ্য মিলিয়ে মিশিয়ে একাকার করে দিয়েছি। পরিবেশের চিন্তাভাবনা মনে, কার্যকরী ভূমিকা কাগজ-কলমে, মাথাব্যথা বিপদসীমা পার হলে।
গৃহবধূ
শতরূপা ভট্টাচার্য
দুর্গাপুজোয় অনেক মণ্ডপে দেখলাম পরিবেশ দূষণ বা গঙ্গা দূষণ নিয়ে থিমের ছড়াছড়ি। মানুষজন এই নিয়ে হয়তো প্রশংসাও করছে। কিন্তু বাড়ি ফিরে সত্যিই কি কারও মাথাব্যথা আছে! চারিদিকে শুধু গাছ কাটা পড়ছে, বিল্ডিং উঠছে, পুকুর বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে। প্লাস্টিক আবর্জনা ফেলে নদীনালা নোংরা করে ফেলছি। প্রকৃতি যে রুষ্ট, তার ইঙ্গিত কিন্তু সে বারবার দিচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, ঘূর্ণিঝড়, জল শুকিয়ে যাওয়া, হিমবাহ গলে জলের স্তর বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি তারই উদাহরণ। প্রকৃতিকে বাঁচানোর চেষ্টা না করলে কপালে দুঃখ আছে।
দন্ত চিকিৎসক
ডালিয়া দে
চোখের সামনে প্রতিনিয়ত বৃক্ষনিধন চলছে। প্লাস্টিক দূষণে পরিবেশের উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে। তবুও মানুষের হুঁশ ফিরছে কই! গাছপালা কেটে ফ্ল্যাট বাড়ি গড়ে উঠেছে। জলাভূমি ভরাট করে নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতলের। যানবাহনের প্রাণঘাতী ধোঁয়ায় মানুষ জেরবার। তবুও পরিবেশ রক্ষা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। এখনই সতর্ক হতে না পারলে শেষের সেদিন কিন্তু সত্যিই ভয়ঙ্কর। দূষণের কারণে ভূ-উষ্ণায়নের ফলে মেরু অঞ্চলে বরফ গলে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা মানুষের কাছে অশনিসংকেত।
গৃহবধূ
শ্বেতা চ্যাটার্জি
আমরা যে পরিবেশে বাস করি তা সুস্থ, স্বাভাবিক, দূষণমুক্ত রাখার দায়িত্ব আমাদেরই। কিন্তু সেই দায়িত্ব আমরা পালন করতে অক্ষম হয়ে পড়ছি । প্রতিনিয়ত পরিবেশ যে পরিমাণে দূষণ হচ্ছে তাতে জীববৈচিত্র্যের ওপর আঘাত আসছে। আমাদের টিকে থাকাও দায় হয়ে পড়বে। দূষণ অনুপাতিক হারে বেড়ে চলেছে অথচ এই সব দিকে আমাদের নজর সেভাবে পড়ে না। কোথাও খুব কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হলেও পরে তা ঢিলে হয়ে পড়ে। যদিও এখন অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে কিন্তু তার গতি খুবই কম। বর্তমানে যা পরিস্থিতি তাতে এখনই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এবং সকলে সচেতন না হলে আগামীতে গোটা বিশ্ব ভয়ঙ্কর সংকটের মুখে পড়বে।
স্নাতক ছাত্রী
বিপক্ষে
অভিনন্দিতা রায়
করোনা পরবর্তী সময়ে মানুষ প্রিয়জনের জীবনের বিনিময়ে উপলব্ধি করেছেন তাদের জীবনে সবুজের ছোঁয়ার গুরুত্ব। জনজীবন যখন স্তব্ধ তখন ধুলো-ধোঁয়া, গাড়ি-ঘোড়া, বাস-ট্রাম, কলকারখানা কিংবা পলিথিনের মতো বিভিন্ন রাসায়নিকের ব্যবহার
ছিল সীমাবদ্ধ। তখন শহরের গাছপালা ছিল নির্মল এবং সবুজ। পাখির সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মতো। এসব থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা অনেকেই এসি বা গাড়ির ব্যবহার কিছুটা কমানোর চেষ্টা করেছি। নিজেদের বাড়ির ছোট পরিসরেও হারিয়ে যাওয়া সবুজকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে চলেছি।
ছাত্রী
সোহিনী রায়চৌধুরী
এটা ভাবা সঠিক নয় যে পরিবেশ রক্ষায় সবাই উদাসীন। বরং পরিবেশগত বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে ইদানীং। বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সাসটেনেবল উন্নয়নের গুরুত্ব নিয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। ডকুমেন্টারি, সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেন পরিবেশরক্ষার বিষয়ে সচেতনতা বাড়াচ্ছে। বহু দেশ কার্বন নিঃসরণ কমাচ্ছে। নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহারে জোর দিচ্ছে। প্রাকৃতিক আবাস রক্ষা করার লক্ষ্যে নীতি গ্রহণকারী কোম্পানিগুলি সবুজ প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছে। বর্জ্য কমাচ্ছে এবং কার্বন নিউট্রালিটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করছে। এর থেকে বোঝা যায় পরিবেশের প্রতি দায়িত্ব পালনে তারা কতখানি নিবেদিত!
শিক্ষিকা শিক্ষিকা
সায়ন তালুকদার
পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে মানুষ বর্তমানে সচেতন হচ্ছেন। প্রাকৃতিক নানা বিপর্যয়, হিমবাহ গলে যাওয়ার চিত্র দেখে মানুষ শিহরিত। অধিকাংশ মানুষের বাড়ির ছোট্ট ব্যালকনিতে, ছাদে সীমিত পরিসরে বেড়ে উঠছে সবুজ। রাস্তাঘাটে জলের কল বন্ধ থাকছে, জলের অপচয় কমেছে। নর্দমায় প্লাস্টিক, আবর্জনা ফেলার ক্ষেত্রে মানুষের চিন্তাভাবনা বদলেছে। তারা নির্দিষ্ট বর্জ্য ফেলার গাড়িতে তা ফেলছেন। কাগজ এবং পাটের ব্যাগ ব্যবহারের মাত্রা বেড়েছে। চারপাশের পরিবেশকে যত্নে না রাখলে বিপন্ন তাঁরাই, বুঝেছে মানুষ।
ছাত্র
কৌশিক ঘোষ
এটা অবশ্যই ঠিক যে অ্যাডভান্সড সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে পরিবেশের প্রতি ভ্রুক্ষেপ মানুষের নেই বললেই চলে। কিন্তু এখনও অনেক দায়িত্বশীল মানুষ ও সংগঠন আছে যারা ব্যক্তিগত কিংবা সমষ্টিগতভাবে পরিবেশ রক্ষার প্রতি বরাবরই সচেতন। কখনও তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে বৃক্ষরোপণ করেন, বাগান পরিচর্যা করেন, গণপরিবহন ব্যবহার করেন এবং প্লাস্টিক গ্রহণ করতে দ্বিধা বোধ করেন। আবার কখনও তাঁরা সমষ্টিগতভাবে পরিবেশ রক্ষার জন্য কাজ করেন। হয়তো সংখ্যাটা অনেক কম কিন্তু এই মানুষদের মাথাব্যথার জন্যই হয়তো পৃথিবীটা আজও জীবনধারণের উপযুক্ত।
গৃহশিক্ষক