কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
ভারতের প্রথম মহিলা শিক্ষিকা সাবিত্রীবাই ফুলে বলেছিলেন, ‘মহিলারা গঠন করতে জানেন। যে কোনও গঠনমূলক কাজ তাই তাঁদের মাধ্যমেই সুষ্ঠুভাবে সম্ভব। আর শিক্ষকতার চেয়ে বেশি গঠনমূলক কাজ আমাদের সমাজে আর কী-ই বা আছে? শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে আমরা আগামী প্রজন্মকে তৈরি করতে সক্ষম হই। জগৎ জীবন সম্পর্কে তাদের ধারণাগুলোকে সাজাই। তাদের মূল্যবোধ গঠন করি।’ তবু এই শিক্ষার মাধ্যম দীর্ঘকাল শুধুমাত্র পুরুষতন্ত্রের অধীনে পুরুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। ভারতীয় মহিলাদের শিক্ষার আলো পেতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। সাহিত্যিক আশাপূর্ণাদেবী এই নিয়ে একবার একটা মজার গল্প বলেছিলেন। তাঁর বর্ণ পরিচয় নাকি ঘটেছিল উল্টোভাবে। অর্থাৎ পাঠ্যপুস্তক বা লেখাপড়ায় তাঁর অধিকার ছিল না। বাড়িতে দাদারা পড়ত আর তিনি উল্টো দিকে বসে শুধু দেখতেন। সেই দেখার মাধ্যমেই নাকি তিনি বর্ণমালার অক্ষরগুলো রপ্ত করেছিলেন। সেখান থেকে শব্দ এবং তারপর বাক্য গঠন করতে শেখেন তিনি। তবে সেগুলো আর উল্টো পথে হয়নি। কন্যার অক্ষরের প্রতি অসম্ভব টান দেখে আশাপূর্ণার বাবা তাঁর পড়াশোনার ব্যবস্থা করেন।
আমাদের এই বাংলায় নারী শিক্ষার কথা বলতে গেলে যে নামটি এক এবং অদ্বিতীয় তা অবশ্যই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। কিন্তু তারপরেও সমাজে মেয়েদের মধ্যে শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে নারীর ভূমিকা অগ্রগণ্য। আজ তেমনই কয়েকজন নারীর কথা বলব, যাঁরা শিক্ষাবিস্তারের কাজে ব্রতী হয়েছেন। ইতিহাস ঘাঁটলে এমন বিভিন্ন মহিলার নাম উঠে আসবে যাঁরা আমাদের সমাজে শিক্ষাদানের কাজ করে গিয়েছেন নিষ্ঠার সঙ্গে। তাঁরা যে সব ক্ষেত্রে শিক্ষকতার সঙ্গেই যুক্ত থেকেছেন তা কিন্তু নয়। অনেকেই শিক্ষাপ্রদানের কাজটি পরিচালনা করেছেন মাত্র। সমাজে শিক্ষার বিস্তার ঘটানোর ক্ষেত্রে তাঁদের অবদানও নেহাত কম নয়।
মহারাষ্ট্রের সাবিত্রীবাই ফুলে যখন পড়াশোনা শিখে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন, তখন আমাদের দেশের বহু স্তরে শিক্ষার আলো পৌঁছতেই পারেনি। পুরুষতন্ত্র, জাত সংক্রান্ত বিভেদ ইত্যাদিকে অগ্রাহ্য করে লেখাপড়া শেখার পথে একাগ্রচিত্তে এগিয়েছিলেন তিনি। নিজেকে শিক্ষিত করেও থেমে থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি বুঝেছিলেন সমাজে মেয়েদের সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে বাঁচতে হলে শিক্ষা অতি আবশ্যিক। ফলে মেয়েদের মধ্যে শিক্ষার বিস্তারের জন্য তিনি শুরু করেন তাঁর পরবর্তী লড়াই। সাবিত্রীবাই বুঝেছিলেন বক্তৃতার মাধ্যমে নারী শিক্ষার বিস্তার অসম্ভব। তাই নিজেকেই উদাহরণস্বরূপ গ্রাম ও শহরের মহিলাদের সামনে দাঁড় করিয়ে তিনি মেয়েদের বুঝিয়েছিলেন শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা। তাঁকে দেখে বহু মহিলা উদ্বুদ্ধ হয়ে বই হাতে তুলে নিয়েছিলেন সেই যুগে। তাঁর অসম্ভব জেদ এবং দৃঢ়চেতা মনোভাবের কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছিল পুরুষতান্ত্রিক সমাজ।
নিজের আশপাশের মহল্লার বাচ্চা মেয়েদের পড়ানোর মাধ্যমে শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে শুরু করেন সাবিত্রীবাই। বাচ্চারা পড়ে নিজেদের অর্জিত বিদ্যা প্রয়োগ করত মায়েদের উপর। মেয়েকে পড়ানোর তাগিদে মায়েরাও ক্রমশ আগ্রহী হয়ে উঠতে লাগলেন পড়াশোনার প্রতি। সাবিত্রীবাই দেখলেন, তাঁর ছোট্ট প্রয়াসকে বড় করতে হলে জায়গার প্রয়োজন। বই, খাতা, পেন, পেনসিল ইত্যাদি দরকার। তাঁর উদ্যমী চেষ্টায় শুরু হয়েছিল নেটিভ লাইব্রেরি। সেখানে মেয়েরা বিদ্যাচর্চা করত। বই পড়ানো হতো, বই নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বুদ্ধির বিচার হতো। শুধু রাঁধা আর খাওয়ার মধ্যে যে নারীজীবন সীমাবদ্ধ নয়, তারও যে ব্যাপ্তি আছে সেই ধারণা মহিলাদের মধ্যে রোপণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন সাবিত্রীবাই। এবং এই যে শিক্ষা, তা কেবলই পুঁথিগত নয়। সাবিত্রীবাই সার্বিক শিক্ষায় বিশ্বাস করতেন। বইয়ের বাইরেও তাই জীবনের নানা পাঠ দিতেন তিনি মেয়েদের। পরনিন্দা পরচর্চার মাধ্যমে যে জীবন গড়ায় না, বরং থমকে যায়, একে অপরকে হিংসা না করে সহযোগিতা করলে জীবন যে আরও উর্বর হয়ে ওঠে এই ধরনের নানা পাঠও মহিলাদের দেওয়া হতো। আর দেওয়া হতো মতামত গঠনের শিক্ষা। কোনও ঘটনাকে তুলে ধরে নারীর মত জানতে চাইতেন সাবিত্রীবাই। নারীর মতের উপর যে সমাজের অগ্রসর হওয়ার অর্ধেকটা নির্ভরশীল সেই ধারণা নারীর মনে বপন করেছিলেন তিনিই প্রথম।
সাবিত্রীবাই ছাড়া আরও অনেক মহিলা রয়েছেন শিক্ষার এই ক্ষেত্রে। তাঁদের মধ্যেই উল্লেখযোগ্য বেগম জফর আলি। তিনি পেশায় লেজিসলেটর ছিলেন। কর্মসূত্রে দেশের বিভিন্ন রাজ্য, জেলা ও গ্রাম ঘুরতে ঘুরতে তিনি বুঝতে পারেন নারীশিক্ষার কী ভীষণ প্রয়োজন! সেই প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখেই শুরু করেন কাজ। শিক্ষা সম্প্রসারণের কাজ। তাঁর মতে, শুধু মহিলাদেরই নয়, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, অর্ধশিক্ষিত সমাজেরও শিক্ষার প্রয়োজন। যে পুরুষ নিজের অধীনে রাখবে বলেই নারীকে সমাজে এগিয়ে যেতে দেয় না, ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ রাখতে চায়, তারও শিক্ষার প্রয়োজন।
কাশ্মীরের প্রথম মহিলা গ্র্যাজুয়েট বেগম জফর আলি বিভিন্ন স্কুল গড়ে তোলার কাজ করেছিলেন। গ্রামে গিয়ে মহিলাদের শিক্ষিত করে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। নারীকে নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করার কাজও অনেকাংশেই তিনি করেছেন। নারীশিক্ষা তো বটেই, নারী ক্ষমতায়নের জন্য সারাজীবন নানারকম কর্মশালার আয়োজন করেছেন তিনি।
নারী শিক্ষা ও তার প্রসার বিষয়ে আলোচনায় আরও অনেক মহিলার নামই অগ্রগণ্য। তাঁদেরই মধ্যে অন্যতম দুর্গাবাই দেশমুখ। গান্ধীজির শিষ্যা ছিলেন দুর্গাবাই। চরকা কাটার কাজে তাঁর ছিল বিশেষ দক্ষতা। স্বাধীনতা আন্দোলনেও লড়াই করেছেন। আর তারই পাশাপাশি নিজেকে পুঁথিগত বিদ্যায় শিক্ষিত করে তুলেছিলেন দুর্গাবাই। তাঁর কথায়, বিপ্লবীমহলে খুব উচ্চস্তরের আলোচনা হতো। ইংরেজদের তাড়ানোর ছক কষার সময় বিভিন্ন বিষয়ের তুলনা টানা হতো। সেগুলো আয়ত্ত করা তখনই সম্ভব, যখন তার আগুপিছু বিষয়ে জ্ঞান থাকবে। সেই জ্ঞানার্জনের লক্ষ্য নিয়েই তিনি পড়াশোনা শুরু করেন। নিজে শিক্ষিত হওয়ার পর দেশের আপামর মহিলাকে শিক্ষিত করার দায়িত্বও নিতে আগ্রহী হন। তৈরি করেন অন্ধ্র মহিলাসভা। এখানে মহিলাদের প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান করা হতো। পরে অবশ্য এই প্রতিষ্ঠানে নার্সিংয়ের কাজেও মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কর্মশালা হয়। আয়োজন করেছিলেন স্বয়ং দুর্গাবাই। এমন বহু নামই নারী শিক্ষার ইতিহাসে ছড়িয়ে রয়েছে।
বর্তমান যুগেও এমন বিভিন্ন মহিলা রয়েছেন যাঁরা সরাসরি শিক্ষকতা না করেও নারীশিক্ষা ও সামগ্রিক শিক্ষার কাজে নিজেদের যুক্ত রেখেছেন। তাঁদের কেউ আবার প্রচুর প্রতিবন্ধকতার মাঝেও শিক্ষা প্রদানের কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনই একজন মহিলা বিমলা কউল। বয়স আশি বছর। কিন্তু মনে মনে এখনও তরুণী তিনি। তাই তো নতুন কাজের উদ্যমে পরিপূর্ণ। দিল্লির প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ছাত্রী সংগ্রহ করে তাদের পড়াশোনা শেখানোর কাজ করেন তিনি। এই প্রয়াসটি অবশ্য নতুন নয়। মোটামুটি কুড়ি বছর ধরে এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বিমলা। গ্রামের মেয়েদের নিয়েই কেন এই কর্মশালার আয়োজন? বিমলা বললেন, গ্রামের লোকেদের মধ্যে প্রচেষ্টার ভীষণ অভাব। কাজটা যখন শুরু করেছিলেন তখনই তিনি একটা সমীক্ষা করেন। তাতে লক্ষ করেন গ্রামের মেয়েদের মধ্যে স্কুল ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। তাই তাদের নিয়েই কাজটা শুরু করেছিলেন বিমলা। সেই কাজ এখন একটা মিশনে পরিণত হয়েছে। ক্লান্ত লাগলেই গ্রাম্য মেয়েদের কোমল মুখগুলো চোখের সামনে ভেসে ওঠে তাঁর। আবারও পূর্ণ উদ্যমে শুরু করে দেন কাজ।
বাঙালি কন্যা রোশনি মুখোপাধ্যায়ের কাজটা আবার একেবারেই অন্যরকম। ছাত্রছাত্রীদের মন থেকে পরীক্ষার ভয় তাড়ান তিনি। এই উদ্দেশ্যে একটা গোটা ওয়েবসাইটও তৈরি করে ফেলেছেন। নাম এক্সাম ফিয়ার। স্কুলের ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে তাঁর কারবার। তাঁদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য তৈরি করেন রোশনি তাঁর ওয়েবসাইটের সাহায্যে। তাঁর কথায়, ‘ছোট থেকেই বাচ্চাদের মধ্যে একটা পরীক্ষাভীতি কাজ করে। অনেকে সেই ভয় কাটিয়ে উঠতে পারে, অনেকে আবার পারে না। তাদের পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ার পিছনে এই ভয় অনেকাংশেই দায়ী। এখন প্রশ্ন হল এই ভয় কীভাবে কাটানো সম্ভব? নিরন্তর অভ্যাসের মাধ্যমে পরীক্ষার ভয় কাটানো যায়। আমার ওয়েবসাইটে আমি সেই কাজটাই করি। বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার পাঠ্যক্রম অনুযায়ী নানারকম মডেল প্রশ্নপত্র তৈরি করি। বাচ্চারা ক্রমাগত তার মারফত পরীক্ষা দিতে থাকে। আর একই বিষয়ে নানারকম প্রশ্নের মোকাবিলা করতে করতে বিষয়টা তো আয়ত্তে আসে বটেই, পরীক্ষার ভয়টাও কেটে যায়। সব ধরনের প্রশ্নর সঙ্গেই তারা পরিচিত হয়ে যায়। ফলে যে কোনও প্রশ্ন সামলানোর ক্ষমতা জন্মায়। এবং ক্রমশ পরীক্ষার ভয় কাটিয়ে উঠতে তারা সক্ষম হয়।’ এছাড়াও আছে মেন্টরিং সেশন। রোশনি তাঁর ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আলোচনাসভা বসান। তাতে তাঁরা সেই বিষয় সম্পর্কে বাচ্চাদের পরামর্শ দেয়। কঠিন বিষয়কে সহজ করে তোলার চেষ্টা করেন, প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করেন এবং এই ধরনের আলোচনায় অংশগ্রহণ করে বাচ্চারাও নিজেদের ভয় কটিয়ে উঠতে পারে।
ভিন্ন ধারার প্রচেষ্টার কথা যখন উঠলই তখন অদিতি অবস্থির নাম ও তাঁর প্রয়াসের কথাও বলা দরকার। তিনি ২০১২ সালে একটা ভিন্ন ধরনের এডুকেশন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন অনলাইনের মাধ্যমে। এই প্ল্যাটফর্মের দ্বারা বিভিন্ন রাজ্যের নানা স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। তারা নিজেদের পারদর্শিতা এবং অসুবিধের কথা আলোচনা করে একে অপরকে সমৃদ্ধ করতে পারেন। অদিতি এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রাইভেট টিউশন এখন টিচিং লার্নিং প্রসেসের একটা অনবদ্য অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাচ্চারা স্কুলে যাক বা নাই যাক, টিউশন ক্লাসে তাদের হাজিরা মাস্ট। না হলে পরীক্ষায় ভালো ফল অসম্ভব। কিন্তু এমন কেন হবে? স্কুলের শিক্ষকদের সাহায্যের পরেও যদি কারও কোনও বিষয়ে বাড়তি সাহায্য লাগে তাহলে সে তা নিজের সহপাঠী বা সিনিয়রের কাছে কেন পাবে না? এই প্রশ্নটা নিজের মনে নাড়াচাড়া করতে করতেই এমন একটা ওয়েবসাইট খোলার কথা মনে হল যা বিভিন্ন স্কুল ও সেখানকার ছাত্রদের মধ্যে একটা সংযোগ স্থাপন করতে পারে। সেই ভাবনা থেকেই শুরু হয় এমবাইব ওয়েবসাইটটি।’ অদিতির এই ওয়েবসাইটের সঙ্গে দিল্লি, মুম্বই ও বেঙ্গালুরুর অনেক স্কুল ইতিমধ্যেই সংযুক্ত হয়েছে। ভবিষ্যতে দেশের প্রতিটি রাজ্যের উল্লেখযোগ্য স্কুলগুলোকে একে অপরের সঙ্গে জুড়ে দিতে চান তিনি। সেই নিয়েই পরিকল্পনা চলছে।
শুধু পড়াশোনা নয়, শিক্ষার মাধ্যমে সার্বিক গঠন ও বৃদ্ধি সম্ভব হয়। আর সেই সার্বিক গঠনের উদ্দেশ্যেই কাজ করছেন শ্বেতা সুব্বাই। মহিলাদের ফিটনেস ট্রেনিং দেওয়ার কাজটি করেন তাঁরা। এই কাজে বিভিন্ন বহুজাতিক স্পোর্টস ও ফিটনেস সংস্থা তাঁর প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষত মহিলাদের ফুটবল ট্রেনিং ও সেই সংক্রান্ত বিভিন্ন সুযোগ সন্ধানের হদিশ দেন শ্বেতা তাঁর ফিটনেস প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে। খেলাধুলো ছাড়াও নাচ, যোগাসন ইত্যাদিও শেখানো হয় শ্বেতার ওয়েবসাইট লার্নিং গ্রুপে। ক্রীড়া জগতের বিখ্যাত মহিলাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগও মেলে এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে। শ্বেতা বললেন, ‘মহিলাদের একটা জিনিসে ভীষণ খামতি, তাঁরা নিজেদের দেখভাল করেন না। সংসারের দিকে নজর দিতে গিয়ে নিজেদের ফিটনেসের কথা ভুলে যান। একটা বয়সের পর এটাই ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়।’ সেই কারণেই মহিলাদের নিয়ে এই প্রয়াস চালু করেছেন শ্বেতা।
এছাড়াও এমন অনেক মহিলা রয়েছেন যাঁরা লেখাপড়ার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না হয়েও লেখাপড়া কেন্দ্রিক নানা কর্মসূচি চালাচ্ছেন। কেউ প্লে স্কুলের সিইও, কেউ বা অনলাইন টিচিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন। নারীশিক্ষার প্রচার ও প্রসার না ঘটলে হয়তো মহিলাদের এই উদ্যম তৈরি হতো না। একটা সময় মহিলাদের কাছে শিক্ষা দুর্লভ ছিল বলেই তার প্রচার ও প্রসারের জন্য তাঁরা এত উদগ্রীব, মত বিশেষজ্ঞদের। মহিলাদের গঠনমূলক মনের কথাও বলেন অনেকে। সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে মেয়েরা কতটা গুরুতর, সেই দিকটি বিবেচনা করলেই নারীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বোঝা যাবে। নারী মাত্রেই গড়তে জানে, সেজন্যই আগামীকে গড়ার কাজে সচেষ্ট তাঁরা।